সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির ৪টিই ব্যাংক খাতের। বিমা খাতের আছে ৩টি। আর সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে ৫টি ব্যাংক আর বিমা ১২টি।
এই দুই খাতের আরও অনেক কোম্পানির দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
চাঙা পুঁজিবাজারেও ব্যাংক খাতের ঝিমিয়ে থাকা আর জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে টানা দর সংশোধন আর কত দিন চলবে, এমন আলোচনার মধ্যে সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে এই ঘটনা ঘটল।
এদিন আরও একটি ঘটনা ঘটল, যা বহু বছর দেখা যায়নি। খাতভিত্তিক লেনদেনে প্রথম স্থানে ছিল ব্যাংখ খাত। ২০১০ সালের মহাধসের পর এই চিত্র দেখা যায়নি বললেই চলে।
বিমা খাতে তাও দুই একটি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। তবে ব্যাংকে কমেনি একটির দরও। সব কটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দামও বেড়েছে। তবে সূচকে এই খাতের ভূমিকা খুব একটা বেশি হয় না কখনও।
দিন শেষে সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ৭৮৭ পয়েন্ট, যা ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সেদিন ডিএসই সূচক ছিল ৬ হাজার ৮২২ পয়েন্ট।
লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬৭৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় তিনশ কোটি টাকার মতো কম।
আগের দিন ২০১০ সালের মহাধসের পর সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯৫৩ কোটি ৯২ লাখ ৬৯ হাজার টাকার লেনদেন দেখেছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।
ব্যাংক-বিমায় দারুণ দিনে সম্প্রতিক উত্থান ঘটা বস্ত্র খাতে ঢালাও দরপতন হয়েছে। দিনের সবচেয়ে বেশি দর হারানো কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগ লোকসানি ও বন্ধ কোম্পানি। যদিও সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়ার তালিকাতেও বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানি আছে।
আর্থিক, প্রকৌশল, ওষুধ, খাদ্যসহ প্রধান অন্য খাতগুলোর কোম্পানিগুলোও দর হারিয়েছে বেশিরভাগ।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা ব্যাংকের দর বৃদ্ধি নিয়ে। ২০১০ সালের মহাধসের পর থেকে এমন চিত্র সচরাচর দেখা যায়নি।
তালিকাভুক্ত ৩২টি ব্যাংকের মধ্যে লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেটের কারণে লেনদেন বন্ধ ন্যাশনাল ব্যাংক বা এনবিএলের। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে সবগুলোর।
এই সবগুলোর দাম বৃদ্ধি কিছুদিন পর পর দেখা যায়। তবে আজকে যেটি হয়েছে, সেটি গত ২৭ মের পর আর হয়নি।
মাঝেমধ্যে সবগুলোর দাম বাড়ার ঘটনা ঘটলেও বৃদ্ধির হার ছিল খুবই কম। ১০ থেকে ৩০ পয়সা, কোনো কোনো একটি বা দুটি ব্যাংকের কিছুট বেশি।
গত ২৭ মেই ছিল ব্যতিক্রম। সেদিন সাতটি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয় দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায়। আরও চারটির দর এই সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে কিছুটা কমে। আরও তিনটির দর সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি গিয়ে কিছুটা কমে।
কিন্তু ব্যাংক খাত চাঙা পুঁজিবাজারেও তার অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। সূচক ও লেনদেন ১০ বছর আগের অবস্থান ছাড়িয়ে গেলেও সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ দেয়া এই খাতটির ঝিমিয়ে থাকা নিয়ে নানা আলোচনা ছিল।
২০২০ সালে ব্যাংকগুলো প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে, চলতি বছর অর্ধবার্ষিকে তাদের মুনাফা বিস্ময় জাগিয়েছে। গত বছর করোনার প্রথম বছরে প্রথম ছয় মাসে যে আয় ছিল, তার চেয়ে দেড়গুণ, দ্বিগুণ, আড়াইগুণ, তিন গুণ এমনকি প্রায় চার গুণ আয় হয়েছে বেশ কিছু ব্যাংকের। একটি ব্যাংক গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে।
এত সব ইতিবাচক ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে সম্প্রতি উদ্বেগ ছড়ায় ব্যাংকের অতিরিক্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ে যাবে-এমন খবরে। কিন্তু বিষয়টি এমন ছিল না। যে অর্থ অলস পড়েছিল, তা ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ বিনিয়োগ করছে ব্যাংকগুলো আর এর বিপরীতে অল্প করে হলেও আয় করছে তারা।
ব্যাংকে ‘আকাঙ্ক্ষিত’ উত্থান
বিমা, বস্ত্র, প্রকৌশল, ওষুধ, খাদ্য এমনকি মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে গত এক বছর দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। তবে সবচেয়ে বড় বাজার মূলধন ও মৌলভিত্তির ব্যাংক খাতের এই ঝিমিয়ে থাকা নিয়ে আলোচনা ছিল।
গত কয়েক দিনে অবশ্য একটি একটি করে বেশ কিছু ব্যাংকের শেয়ার দর বাড়তে শুরু করেছিল। তবে দল বেঁধে দাম বৃদ্ধির এই ঘটনাটি সচরাচর ঘটেনি।
এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির যে সীমা আছে, সেটি ছুঁয়েছে চারটি কোম্পানি। এগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, নতুন তালিকাভুক্ত সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামী ব্যাংক।
এ ছাড়া এই মূল্যসীমা ছুঁয়ে অল্প কিছু কমে লেনদেন শেষ করেছে রূপালী ব্যাংক। ব্যাংকটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৮.৪৫ শতাংশ।
এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংকের দর ৬.৩৪ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ৫.৭৯ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংকের ৫.৫৫ শতাংশ, পূবালী ব্যাংকের ৫.২৪ শতাংশ, এনসিসি ব্যাংকের ৪.৪৫ শতাংশ, ইউসিবির ৪.১৬ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার ৪ শতাংশ, সিটি ব্যাংকের ৩.৯৮ শতাংশ দাম বেড়েছে।
ব্যাংকের শেয়ারের দর বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের গতির বিষয়টি উল্লেখ না করলেই নয়। এই খাতে হাতবদল হয়েছে মোট ৪৫২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অন্য কোনো খাতে এত বেশি লেনদেন হয়নি।
আগের দিনও এই খাতে লেনদেন ছিল ২৭১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
ব্যাংকের শেয়ারে এই বিপুল পরিমাণ আগ্রহ সাম্প্রতিক সময় তো বটেই গত কয়েক বছরেও দেখা যায়নি।
বিমা ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ফেরা
গত এক বছরে পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এই খাতটির শেয়ারদর। গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এক দফা আর ৫ এপ্রিল থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কিছু কোম্পানির এবং দ্বিতী সপ্তাহ পর্যন্ত দাম বাড়তে থাকে আরও কিছু কোম্পানির। কিন্তু এরপর থেকে দাম কমতে থাকে।
মাঝে মধ্যে দুই এক দিন দাম বাড়লেও প্রায় প্রতিদিন কমতে কমতে শেয়ারদর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ নেমে যায়। কবে আবার এই খাত ঘুরে দাঁড়াবে, সেই অপেক্ষায় ছিলেন এই খাতের শেয়ারধারীরা।
তাদের জন্য স্বস্তি দিয়েছে মঙ্গলবারের লেনদেন।
দেশ, সোনারবাংলা ও গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর দিনের সর্বোচ্চ সীমায় ছুঁয়েছে।
এর বাইরে পূরবী জেনারেলের শেয়ারদর ৮.৩৭ শতাংশ, পপুলার লাইফের ৮.৩০ শতাংশ, প্রগ্রেসিভ লাইফের ৮.০৯ শতাংশ, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ৭.৯৫ শতাংশ, প্রগতির ৭.২৮ শতাংশ, প্রাইমের ৭.২২ শতাংশ, ফিনিক্সের ৭.১৩ শতাংশ, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের দাম বেড়েছে ৬.৬১ শতাংশ।
এই খাতে ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৪৮টির দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পরও লেনদেন সেভাবে বাড়েনি। হাতবদল হয়েছে ১৮৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের দিন ৪৪টি কোম্পানির দরপতনের মধ্যেও লেনদেন ছিল ১২৯ কোটি টাকা।
বিমার মতোই দরপতন শেষে উত্থানে ফিরেছে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকের মতো এই খাতেরও সব কটি ফান্ডের দাম বেড়েছে।
গত এক দশকে ফান্ডগুলো প্রত্যাশিত মুনাফা দিতে না পারলেও চলতি বছর আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ছাড়া অন্য ফান্ডগুলো যে লভ্যাংশ দিয়েছে, তার বেশিরভাগই সঞ্চয়পত্রের সুদহারের চেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
তার পরেও গত কয়েকদিন ধরে টানা দরপতন হচ্ছিল এই খাতে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর দিন লেনদেনও খানিকটা বেড়েছে।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৬৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
দর বৃদ্ধির হার অবশ্য বেশিরভাগ ফান্ডের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ৩০ পয়সার মধ্যে ছিল। হাতে গোণা দুই একটির বেড়েছে কিছুটা বেশি।
লোকসানি ও দুর্বল কোম্পানির বেশিরভাগ দর হারাল
আগের দিন যে ২৬টি কোম্পানি দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছিল তার মধ্যে ২০টি কোম্পানি ছিল হয় বন্ধ নয় বিপুল লোকসানে জর্জর।
তবে আজ দর হারানোর শীর্ষ তালিকায় দেখা গেছে এসব কোম্পানি। সবচেয়ে বেশি দর হারানো তাল্লু স্পিনিং, মিথুন নিটিং, নুরানী ডায়িংও অ্যাপোলো ইস্পাত গত কয়েক মাসে দাম বেড়েছে ব্যাপক। এর একটিও উৎপাদনে নেই। ফলে লভ্যাংশ আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তবে এই পতনের ভিড়েও উৎপাদন শুরুর ঘোষণা দেয়া স্টাইলক্রাফটের দর পরপর দ্বিতীয় দিন মূল্যবৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে।
আর্থিক খাতের বিআইএফসির শেয়ার দরেও একই ঘটনা ঘটেছে। বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণে ধুঁকতে থাকা কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির এই প্রবণতা একেবারেই সাম্প্রতিক।
অন্যান্য খাতের যে চিত্র
গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক চাঙাভাব দেখা দেয়া বস্ত্র খাতের পতন অনেকটাই ছিল চমকের মতো। এই খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দর হারিয়েছে ৪৮টিই। বেড়েছে বাকিগুলোর। লেনদেন হয়েছে ৪০৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
আগের দিন বেড়েছিল ৪৭টির দর। লেনদেন হয়েছিল ৪৮০ কোটি ১৭ রাখ টাকা।
ওষুধ ও রসায়ন খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে লেনদেন স্থগিত একটির। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫টির, কমেছে ১৪টির, অপরিবর্তিত ছিল একটির দর। লেনদেন হয়েছে ২১৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ২৪৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
প্রকৌশল খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ২৬টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ২টির। লেনদেন হয়েছে ২৫৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগেরদিন লেনদেন ছিল ৩০৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
আগের দিন লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আর্থিক খাতে শেয়ারের দরপতনের পাশাপাশি কমেছে লেনেদেন। এআ খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৭টির, কমেছে ১৪টির, অপরিবর্তিত ছিল একটির। লেনদেন হয়েছে ৩৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৪২৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৮টির, কমেছে ১৫টির। লেনদেন হয়েছে ১৫৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১৭৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৬টির, কমেছে ১৩টির, স্থগিত ছিল একটির। লেনদেন হয়েছে ৮২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৭৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩টির, কমেছে ৭টির, অপরিবর্তিত ছিল একটির। লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৪৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের ১৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪টির, কমেছে ১০টির। লেনদেন হয়েছে ১৬৭ কোটি ১২ লাখ টাকা। আগের দিন এই খাতে লেনদেন ছিল ২১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:যশোরের কেশবপুর উপজেলার বিল খুকশিয়া এলাকায় মাছের ঘেরের ভেড়িতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন চাষিরা। এ আবাদে ভালো ফলন পেয়ে বেশ লাভবান হচ্ছেন তারা। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন এ তরমুজ। তরমুজ চাষে লাভবান হওয়ায় অনেক কৃষক নতুন করে এ আবাদে ঝুঁকছেন। কৃষি বিভাগসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা তরমুজ আবাদ পরিদর্শন করে চাষিদের এ আবাদে উদ্বুদ্ধ করছেন।
কেশবপুর উপজেলা সদর থেকে ১৮ প্রায় কিলোমিটার দূরে শ্রীহরি নদীর তীরে অবস্থিত বিল খুকশিয়া। এ বিলের ৬ হাজার ৩৭৫ বিঘা ফসলি জমি দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর যাবৎ জলাবদ্ধতা থাকায় কৃষকেরা ফসল ফলাতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন। বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন করে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ২০০৫ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রীহরি নদীতে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এবং বিল খুকশিয়ার তলদেশ উঁচু করার জন্য জোয়ার আঁধার (টিআরএম) প্রকল্প গ্রহণ করলেও সফলতা মেলেনি। প্রকল্প শেষে জমির মালিক কৃষকরা বিলটিতে মাছের ঘের তৈরি করেন এবং মাছের ঘেরের ভেড়িতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করেন। তরমুজ চাষ করে কৃষকরা ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন।
সরেজমিন বিল খুকশিয়ায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘেরের বেড়িতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে। কৃষক ইকবাল হোসেন দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিনিধি হারুনার রশীদ বুলবুল কে বলেন, তিনি ১৩ বিঘা মাছের ঘেরের ভেড়িতে ১ হাজার ৪০০টি তরমুজের মাদা তৈরি করে ফলন পেয়েছেন ২৭৫ মণ। প্রতি মণ তরমুজ ১ হাজার ২০০ টাকা করে বিক্রি করছেন। তিনি সর্বোচ্চ ১৪ কেজি ওজনের তরমুজ পেয়েছেন। একইভাবে আবদুল হালিম খান মাছের ঘেরের ভেড়িতে ১২০টি মাদা তৈরি করে ৩০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। কৃষক আবদুল কুদ্দুস ৭ বিঘা মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষ করেছেন। তার উৎপাদিত তরমুজ আকারেও বেশ বড়। সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি কে বলেন , দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর বিল খুকশিয়া জলাবদ্ধতা হয়ে থাকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। ২০০৫ সালে ওই বিলে টিআরএম প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্প শেষে বিলটিতে কৃষকরা মাছের ঘের তৈরি করেন। ওইসব ঘেরের ভেড়িতে এ বছর কৃষকরা তরমুজ চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। ধান, মাছ চাষের পাশাপাশি তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফিরেছে। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় অনেক শিক্ষিত যুবক গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করায় ব্যাপক সাড়া দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিল খুকশিয়ায় মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষ ওই এলাকার কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করছে। এশিয়ান-১, পাকিজা সুপার, ব্লাক কিং, ব্লাক কুইন জাতের তরমুজ এখানে বেশি আবাদ করা হয়েছে। এ চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ব করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন দৈনিক বাংলা কে বলেন, মাছের ঘেরের ভেড়িতে তরমুজ চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি চাষ করে এলাকার কৃষকরা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের তরমুজ চাষে উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমার পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করবো।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১০ কাঠার প্লট নেওয়ার ঘটনায় দুদকের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া তাকে গ্রেপ্তার দেখান। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।
এদিন খায়রুল হককে আদালতে হাজির করা হয়।
এরপর তার উপস্থিতিতে শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে আদালত তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এসময় আসামিপক্ষে আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহিন জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ৬ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে খায়রুল হকসহ আটজনকে আসামি করা হয়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, সদস্য (অর্থ ও এস্টেট) আ.ই.ম গোলাম কিবরিয়া, সদস্য মো. আবু বক্কার সিকদার, সদস্য (পরিকল্পনা) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, সদস্য (এস্টেট) আখতার হোসেন ভুইয়া, সাবেক যুগ্ম সচিব ও সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল আলম এবং সদস্য (প্রশাসন ও ভূমি) নাজমুল হাই।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর ২ নম্বর শিক্ষা সম্প্রসারণ সড়কে (নায়েম রোড) পৌনে ১৮ কাঠা জমির ওপর ৬ তলা পৈতৃক বাড়ি রয়েছে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের। কিন্তু তিনি দেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দ্য ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (অ্যালটমেন্ট অব ল্যান্ডস) রুলস, ১৯৬৯ এর বিধি ১৩ লঙ্ঘনের মাধ্যমে হলফনামা দাখিল করে রাজউকের ১০ কাঠা প্লট বাগিয়ে নেন। খায়রুল হক প্লট বরাদ্দের শর্ত ভঙ্গ করে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। রাজউকের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় সুদ মওকুফের কোনো বিধান না থাকা সত্ত্বেও প্লট বরাদ্দের জন্য সাময়িক বরাদ্দপত্রে শর্ত ভঙ্গ করেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদসহ কিস্তির টাকা জমা না দিয়ে অবসরের পর অর্থাৎ বরাদ্দের ৫ বছর পর সুদবিহীনভাবে টাকা জমা দেন।
এ ক্ষেত্রে রাজউকের প্রচলিত নীতিমালা ভঙ্গ করে বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করে সুদবাবদ চার লাখ ৭৪ হাজার ২৪০ টাকা পরিশোধ না করে সরকারের ক্ষতিসাধন ও আত্মসাৎ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
গত ২৪ জুলাই সকালে ধানমণ্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় ওইদিন রাতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২৯ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে বেআইনি রায় দেওয়া ও জাল রায় তৈরির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় করা মামলায় তাকে ভার্চুয়ালি গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ৩০ জুলাই বিচারক হিসেবে দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় প্রদানসহ জাল রায় তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানার মামলায় তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত ৭ আগস্ট তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঝিনাইদহের মহেশপুরে মাত্র ৩ টাকায় পাওয়া যায় সুস্বাদু রসগোল্লা। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবে এ মিষ্টির স্বাদ এমন যে, একবার খেলে আবারও কিনতে ইচ্ছে হয়। আকারে ছোট হলেও স্বাদে বড় বড় দোকানের মিষ্টিকেও হার মানিয়েছে এই রসগোল্লা। খাঁটি ছানার তৈরি হওয়ায় মুখে দিলেই গলে যায়। এতে নেই কোনো ভেজাল, কৃত্রিম রং বা অতিরিক্ত ঘ্রাণ; কেবল খাঁটি দুধের স্বাদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহেশপুর উপজেলার শিবানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমাল ঘোষ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজ হাতে তৈরি মিষ্টি বিক্রি করছেন। প্রতিদিন সকালে বাইসাইকেল নিয়ে বের হন তিনি এবং মহেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে রসগোল্লা বিক্রি করেন। আগে প্রতিটি রসগোল্লা বিক্রি হতো ২ টাকায়, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকায়। দাম সামান্য বাড়লেও ক্রেতার চাহিদা কমেনি, বরং বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পিস রসগোল্লা বিক্রি করেন তিনি। সেই আয়ে চলে তার সংসার।
স্থানীয় ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৩ টাকায় এত সুস্বাদু রসগোল্লা পাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমরা প্রতিদিনই তার কাছ থেকে কিনি। দাম কম, স্বাদ অসাধারণ।’
আরেক ক্রেতা স্কুলশিক্ষক মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বড় দোকানের রসগোল্লার চেয়ে সুমাল ঘোষের বানানো রসগোল্লা অনেক বেশি খাঁটি ও সুস্বাদু। তাই বাজারে যত মিষ্টির দোকানই থাকুক, মানুষ ওনার কাছেই ভিড় জমায়।’
মহেশপুরের বাসিন্দা রাসেল হোসেন বলেন, ‘সুমাল ঘোষের রসগোল্লা এখন এলাকার একটি জনপ্রিয় নাম। কম দামে মানসম্মত মিষ্টি পাওয়ায় প্রতিদিনই তার ক্রেতা বাড়ছে।’
এ বিষয়ে সুমাল ঘোষ বলেন, ‘কম লাভ, বেশি বিক্রিই আমার ব্যবসার নীতি। দিনে এক হাজার পিস বিক্রি করতে পারলেই সংসার চলে যায়। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় মানুষ আমার মিষ্টির স্বাদ পছন্দ করছে, এটিই আমার বড় প্রাপ্তি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন আগামীকাল বৃহস্পতিবার। ৩৩ বছর পর হচ্ছে এই নির্বাচন। কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫ পদে লড়ছেন ১৭৭ জন। হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৪৫ জন। কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ৯ ও জিএস পদে লড়ছেন আটজন। শেষ মুহূর্তে জিএস পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া। অন্যদিকে হাইকোর্টের আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর চেম্বার আদালতে এ রায় স্থগিত হওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়।
নির্বাচনে ভোটার ১১ হাজার ৯১৯ জন। ভোটারের ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ ছাত্রী। প্রচার শেষ হয়েছে গতকাল রাত ১২টায়। এদিন সকাল থেকে প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বিভিন্ন প্যানেলের ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন এলাকায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম প্যানেলের প্রার্থীদের প্রচার চালাতে দেখা যায়। ভোটারদের সবার কাছে পৌঁছাতে না পারলেও প্রার্থীরা বলছেন, আদর্শ, যোগ্যতা, নৈতিকতা ও শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ বিবেচনায় শিক্ষার্থীরা প্রার্থী বেছে নিবেন।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের জিএস প্রার্থী শাকিল আলী বলেন, ‘সব হলের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো কঠিন। গণঅভ্যুত্থানের আগে ও পরে যারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে থেকে কাজ করেছেন, তাদের যেন শিক্ষার্থীরা বেছে নেন।’
ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের জিএস প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যোগ্য, নৈতিকভাবে সৎ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করবেন– এমন প্রার্থীদের বেছে নিবেন বলে প্রত্যাশা করি।’
বুথ ২২৪টি, নিরাপত্তায় পুলিশ-আনসার
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, জাকসু নির্বাচনে বিভিন্ন হলে ২২৪টি বুথ বসানো হবে। ব্যালট পেপারে টিক চিহ্নের মাধ্যমে ভোট দিতে হবে। প্রতি ২০০ ব্যালট পেপারের জন্য একটি বাক্স থাকবে। কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের ব্যালট বাক্স আলাদা করে চিহ্নিত থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ৬৭ জন পোলিং এজেন্ট এবং ৬৭ জন সহকারী অফিসার কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিত থাকবেন, যারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি গেটে এক হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য আনসার মোতায়েন করা হবে।
দুই হলে হবে না হল সংসদের ভোট
হল সংসদ নির্বাচনে বেগম সুফিয়া কামাল হল ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে সব প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। এই দুই হলে শুধু কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। বেগম সুফিয়া কামাল হলে ১৫ পদের ১০টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন, বাকি পাঁচ পদ শূন্য রয়েছে। নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে ১৫ পদের ছয়টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন প্রার্থীরা, বাকি ৯টি পদ শূন্য রয়েছে।
প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক
গতকাল সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হয়। কেন্দ্রীয় সংসদের ১৬৩ জন ও হল সংসদের ৪০৩ জন পরীক্ষার নমুনা দিয়েছেন। বাধ্যতামূলক করা হলেও ৫৬ প্রার্থী নমুনা দেননি।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের বাগোয়ান কান্দিরপাড়া গ্রামে মন্ডল গ্রুপ ও সর্দার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সর্দার গ্রুপের দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও চারজন।
নিহতরা হলেন ওই গ্রামের মৃত হামের সর্দারের ছেলে সারফান সর্দার (৫০) এবং তাঁর ভাগনে মৃত বিছার সর্দারের ছেলে বাইজিদ সর্দার (৩৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাগোয়ান কান্দিপাড়া বাজার এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সারফান সর্দার। গুরুতর আহত অবস্থায় বাইজিদ সর্দারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। আহত আরও চারজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নিহত সারফান সর্দারের মেয়ে মিম খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পাশের একটি বাগানে আমার বাবাকে পা কেটে ও গলা কেটে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা।’
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে সর্দার গ্রুপের দুজন নিহত হয়েছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে পাশাপাশি সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। এ ঘটনায় রাতেই তিন থেকে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার সহধর্মিণী রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন।
আজ সকালে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সাংবাদিকদের জানান, রাহাত আরা বেগমের চিকিৎসকের শিডিউল আগে থেকেই নেওয়া ছিল। সেই অনুযায়ী আজ তারা সিঙ্গাপুর গেছেন।
তিনি জানান, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা রওনা হন। তবে, চিকিৎসার জন্য তারা কতদিন সিঙ্গাপুরে থাকবেন, তা জানাননি শায়রুল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি লকার জব্দ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
বুধবার সকালে পূবালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় থাকা লকারটি জব্দ করা হয়। সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবীব সমকারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পূবালী ব্যাংকের সেনা কল্যাণ ভবনে অবস্থিত একটি লকারের সন্ধান পাওয়া গেছে (লকার নং-১২৮)। এই লকারের দুইটি চাবির মধ্যে একটি শেখ হাসিনার কাছে রয়েছে।
আহসান হাবীব আরও জানান, সিআইসির একটি টিম লকারটি জব্দ করেছে। বিস্তারিত পরে জানানো হব।
মন্তব্য