ব্যাংকে থাকা অলস টাকা তুলে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে ব্যাংকগুলো লাভবান হলেও বিষয়টি নিয়ে ভুল ব্যাখ্যায় পুঁজিবাজারে এই খাত নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। ব্যাংকিং খাতে কমেছে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার দর।
তবে ব্যাংক, বিমা, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে পতনের দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ।
দিন শেষে লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩৯ কোটি ৪৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
এর আগে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর ২ হাজার ৯৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আর তিনটি কর্মদিবসে।
২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর লেনদেন ছিল ৩ হাজার ১৭৯ কোটি ৬৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। পরের কর্মদিবসে ৫ ডিসেম্বর মহাধস শুরুর দিন লেনদেন ছিল ৩ হাজার ২৪৯ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ লেনদেন।
২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৯০ লাখ ৮২ হাজার টাকা লেনদেন বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস সোমবার লেনদেনের শুরুতে পতন ছিল বেশি আর এ কারণে সূচকও এক পর্যায়ে পগে যায় ৭৩ পয়েন্ট। তবে পরে দাম কমার হার কমে আসা আর প্রধান প্রধান অন্য খাতগুলোর বেশিরভাগে দর বৃদ্ধির কারণে সূচক বেড়ে যায়।
দিন শেষে আগের দিনের চেয়ে সূচকে যোগ হয়েছে ৩২ পয়েন্ট। সূচকের অবস্থান এখন ২০১১ সালের ২৬ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।
সেদিন ডিএসই সূচক ছিল ৬ হাজার ৬৪২ পয়েন্ট। এখন অবশ্য ডিএসইর প্রধান সূচকের না, ডিএসইএক্স সূচক আর মান অনুযায়ী আগের সূচক এখনকার চেয়ে কিছুটা বেশি থাকার কথা।
তবে ব্যাংক খাতের চেয়ে বেশি পতন হয়েছে দর সংশোধনে থাকা বিমা খাতে। পক্ষান্তরে দারুণ একটি দিন গেছে লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে। বেশিরভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে বস্ত্র খাতেও।
দুর্দান্ত লভ্যাংশ দিয়ে আসা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে দর পতনও অনেকটা বিস্ময়করই বলা যায়। অথচ এই দিন তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণার সংবাদ আসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ডে। এই তিনটি ফান্ডই গত বছর ব্যাপক লোকসান দেয়ার কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি, কিন্তু এবার বেশ ভালো মুনাফা করে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দিয়েছে।
বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীরা অবশ্য এই উদ্বেগটিকে কাজে লাগিয়েছেন, যার প্রমাণ লেনদেনে। আগের কর্মদিবস বৃগস্পতিবার দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন দেখেছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। সেটিও ছাড়িয়ে লেনদেন আজ ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ অবস্থান দেখা গেছে।
আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সেখান থেকে বেড়েছে আরও ৪২৩ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে দাম বেড়েছে ১৮১টি কোম্পানির, কমেছে ১৭৩টির, দাম বেড়েছে ২০টির।
ভিত্তিহীন উদ্বেগ
এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত তারল্য আছে, যার মধ্যে ৬২ হাজার কোটি টাকা একেবারেই অলস। এই টাকা বসিয়ে রেখে এক পয়সাও আয় হচ্ছে না ব্যাংকগুলোর।
এই অতিরিক্ত তারল্যের কারণে ব্যাংকগুলো মেয়াদি আমানতের সুদহার কমিয়ে দেড় থেকে দুই শতাংশে নামিয়ে এনেছে। আর এ কারণে ব্যাংকে টাকা রাখলে মূল্য আসলে কমে যায়। কারণ, মূল্যস্ফীতির হার এখন মসাড়ে ৫ শতাংশের বেশি।
অর্থাৎ এক বছর আগে ১০০ টাকার যে মূল্য, চলতি বছর সেটা ৯৪ টাকা ৫০ পয়সার আশেপাশে। কিন্তু সুদ হিসেবে পাওয়া গেছে দেড় থেকে দুই টাকা। ফলে টাকার প্রকৃত মান কমে গেছে।
এই অবস্থায় বাজারে টাকার প্রবাহ কমানো ব্যাংকগুলো যেন আবার আমানত সংগ্রহে আগ্রহী হয়, সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুটি ব্যবস্থা করেছে।
অলস টাকা ফেলে না রেখে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ বিনিয়োগের সুবিধা রেখে তারা মোট ৯টি নিলামের আয়োজন করেছে। ব্যাংকগুলো সেখানে বিনিয়োগ করবে এবং এর বিপরীতে সুদ পাবে।
কিন্তু গণমাধ্যমে বিষয়টি যেভাবে এসেছে, সেটি বিনিয়োগকারীদের অনেকের মধ্যেই অস্থিরতা ছড়িয়েছে। ব্যাংক থেকে অলস টাকা তুলে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক- এমন খবরের ব্যাখ্যায় বহুজন ভাবছে, টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমনিতে নিয়ে নেবে। ফলে ব্যাংকের আয় ও সম্পদ কমবে।
তবে বিষয়টি উল্টো বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন মিউচ্যুয়ালা ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ বিনিয়োগ করে ব্যাংকগুলো আয় করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলামও বলেছেন, এটি ব্যাংকের জন্য একটি সুবিধা নিয়ে এসেছে। যে অর্থ থেকে তাদের আয় ছিল শূন্য, সেখান থেকে তারা কিছুটা হলেও আয় করতে পারবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বরং ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ সুদহার কম রাখার ওপর তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সুদহার বেশি হলে ব্যাংকগুলো অন্য জায়গায় বিনিয়োগ না করে এই খাতে বেশি টাকা ঢালবে।
দ্বিতীয় যে পদক্ষেপটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়েছে, সেটি হলো আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির বেশি রাখা। রোববার এক সার্কুলারে তারা জানিয়ে দিয়েছে, ব্যাংকগুলো ব্যক্তিশ্রেণির আমানতকারীদেরকে যে সুদ দিয়ে থাকে, তা কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হতে পারবে না।
এতে ব্যাংকগুলোর আমানতের খরচ কিছুটা বাড়বে। কিন্তু ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ থাকলেও এখন তা ৬ থেকে ৭ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে। ফলে আমানতের জন্য যে বাড়তি খরচ করতে হবে, বিতরণ করা ঋণ থেকে বাড়তি আয় করে তা পুষিয়ে নেয়ার ক্ষমতা তাদের আছে।
ব্যাংক খাতে ৪টি কোম্পানির দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৯টির দর। অপরিবর্তিত ছিল বাকি আটটি।
শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনায় থাকা আইএফআইসি ব্যাংক। আগের দিনের চেয়ে ৪.১৪ শতাংশ বেড়ে দর হারিয়েছে ১৫ টাকা ১০ পয়সা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাড়া আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের দর বেড়েছে ৩ শতাংশ।
অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইবিএলের ২০ পয়সা আর ইউসিবির বেড়েছে ১০ পয়সা।
লেনদেন হয়েছে ১৯৪ কোটি ৩ লাখ টাকা, আগের দিন যা ছিল ১১৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
ব্যাংকের মতো পতন হয়েছে আর্থিক খাতেও। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে বেড়েছে ২টির, কমেছে ১৭টির। লেনদেন হয়েছে ১০৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
আগের দিন লেনদেন ছিল ১০২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
প্রকৌশল, ওষুধ, জ্বালানি, বস্ত্র, বিবিধের ‘দখলে’ বাজার
৩০ জুন অর্থবছর শেষ হওয়ায় লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা এই পাঁচটি খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
মোট লেনদেনের ৬৮.৪৬ শতাংশই হয়েছে এই পাঁচ খাতে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতে। এই খাতের ৩২টি কোম্পানির মধ্যে ৯টির দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ৩২টির দর। একটির দর ছিল অপরিবর্তিত।
এই খাতের শেয়ারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ন্যাশনাল পলিমারের দর। আগের দিনের চেয়ে বেশি বেড়েছে ৯.৭০ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেড়েছে বিডিঅটোকারের ৯.৪৬ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ অ্যাপোলো ইস্পাতের বেড়েছে ৯.২৪ শতাংশ।
এ ছাড়া বেঙ্গল উইন্ডসরের দাম ৮.০১ শতাংশ, এস এস স্টিলের ৭.২৬ শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবের ৬.৪৭ শতাংশ, সুঋদের ৫.৩৮ শতাংশ, বিএসআরএম স্টিলের ৪.৬৯ শতাংশ, বিডি ল্যাপসের ৪.১৮ শতাংশ বেড়েছে।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৪৭৭ কোটি ১০ টাকা। আগের কর্মদিবসে বৃহস্পতিবার এই খাতে লেনদেন ছিল ৩৭৭.২০ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে ৪৫৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এই খাতেও লেনদেন বেড়েছে। বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল ৩৯৮.২০ কোটি টাকা।
এই খাতে ১৯টি কোম্পানি দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ৩৬টি। ৩টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে তিনটি ছিল এই খাতের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ বেড়েছে ভিএসএফ থ্রেডের দর। এই কোম্পানির দরই আজ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।
আগের কর্মদিবসে দর ছিল ২৭ টাকা আর আজ লেনদেন হয়েছে ২৯ টাকা ৭০ পয়সায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাওয়া আলহাজ্ব টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। নূরানী ডায়িং এর দর ৯.৮০ শতাংশ, তাল্লু স্পিনিং এর ৯.৭৫ শতাংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের ৯.৭৫ শতাংশ, তসরিফার ৯.৬২ শতাংশ, মিথুন নিটিং ৯.৫২ শতাংশ দর বেড়েছে।
এই ছয়টি কোম্পানির শেয়ারদর এর চেয়ে বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না।
একদিনে পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দাম বাড়ার সুযোগ থাকলেও ১০ পয়সা ড্রিপের কারণে কখনও কখনও শতকরা হিসেবে দাম বাড়তে পারে কিছুটা কম।
আগ্রহের নতুন মোড় থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২২টির, কমেছে আটটির।
আগের কর্মদিবসে এই খাতে লেনদেন ছিল ৩২৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯.৯৮ শতাংশ দাম বেড়েছে একমি ল্যাবরেটরিজের দর। সেন্ট্রাল ফার্মার বেড়েছে ৯.৭০ শতাংশ। কোম্পানি দুটির শেয়ার দর এর চেয়ে বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না।
এ ছাড়া এমবি ফার্মার ৮.৭৩ শতাংশ, গত কয়েক দিনে তুমুল আগ্রহ তৈরি করা ওরিয়ন ফার্মার দাম বেড়েছে ৮.৩৫ শতাংশ। অন্যগুলোর মধ্যে ইমাম বাটনের ৭.৯৭ শতাংশ, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৭.০৬ শতাংশ, কেয়া কসমেটিকসের ৬.৬৬ শতাংশ দাম বেড়েছে।
লেনদেনের চতুর্থ স্থানে উঠে আসা বিবিধ খাতে লেনদেন বেড়েছে ব্যাপকভাবে। এই খাতের ১৪টি কোম্পানির ২৩১ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছেন বিনিয়োগকারীরা। যাদের একটির দর কমেছে, বেড়েছে বাকিগুলোর।
এই লেনদেনের সিংহভাহেরই হয়েছে বেক্সিমকো লিমিডেটের। একক কোম্পানি হিসেবে ১৫২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে এই কোম্পানির।
সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে এই খাতের মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ আছে, যার দর বেড়েছে ৯.৮৬ শতাংশ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২০টির, কমেছে বাকিগুলোর। লেনদেন হয়েছে ২২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আগের কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ১৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
এই খাদে দীর্ঘদিন ধরে ঘুমিয়ে থাকা খুলনা পাওয়ার কোম্পানির শেয়ার দরে হঠাৎ বেশ আগ্রহ দেখা গেছে। শতকরা হিসেবে খুব বেশি না বাড়লেও শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা দর বৃদ্ধি পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে।
এই খাতের শেয়ারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শাহজিবাজার পাওয়ারের ৮.৪২ শতাংশ।
লভ্যাংশে চমকের পরও দর হারাল মিউচ্যুয়াল ফান্ড
এদিন তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে। লোকসানের কারণে গত বছর লভ্যাংশ দিতে না পারা ডিবিএইচ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও গ্রিনডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা করে লভ্যাংশ দেবে। ফান্ড দুটির দর ১০ টাকার নিচে। এই পরিমাণ বিনিয়োগ করে ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়।
ডিবিএইচের দাম বেড়েছে ১০ পয়সা, আর গ্রিনডেল্টার ২০ পয়সা।
তাও এই দুটির দর বেড়েছে। কমেছে বাকি সবগুলোর। এমনকি অন্যদিকে ইউনিটপ্রতি এক টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করা এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ড ইউনিটপ্রতি দর হারিয়েছে ৬০ পয়সা। ১২ টাকা ৭০ পয়সা থেকে দাম কমে হয়েছে ১২ টাকা ১০ পয়সা।
সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানির মধ্যে চারটিই ছিল এই খাতের। একের পর এক আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণার মধ্যেও এভাবে দর হারানো কিছুটা বিস্ময়ও তৈরি করেছে।
এর মধ্যে এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড ৫.২৬ শতাংশ, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৫.১৪ শতাংশ, এসএমইএল আইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৪.৭২ শতাংশ এবং এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড দর হারিয়েছে ৪.৬৮ শতাংশ।
এই খাতে লেনদেনও কমেছে। আজ হাতবদল হয়েছে ১৩২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা।
বিমার পতন থামার নাম নেই
গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি, এরপর এপ্রিলের শুরু থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর অবিশ্বাস্য উত্থান ঘটা বিমা খাতে যে পতন শুরু হয়েছে, তা আর থামার নাম নেই।
এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৪টির দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে ৪৭টির। লেনদেন হয়েছে ১৬৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার এই খাতে লেনদেন ছিল ১৭১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সেদিন বেড়েছিল ৩৩টির দর কমেছিল ১০টির।
তবে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতও এদিন বেশ চমক দেখিয়েছে। ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির। কমেছে বাকি চারটির। লেনদেন হয়েছে ১৩০ কোটি ৭ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে একটি পুকুরে মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর মরা মুরগির বাচ্চা ও পঁচা ডিম। পুকুরের মাছকে সস্তা খাবার দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এসব উপায়। এতে দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। দিনের পর দিন ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। স্বাস্থ্যবিভাগ বলছে, মানবদেহের স্বাস্থ্যের জন্য যা মারাত্মক হুমকি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার পশ্চিম দূর্গাপুর গ্রামের এমদাদুল হক তার পুকুরে বিভিন্ন জাতের মাছের চাষ করেছেন। সেই পুকুরটি পরিচালনা করেন তার ছেলে আবু সালেক। সেই পুকুরের মাছকে সাধারণ খাবারের বদলে খাওয়ানো হচ্ছে জীবন্ত, মরা মুরগির বাচ্চা ও নষ্ট-পঁচা ডিম। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব সংগ্রহ করে পুকুর পাড়ে নিয়ে এসে রাখা হয়। এরপর সেগুলো একটি ব্রেন্ডার মেশিনে সেদ্ধ করে পুকুরে মাছকে খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। এতে পুকুরের আশেপাশে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এই দৃশ্য যেন এখন নিত্যদিনের সঙ্গী এই এলাকার মানুষ।
তাদের অভিযোগ, এ বিষয়ে পুকুরের মালিককে বারবার বলেও কোন লাভ হয়নি। উল্টো ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয় তাদের। এদিকে পঁচা ডিম ও মুরগির বাচ্চার অভিযোগ পুকুরের কর্মচারিরা স্বীকার করলেও অস্বীকার করছেন পুকুর মালিক।
পশ্চিম দূর্গাপুর গ্রামের মোহন কুমার বলেন, হ্যাচারী থেকে নষ্ট ও পঁচা ডিম নিয়ে এসে মাছকে খাওয়ায়। এতে করে পুকুরের পানি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। গোসল করা যায়না। প্রচুর দুর্গন্ধ হয়। নিষেধ করলে উল্টো হুমকি দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, পঁচা ডিম ও মুরগির বাচ্চা নিয়ে এসে পুকুরের পাড়ে রাখা হয়। তখন দুর্গন্ধ ছড়ায়। এছাড়া এরপর যখন আগুনে জ্বাল দেওয়া হয় তখন প্রচুর দুর্গন্ধ ছড়ায়। বাড়িতে থাকায় মুশকিল হয়ে পড়ে। আমরা অনেক বার নিষেধ করেছি, কিন্তু আমাদের কথা শোনেনা।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা রিফাত ইসলাম বলেন, দিনের পর দিন আমরা এই দুর্গন্ধে ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এই পঁচা ডিম আমাদের এখানকার পরিবেশ দূষণ করছে। এর থেকে আমরা মুক্তি চাই। এজন্য কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
পুকুরের কর্মচারী বিশ্বনাথ চন্দ্র বলেন, আমরা জামালগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার হ্যাচারী থেকে পঁচা ডিম নিয়ে আসি। সেই ডিমের সাথে কিছু বাচ্চাও থাকে। তারপর সেগুলো ব্রেন্ডারে সেদ্ধ করে মাছকে খাওয়াই।
পুকুরের মালিক আবু সালেক বলেন, এই পুকুরটি আমি পরিচালনা করি। এখানে রুই, কাতলা, পাঙাসসহ বিভিন্ন মাছ চাষ করেছি। গ্রামবাসীরা যে মরা মুরগি বা পঁচা ডিমের অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
জয়পুরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আল মামুন বলেন, আমাদের পুষ্টির বিশাল একটা অংশ পূরণ করে মাছ। যদি মাছকে অস্বাস্থ্যকর কোন খাবার দেওয়া হয় তাহলে সেই মাছ খেলে মানবদেহে জীবাণু ও বিষাক্ত উপাদান প্রবেশের সম্ভাবনা থাকে। এটা মানবদেহের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এছাড়া দুর্গন্ধে মানুষের বিভিন্ন রোগের উৎপত্তি হতে পারে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, কোথাও পরিবেশ দূষণ সংস্ক্রান্ত অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জয়পুরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, মাছ চাষের ক্ষেত্রে কোন চাষী যদি সরকারি বিধি বিধান অনুসরণ না করে বা অপদ্রব্য ব্যবহার করে, সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদন্ড অথবা ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। কোন মাছ চাষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতির মতো বড় পরিবর্তন জনগণের মতামত নিয়ে সংসদের মাধ্যমে পাশ করতে হবে। সংসদ ছাড়া এই পরিবর্তন কেউ করতে পারবে না।
বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, ‘সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন পরিবর্তনের কথা কথা বলা হচ্ছে, তবে এটা আগামী সংসদ ছাড়া কেউ করতে পারবে না। আমরা যখন প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি থেকে সংসদীয় পদ্ধতিতে আসি, তখন সব দলগুলো ঐকমত্য হয়ে, সংসদে সেটা পাস করতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতির বিষয়ে কোন দলের ইচ্ছা থাকলে তাদের মতামতের উপর শ্রদ্ধা রেখেই বলছি জনগণের কাছ থেকে তারা যেন সেই ম্যান্ডেড নিয়ে সংসদে আসে। যে কোন বিষয়ে মৌলিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে জনগণের কাছে যেতে হবে। আগামী নির্বাচনে সেটা সংসদে নিয়ে, সংসদের মাধ্যমে পাশ করতে হবে। এই পর্যায়ে এটা কোন আলোচনার বিষয় হতে পারে না।’
সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি কোথায় কোথায় ঐকমত্য হয়েছে, ইতিমধ্যে সবকিছু বলা হয়েছে। অনেকগুলো তো বিএনপি প্রস্তাব, সংসদ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট, দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকবে না এসব বিএনপি'রই প্রস্তাব। সুতরাং ঐকমত্য হওয়া নয় কোথায়? তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা এটা বাকশাল করতে চাচ্ছি না। এটা বাকশাল না। সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না। যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য হবে, সেগুলো এখন ঐক্যমত্যের মাধ্যমে, এর বাইরে যেগুলো থাকবে প্রত্যেকটি দলকে জনগণের কাছে গিয়ে তাদের মতামতের মাধ্যমে করতে হবে।’
লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক সম্পর্কে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জুলাই আগস্ট এর আন্দোলন তো দেড় দুই মাস ছিল, তার আগে থেকে বছরের পর বছর যারা রাস্তায় ছিল শেখ হাসিনা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, তাদের সঙ্গে আমরা কথাবার্তা বলছি। কারণ এই ঐক্যটা আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা শুধু নির্বাচন বলে কোন কথা নয়, আমাদের ৩১ দফার উপরে যে ঐকমত্য সংস্কারের বিষয়ে যে ঐকমত্য, এগুলো আমরা কীভাবে আগামী দিনে বাস্তবায়ন করব নির্বাচনের পরে জনগণ যদি আমাদেরকে রায় দেয়, সবাই মিলে এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। ’
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনের কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
ফরিদপুরের সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের আছিরউদ্দিন মুন্সির ডাঙ্গী গ্রামে পরকীয়ার জের ধরে প্রবাসী স্বামী আলমাস খান কে (৪০) হত্যা করার অভিয়োগ উঠেছে খোদ স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম (৩৩) এর বিরুদ্ধে। গত শনিবার দিবাগত রাতে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ । ঘটনার পর থেকে আরেক আসামী পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখ (৫৫) রয়েছে আত্ম গোপনে ।এ নিয়ে নিহতের পিতা হাতেম খান বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে হত্যার সঙ্গে জড়ীত পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখকে আটকসহ তাদের ফাঁসির দাবিতে বুধবার (০২ জুলাই) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
এ সময় নিহতের পিতা হাতেম খান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রবাসীদল ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মির্জা প্রিন্স আলী সহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন ।
তারা বলেন, পুলিশ ঘটনার সাথে জড়ীত থাকার সন্দেহে স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম কেআটক করলেও কথিত পরকীয়া প্রেমিক আলী শেখকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। অতি দ্রত আলী শেখকে গ্রেফতার করে তাদের ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি জানান মানববন্ধন থেকে।
পরে এলাকার কয়েকশত নারীপুরুষ বিচারের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ আসাদুজ্জামান তালুকদার জানিয়েছেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই মামলার প্রধান আসামি হোসনেয়ারা বেগমকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও অন্য আসামি আলী শেখকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। হোসনেয়ারা বেগমের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে । এই ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার তারানগর ইউনিয়নের কাঠালতলী গ্রামে একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (০২ জুলাই) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, আব্দুল আজিজের মালিকানাধীন ডুপ্লেক্স বাড়িতে ছাদের মাধ্যমে ৬-৮ জনের একটি ডাকাতদল প্রবেশ করে। তারা ঘরের সদস্যদের হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। এসময় আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তারা বাড়ির চাবি আদায় করে এবং ঘরের ভেতরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ লুট করে নেয়।
ডাকাত দল প্রায় ৬.৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫ টাকা নগদ অর্থ এবং একটি সনি ব্র্যান্ডের ক্যামেরা নিয়ে যায়। তবে সৌভাগ্যবশত এই ঘটনায় বাড়ির কোনো সদস্য শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
ভুক্তভোগী ও বাড়ির মালিক আব্দুল আজিজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাত আনুমানিক ৩টা ২০ মিনিটের দিকে ছাদের দিক থেকে কয়েকজন লোক ঘরে ঢুকে পড়ে। মুহূর্তেই আমাদের সবাইকে হাত-পা বেঁধে ফেল পরে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঘরের চাবি নিয়ে যায়। তারা ঘর তছনছ করে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ নিয়ে যায়। আল্লাহর রহমতে তারা আমাদের কোনো শারীরিক ক্ষতি করেনি। তবে পরিবারের সবাই এখন আতঙ্কে আছে।
ঘটনার খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কেরাণীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু, সিআইডি এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। তারা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছেন।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু জানান, অপরাধীদের শনাক্ত করতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অনুসন্ধান চলছে। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্রকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
ময়মনসিংহের পাগলায় ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকাডুবির ২২ ঘন্টা পর নিখোঁজ দুই শিশু মরদেহ উদ্ধার করেছে নিহতের স্বজনেরা। বুধবার (০২ জুলাই) পাগলা থানার টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকার ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুরা হলো, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী এলাকার বাসিন্দা হাবিব মিয়ার ছেলে আবির (৬) এবং মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়েদ (৬)। তারা দুজনই বিরুই নদীর পাড় দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (০১ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯ টার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরআলগী এলাকা থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে মাদ্রাসায় যেতে ছোট একটি নৌকায় উঠেন ৯ শিক্ষার্থী। ময়মনসিংহের পাগলা থানার দত্তের বাজার সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছানোর পূর্বেই ডুবে যায় নৌকাটি। এর মধ্যে ৬ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ডুবে যায় তিন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে শাপলা আক্তারের (১৫) মরদেহটি ঘটনাস্থলের খানিকটা দুর থেকে উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভোরে নিহতের স্বজনরা নৌকা নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নিখোঁজ আবির ও জুবায়েদকে খোঁজতে বের হয়। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে টাংগাব ইউনিয়নের বাঁশিয়া এলাকায় ব্রক্ষ্মপুত্র নদে দুজনের মরদেহ ভাসতে দেখে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূর থেকে তাদের মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয় বলেও জানান এই জনপ্রতিনিধি।
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার (০২ জুলাই) দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার ঝাঁঝাডাঙ্গা সীমান্তে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম বাবু (৩২) ঝাঁঝাডাঙ্গা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। ওই ঘটনায় পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে বিজিবি।
নিহতের পিতা নুর ইসলাম জানান, দুপুরে আমার ছেলেসহ ৪-৫ জন গরুর ঘাস কাটার জন্য সীমান্তের গালার মাঠে যায়। এ সময় অসাবধনতাবশত সীমান্তের ৭৯ নম্বর মেন পিলার পার হয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে সেখানকার ৩২ বিএসএফ হালদারপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা ২ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় বাবু।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল নাজমুল হাসান গুলিবর্ষণের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, কয়েকজন স্বর্ণ চোরাকারবারির ওপর বিএসএফ গুলিবর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (০১ জুলাই) বিকালে শ্রীঘর বাজারের নজরুল ইসলামের দোকানের সন্মুখ থেকে ১৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। এ সময় আক্কাছ মিয়া (৩২) ও ছিদ্দিকুর রহমান (২১) নামের দুই মাদক ব্যবসায়িকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়- সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ শ্রীঘর বাজারের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন কালে সন্দেহ জনক একটি সিএনজিকে থামিয়ে তল্লাশি করে। আক্কাছ মিয়া কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাঙ্গরা বাজার এলাকার মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে। ছিদ্দিকুর রহমান নবীনগর উপজেলার বড়াইল গ্রামের আতিকুর রহমানের ছেলে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর ইসলাম জানান- এ ঘটনায় নবীনগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মন্তব্য