পুঁজিবাজারে প্রথমবারের মতো সুকুক বন্ড ছেড়ে বেক্সিমকো লিমিটেড যে টাকা তুলতে যাচ্ছে, তাতে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে ৫ বছরে ৬৩ হাজার থেকে ৭৮ হাজার টাকা মুনাফা করার সুযোগ থাকছে। আর এই বন্ডের আয় পুরোটাই করমুক্ত বলে প্রকৃত আয় আসলে আরও বেশি।
যদিও কোম্পানির পক্ষ থেকে বছরে ৯ শতাংশ মুনাফার কথা জানানো হয়েছে। এই হিসাবে মুনাফা হওয়ার কথা ৪৫ হাজার টাকা।
এই আয় কার্যত ৫০ হাজার টাকার সমান। কারণ, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে লভ্যাংশ হিসেবে যে অর্থ পাওয়া যায়, তা থেকে ১০ শতাংশ কর কেটে রাখা হয়। ফলে কেউ ৫০ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেলেই কেবল তার ব্যাংকে যাবে ৪৫ হাজার টাকা।
এই মুনাফার বাইরে বাড়তি ১৮ বা ৩৩ হাজার টাকা মুনাফা কোত্থেকে আসবে?
এই বাড়তি মুনাফার কারণ এই বন্ডের আরও কিছু শর্ত। বছর শেষে একজন বিনিয়োগকারী তার মোট বিনিয়োগের ২০ শতাংশ টাকা তুলে নিতে পারবেন, অথবা এর বিনিময়ে কোম্পানির শেয়ার নিতে পারবেন। আর এই কেউ যদি শেয়ার নেন, তাহলে একটি বিশেষ শর্তের কারণে তিনি বাড়তি মুনাফা পাবেন।
কোম্পানির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কেউ যদি বছর শেষে ২০ শতাংশ টাকা না নিয়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার নেন, তাহলে তিনি শেয়ারটি পাবেন বাজার মূল্যের ২৫ শতাংশ কম দামে। আর তিনি যখন শেয়ারটি বিক্রি করবেন, তখন তা নিশ্চয় বাজার মূল্যেই বেচবেন। কিন্তু মাঝে একটি মুনাফা হয়ে যাবে তার।
বেক্সিমকো এই শেয়ার দেবে রেকর্ড ডেটের আগের দুই মাসের ভরিত গড়ের সমান দামে। যদি শেয়ার মূল্য ১০০ টাকা হয়, তাহলে তিনি পাবেন ৭৫ টাকায়। যদি শেয়ার মূল্য ২০০ টাকা হয়, তাহলে তিনি পাবেন ১৫০ টাকায়, আর যদি শেয়ার মূল্য ৫০ টাকায় হয়, তিনি পাবেন ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা।
অর্থাৎ শেয়ার মূল্য যতই হোক না কেন, বন্ডধারীর মুনাফা এবং শেয়ার বিক্রি করে অর্থে কোনো হেরফের হবে না।
কেউ যদি বছর বছর তার অবশিষ্ট টাকার ২০ শতাংশ টাকার শেয়ার নেন, তাহলে ৫ বছর শেষে সেই শেয়ার বিক্রি করে তার মুনাফা হবে ৩৩ হাজার টাকা।
আর বছর বছর মূল টাকা কমে যাবে বলে পাঁচ বছরে মোট মুনাফা থাকবে ৩০ হাজার ২৫৪ টাকা।
আর কেউ যদি পুরো টাকাটা ৫ বছর ব্যবহার করে মেয়াদ শেষে একবারে শেয়ার নেন, তাহলে তিনি মুনাফা হিসেবে পাবেন মোট ৪৫ হাজার টাকা। আর শেয়ার বিক্রি করে বাড়তি মুনাফা পাবেন ৩৩ হাজার টাকা।
দেশের পুঁজিবাজারে প্রথমবারের মতো এই বন্ড ছেড়ে বাজার থেকে মোট ৩ হাজার কোটি টাকা তুলবে বেক্সিমকো লিমিটেড। এই অর্থের সিংহভাগ দুটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করবে কোম্পানিটি।
প্রথম বছর শেষে আয় কত
কেউ এক লাখ টাকার বন্ড নিলে এক বছর পরে নিশ্চিতভাবেই ৯ হাজার টাকা পেয়ে যাবেন। তিনি যদি মনে করেন, ২০ হাজার টাকা ভাঙিয়ে শেয়ার নেবেন, তাহলে তিনি কতগুলো শেয়ার পাবেন, সেটি বাজার মূল্যের ওপর নির্ভর করবে।
যদি শেয়ার মূল্য ১০০ টাকা হয়, তাহলে তিনি শেয়ার পাবেন ৭৫ টাকায়। ২০ হাজার টাকায় তিনি নিতে পারবেন ২৬৬টি। যদি শেয়ার মূল্য ২০০ টাকা হয়, তাহলে তিনি পাবেন ১৩৩টি আর যদি শেয়ার মূল্য ৫০ টাকা হয়, তাহলে তিনি পাবেন ৫৩৪টি। শেয়ার মূল্য যদি ১০ টাকা থাকে, তাহলে তিনি পাবেন ২ হাজার ৬৬টি শেয়ার।
শেয়ার পেয়ে তিনি যদি সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি করে দেন, তাহলে এ ক্ষেত্রে তার মুনাফা হবে ৬ হাজার ৬০০ টাকা। অর্থাৎ এক বছর মুনাফা হবে মোট ১৫ হাজার ৬০০ টাকা। আর তিনি ২০ হাজার টাকাও তুলে নিতে পারবেন শেয়ার বিক্রি করে।
দ্বিতীয় বছর শেষে আয়
পরের বছর তিনি ৮০ হাজার টাকায় ৯ শতাংশ হিসেবে ৭ হাজার ২০০ টাকা মুনাফা পাবেন নিশ্চিত। তখন আরও ২০ শতাংশ হিসেবে ১৬ হাজার টাকা তুলে নিতে পারবেন, বা শেয়ার নিতে পারবেন।
তখন তিনি শেয়ার নিলে তা বিক্রি করে মুনাফা পাবেন ৫ হাজার ৩০০ টাকা। অর্থাৎ দ্বিতীয় বছরে ৮০ হাজার টাকায় তার মুনাফা দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। ওই বছরও মুনাফা গিয়ে দাঁড়াবে ১৫.৬ শতাংশ।
তৃতীয় বছর শেষে আয়
২০ শতাংশ হিসেবে ১৬ হাজার তুলে নিলে তৃতীয় বছর শেষে আসল টাকা থাকে ৬৪ হাজার টাকা। এই টাকার ৯ শতাংশ হিসেবে মুনাফা আসবে ৫ হাজার ৭৬০ টাকা।
এর ২০ শতাংশ হিসেবে ১২ হাজার ৮০০ টাকা তিনি তুলে নিতে পারবেন, বা শেয়ার নিতে পারবেন। ২৫ শতাংশ কম দামে পাবেন বলে এবার শেয়ার বিক্রি করে তার বাড়তি মুনাফা হবে ৪ হাজার ২০০ টাকা। সব মিলিয়ে ৬৪ হাজার টাকায় বছর শেষে মুনাফা থাকবে ৯ হাজার ৯৬০ টাকা যা মোট টাকার ১৫.৫৬ শতাংশ।
চতুর্থ বছর শেষে আয়
চতুর্থ বছর বন্ডে মূল টাকা থাকবে ৫১ হাজার ২০০ টাকা। এই অর্থের ৯ শতাংশ হিসেবে মুনাফা পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৬০৮ টাকা। আর ওই বছর ২০ শতাংশ হিসেবে তোলা যাবে ১০ হাজার ২৪০ টাকা। এই টাকা না তুলে শেয়ার নিলে বাড়তি মুনাফা হবে ৩ হাজার ৪১৩ টাকা।
অর্থাৎ চতুর্থ বছরে মুনাফা পাওয়া যাবে ৮ হাজার ২১ টাকা। তখনও শতকরা হিসেবে মুনাফা থাকবে ১৫.৬৬ শতাংশ।
পঞ্চম বছর শেষে
পঞ্চম বছর বন্ডের এক লাখ টাকার মধ্যে বাকি থাকবে ৪০ হাজার ৯৬০ টাকা। ৯ শতাংশ হারে তখন মুনাফা পাওয়া যাবে ৩ হাজার ৬৮৬ টাকা। ওই বছর বাকি সব টাকা তুলে নেয়া যাবে। আর কেউ শেয়ার কিনলে ২৫ শতাংশ কম দামে তার মুনাফা হবে ১৩ হাজার ৬৫৩ টাকা।
সব মিলিয়ে পঞ্চম বছরে তার মুনাফা হবে ১৭ হাজার ৩৪০ টাকার মতো।
পঞ্চম বছরে একসঙ্গে শেয়ার নিলে
কেউ যদি বছর বছর কেবল মুনাফার ৯ শতাংশ তুলে পঞ্চম বছরে এসে এক লাখ টাকার শেয়ার নেন, তাহলে এই পর্যায়ে এসে তার মুনাফা হবে ৩৩ হাজার টাকা।
ধরা যাক, তখন শেয়ারের দর ১০০ টাকা। কিন্তু বন্ডে বিনিয়োগকারী তা পাবেন ৭৫ টাকায়। ১ লাখ টাকার বিপরীতে তখন তিনি পাবেন এক হাজার ৩৩টি শেয়ার।
১০০ টাকা করে বিক্রি করলে এই শেয়ারের দাম হয় এক লাখ ৩৩ হাজার টাকা।
শেয়ারদর সে সময় যতই থাকুক না, কেন, ২৫ শতাংশ কম দামে পাওয়া যাবে বলে এই পরিমাণ মুনাফা হবেই।
অর্থাৎ ৫ বছর শেষে তার প্রকৃত মুনাফা হবে ৭৮ হাজার টাকা।
নগদ মুনাফা আরও বেশিও হতে পারে
অবশ্য কেউ যদি ১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে, বছর শেষে তিনি ৯ হাজার টাকাই যে মুনাফা পাবেন, এমনটা নয়। এই ৯ হাজার টাকা তাকে দিতেই হবে। বেশি পাওয়ার সুযোগ আছে অন্য একটি কারণে।
বন্ডের শর্ত অনুযায়ী বেক্সিমকো লিমিটেডের লভ্যাংশ ১০ শতাংশের বেশি হলে যতটুকু বেশি হবে, তার ১০ শতাংশ পাবেন বন্ডধারী।
যদি বেক্সিমকোর লভ্যাংশ ১৫ শতাংশ হয়, তাহলে সুকুকধারীরা বাড়তি ৫ শতাংশের ১০ শতাংশ আর যদি লভ্যাংশ ২০ শতাংশ হয়, তাহলে বাড়তি ১০ শতাংশের ১০ শতাংশ যোগ হবে সুকুকের মুনাফায়।
বন্ডে বিনিয়োগ কীভাবে
বেক্সিমকোর সুকুক বন্ডে বিনিয়োগের সুযোগ প্রাথমিকভাবে কোম্পানির শেয়ারধারীদের জন্য রাখা হয়েছে।
এ জন্য রেকর্ড ডেট ছিল গত ১৯ জুলাই। অর্থাৎ এই সময়ে যেসব বিনিয়োগকারীদের কাছে বেক্সিমকোর শেয়ার ছিল কেবল তারাই পরবর্তীতে সুকুক বন্ড কিনতে পারবে।
বিনিয়োগকারীদের সুকুক বন্ড বুঝিয়ে দেওয়া হবে ৩১ আগস্ট। এজন্য দুই মেয়াদে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করা হয়।
প্রাইভেট প্লেসমেন্ট, সাধারণ ও বর্তমানে শেয়ারহোল্ডারদের আবেদন গ্রহণ শুরু হয় ২৫ জুলাই থেকে। চলবে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত।
শেয়ারধারী ছাড়া যারা বন্ড কিনতে চান, তাদের জন্যও সুযোগ আছে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে ১৭ আগস্ট থেকে, চলবে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত।
সুকুকটির প্রতিটি ইউনিটের অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালু নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। বন্ডটির ন্যূনতম লট হবে ৫০টি ইউনিটে। একজন বিনিয়োগকারী ন্যূনতম ৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন এ বন্ডে।
সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত আবেদন ফরম দেয়া আছে। ফরম পূরণ করে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের জন্য আবেদন করা যাবে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নিজ নিজ ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সুকুক বন্ডের আবেদন করতে পারবে।
বেক্সিমকোর এই সুকুকের ইস্যু ম্যানেজার, অ্যারেঞ্জার ও অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেড এবং অগ্রণী ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। আর ট্রাস্টি হিসেবে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
কেউ যদি এই সময়ের মধ্যে বন্ড কিনতে না পারেন, তার জন্য সুযোগ একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছে না। এই বন্ড শেয়ারের মতোই পুঁজিবাজারে লেনদেন হবে। ফলে যে কেউ এটি যে কোনো সময়, যে কোনো পরিমাণে কিনতে পারবেন।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য