২০২০ সালের জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে যে উত্থান, তার তেমন কোনো এভাব দেখা গেল না রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত আটটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে।
একটি ফান্ড সর্বনিম্ন ইউনিটপ্রতি ৩১ পয়সা আয় করেছে। আর একটি ফান্ড সর্বোচ্চ ৬৮ পয়সা আয় করেছে ইউনিটপ্রতি।
আর খুব একটা আয় করতে না পারায় লভ্যাংশও ভালো আসেনি। এর মধ্যে একটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি সর্বনিম্ন ৪০ পয়সা এবং একটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ মুনাফা দিয়েছে।
এ নিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফান্ডগুলোর মধ্যে যেগুলোর অর্থবছর গত ৩০ জুন শেষ হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৪টি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আরও দুটি ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা হবে বৃহস্পতিবার।
এখন পর্যন্ত যেসব ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে কম লভ্যাংশ দিতে যাচ্ছে গত বছর মন্দা পুঁজিবাজারেও মুনাফা করে লভ্যাংশ দেয়া আইসিবির ফান্ডগুলো।
এর আগে যে ৬টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে কম আয় করেছে যে ফান্ডটি, সেটিও ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৮৭ পয়সা আয় করেছে। ইউনিটপ্রতি ৩ টাকা ১৪ পয়সাও আয় করেছে একটি ফান্ড।
২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি বছর জুন পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে দুই হাজার ১০০ পয়েন্টেরও বেশি। আর এ কারণে চলতি বছর বিভিন্ন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো ব্যাপক আয় করে রেকর্ড সংখ্যক লভ্যাংশ দিচ্ছে। ৯ টাকার ঘরে দুটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ১২ পয়সা আর ১২ টাকার ঘরে দুটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিচ্ছে। একটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা লভ্যাংশও দিয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয়, এমন ফান্ডগুলোও এবার আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। একটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি ২ টাকা ৫ পয়সা পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
২০১০ সালে মহাধসের কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইসিবির মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও ব্যাপক লোকসানে পড়ে আর সেটি তারা কাটিয়ে উঠতে পারেনি এখনও। তবে গত বছর মন্দা বাজারেও এই ফান্ডগুলো কোনো লোকসান দেয়নি, যেটি তাদের শক্তিমত্তার পরিচয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তবে গত বছর লোকসান না দেয়াটাই এবার লভ্যাংশ বিতরণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। এর আগে যে ছয়টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল, তার মধ্যে একটি কেবল গত বছর লোকসান দেয়নি। আর এ কারণে এবার ইউনিটপ্রতি আয় তুলনামূলক কম থাকলেও তারা লভ্যাংশ সেই হিসেবে বেশি দিয়েছে। অন্য ফান্ডগুলো তাদের আয় থেকে গত বছরের লোকসান সমন্বয় করেছে। আর বাকি অর্থের ওপর লভ্যাংশ দিয়েছে।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিধিমালা অনুযায়ী গ্রোফ ফান্ড তাদের আয়ের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ফান্ড অন্তত ৭০ শতাংশ লভ্যাংশে বিতরণ করবে।
চলতি বছরের চাঙা বাজারেও বছরের তিন প্রান্তিকে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির আটটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের আয় আহামরি কিছু হয়নি। তাই লভ্যাংশের জন্য নির্ভর করতে হয়েছে মূলত চতুর্থ প্রান্তিকে আয়ের ওপর। কিন্তু তিন প্রান্তিকের মতো চতুর্থ প্রান্তিকেও হতাশ করল রাষ্ট্রায়ত্ত করপোরেশনটি।
কোন ফান্ডের আয়, লভ্যাংশ কত
আইসিবি এএমসিএল অগ্রণী ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটপ্রতি ৬৮ পয়সা আয় করে ৭০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটিরই আয় ও লভ্যাংশ এসেছে সর্বোচ্চ।
ফান্ডটির তৃতীয় প্রান্তিকে শেষে আয় ছিল ৩০ পয়সা। চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ৩৮ পয়সা।
লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মূল্য ছিল ৯ টাকা ৩০ পয়সা।
গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ৩৪ পয়সা আয় করে ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল।
আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট প্রতি ৩৭ পয়সা আয় করে ৮০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি আয় ছিল ৩১ পয়সা। অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ৬ পয়সা।
লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মূল্য ছিল ১১ টাকা ১০ পয়সা।
গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ৩০ পয়সা আয় করে ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল।
আইসিবি এএমসিএল থার্ড এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটপ্রতি ৫২ পয়সা আয় করে ৭০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি আয় ছিল ২৫ পয়সা। অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ২৭ পয়সা।
লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মূল্য ছিল ৭ টাকা ৪০ পয়সা।
গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ২৪ পয়সা আয় করে ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল।
আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ইউনিটপ্রতি ৪১ পয়সা আয় করে ৬০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ফান্ডটিরে ইউনিটপ্রতি আয় ছিল ৩০ পয়সা। অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১১ পয়সা।
লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মূল্য ছিল ৮ টাকা।
গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ২০ পয়সা আয় করে ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল।
আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ইউনিট প্রতি ৫৩ পয়সা আয় করে ৭০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি আয় হয়েছে ৪১ পয়সা।
অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১২ পয়সা।
লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মূল্য ছিল ৯ টাকা ১০ পয়সা।
গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ২৪ পয়সা আয় করে ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল।
আইএফআইএল ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ইউনিটপ্রতি ৩১ পয়সা আয় করে ৪০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে এই ফান্ডের ইউনিটপ্রতি আয় ছিল ১১ পয়সা। অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ২০ পয়সা।
লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মূল্য ছিল ৭ টাকা ৪০ পয়সা।
গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ২২ পয়সা আয় করে ৪০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল।
ফিনিক্স ফিনান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট প্রতি ৩২ পয়সা আয় করে ৬০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত মার্চে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি ২৮ পয়সা আয় ছিল। অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ৪ পয়সা।
লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মূল্য ছিল ১০ টাকা ৪০ পয়সা।
গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ২৬ পয়সা আয় করে ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল।
প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট এএমসিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটপ্রতি ৪৭ পয়সা আয় করে ৭৫ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মার্চে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ৪১ পয়সা আয় করেছিল। অর্থাৎ চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ৬ পয়সা।
লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি মূল্য ছিল ৭ টাকা ৮০ পয়সা।
গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ৩১ পয়সা আয় করে ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল।
সব ফান্ডের রেকর্ড আয়-রেকর্ড লভ্যাংশ
জুনে অর্থবছর শেষ হয়েছে এমন ছয়টি ফান্ড এরই মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করছে যেগুলো রেকর্ড আয় করে লভ্যাংশও দিয়েছে রেকর্ড পরিমাণ।
স্ট্র্যটেজিক ইক্যুইটি পরিচালিত তিনটি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
এর মধ্যে এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড ও এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড ইউনিটধারীদেরকে দেড় টাকা করে লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
দুটির মধ্যে বেশি আয় করেছে লেকচার ফান্ড। তবে গত বছরের লোকসানের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে গিয়ে তারা লভ্যাংশ কমিয়েছে।
ফান্ডটি এবার ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ২ টাকা ৮৪ পয়সা। আগের বছর লোকসান ছিল ১ টাকা ৭ পয়সা।
অন্যদিকে গ্রোথ ফান্ড এবার ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৮৭ পয়সা আয় করলেও এর লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা বেশি ছিল। কারণ, তাদের গত বছর লোকসান ছিল না। সে বছর ইউনিটপ্রতি আয় ছিল ২৭ পয়সা।
এই কোম্পানি অপর ফান্ড এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ তার ইউনিটধারীদেরকে ১ টাকা করে লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
এই ফান্ডটি এবার ইউনিটপ্রতি ২ টাকা ৩৫ আয় করেছে। গত বছর ১ টাকা ১৩ পয়সা লোকসান ছিল তাদের। সেটি সমন্বয়ের পর কমেছে লভ্যাংশ।
আরেক সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি এলআর গ্লোবাল পরিচালিত ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও গ্রিন ডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট প্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা অর্থাৎ ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেবে এবার।
২০১০ সালে তালিকাভুক্ত দুটি ফান্ড এর আগে কখনও এত বেশি লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
গ্রিনডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড এর আগে সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে, ৯ শতাংশ করে। অন্যদিকে ডিবিএইচ মিউচ্যুয়াল ফান্ড সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০১৮ সালে।
ফান্ড দুটিই এবার ইউনিটপ্রতি ২ টাকা ১৩ পয়সা করে আয় করেছে। ২০২০ সালে ডিবিএইচ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট প্রতি ১ টাকা ৮ পয়সা লোকসান দিয়েছিল। আর গ্রিনডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড লোকসান দিয়েছিল ৯৯ পয়সা। আর সেটি সমন্বয় করতে কমাতে হয়েছে লোকসান।
জুন ক্লোজিং মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো মধ্যে সবার প্রথম লভ্যাংশ ঘোষণা করে এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, যেটি ইউনিট প্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছে।
চলতি বছর আয় হয়েছে ৩ টাকা ১৪ পয়সা। আর আগের বছর ৭৬ পয়সা লোকসানের বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে চূড়ান্ত আয় হয়েছে ১ টাকা ৮৬ পয়সা।
আরও পড়ুন:বরিশালের নদ-নদী এবং সাগরে হঠাৎ করে ধরা পড়ছে ঝাকে ঝাকে ইলিশ। সেই সঙ্গে ঝিমিয়ে যাওয়া বরিশালের সর্ববৃহৎ পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি-গত তিনদিন ধরে দৈনিক দুইশ থেকে সাড়ে তিনশ মণ পর্যন্ত ইলিশ আসছে এই পাইকারি মৎস্য আড়তে। তবে সরবরাহের অর্ধেকের বেশি ইলিশ আকারে ছোট দাবি বলে আড়তদারদের।
ইলিশের সরবরাহ বাড়তে শুরু করলেও দাম এখনো নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এক কেজি জাটকা কিনতে এখনো গুণতে হচ্ছে সর্বনিম্ন পাঁচশ টাকা। তবে সরবরাহ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ঠিক থাকলে চলতি মাসেই ইলিশে দাম আরও কমে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।
সরজমিনে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে দেখা যায়, ভোর পাঁচটা বাজার আগে থেকেই আড়তে আসছে একের পর এক ইলিশের ট্রলার। সাগর এবং নদীর মাঝ পোর্ট রোডে নামিয়ে দিয়ে ট্রলার নিয়ে জেলেরা আবার ছুটছেন সাগর এবং নদীতে। তবে বর্তমানে বরিশাল মোকামে আসা অর্ধেক ইলিশ স্থানীয় নদ-নদীর বলে দাবি জানিয়েছেন আড়াতদাররা।
পোর্টরোড আক্তার মৎস্য আড়তের আড়তদার আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গত দুই-তিন দিনের তুলনায় রোববার ইলিশের দাম কিছুটা কম ছিল। কারণ এ কয়দিনে আড়তে ইলিশের সরবরাহ কিছু বেশি হয়েছে। এর পরও এলসি সাইজ অর্থাৎ ৭০০-৯৯৯ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৭৫-৭৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিমণ ৮৮ হাজার, এক কেজির ওপরে ১২শ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ প্রতিমণ ৯২ হাজার, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৯৮ হাজার টাকা, ভেলকা সাইজ অর্থাৎ ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম প্রতিমণ ৫৮-৬০ হাজার টাকা, ৩০০ থেকে ৫শ গ্রাম ইলিশ প্রতিমণ ৩২ হাজার টাকা এবং জাটকা ইলিশ প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকা দরে।
মৎস্য আড়তদার ইয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে বরিশালের আড়তে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার মণ ইলিশও এসেছে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর সেই পরিমাণ কমে গেছে। তবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মৎস্য আড়তে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে বিধায় গত তিন দিন ধরে নদী এবং সাগরের মাছের ট্রলার বরিশালে আসছে। এ কারণে বরিশালের আড়তে সরবরাহও বেড়েছে।
বরিশাল শহীদ জিয়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহির সিকদার বলেন, রোববার বরিশালের আড়তে তিনশ মনের বেশি ইলিশ এসেছে। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ। তবে সরবরাহ হওয়া ইলিশের মধ্যে প্রায় আড়াইশ মণই জাটকা। তাছাড়া নদীর থেকে সাগরের ইলিশটাই বেশি আসছে।
তিনি জানান, গত শনিবার বরিশাল পোর্ট রোড মোকামে ২০০ মণ এবং তার আগের দিন শুক্রবার প্রায় দুইশ মণ ইলিশ এসেছে পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে। ফলে গত তিন দিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম মণপ্রতি ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। আগামী ২৫ জুন পূর্ণিমার জোঁ রয়েছে। ওইদিন থেকে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে বলে আশাবাদী এই ব্যবসায়ী।
খুঁচরা বাজারে দেখা যায়, আড়তে মাছের সরবরাহ বাড়লেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। সংকটের অজুহাতে এখনো বাড়তি দামেই ইলিশ বিক্রি করছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। ৭০০-৯৯৯ গ্রামের ইলিশ পাইকারী হিসেবে প্রতি কেজির দাম ১৮শ থেকে ১৯শ টাকা হলেও তা বিক্রি করা হচ্ছে ২২শ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। একইভাবে কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ২২শ টাকার পরিবর্তে বিক্রি করা হচ্ছে ২৫শ থেকে ২৮শ টাকায়। আর জাটকা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বাড়তি দামে ইলিশ বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিম্ন আয়ের ক্রেতারা।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপণ কান্তি ঘোষ বলেন, একসময় বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য আড়ত জমজমাট ছিল। তখন দক্ষিণাঞ্চলের নদী এবং সাগরের ইলিশ এখানো আসত। তবে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির কারণে ইলিশ যাচ্ছে পটুয়াখালীর মহিপুর, আলিপুর এবং পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। তাছাড়া বরিশালের হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ এলাকার ইলিশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চাঁদপুরে। বরিশালের আড়তে যা মাছ আসছে তা স্থানীয় নদনদীর মাছ।
তিনি বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান অনেকটা সফল হয়েছে। এ সময় প্রচুর ইলিশের পোনা ছেড়েছে। এর সুফল সামনে পাওয়া যাবে। তবে এখনই গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই নদনদীতে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। এটা ভালো লক্ষ্যন। বৃষ্টি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। ভবিষ্যতে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়লে দামও কমে আসবে বলেন এই কর্মকর্তা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার অজোপাড়াগায়ে গড়ে ওঠেছে নৌকার গ্রাম। আর এ নৌকার গ্রামকে ঘিরে বালু নদীর তীর ঘেষে জমে ওঠেছে ব্যতিক্রমী নৌকার হাট। কাঠের খুটখাট আর নদীর পানির ছলাৎ-ছলাৎ শব্দ যে-কারো মনকে আবেগে ভরিয়ে দেবে। হয়তো ক্ষণিকের জন্য কেউ কবি বনে যেতে পারে। নৌকা তৈরির এ গ্রাম দু’টির অদূরেই গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাটটি বর্ষা আসলেই জমে উঠে। আর বর্ষা ঘিরে নয়ামাটি ও পিরুলিয়া এলাকায় নৌকা তৈরির ধুম পড়ে যায়। কারিগরেরা হয়ে পড়ে মহাব্যস্ত। কায়েতপাড়া নৌকার হাটটিতে তখন চলে নৌকা বেচাকেনার রমরমা ব্যবসা। এছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকন্দাইল বাজারে প্রতি বৃহস্পতিবার বসে নৌকার হাট। ইছাখালী-নগরপাড়া সড়কের অদূরেই নৌকার গ্রাম। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাত্র তিন মাসের মৌসুমি ব্যবসা। চাহিদা যথেষ্ট, তাই কারিগরদের ব্যবস্থাও বেশি।
শুরুর ইতিহাস : রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার কারিগরেরা স্বাধীনতারও আগে থেকে নৌকা তৈরি করে আসছে। কারো-কারো মতে, এ এলাকার নৌকা তৈরির ইতিহাস প্রায় শতাব্দী প্রাচীন। পিরুলিয়া এলাকার অতশীপরবৃদ্ধ অঞ্জনকুমার দাস বলেন, আমার জন্মের আগে থেইক্যা বাপ-দাদারা গয়না (নৌকা) বানাইয়া আইতাছে হুনছি। নয়ামাটি ও পিরুলিয়া ছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল, সাওঘাট এলাকার কারিগরেরা নৌকা তৈরি করে আসছে।
কারিগর কারা : নৌকা তৈরির গ্রাম পিরুলিয়া ও নয়ামাটি বললেই সবাই চেনে। তবে এ এলাকা দুটি গ্রামের ৯০ ভাগই মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। হিন্দুরাই দীর্ঘদিন ধরে নৌকা তৈরি করে আসছে। আশির দশকের পর নৌকা ব্যবসায়ী কমে যায়। অনেকে ভারত চলে যাওয়ায় এখনো দেড়শ পরিবার টিকে রয়েছে কোনোমতে। সাওঘাট এলাকার কারিগর প্রদ্যুত কুমার সরকার বলেন, আগে ব্যবসা ভালাই আছিলো। অহন কাটের দাম আর লোয়া (লোহা ) পেরেকের দাম বাইড়া যাওনে লাভ কম অয়।
কারিগরা যা বলছেন: পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার নৌকা তৈরির কারিগরেরা এখন ভালোই আছেন। নৌকা বিক্রি করে তারা সংসার চালাচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। বছর শেষে মোটামুটি লাভের মুখ ও দেখছেন। কথাগুলো একবাক্যে বললেন পিরুলিয়া এলাকার সত্যেন দাস। তার ছেলে লেখাপড়া করছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। নয়ামাটি এলাকার রমেশ দাস বলেন, কই খারাপতো নাইগো দাদা। মোডা ভাত- আর মোডা কাপড় পরবার পারি। এইডাই সুখ।
বর্তমান অবস্থা : নৌকা তৈরির কারিগরদের অবস্থা এখন কিছুটা ভাটা পড়েছে। ৯০ দশকের পর যান্ত্রিক সভ্যতা ফিরে আসায় নৌকার কদর কিছুটা কমে যায়। প্রতি বছর বর্ষায় নৌকা তৈরির ধুম চলে। তবে বন্যা হলে ব্যবসা ভালো হয় বলে জানালেন সুনীল দাস। তিনি বলেন, ৮৮’ আর ৯৮’ সালের বন্যায় অনেক টেহা লাব অইছিলো। নয়ামাটি এলাকার নৌকার কারিগর রবি দাস বলেন, কাডের দাম বাইড়া যাওনে লাভটা কম হয়। নাইলে ব্যবসা খারাপ না। আর স্টিলের নৌকার কারণে কিছুডা লছ অইতাছে। তারপরেও খারাপ নাই। ডাইল-ভাত খাইবার পারি।
খরচ কত : এক-একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর মোটামুটি কাঠের নৌকা তৈরিতে খরচ পড়ে ৮/১০ হাজার টাকা। কথাগুলো বললেন নৌকার কারিগর তাপস দাস।
নৌকার হাটের কথা : বালু নদীর তীর ঘেঁষেই কায়েতপাড়া বাজারে নৌকার হাট। বর্ষা মাসজুড়েই এ হাট জমে। ঢাকার নিম্নাঞ্চলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা নৌকা কিনতে আসেন। দামে সস্তা হওয়ায় এখানকার নৌকার কদরও বেশি। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল বাজারের সামনে বিলে জমে ব্যতিক্রমি নৌকার হাট। এ হাটে প্রতি বৃহস্পতিবারে প্রায় কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। নৌকার হাট শুরু হয় নৌকা তৈরির গ্রামগুলোর কারিগরদের ঘিরেই। প্রতি বৃহস্পতিবার এ হাট জমে ওঠে। বৃহস্পতিবার এ হাটে কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। ওঠে নৌকার বৈঠাও। গজারি কাঠের এক-একটি নৌকার দাম পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর কোষা ৭/৮ হাজার টাকায়। বৈঠাগুলো ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হয়। নৌকা বিক্রেতা সুবল চন্দ্র দাস বলেন, দাদু ব্যবসা ভালোই, তয় পানি বেশি অইলে লাভ অয়। ঢাকার ত্রিমহোনী থেকে নৌকা কিনতে আসা ওমরআলী বলেন, এ হাটে তুলনামূলক সস্তায় নৌকা পাওয়া যায়। আড়াইহাজার থেকে নৌকা কিনতে আসা সামছুল হক বলেন, এ হাটে নৌকার দাম কম। তাই এহান থেইক্যা কিনবার আইছি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ বিষয়ক এক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বক্তব্য রাখেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
রবিবার (২২ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় ইউরোপীয় দূতাবাস এমন তথ্য জানিয়েছে।
ইইউ দূতাবাস বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জন্য আরও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে সুশীল সমাজকে ক্ষমতায়নে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি ও এর অংশীদাররা।
ইউরোপীয় পার্টনারশিপ ফর ডেমোক্রেসির (ইপিডি) সহায়তায় এর অংশীদার সংগঠন আনফারেল ১৮ থেকে ২০ জুন ঢাকায় তিনদিনব্যাপী একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। এর বিষয়বস্তু ছিল নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ।
ইইউ দূতাবাস জানায়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে সব অংশগ্রহণকারী একমত পোষণ করেছেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রণয়নে সহযোগিতা এবং এতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় ফুল ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দেয় নতুন রাজনৈতিক দলটি। এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন উপস্থিত ছিলেন।
পছন্দের প্রতীকের তালিকায় শাপলা ছাড়াও কলম ও মোবাইল রেখেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। আবেদন জমা দেওয়ার পর আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে দল নিবন্ধনের শর্তসমূহ পূরণ করে আমাদের দল নিবন্ধনের আবেদন এই মাত্র দাখিল করেছি। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আমাদের আবেদন রিসিভ (গ্রহণ) করেছেন। আমাদেরকে রিসিভ কপি তারা দিয়েছেন।’
এ সময় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘৫ তারিখে গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে বাংলাদেশের মানুষের জয় হয়েছিল, আগামীর পার্লামেন্ট ভোটে এনসিপির শাপলা প্রতীকে পুরো বাংলাদেশের মানুষ জয়জয়কার করে দেবে, এনসিপির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন হবে।’
এ সময় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে গত ১৫ বছরে ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে যেসব ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের যেমন পুনর্গঠন করতে হবে, নিয়মনীতির পরিবর্তন করতে হবে, কিন্তু তার মানে এই নয়, ইলেকশন কমিশন বাংলাদেশ থেকে উধাও হয়ে গেছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এই কমিশনকে আমরা পুনর্গঠন করতে চাই, শক্তিশালী করতে চাই, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই। সে প্রক্রিয়ায় কিন্তু আমরা আজকে এসেছি। এর মধ্যেও আমরা বলে যেতে চাই। আমরা আজকেও বলছি, ইলেকশন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন।’
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এ দলটি গঠিত হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার শেষ দিনে গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত আবেদন জমা দিয়েছে দুই ডজনেরও বেশি রাজনৈতিক দল।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ১০ মার্চ আগ্রহী দলগুলোর কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন। ২০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন করে ৬৫টি নতুন রাজনৈতিক দল। এরপর এনসিপিসহ ৪৬টি দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলের নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা ২ মাস বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আজহার উল আলম, মৎস কর্মকর্তা জয় বণিক, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি রফিকুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বদন তৈয়বা প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভৈরব এর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এবারের কৃষি প্রযুক্তি মেলায় মোট ১৪টি স্টল রয়েছে। মেলায় বিভিন্ন কৃষির আধুনিক যন্ত্র, ফলজ, ফুলসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মেলার স্টলগুলি খোলা থাকবে। এ মেলা চলবে ২২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, উপজেলার কৃষকদের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রাঙ্গণে কৃষি প্রযুক্তি মেলায় কৃষি কাজের সকল প্রযুক্তিসহ কৃষি সম্পকিত নানা বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য মেলায় বিভিন্ন স্টল বসেছে। এসব স্টলে এসে কৃষকরা প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন এবং তাদের কৃষি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহারে কাজে লাগাতে পারবেন।
এবিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো পথ নেই। এরই মধ্যে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এই ধরণের মেলা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান ও ফলন বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হিসাবে কাজে দিবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, তারা গবেষণা করছেন, সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছেন। বর্তমানে সব ধরনের চাষে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। কৃষিতে যতো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ততো বেশি উৎপাদন বাড়বে।
মন্তব্য