× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

পুঁজিবাজার
Beximco Groups rise to prominence after the push of the investigation
google_news print-icon

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

তদন্তের-ধাক্কা-কাটিয়ে-উত্থান-বেক্সিমকো-গ্রুপের-রমরমা
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ফ্যাক্টরি
বেক্সিমকো গ্রুপের চার কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শাইনপুকুর সিরামিকস ও আইএফআইসি ব্যাংকের দাম বেড়েছে একই দিনে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ৫টি কোম্পানির ৩টি এই গ্রুপের আর ১০টি কোম্পানির ৪টি। মোট লেনদেনের ১৬ শতাংশই হয়েছে এই একটি গ্রুপে।

৯টি কোম্পানির ‘অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির’ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের ঘটনায় দুই দিনের হোঁচটের পর পুঁজিবাজার ফিরেছে চাঙাভাবে। বেশ বড় উত্থান হয়েছে সূচকে। একই সঙ্গে বেড়েছে ব্যাংক, আর্থিক খাত, প্রকৌশল, খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ এবং বস্ত্র খাত।

এই উত্থানের ভিড়ে একটি গ্রুপের মালিকানাধীন চারটি কোম্পানির প্রতিটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দর বৃদ্ধির বিষয়টি ছিল উল্লেখযোগ্য।

বেক্সিমকো গ্রুপের চার কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, শাইনপুকুর সিরামিকস ও আইএফআইসি ব্যাংকের দাম বেড়েছে একই দিনে।

এগুলোর মধ্যে শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শাইনপুকুরের দাম। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বেক্সিমকো লিমিটেড, যে কোম্পানিটি নিম্ন আয়ের চক্র ভেদ করে করোনার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে পিপিই রপ্তানি করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

ভারত থেকে করোনার টিকা আসায় মধ্যস্থতা করার পর দ্বিগুণের বেশি বেড়েছিল বেক্সিমকো ফার্মা। টিকা আসায় অনিশ্চয়তায় দর হারানো কোম্পানিটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর ব্যাংকগুলোর মধ্যে সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বাড়ছে গত অর্থবছরে এই খাতে সবচেয়ে কম লভ্যাংশ দেয়া আইএফআইসি ব্যাংক।

কেবল দাম বাড়ছে এমন নয়, দিনের সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানির ৪টিই এই বেক্সিমকো গ্রুপের।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

তবে পুঁজিবাজারে ভালো দিনেও বিমা খাতের শেয়ারগুলোর দর হারানো থামেনি। সেই সঙ্গে আশা জাগিয়ে মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত যে ঘুম দিয়েছে, সেখান থেকে ওঠার কোনো নামই নেই।

গত মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে আদেশ আসে যে, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, এমারেল্ড অয়েল, ন্যাশনাল ফিড মিল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ঢাকা ডায়িং এবং ফুয়াং সিরামিক কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত হবে।

এই তদন্তের আদেশ জারির আগের দিন গত সোমবার ২ হাজার ৯৩৫ কোটি ৭ লাখ ৮ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছিল। তার পরের দিন লেনদেন চলাকালে আদেশ জারির পর সূচক কিছুটা কমার পাশাপাশি লেনদেনও কমে দেড় শ কোটি টাকার মতো।

তবে তদন্তের আদেশের প্রকৃত প্রভাব পড়ে বুধবার। মঙ্গলবারের তুলনায় লেনদেন ৬০০ কোটি টাকা কমে ২ হাজার ২১২ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে।

আর এ অবস্থায় দীর্ঘ এক দশকের মন্দাভাব থেকে চাঙা হয়ে ওঠা পুঁজিবাজারে নতুন কোনো অস্থিরতা তৈরি হয় কি না, এ নিয়ে শুরু হয় সংশয়।

তবে যেসব কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে তদন্তের ঘোষণা এসেছে, তার মধ্যে অন্তত ৪টির মূল্য সংবেদনশীল তথ্য আছে, আরও কয়েকটি কোম্পানি ভালো করছে আর একই রকম দাম বৃদ্ধি পাওয়া অন্য কোম্পানিকে রেখে কেবল এগুলোর তদন্ত কেন, সে প্রশ্ন উঠেছে।

আর তদন্তের এ ধরনের নির্দেশনা এবারই প্রথম এসেছে এমন নয়। এর আগেও এসেছে এবং সেসব নির্দেশনা প্রত্যাহার হয়েছে। আর এ ধরনের তদন্তে বিশেষ কিছু পাওয়া যায়, এমনও নয়।

এ বিষয়গুলো সামনে আসার পর বিনিয়াগকারীদের উদ্বেগ যে কাটতে শুরু করেছে, তা বৃহস্পতিবারের লেনদেনেই স্পষ্ট। সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুতেই যে সূচক বেড়েছিল, সেখান থেকে আর কমেনি বরং সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়েছে।

সোয়া এক ঘণ্টা যেতে না যেতেই ১ হাজার কোটি আর আড়াই ঘণ্টাতেই লেনদেন ছাড়িয়ে যায় ২ হাজার কোটি টাকার ঘর। বেলা দুইটায় লেনদেন আগের দিনের লেনদেনকে ছাড়িয়ে সোয়া ২ হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করে।

দিন শেষে সূচক আগের দিনের তুলনায় বাড়ে ৮০ পয়েন্টের কাছাকাছি। আর এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন আবার আড়াই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান এখন ৬ হাজার ৬৯৯ পয়েন্ট। ডিএসইর সূচক এর চেয়ে বেশি ছিল ২০১১ সালের ২৪ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।

সেদিন ডিএসই সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৭১০ পয়েন্ট। সেটি অতিক্রম করতে পারলে পরের ধাপ ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ৭১৯ পয়েন্ট।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

পিপিই পার্ক উদ্বোধন করার পর বেক্সিমকোর আয় বেড়েই চলছে, বাড়ছে কোম্পানিটির শেয়ারের দামও। ছবি: নিউজবাংলা

বেক্সিমকো গ্রুপের কী চিত্র

এই গ্রুপের কেবল শেয়ারদর বেড়েছে এমন নয়, এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০টি কোম্পানির চারটিই এই গ্রুপের। এর মধ্যে যথারীতি শীর্ষে বেক্সিমকো লিমিটেড, যে কোম্পানির অর্থেক লেনদেনও হয়নি অন্য কোনো কোম্পানিতে।

এই গ্রুপে লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি টাকারও বেশি, যার অর্ধেকের বেশি হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডে। এদিন বাজারে মোট লেনদেন ছিল ২ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকার কিছু বেশি। অর্থাৎ এই লেনদেনের কেবল ১৬ শতাংশ হয়েছে একটি গ্রুপেই।

বিবিধ খাতে যেমন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোতে, তেমনি ব্যাংক খাতে এই গ্রুপের আইএফআইসি, ওষুধ খাতে গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মা আর সিরামিক খাতে শাইনপুকুর সিরামিকসে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে।

২০১০ সালে পুঁজিবাজারে মহাধসের আগে বেক্সিমকো লিমিটেডের দর ৩০০ টাকার বেশি হয়ে যায়। শেয়ারপ্রতি আয়ও তখন ছিল ৩০ টাকার বেশি। তবে বাজার ধসের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোম্পানিটির আয়ও কমতে থাকে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি আয় ৫১ পয়সায় নেমে আসার পর শেয়ারমূল্যও নেমে আসে ১৩ টাকায়। তবে করোনার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাসামগ্রী রপ্তানির বড় আদেশ পাওয়ার পর থেকে তাদের আয় ক্রমাগত বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে শেয়ারমূল্য।

সেই সঙ্গে কোম্পানিটি সুকুক বন্ডের মাধ্যম ৩ হাজার কোটি টাকা তুলে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের অনুমোদন পাওয়ার পর টাকা তোলাও শুরু করে দিয়েছে।

সুকুক বন্ডের অনুমোদন-প্রক্রিয়া চলাচালে শেয়ার মূল্য ৯০ থেকে ১০০ টাকার ভেতর ঘোরাঘুরি করছিল। তবে ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো শেয়ারমূল্য ১০০ টাকার ওপরে গিয়ে লেনদেন শেষ হয় বুধবার।

গত বছরের শেষ সময় থেকেই এই কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ এতটাই বেড়েছে যে অন্য কোনো কোম্পানি লেনদেনের শীর্ষ স্থানে থাকতে পেরেছে কেবল হাতে গোনা দু-এক দিন।

বেলা দেড়টা বাজার আগেই এই কোম্পানিতে লেনদেন দুই শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়, যেখানে গোটা বাজারের লেনদেন তখনও দুই হাজার কোটি টাকা হয়নি।

আগের দিনের শেয়ার দর বেড়েছিল ৪ টাকা ৭০ পয়সা। ৯৭ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয় ১০২ টাকা ৬০ পয়সা। আজ দিনের লেনদেন শুরু করে ১০৪ টাকায়। একপর্যায়ে দাম বেড়ে ১১০ টাকা ২০ পয়সা হয়ে যায়। কিন্তু পরে কিছুটা কমে লেনদেন শেষ করে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সায়।

কোম্পানিতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৫৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ১০ শতাংশের মতো।

একই গ্রুপের বেক্সিমকো ফার্মা দেশসেরা ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানির একটি। তবে শেয়ার দর গত কয়েক বছর ধরে ৯০ থেকে ১২০ টাকার ঘরে ঘুরপাক খেত। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা আনতে কোম্পানিটি লোকাল এজেন্ট হওয়ার পর থেকে তাদের দাম বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তা ২১৬ টাকা ৯০ পয়সা হয়ে যায়।

সরকারের সঙ্গে চুক্তিটি ছিল এমন: প্রতি টিকায় তারা পাবে ১ ডলার করে, অর্থাৎ ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকায় ৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৯০ কোটি টাকা।

তবে ছন্দপতন ঘটে ভারতে করোনার ব্যাপক বিস্তারের কারণে। সে দেশের সরকারের নিষেধাজ্ঞায় সিরাম ৭০ লাখের পর আর টিকা পাঠাতে পারেনি আর এ কারণে বেক্সিকমকো ফার্মার প্রত্যাশিত আয়ও হয়নি। এই অনিশ্চয়তায় শেয়ার দর কমতে কমতে ১৬৮ টাকা ৮০ পয়সায় নেমে আসে।

তবে গত ১ জুন থেকে ধীরে ধীরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন তা আবার ২০০ টাকার আশপাশে চলে এসেছে।

সবচেয়ে বেশি লেনদেনের পঞ্চম স্থানে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার দর আগের দিনের চেয়ে ৩ টাকা ১০ পয়সা যোগ হয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে ১৩৩ টাকা ৭০ পয়সায়। হাতবদল হয়েছে মোট ৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার।

অন্যদিকে ২০২০ সালে আয় কমায় লভ্যাংশ মাত্র ৫ শতাংশ দেয়ার কারণে আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচে নেমে গিয়েছিল। সম্প্রতি বা বাড়তে বাড়তে ১৫ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো দাম বাড়ার পর ধরে রাখতে পারছে না ইদানীং। ব্যতিক্রম আইএফআইসি ব্যাংক।

এই ব্যাংকটির দাম টাকা চার কর্মদিবস বাড়ল। গত ২ আগস্ট শেয়ারপ্রতি দর ছিল ১৩ টাকা ৫০ পয়সা। সেটি বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষ করেছে ১৬ টাকা ৮০ পয়সায়।

সবচেয়ে বেশি লেনদেনের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা এই কোম্পানিতে লেনদেন হয়েছে মোট ৭৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এই গ্রুপের অন্য কোম্পানি শাইনপুকুর সিরামিকস সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়ার তালিকায় ছিল ১০ নম্বরে।

২০১৫ সালে ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশের পর ২০১০ সালে শেয়ারপ্রতি ২০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৭ জুনও ছিল ২৫ টাকা ২০ পয়সা। বৃহস্পতিবার এক দিনেই ৩ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ৩০ পয়সায়।

কোম্পানির শেয়ার হাতবদল হয়েছে মোট ৪২ কোটি ৭৮ লাখ টাকার।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

এক দিনের ব্যবধানে ব্যাংক-আর্থিক খাতে ভালো দিন

মঙ্গলবার ৯ কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিষয়টি তদন্তে বিএসইসির আদেশ জারির দিন প্রায় সব খাতে দরপতন হলেও ব্যাংক ও আর্থিক খাতের দর বৃদ্ধি সূচকের বড় পতন হতে দেয়নি। ব্যাংকে দাম বৃদ্ধির পরিমাণটা খুব বেশি না হলেও সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের খাত হওয়ায় তার কিছুটা প্রভাব থাকে।

তবে নানা সময় দেখা গেছে ব্যাংকে দাম বৃদ্ধি হলেও তা টেকে না। আর একদিন দাম বাড়লে পরের কয়েক দিন ধরে কমে।

অতীতের সেই ধারাবাহিকতা দেখা যায় ‍বুধবার। আগের দিন যেমন অল্প করে কিছু বেড়েছিল, পরদিন অল্প করে কমে যায় বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর।

সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে আবার অল্প করে বেড়েছে বেশির ভাগ ব্যাংকের শেয়ারদর। এর ভিড়ে অবশ্য এবি ও আল আরাফাহ ব্যাংকের দর বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

এবির শেয়ার দরে আগের দিনের দামের সঙ্গে যোগ হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা, আর আল আরফাহর দামের সঙ্গে ১ টাকা ৪০ পয়সা। নতুন তালিকাভুক্ত সাউথ বাংলার শেয়ারদর আবার ১০ শতাংশ বা ১ টাকা ১০ পয়সা বেড়েছে।

বাকিগুলোর দাম বাড়া বা কমা-কোনোটার হারই খুব একটা বেশি না। ১০ থেকে ৩০ পয়সার মধ্যে রয়েছে দাম উঠানামা।

সব মিলিয়ে এই খাতে বেড়েছে ২৬টির দর, কমেছে ৬টির। লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২১৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আজ হয়েছে ২২০ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক খাতে দাম বৃদ্ধির হার বেশি। জিএসপি ফিনান্সের ১ টাকা ১০ পয়সা, বে লিজিং, ডিবিএইচ ও আইডিএলসি ও ইউনাইটেড ফিনান্সের ১ টাকা ৭০ পয়সা করে, বিডি ফিনান্সের ২ টাকা ২০ পয়সা, উত্তরা ফিনান্সের ২ টাকা ৬০ পয়সা, আইপিডিসির ২ টাকা ৮০ পয়সা, লঙ্কাবাংলা ফিনান্সের ৩ টাকা ২০ পয়সা, ন্যাশনাল হাউজিং ফিনান্সের শেয়ারের দর বেড়েছে ৪ টাকা ২০ পয়সা করে। আগের দুই দিন সর্বোচ্চ মূল্যসীমা স্পষ্ট করা ইসলামিক ফিনান্স তৃতীয় দিনের মতো বেড়েছে ৮০ পয়সা।

এই খাতে লেনদেনও হয়েছে ব্যাংপক। প্রকৌশল ও বিবিধ খাতকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে খাতটিতে। হাতবদল হয়েছে ৩৫০ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন ছিল ২০০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

বিমা নিয়ে সাবধানবাণী গায়ে না মেখে এখন হতাশা

গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক দফা আর চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে জুনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বিমা খাতে দ্বিতীয় দফা চাঙাভাব দেখা দেয়। কোম্পানির আয়, লভ্যাংশের সম্ভাবনা বিচার না করে উড়তে থাকে দাম। বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারদর এই সময়ের মধ্যে তিন থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে।

এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে বারবার বাজার বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ তা কানেই তোলেননি। বর যারা সতর্ক করেছেন, তাদেরকে কটূ কথা শুনিয়েছেন।

আর ফেসবুকভিত্তিক বিভিন্ন পেজে কয়েকজন ব্যক্তি একে ‘রকেট সেক্টর’ আখ্যা দিয়ে প্রলুব্ধ করেছে। তারা বারবার নানা চার্ট আর কথিত টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস ব্যাখ্যা করে বোঝাতে চেয়েছেন দাম আরও বাড়বে।

তবে ১৪ জানুয়ারি থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এক দফা সংশোধনে কোম্পানিগুলো ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ দর হারিয়ে ফেলার মতোই এবারও ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ দর হারিয়েছে বহুগুলো।

প্রায় প্রতিদিনই বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক ফেসবুক পেজে তাদের হতাশার কথা বলেন। আশা করেন আগামী দিন থেকে বিমা খাত ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু পরের দিন দাম আরও কমায় সেই হতাশা বাড়ে।

এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৭ টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৪৩ টির। দাম ধরে রাখতে পেরেছে ১টি।

এই খাতে লেনদেন হয়েছে ১২৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১০৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আইসিবির পেরেক

জুনে অর্থবছর শেষ করা ৬টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের রেকর্ড লভ্যাংশের পর রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আইসিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত আটটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড গত রাতে তাদের লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের নোটিশ বোর্ডে বৃহস্পতিবার সেটি প্রকাশ হয়েছে।

গত বছরের মন্দাবাজারে ফান্ডগুলো লোকসান না দেয়নি। কিন্তু এবার চাঙা বাজারে তাদের আয় হয়েছে খুবই কম। সবচেয়ে বেশি আয় করেছে যে ফান্ডটি, সেটি ইউনিটপ্রতি ৬৮ পয়সা মুনাফা করতে পেরেছে। আর আটটি ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা হয়েছে ৪ থেকে ৮ শতাংশ।

এর আগে লভ্যাংশ ঘোষণা করা বেসরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির ফান্ডগুলো সর্বনিম্ন ১ টাকা থেকে ১ টাকা ৭৫ পয়সা দেবে ইউনিটধারীদের। এসব ফান্ডের মধ্যে সবচেয়ে কম আয় করেছে যেটি, সেটিও ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৮১ পয়সা মুনাফা করেছে। সবচেয়ে বেশি মুনাফা করা ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ৩ টাকা ১৪ পয়সা আয় করেছে।

৯ টাকার ঘরে ফান্ড ১ টাকা ২০ পয়সা আর ১২ টাকার ঘরের ফান্ড ১ টাকা ৫০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পরেও সেগুলোর দাম কমছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আইসিবির ফান্ডগুলোর নিম্ন আয় ও লভ্যাংশ। সব মিলিয়ে ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে দর হারিয়েছে ২৬ টি। আগের দিনের দর ধরে রাখতে পেরেছে ৭ টি। আর বেড়েছে কেবল তিনটির।

জুনে অর্থবছর শেষ হয়েছে এমন ফান্ডের সংখ্যা পুঁজিবাজারে ২৯টি। এর মধ্যে আরও দুটি লভ্যাংশ ঘোষণা করবে বিকেলে। বাকি ১৩টি এখন সভা ঘোষণা সংক্রান্ত তারিখ জানায়নি।

এই খাতে লেনদেন হয়েছে ৭৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা

মূল উত্থান বস্ত্র খাতে

এই খাতে লেনদেন হয়েছে সর্বোচ্চ ৪৬১ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১২৩ কোটি টাকা বেশি। বুধবার হাতবদল হয়েছিল ৩৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার।

এই খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া ৫টিই এই খাতের কোম্পানি। এগুলোর দাম বেড়েছে একদিনে যত বাড়া সম্ভব ততই।

কোম্পানিগুলো হলো সিএনএ, রিংসাইন, তাল্লু, নুরানী ও আলিফ।

এর মধ্যে রিংসাইনের বোর্ড পুনর্গঠনের পর সেটি উৎপাদনে চলে এসেছে। বন্ধ থাকা তাল্লুর দাম গত কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে। গত এপ্রিলেও শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৪ টাকার নিচে।

অন্যদিকে নুরানীর মালিকপক্ষ কাউকে না জানিয়ে কোম্পানি বন্ধ করে দিয়েছে বলে সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিদর্শনে বেরিয়ে এসেছে। এই খবরে বুধবার কোম্পানিটির শেয়ার দর প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়। তবে রাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এই কোম্পানিটির বোর্ড ও পুনর্গঠন করে দিয়েছে। এই খবরে আবার চাঙা হলো দাম।

তদন্তের ধাক্কা কাটিয়ে উত্থান, বেক্সিমকো গ্রুপের রমরমা
ডিএসইতে লেনদেনের সবশেষ চিত্র

অন্যান্য খাতের চিত্র

জুনে অর্থবছর শেষ করে লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা প্রকৌশল খাতে আবার চাঙাভাব দেখা গেছে। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৮টির। কমেছে ১২টির আর দুটির দাম ছিল অপরিবর্তিত।

লেনদেনও কিছুটা বেড়েছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২৭৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সেটি বেড়ে হয়েছে ২৮৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

প্রধান অন্য খাতগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এক দিনের বিরতিতে আবার চাঙা হয়েছে। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩টির, কমেছে ৮টির আর পাল্টায়নি দুটির দর। লেনদেন হয়েছে ১১৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

ওষুধ ও রসায়ন ভাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ১৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল একটির দর। লেনদেন হয়েছে মোট ২৪৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ২২১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ৬টির। লেনদেন অবশ্য কমেছে। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৭৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। আজ হয়েছে ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৭টির, কমেছে ৪টির শেয়ার দর। লেনদেন হয়েছে ৫৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

বেক্সিমকো লিমিটেডের বদৌলতে বিবিধ খাত লেনদেনের তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে। এই খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে ৩টির দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ১১টির। হাতবদল হয়েছে মোট ৩২৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের দিন যা ছিল ২৬৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন:
বড় পতন থেকে রক্ষা ‘হতাশার ব্যাংকে’
‘নিলাম আতঙ্ক’ কাটিয়ে ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ লেনদেন
তুমুল আগ্রহের রবি আর জ্বলেনি
স্কয়ার-বিকনের শেয়ারের সমান দাম কী বার্তা দেয়?

মন্তব্য

আরও পড়ুন

পুঁজিবাজার
The government is then a safe return of the national football team trapped in Nepal

নেপালে আটকে পড়া জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে তৎপর সরকার

নেপালে আটকে পড়া জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে তৎপর সরকার

নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।

নেপালে চলমান বিক্ষোভ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের দেশে প্রত্যাবর্তন সাময়িকভাবে বিলম্বিত হয়েছে। আজ স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দলের দেশে ফেরার কথা থাকলেও পরিস্থিতির অবনতির কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সব ফ্লাইট বাতিল করে। ফলে দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দ বর্তমানে টিম হোটেলে অবস্থান করছেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় জানিয়েছে, দলের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দলের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এ বিষয়ে নেপালস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রেক্ষাপটে দলের নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নেপালের সেনাবাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

এছাড়া যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবং টিম ম্যানেজার আমের খানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে দলের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং দেশে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Comilla University student Sumaiya and his mother were killed after failing to rape

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও তার মাকে হত্যা

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও তার মাকে হত্যা

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। হত্যার মূল আসামি মো. মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকায় পালিয়ে যাবার সময় কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মোবারক হোসেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত. আবদুল জলিলের ছেলে।

পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ঝাড়-ফুক করার সুবাদে মোবারক হোসেন সুমাইয়া আফরিনদের বাসায় যাতায়াত করতেন। গত রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সুমাইয়াদের ভাড়া বাসা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় নেলি কটেজ নামক বাসায় প্রবেশ করেন মোবারক। এরই মধ্যে মোবারক তাদের বাসায় ঝাড়ফুঁক করে পানি ছিটিয়ে বেরিয়ে যান। আবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। যা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়।

পুলিশ সুপার বলেন, মোবারক তাদের বাসায় থাকাকালীন সময়ে এক পর্যায়ে সুমাইয়া আফরিনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় সুমাইয়ার মা বাধা দেন। এতে মোবারক ক্ষুব্ধ হয়ে সুমাইয়াকে এক ঘরে আটকে মা তাহমিনা বেগমকে অন্য একটি রুমে নিয়ে বালিশ চাপায় হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়াকে তার রুমে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় সুমাইয়া প্রতিরোধ করলে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। হত্যার পর মোবারক সুমাইয়াদের ঘর থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যান। তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ হয়েছে কিনা বিষয়টি ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নিহত সুমাইয়া আরফিন (২৩) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা ও কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে। গত সোমবার সকালে ওই বাসা থেকে সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Missing the traditional trap of fishing is getting lost in Comilla

কুমিল্লায় হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরার ঐতিহ্যবাহী ফাঁদ চাই

কুমিল্লায় হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরার ঐতিহ্যবাহী ফাঁদ চাই

বর্ষা মৌসুমে টইটম্বুর পানির সঙ্গে উজান থেকে ভেসে আসা দেশীয় মাছ—বজুরী, টেংরা, ঢেলা, দারখিলা, কটকটি, বাইলা, পুটি, সেলবেলা, চান্দা, বৈইচা, পাবদা, শিং, কৈ, টাকি, চেধূরী, এলকোনা, খৈইলশা, ভাংলা, কাটাইড়া, বাতাইয়া, চিংড়ি, বাইম, গুতুমসহ নানান প্রজাতির মাছ একসময় খাল-বিল-জমিতে ডিম ছাড়ার জন্য ছুটে আসত। সেই সময়ে গ্রামের ছেলেরা মাছ ধরার জন্য নানান ফাঁদ পাতত। এর মধ্যে অন্যতম ছিল আনতা, বেউর ও চাই, আনতা। যা আজ বিলুপ্তির পথে।

তবে এখনো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর আনতা হাট সেই পুরনো স্মৃতি ধরে রেখেছে। রামচন্দ্রপুর, দক্ষিণ বাঙ্গরা ও মালাই বাঙ্গরা বাজার, হাটখোলা, ইলিয়াটগঞ্জ, চান্দিনার নোয়াবপুর, বর্ষা মৌসুমে বাঁশের তৈরি আনতা বিক্রির ধুম পড়ে যেত কিন্তু পূর্বে ন্যায় দেশীয় মাছ না থাকায় আস্তে আস্তে এসব মাছ ধরার ফাঁদ তৈরিতে কৃষক, জেলে আগ্রাহ হাচ্ছে। শুধুই মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ, যা এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয়।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ও মানভেদে প্রতিটি আনত ৩০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্ষার শেষ দিকে এ ফাঁদের চাহিদা আরও বেড়ে যেত। ব্যবসায়ীরাও মৌসুমে ভালো লাভের আশা করত। এন তেমন একটা চোখে পড়ে না, রামচন্দ্রপুরের আনতা ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, ‘প্রতি হাটে আমি ৬০ থেকে ৭০টি আনতা বিক্রি করি কিন্তু যখন মাছের ভরা মৌসুম ছিল তখন সারাবছর লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাড়িতে আনতা তৈরি করতাম। দূর-দূরান্ত থেকেও ক্রেতারা আসত। আর তেমন বিক্রি না থাকায় ব্যাবসা অনেক কমে গেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মাছ জমির আইল ধরে নামতে শুরু করে, তখন আইলে আনতা পুঁতে রাখলেই সহজে মাছ ধরা পড়ে। বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুশি হতাম, আমাদের দাবি আনতা, বেউর, চাই, উছা, পেলুন।এই ফাঁদ তৈরিতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে অল্প আয়ের মানুষ দের বাচিয়ে রাখা উচিত। পাশাপাশি বাঁশ শিল্প বেচে থাকবে।

স্থানীয় মাছ বিক্রেতা মতিন মিয়া জানান, তিনি প্রতি মৌসুমে ৫-৬টি আনতা কেনেন। আনতা দিয়ে প্রতিদিন ২-৩ কেজি মাছ ধরা পড়ে। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে তিনি ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।

শুধু মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে অনেকের জীবিকার উৎস। আনতা তৈরি ও বিক্রি করে বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার এর সাহায্যে ধরা মাছ বিক্রি করে অনেকেই বাড়তি আয় করছে। ছোট-বড় সবাইকে মাছ ধরার আনন্দে মাতিয়ে তোলে এই দেশীয় কৌশল, যা আজও মুরাদনগরের গ্রামীণ জীবনের অনন্য ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Tausif returns to the Bachelor Point series

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকে ফিরছেন তৌসিফ!

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকে ফিরছেন তৌসিফ!

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের ৫ নম্বর সিজন চলছে। ভক্তদের মুখে মুখে কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত এ সিরিজটি। নাটকটির শুরু থেকেই সিজন ১, ২, ৩ এবং ৪ দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হন নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি ও তার টিম। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজনগুলোর ব্যাপক সাফল্যের পর এবার ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর ফাইভ সিজন প্রচার হচ্ছে।

এই সিরিজে কাবিলা, শুভ, জাকির, শিমুল, পাশা, আরেফিন, হাবু ভাই নামের চরিত্রগুলোর মতো নেহাল চরিত্রটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সর্বদা তুঙ্গে। যেই নেহাল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তৌসিফ মাহবুব। এত দিন ব্যক্তিগত কিছু কারণে এ সিরিজ থেকে দূরে ছিলেন। তবে এ সিজনে ফিরছেন তিনি নেহাল হয়েই, যেটা তিনি নিজেই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

বললেন, ‘দর্শক সর্বদা চান নেহাল চরিত্রটি ফিরে আসুক। তাই ফের এ চরিত্রটির মাধ্যমে ব্যাচেলর পয়েন্টে দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন।’ এর আগে নির্মাতা অমি বলেছিলেন, বাস্তব জীবনের মতোই হয়তো ভবিষ্যতে কোনো একসময় দেখা যাবে তাদের আবার একসঙ্গে। তাই সেই অপেক্ষার পালা মনে হয় শেষ হলো তৌসিফের ফেরার মাধ্যমে।

মন্তব্য

গফরগাঁওয়ে পূবালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ ও কুইজ প্রতিযোগিতা

গফরগাঁওয়ে পূবালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ ও কুইজ প্রতিযোগিতা

ময়মনসিংহর গফরগাঁওয়ে পূবালী ব্যাংক (পিএল সি) এর স্কুল ব্যাংকিং কর্মশালার আওতায় ঐতিহ্যবাহি বিদ্যাপীঠ গফরগাঁও মহিলা কলেজে বৃক্ষরোপণ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার ( ৯সেপ্টন্বর) ১১টায় মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে পূবালী ব্যাংকের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
বৃক্ষরোপণ শেষে মহিলা কলেজ হল রুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন গফরগাঁও মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ মো. আব্দুল খালেক,পূবালী ব্যাংক (পিএলসি) গফরগাঁও উপশাখা ব্যবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামানসহ কলেজের শিক্ষক- শিক্ষার্থী ও পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ। কলেজ অধ্যক্ষ আবদুল খালেক ব্যাংক কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গাছ আমাদের জীবনের অংশ,গাছ ছাড়া আমাদের জীবন ও পরিবেশের কথা চিন্তাও করতে পারিনা,অধিক পরিমানে গাছ লাগান প্রাকৃতিক বিপর্যয় হতে দেশকে বাচাঁন।
আলোচনা শেষে কলেজ শিক্ষার্থীদে মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
In the Coast Guards operation in Chandpur 3 domestic firearms were seized by 2 Ram Da and 2 Chinese ax

চাঁদপুরে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি রাম দা ও ২টি চাইনিজ কুড়াল জব্দ

চাঁদপুরে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি রাম দা ও ২টি চাইনিজ কুড়াল জব্দ

মঙ্গলবার ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সোমবার চাঁদপুর উত্তর মতলব থানাধীন মোহনপুর লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় একটি ডাকাত দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন চাঁদপুর কর্তৃক উক্ত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি রাম দা ও ২টি চাইনিজ কুড়াল জব্দ করা হয়। এসময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

জব্দকৃত অস্ত্রের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Distribution of Assistant Devices to Students with Special Students

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অ্যাসিসটিভ ডিভাইস বিতরণ

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অ্যাসিসটিভ ডিভাইস বিতরণ

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের মাঝে অ্যাসিসটিভ ডিভাইস বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব উপকরণ বিতরণ করা হয়।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের উদ্যোগে স্পেশাল অ্যাডুকেশন নিডস অ্যান্ড ডিজাবিলিটিস (সেন্ডর) কার্যক্রম বাস্তবায়নের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের মাঝে অ্যাসিসটিভ ডিভাইস বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডা. তামান্না তাসনীম।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার রমিতা ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে শিশুদের মাঝে ৪ জনকে হুইল চেয়ার, ২ জনকে শ্রবণ যন্ত্র, ১০ জনকে চশমা ও একজনকে জুতা জোড়া প্রদান করা হয়।

এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার রমজান আলী, লুৎফুন্নেছা, মনিরা খাতুন, আরিফুল ইসলাম, কাপাসিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহেলী নাসরিন, একডালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন ভূঁইয়া, ধরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আতিকুল ইসলামসহ শিশুদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

p
উপরে