বুধবার সকালে লেনদেনের শুরুতে সূচক কিছুটা বাড়লেও পরে বেলা পৌনে একটার দিকে একপর্যায়ে তা আগের দিনের চেয়ে ৭৭ পয়েন্ট কমে যায়। এ সময় এমন কোনো খাত ছিল না যেটাতে দরপতন হয়নি।
পরে অবশ্য ক্রয়চাপে হারানো দর কিছুটা ফিরে পায় কোম্পানিগুলো। আর এতে কিছুটা উদ্ধার হয় হারানো সূচক। আর শেষ আধা ঘণ্টায় সূচক ফিরে পায় হারানো পুরোটা।
টানা উত্থানে পুঁজিবাজার যখন স্থিতিশীলতার পথে, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির একটি আদেশে হঠাৎ ছন্দপতনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
পরপর দুই দিন বড় দরপতন থেকে ঘুরে দাঁড়ালেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার নিয়ে যে সংশয় দেখা দিয়েছে, সেটি স্পষ্ট লেনদেনের চিত্রেই।
মঙ্গলবার ৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ‘অস্বাভাবিক’ বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আদেশ দেয়ার পর পুঁজিবাজারে এই হঠাৎ অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
এই নির্দেশ আসার দিন তাও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর বৃদ্ধিতে সূচকের বড় পতন ঠেকানো গিয়েছিল। প্রথম দিনের মতোই দ্বিতীয় দিনেও প্রায় সব খাতে শেয়ারদর কমায় একপর্যায়ে সূচকের বড় পতন হয়। তবে দিন শেষে ক্রয়চাপে শেষ পর্যন্ত সূচকে পয়েন্ট যোগ হয়েই শেষ করেছে লেনদেন।
দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে সূচকের অবস্থান ৬ হাজার ৬২৩ পয়েন্ট। আর লেনদেন ২ হাজার ২১২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান উদ্ধারকর্তা হলেও দ্বিতীয় দিন কোনো নির্দিষ্ট খাত নেতৃত্ব দেয়নি। যেসব কোম্পানি দর হারিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সূচকে বড় প্রভাব ফেলে এমন কোম্পানির দরপতন খুব একটা বেশি না হওয়া, বেক্সিমকো, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর মতো বড় মূলধনি কোম্পানির দাম বৃদ্ধিতে রক্ষা পাওয়া গেল এবার।
তবে অনিশ্চয়তার কারণে লেনদেন কমে গেছে। শেয়ারে বিনিয়োগ না করে বিনিয়োগকারীরা যে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন, তা বোঝা যায় লেনদেনেই। আগের দিনের তুলনায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি কমেছে লেনদেন।
বুধবার সকালে লেনদেনের শুরুতে সূচক কিছুটা বাড়লেও পরে বেলা পৌনে একটার দিকে একপর্যায়ে তা আগের দিনের চেয়ে ৭৭ পয়েন্ট কমে যায়। এ সময় এমন কোনো খাত ছিল না যেটাতে দরপতন হয়নি। পরে অবশ্য ক্রয়চাপে হারানো দর কিছুটা ফিরে পায় কোম্পানিগুলো। আর এতে কিছুটা উদ্ধার হয় হারানো সূচক। আর শেষ আধা ঘণ্টায় সূচক ফিরে পায় হারানো পুরোটা।
মঙ্গলবার লেনদেন চলাকালে দুপুরের দিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি জানায়, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, জিবিবি পাওয়ার, এমারেল্ড অয়েল, ন্যাশনাল ফিড মিল, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ঢাকা ডায়িং এবং ফুয়াং সিরামিক কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত হবে।
বিএসইসির পরিচালক শেখ মাহবুব উর রহমান, সহকারী পরিচালক জিয়াউর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট বিভাগের প্রধান মইনুল হক এই তদন্ত করবেন। কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করবেন শেখ মাহবুব উর রহমান।
আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই নির্দেশ আসার সময় লেনদেন চলছিল। আর বাজার আগের দিনের চেয়ে বেশি ছিল ৩২ পয়েন্ট। লেনদেনও আগের দিনের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত ছিল। তবে গণমাধ্যমে নির্দেশনার খবরটি আসার পর শুরু হয় দরপতন। অবশ্য শেষ বেলায় সবচেয়ে বড় বাজার মূলধনের ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলোর অল্প করে দর বৃদ্ধি আর আর্থিক খাতে উল্লম্ফনের পর দিন শেষে সূচক কমে ১০ পয়েন্টের মতো।
লেনদেন শেষে সেই ৯ কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির তদন্ত নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা শুরু হয় পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফেসবুক পেজে। তখনই স্পষ্ট হয় যে একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ফলে সেই নির্দেশনার প্রভাবটি মূলত পড়েছে দ্বিতীয় দিন।
পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা এক দশকের মন্দাভাবের পর পুঁজিবাজার যখন স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে, লেনদেন যখন তিন হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই হয়ে শেয়ারগুলো হারানো দর ফিরে পাওয়ার অবস্থায়, সে সময় এ ধরনের তদন্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে করার কিছু নেই। বিএসইসি অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে।
সেটা না করে বিজ্ঞপ্তি এলে কী হয়, তা চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেখা গেছে। ৫০ শতাংশের বেশি দর বেড়েছে এমন কোম্পানিগুলো নিয়ে তদন্তে বাজারে ধস নামার উপক্রম হয়। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরে এসে বিএসইসি সেই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয়। আর এরপর এক দিনেই ফিরে যাওয়া যায় হারানো সূচক।
ব্যাংক খাতে সেই পুরোনো চিত্র
উচ্চমূল্যের বহুজাতিক কোম্পানির তুলনায় আনুপাতিক হারে বেশি লভ্যাংশ পাওয়া ব্যাংক খাত যে অবমূল্যায়িত, সে বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মধ্যে কোনো সংশয় নেই। চাঙা পুঁজিবাজারেও এই খাত কেন ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না, এমন আলোচনা চলার সময় মাঝেমধ্যে এক-দুই দিন দল বেঁধে শেয়ারমূল্য বাড়লেও পরদিনই যে কমে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়, তা দেখা গেল আবার।
আগের দিন ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছিল ২৮টির। এদিন এই খাতে লেনদেন শুরু করেছে নতুন কোম্পানি সাউথবাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক। এই ব্যাংকটির দাম বেড়েছে ১০ শতাংশই। তবে লেনদেন হয়েছে নগণ্যসংখ্যক। হাতবদল হয়েছে মাত্র ৮ হাজার ২৪৭টি।
সব মিলিয়ে দাম বেড়েছে ১০টির। দাম ধরে রেখেছে ৫টি। কমেছে বাকি ১৭টিরই দর।
আগের দিন ২০ পয়সা বাড়া মার্কেন্টাইল ব্যাংক আজ হারিয়েছে ৩০ পয়সা, আগের দিন ২০ পয়সা বাড়া ওয়ান ব্যাংক হারিয়েছে ১০ পয়সা।
ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে নতুন সাউথবাংলা ছাড়া সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে আল আরাফাহ ও পূবালীর শেয়ারে; ৩০ পয়সা করে। আর সবচেয়ে বেশি কমেছে রূপালীর ৭০ ও প্রাইম শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা করে।
ব্যাংক খাতের শেয়ারগুলো এভাবে বানরের বাঁশ বেয়ে ওঠার মতো করেই চলছে গত কয়েক মাসে। গত ২৭ মে এক দিনে সাতটি ব্যাংকের দাম দিনের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছা, আরও আটটির দাম সর্বোচ্চ অবস্থানের কাছাকাছি পৌঁছার দিন যে দাম ছিল, বর্তমানে ২০টির মতো ব্যাংক তার চেয়ে কমে লেনদেন হচ্ছে।
অথচ এবার ব্যাংকগুলো যে লভ্যাংশ দিয়েছে, তা অনেকটাই ছিল চমক। আশঙ্কা ছিল করোনার সময় আয় তলানিতে নামবে। কিন্তু দেখা গেছে উল্টো। আর করোনার দ্বিতীয় বছরে আয় আরও বাড়ায় লভ্যাংশ বৃদ্ধির আশাও করা হচ্ছে।
ব্যাংকে আগের দিন লেনদেন ছিল ২৪৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আজ সেটি কমে হয়েছে ২১৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
ব্যাংকের মতোই চিত্র আর্থিক খাতে। আগের দিন লেনদেন স্থগিত একটি ছাড়া দাম বেড়েছিল বাকি ২২টির সব কটির। দ্বিতীয় দিনে ১০টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছেও সমানসংখ্যক।
টানা দ্বিতীয় দিন শতকরা প্রায় ১০ শতাংশ দাম বেড়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফিনান্স ও ইসলামী ফিনান্সের শেয়ার দর। এ ছাড়া বিডি ফিনান্সের ৭০ পয়সা আর লভ্যাংশ ঘোষণার সভা ডাকা জিএসপি ফিনান্সের দর বেড়েছে ৪০ পয়সা। বাকিগুলোর দর বৃদ্ধি আর কমার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো পার্থক্য নেই।
ব্যাংকের মতো লেনদেন কমেছে এই খাতেও। আগের দিন যেখানে হাতবদল হয়েছিল ২৫৯ কোটি ২৪ লাখ, সেখানে আজ লেনদেন হয়েছে ২০০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
সবচেয়ে বেশি লেনেদেন বস্ত্রে, তুমুল আগ্রহ বেক্সিমকোতে আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমলেও বস্ত্র খাত বুধবার লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করেছে। তুলনামূলকভাবে শেয়ারের দামও বেশি বেড়েছে এই খাতেই।
এই খাতের ৫৮টি শেয়ারের মধ্যে দাম কমেছে ৩১টির, বেড়েছে ২২টির আর পাল্টায়নি ৫টির দর।
সব মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা, আগের দিন যা ছিল ৪১৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এই খাতে সবচেয়ে বেশি ৯.৮৮ শতাংশ বেড়েছে ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরা তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের দর। বিএসইসি যেসব কোম্পানির দর বৃদ্ধির তদন্তে নেমেছে, তার একটি এটি। নিয়ন্ত্রক সংস্থার আদেশ জারির দিন শেয়ার দর কমলেও দ্বিতীয় দিনই দিনের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছার পর এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে এই কোম্পানিটি নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী বিনিয়োগকারীরা।
এ ছাড়া মালেক স্পিনিংয়ের দাম ৮.০২ শতাংশ, বন্ধ থাকা তাল্লু স্পিনিংয়ের দর বেড়েছে ৭.০৭ শতাংশ।
গত ২৮ এপ্রিলও তাল্লুর দর ছিল ৩ টাকা ৯০ পয়সা। সেখান থেকে প্রায় তিন গুণ বেড়ে দাম এখন অভিহিত মূল্য ১০ টাকা ছাড়িয়ে গেল।
এ ছাড়া রহিম টেক্সটাইলের ৬.২৪, বন্ধ থাকা তুংহাইয়ের ৫.৭১ ও দাম বৃদ্ধির ঘটনা তদন্তের ঘোষণা দেয়া ঢাকা ডায়িংয়ের দাম বাড়ল ৫.৩২ শতাংশ।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানির মোট লেনদেন ২৬৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা হয়েছে। মূলত বেক্সিমকো লিমিটেডে বিপুল পরিমাণ লেনদেনের কারণে সার্বিক লেনদেনের চতুর্থতে উঠে এসেছে এই খাতটি।
গত বছরের জুলাই থেকে আট গুণ দাম বৃদ্ধি পাওয়া এই একটি কোম্পানিরই লেনদেন হয়েছে ২০০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বিপুল লেনদেনের দিনে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেল। দিন শেষে দাম দাঁড়িয়েছে ১০২ টাকা ৬০ পয়সা। ২০১৩ সালের পর এই প্রথম কোম্পানিটির শেয়ার দর ১০০ টাকার ওপরে ক্লোজ হয়েছে।
বিবিধ খাতে দাম বেড়েছে ৫টি কোম্পানির, কমেছে ৯টির। আগের দিনও একই পরিমাণ শেয়ারের দাম কমা ও বাড়ার ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন এই খাতে লেনদেন ছিল ২৩৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
অন্যান্য খাতের কী চিত্র
গত কয়েক দিনে লেনদেনের শীর্ষে থাকা প্রকৌশল খাত আর দ্বিতীয় স্থানে নেমে এসেছে। কমেছে বেশির ভাগ শেয়ারের দর।
৯টি শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীকে কমেছে ৩২টির। হাতবদল হয়েছে ২৭৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৩৬০ কোটি ১০ লাখ টাকা।
ওষুধ ও রসায়ন খাতেও দরপতন ঘটেছে। বেড়েছে ৯টির দর, কমেছে ২১টির। কমেছে লেনদেনও। বুধবার হাতবদল হয়েছে ২২১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ২৯৬ কোটি ১ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৭টি শেয়ারের দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৫টির দর। লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৭১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
বিমা খাত দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতেই পারছে না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অন্য দিনের তুলনায় তাও কিছুটা ভালো গেছে। ৩৬টি কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে বেড়েছে ১৩টির দর। লেনদেন হয়েছে ১০৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৬১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
লভ্যাংশে চমক থাকলেও মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত দাঁড়াতেই পারছে না। টানা চারদিন দরপতনের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে। ৬টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৩টির দরেই। আর অপরিবর্তিত ছিল ৭টির দর। লেনদেন হয়েছে ৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছে ৮৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতেও কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। ৯টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১১টির দর। লেনদেন হয়েছে ৭৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১১১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে চারটি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৭টির দর। লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৬৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের (এসপি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান ১ নম্বর সেকশনে বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ ২০২৪-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আইজিপি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী যেন আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্ত জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের সতর্ক করা হয়েছে।
আইজিপি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলা ৩০টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের আগেই সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব যেন এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ-২০২৪ এর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। রানার্স আপ হয়েছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)।
প্রতিযোগিতায় পয়েন্ট ১৭৭ এয়ার রাইফেল ওপেন সাইট ১০ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) মো. মনিরুল ইসলাম ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন ফেনী জেলার এএসআই (নিরস্ত্র) এবিএসএম হাসান।
একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন এসবির নারী কনস্টেবল তানিয়া আক্তার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল নীলা খাতুন ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল নীলা আক্তার।
পয়েন্ট ২২ বোর রাইফেল ওপেন সাইট ৫০ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিদ ফরহাদ, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির কনস্টেবল শাকিল আহমেদ ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার। একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) ইসমত আরা, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল আমেনা আক্তার ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) নীলিমা আক্তার।
পয়েন্ট ২২ বোর পিস্তল/রিভলভার ২৫ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন সারদা, রাজশাহীর পুলিশ সুপার শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম, দ্বিতীয় হয়েছেন র্যাবের সার্জেন্ট জুবায়ের ও তৃতীয় হয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহেদ আহমেদ। একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন এসবির নারী কনস্টেবল রুনা আক্তার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন একই ইউনিটের নারী কনস্টেবল নীলা খাতুন এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) ইসমত আরা।
প্রতিযোগিতায় ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট (পুরুষ) হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার এবং ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট (নারী) হওয়ার গৌরব অর্জন করেন এসবির নারী কনস্টেবল রুনা আক্তার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশ ক্লাবের সভাপতি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত আইজিপি ও বাংলাদেশ পুলিশ শুটিং ক্লাবের সভাপতি মো. মোস্তফা কামালসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময়ে বিভিন্ন খাতে দেশটির বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৭ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহনশীলতা ও সহাবস্থানবিষয়ক মন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ানের নেতৃত্বাধীন উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।
এ সময়ে নাহিয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. ইউনূস। নাহিয়ান বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে আমি এখানে এসেছি বাংলাদেশের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে এবং আমাদের বন্ধুত্বকে আরও জোরদার করতে।’
‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দুই সরকার যে বর্ধিত সংলাপের আয়োজন করেছে, তার আমরা প্রশংসা করি। আমরা বিনিয়োগ থেকে শুরু করে ভিসা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিশ্চিত করতে চাই,’ বলেন তিনি।
এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সম্পৃক্ততা এবং সমর্থনকে স্বাগত জানাই, আমরা বিভিন্ন শিল্পে বিনিয়োগকেও স্বাগত জানাই।’
ভিসা ব্যবস্থা শিথিল করার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এখনও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া বাকি আছে, আশা করি, আমরা সম্পৃক্ত থাকব এবং এই সমস্যাগুলি সমাধান করব।’
সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা দেওয়া শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের জন্য বাল্ক ভিসাও ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এছাড়াও, দক্ষ কর্মসংস্থান ভিসার অনলাইন ব্যবস্থা পুনরায় সক্রিয় করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের র্যাব-৭ এর বহদ্দারহাট ক্যাম্পের অফিস কক্ষে র্যাব কর্মকর্তা নিজের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। বুধবার(৭ মে) সকালে এই ঘটনা ঘটেছে।
নিহত পলাশ সাহা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তিনি র্যাব-৭ ব্যাটালিয়নের অধীনে বহদ্দারহাট ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এএসপি পলাশ যখন অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন ঘটনাটি ঘটে। তিনি তার কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়ে তার অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন।
র্যাব-৭ এআরএমের সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) মোজাফফর হোসাইন জানান, কক্ষে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরে র্যাব সদস্যরা গুলির শব্দ শুনতে পান এবং তাকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। তার সার্ভিস পিস্তলটি মেঝেতে পাওয়া যায় এবং টেবিলে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়।
তাকে তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ময়নাতদন্তের পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা এবং পারিবারিক আবহে দীর্ঘ চার মাস অবস্থান শেষে মানসিক প্রশান্তি নিয়ে দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে আসা সাধারণ মানুষ এবং দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
গতকাল সকাল ১০ টা ৪৩ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে দুপুরে গুলশানে তাঁর নিজ বাসভবন ফিরোজায় ফেরার পথে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে সড়কের দুই পাশে জড়ো হন লাখো মানুষ।
দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকায় প্রবেশের প্রায় প্রতিটি মোড়ে দেখা যায় হাতে ব্যানার ও ফুল নিয়ে দলীয় কর্মীদের ভিড়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিবৃতিতে বিএনপির চেয়ারপার্সনকে স্বাগত জানাতে আসা দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যারা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তাদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারেক রহমান।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্য, পুলিশ, র্যাবসহ অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা যেভাবে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেছেন বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।
সংস্কারের নামে সময় নষ্ট না করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবেদীন ফারুক।
বুধবার (৭ মে) রাজধানীতে এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ এখনই নির্বাচন চায়। নির্বাচন আয়োজনে আর দেরি করা উচিত নয়, কারণ এখনই এটি প্রয়োজন।’
তিনি সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ এবং জনগণের উপর অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারকারী আওয়ামী মাফিয়া শাসকদের গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের আগে তাদের বিচারের দাবিও জানান।
সংসদে বিরোধী দলের সাবেক প্রধান হুইপ ফারুক বলেন, সরকারের সংস্কার উদ্যোগ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এমন কোনো সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ না করার আহ্বান জানান, যা ১/১১-এর মতো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচন বিলম্বিত করতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূসকে একজন সম্মানিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করে বিএনপির নেতা। তিনি তাকে এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, ‘দয়া করে এর ব্যবস্থা করুন।’
তিনি বলেন, দেশের জনগণ একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সংসদ গঠন করবে।
ফারুক বলেন, জনগণ যদি তার দলকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনে তবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রস্তাব পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। ‘কোথাও, একটি দাবার খেলা চলছে এবং সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান থেকে আপনাকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং আপনার উপদেষ্টাদেরও এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, সংস্কার এবং সংস্কার কমিশনের জন্যই সময় ব্যয় করা হচ্ছে। ‘নির্বাচনের আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত করা হচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ বাংলাদেশপন্থী শক্তিগুলোকে ক্ষমতায় আনবে, যারা দেশের সমস্যা সমাধান করবে।’
মিয়ানমারের রাখাইনের জন্য একটি মানবিক করিডোর দেওয়ার সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টাকে তার অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ও সরকার গঠনকারী দলের উপর বিষয়টি ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক রাজধানীর দুই থানায় হওয়া পৃথক তিনটি মামলায় গান বাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসসহ চারজনকে ঢাকার আদালতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন— নিয়ন ফামাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম, দৈনিক সরেজমিন বার্তার সাংবাদিক সিকদার লিটন ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী আশা আক্তার।
বুধবার (৭ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা রাজধানীর তিন হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। পরে আদালত সেটি মঞ্জুর করেন।
তাপসের মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই গুলশানের শাহজাদপুরের কনফিডেন্স টাওয়ারের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে জব্বার আলী হাওলাদার নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।
আব্দুস সালামের মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমণ্ডির সাইন্সল্যাব থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৭ আগস্ট বিকালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের মা মোসা. শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এছাড়া আশা ও সিকদার লিটনের মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ভাটারা থানাধীন যমুনা ফিউচার পার্কের পাশে গত ২০ জুলাই আন্দোলনে অংশ নেন মো. জাহাঙ্গীর। এদিন দুপুর ১২টায় আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর ২১ জুলাই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বুধবার (৭ এপ্রিল) এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুই দেশকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উদ্ভূত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’
এতে বলা হয়, আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ আশাবাদী যে এই উত্তেজনা কূটনৈতিকভাবে নিরসন হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ। তিনি বলেছেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটি একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
এমন বাস্তবতায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে ভারতের হামলার মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা এই পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও দেশ।
মন্তব্য