বুধবার সকালে লেনদেনের শুরুতে সূচক কিছুটা বাড়লেও পরে বেলা পৌনে একটার দিকে একপর্যায়ে তা আগের দিনের চেয়ে ৭৭ পয়েন্ট কমে যায়। এ সময় এমন কোনো খাত ছিল না যেটাতে দরপতন হয়নি।
পরে অবশ্য ক্রয়চাপে হারানো দর কিছুটা ফিরে পায় কোম্পানিগুলো। আর এতে কিছুটা উদ্ধার হয় হারানো সূচক। আর শেষ আধা ঘণ্টায় সূচক ফিরে পায় হারানো পুরোটা।
টানা উত্থানে পুঁজিবাজার যখন স্থিতিশীলতার পথে, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির একটি আদেশে হঠাৎ ছন্দপতনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
পরপর দুই দিন বড় দরপতন থেকে ঘুরে দাঁড়ালেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে, সেটি স্পষ্ট লেনদেনের চিত্রেই।
মঙ্গলবার ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ‘অস্বাভাবিক’ বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আদেশ দেয়ার পর পুঁজিবাজারে এই হঠাৎ অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
এই নির্দেশ আসার দিন তাও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে সূচকের বড় পতন ঠেকানো গিয়েছিল। প্রথম দিনের মতোই দ্বিতীয় দিনেও প্রায় সব খাতে শেয়ারদর কমায় একপর্যায়ে সূচকের বড় পতন হয়। তবে দিন শেষে ক্রয়চাপে শেষ পর্যন্ত সূচকে পয়েন্ট যোগ হয়েই শেষ করেছে লেনদেন।
দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে সূচকের অবস্থান ৬ হাজার ৬২৩ পয়েন্ট। আর লেনদেন ২ হাজার ২১২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান উদ্ধারকর্তা হলেও দ্বিতীয় দিন কোনো নির্দিষ্ট খাত নেতৃত্ব দেয়নি। যেসব কোম্পানি দর হারিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সূচকে বড় প্রভাব ফেলে এমন কোম্পানির দরপতন খুব একটা বেশি না হওয়া, বেক্সিমকো, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর মতো বড় মূলধনি কোম্পানির দাম বৃদ্ধিতে রক্ষা পাওয়া গেল এবার।
তবে অনিশ্চয়তার কারণে লেনদেন কমে গেছে। শেয়ারে বিনিয়োগ না করে বিনিয়োগকারীরা যে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন, তা বোঝা যায় লেনদেনেই। আগের দিনের তুলনায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি কমেছে লেনদেন।
বুধবার সকালে লেনদেনের শুরুতে সূচক কিছুটা বাড়লেও পরে বেলা পৌনে একটার দিকে একপর্যায়ে তা আগের দিনের চেয়ে ৭৭ পয়েন্ট কমে যায়। এ সময় এমন কোনো খাত ছিল না যেটাতে দরপতন হয়নি। পরে অবশ্য ক্রয়চাপে হারানো দর কিছুটা ফিরে পায় কোম্পানিগুলো। আর এতে কিছুটা উদ্ধার হয় হারানো সূচক। আর শেষ আধা ঘণ্টায় সূচক ফিরে পায় হারানো পুরোটা।
মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালে দুপুরের দিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি জানায়, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, এমারেল্ড অয়েল, ন্যাশনাল ফিড মিল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ঢাকা ডায়িং এবং ফুয়াং সিরামিক কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত হবে।
বিএসইসির পরিচালক শেখ মাহবুব উর রহমান, সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট বিভাগের প্রধান মইনুল হক এই তদন্ত করবেন। কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করবেন শেখ মাহবুব উর রহমান।
আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই নির্দেশ আসার সময় লেনদেন চলছিল। আর বাজার আগের দিনের চেয়ে বেশি ছিল ৩২ পয়েন্ট। লেনদেনও আগের দিনের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত ছিল। তবে গণমাধ্যমে নির্দেশনার খবরটি আসার পর শুরু হয় দরপতন। অবশ্য শেষ বেলায় সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলোর অল্প করে দর বৃদ্ধি আর আর্থিক খাতে উল্লম্ফনের পর দিন শেষে সূচক কমে ১০ পয়েন্টের মতো।
লেনদেন শেষে সেই ৯ কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির তদন্ত নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু হয় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফেসবুক পেজে। তখনই স্পষ্ট হয় যে একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ফলে সেই নির্দেশনার প্রভাবটি মূলত পড়েছে দ্বিতীয় দিন।
পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা এক দশকের মন্দাভাবের পর পুঁজিবাজার যখন স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে, লেনদেন যখন তিন হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই হয়ে শেয়ারগুলো হারানো দর ফিরে পাওয়ার অবস্থায়, সে সময় এ ধরনের তদন্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে করার কিছু নেই। বিএসইসি অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে।
সেটা না করে বিজ্ঞপ্তি এলে কী হয়, তা চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেখা গেছে। ৫০ শতাংশের বেশি দর বেড়েছে এমন কোম্পানিগুলো নিয়ে তদন্তে বাজারে ধস নামার উপক্রম হয়। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরে এসে বিএসইসি সেই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয়। আর এরপর এক দিনেই ফিরে যাওয়া যায় হারানো সূচক।
ব্যাংক খাতে সেই পুরোনো চিত্র
উচ্চমূল্যের বহুজাতিক কোম্পানির তুলনায় আনুপাতিক হারে বেশি লভ্যাংশ পাওয়া ব্যাংক খাত যে অবমূল্যায়িত, সে বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মধ্যে কোনো সংশয় নেই। চাঙা পুঁজিবাজারেও এই খাত কেন ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না, এমন আলোচনা চলার সময় মাঝেমধ্যে এক-দুই দিন দল বেঁধে শেয়ারমূল্য বাড়লেও পরদিনই যে কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়, তা দেখা গেল আবার।
আগের দিন ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছিল ২৮টির। এদিন এই খাতে লেনদেন শুরু করেছে নতুন কোম্পানি সাউথবাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক। এই ব্যাংকটির দাম বেড়েছে ১০ শতাংশই। তবে লেনদেন হয়েছে নগণ্যসংখ্যক। হাতবদল হয়েছে মাত্র ৮ হাজার ২৪৭টি।
সব মিলিয়ে দাম বেড়েছে ১০টির। দাম ধরে রেখেছে ৫টি। কমেছে বাকি ১৭টিরই দর।
আগের দিন ২০ পয়সা বাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংক আজ হারিয়েছে ৩০ পয়সা, আগের দিন ২০ পয়সা বাড়া ওয়ান ব্যাংক হারিয়েছে ১০ পয়সা।
ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে নতুন সাউথবাংলা ছাড়া সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে আল আরাফাহ ও পূবালীর শেয়ারে; ৩০ পয়সা করে। আর সবচেয়ে বেশি কমেছে রূপালীর ৭০ ও প্রাইম শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা করে।
ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলো এভাবে বানরের বাঁশ বেয়ে ওঠার মতো করেই চলছে গত কয়েক মাসে। গত ২৭ মে এক দিনে সাতটি ব্যাংকের দাম দিনের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছা, আরও আটটির দাম সর্বোচ্চ অবস্থানের কাছাকাছি পৌঁছার দিন যে দাম ছিল, বর্তমানে ২০টির মতো ব্যাংক তার চেয়ে কমে লেনদেন হচ্ছে।
অথচ এবার ব্যাংকগুলো যে লভ্যাংশ দিয়েছে, তা অনেকটাই ছিল চমক। আশঙ্কা ছিল করোনার সময় আয় তলানিতে নামবে। কিন্তু দেখা গেছে উল্টো। আর করোনার দ্বিতীয় বছরে আয় আরও বাড়ায় লভ্যাংশ বৃদ্ধির আশাও করা হচ্ছে।
ব্যাংকে আগের দিন লেনদেন ছিল ২৪৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আজ সেটি কমে হয়েছে ২১৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
ব্যাংকের মতোই চিত্র আর্থিক খাতে। আগের দিন লেনদেন স্থগিত একটি ছাড়া দাম বেড়েছিল বাকি ২২টির সব কটির। দ্বিতীয় দিনে ১০টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছেও সমানসংখ্যক।
টানা দ্বিতীয় দিন শতকরা প্রায় ১০ শতাংশ দাম বেড়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফিনান্স ও ইসলামী ফিনান্সের শেয়ার দর। এ ছাড়া বিডি ফিনান্সের ৭০ পয়সা আর লভ্যাংশ ঘোষণার সভা ডাকা জিএসপি ফিনান্সের দর বেড়েছে ৪০ পয়সা। বাকিগুলোর দর বৃদ্ধি আর কমার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো পার্থক্য নেই।
ব্যাংকের মতো লেনদেন কমেছে এই খাতেও। আগের দিন যেখানে হাতবদল হয়েছিল ২৫৯ কোটি ২৪ লাখ, সেখানে আজ লেনদেন হয়েছে ২০০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
সবচেয়ে বেশি লেনেদেন বস্ত্রে, তুমুল আগ্রহ বেক্সিমকোতে আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমলেও বস্ত্র খাত বুধবার লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করেছে। তুলনামূলকভাবে শেয়ারের দামও বেশি বেড়েছে এই খাতেই।
এই খাতের ৫৮টি শেয়ারের মধ্যে দাম কমেছে ৩১টির, বেড়েছে ২২টির আর পাল্টায়নি ৫টির দর।
সব মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা, আগের দিন যা ছিল ৪১৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এই খাতে সবচেয়ে বেশি ৯.৮৮ শতাংশ বেড়েছে ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরা তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের দর। বিএসইসি যেসব কোম্পানির দর বৃদ্ধির তদন্তে নেমেছে, তার একটি এটি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার আদেশ জারির দিন শেয়ার দর কমলেও দ্বিতীয় দিনই দিনের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছার পর এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে এই কোম্পানিটি নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী বিনিয়োগকারীরা।
এ ছাড়া মালেক স্পিনিংয়ের দাম ৮.০২ শতাংশ, বন্ধ থাকা তাল্লু স্পিনিংয়ের দর বেড়েছে ৭.০৭ শতাংশ।
গত ২৮ এপ্রিলও তাল্লুর দর ছিল ৩ টাকা ৯০ পয়সা। সেখান থেকে প্রায় তিন গুণ বেড়ে দাম এখন অভিহিত মূল্য ১০ টাকা ছাড়িয়ে গেল।
এ ছাড়া রহিম টেক্সটাইলের ৬.২৪, বন্ধ থাকা তুংহাইয়ের ৫.৭১ ও দাম বৃদ্ধির ঘটনা তদন্তের ঘোষণা দেয়া ঢাকা ডায়িংয়ের দাম বাড়ল ৫.৩২ শতাংশ।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানির মোট লেনদেন ২৬৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা হয়েছে। মূলত বেক্সিমকো লিমিটেডে বিপুল পরিমাণ লেনদেনের কারণে সার্বিক লেনদেনের চতুর্থতে উঠে এসেছে এই খাতটি।
গত বছরের জুলাই থেকে আট গুণ দাম বৃদ্ধি পাওয়া এই একটি কোম্পানিরই লেনদেন হয়েছে ২০০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বিপুল লেনদেনের দিনে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেল। দিন শেষে দাম দাঁড়িয়েছে ১০২ টাকা ৬০ পয়সা। ২০১৩ সালের পর এই প্রথম কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০০ টাকার ওপরে ক্লোজ হয়েছে।
বিবিধ খাতে দাম বেড়েছে ৫টি কোম্পানির, কমেছে ৯টির। আগের দিনও একই পরিমাণ শেয়ারের দাম কমা ও বাড়ার ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন এই খাতে লেনদেন ছিল ২৩৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
অন্যান্য খাতের কী চিত্র
গত কয়েক দিনে লেনদেনের শীর্ষে থাকা প্রকৌশল খাত আর দ্বিতীয় স্থানে নেমে এসেছে। কমেছে বেশির ভাগ শেয়ারের দর।
৯টি শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীকে কমেছে ৩২টির। হাতবদল হয়েছে ২৭৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৩৬০ কোটি ১০ লাখ টাকা।
ওষুধ ও রসায়ন খাতেও দরপতন ঘটেছে। বেড়েছে ৯টির দর, কমেছে ২১টির। কমেছে লেনদেনও। বুধবার হাতবদল হয়েছে ২২১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ২৯৬ কোটি ১ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৭টি শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৫টির দর। লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৭১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
বিমা খাত দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতেই পারছে না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অন্য দিনের তুলনায় তাও কিছুটা ভালো গেছে। ৩৬টি কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে বেড়েছে ১৩টির দর। লেনদেন হয়েছে ১০৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৬১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
লভ্যাংশে চমক থাকলেও মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত দাঁড়াতেই পারছে না। টানা চারদিন দরপতনের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে। ৬টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৩টির দরেই। আর অপরিবর্তিত ছিল ৭টির দর। লেনদেন হয়েছে ৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছে ৮৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতেও কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। ৯টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১১টির দর। লেনদেন হয়েছে ৭৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১১১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে চারটি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৭টির দর। লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৬৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:বরিশালের নদ-নদী এবং সাগরে হঠাৎ করে ধরা পড়ছে ঝাকে ঝাকে ইলিশ। সেই সঙ্গে ঝিমিয়ে যাওয়া বরিশালের সর্ববৃহৎ পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি-গত তিনদিন ধরে দৈনিক দুইশ থেকে সাড়ে তিনশ মণ পর্যন্ত ইলিশ আসছে এই পাইকারি মৎস্য আড়তে। তবে সরবরাহের অর্ধেকের বেশি ইলিশ আকারে ছোট দাবি বলে আড়তদারদের।
ইলিশের সরবরাহ বাড়তে শুরু করলেও দাম এখনো নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এক কেজি জাটকা কিনতে এখনো গুণতে হচ্ছে সর্বনিম্ন পাঁচশ টাকা। তবে সরবরাহ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ঠিক থাকলে চলতি মাসেই ইলিশে দাম আরও কমে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।
সরজমিনে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে দেখা যায়, ভোর পাঁচটা বাজার আগে থেকেই আড়তে আসছে একের পর এক ইলিশের ট্রলার। সাগর এবং নদীর মাঝ পোর্ট রোডে নামিয়ে দিয়ে ট্রলার নিয়ে জেলেরা আবার ছুটছেন সাগর এবং নদীতে। তবে বর্তমানে বরিশাল মোকামে আসা অর্ধেক ইলিশ স্থানীয় নদ-নদীর বলে দাবি জানিয়েছেন আড়াতদাররা।
পোর্টরোড আক্তার মৎস্য আড়তের আড়তদার আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গত দুই-তিন দিনের তুলনায় রোববার ইলিশের দাম কিছুটা কম ছিল। কারণ এ কয়দিনে আড়তে ইলিশের সরবরাহ কিছু বেশি হয়েছে। এর পরও এলসি সাইজ অর্থাৎ ৭০০-৯৯৯ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৭৫-৭৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিমণ ৮৮ হাজার, এক কেজির ওপরে ১২শ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ প্রতিমণ ৯২ হাজার, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৯৮ হাজার টাকা, ভেলকা সাইজ অর্থাৎ ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম প্রতিমণ ৫৮-৬০ হাজার টাকা, ৩০০ থেকে ৫শ গ্রাম ইলিশ প্রতিমণ ৩২ হাজার টাকা এবং জাটকা ইলিশ প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকা দরে।
মৎস্য আড়তদার ইয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে বরিশালের আড়তে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার মণ ইলিশও এসেছে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর সেই পরিমাণ কমে গেছে। তবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মৎস্য আড়তে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে বিধায় গত তিন দিন ধরে নদী এবং সাগরের মাছের ট্রলার বরিশালে আসছে। এ কারণে বরিশালের আড়তে সরবরাহও বেড়েছে।
বরিশাল শহীদ জিয়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহির সিকদার বলেন, রোববার বরিশালের আড়তে তিনশ মনের বেশি ইলিশ এসেছে। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ। তবে সরবরাহ হওয়া ইলিশের মধ্যে প্রায় আড়াইশ মণই জাটকা। তাছাড়া নদীর থেকে সাগরের ইলিশটাই বেশি আসছে।
তিনি জানান, গত শনিবার বরিশাল পোর্ট রোড মোকামে ২০০ মণ এবং তার আগের দিন শুক্রবার প্রায় দুইশ মণ ইলিশ এসেছে পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে। ফলে গত তিন দিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম মণপ্রতি ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। আগামী ২৫ জুন পূর্ণিমার জোঁ রয়েছে। ওইদিন থেকে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে বলে আশাবাদী এই ব্যবসায়ী।
খুঁচরা বাজারে দেখা যায়, আড়তে মাছের সরবরাহ বাড়লেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। সংকটের অজুহাতে এখনো বাড়তি দামেই ইলিশ বিক্রি করছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। ৭০০-৯৯৯ গ্রামের ইলিশ পাইকারী হিসেবে প্রতি কেজির দাম ১৮শ থেকে ১৯শ টাকা হলেও তা বিক্রি করা হচ্ছে ২২শ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। একইভাবে কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ২২শ টাকার পরিবর্তে বিক্রি করা হচ্ছে ২৫শ থেকে ২৮শ টাকায়। আর জাটকা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বাড়তি দামে ইলিশ বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিম্ন আয়ের ক্রেতারা।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপণ কান্তি ঘোষ বলেন, একসময় বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য আড়ত জমজমাট ছিল। তখন দক্ষিণাঞ্চলের নদী এবং সাগরের ইলিশ এখানো আসত। তবে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির কারণে ইলিশ যাচ্ছে পটুয়াখালীর মহিপুর, আলিপুর এবং পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। তাছাড়া বরিশালের হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ এলাকার ইলিশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চাঁদপুরে। বরিশালের আড়তে যা মাছ আসছে তা স্থানীয় নদনদীর মাছ।
তিনি বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান অনেকটা সফল হয়েছে। এ সময় প্রচুর ইলিশের পোনা ছেড়েছে। এর সুফল সামনে পাওয়া যাবে। তবে এখনই গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই নদনদীতে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। এটা ভালো লক্ষ্যন। বৃষ্টি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। ভবিষ্যতে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়লে দামও কমে আসবে বলেন এই কর্মকর্তা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার অজোপাড়াগায়ে গড়ে ওঠেছে নৌকার গ্রাম। আর এ নৌকার গ্রামকে ঘিরে বালু নদীর তীর ঘেষে জমে ওঠেছে ব্যতিক্রমী নৌকার হাট। কাঠের খুটখাট আর নদীর পানির ছলাৎ-ছলাৎ শব্দ যে-কারো মনকে আবেগে ভরিয়ে দেবে। হয়তো ক্ষণিকের জন্য কেউ কবি বনে যেতে পারে। নৌকা তৈরির এ গ্রাম দু’টির অদূরেই গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাটটি বর্ষা আসলেই জমে উঠে। আর বর্ষা ঘিরে নয়ামাটি ও পিরুলিয়া এলাকায় নৌকা তৈরির ধুম পড়ে যায়। কারিগরেরা হয়ে পড়ে মহাব্যস্ত। কায়েতপাড়া নৌকার হাটটিতে তখন চলে নৌকা বেচাকেনার রমরমা ব্যবসা। এছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকন্দাইল বাজারে প্রতি বৃহস্পতিবার বসে নৌকার হাট। ইছাখালী-নগরপাড়া সড়কের অদূরেই নৌকার গ্রাম। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাত্র তিন মাসের মৌসুমি ব্যবসা। চাহিদা যথেষ্ট, তাই কারিগরদের ব্যবস্থাও বেশি।
শুরুর ইতিহাস : রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার কারিগরেরা স্বাধীনতারও আগে থেকে নৌকা তৈরি করে আসছে। কারো-কারো মতে, এ এলাকার নৌকা তৈরির ইতিহাস প্রায় শতাব্দী প্রাচীন। পিরুলিয়া এলাকার অতশীপরবৃদ্ধ অঞ্জনকুমার দাস বলেন, আমার জন্মের আগে থেইক্যা বাপ-দাদারা গয়না (নৌকা) বানাইয়া আইতাছে হুনছি। নয়ামাটি ও পিরুলিয়া ছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল, সাওঘাট এলাকার কারিগরেরা নৌকা তৈরি করে আসছে।
কারিগর কারা : নৌকা তৈরির গ্রাম পিরুলিয়া ও নয়ামাটি বললেই সবাই চেনে। তবে এ এলাকা দুটি গ্রামের ৯০ ভাগই মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। হিন্দুরাই দীর্ঘদিন ধরে নৌকা তৈরি করে আসছে। আশির দশকের পর নৌকা ব্যবসায়ী কমে যায়। অনেকে ভারত চলে যাওয়ায় এখনো দেড়শ পরিবার টিকে রয়েছে কোনোমতে। সাওঘাট এলাকার কারিগর প্রদ্যুত কুমার সরকার বলেন, আগে ব্যবসা ভালাই আছিলো। অহন কাটের দাম আর লোয়া (লোহা ) পেরেকের দাম বাইড়া যাওনে লাভ কম অয়।
কারিগরা যা বলছেন: পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার নৌকা তৈরির কারিগরেরা এখন ভালোই আছেন। নৌকা বিক্রি করে তারা সংসার চালাচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। বছর শেষে মোটামুটি লাভের মুখ ও দেখছেন। কথাগুলো একবাক্যে বললেন পিরুলিয়া এলাকার সত্যেন দাস। তার ছেলে লেখাপড়া করছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। নয়ামাটি এলাকার রমেশ দাস বলেন, কই খারাপতো নাইগো দাদা। মোডা ভাত- আর মোডা কাপড় পরবার পারি। এইডাই সুখ।
বর্তমান অবস্থা : নৌকা তৈরির কারিগরদের অবস্থা এখন কিছুটা ভাটা পড়েছে। ৯০ দশকের পর যান্ত্রিক সভ্যতা ফিরে আসায় নৌকার কদর কিছুটা কমে যায়। প্রতি বছর বর্ষায় নৌকা তৈরির ধুম চলে। তবে বন্যা হলে ব্যবসা ভালো হয় বলে জানালেন সুনীল দাস। তিনি বলেন, ৮৮’ আর ৯৮’ সালের বন্যায় অনেক টেহা লাব অইছিলো। নয়ামাটি এলাকার নৌকার কারিগর রবি দাস বলেন, কাডের দাম বাইড়া যাওনে লাভটা কম হয়। নাইলে ব্যবসা খারাপ না। আর স্টিলের নৌকার কারণে কিছুডা লছ অইতাছে। তারপরেও খারাপ নাই। ডাইল-ভাত খাইবার পারি।
খরচ কত : এক-একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর মোটামুটি কাঠের নৌকা তৈরিতে খরচ পড়ে ৮/১০ হাজার টাকা। কথাগুলো বললেন নৌকার কারিগর তাপস দাস।
নৌকার হাটের কথা : বালু নদীর তীর ঘেঁষেই কায়েতপাড়া বাজারে নৌকার হাট। বর্ষা মাসজুড়েই এ হাট জমে। ঢাকার নিম্নাঞ্চলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা নৌকা কিনতে আসেন। দামে সস্তা হওয়ায় এখানকার নৌকার কদরও বেশি। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল বাজারের সামনে বিলে জমে ব্যতিক্রমি নৌকার হাট। এ হাটে প্রতি বৃহস্পতিবারে প্রায় কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। নৌকার হাট শুরু হয় নৌকা তৈরির গ্রামগুলোর কারিগরদের ঘিরেই। প্রতি বৃহস্পতিবার এ হাট জমে ওঠে। বৃহস্পতিবার এ হাটে কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। ওঠে নৌকার বৈঠাও। গজারি কাঠের এক-একটি নৌকার দাম পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর কোষা ৭/৮ হাজার টাকায়। বৈঠাগুলো ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হয়। নৌকা বিক্রেতা সুবল চন্দ্র দাস বলেন, দাদু ব্যবসা ভালোই, তয় পানি বেশি অইলে লাভ অয়। ঢাকার ত্রিমহোনী থেকে নৌকা কিনতে আসা ওমরআলী বলেন, এ হাটে তুলনামূলক সস্তায় নৌকা পাওয়া যায়। আড়াইহাজার থেকে নৌকা কিনতে আসা সামছুল হক বলেন, এ হাটে নৌকার দাম কম। তাই এহান থেইক্যা কিনবার আইছি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ বিষয়ক এক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বক্তব্য রাখেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
রবিবার (২২ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় ইউরোপীয় দূতাবাস এমন তথ্য জানিয়েছে।
ইইউ দূতাবাস বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জন্য আরও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে সুশীল সমাজকে ক্ষমতায়নে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি ও এর অংশীদাররা।
ইউরোপীয় পার্টনারশিপ ফর ডেমোক্রেসির (ইপিডি) সহায়তায় এর অংশীদার সংগঠন আনফারেল ১৮ থেকে ২০ জুন ঢাকায় তিনদিনব্যাপী একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। এর বিষয়বস্তু ছিল নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ।
ইইউ দূতাবাস জানায়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে সব অংশগ্রহণকারী একমত পোষণ করেছেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রণয়নে সহযোগিতা এবং এতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় ফুল ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দেয় নতুন রাজনৈতিক দলটি। এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন উপস্থিত ছিলেন।
পছন্দের প্রতীকের তালিকায় শাপলা ছাড়াও কলম ও মোবাইল রেখেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। আবেদন জমা দেওয়ার পর আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে দল নিবন্ধনের শর্তসমূহ পূরণ করে আমাদের দল নিবন্ধনের আবেদন এই মাত্র দাখিল করেছি। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আমাদের আবেদন রিসিভ (গ্রহণ) করেছেন। আমাদেরকে রিসিভ কপি তারা দিয়েছেন।’
এ সময় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘৫ তারিখে গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে বাংলাদেশের মানুষের জয় হয়েছিল, আগামীর পার্লামেন্ট ভোটে এনসিপির শাপলা প্রতীকে পুরো বাংলাদেশের মানুষ জয়জয়কার করে দেবে, এনসিপির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন হবে।’
এ সময় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে গত ১৫ বছরে ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে যেসব ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের যেমন পুনর্গঠন করতে হবে, নিয়মনীতির পরিবর্তন করতে হবে, কিন্তু তার মানে এই নয়, ইলেকশন কমিশন বাংলাদেশ থেকে উধাও হয়ে গেছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এই কমিশনকে আমরা পুনর্গঠন করতে চাই, শক্তিশালী করতে চাই, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই। সে প্রক্রিয়ায় কিন্তু আমরা আজকে এসেছি। এর মধ্যেও আমরা বলে যেতে চাই। আমরা আজকেও বলছি, ইলেকশন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন।’
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এ দলটি গঠিত হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার শেষ দিনে গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত আবেদন জমা দিয়েছে দুই ডজনেরও বেশি রাজনৈতিক দল।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ১০ মার্চ আগ্রহী দলগুলোর কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন। ২০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন করে ৬৫টি নতুন রাজনৈতিক দল। এরপর এনসিপিসহ ৪৬টি দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলের নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা ২ মাস বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আজহার উল আলম, মৎস কর্মকর্তা জয় বণিক, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি রফিকুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বদন তৈয়বা প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভৈরব এর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এবারের কৃষি প্রযুক্তি মেলায় মোট ১৪টি স্টল রয়েছে। মেলায় বিভিন্ন কৃষির আধুনিক যন্ত্র, ফলজ, ফুলসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মেলার স্টলগুলি খোলা থাকবে। এ মেলা চলবে ২২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, উপজেলার কৃষকদের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রাঙ্গণে কৃষি প্রযুক্তি মেলায় কৃষি কাজের সকল প্রযুক্তিসহ কৃষি সম্পকিত নানা বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য মেলায় বিভিন্ন স্টল বসেছে। এসব স্টলে এসে কৃষকরা প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন এবং তাদের কৃষি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহারে কাজে লাগাতে পারবেন।
এবিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো পথ নেই। এরই মধ্যে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এই ধরণের মেলা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান ও ফলন বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হিসাবে কাজে দিবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, তারা গবেষণা করছেন, সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছেন। বর্তমানে সব ধরনের চাষে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। কৃষিতে যতো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ততো বেশি উৎপাদন বাড়বে।
মন্তব্য