× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

পুঁজিবাজার
Beximco Groups rise to prominence after the push of the investigation
google_news print-icon

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

তদন্তের-ধাক্কা-কাটিয়ে-উত্থান-বেক্সিমকো-গ্রুপের-রমরমা
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ফ্যাক্টরি
বেক্সিমকো গ্রুপের চার কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শাইনপুকুর সিরামিকস ও আইএফআইসি ব্যাংকের দাম বেড়েছে একই দিনে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ৫টি কোম্পানির ৩টি এই গ্রুপের আর ১০টি কোম্পানির ৪টি। মোট লেনদেনের ১৬ শতাংশই হয়েছে এই একটি গ্রুপে।

৯টি কোম্পানির ‘অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির’ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের ঘটনায় দুই দিনের হোঁচটের পর পুঁজিবাজার ফিরেছে চাঙাভাবে। বেশ বড় উত্থান হয়েছে সূচকে। একই সঙ্গে বেড়েছে ব্যাংক, আর্থিক খাত, প্রকৌশল, খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ এবং বস্ত্র খাত।

এই উত্থানের ভিড়ে একটি গ্রুপের মালিকানাধীন চারটি কোম্পানির প্রতিটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দর বৃদ্ধির বিষয়টি ছিল উল্লেখযোগ্য।

বেক্সিমকো গ্রুপের চার কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শাইনপুকুর সিরামিকস ও আইএফআইসি ব্যাংকের দাম বেড়েছে একই দিনে।

এগুলোর মধ্যে শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শাইনপুকুরের দাম। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বেক্সিমকো লিমিটেড, যে কোম্পানিটি নিম্ন আয়ের চক্র ভেদ করে করোনার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে পিপিই রপ্তানি করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

ভারত থেকে করোনার টিকা আসায় মধ্যস্থতা করার পর দ্বিগুণের বেশি বেড়েছিল বেক্সিমকো ফার্মা। টিকা আসায় অনিশ্চয়তায় দর হারানো কোম্পানিটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর ব্যাংকগুলোর মধ্যে সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বাড়ছে গত অর্থবছরে এই খাতে সবচেয়ে কম লভ্যাংশ দেয়া আইএফআইসি ব্যাংক।

কেবল দাম বাড়ছে এমন নয়, দিনের সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানির ৪টিই এই বেক্সিমকো গ্রুপের।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

তবে পুঁজিবাজারে ভালো দিনেও বিমা খাতের শেয়ারগুলোর দর হারানো থামেনি। সেই সঙ্গে আশা জাগিয়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত যে ঘুম দিয়েছে, সেখান থেকে ওঠার কোনো নামই নেই।

গত মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে আদেশ আসে যে, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, এমারেল্ড অয়েল, ন্যাশনাল ফিড মিল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ঢাকা ডায়িং এবং ফুয়াং সিরামিক কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত হবে।

এই তদন্তের আদেশ জারির আগের দিন গত সোমবার ২ হাজার ৯৩৫ কোটি ৭ লাখ ৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছিল। তার পরের দিন লেনদেন চলাকালে আদেশ জারির পর সূচক কিছুটা কমার পাশাপাশি লেনদেনও কমে দেড় শ কোটি টাকার মতো।

তবে তদন্তের আদেশের প্রকৃত প্রভাব পড়ে বুধবার। মঙ্গলবারের তুলনায় লেনদেন ৬০০ কোটি টাকা কমে ২ হাজার ২১২ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে।

আর এ অবস্থায় দীর্ঘ এক দশকের মন্দাভাব থেকে চাঙা হয়ে ওঠা পুঁজিবাজারে নতুন কোনো অস্থিরতা তৈরি হয় কি না, এ নিয়ে শুরু হয় সংশয়।

তবে যেসব কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে তদন্তের ঘোষণা এসেছে, তার মধ্যে অন্তত ৪টির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে, আরও কয়েকটি কোম্পানি ভালো করছে আর একই রকম দাম বৃদ্ধি পাওয়া অন্য কোম্পানিকে রেখে কেবল এগুলোর তদন্ত কেন, সে প্রশ্ন উঠেছে।

আর তদন্তের এ ধরনের নির্দেশনা এবারই প্রথম এসেছে এমন নয়। এর আগেও এসেছে এবং সেসব নির্দেশনা প্রত্যাহার হয়েছে। আর এ ধরনের তদন্তে বিশেষ কিছু পাওয়া যায়, এমনও নয়।

এ বিষয়গুলো সামনে আসার পর বিনিয়াগকারীদের উদ্বেগ যে কাটতে শুরু করেছে, তা বৃহস্পতিবারের লেনদেনেই স্পষ্ট। সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুতেই যে সূচক বেড়েছিল, সেখান থেকে আর কমেনি বরং সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে।

সোয়া এক ঘণ্টা যেতে না যেতেই ১ হাজার কোটি আর আড়াই ঘণ্টাতেই লেনদেন ছাড়িয়ে যায় ২ হাজার কোটি টাকার ঘর। বেলা দুইটায় লেনদেন আগের দিনের লেনদেনকে ছাড়িয়ে সোয়া ২ হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করে।

দিন শেষে সূচক আগের দিনের তুলনায় বাড়ে ৮০ পয়েন্টের কাছাকাছি। আর এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন আবার আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান এখন ৬ হাজার ৬৯৯ পয়েন্ট। ডিএসইর সূচক এর চেয়ে বেশি ছিল ২০১১ সালের ২৪ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।

সেদিন ডিএসই সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৭১০ পয়েন্ট। সেটি অতিক্রম করতে পারলে পরের ধাপ ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ৭১৯ পয়েন্ট।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

পিপিই পার্ক উদ্বোধন করার পর বেক্সিমকোর আয় বেড়েই চলছে, বাড়ছে কোম্পানিটির শেয়ারের দামও। ছবি: নিউজবাংলা

বেক্সিমকো গ্রুপের কী চিত্র

এই গ্রুপের কেবল শেয়ারদর বেড়েছে এমন নয়, এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানির চারটিই এই গ্রুপের। এর মধ্যে যথারীতি শীর্ষে বেক্সিমকো লিমিটেড, যে কোম্পানির অর্থেক লেনদেনও হয়নি অন্য কোনো কোম্পানিতে।

এই গ্রুপে লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি টাকারও বেশি, যার অর্ধেকের বেশি হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডে। এদিন বাজারে মোট লেনদেন ছিল ২ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার কিছু বেশি। অর্থাৎ এই লেনদেনের কেবল ১৬ শতাংশ হয়েছে একটি গ্রুপেই।

বিবিধ খাতে যেমন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোতে, তেমনি ব্যাংক খাতে এই গ্রুপের আইএফআইসি, ওষুধ খাতে গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মা আর সিরামিক খাতে শাইনপুকুর সিরামিকসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে।

২০১০ সালে পুঁজিবাজারে মহাধসের আগে বেক্সিমকো লিমিটেডের দর ৩০০ টাকার বেশি হয়ে যায়। শেয়ারপ্রতি আয়ও তখন ছিল ৩০ টাকার বেশি। তবে বাজার ধসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোম্পানিটির আয়ও কমতে থাকে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি আয় ৫১ পয়সায় নেমে আসার পর শেয়ারমূল্যও নেমে আসে ১৩ টাকায়। তবে করোনার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাসামগ্রী রপ্তানির বড় আদেশ পাওয়ার পর থেকে তাদের আয় ক্রমাগত বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে শেয়ারমূল্য।

সেই সঙ্গে কোম্পানিটি সুকুক বন্ডের মাধ্যম ৩ হাজার কোটি টাকা তুলে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের অনুমোদন পাওয়ার পর টাকা তোলাও শুরু করে দিয়েছে।

সুকুক বন্ডের অনুমোদন-প্রক্রিয়া চলাচালে শেয়ার মূল্য ৯০ থেকে ১০০ টাকার ভেতর ঘোরাঘুরি করছিল। তবে ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো শেয়ারমূল্য ১০০ টাকার ওপরে গিয়ে লেনদেন শেষ হয় বুধবার।

গত বছরের শেষ সময় থেকেই এই কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এতটাই বেড়েছে যে অন্য কোনো কোম্পানি লেনদেনের শীর্ষ স্থানে থাকতে পেরেছে কেবল হাতে গোনা দু-এক দিন।

বেলা দেড়টা বাজার আগেই এই কোম্পানিতে লেনদেন দুই শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়, যেখানে গোটা বাজারের লেনদেন তখনও দুই হাজার কোটি টাকা হয়নি।

আগের দিনের শেয়ার দর বেড়েছিল ৪ টাকা ৭০ পয়সা। ৯৭ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয় ১০২ টাকা ৬০ পয়সা। আজ দিনের লেনদেন শুরু করে ১০৪ টাকায়। একপর্যায়ে দাম বেড়ে ১১০ টাকা ২০ পয়সা হয়ে যায়। কিন্তু পরে কিছুটা কমে লেনদেন শেষ করে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সায়।

কোম্পানিতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৫৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ১০ শতাংশের মতো।

একই গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মা দেশসেরা ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানির একটি। তবে শেয়ার দর গত কয়েক বছর ধরে ৯০ থেকে ১২০ টাকার ঘরে ঘুরপাক খেত। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা আনতে কোম্পানিটি লোকাল এজেন্ট হওয়ার পর থেকে তাদের দাম বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তা ২১৬ টাকা ৯০ পয়সা হয়ে যায়।

সরকারের সঙ্গে চুক্তিটি ছিল এমন: প্রতি টিকায় তারা পাবে ১ ডলার করে, অর্থাৎ ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকায় ৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৯০ কোটি টাকা।

তবে ছন্দপতন ঘটে ভারতে করোনার ব্যাপক বিস্তারের কারণে। সে দেশের সরকারের নিষেধাজ্ঞায় সিরাম ৭০ লাখের পর আর টিকা পাঠাতে পারেনি আর এ কারণে বেক্সিকমকো ফার্মার প্রত্যাশিত আয়ও হয়নি। এই অনিশ্চয়তায় শেয়ার দর কমতে কমতে ১৬৮ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে।

তবে গত ১ জুন থেকে ধীরে ধীরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন তা আবার ২০০ টাকার আশপাশে চলে এসেছে।

সবচেয়ে বেশি লেনদেনের পঞ্চম স্থানে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৩ টাকা ১০ পয়সা যোগ হয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে ১৩৩ টাকা ৭০ পয়সায়। হাতবদল হয়েছে মোট ৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার।

অন্যদিকে ২০২০ সালে আয় কমায় লভ্যাংশ মাত্র ৫ শতাংশ দেয়ার কারণে আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচে নেমে গিয়েছিল। সম্প্রতি বা বাড়তে বাড়তে ১৫ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো দাম বাড়ার পর ধরে রাখতে পারছে না ইদানীং। ব্যতিক্রম আইএফআইসি ব্যাংক।

এই ব্যাংকটির দাম টাকা চার কর্মদিবস বাড়ল। গত ২ আগস্ট শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১৩ টাকা ৫০ পয়সা। সেটি বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষ করেছে ১৬ টাকা ৮০ পয়সায়।

সবচেয়ে বেশি লেনদেনের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা এই কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে মোট ৭৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এই গ্রুপের অন্য কোম্পানি শাইনপুকুর সিরামিকস সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়ার তালিকায় ছিল ১০ নম্বরে।

২০১৫ সালে ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশের পর ২০১০ সালে শেয়ারপ্রতি ২০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৭ জুনও ছিল ২৫ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার এক দিনেই ৩ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ৩০ পয়সায়।

কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হয়েছে মোট ৪২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

এক দিনের ব্যবধানে ব্যাংক-আর্থিক খাতে ভালো দিন

মঙ্গলবার ৯ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্তে বিএসইসির আদেশ জারির দিন প্রায় সব খাতে দরপতন হলেও ব্যাংক ও আর্থিক খাতের দর বৃদ্ধি সূচকের বড় পতন হতে দেয়নি। ব্যাংকে দাম বৃদ্ধির পরিমাণটা খুব বেশি না হলেও সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের খাত হওয়ায় তার কিছুটা প্রভাব থাকে।

তবে নানা সময় দেখা গেছে ব্যাংকে দাম বৃদ্ধি হলেও তা টেকে না। আর একদিন দাম বাড়লে পরের কয়েক দিন ধরে কমে।

অতীতের সেই ধারাবাহিকতা দেখা যায় ‍বুধবার। আগের দিন যেমন অল্প করে কিছু বেড়েছিল, পরদিন অল্প করে কমে যায় বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে আবার অল্প করে বেড়েছে বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর। এর ভিড়ে অবশ্য এবি ও আল আরাফাহ ব্যাংকের দর বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

এবির শেয়ার দরে আগের দিনের দামের সঙ্গে যোগ হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা, আর আল আরফাহর দামের সঙ্গে ১ টাকা ৪০ পয়সা। নতুন তালিকাভুক্ত সাউথ বাংলার শেয়ারদর আবার ১০ শতাংশ বা ১ টাকা ১০ পয়সা বেড়েছে।

বাকিগুলোর দাম বাড়া বা কমা-কোনোটার হারই খুব একটা বেশি না। ১০ থেকে ৩০ পয়সার মধ্যে রয়েছে দাম উঠানামা।

সব মিলিয়ে এই খাতে বেড়েছে ২৬টির দর, কমেছে ৬টির। লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২১৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আজ হয়েছে ২২০ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক খাতে দাম বৃদ্ধির হার বেশি। জিএসপি ফিনান্সের ১ টাকা ১০ পয়সা, বে লিজিং, ডিবিএইচ ও আইডিএলসি ও ইউনাইটেড ফিনান্সের ১ টাকা ৭০ পয়সা করে, বিডি ফিনান্সের ২ টাকা ২০ পয়সা, উত্তরা ফিনান্সের ২ টাকা ৬০ পয়সা, আইপিডিসির ২ টাকা ৮০ পয়সা, লঙ্কাবাংলা ফিনান্সের ৩ টাকা ২০ পয়সা, ন্যাশনাল হাউজিং ফিনান্সের শেয়ারের দর বেড়েছে ৪ টাকা ২০ পয়সা করে। আগের দুই দিন সর্বোচ্চ মূল্যসীমা স্পষ্ট করা ইসলামিক ফিনান্স তৃতীয় দিনের মতো বেড়েছে ৮০ পয়সা।

এই খাতে লেনদেনও হয়েছে ব্যাংপক। প্রকৌশল ও বিবিধ খাতকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে খাতটিতে। হাতবদল হয়েছে ৩৫০ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন ছিল ২০০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

বিমা নিয়ে সাবধানবাণী গায়ে না মেখে এখন হতাশা

গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক দফা আর চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে জুনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বিমা খাতে দ্বিতীয় দফা চাঙাভাব দেখা দেয়। কোম্পানির আয়, লভ্যাংশের সম্ভাবনা বিচার না করে উড়তে থাকে দাম। বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারদর এই সময়ের মধ্যে তিন থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে।

এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে বারবার বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ তা কানেই তোলেননি। বর যারা সতর্ক করেছেন, তাদেরকে কটূ কথা শুনিয়েছেন।

আর ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন পেজে কয়েকজন ব্যক্তি একে ‘রকেট সেক্টর’ আখ্যা দিয়ে প্রলুব্ধ করেছে। তারা বারবার নানা চার্ট আর কথিত টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস ব্যাখ্যা করে বোঝাতে চেয়েছেন দাম আরও বাড়বে।

তবে ১৪ জানুয়ারি থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এক দফা সংশোধনে কোম্পানিগুলো ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ দর হারিয়ে ফেলার মতোই এবারও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ দর হারিয়েছে বহুগুলো।

প্রায় প্রতিদিনই বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক ফেসবুক পেজে তাদের হতাশার কথা বলেন। আশা করেন আগামী দিন থেকে বিমা খাত ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু পরের দিন দাম আরও কমায় সেই হতাশা বাড়ে।

এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৭ টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৪৩ টির। দাম ধরে রাখতে পেরেছে ১টি।

এই খাতে লেনদেন হয়েছে ১২৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১০৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আইসিবির পেরেক

জুনে অর্থবছর শেষ করা ৬টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের রেকর্ড লভ্যাংশের পর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আইসিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত আটটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড গত রাতে তাদের লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের নোটিশ বোর্ডে বৃহস্পতিবার সেটি প্রকাশ হয়েছে।

গত বছরের মন্দাবাজারে ফান্ডগুলো লোকসান না দেয়নি। কিন্তু এবার চাঙা বাজারে তাদের আয় হয়েছে খুবই কম। সবচেয়ে বেশি আয় করেছে যে ফান্ডটি, সেটি ইউনিটপ্রতি ৬৮ পয়সা মুনাফা করতে পেরেছে। আর আটটি ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা হয়েছে ৪ থেকে ৮ শতাংশ।

এর আগে লভ্যাংশ ঘোষণা করা বেসরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির ফান্ডগুলো সর্বনিম্ন ১ টাকা থেকে ১ টাকা ৭৫ পয়সা দেবে ইউনিটধারীদের। এসব ফান্ডের মধ্যে সবচেয়ে কম আয় করেছে যেটি, সেটিও ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৮১ পয়সা মুনাফা করেছে। সবচেয়ে বেশি মুনাফা করা ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ৩ টাকা ১৪ পয়সা আয় করেছে।

৯ টাকার ঘরে ফান্ড ১ টাকা ২০ পয়সা আর ১২ টাকার ঘরের ফান্ড ১ টাকা ৫০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পরেও সেগুলোর দাম কমছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আইসিবির ফান্ডগুলোর নিম্ন আয় ও লভ্যাংশ। সব মিলিয়ে ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে দর হারিয়েছে ২৬ টি। আগের দিনের দর ধরে রাখতে পেরেছে ৭ টি। আর বেড়েছে কেবল তিনটির।

জুনে অর্থবছর শেষ হয়েছে এমন ফান্ডের সংখ্যা পুঁজিবাজারে ২৯টি। এর মধ্যে আরও দুটি লভ্যাংশ ঘোষণা করবে বিকেলে। বাকি ১৩টি এখন সভা ঘোষণা সংক্রান্ত তারিখ জানায়নি।

এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৭৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

মূল উত্থান বস্ত্র খাতে

এই খাতে লেনদেন হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৬১ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১২৩ কোটি টাকা বেশি। বুধবার হাতবদল হয়েছিল ৩৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার।

এই খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া ৫টিই এই খাতের কোম্পানি। এগুলোর দাম বেড়েছে একদিনে যত বাড়া সম্ভব ততই।

কোম্পানিগুলো হলো সিএনএ, রিংসাইন, তাল্লু, নুরানী ও আলিফ।

এর মধ্যে রিংসাইনের বোর্ড পুনর্গঠনের পর সেটি উৎপাদনে চলে এসেছে। বন্ধ থাকা তাল্লুর দাম গত কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে। গত এপ্রিলেও শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৪ টাকার নিচে।

অন্যদিকে নুরানীর মালিকপক্ষ কাউকে না জানিয়ে কোম্পানি বন্ধ করে দিয়েছে বলে সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিদর্শনে বেরিয়ে এসেছে। এই খবরে বুধবার কোম্পানিটির শেয়ার দর প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়। তবে রাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এই কোম্পানিটির বোর্ড ও পুনর্গঠন করে দিয়েছে। এই খবরে আবার চাঙা হলো দাম।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা
ডিএসইতে লেনদেনের সবশেষ চিত্র

অন্যান্য খাতের চিত্র

জুনে অর্থবছর শেষ করে লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা প্রকৌশল খাতে আবার চাঙাভাব দেখা গেছে। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৮টির। কমেছে ১২টির আর দুটির দাম ছিল অপরিবর্তিত।

লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২৭৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সেটি বেড়ে হয়েছে ২৮৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

প্রধান অন্য খাতগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এক দিনের বিরতিতে আবার চাঙা হয়েছে। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩টির, কমেছে ৮টির আর পাল্টায়নি দুটির দর। লেনদেন হয়েছে ১১৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

ওষুধ ও রসায়ন ভাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ১৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল একটির দর। লেনদেন হয়েছে মোট ২৪৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ২২১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ৬টির। লেনদেন অবশ্য কমেছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৭৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। আজ হয়েছে ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৭টির, কমেছে ৪টির শেয়ার দর। লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

বেক্সিমকো লিমিটেডের বদৌলতে বিবিধ খাত লেনদেনের তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে। এই খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে ৩টির দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ১১টির। হাতবদল হয়েছে মোট ৩২৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের দিন যা ছিল ২৬৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন:
বড় পতন থেকে রক্ষা ‘হতাশার ব্যাংকে’
‘নিলাম আতঙ্ক’ কাটিয়ে ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ লেনদেন
তুমুল আগ্রহের রবি আর জ্বলেনি
স্কয়ার-বিকনের শেয়ারের সমান দাম কী বার্তা দেয়?

মন্তব্য

আরও পড়ুন

পুঁজিবাজার
The negotiation of the consensus will be a peaceful solution to political differences Press Secretary

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক মতভিন্নতার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে : প্রেস সচিব

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক মতভিন্নতার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে : প্রেস সচিব বৃহস্পতিবার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে শফিকুল আলম। ছবি : পিআইডি

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা এখনও চলমান রয়েছে এবং এই আলোচনার মাধ্যমেই রাজনৈতিক মতভিন্নতার শান্তিপূর্ণ সমাধান আসবে।

ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য দলের বিক্ষোভ কর্মসূচি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে প্রেস সচিব ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমেই সবকিছুর সমাধান হবে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম জানান, চলতি বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেবেন। তিনি স্পষ্ট করেন, এই সফর বাংলাদেশের নির্বাচন কেন্দ্রিক কোনো মধ্যস্থতা বা আলোচনার জন্য নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, ‘তারা সরকারের অংশীদার হিসেবে এ ধরনের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে অংশ নিচ্ছেন।’

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
A joint trial of Bangladesh United States Air Force in Anwara

আনোয়ারায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর যৌথ মহড়া

ইনক্যাপ সিরিমনি অনুষ্ঠিত
আনোয়ারায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর যৌথ মহড়া

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের যৌথ মহড়া ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫–৩থ-এর অংশ হিসেবে ইনক্যাপ সিরিমনি। বৃহস্পতিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের ওই কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক-এর এয়ার অধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল হায়দার আব্দুল্লাহ। তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রতিবছর দেশের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন মহড়ায় অংশগ্রহণ করে। এ বছর বিদেশে বেশ কয়েকটি মহড়া সম্পন্ন হয়েছে, আর এটাই ছিল চলতি বছরের শেষ মহড়া। এ মহড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি অর্জন করা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আমেরিকান বিমান বাহিনীর দেওয়া অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে অপারেশন থিয়েটারের টেবিল, অপারেশন লাইট, এয়ার কন্ডিশন, জেনারেটর, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্র এবং অপারেশন থিয়েটারের অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রী।

এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর মিশন কমান্ডার মেজর জুদাহ বলেন, ‘আমরা এ কার্যক্রমে বিশেষভাবে নারী ও শিশুস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়েছি। এ অঞ্চলের মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুসেবা আরও উন্নত করতে এসব সরঞ্জাম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের মানবিক উদ্যোগের মাধ্যমে শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে আনোয়ারার মতো একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে বেছে নেওয়া নিঃসন্দেহে স্থানীয় মানুষের জন্য সৌভাগ্যের বিষয়। এখানে স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবার মান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সাধারণ মানুষ দ্রুত ও কার্যকর চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।

অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র টিমের সিনিয়র সদস্য কার্নেল অ্যান্ড্রু ব্রি, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধি মেজর গ্রিন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সদস্যসহ দুদেশের বিমান বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Human bonds held against Union Entrepreneur in Satkhira

সাতক্ষীরায় ইউনিয়ন উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভাতা টাকা আত্মসাৎ
সাতক্ষীরায় ইউনিয়ন উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

জন্মনিবন্ধে ইচ্ছাকৃত ভুল, ভুল সংশোধনের নামে বারবার অর্থ গ্রহণ, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতার টাকা নিজের পরিবারের নাম্বার দিয়ে আত্মসাৎ করে, বিভিন্ন অনলাইন সার্ভিসে সরকারি ধার্যকৃত ফিসের অতিরিক্ত টাকা আদায় করা, পরিষদের অনৈতিক অর্থনৈতিক সুবিধা আদায়, প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মহিলা লীগ ইউনিয়নের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আসমা খাতুনের অপসারণ ও বিচারের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। দুপুরে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাবনগর সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে ফুলতলা বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। ‘আসমা হঠাও প্রতাপনগর বাচাও’ এই স্লোগানে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির সাবেক সভাপতি স.ম আখতারুজ্জামান সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সমাজসেবক নূরি আলম সিদ্দিকী, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক আতিয়ার রহমান, বিএনপি নেতা কারিমুজ্জামান, প্রতিবন্ধী ভুক্তভোগী স্বামী আব্দুল সালাম, আর এক ভুক্তভোগী মুক্তার হোসেন স্থানীয় সাংবাদিক মাসুম বিল্লাহ, প্রমুখ।

মানববন্ধনে বলেন, প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা আসমা খাতুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় বয়স্ক বিধবা প্রতিবন্ধীসহ ভাতা প্রাপ্তদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে আসছেন। এমনকি বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তদের নাম্বার পরিবর্তন করে নিজের পরিবারের সদস্যদের নাম্বার দিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। বিষয়টি জানাজানি পরেও চেয়ারম্যান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

তিনি আওয়ামী মহিলা লীগের ইউনিয়নের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আসমা খাতুনের অপসারণ ও বিচার করতে হবে, তা না হলে এরপরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৃহত্তর কর্মসূচি করা হবে।

তবে অভিযুক্ত তথ্য উদ্যোক্তা আসমা খাতুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ তোলা হচ্ছে তার সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ আমার মায়ের একটি সিম হারিয়ে গিয়েছিল। ভুলক্রমে সেই সিম নাম্বারে একটি বয়স্ক ভাতার টাকা চলে আসে। আমি জানতে পেরে সমাজসেবা কর্মকর্তার অবহিত করি। আমি কোনো টাকা উত্তোলন করিনি।

প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাজি দাউদ ঢালী বলেন, আসমা খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা শুনেছি। আমি আজ তাকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
The skeleton of the missing auto driver recovered from the bushes after 7 days in Muradnagar

মুরাদনগরে ৩৮ দিন পর ঝোপ থেকে নিখোঁজ অটো চালকের কঙ্কাল উদ্ধার

ঘাতকের স্বীকারোক্তিতে উন্মোচিত হলো হত্যার রহস্য
মুরাদনগরে ৩৮ দিন পর ঝোপ থেকে নিখোঁজ অটো চালকের কঙ্কাল উদ্ধার

কুমিল্লার মুরাদনগরে নিখোঁজের ৩৮ দিন পর মেহেদী হাসান (১৮) নামে এক অটো রিকশা চালকের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বুধবার বিকেলে নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের উত্তর ত্রিশ এলাকার গোমতী নদীর বেড়িবাঁধের ভেতরের একটি ঝোপ থেকে মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়। নিহত মেহেদী হাসান উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার দীঘিরপাড় গ্রামের মৃত মোস্তফার ছেলে। তিনি পেশায় অটো রিকশা চালক ছিলেন।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় প্রধান আসামি খাইরুল ইসলামকে (২১) নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার সালা পাগলার মাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এবং দেখানো স্থানে কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়। গত ১১ আগস্ট রাতে অটো রিকশা নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন মেহেদী। পরদিন তার পরিবার থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে ২০ আগস্ট নিহতের মা জোসনা বেগম বাদী হয়ে খাইরুলকে আসামি করে হত্যার উদ্দেশে অপহরণের মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাহিদ হাসান জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে খাইরুলের বাবা আইনুল হককে রাঙামাটির কাউখালি থেকে এবং তার ভাই ফুল মিয়াকে কুমিল্লার অশোকতলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে অটোরিকশাটি কুমিল্লার একটি গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করা হয়। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মূল ঘাতক খাইরুলকে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে গত বুধবার বিকেলে তার দেখানো স্থানে মেহেদীর কঙ্কাল উদ্ধার হয়।

বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খাইরুল হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তার দেখানো স্থান থেকেই কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। মরদেহের পাশে থাকা পোশাক দেখে পরিবারের সদস্যরা নিহতকে শনাক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অটো রিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিকে রিমান্ডে এনে হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Starting training in skill development of young people who dropped in Patuakhali

পটুয়াখালীতে ঝরে পড়া তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ শুরু

পটুয়াখালীতে ঝরে পড়া তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ শুরু

ঝরে পড়া তরুণদের কর্মমুখী দক্ষতা অর্জনে পটুয়াখালীতে শুরু হয়েছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর বিশেষ কার্যক্রম ‘কার্যকর সাক্ষরতা ও ব্যবহারিক কর্মদক্ষতা প্রশিক্ষণ (প্রাক-বৃত্তিমূলক পর্যায়)’। বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) সম্মেলন কক্ষে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহসিন উদ্দীন। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় পটুয়াখালী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের হল রুমে একই কোর্সের উদ্বোধন করা হয়। সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষণে ১৪ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের চারটি ট্রেডে দক্ষ করে তোলা হবে; ইলেকট্রিক্যাল ইনস্টলেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স, প্লাম্বিং অ্যান্ড পাইপ ফিটিং, টেইলারিং অ্যান্ড ড্রেস মেকিং এবং মোবাইল ফোন সার্ভিসিং। কোর্সের মেয়াদ ছয় মাস, মোট ৪৬০ ঘণ্টা। সহকারী পরিচালক, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো, মো. মফিজুল ইসলাম জানান, প্রশিক্ষণার্থীরা কোর্স শেষে টিভিইটি সোপানের এনএসসি-১ (NSC-1)-এ ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন, কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে পারবেন এবং জীবনব্যাপী শিক্ষার পথ উন্মুক্ত হবে। তাদের বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ ও নিরাপত্তা সামগ্রী দেওয়া হবে, পাশাপাশি নির্ধারিত যাতায়াত ভাতা ব্যাংক হিসাবে প্রদান করা হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে ঝরে পড়া তরুণ-তরুণীরা শুধু সাক্ষরতা অর্জন করবে না, বরং কর্মসংস্থানের যোগ্যতাও অর্জন করবে, যা তাদের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রশিক্ষণার্থী রহিম খান বলেন, ‘এখান থেকে আমরা বিনা খরচে পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করার আত্মবিশ্বাস পাচ্ছি।’

একজন অভিভাবক মোসা. সাবিকুন নাহার বলেন, আমার ছেলে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। ওই প্রশিক্ষণে যুক্ত হওয়ার পর তাকে নতুনভাবে উদ্যমী দেখছি। এখন তার জীবনের জন্য একটি ভালো ভিত্তি তৈরি হবে বলে বিশ্বাস করি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহসিন উদ্দীন বলেন, ‘সরকার তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। ওই কার্যক্রম তারই অংশ। এর মাধ্যমে ঝরে পড়া তরুণরা শুধু কর্মমুখী জ্ঞান অর্জন করবে না, বরং আত্মনির্ভরশীল হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।

এ সময় বক্তব্য রাখেন সহকারী পরিচালক, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো মফিজুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মো. আনিসুর রহমান, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (টেক/ ইলেকট্রিক্যাল), এবং জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (টেক/ সিভিল), মো. জুয়েল রানা। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং প্রশিক্ষণের সফলতা কামনা করেন।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Distribution of BGP relief among flood victims in Daulatpur

দৌলতপুরে বন্যা দুর্গতদের মাঝে বিজিপির ত্রাণ বিতরণ

দৌলতপুরে বন্যা দুর্গতদের মাঝে বিজিপির ত্রাণ বিতরণ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের উদয়নগর এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১১৫টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করেছে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি)। গত বুধবার বিকেলে এই সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পদ্মা নদীর প্রবল ভাঙনে উদয়নগর বিওপির দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা, ফসলি জমি ও বহু বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে অবশিষ্ট অংশটিও নদীতে তলিয়ে যায়।

ঝুঁকি বিবেচনায় বিজিবির সদর দপ্তরের নির্দেশে ১৩, ১৪ ও ১৫ আগস্ট তারিখে উদয়নগর বিওপির অধিকাংশ স্থানান্তরযোগ্য সরঞ্জাম পাশ্ববর্তী চরচিলমারী বিওপিতে সরিয়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১১ সেপ্টেম্বর ভোরে অবশিষ্ট অস্ত্র, গোলাবারুদ, অফিসিয়াল নথিপত্র, যানবাহন ও জনবল নৌকা, ট্রলার ও স্পিডবোটের মাধ্যমে নিরাপদে স্থানান্তর করা হয়।

বর্তমানে উদয়নগর বিওপির সকল সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ কন্ট্রোল আইটেম নিরাপদে রয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

বিজিবি আরও জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও সীমান্ত সুরক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সবসময় মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন বলে বিজিবি কর্তৃক জানিয়েছেন।

সীমান্ত সুরক্ষার স্বার্থে উদয়নগর বিওপি সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে বলে বিজিবি জানিয়েছেন। বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা, স্পিডবোট ও রেসকিউ বোটের মাধ্যমে টহল আরও জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া, পূর্ববর্তী অবস্থানের নিকটবর্তী এলাকায় একটি নতুন ও উন্নত মানের বিওপি নির্মাণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মোর্শেদ রহমান জানান, ‘বিজিবি দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় সবসময় অটল ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ অবকাঠামো নষ্ট করতে পারে, কিন্তু আমাদের মনোবল বা দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার কখনোই দুর্বল করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। সীমান্ত নিরাপত্তা, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং জনগণের স্বার্থে বিজিবি আগের মতোই নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন বলে তিনি জানান।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Kishoreganj seized 4 thousand 5 kg government rice seizure

কিশোরগঞ্জে ৭ হাজার ৮৫১ কেজি সরকারি চাল জব্দ, আটক ৩

কিশোরগঞ্জে ৭ হাজার ৮৫১ কেজি সরকারি চাল জব্দ, আটক ৩

কিশোরগঞ্জের ইটনায় কালোবাজারে বিক্রির চেষ্টাকালে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৭ হাজার ৮৫১ কেজি চাল জব্দ করেছে পুলিশ। গত বুধবার দুপুরে উপজেলার বাদলা বাজার থেকে ৩ হাজার ৬০০ কেজি ও মৃগা পূর্বপাড়া এলাকা থেকে ৪ হাজার ২৫১ কেজি চাল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় ট্রলারসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন আজহারুল ইসলাম লেলিন (৪০), নিয়ামুল মিয়া (২৪) ও সাইদুল মিয়া (১৯)। তারা মৃগা এলাকার বাসিন্দা।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. বাবুল আকরাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মৃগা গ্রামের ডিলার জানু মিয়ার নামে ১০ হাজার ৮৩০ কেজি বরাদ্দ দেওয়া হয়। তিনি সেগুলো সংগ্রহ করে কালোবাজারে বিক্রির চেষ্টাকালে পৃথক দুটি স্থান থেকে ৭ হাজার ৮৫১ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে।

বাদলা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আব্দুস সামাদ জানান, কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশে একটি ট্রলারে করে তাড়াইল নিয়ে যাওয়ার সময় ৭২ বস্তা চালসহ তিনজনকে আটক করা হয়। সরকারি বস্তা পরিবর্তন করে সাধারণ বস্তায় ভরে চালগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

ইটনা থানার উপপরিদর্শক ফাহিম ফয়সাল জানান, বাদলা থেকে ৭২ বস্তা চাল উদ্ধারের পর ডিলার জানু মিয়ার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তার বাড়ি থেকে আরও ৮৫ বস্তা চাল জব্দ করা হয়।

তিনি জানান, চালগুলো আত্মসাতের উদ্দেশে নির্ধারিত স্থানে না রেখে অন্যত্র রেখেছিলেন ডিলার জানু মিয়া তার ছেলে দেলোয়ার হোসেন। ওই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

মন্তব্য

p
উপরে