একই সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের একটির ইউনিটপ্রতি আয় ২ টাকা ৩৫ পয়সা, একটির আয় ১ টাকা ৮৭ পয়সা। একই নীতিমালায় ঘোষণা হলেও প্রথমটির তুলনায় দ্বিতীয়টির লভ্যাংশ এসেছে দেড় গুণ।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর মধ্যে ডিসেম্বরে অর্থবছর শেষ হয়েছে এমন ছয়টি এরই মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সবগুলোই এবার ইউনিটধারীদেরকে রেকর্ড পরিমাণ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এগুলোর ইউনিটপ্রতি আয় আর লভ্যাংশের মধ্যে পার্থক্য দেখা গেছে।
এর কারণ, ফান্ডগুলোর গত বছরের ব্যালান্স শিট। যেগুলো গত বছর লোকসান দিয়েছিল, সেগুলোর এবার লভ্যাংশ আসছে কম। আর যেগুলো গত বছর মুনাফায় ছিল বা নূন্যতম লোকসান দিয়েছে, সেগুলোর লভ্যাংশ আসছে বেশি।
জুনে অর্থবছর শেষ হয়েছে এমন আরও যে ২৩টি ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণার বাকি আছে, সেগুলোর মধ্যে কোনগুলোর লভ্যাংশ কী পরিমাণ হতে পারে, তার একটি ধারণা এরই মধ্যে হয়ে গেছে। এতে এটা স্পষ্ট যে, সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা আছে গ্রামীণ টু মিউচ্যুয়াল ফান্ডের।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বা পুঁজিবাজারের বাইরে থাকা ফান্ডগুলো চলে একই নীতিতে। তাদের আয়ের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ নগদে লভ্যাংশ হিসেবে দিতে হয়। তবে গ্রোথ ফান্ড হলে লভ্যাংশ দিতে হয় কমপক্ষে ৫০ শতাংশ।
বছর সাতেক আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এক আদেশে জানায়, মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো লভ্যাংশ নগদের বদলে চাইলে রিইনভেস্টমেন্ট ইউনিটেও দিতে পারবে। তবে সেই রিইনভেস্টমেন্ট ইউনিটের মারপ্যাঁচ ছিল বেশ জটিল। ফলে বিনিয়োগকারীরা আসলে কত লভ্যাংশ পেল তা বোঝা ছিল কঠিন।
আবার এক বছর মুনাফা করে পরের বছর যদি লোকসান হয়, তাহলে রিইনভেস্টমেন্ট ইউনিটের দামও কমে যেত। ফলে বিনিয়োগকারীদের লোকসান আরও বাড়ত।
এই পরিস্থিতিতে গত বছর থেকে রিইনভেস্টমেন্ট ইউনিট দেয়ার বিধান বাতিল হয়। এবার থেকে আর সে সুযোগ নেই। ফলে দিতে হচ্ছে নগদেই।
২০২০ সালে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর মার্চ থেকে পুঁজিবাজারে যে ধস নামে তাতে জুনে অর্থবছর শেষ হয় এমন সিংগভাগ মিউচ্যুয়াল ফান্ড বড় অংকের লোকসান দেয়। যে কয়টি মুনাফা করে, সেগুলোও ছিল নগণ্য।
কিন্তু গত বছরের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারে যে অবিশ্বাস্য উত্থান, তাতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও ব্যাপক মুনাফায় আছে। আর এ কারণে এবার লভ্যাংশও আসছে ভালো।
এবার বিভিন্ন ফান্ডের ট্রাস্টি বোর্ডের ঘোষণার পর স্পষ্ট হচ্ছে কোন নীতিমালায় লভ্যাংশ আসবে।
আগের বছর যদি কোনো ফান্ডের লোকসান থাকে, তাহলে সেটির বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণের সুযোগ থাকে। আর এ কারণে জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত যত আয় হয়েছে, তার বিপরীতে ‘সর্বোচ্চ’ লভ্যাংশ পাওয়া যায়নি।
এখন পর্যন্ত ঘোষণা হয়েছে ছয়টি ফান্ডের লভ্যাংশ। এর মধ্যে কেবল একটি গত বছর মুনাফায় ছিল। আর এ কারণে তারা ইউনিটপ্রতি এবার ১ টাকা ৮১ পয়সা আয় করেও দেড় টাকা লভ্যাংশ দিতে পেরেছে। অন্যদিকে গত বছরের লোকসানের কারণে ইউনিটপ্রতি ২ টাকা ৩৫ পয়সা আয় করেও এবার লভ্যাংশ এসেছে এক টাকা।
এখন পর্যন্ত জুন ক্লোজিং যে ছয়টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত যে ফান্ডটি সময়ে সবচেয়ে কম আয় করেছে, তারা আয় করেছে ১৮ পয়সা। আর সবচেয়ে বেশি আয় করেছে একটি ১ টাকা ২৫ পয়সা। ১ টাকার বেশি আয় করেছে আরও একটি ফান্ড।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে সবচেয়ে বেশি বিতরণযোগ্য আয় যাদের
৩০ জুন অর্থবছর শেষ হয়, পুঁজিবাজারে এমন ফান্ডের সংখ্যা ২৯টি। এর মধ্যে ৬টি লভ্যাংশ ঘোষণা করার পাশাপাশি আরও ১০টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণার তারিখ জানিয়েছে। বাকি ১৩টি ফান্ড এখনও এই সিদ্ধান্ত জানায়নি।
সব মিলিয়ে ২৩টি ফান্ডের মধ্যে মার্চে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ইউনিটপ্রতি সর্বোচ্চ আয় আছে গ্রামীণ টু মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। ইউনিট প্রতি ৩ টাকা ৯১ পয়সা আয় আছে তাদের। আর গত বছরও কোনো লোকসান নেই। ফলে চতুর্থ প্রান্তিকে যত আয় হবে, সেটি যোগ করে তার ওপর ৭০ শতাংশ লভ্যাংশ পাবেন ইউনিটধারীরা।
চতুর্থ প্রান্তিকে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত সূচক বেড়েছে ৮৮০ পয়েন্ট। আর প্রথম প্রান্তিকে গত বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যখন ৯৭০ পয়েন্ট বাড়ে, তখন গ্রামীণ টু ইউনিটপ্রতি আয় করে ৩ টাকা ৭ পয়সা।
তারপরও চতুর্থ প্রান্তিকে যদি কোনো আয়ও না হয়, তার পরেও ন্যূনতম লভ্যাংশ আসবে ২ টাকা ৭৩ পয়সা।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিতরণযোগ্য আয় আছে রিলায়েন্স ওয়ান মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। মার্চ শেষে তাদের ইউনিটপ্রতি আয় ৭৯ পয়সা। গত বছর লোকসান ৪ পয়সা, হাতে থাকে ৭৫ পয়সা। এর সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে তৃতীয় সর্বোচ্চ বিতরণযোগ্য আয় আছে সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। মার্চ শেষে তাদের ইউনিটপ্রতি আয় ১ টাকা ১৯ পয়সা। গত বছর ইউনিটপ্রতি ৪৮ পয়সা লোকসান দেয়ায় তাদের হাতে থাকে ৭১ পয়সা। এর সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ৮ ফান্ডের যে চিত্র
২০২০ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ-আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত আটটি ফান্ড গত বছর মন্দা বাজারেও কোনো লোকসান দেয়নি। কিন্তু চলতি বছরের চাঙা বাজারেও বছরের তিন প্রান্তিকে তাদের ইউনিটপ্রতি আয় আহামরি কিছু হয়নি। এ কারণে তারা এবারের আয়ের পুরোটার ওপরও যদি লভ্যাংশ বিতরণ করে, তার পরেও মূলত নির্ভর করতে হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়ের ওপর।
এই ফান্ডগুলো লভ্যাংশ ঘোষণা করবে আগামী বুধবার।
এর মধ্যে আইসিবি এএমসিএল অগ্রণী ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড তৃতীয় প্রান্তিকে শেষে ৩০ পয়সা, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৩১ পয়সা, আইসিবি এএমসিএল থার্ড এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ২৫ পয়সা, আইসিবি এমপ্লয়ি প্রভিডেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ৩০ পয়সা, আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ৪১ পয়সা, আইএফআইএল ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান ১১ পয়সা, ফিনিক্স ফিনান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ২৮ পয়সা আর প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট এএমসিএল ৪১ পয়সা আয় করেছে।
এই ফান্ডগুলোর বেশিরভাগ গত বছর ইউনিটপ্রতি ৫০ পয়সা করে লভ্যাংশ বিতরণ করেছিল।
ব্যাপক আয় থাকা সত্ত্বেও লভ্যাংশ কম হওয়ার আভাস
মার্চ শেষে ইবিএল এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটপ্রতি আয় ১ টাকা ৮৩ পয়সা। চতুর্থ প্রান্তিকে যদি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আয়ও হয়, তার পরেও লভ্যাংশ কিছুটা কম হবে। কারণ, গত বছরের লোকসান ১ টাকা ৩৫ টাকা। হাতে থাকে ৪৮ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
পিএইচপি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মার্চ শেষে আয় ১ টাকা ৭১ পয়সা। গত বছর তাদের লোকসান ছিল ১ টাকা ২৩ পয়সা। তাদেরও বিতরণযোগ্য আয় আছে ৪৮ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান মার্চ শেষে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ২০ পয়সা। গত বছর ইউনিটে লোকসান ছিল ৭৫ পয়সা। ফলে বিতরণযোগ্য আছে ৪৫ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
ফার্স্ট জনতা ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৬৬ পয়সা। গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ২৩ পয়সা লোকসান দিয়েছিল। ফলে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে বিতরণযোগ্য আয় আছে আসলে ৪৩ পয়সা। এরপর যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড মার্চ শেষে ইউনিটপ্রতি আয়করেছে ১ টাকা ৮৩ পয়সা। গত বছর ইউনিটপ্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৩৭ পয়সা। হাতে থাকে ৪৩ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৭০ পয়সা। গত বছর ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ২৮ পয়সা। হাতে থাকে ৪২ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি আয় আছে ১ টাকা ৭১ পয়সা। গত বছর ফান্ডটির লোকসান ছিল ১ টাকা ৩৫ পয়সা। হাতে থাকে ৩৬ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৪৪ পয়সা। গত বছর ফান্ডটি ইউনিটপ্রতি লোকসান দিয়েছে ১ টাকা ২৩ পয়সা। হাতে থাকে ২১ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
মার্চ শেষে এফবিএফআইএফের ইউনিটপ্রতি আয় ১ টাকা ৭৫ পয়সা। গত বছর এটি ইউনিটপ্রতি লোকসান দেয় ১ টাকা ৫৫ পয়সা। ফলে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে হাতে থাকে ২০ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
আইএফআইসি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৭৬ পয়সা। গত বছর ইউনিটপ্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৫৮ পয়সা। ফলে বিতরণযোগ্য থাকে ১৮ পয়সা। সঙ্গে যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড মার্চ শেষে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৮২ পয়সা। কিন্তু ফান্ডটি গত বছর ইউনিটপ্রতি লোকসান দিয়েছিল ১ টাকা ৮০ পয়সা। ফলে ফলে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে বিতরণযোগ্য আয় আছে আসলে ২ পয়সা। এরপর যোগ হবে চতুর্থ প্রান্তিকের আয়।
এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ১ টাকা ৪০ পয়সা আয় করলেও চতুর্থ প্রান্তিকে অভাবনীয় আয় না হলে ভালো লভ্যাংশ আসার সম্ভাবনা কম। কারণ, গত বছর ইউনিটপ্রতি ফান্ডটি ১ টাকা ৬৯ পয়সা লোকসান দিয়েছিল। ফলে এর পুরোটা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে গেলে এখনও লাগবে ২৯ পয়সা। চতুর্থ প্রান্তিকের আয় থেকে সেই ক্ষতি পুষিয়ে এরপর লভ্যাংশ বিতরণ করা হবে।
২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ভ্যানগার্ড রূপালী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ডে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। ফান্ডটি অর্থবছর শেষে ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৬৭ পয়সা আয় করেও লভ্যাংশ দিয়েছিল ১৬ পয়সা। কারণ, আগের বছর ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা লোকসান ছিল তাদের। আর অর্থবছরের পুরো আয় দিয়েও সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যায়নি। ফলে আগামী বছরও কিছু সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে।
লভ্যাংশ ঘোষণা করা ৬ ফান্ডের চতুর্থ প্রান্তিকের আয় কত
প্রথম লভ্যাংশ ঘোষণা কার এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড বছর শেষে ইউনিট প্রতি আয় করেছে ৩ টাকা ১৪ পয়সা। তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ইউনিটপ্রতি আয় ছিল ২ টাকা ৯৬ পয়সা। এর পরে চাঙা তিন মাসে তারা খুব একটা আয় বাড়াতে পারেনি। এ সময়ে আয় হয়েছে ১৮ পয়সা, যা চার প্রান্তিকের আয়ের মধ্যে সর্বনিম্ন।
সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি এলআর গ্লোবাল পরিচালিত ডিবিএইচ মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবার ইউনিট প্রতি আয় ২ টাকা ১৩ পয়সা। এর মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিকে আয় করেছে সবচেয়ে বেশি; ১ টাকা ২ পয়সা।
গ্রিন ডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড চতুর্থ প্রান্তিকে এর চেয়ে বেশি আয় করেছে। তাদের মোট আয় ২ টাকা ১৩ পয়সা। যার মধ্যে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্তই এসেছে ১ টাকা ২৫ পয়সা।
স্ট্র্যটেজিক ইক্যুইটি ফান্ড পরিচালনা করে মোট তিনটি। এগুলোর একেকটি একেক ধরনের আয় করেছে তৃতীয় প্রান্তিকে।
এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড ইউনিটপ্রতি মোট আয় করেছে ২ টাকা ৮৪ পয়সা। এর মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিকে হয়েছে ৭০ পয়সা।
এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড ইউনিট প্রতি আয় করেছে মোট ১ টাকা ৮৭ পয়সা। এর মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিকে আয় করেছে ৩৩ পয়সা।
অন্যদিকে এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ড বছর শেষে ইউনিটপ্রতি আয় করেছে ২ টাকা ৩৫ পয়সা। এর মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিকে এসেছে ৫৪ পয়সা।
আরও পড়ুন:বরিশালের নদ-নদী এবং সাগরে হঠাৎ করে ধরা পড়ছে ঝাকে ঝাকে ইলিশ। সেই সঙ্গে ঝিমিয়ে যাওয়া বরিশালের সর্ববৃহৎ পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি-গত তিনদিন ধরে দৈনিক দুইশ থেকে সাড়ে তিনশ মণ পর্যন্ত ইলিশ আসছে এই পাইকারি মৎস্য আড়তে। তবে সরবরাহের অর্ধেকের বেশি ইলিশ আকারে ছোট দাবি বলে আড়তদারদের।
ইলিশের সরবরাহ বাড়তে শুরু করলেও দাম এখনো নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এক কেজি জাটকা কিনতে এখনো গুণতে হচ্ছে সর্বনিম্ন পাঁচশ টাকা। তবে সরবরাহ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ঠিক থাকলে চলতি মাসেই ইলিশে দাম আরও কমে বলে আশাবাদী ব্যবসায়ীরা।
সরজমিনে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে দেখা যায়, ভোর পাঁচটা বাজার আগে থেকেই আড়তে আসছে একের পর এক ইলিশের ট্রলার। সাগর এবং নদীর মাঝ পোর্ট রোডে নামিয়ে দিয়ে ট্রলার নিয়ে জেলেরা আবার ছুটছেন সাগর এবং নদীতে। তবে বর্তমানে বরিশাল মোকামে আসা অর্ধেক ইলিশ স্থানীয় নদ-নদীর বলে দাবি জানিয়েছেন আড়াতদাররা।
পোর্টরোড আক্তার মৎস্য আড়তের আড়তদার আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, গত দুই-তিন দিনের তুলনায় রোববার ইলিশের দাম কিছুটা কম ছিল। কারণ এ কয়দিনে আড়তে ইলিশের সরবরাহ কিছু বেশি হয়েছে। এর পরও এলসি সাইজ অর্থাৎ ৭০০-৯৯৯ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৭৫-৭৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া এক কেজি সাইজের ইলিশ প্রতিমণ ৮৮ হাজার, এক কেজির ওপরে ১২শ গ্রাম পর্যন্ত ইলিশ প্রতিমণ ৯২ হাজার, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৯৮ হাজার টাকা, ভেলকা সাইজ অর্থাৎ ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম প্রতিমণ ৫৮-৬০ হাজার টাকা, ৩০০ থেকে ৫শ গ্রাম ইলিশ প্রতিমণ ৩২ হাজার টাকা এবং জাটকা ইলিশ প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকা দরে।
মৎস্য আড়তদার ইয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে বরিশালের আড়তে প্রতিদিন ৩-৪ হাজার মণ ইলিশও এসেছে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর সেই পরিমাণ কমে গেছে। তবে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মৎস্য আড়তে কিছুটা ঝামেলা হয়েছে বিধায় গত তিন দিন ধরে নদী এবং সাগরের মাছের ট্রলার বরিশালে আসছে। এ কারণে বরিশালের আড়তে সরবরাহও বেড়েছে।
বরিশাল শহীদ জিয়া মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহির সিকদার বলেন, রোববার বরিশালের আড়তে তিনশ মনের বেশি ইলিশ এসেছে। যা চলতি বছরে সর্বোচ্চ। তবে সরবরাহ হওয়া ইলিশের মধ্যে প্রায় আড়াইশ মণই জাটকা। তাছাড়া নদীর থেকে সাগরের ইলিশটাই বেশি আসছে।
তিনি জানান, গত শনিবার বরিশাল পোর্ট রোড মোকামে ২০০ মণ এবং তার আগের দিন শুক্রবার প্রায় দুইশ মণ ইলিশ এসেছে পোর্ট রোডের ইলিশ মোকামে। ফলে গত তিন দিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম মণপ্রতি ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত কমেছে। আগামী ২৫ জুন পূর্ণিমার জোঁ রয়েছে। ওইদিন থেকে আরও বেশি মাছ ধরা পড়বে বলে আশাবাদী এই ব্যবসায়ী।
খুঁচরা বাজারে দেখা যায়, আড়তে মাছের সরবরাহ বাড়লেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। সংকটের অজুহাতে এখনো বাড়তি দামেই ইলিশ বিক্রি করছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। ৭০০-৯৯৯ গ্রামের ইলিশ পাইকারী হিসেবে প্রতি কেজির দাম ১৮শ থেকে ১৯শ টাকা হলেও তা বিক্রি করা হচ্ছে ২২শ থেকে আড়াই হাজার টাকায়। একইভাবে কেজি সাইজের ইলিশ প্রতি কেজি ২২শ টাকার পরিবর্তে বিক্রি করা হচ্ছে ২৫শ থেকে ২৮শ টাকায়। আর জাটকা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বাড়তি দামে ইলিশ বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিম্ন আয়ের ক্রেতারা।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপণ কান্তি ঘোষ বলেন, একসময় বরিশালের পোর্ট রোড মৎস্য আড়ত জমজমাট ছিল। তখন দক্ষিণাঞ্চলের নদী এবং সাগরের ইলিশ এখানো আসত। তবে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির কারণে ইলিশ যাচ্ছে পটুয়াখালীর মহিপুর, আলিপুর এবং পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। তাছাড়া বরিশালের হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ এলাকার ইলিশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চাঁদপুরে। বরিশালের আড়তে যা মাছ আসছে তা স্থানীয় নদনদীর মাছ।
তিনি বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান অনেকটা সফল হয়েছে। এ সময় প্রচুর ইলিশের পোনা ছেড়েছে। এর সুফল সামনে পাওয়া যাবে। তবে এখনই গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই নদনদীতে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। এটা ভালো লক্ষ্যন। বৃষ্টি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। ভবিষ্যতে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়লে দামও কমে আসবে বলেন এই কর্মকর্তা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার অজোপাড়াগায়ে গড়ে ওঠেছে নৌকার গ্রাম। আর এ নৌকার গ্রামকে ঘিরে বালু নদীর তীর ঘেষে জমে ওঠেছে ব্যতিক্রমী নৌকার হাট। কাঠের খুটখাট আর নদীর পানির ছলাৎ-ছলাৎ শব্দ যে-কারো মনকে আবেগে ভরিয়ে দেবে। হয়তো ক্ষণিকের জন্য কেউ কবি বনে যেতে পারে। নৌকা তৈরির এ গ্রাম দু’টির অদূরেই গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাটটি বর্ষা আসলেই জমে উঠে। আর বর্ষা ঘিরে নয়ামাটি ও পিরুলিয়া এলাকায় নৌকা তৈরির ধুম পড়ে যায়। কারিগরেরা হয়ে পড়ে মহাব্যস্ত। কায়েতপাড়া নৌকার হাটটিতে তখন চলে নৌকা বেচাকেনার রমরমা ব্যবসা। এছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকন্দাইল বাজারে প্রতি বৃহস্পতিবার বসে নৌকার হাট। ইছাখালী-নগরপাড়া সড়কের অদূরেই নৌকার গ্রাম। আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাত্র তিন মাসের মৌসুমি ব্যবসা। চাহিদা যথেষ্ট, তাই কারিগরদের ব্যবস্থাও বেশি।
শুরুর ইতিহাস : রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার কারিগরেরা স্বাধীনতারও আগে থেকে নৌকা তৈরি করে আসছে। কারো-কারো মতে, এ এলাকার নৌকা তৈরির ইতিহাস প্রায় শতাব্দী প্রাচীন। পিরুলিয়া এলাকার অতশীপরবৃদ্ধ অঞ্জনকুমার দাস বলেন, আমার জন্মের আগে থেইক্যা বাপ-দাদারা গয়না (নৌকা) বানাইয়া আইতাছে হুনছি। নয়ামাটি ও পিরুলিয়া ছাড়া গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল, সাওঘাট এলাকার কারিগরেরা নৌকা তৈরি করে আসছে।
কারিগর কারা : নৌকা তৈরির গ্রাম পিরুলিয়া ও নয়ামাটি বললেই সবাই চেনে। তবে এ এলাকা দুটি গ্রামের ৯০ ভাগই মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। হিন্দুরাই দীর্ঘদিন ধরে নৌকা তৈরি করে আসছে। আশির দশকের পর নৌকা ব্যবসায়ী কমে যায়। অনেকে ভারত চলে যাওয়ায় এখনো দেড়শ পরিবার টিকে রয়েছে কোনোমতে। সাওঘাট এলাকার কারিগর প্রদ্যুত কুমার সরকার বলেন, আগে ব্যবসা ভালাই আছিলো। অহন কাটের দাম আর লোয়া (লোহা ) পেরেকের দাম বাইড়া যাওনে লাভ কম অয়।
কারিগরা যা বলছেন: পিরুলিয়া ও নয়ামাটি এলাকার নৌকা তৈরির কারিগরেরা এখন ভালোই আছেন। নৌকা বিক্রি করে তারা সংসার চালাচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। বছর শেষে মোটামুটি লাভের মুখ ও দেখছেন। কথাগুলো একবাক্যে বললেন পিরুলিয়া এলাকার সত্যেন দাস। তার ছেলে লেখাপড়া করছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। নয়ামাটি এলাকার রমেশ দাস বলেন, কই খারাপতো নাইগো দাদা। মোডা ভাত- আর মোডা কাপড় পরবার পারি। এইডাই সুখ।
বর্তমান অবস্থা : নৌকা তৈরির কারিগরদের অবস্থা এখন কিছুটা ভাটা পড়েছে। ৯০ দশকের পর যান্ত্রিক সভ্যতা ফিরে আসায় নৌকার কদর কিছুটা কমে যায়। প্রতি বছর বর্ষায় নৌকা তৈরির ধুম চলে। তবে বন্যা হলে ব্যবসা ভালো হয় বলে জানালেন সুনীল দাস। তিনি বলেন, ৮৮’ আর ৯৮’ সালের বন্যায় অনেক টেহা লাব অইছিলো। নয়ামাটি এলাকার নৌকার কারিগর রবি দাস বলেন, কাডের দাম বাইড়া যাওনে লাভটা কম হয়। নাইলে ব্যবসা খারাপ না। আর স্টিলের নৌকার কারণে কিছুডা লছ অইতাছে। তারপরেও খারাপ নাই। ডাইল-ভাত খাইবার পারি।
খরচ কত : এক-একটি নৌকা তৈরি করতে খরচ পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর মোটামুটি কাঠের নৌকা তৈরিতে খরচ পড়ে ৮/১০ হাজার টাকা। কথাগুলো বললেন নৌকার কারিগর তাপস দাস।
নৌকার হাটের কথা : বালু নদীর তীর ঘেঁষেই কায়েতপাড়া বাজারে নৌকার হাট। বর্ষা মাসজুড়েই এ হাট জমে। ঢাকার নিম্নাঞ্চলসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা নৌকা কিনতে আসেন। দামে সস্তা হওয়ায় এখানকার নৌকার কদরও বেশি। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের গোলাকান্দাইল বাজারের সামনে বিলে জমে ব্যতিক্রমি নৌকার হাট। এ হাটে প্রতি বৃহস্পতিবারে প্রায় কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। নৌকার হাট শুরু হয় নৌকা তৈরির গ্রামগুলোর কারিগরদের ঘিরেই। প্রতি বৃহস্পতিবার এ হাট জমে ওঠে। বৃহস্পতিবার এ হাটে কয়েক হাজার নৌকা ওঠে। ওঠে নৌকার বৈঠাও। গজারি কাঠের এক-একটি নৌকার দাম পড়ে ১৫/২০ হাজার টাকা। আর কোষা ৭/৮ হাজার টাকায়। বৈঠাগুলো ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হয়। নৌকা বিক্রেতা সুবল চন্দ্র দাস বলেন, দাদু ব্যবসা ভালোই, তয় পানি বেশি অইলে লাভ অয়। ঢাকার ত্রিমহোনী থেকে নৌকা কিনতে আসা ওমরআলী বলেন, এ হাটে তুলনামূলক সস্তায় নৌকা পাওয়া যায়। আড়াইহাজার থেকে নৌকা কিনতে আসা সামছুল হক বলেন, এ হাটে নৌকার দাম কম। তাই এহান থেইক্যা কিনবার আইছি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্বাধীন ও দক্ষ বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব নতুন সভ্যতা গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
রোববার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ বিষয়ক এক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বক্তব্য রাখেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সুশীল সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
রবিবার (২২ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকায় ইউরোপীয় দূতাবাস এমন তথ্য জানিয়েছে।
ইইউ দূতাবাস বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জন্য আরও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে সুশীল সমাজকে ক্ষমতায়নে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি ও এর অংশীদাররা।
ইউরোপীয় পার্টনারশিপ ফর ডেমোক্রেসির (ইপিডি) সহায়তায় এর অংশীদার সংগঠন আনফারেল ১৮ থেকে ২০ জুন ঢাকায় তিনদিনব্যাপী একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। এর বিষয়বস্তু ছিল নাগরিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ।
ইইউ দূতাবাস জানায়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে সব অংশগ্রহণকারী একমত পোষণ করেছেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রণয়নে সহযোগিতা এবং এতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালনের কথা স্বীকার করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন।
সম্প্রতি সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. বরিশাল জেলায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল থেকে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকদের নিয়ে লিড ব্যাংক হিসেবে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা এর নির্দেশনায় “স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০২৫” আয়োজন করেছে।
উক্ত কনফারেন্সে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ইমতিয়াজ আহমেদ মাসুম, নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), বাংলাদেশ ব্যাংক, বরিশাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আবিদুর রহমান চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব), সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি., জনাব মোঃ আলী হোসেন, অতিরিক্ত পরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা, জনাব মোঃ হারুনুর রশিদ, জেলা শিক্ষা অফিসার, বরিশাল এবং সম্মানিত অতিথি জনাব মোঃ মাহাবুব-উল আলম, উপপরিচালক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উক্ত কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে উক্ত কনফারেন্সে জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল থেকে রাবিয়া কামাল (দশম শ্রেণী) এবং বরিশাল জেলা স্কুল, বরিশাল থেকে মোঃ হাসনাইন বিন কবির (দশম শ্রেণী) বক্তব্য রাখেন।
উক্ত কনফারেন্সে বরিশাল জেলার ৪৫ টি তফসিলী ব্যাংকের ৪৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্কুল থেকে ১৮০ জন শিক্ষার্থী ও ৪৫ জন শিক্ষক এবং অতিথি সহ সর্বমোট ৩৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্সে বক্তারা শৈশব থেকেই সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও দায়িত্বশীল অর্থ ব্যবস্থাপনার অভ্যাস গড়ে তোলা ও আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের পরিচিত করানোর লক্ষ্যে স্কুল ব্যাংকিং এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও স্কুল ব্যাংকিং এর উপর নির্মিত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, র্যালী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় ফুল ‘শাপলা’ প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দেয় নতুন রাজনৈতিক দলটি। এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন উপস্থিত ছিলেন।
পছন্দের প্রতীকের তালিকায় শাপলা ছাড়াও কলম ও মোবাইল রেখেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি। আবেদন জমা দেওয়ার পর আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে দল নিবন্ধনের শর্তসমূহ পূরণ করে আমাদের দল নিবন্ধনের আবেদন এই মাত্র দাখিল করেছি। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আমাদের আবেদন রিসিভ (গ্রহণ) করেছেন। আমাদেরকে রিসিভ কপি তারা দিয়েছেন।’
এ সময় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘৫ তারিখে গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে বাংলাদেশের মানুষের জয় হয়েছিল, আগামীর পার্লামেন্ট ভোটে এনসিপির শাপলা প্রতীকে পুরো বাংলাদেশের মানুষ জয়জয়কার করে দেবে, এনসিপির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠন হবে।’
এ সময় নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে গত ১৫ বছরে ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে যেসব ব্যক্তি রয়েছেন, তাদের যেমন পুনর্গঠন করতে হবে, নিয়মনীতির পরিবর্তন করতে হবে, কিন্তু তার মানে এই নয়, ইলেকশন কমিশন বাংলাদেশ থেকে উধাও হয়ে গেছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এই কমিশনকে আমরা পুনর্গঠন করতে চাই, শক্তিশালী করতে চাই, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই। সে প্রক্রিয়ায় কিন্তু আমরা আজকে এসেছি। এর মধ্যেও আমরা বলে যেতে চাই। আমরা আজকেও বলছি, ইলেকশন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন।’
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে এ দলটি গঠিত হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার শেষ দিনে গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত আবেদন জমা দিয়েছে দুই ডজনেরও বেশি রাজনৈতিক দল।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ১০ মার্চ আগ্রহী দলগুলোর কাছ থেকে আবেদনপত্র আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন। ২০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন করে ৬৫টি নতুন রাজনৈতিক দল। এরপর এনসিপিসহ ৪৬টি দলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দলের নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা ২ মাস বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।
আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আজহার উল আলম, মৎস কর্মকর্তা জয় বণিক, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি রফিকুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বদন তৈয়বা প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভৈরব এর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এবারের কৃষি প্রযুক্তি মেলায় মোট ১৪টি স্টল রয়েছে। মেলায় বিভিন্ন কৃষির আধুনিক যন্ত্র, ফলজ, ফুলসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মেলার স্টলগুলি খোলা থাকবে। এ মেলা চলবে ২২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, উপজেলার কৃষকদের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রাঙ্গণে কৃষি প্রযুক্তি মেলায় কৃষি কাজের সকল প্রযুক্তিসহ কৃষি সম্পকিত নানা বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য মেলায় বিভিন্ন স্টল বসেছে। এসব স্টলে এসে কৃষকরা প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন এবং তাদের কৃষি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহারে কাজে লাগাতে পারবেন।
এবিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো পথ নেই। এরই মধ্যে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এই ধরণের মেলা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান ও ফলন বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হিসাবে কাজে দিবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, তারা গবেষণা করছেন, সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছেন। বর্তমানে সব ধরনের চাষে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। কৃষিতে যতো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ততো বেশি উৎপাদন বাড়বে।
মন্তব্য