৯টি কোম্পানির ‘অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির’ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের ঘটনায় দুই দিনের হোঁচটের পর পুঁজিবাজার ফিরেছে চাঙাভাবে। বেশ বড় উত্থান হয়েছে সূচকে। একই সঙ্গে বেড়েছে ব্যাংক, আর্থিক খাত, প্রকৌশল, খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ এবং বস্ত্র খাত।
এই উত্থানের ভিড়ে একটি গ্রুপের মালিকানাধীন চারটি কোম্পানির প্রতিটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দর বৃদ্ধির বিষয়টি ছিল উল্লেখযোগ্য।
বেক্সিমকো গ্রুপের চার কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শাইনপুকুর সিরামিকস ও আইএফআইসি ব্যাংকের দাম বেড়েছে একই দিনে।
এগুলোর মধ্যে শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শাইনপুকুরের দাম। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বেক্সিমকো লিমিটেড, যে কোম্পানিটি নিম্ন আয়ের চক্র ভেদ করে করোনার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে পিপিই রপ্তানি করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
ভারত থেকে করোনার টিকা আসায় মধ্যস্থতা করার পর দ্বিগুণের বেশি বেড়েছিল বেক্সিমকো ফার্মা। টিকা আসায় অনিশ্চয়তায় দর হারানো কোম্পানিটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর ব্যাংকগুলোর মধ্যে সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বাড়ছে গত অর্থবছরে এই খাতে সবচেয়ে কম লভ্যাংশ দেয়া আইএফআইসি ব্যাংক।
কেবল দাম বাড়ছে এমন নয়, দিনের সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানির ৪টিই এই বেক্সিমকো গ্রুপের।
তবে পুঁজিবাজারে ভালো দিনেও বিমা খাতের শেয়ারগুলোর দর হারানো থামেনি। সেই সঙ্গে আশা জাগিয়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত যে ঘুম দিয়েছে, সেখান থেকে ওঠার কোনো নামই নেই।
গত মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে আদেশ আসে যে, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, এমারেল্ড অয়েল, ন্যাশনাল ফিড মিল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ঢাকা ডায়িং এবং ফুয়াং সিরামিক কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত হবে।
এই তদন্তের আদেশ জারির আগের দিন গত সোমবার ২ হাজার ৯৩৫ কোটি ৭ লাখ ৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছিল। তার পরের দিন লেনদেন চলাকালে আদেশ জারির পর সূচক কিছুটা কমার পাশাপাশি লেনদেনও কমে দেড় শ কোটি টাকার মতো।
তবে তদন্তের আদেশের প্রকৃত প্রভাব পড়ে বুধবার। মঙ্গলবারের তুলনায় লেনদেন ৬০০ কোটি টাকা কমে ২ হাজার ২১২ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে।
আর এ অবস্থায় দীর্ঘ এক দশকের মন্দাভাব থেকে চাঙা হয়ে ওঠা পুঁজিবাজারে নতুন কোনো অস্থিরতা তৈরি হয় কি না, এ নিয়ে শুরু হয় সংশয়।
তবে যেসব কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে তদন্তের ঘোষণা এসেছে, তার মধ্যে অন্তত ৪টির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে, আরও কয়েকটি কোম্পানি ভালো করছে আর একই রকম দাম বৃদ্ধি পাওয়া অন্য কোম্পানিকে রেখে কেবল এগুলোর তদন্ত কেন, সে প্রশ্ন উঠেছে।
আর তদন্তের এ ধরনের নির্দেশনা এবারই প্রথম এসেছে এমন নয়। এর আগেও এসেছে এবং সেসব নির্দেশনা প্রত্যাহার হয়েছে। আর এ ধরনের তদন্তে বিশেষ কিছু পাওয়া যায়, এমনও নয়।
এ বিষয়গুলো সামনে আসার পর বিনিয়াগকারীদের উদ্বেগ যে কাটতে শুরু করেছে, তা বৃহস্পতিবারের লেনদেনেই স্পষ্ট। সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুতেই যে সূচক বেড়েছিল, সেখান থেকে আর কমেনি বরং সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে।
সোয়া এক ঘণ্টা যেতে না যেতেই ১ হাজার কোটি আর আড়াই ঘণ্টাতেই লেনদেন ছাড়িয়ে যায় ২ হাজার কোটি টাকার ঘর। বেলা দুইটায় লেনদেন আগের দিনের লেনদেনকে ছাড়িয়ে সোয়া ২ হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করে।
দিন শেষে সূচক আগের দিনের তুলনায় বাড়ে ৮০ পয়েন্টের কাছাকাছি। আর এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন আবার আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান এখন ৬ হাজার ৬৯৯ পয়েন্ট। ডিএসইর সূচক এর চেয়ে বেশি ছিল ২০১১ সালের ২৪ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।
সেদিন ডিএসই সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৭১০ পয়েন্ট। সেটি অতিক্রম করতে পারলে পরের ধাপ ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ৭১৯ পয়েন্ট।
পিপিই পার্ক উদ্বোধন করার পর বেক্সিমকোর আয় বেড়েই চলছে, বাড়ছে কোম্পানিটির শেয়ারের দামও। ছবি: নিউজবাংলা
বেক্সিমকো গ্রুপের কী চিত্র
এই গ্রুপের কেবল শেয়ারদর বেড়েছে এমন নয়, এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানির চারটিই এই গ্রুপের। এর মধ্যে যথারীতি শীর্ষে বেক্সিমকো লিমিটেড, যে কোম্পানির অর্থেক লেনদেনও হয়নি অন্য কোনো কোম্পানিতে।
এই গ্রুপে লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি টাকারও বেশি, যার অর্ধেকের বেশি হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডে। এদিন বাজারে মোট লেনদেন ছিল ২ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার কিছু বেশি। অর্থাৎ এই লেনদেনের কেবল ১৬ শতাংশ হয়েছে একটি গ্রুপেই।
বিবিধ খাতে যেমন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোতে, তেমনি ব্যাংক খাতে এই গ্রুপের আইএফআইসি, ওষুধ খাতে গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মা আর সিরামিক খাতে শাইনপুকুর সিরামিকসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে।
২০১০ সালে পুঁজিবাজারে মহাধসের আগে বেক্সিমকো লিমিটেডের দর ৩০০ টাকার বেশি হয়ে যায়। শেয়ারপ্রতি আয়ও তখন ছিল ৩০ টাকার বেশি। তবে বাজার ধসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোম্পানিটির আয়ও কমতে থাকে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি আয় ৫১ পয়সায় নেমে আসার পর শেয়ারমূল্যও নেমে আসে ১৩ টাকায়। তবে করোনার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাসামগ্রী রপ্তানির বড় আদেশ পাওয়ার পর থেকে তাদের আয় ক্রমাগত বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে শেয়ারমূল্য।
সেই সঙ্গে কোম্পানিটি সুকুক বন্ডের মাধ্যম ৩ হাজার কোটি টাকা তুলে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের অনুমোদন পাওয়ার পর টাকা তোলাও শুরু করে দিয়েছে।
সুকুক বন্ডের অনুমোদন-প্রক্রিয়া চলাচালে শেয়ার মূল্য ৯০ থেকে ১০০ টাকার ভেতর ঘোরাঘুরি করছিল। তবে ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো শেয়ারমূল্য ১০০ টাকার ওপরে গিয়ে লেনদেন শেষ হয় বুধবার।
গত বছরের শেষ সময় থেকেই এই কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এতটাই বেড়েছে যে অন্য কোনো কোম্পানি লেনদেনের শীর্ষ স্থানে থাকতে পেরেছে কেবল হাতে গোনা দু-এক দিন।
বেলা দেড়টা বাজার আগেই এই কোম্পানিতে লেনদেন দুই শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়, যেখানে গোটা বাজারের লেনদেন তখনও দুই হাজার কোটি টাকা হয়নি।
আগের দিনের শেয়ার দর বেড়েছিল ৪ টাকা ৭০ পয়সা। ৯৭ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয় ১০২ টাকা ৬০ পয়সা। আজ দিনের লেনদেন শুরু করে ১০৪ টাকায়। একপর্যায়ে দাম বেড়ে ১১০ টাকা ২০ পয়সা হয়ে যায়। কিন্তু পরে কিছুটা কমে লেনদেন শেষ করে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সায়।
কোম্পানিতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৫৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ১০ শতাংশের মতো।
একই গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মা দেশসেরা ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানির একটি। তবে শেয়ার দর গত কয়েক বছর ধরে ৯০ থেকে ১২০ টাকার ঘরে ঘুরপাক খেত। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা আনতে কোম্পানিটি লোকাল এজেন্ট হওয়ার পর থেকে তাদের দাম বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তা ২১৬ টাকা ৯০ পয়সা হয়ে যায়।
সরকারের সঙ্গে চুক্তিটি ছিল এমন: প্রতি টিকায় তারা পাবে ১ ডলার করে, অর্থাৎ ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকায় ৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৯০ কোটি টাকা।
তবে ছন্দপতন ঘটে ভারতে করোনার ব্যাপক বিস্তারের কারণে। সে দেশের সরকারের নিষেধাজ্ঞায় সিরাম ৭০ লাখের পর আর টিকা পাঠাতে পারেনি আর এ কারণে বেক্সিকমকো ফার্মার প্রত্যাশিত আয়ও হয়নি। এই অনিশ্চয়তায় শেয়ার দর কমতে কমতে ১৬৮ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে।
তবে গত ১ জুন থেকে ধীরে ধীরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন তা আবার ২০০ টাকার আশপাশে চলে এসেছে।
সবচেয়ে বেশি লেনদেনের পঞ্চম স্থানে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৩ টাকা ১০ পয়সা যোগ হয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে ১৩৩ টাকা ৭০ পয়সায়। হাতবদল হয়েছে মোট ৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার।
অন্যদিকে ২০২০ সালে আয় কমায় লভ্যাংশ মাত্র ৫ শতাংশ দেয়ার কারণে আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচে নেমে গিয়েছিল। সম্প্রতি বা বাড়তে বাড়তে ১৫ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো দাম বাড়ার পর ধরে রাখতে পারছে না ইদানীং। ব্যতিক্রম আইএফআইসি ব্যাংক।
এই ব্যাংকটির দাম টাকা চার কর্মদিবস বাড়ল। গত ২ আগস্ট শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১৩ টাকা ৫০ পয়সা। সেটি বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষ করেছে ১৬ টাকা ৮০ পয়সায়।
সবচেয়ে বেশি লেনদেনের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা এই কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে মোট ৭৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এই গ্রুপের অন্য কোম্পানি শাইনপুকুর সিরামিকস সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়ার তালিকায় ছিল ১০ নম্বরে।
২০১৫ সালে ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশের পর ২০১০ সালে শেয়ারপ্রতি ২০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৭ জুনও ছিল ২৫ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার এক দিনেই ৩ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ৩০ পয়সায়।
কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হয়েছে মোট ৪২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার।
এক দিনের ব্যবধানে ব্যাংক-আর্থিক খাতে ভালো দিন
মঙ্গলবার ৯ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্তে বিএসইসির আদেশ জারির দিন প্রায় সব খাতে দরপতন হলেও ব্যাংক ও আর্থিক খাতের দর বৃদ্ধি সূচকের বড় পতন হতে দেয়নি। ব্যাংকে দাম বৃদ্ধির পরিমাণটা খুব বেশি না হলেও সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের খাত হওয়ায় তার কিছুটা প্রভাব থাকে।
তবে নানা সময় দেখা গেছে ব্যাংকে দাম বৃদ্ধি হলেও তা টেকে না। আর একদিন দাম বাড়লে পরের কয়েক দিন ধরে কমে।
অতীতের সেই ধারাবাহিকতা দেখা যায় বুধবার। আগের দিন যেমন অল্প করে কিছু বেড়েছিল, পরদিন অল্প করে কমে যায় বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে আবার অল্প করে বেড়েছে বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর। এর ভিড়ে অবশ্য এবি ও আল আরাফাহ ব্যাংকের দর বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
এবির শেয়ার দরে আগের দিনের দামের সঙ্গে যোগ হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা, আর আল আরফাহর দামের সঙ্গে ১ টাকা ৪০ পয়সা। নতুন তালিকাভুক্ত সাউথ বাংলার শেয়ারদর আবার ১০ শতাংশ বা ১ টাকা ১০ পয়সা বেড়েছে।
বাকিগুলোর দাম বাড়া বা কমা-কোনোটার হারই খুব একটা বেশি না। ১০ থেকে ৩০ পয়সার মধ্যে রয়েছে দাম উঠানামা।
সব মিলিয়ে এই খাতে বেড়েছে ২৬টির দর, কমেছে ৬টির। লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২১৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আজ হয়েছে ২২০ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক খাতে দাম বৃদ্ধির হার বেশি। জিএসপি ফিনান্সের ১ টাকা ১০ পয়সা, বে লিজিং, ডিবিএইচ ও আইডিএলসি ও ইউনাইটেড ফিনান্সের ১ টাকা ৭০ পয়সা করে, বিডি ফিনান্সের ২ টাকা ২০ পয়সা, উত্তরা ফিনান্সের ২ টাকা ৬০ পয়সা, আইপিডিসির ২ টাকা ৮০ পয়সা, লঙ্কাবাংলা ফিনান্সের ৩ টাকা ২০ পয়সা, ন্যাশনাল হাউজিং ফিনান্সের শেয়ারের দর বেড়েছে ৪ টাকা ২০ পয়সা করে। আগের দুই দিন সর্বোচ্চ মূল্যসীমা স্পষ্ট করা ইসলামিক ফিনান্স তৃতীয় দিনের মতো বেড়েছে ৮০ পয়সা।
এই খাতে লেনদেনও হয়েছে ব্যাংপক। প্রকৌশল ও বিবিধ খাতকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে খাতটিতে। হাতবদল হয়েছে ৩৫০ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন ছিল ২০০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
বিমা নিয়ে সাবধানবাণী গায়ে না মেখে এখন হতাশা
গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক দফা আর চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে জুনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বিমা খাতে দ্বিতীয় দফা চাঙাভাব দেখা দেয়। কোম্পানির আয়, লভ্যাংশের সম্ভাবনা বিচার না করে উড়তে থাকে দাম। বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারদর এই সময়ের মধ্যে তিন থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে।
এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে বারবার বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ তা কানেই তোলেননি। বর যারা সতর্ক করেছেন, তাদেরকে কটূ কথা শুনিয়েছেন।
আর ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন পেজে কয়েকজন ব্যক্তি একে ‘রকেট সেক্টর’ আখ্যা দিয়ে প্রলুব্ধ করেছে। তারা বারবার নানা চার্ট আর কথিত টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস ব্যাখ্যা করে বোঝাতে চেয়েছেন দাম আরও বাড়বে।
তবে ১৪ জানুয়ারি থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এক দফা সংশোধনে কোম্পানিগুলো ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ দর হারিয়ে ফেলার মতোই এবারও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ দর হারিয়েছে বহুগুলো।
প্রায় প্রতিদিনই বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক ফেসবুক পেজে তাদের হতাশার কথা বলেন। আশা করেন আগামী দিন থেকে বিমা খাত ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু পরের দিন দাম আরও কমায় সেই হতাশা বাড়ে।
এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৭ টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৪৩ টির। দাম ধরে রাখতে পেরেছে ১টি।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে ১২৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১০৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আইসিবির পেরেক
জুনে অর্থবছর শেষ করা ৬টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের রেকর্ড লভ্যাংশের পর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আইসিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত আটটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড গত রাতে তাদের লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের নোটিশ বোর্ডে বৃহস্পতিবার সেটি প্রকাশ হয়েছে।
গত বছরের মন্দাবাজারে ফান্ডগুলো লোকসান না দেয়নি। কিন্তু এবার চাঙা বাজারে তাদের আয় হয়েছে খুবই কম। সবচেয়ে বেশি আয় করেছে যে ফান্ডটি, সেটি ইউনিটপ্রতি ৬৮ পয়সা মুনাফা করতে পেরেছে। আর আটটি ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা হয়েছে ৪ থেকে ৮ শতাংশ।
এর আগে লভ্যাংশ ঘোষণা করা বেসরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির ফান্ডগুলো সর্বনিম্ন ১ টাকা থেকে ১ টাকা ৭৫ পয়সা দেবে ইউনিটধারীদের। এসব ফান্ডের মধ্যে সবচেয়ে কম আয় করেছে যেটি, সেটিও ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৮১ পয়সা মুনাফা করেছে। সবচেয়ে বেশি মুনাফা করা ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ৩ টাকা ১৪ পয়সা আয় করেছে।
৯ টাকার ঘরে ফান্ড ১ টাকা ২০ পয়সা আর ১২ টাকার ঘরের ফান্ড ১ টাকা ৫০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পরেও সেগুলোর দাম কমছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আইসিবির ফান্ডগুলোর নিম্ন আয় ও লভ্যাংশ। সব মিলিয়ে ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে দর হারিয়েছে ২৬ টি। আগের দিনের দর ধরে রাখতে পেরেছে ৭ টি। আর বেড়েছে কেবল তিনটির।
জুনে অর্থবছর শেষ হয়েছে এমন ফান্ডের সংখ্যা পুঁজিবাজারে ২৯টি। এর মধ্যে আরও দুটি লভ্যাংশ ঘোষণা করবে বিকেলে। বাকি ১৩টি এখন সভা ঘোষণা সংক্রান্ত তারিখ জানায়নি।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৭৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
মূল উত্থান বস্ত্র খাতে
এই খাতে লেনদেন হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৬১ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১২৩ কোটি টাকা বেশি। বুধবার হাতবদল হয়েছিল ৩৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার।
এই খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া ৫টিই এই খাতের কোম্পানি। এগুলোর দাম বেড়েছে একদিনে যত বাড়া সম্ভব ততই।
কোম্পানিগুলো হলো সিএনএ, রিংসাইন, তাল্লু, নুরানী ও আলিফ।
এর মধ্যে রিংসাইনের বোর্ড পুনর্গঠনের পর সেটি উৎপাদনে চলে এসেছে। বন্ধ থাকা তাল্লুর দাম গত কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে। গত এপ্রিলেও শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৪ টাকার নিচে।
অন্যদিকে নুরানীর মালিকপক্ষ কাউকে না জানিয়ে কোম্পানি বন্ধ করে দিয়েছে বলে সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিদর্শনে বেরিয়ে এসেছে। এই খবরে বুধবার কোম্পানিটির শেয়ার দর প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়। তবে রাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এই কোম্পানিটির বোর্ড ও পুনর্গঠন করে দিয়েছে। এই খবরে আবার চাঙা হলো দাম।
অন্যান্য খাতের চিত্র
জুনে অর্থবছর শেষ করে লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা প্রকৌশল খাতে আবার চাঙাভাব দেখা গেছে। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৮টির। কমেছে ১২টির আর দুটির দাম ছিল অপরিবর্তিত।
লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২৭৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সেটি বেড়ে হয়েছে ২৮৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা।
প্রধান অন্য খাতগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এক দিনের বিরতিতে আবার চাঙা হয়েছে। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩টির, কমেছে ৮টির আর পাল্টায়নি দুটির দর। লেনদেন হয়েছে ১১৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
ওষুধ ও রসায়ন ভাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ১৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল একটির দর। লেনদেন হয়েছে মোট ২৪৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ২২১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ৬টির। লেনদেন অবশ্য কমেছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৭৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। আজ হয়েছে ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৭টির, কমেছে ৪টির শেয়ার দর। লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
বেক্সিমকো লিমিটেডের বদৌলতে বিবিধ খাত লেনদেনের তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে। এই খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে ৩টির দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ১১টির। হাতবদল হয়েছে মোট ৩২৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের দিন যা ছিল ২৬৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:বরিশালের নদ-নদী এবং সাগরে হঠাৎ করে ধরা পড়ছে ঝাকে ঝাকে ইলিশ। সেই সঙ্গে ঝিমিয়ে যাওয়া বরিশালের সর্ববৃহৎ পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি-গত তিনদিন ধরে দৈনিক দুইশ থেকে সাড়ে তিনশ মণ পর্যন্ত ইলিশ আসছে এই পাইকারি মৎস্য আড়তে। তবে সরবরাহের অর্ধেকের বেশি ইলিশ আকারে ছোট দাবি বলে আড়তদারদের।
ইলিশের সরবরাহ বাড়তে শুরু করলেও দাম এখনো নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এক কেজি জাটকা কিনতে এখনো গুণতে হচ্ছে সর্বনিম্ন পাঁচশ টাকা। তবে সরবরাহ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ঠিক থাকলে চলতি মাসেই ইলিশে দাম আরও কমে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।
সরজমিনে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে দেখা যায়, ভোর পাঁচটা বাজার আগে থেকেই আড়তে আসছে একের পর এক ইলিশের ট্রলার। সাগর এবং নদীর মাঝ পোর্ট রোডে নামিয়ে দিয়ে ট্রলার নিয়ে জেলেরা আবার ছুটছেন সাগর এবং নদীতে। তবে বর্তমানে বরিশাল মোকামে আসা অর্ধেক ইলিশ স্থানীয় নদ-নদীর বলে দাবি জানিয়েছেন আড়াতদাররা।
পোর্টরোড আক্তার মৎস্য আড়তের আড়তদার আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গত দুই-তিন দিনের তুলনায় রোববার ইলিশের দাম কিছুটা কম ছিল। কারণ এ কয়দিনে আড়তে ইলিশের সরবরাহ কিছু বেশি হয়েছে। এর পরও এলসি সাইজ অর্থাৎ ৭০০-৯৯৯ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৭৫-৭৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিমণ ৮৮ হাজার, এক কেজির ওপরে ১২শ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ প্রতিমণ ৯২ হাজার, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৯৮ হাজার টাকা, ভেলকা সাইজ অর্থাৎ ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম প্রতিমণ ৫৮-৬০ হাজার টাকা, ৩০০ থেকে ৫শ গ্রাম ইলিশ প্রতিমণ ৩২ হাজার টাকা এবং জাটকা ইলিশ প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকা দরে।
মৎস্য আড়তদার ইয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে বরিশালের আড়তে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার মণ ইলিশও এসেছে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর সেই পরিমাণ কমে গেছে। তবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মৎস্য আড়তে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে বিধায় গত তিন দিন ধরে নদী এবং সাগরের মাছের ট্রলার বরিশালে আসছে। এ কারণে বরিশালের আড়তে সরবরাহও বেড়েছে।
বরিশাল শহীদ জিয়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহির সিকদার বলেন, রোববার বরিশালের আড়তে তিনশ মনের বেশি ইলিশ এসেছে। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ। তবে সরবরাহ হওয়া ইলিশের মধ্যে প্রায় আড়াইশ মণই জাটকা। তাছাড়া নদীর থেকে সাগরের ইলিশটাই বেশি আসছে।
তিনি জানান, গত শনিবার বরিশাল পোর্ট রোড মোকামে ২০০ মণ এবং তার আগের দিন শুক্রবার প্রায় দুইশ মণ ইলিশ এসেছে পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে। ফলে গত তিন দিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম মণপ্রতি ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। আগামী ২৫ জুন পূর্ণিমার জোঁ রয়েছে। ওইদিন থেকে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে বলে আশাবাদী এই ব্যবসায়ী।
খুঁচরা বাজারে দেখা যায়, আড়তে মাছের সরবরাহ বাড়লেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। সংকটের অজুহাতে এখনো বাড়তি দামেই ইলিশ বিক্রি করছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। ৭০০-৯৯৯ গ্রামের ইলিশ পাইকারী হিসেবে প্রতি কেজির দাম ১৮শ থেকে ১৯শ টাকা হলেও তা বিক্রি করা হচ্ছে ২২শ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। একইভাবে কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ২২শ টাকার পরিবর্তে বিক্রি করা হচ্ছে ২৫শ থেকে ২৮শ টাকায়। আর জাটকা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বাড়তি দামে ইলিশ বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিম্ন আয়ের ক্রেতারা।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপণ কান্তি ঘোষ বলেন, একসময় বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য আড়ত জমজমাট ছিল। তখন দক্ষিণাঞ্চলের নদী এবং সাগরের ইলিশ এখানো আসত। তবে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির কারণে ইলিশ যাচ্ছে পটুয়াখালীর মহিপুর, আলিপুর এবং পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। তাছাড়া বরিশালের হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ এলাকার ইলিশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চাঁদপুরে। বরিশালের আড়তে যা মাছ আসছে তা স্থানীয় নদনদীর মাছ।
তিনি বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান অনেকটা সফল হয়েছে। এ সময় প্রচুর ইলিশের পোনা ছেড়েছে। এর সুফল সামনে পাওয়া যাবে। তবে এখনই গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই নদনদীতে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। এটা ভালো লক্ষ্যন। বৃষ্টি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। ভবিষ্যতে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়লে দামও কমে আসবে বলেন এই কর্মকর্তা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার অজোপাড়াগায়ে গড়ে ওঠেছে নৌকার গ্রাম। আর এ নৌকার গ্রামকে ঘিরে বালু নদীর তীর ঘেষে জমে ওঠেছে ব্যতিক্রমী নৌকার হাট। কাঠের খুটখাট আর নদীর পানির ছলাৎ-ছলাৎ শব্দ যে-কারো মনকে আবেগে ভরিয়ে দেবে। হয়তো ক্ষণিকের জন্য কেউ কবি বনে যেতে পারে। নৌকা তৈরির এ গ্রাম দু’টির অদূরেই গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাটটি বর্ষা আসলেই জমে উঠে। আর বর্ষা ঘিরে নয়ামাটি ও পিরুলিয়া এলাকায় নৌকা তৈরির ধুম পড়ে যায়। কারিগরেরা হয়ে পড়ে মহাব্যস্ত। কায়েতপাড়া নৌকার হাটটিতে তখন চলে নৌকা বেচাকেনার রমরমা ব্যবসা। এছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকন্দাইল বাজারে প্রতি বৃহস্পতিবার বসে নৌকার হাট। ইছাখালী-নগরপাড়া সড়কের অদূরেই নৌকার গ্রাম। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাত্র তিন মাসের মৌসুমি ব্যবসা। চাহিদা যথেষ্ট, তাই কারিগরদের ব্যবস্থাও বেশি।
শুরুর ইতিহাস : রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার কারিগরেরা স্বাধীনতারও আগে থেকে নৌকা তৈরি করে আসছে। কারো-কারো মতে, এ এলাকার নৌকা তৈরির ইতিহাস প্রায় শতাব্দী প্রাচীন। পিরুলিয়া এলাকার অতশীপরবৃদ্ধ অঞ্জনকুমার দাস বলেন, আমার জন্মের আগে থেইক্যা বাপ-দাদারা গয়না (নৌকা) বানাইয়া আইতাছে হুনছি। নয়ামাটি ও পিরুলিয়া ছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল, সাওঘাট এলাকার কারিগরেরা নৌকা তৈরি করে আসছে।
কারিগর কারা : নৌকা তৈরির গ্রাম পিরুলিয়া ও নয়ামাটি বললেই সবাই চেনে। তবে এ এলাকা দুটি গ্রামের ৯০ ভাগই মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। হিন্দুরাই দীর্ঘদিন ধরে নৌকা তৈরি করে আসছে। আশির দশকের পর নৌকা ব্যবসায়ী কমে যায়। অনেকে ভারত চলে যাওয়ায় এখনো দেড়শ পরিবার টিকে রয়েছে কোনোমতে। সাওঘাট এলাকার কারিগর প্রদ্যুত কুমার সরকার বলেন, আগে ব্যবসা ভালাই আছিলো। অহন কাটের দাম আর লোয়া (লোহা ) পেরেকের দাম বাইড়া যাওনে লাভ কম অয়।
কারিগরা যা বলছেন: পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার নৌকা তৈরির কারিগরেরা এখন ভালোই আছেন। নৌকা বিক্রি করে তারা সংসার চালাচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। বছর শেষে মোটামুটি লাভের মুখ ও দেখছেন। কথাগুলো একবাক্যে বললেন পিরুলিয়া এলাকার সত্যেন দাস। তার ছেলে লেখাপড়া করছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। নয়ামাটি এলাকার রমেশ দাস বলেন, কই খারাপতো নাইগো দাদা। মোডা ভাত- আর মোডা কাপড় পরবার পারি। এইডাই সুখ।
বর্তমান অবস্থা : নৌকা তৈরির কারিগরদের অবস্থা এখন কিছুটা ভাটা পড়েছে। ৯০ দশকের পর যান্ত্রিক সভ্যতা ফিরে আসায় নৌকার কদর কিছুটা কমে যায়। প্রতি বছর বর্ষায় নৌকা তৈরির ধুম চলে। তবে বন্যা হলে ব্যবসা ভালো হয় বলে জানালেন সুনীল দাস। তিনি বলেন, ৮৮’ আর ৯৮’ সালের বন্যায় অনেক টেহা লাব অইছিলো। নয়ামাটি এলাকার নৌকার কারিগর রবি দাস বলেন, কাডের দাম বাইড়া যাওনে লাভটা কম হয়। নাইলে ব্যবসা খারাপ না। আর স্টিলের নৌকার কারণে কিছুডা লছ অইতাছে। তারপরেও খারাপ নাই। ডাইল-ভাত খাইবার পারি।
খরচ কত : এক-একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর মোটামুটি কাঠের নৌকা তৈরিতে খরচ পড়ে ৮/১০ হাজার টাকা। কথাগুলো বললেন নৌকার কারিগর তাপস দাস।
নৌকার হাটের কথা : বালু নদীর তীর ঘেঁষেই কায়েতপাড়া বাজারে নৌকার হাট। বর্ষা মাসজুড়েই এ হাট জমে। ঢাকার নিম্নাঞ্চলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা নৌকা কিনতে আসেন। দামে সস্তা হওয়ায় এখানকার নৌকার কদরও বেশি। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল বাজারের সামনে বিলে জমে ব্যতিক্রমি নৌকার হাট। এ হাটে প্রতি বৃহস্পতিবারে প্রায় কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। নৌকার হাট শুরু হয় নৌকা তৈরির গ্রামগুলোর কারিগরদের ঘিরেই। প্রতি বৃহস্পতিবার এ হাট জমে ওঠে। বৃহস্পতিবার এ হাটে কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। ওঠে নৌকার বৈঠাও। গজারি কাঠের এক-একটি নৌকার দাম পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর কোষা ৭/৮ হাজার টাকায়। বৈঠাগুলো ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হয়। নৌকা বিক্রেতা সুবল চন্দ্র দাস বলেন, দাদু ব্যবসা ভালোই, তয় পানি বেশি অইলে লাভ অয়। ঢাকার ত্রিমহোনী থেকে নৌকা কিনতে আসা ওমরআলী বলেন, এ হাটে তুলনামূলক সস্তায় নৌকা পাওয়া যায়। আড়াইহাজার থেকে নৌকা কিনতে আসা সামছুল হক বলেন, এ হাটে নৌকার দাম কম। তাই এহান থেইক্যা কিনবার আইছি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ বিষয়ক এক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বক্তব্য রাখেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
রবিবার (২২ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় ইউরোপীয় দূতাবাস এমন তথ্য জানিয়েছে।
ইইউ দূতাবাস বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জন্য আরও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে সুশীল সমাজকে ক্ষমতায়নে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি ও এর অংশীদাররা।
ইউরোপীয় পার্টনারশিপ ফর ডেমোক্রেসির (ইপিডি) সহায়তায় এর অংশীদার সংগঠন আনফারেল ১৮ থেকে ২০ জুন ঢাকায় তিনদিনব্যাপী একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। এর বিষয়বস্তু ছিল নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ।
ইইউ দূতাবাস জানায়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে সব অংশগ্রহণকারী একমত পোষণ করেছেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রণয়নে সহযোগিতা এবং এতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় ফুল ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দেয় নতুন রাজনৈতিক দলটি। এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন উপস্থিত ছিলেন।
পছন্দের প্রতীকের তালিকায় শাপলা ছাড়াও কলম ও মোবাইল রেখেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। আবেদন জমা দেওয়ার পর আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে দল নিবন্ধনের শর্তসমূহ পূরণ করে আমাদের দল নিবন্ধনের আবেদন এই মাত্র দাখিল করেছি। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আমাদের আবেদন রিসিভ (গ্রহণ) করেছেন। আমাদেরকে রিসিভ কপি তারা দিয়েছেন।’
এ সময় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘৫ তারিখে গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে বাংলাদেশের মানুষের জয় হয়েছিল, আগামীর পার্লামেন্ট ভোটে এনসিপির শাপলা প্রতীকে পুরো বাংলাদেশের মানুষ জয়জয়কার করে দেবে, এনসিপির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন হবে।’
এ সময় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে গত ১৫ বছরে ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে যেসব ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের যেমন পুনর্গঠন করতে হবে, নিয়মনীতির পরিবর্তন করতে হবে, কিন্তু তার মানে এই নয়, ইলেকশন কমিশন বাংলাদেশ থেকে উধাও হয়ে গেছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এই কমিশনকে আমরা পুনর্গঠন করতে চাই, শক্তিশালী করতে চাই, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই। সে প্রক্রিয়ায় কিন্তু আমরা আজকে এসেছি। এর মধ্যেও আমরা বলে যেতে চাই। আমরা আজকেও বলছি, ইলেকশন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন।’
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এ দলটি গঠিত হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার শেষ দিনে গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত আবেদন জমা দিয়েছে দুই ডজনেরও বেশি রাজনৈতিক দল।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ১০ মার্চ আগ্রহী দলগুলোর কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন। ২০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন করে ৬৫টি নতুন রাজনৈতিক দল। এরপর এনসিপিসহ ৪৬টি দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলের নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা ২ মাস বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আজহার উল আলম, মৎস কর্মকর্তা জয় বণিক, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি রফিকুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বদন তৈয়বা প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভৈরব এর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এবারের কৃষি প্রযুক্তি মেলায় মোট ১৪টি স্টল রয়েছে। মেলায় বিভিন্ন কৃষির আধুনিক যন্ত্র, ফলজ, ফুলসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মেলার স্টলগুলি খোলা থাকবে। এ মেলা চলবে ২২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, উপজেলার কৃষকদের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রাঙ্গণে কৃষি প্রযুক্তি মেলায় কৃষি কাজের সকল প্রযুক্তিসহ কৃষি সম্পকিত নানা বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য মেলায় বিভিন্ন স্টল বসেছে। এসব স্টলে এসে কৃষকরা প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন এবং তাদের কৃষি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহারে কাজে লাগাতে পারবেন।
এবিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো পথ নেই। এরই মধ্যে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এই ধরণের মেলা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান ও ফলন বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হিসাবে কাজে দিবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, তারা গবেষণা করছেন, সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছেন। বর্তমানে সব ধরনের চাষে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। কৃষিতে যতো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ততো বেশি উৎপাদন বাড়বে।
মন্তব্য