পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রধান খাতগুলো যখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তখন ব্যাংকের ঘুমিয়ে থাকা নিয়ে কথার শেষ নেই। তবে ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ লেনদেনের পরের দিন সূচকের বড় পতন ঠেকাল এই খাতই। ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধিও ভূমিকা রেখেছে এতে।
তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উত্থানেও ঠেকানো গেল না সূচকের পতন। একের পর এক আকর্ষণীয় মুনাফা ঘোষণার পরেও মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো দর হারানোর বৃত্তে। গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপক চাঙা প্রকৌশল এবং ওষুধ ও রসায়ন খাত আলো ছড়াতে পারেনি। বস্ত্র খাতেও দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। আর বিমা খাতের পতনের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।
সব মিলিয়ে পুঁজিবাজারে সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে সব মিলিয়ে দর হারিয়েছে দুই শরও বেশি কোম্পানি। আর বেড়েছে দেড় শর মতো। কিছুটা কমেছে সূচকও। তবে এত কোম্পানির দরপতনের ভিড়েও মাত্র ১০ পয়েন্ট হারিয়ে সূচকের অবস্থান ধরে রাখা পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক শক্তিমত্তার পরিচয় হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
এ নিয়ে টাকা ৬ কর্মদিবসে ২১১ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পর সংশোধন দেখল বিনিয়োগকারীরা।
দর সংশোধনের দিন লেনদেন কিছুটা কমলেও তা ২ হাজার ৮৪০ কোটি ১১ লাখ টাকার বেশি, যা গত এক দশকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আগের দিনই ২০১০ সালের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা।
গত বছরের জুলাই থেকে পুঁজিবাজার চাঙা হয়ে ওঠা আর সেই উত্থান টিকে যাওয়ায় বাজার নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠেছে ব্যক্তিশ্রেণির পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও।
করোনার বছরে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি আয় করে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ, চলতি বছর আরও বেশি আয় করায় লভ্যাংশ বৃদ্ধির সম্ভাবনার মধ্যেও ব্যাংক খাত চাঙা হতে পারছিল না। এর মধ্যে কোনো কোনো দিন সবগুলো বা প্রায় সবগুলো দর বাড়লেও পরে সেই বাড়তি দর ধরে রাখতে পারেনি বেশির ভাগ কোম্পানি।
গত ২৭ মে ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে সাতটির শেয়ার দর দিনের সর্বোচ্চ সীমায় আর আরও আটটির দর তার কাছাকাছি অবস্থান করছিল। ভাবা হচ্ছিল, অন্যান্য খাতের মতো বুঝি এই খাতও এগিয়ে যাবে। কিন্তু তা আর হয়নি। সেই দিনের দরের তুলনায় অন্তত ২০টি ব্যাংকের দাম এখন কম, যদিও এই কয় দিনে সূচক বেড়েছে ৬০০ পয়েন্টেরও বেশি।
আগের দিন সোমবার বাজারে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার কোটি টাকা ছুঁইছুঁই। এর চেয়ে বেশি লেনদেনের ইতিহাস আছে কেবল চার দিন, সেটিও ১১ বছর আগে ২০১০ সালে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি চাঙাভাবের সময়।
সেখান থেকে পতনের পর কখনও কখনও ঘুরে দাঁড়ালেও পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হতে পারছিল না। তবে দর সংশোধন হলে ইদানীং আর সব খাতে ঢালাওভাবে পতন হয় না। এখন দর সংশোধনের সময়ও কোনো না কোনো খাতের সাপোর্ট দেয়ার বিষয়টি নতুন অনুঘটক হিসেবে দেখা দিয়েছে। আর এই বিষয়টি নিয়েই আশাবাদী হয়ে উঠছে বিনিয়োগকারীরা।
যেমন আগের দিন প্রধান খাতগুলোর মধ্যে প্রকৌশল, ওষুধ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিতক, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, বস্ত্র খাতে চাঙাভাবে ইতিহাসের রেকর্ড ছুঁইছুঁই লেনদেন হলেও ব্যাংকিং খাতে দরপতন হয় দুটি ইস্যুতে।
ব্যাংকে অলস টাকা ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ বিনিয়োগের সুযোগ রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের আয়োজন করেছে। আর বেশির ভাগ গণমাধ্যমে খবরটি এভাবে এসেছে যে, ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত টাকা তুলে নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই খবরের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির নিচে থাকতে পারবে না বলে একটি সার্কুলারে জানিয়ে দেয়। তবে এখন গড় সুদহার ৪ শতাংশের কিছু বেশি।
বিনিয়োগকারীরা এই দুই সংবাদে আতঙ্কিত হয় এই ভেবে যে, ব্যাংকের টাকা নিয়ে নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আর আমানতের সুদহার বাড়লে ব্যাংকের মুনাফা কমবে।
কিন্তু পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফায় দেখা যায় ৭ দিনের বিলে ব্যাংকগুলো ০.৫৪ শতাংশ আর ১৪ দিনের বিলে ০.৭৫ শতাংশ সুদ পাবে। সব মিলিয়ে প্রথম দিন বিনিয়োগ হয়েছে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি। এ থেকে ব্যাংকগুলোর আয় হবে ৪৭ লাখ টাকা।
এই অর্থ ব্যাংকে অলস পড়েছিল আর এর বিপরীতে আয় ছিল শূন্য। আর এই টাকাটা ব্যাংকের কোষাগার আসলে আরও স্ফীত করবে।
আবার আমানতের সুদহার কমার পাশাপাশি ঋণের সুদহার এখন বেঁধে দেয়া সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশের অনেক নিচে। এখন বড় বিনিয়োগকালীদেরকে ৬ থেকে ৭ শতাংশ সুদেও টাকা দেয়া হয়। আমানতের সুদহার যদি বাড়ে, তাহলে সেটি পুষিয়ে নিতে ঋণের সুদহার বাড়ানোরও সুযোগ আছে।
ব্যাংক-আর্থিক খাতে রক্ষা
লেনদেনের শুরুতে সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪২ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছিল। তখন অন্যান্য খাতের মতো ব্যাংক-আর্থিক খাতেও শেয়ারের নড়চড় ছিল না। বিশেষ করে ব্যাংকের শেয়ার দর কোনোটা ১০ পয়সা বাড়ে, তো কোনোটা কমতে থাকে।
তবে কিছুক্ষণ পর শেয়ারগুলো দর হারাতে থাকলে সূচক এক পর্যায়ে আগের দিনের তুলনায় ১৭ পয়েন্ট পড়ে যায়। বেলা একটার দিকে সূচক আবার আগের দিনের তুলনায় ৩০ পয়েন্ট বাড়ে। মূলত এই বৃদ্ধি হয় ব্যাংক খাতে উত্থানের কারণে।
এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে কেবল একটি দর হারিয়েছে, আর দুটির দর ছিল অপরিবর্তিত। বেড়েছে বাকি ২৮টির।
অন্যদিকে আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত দীর্ঘদিন ধরেই। দাম বেড়েছে বাকি ২২টির সবগুলোর।
দুই খাতে চাঙাভাবের দিন লেনদেনও বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
আগের দিন ব্যাংক খাতে ১৯৪ কোটি ৩ লাখ টাকা হাতবদল হলেও আজ তা বেড়ে হয়েছে ২৪৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
অন্যদিকে আর্থিক খাতে আগের দিন ১০৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেন হলেও আজ হয়েছে ২৫৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
শতকরা হিসেবে ব্যাংকের দাম খুব একটা বেড়েছে এমন নয়। কেবল আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর ১ টাকা ১০ পয়সা, রূপালী ব্যাংকের শেয়ার দর ১ টাকা ২০ পয়সা, আর প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ৬০ পয়সা। বাকিগুলোর দর বেড়েছে ১০ থেকে ৪০ পয়সার মধ্যে।
তবে আর্থিক খাতের শেয়ারগুলোর দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ন্যাশনাল হাউজিং ফিনান্সের দর। ৪৭ টাকা থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে দাম দাঁড়িয়েছে ৫১ টাকা ৭০ পয়সা।
ইসলামির ফিনান্সের শেয়ারদরও বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। ২৩ টাকা ৭০ পয়সা থেকে দাম বেড়েছে হয়েছে ২৬ টাকা। শেয়ার দরে যোগ হয়েছে ২ টাকা ৩০ পয়সা। আজ এর চেয়ে বেশি বাড়ার সুযোগ ছিল না।
এছাড়া আইপিডিসির শেয়ার দর ২ টাকা ৭০ পয়সা, বে লিজিংয়ের দর ২ টাকা, ডিবিএইচের দর ১ টাকা ৮০ পয়সা, উত্তরা ফিনান্সের দর ১ টাকা ৪০ পয়সা, বিডি ফিনান্স ও আইসিবির দর ১ টাকা ২০ পয়সা করে, জিএসপি ফিনান্সের দর ১ টাকা ১০ পয়সা, মাইডাস ফিনান্স ও আইডিএলসির দর বেড়েছে ১ টাকা করে।
তবে শতকরা হিসেবে দিনের দাম বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছে ফারইস্ট ফিনান্সের দর। আগের দিন ৮ টাকা ৬০ পয়সা দর থাকায় শেয়ারের দর বাড়তে পারত ৮০ পয়সা, বেড়েছেও অতটুকুই।
লেনদেনে এগিয়ে থাকলেও দর কমেছে প্রকৌশল, ওষুধ, বস্ত্র খাতের
আগের দিন লেনদেনে সেরা ছিল প্রকৌশল খাত, সেটিকে আজ টপকে গেছে বস্ত্র খাত। ওষুধ ও রসায়ন তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছেণ।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া বস্ত্র খাতে হাতবদল হয়েছে ৪১৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৫৪৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এই খাতটি তার পরেও প্রকৌশলকে টপকে যাওয়ার পেছনে কারণ ছিল প্রকৌশলের লেনদেন আরও কমা।
বস্ত্র খাতে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে দুই বন্ধ কোম্পানি তাল্লু স্পিনিং, তুংহাই আর লোকসানি জেনারেশন নেক্সটের দর। তাল্লু ও আর তুংহাইয়ের দর বেড়েছে একদিনে যত বাড়া সম্ভব ততই। আর জেনারেশন নেক্সটের দর বেড়েছে ৬.৮৪ শতাংশ।
বস্ত্র খাতে হার বাড়া আর কমার সংখ্যাটি প্রায় সমান। বেড়েছে ২৫টির দর, কমেছে ৩২টির।
প্রকৌশলে আজ হাতবদল হয়েছে ৩৬০ কোটি ১০ লাখ টাকা যা আগের দিন ছিল ৪৭৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। এই খাতে বেড়েছে ১৫টির দর, কমেছে ২৭টির। এই খাতটিতে টানা দাম বাড়ছিল গত কয়েকদিনে। আর এ কারণে সংশোধনে যাওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার।
আগের দিনের মতোই তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। হাতবদল হয়েছে ২৯৬ কোটি ১ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল ছিল ৩৯৫ কোটি ১২ লাখ টাাক।
এই খাতে ৯টি কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২১টির দর।
বিমা-মিউচ্যুয়াল ফান্ড পড়ছেই
চলতি বছর তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো যে লভ্যাংশ ঘোষণা করছে, তা চমকে দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। ১০ টাকার নিচে দাম, এমন দুটি ফান্ড ১ টাকা ২০ পয়সা করে, ১২ টাকার ঘরে দাম এমন দুটি দেড় টাকা করে আর একটি ১ টাকা আর ১৭ টাকার ঘরে এমন একটি ফান্ড ১ টাকা ৭৫ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পরেও তিন দিন ধরে এই খাত দর পতনের বৃ্ত্তে।
এখন পর্যন্ত যে ছয়টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে ৫টি ছিল লোকসানি আর এ বছর রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা করে লভ্যাংশও এসেছে রেকর্ড পরিমাণ।
বুধবার আরও আটটি আর বৃহস্পতিবার ঘোষণা হবে আরও দুটি ফান্ডের লভ্যাংশ। এর মধ্যেও এই খাতে ৩টির দর বেড়েছে, অপরিবর্তিত দেখা গেছে ৫টির আর কমেছে বাকি ২৮টির দর।
লেনদেনও কমেছে। আগের দিন ২টির দর বৃ্দ্ধি আর ৩৩টির পতনের মধ্যেও লেনদেন ছিল ১৩২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। তবে আজ হাতবদল হয়েছে ৮৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
জুন থেকে সংশোধনে যাওয়া বিমা খাতের বিনিয়োগকারীরা আরও একটি হতাশার দিন পার করলেন। ১৬টি কোম্পানির দর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ৩৫টির। লেনদেনও কমেছে খানিকটা।
আগের দিন ৪টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছিল ৪৭টির। লেনদেন ছিল ১৬৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আজ হাতবদল হয়েছে ১৬১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
অন্যান্য খাত
আলোচিত অন্য খাতগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫টির, কমেছে বাকি ১৮টির। লেনদেন হয়েছে ১৭১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের দিন এই খাতে লেনদেন ছিল ২২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। সেদিন বেড়েছিল ২০টি কোম্পানির দর, কমেছিল ৩টির।
বেশিরভাগ কোম্পানির দর হারানোর পাশাপাশি লেনদেন কমেছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতেও। এই খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১৪টির, বেড়েছে ৬টির। লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
আগের দিন ১৬টির দর বাড়ার বিপরীতে কমেছিল ৪টির। লেনদেন ছিল ১৩০ কোটি ৭ লাখ টাকা।
তথ্য প্রযুক্তি খাতে ১১টির মধ্যে একটি বাদে সবগুলোর দরপতন দেখেছে পুঁজিবাজার। লেনদেন হয়েছে ৬৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের দিন ১১টির মধ্যে ৯টির দার বেড়েছিল, লেনদেন ছিল ১০৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:দাবদাহ আর বৃষ্টিহীনতায় পুড়ছে মাদারীপুরের পাটক্ষেত। বৈশাখের তপ্ত রোদে পাটক্ষেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পাটের জমিতে ঘন ঘন সেচ দেয়ায় যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি খরায় জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারছেন না কৃষকরা।
এমনটা চলতে থাকলে উৎপাদন অনেকটা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা কৃষকদের।
সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের তীব্র দাবদাহে পাট গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেতেই মরে যাচ্ছে পাট গাছ। কোথাও শুকিয়ে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ঘন ঘন সেচ দিয়েও গাছের আশানুরূপ পরিবর্তন আনতে পারছেন না।
অনাবৃষ্টির কারণে পাট গাছের বৃদ্ধি না হওয়ায় জমিতে আগাছার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বিগুণ হারে।
কৃষকরা জানান, এবার প্রতি বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ টাকার মতো। যা গতবারের চেয়ে অন্তত দুই হাজার বেশি। এরপরে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য সেচ দিচ্ছেন তারা। ফলে আরও বাড়তে পারে উৎপাদন ব্যয়।
খোয়াজপুরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে মাঠ ফেটে চৌচির। পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। একটুখানি বড় হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন চললে এবার পাট আবাদ ধসে পড়বে। অনেকেই সেচ দিলেও এক দুই দিন পরে আবার শুকিয়ে যায়। এতে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠছে।’
আর মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বপন কাজ শেষ হয়েছে এবং অনেক স্থানে চারা বড় হয়ে গেছে, কিন্তু রোগের কারণে পাটের ক্ষতি হওয়ায় চাষিদের বিকেলে পানি সেচ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আবদুল মতিন বিশ্বাস বলেন, ‘এই গরমে পাটের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই, তবে কৃষকদের বলছি, যেন বিকেলে সেচের মাধ্যমে পাট গাছ জীবিত রাখে। এতে গাছ মরবে না।’
মাদারীপুর জেলায় অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে পাটের অবস্থান শীর্ষে। গত বছর পাটের মূল্য ভাল পাওয়ায় কৃষকরাও এবার বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে খেলতে গিয়ে একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শিশু নিহত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাঁচ তলা ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় সে।
নিহত শিশুর নাম খাদিজা আক্তার (৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুটির ফুফা মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া (২০ বছর)।
খাদিজার বাবা মোহাম্মদ ফয়সাল আহমাদ জানান, দুপুরে পাঁচ তলার ছাদে খাদিজা খেলাধুলা করার সময় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় খাদিজার ফুফা দৌড়ে ধরতে গেলে তিনিও নিচে পড়ে যান।
তিনি জানান, পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায় এবং ফারিয়ার ফুফাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানা এলাকায়। খিলগাঁওয়ের গোড়ান নবাবীর মোড় বতর্মানে১৪৮ /১ রায়হান সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমরা।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটির মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে খিলগাঁও থানার সাথে কথা হয়েছে।
তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রায় পাবনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অসহনীয় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন-চার দিন তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও শুক্রবার চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এদিন পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে প্রথমবার ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতি তীব্র তাপদাহে পাবনার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটার শ্রমিকসহ দিনমজুরদের জন্য অসহ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।
গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এতে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে।
শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ ও থাই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক থেকে বেরিয়ে ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি শুক্রবার এ কথা জানান। খবর বাসসের
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাই প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এক সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’
দুপুরে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গভর্নমেন্ট হাউজে উভয় নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত একান্ত বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব তথ্য জানান। সন্ধ্যায় ঢাকায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।
ড. হাছান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমে তারা একান্তে কথা বলেন, এরপর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বহু বিষয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।
থাইল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের যে ভ্রাতৃপ্রতিম ও বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক, সেটা আরও জোরদার, বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত করার ব্যাপারে দুই প্রধানমন্ত্রী গভীর আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন, বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এ সময় অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি, জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর জন্য একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট স্বাক্ষরিত হয়।
দেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ব্যাংককে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল হাই এবং থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. প্রাণপ্রী বাহিদ্ধা নুকারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বর্ণনা করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ১০০টি ইকোনমিক জোন ও আইটি ভিলেজে থাই বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা চাইলে প্রয়োজনে বাংলাদেশে তাদের জন্য বিশেষ ইকোনমিক জোন করার কথাও বলেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে আসা প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের জন্য বাংলাদেশে যেসব সমস্যা উদ্ভূত হচ্ছে বৈঠকে সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেও জানান ড. হাছান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ডেও অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন, এখনো অনেকে আসছেন। থাইল্যান্ডও এই পালিয়ে আসা মানুষদের ভারে জর্জরিত। এই সমস্যা সমাধানে উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের একসাথে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
এদিন গভর্নমেন্ট হাউজে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদত্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অফ অনার প্রদানকালে থাই প্রধানমন্ত্রী সাথে ছিলেন। শেখ হাসিনা তার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান। তিনি বৃহস্পতিবার ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে দেওয়া ভাষণে সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান জানান।
সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর আগামী ২৯ এপ্রিল দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য