দুই দিনের সংশোধন শেষে পুঁজিবাজারে সূচকের বড় উত্থান হলো। একদিন ব্যাপকভাবে বাড়ার পর দুদিন ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলো দর হারানোর পর তৃতীয় কর্মদিবসে আবার ঘুরে দাঁড়াল।
বিমা ছাড়া প্রধান প্রায় সব খাতের শেয়ারধারীদের হাসিই চওড়া হয়েছে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার। এর মধ্যে ব্যাংক ছাড়া দ্বিতীয় যে খাতটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে, সেটি হলো বস্ত্র। এই খাতেও ব্যাংকের মতো হাতেগনা এক দুইটি ছাড়া বেড়েছে বাকিগুলোর দাম।
গত মঙ্গলবার ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেনের পর দুই দিনের সংশোধনে বিনিয়োগকারীরা কেনাবেচা কমিয়ে দিলেও রোববার তারা ছোটখাট সংশোধন কাটিয়ে আবার শেয়ার কিনছেন। দুই কর্মদিবস পর লেনদেন আবার আড়াই হাজার পয়েন্ট ছাড়াল।
দিন শেষে সূচকের যে অবস্থান, সেটি ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সেদিন সে সময়ের ডিএসই সূচক ছিল ৭ হাজার ১২৫ পয়েন্ট।
রোববার সূচক দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮৪২ পয়েন্টে। আগের দুই দিন ২৬ পয়েন্ট হারানোর পর একদিনেই বেড়েছে ৮১ পয়েন্ট।
এই উত্থানের মধ্য দিয়ে সূচকের অবস্থান ২০১১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির ৬ হাজার ৮২২ পয়েন্টের অবস্থানকে অতিক্রম করে গেল।
গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এক দফা, এরপর ৫ এপ্রিলের লকডাউনের শুরু থেকে মের শুরু পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় আর জুলাই থেকে তৃতীয় দফায় পুঁজিবাজারে উত্থান দেখা দিয়েছে। তৃতীয় দফায় উত্থানের পর পুঁজিবাজারের সূচক ১০ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে আর সামনে এগিয়ে চলেছে।
তবে এই ধাপে এসে কয়েকজন অর্থনীতিবিদ পুঁজিবাজার নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে বসেন। বাজার ‘অতিমূল্যায়িত’ এমন ধারণা করে সেটি আর ‘বাড়তে দেয়া উচিত হবে না’ মন্তব্য করে কার্যত হস্তক্ষেপের পরামর্শ দেন তারা। তবে বিএসইসি জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনো রকম হস্তক্ষেপের পক্ষ না।
এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সাম্প্রতিক এক পদক্ষেপ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করে। তবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবার নজিরবিহীনভাবে এসব প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য রেখেছে। পাশাপাশি বাজারে অর্থপ্রবাহ ঠিক রাখতে প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ৮০ টাকা মার্জিন ঋণ নেয়ার সুযোগ ৮ হাজার পয়েন্ট পর্যন্ত বাড়ায়। এর আগে সিদ্ধান্ত ছিল ৭ হাজার পয়েন্টের বেশি হলে মার্জিন ঋণ ১০০ টাকার বিপরীতে পাওয়া যাবে ৫০ টাকা।
পাশাপাশি বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলিষ্ঠ বক্তব্য রেখে বলেন, বাজার মোটেও অতিমূল্যায়িত নয়, বরং প্রতিবেশী ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে তা আরও বাড়ার সুযোগ আছে।
পুঁজিবাজারে গত ছয় মাসে বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারমূল্য বেড়ে ২ থেকে ৪ গুণ হয়ে গেলেও সেগুলোর বেশির ভাগ মূলত তার অভিহিত মূল্যের চেয়ে নেমে গিয়েছিল। বন্ধ বা লোকসানি বহু কোম্পানিকে আবার চালু করতে বিএসইসি বোর্ড পুনর্গঠনের মতো নজিবরিহীন উদ্যোগ নিয়েছে।
এরই মধ্যে দুটি কোম্পানি উৎপাদনে চলে এসেছে। আরও একটি কোম্পানি উৎপাদন শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। এই অবস্থায় অভিহিত মূল্যের অনেক নিচে নেমে যাওয়া কোম্পানিগুলো অভিহিত মূল্যের দিকে ছুটছে। এগুলো উৎপাদন শুরু করতে পারলে মুনাফা পাওয়া যাবে, এমন আশাতেই মূলত শেয়ার কিনছেন বিনিয়োগকারীরা।
এর মধ্যেও আয়, লভ্যাংশের ইতিহাস, সম্পদমূল্য বিবেচনায় নিলে সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের ব্যাংক খাত যে অবমূল্যায়িত, সে বিষয়ে এমনকি পুঁজিবাজার নিয়ে রক্ষণশীলদের মধ্যেও কোনো সংশয় নেই। আর দীর্ঘদিন পর এই খাতটির শেয়ারদর অল্প করে বাড়তে শুরু করেছে।
এই পর্যায়ে এসে কিছু ঘটনায় বাজার নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে আর ৯টি কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিএসইসির কমিটি গঠন নতুন উদ্বেগ তৈরি করে। তবে শেষ পর্যন্ত উত্থানের পথে যাত্রা করা পুঁজিবাজার এই চাপও কাটিয়ে নতুন উচ্চতার পথে যাত্রা শুরু করেছে।
ব্যাংকে দাম-লেনদেন দুটোই বাড়ল
মঙ্গলবার দল বেঁধে বাড়ার পর দুই কর্মদিবস আবার দর বেঁধে পতন হয়েছিল সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের এই খাতটিতে। তবে বৃহস্পতিবার শেষ আধা ঘণ্টায় ব্যাংকগুলো সেদিনের হারিয়ে ফেরা দরের অনেকটাই ফিরে পাওয়ার মধ্য দিয়ে রোববার ভালো করার আশা তৈরি করে রেখেছিল।
হয়েছে সেটিই। আর গত ছয় কর্মদিবসের ধারাবাহিকতায় আবার দিনে দাম বৃদ্ধির সর্বোচ্চ অবস্থান ছুঁয়েছে নতুন তালিকাভুক্ত সাউথ বাংলা ব্যাংক। ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত এই ব্যাংকটির শেয়ারদর এরই মধ্যে বহু বছর ধরে বাজারে নিয়মিত লভ্যাংশ দিয়ে আসা ১৫টির মতো ব্যাংকের দরকে ছাড়িয়ে গেল।
নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলেই বিনিয়োগকারীদের এভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এই ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয়, সম্পদমূল্য ও অন্যান্য সূচক নিশ্চিতভাবেই আগে থেকে বাজারে তালিকাভুক্ত অনেক ব্যাংকের তুলনায় দুর্বল। তবু ২০২০ সালে ১৫ এমনকি ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে এমন কয়েকটি ব্যাংকের শেয়ারদরকে ছাড়িয়ে গেল সাউথবাংলার দর।
আগের দিনের তুলনায় ১ টাকা ৭০ পয়সা বেড়ে এখন দর দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৩০ পয়সা।
দাম বৃদ্ধির দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে লোকসানি আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, যেটি ২০০৬ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরে কখনও লভ্যাংশ দিতে পারেনি। আগের কর্মদিবসে দাম ছিল ৬ টাকা ৩০ পয়সা। সর্বোচ্চ বাড়ার সুযোগ ছিল ৬০ পয়সা, বেড়েছে ৫০ পয়সা।
দীর্ঘদিন একটি স্থানে ঘুরপাক খাওয়া এনবিএল ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশের রেকর্ড ডেটের পর থেকে টানা বাড়ছে। আজ এক পর্যায়ে দিনে দাম বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে গিয়েছিল। তবে পরে ২০ পয়সা কমে লেনদেন শেষ করেছে ৮ টাকা ৮০ পয়সায়।
লেনদেনে ৩২টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে মাত্র দুটির। পাল্টায়নি দুটির। বেড়েছে বাকি ২৮ টির। এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৪০৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২৬৬ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
এ ছাড়া ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ৬.৬১ শতাংশ, স্যোসাল ইসলামী ব্যাংকের দর ৫.৫১ শতাংশ, এবি ব্যাংকের ৩.১৬ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংকের দর ৩.১২ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ২.৮৫ শতাংশ বেড়েছে।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন বস্ত্র খাতে
১০ বিলিয়ন ডলারের অর্ডার, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবৃদ্ধিতে ভিয়েতনাম এমনকি চীনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এই খাতের বন্ধ হয়ে যাওয়া দুটি কোম্পানি চালু হয়েছে বিএসইসির উদ্যোগে। আরও কয়েকটি কোম্পানির বোর্ড পুনর্গঠন হয়েছে। কয়েকটি কোম্পানির মালিকানা পরিবর্তনের গুঞ্জন আছে।
সব মিলিয়ে বস্ত্র খাতের শেয়ারে ব্যাপক আগ্রহ এখন বিনিয়োগকারীদের। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লেনদেনে বেশিরভাগ দিনই এই খাতের অবদানই থাকছে বেশি।
সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে এই খাতেরই আছে ৫টি। এতেই বোঝা যায় বিনিয়োগকারীরা এই খাতটি নিয়ে কতটা আগ্রহী।
এর মধ্যে যে দুটি কোম্পানি বিএসইসির উদ্যোগে নতুন করে চালু হয়েছে, সেই রিংসাইন টেক্সটাইল ও আলহাজ্ব টেক্সটাইল রয়েছে। অন্য তিনটি কোম্পানি হলো সোনারগাঁও টেক্সটাইল, মেট্রো স্পিনিং ও মিথুন নিটিং।
এই পাঁচটির দরই বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই।
এই খাতের ৫৮টি কোম্পানির মোট লেনদেন হয়েছে ৪৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে নয়টির। পাল্টায়নি দুটির দর। বাকি ৪৭টির শেয়ার দরই বেড়েছে বেড়েছে।
আগের দিন এই খাতে লেনদেন হয়েছিল ২৯৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
ছন্দপতনে বিমায়
টানা তিন কর্মদিবস বাড়ার মধ্য দিয়ে গত জুন থেকে শুরু হওয়া সংশোধন শেষের ইঙ্গিত দেয়া বিমা খাতে আবার দর পতন হলো। কমেছে লেনদেনও।
এদিন বিমা খাতের ৫১টি কোম্পানির মোট লেনদেন হয়েছে ২৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ৩১টির। দর পাল্টায়নি তিনটির। বাকি ১৭টির দর বেড়েছে।
আগের দিন এই খাতে হাতবদল হয়েছিল ৩৫৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
দর পতন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির তালিকায় ছিল বিমা খাতের আধিক্য। এদিন সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ৩.০১ শতাংশ। শেয়ার দর ১৪৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৪১ টাকা ৪০ পয়সা।
তারপরই আছে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার দর কমেছে ২.৯৭ শতাংশ। প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ২.২০ শতাংশ। গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ২.০৯ শতাংশ।
তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে যথাক্রমে ১.৯০ ও ১.৮০ শতাংশ করে। এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ১.৭৬ শতাংশ। এছাড়া সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৮৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১.৬৩ শতাংশ কমে হয়েছে ৮৪ টাকা।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
ব্যাংকের মতোই সংশোধন কাটিয়ে উত্থানে ফিরেছে আর্থিক খাতও। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত দীর্ঘদিন ধরে। বাকিগুলোর মধ্যে একটির দাম কমেছে, বেড়েছে বাকি ২১টির সবগুলোর।
দাম বৃদ্ধির দিন বেড়েছে লেনদেনও। হাতবদল হয়েছে ২০৯ কোটি ১ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
ব্যাপক চাঙাভাব লক্ষ্য করা গেছে প্রকৌশল খাতেও। দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনও। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে তিনটির, পাল্টায়নি চারটির, বাকি ৩৫টির দরই বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৫১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার এই খাতে লেনদেন ছিল ১৫৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।
ভালো দিন গেল ওষুধ ও রসায়ন খাতেও। এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে বেড়েছে ২১টির দর, কমেছে ৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল তিনটির দর।
খাতটিতে লেনদেন হয়েছে মোট ২১৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা যা আগের কর্মদিবসে ছিল ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
লেনদেন বেড়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেও। এই খাতে লেনদেন হয়েছে ২৫৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৬৬ কোটি ১৬ লাখ াকা।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৫টির, কমেছে সাতটির। পাল্টায়নি একটির দর।
সাধারণত ব্যাংকের শেয়ারের দার বাড়লে বাড়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দরও। তবে চলতি বছর আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণার পরেও এই খাত চাঙা হওয়ার বদলে উল্টো দৌড়ে। আজ ব্যাংক খাতে উত্থানের দিনও এই খাতে লেনদেনে ছিল মন্দাভাব। বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দাম বাড়া বা কমার মধ্যে ব্যবধান ছিল ১০ থেকে ২০ পয়সা। কেবল গ্রামীণ টুর দাম বেড়েছে ৬০ পয়সা।
সব মিলিয়ে ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ১২টির, কমেছে ৯টির, অপরিবর্তিত ছিল বাকি ১৫টির।
ঈদের আগে একদিনে লেনদেন ২০৪ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া এই খাতটিতে আজ হাতবদল হয়েছে ৪৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবসে অবশ্য তার চেয়ে কম ছিল; ৪২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
লেনদেন খুব একটা না বাড়লে তথ্য প্রযুক্তি খাত নিয়ে না বললেই নয়। এই খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টির, কমেছে একটির। লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা আগের কর্মদিবসে ছিল ৪৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে ১২টির দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৮টির। লেনদেন কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৬২ কোটি ৮২ লাখ টাকা যা আগের কর্মদিবসে ছিল ৫৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে সাতটির। দর কমেছে পাঁচটির। বাকি দুটির দর পাল্টায়নি। এদিন এ খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ২০৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। আগের কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ২০৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
গত প্রায় এক বছর ধরেই নিয়মিতভাবেই এই খাতের বেক্সিমকো লিমিটেড দিন লেনদেনের প্রথম তালিকায় থাকে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এই একটি কোম্পানিতেই লেনদেন হয়েছে ১৫৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮৪ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৮৪৪ পয়েন্টে। শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১৮ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৭৯ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২৮ দশমিক ০৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫১ পয়েন্টে।
ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৭০৬ কোটি ৩১ লাখ ৮১ হাজার টাকা। আগের কার্যদিবসে মোট লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২১৮ কোটি ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। অর্থাৎ একদিনেই লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ২০৮ দশমিক ২২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৯২১ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে মোট ১০০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২২) নামের বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংগী বিজিবি ক্যাম্পের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুবকের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু। গরু নিয়ে ফেরার পথে শুক্রবার ভোররাতে বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকু গুরুতর আহত হলে সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সীমান্তে। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
নিহত যুবকের মা মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল জানি না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাইদ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেতা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।
‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৬০ বছর বয়সী হাজী উমর আলী একই গ্রামের বাসিন্দা।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, প্রায় তিন-চার দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের পাহাড়ি ঢালে বোরো ধান ক্ষেতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি বন্য হাতি নেমে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির পালটি বাতকুচি গ্রামের ধান ক্ষেতে যায়। এ সময় উমর আলি ও গ্রামবাসীরা তাদের ফসল বাঁচানোর জন্য মশাল জ্বালিয়ে ডাক ও চিৎকার শুরু করেন।
একপর্যায়ে বন্যহাতির পালটি একটু পিছিয়ে যায়। পরে বাড়িতে যাওয়া সময় পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা হাতির পালটি উমর আলিকে ঘিরে ফেলে ও পা দিয়ে পিষ্ট করে।
বন বিভাগের ময়মনসিংহ মধুটিলা ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত উমর আলির পরিবারকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিলেটে মধ্যরাতে খোলা মাঠ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নগরের হাজারিবাগ এলাকার পেছনের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো অমিত দাস শিবু স্থানীয় দৈনিক উত্তরপূর্বর কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিবুর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নগরের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলেন অমিত। তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রাখা ছিল।’
তিনি জানান, রাত ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দেখে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এসএমপির উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তার মরদেহের পাশে মোটরসাইকেলটি চাবি লাগানো অবস্থায় রাখা ছিল, তবে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মোবাইলের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলেই দেখাচ্ছে।’
আজবাহার বলেন, ‘অমিতের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এরপরও ঘটনাটিকে রহস্যজনক ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:দেশের দুটি জেলায় অতি তীব্র ও ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ চলছে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে জানানো হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা এবং খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার (১০ জেলার মধ্যে বাকি আটটি) ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য