ব্যাংকে থাকা অলস টাকা তুলে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে ব্যাংকগুলো লাভবান হলেও বিষয়টি নিয়ে ভুল ব্যাখ্যায় পুঁজিবাজারে এই খাত নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। ব্যাংকিং খাতে কমেছে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার দর।
তবে ব্যাংক, বিমা, মিউচ্যুয়াল ফান্ডে পতনের দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ।
দিন শেষে লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩৯ কোটি ৪৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
এর আগে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর ২ হাজার ৯৪৬ কোটি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা।
এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আর তিনটি কর্মদিবসে।
২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর লেনদেন ছিল ৩ হাজার ১৭৯ কোটি ৬৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। পরের কর্মদিবসে ৫ ডিসেম্বর মহাধস শুরুর দিন লেনদেন ছিল ৩ হাজার ২৪৯ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ লেনদেন।
২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৯০ লাখ ৮২ হাজার টাকা লেনদেন বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস সোমবার লেনদেনের শুরুতে পতন ছিল বেশি আর এ কারণে সূচকও এক পর্যায়ে পগে যায় ৭৩ পয়েন্ট। তবে পরে দাম কমার হার কমে আসা আর প্রধান প্রধান অন্য খাতগুলোর বেশিরভাগে দর বৃদ্ধির কারণে সূচক বেড়ে যায়।
দিন শেষে আগের দিনের চেয়ে সূচকে যোগ হয়েছে ৩২ পয়েন্ট। সূচকের অবস্থান এখন ২০১১ সালের ২৬ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ।
সেদিন ডিএসই সূচক ছিল ৬ হাজার ৬৪২ পয়েন্ট। এখন অবশ্য ডিএসইর প্রধান সূচকের না, ডিএসইএক্স সূচক আর মান অনুযায়ী আগের সূচক এখনকার চেয়ে কিছুটা বেশি থাকার কথা।
তবে ব্যাংক খাতের চেয়ে বেশি পতন হয়েছে দর সংশোধনে থাকা বিমা খাতে। পক্ষান্তরে দারুণ একটি দিন গেছে লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং তথ্য প্রযুক্তি খাতে। বেশিরভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে বস্ত্র খাতেও।
দুর্দান্ত লভ্যাংশ দিয়ে আসা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে দর পতনও অনেকটা বিস্ময়করই বলা যায়। অথচ এই দিন তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণার সংবাদ আসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ডে। এই তিনটি ফান্ডই গত বছর ব্যাপক লোকসান দেয়ার কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি, কিন্তু এবার বেশ ভালো মুনাফা করে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দিয়েছে।
বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীরা অবশ্য এই উদ্বেগটিকে কাজে লাগিয়েছেন, যার প্রমাণ লেনদেনে। আগের কর্মদিবস বৃগস্পতিবার দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন দেখেছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। সেটিও ছাড়িয়ে লেনদেন আজ ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ অবস্থান দেখা গেছে।
আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সেখান থেকে বেড়েছে আরও ৪২৩ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে দাম বেড়েছে ১৮১টি কোম্পানির, কমেছে ১৭৩টির, দাম বেড়েছে ২০টির।
ভিত্তিহীন উদ্বেগ
এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত তারল্য আছে, যার মধ্যে ৬২ হাজার কোটি টাকা একেবারেই অলস। এই টাকা বসিয়ে রেখে এক পয়সাও আয় হচ্ছে না ব্যাংকগুলোর।
এই অতিরিক্ত তারল্যের কারণে ব্যাংকগুলো মেয়াদি আমানতের সুদহার কমিয়ে দেড় থেকে দুই শতাংশে নামিয়ে এনেছে। আর এ কারণে ব্যাংকে টাকা রাখলে মূল্য আসলে কমে যায়। কারণ, মূল্যস্ফীতির হার এখন মসাড়ে ৫ শতাংশের বেশি।
অর্থাৎ এক বছর আগে ১০০ টাকার যে মূল্য, চলতি বছর সেটা ৯৪ টাকা ৫০ পয়সার আশেপাশে। কিন্তু সুদ হিসেবে পাওয়া গেছে দেড় থেকে দুই টাকা। ফলে টাকার প্রকৃত মান কমে গেছে।
এই অবস্থায় বাজারে টাকার প্রবাহ কমানো ব্যাংকগুলো যেন আবার আমানত সংগ্রহে আগ্রহী হয়, সে জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুটি ব্যবস্থা করেছে।
অলস টাকা ফেলে না রেখে ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ বিনিয়োগের সুবিধা রেখে তারা মোট ৯টি নিলামের আয়োজন করেছে। ব্যাংকগুলো সেখানে বিনিয়োগ করবে এবং এর বিপরীতে সুদ পাবে।
কিন্তু গণমাধ্যমে বিষয়টি যেভাবে এসেছে, সেটি বিনিয়োগকারীদের অনেকের মধ্যেই অস্থিরতা ছড়িয়েছে। ব্যাংক থেকে অলস টাকা তুলে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক- এমন খবরের ব্যাখ্যায় বহুজন ভাবছে, টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমনিতে নিয়ে নেবে। ফলে ব্যাংকের আয় ও সম্পদ কমবে।
তবে বিষয়টি উল্টো বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন মিউচ্যুয়ালা ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ বিনিয়োগ করে ব্যাংকগুলো আয় করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলামও বলেছেন, এটি ব্যাংকের জন্য একটি সুবিধা নিয়ে এসেছে। যে অর্থ থেকে তাদের আয় ছিল শূন্য, সেখান থেকে তারা কিছুটা হলেও আয় করতে পারবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বরং ‘বাংলাদেশ ব্যাংক বিলে’ সুদহার কম রাখার ওপর তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সুদহার বেশি হলে ব্যাংকগুলো অন্য জায়গায় বিনিয়োগ না করে এই খাতে বেশি টাকা ঢালবে।
দ্বিতীয় যে পদক্ষেপটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়েছে, সেটি হলো আমানতের সুদহার মূল্যস্ফীতির বেশি রাখা। রোববার এক সার্কুলারে তারা জানিয়ে দিয়েছে, ব্যাংকগুলো ব্যক্তিশ্রেণির আমানতকারীদেরকে যে সুদ দিয়ে থাকে, তা কোনোভাবেই মূল্যস্ফীতির চেয়ে কম হতে পারবে না।
এতে ব্যাংকগুলোর আমানতের খরচ কিছুটা বাড়বে। কিন্তু ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশ থাকলেও এখন তা ৬ থেকে ৭ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে। ফলে আমানতের জন্য যে বাড়তি খরচ করতে হবে, বিতরণ করা ঋণ থেকে বাড়তি আয় করে তা পুষিয়ে নেয়ার ক্ষমতা তাদের আছে।
ব্যাংক খাতে ৪টি কোম্পানির দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৯টির দর। অপরিবর্তিত ছিল বাকি আটটি।
শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনায় থাকা আইএফআইসি ব্যাংক। আগের দিনের চেয়ে ৪.১৪ শতাংশ বেড়ে দর হারিয়েছে ১৫ টাকা ১০ পয়সা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাড়া আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের দর বেড়েছে ৩ শতাংশ।
অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইবিএলের ২০ পয়সা আর ইউসিবির বেড়েছে ১০ পয়সা।
লেনদেন হয়েছে ১৯৪ কোটি ৩ লাখ টাকা, আগের দিন যা ছিল ১১৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
ব্যাংকের মতো পতন হয়েছে আর্থিক খাতেও। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে বেড়েছে ২টির, কমেছে ১৭টির। লেনদেন হয়েছে ১০৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
আগের দিন লেনদেন ছিল ১০২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
প্রকৌশল, ওষুধ, জ্বালানি, বস্ত্র, বিবিধের ‘দখলে’ বাজার
৩০ জুন অর্থবছর শেষ হওয়ায় লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা এই পাঁচটি খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
মোট লেনদেনের ৬৮.৪৬ শতাংশই হয়েছে এই পাঁচ খাতে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতে। এই খাতের ৩২টি কোম্পানির মধ্যে ৯টির দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ৩২টির দর। একটির দর ছিল অপরিবর্তিত।
এই খাতের শেয়ারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ন্যাশনাল পলিমারের দর। আগের দিনের চেয়ে বেশি বেড়েছে ৯.৭০ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেড়েছে বিডিঅটোকারের ৯.৪৬ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ অ্যাপোলো ইস্পাতের বেড়েছে ৯.২৪ শতাংশ।
এ ছাড়া বেঙ্গল উইন্ডসরের দাম ৮.০১ শতাংশ, এস এস স্টিলের ৭.২৬ শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবের ৬.৪৭ শতাংশ, সুঋদের ৫.৩৮ শতাংশ, বিএসআরএম স্টিলের ৪.৬৯ শতাংশ, বিডি ল্যাপসের ৪.১৮ শতাংশ বেড়েছে।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৪৭৭ কোটি ১০ টাকা। আগের কর্মদিবসে বৃহস্পতিবার এই খাতে লেনদেন ছিল ৩৭৭.২০ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বস্ত্র খাতে ৪৫৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এই খাতেও লেনদেন বেড়েছে। বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল ৩৯৮.২০ কোটি টাকা।
এই খাতে ১৯টি কোম্পানি দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ৩৬টি। ৩টির দর ছিল অপরিবর্তিত।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে তিনটি ছিল এই খাতের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ বেড়েছে ভিএসএফ থ্রেডের দর। এই কোম্পানির দরই আজ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।
আগের কর্মদিবসে দর ছিল ২৭ টাকা আর আজ লেনদেন হয়েছে ২৯ টাকা ৭০ পয়সায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাওয়া আলহাজ্ব টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। নূরানী ডায়িং এর দর ৯.৮০ শতাংশ, তাল্লু স্পিনিং এর ৯.৭৫ শতাংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের ৯.৭৫ শতাংশ, তসরিফার ৯.৬২ শতাংশ, মিথুন নিটিং ৯.৫২ শতাংশ দর বেড়েছে।
এই ছয়টি কোম্পানির শেয়ারদর এর চেয়ে বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না।
একদিনে পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দাম বাড়ার সুযোগ থাকলেও ১০ পয়সা ড্রিপের কারণে কখনও কখনও শতকরা হিসেবে দাম বাড়তে পারে কিছুটা কম।
আগ্রহের নতুন মোড় থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হয়েছে ৩৯৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২২টির, কমেছে আটটির।
আগের কর্মদিবসে এই খাতে লেনদেন ছিল ৩২৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯.৯৮ শতাংশ দাম বেড়েছে একমি ল্যাবরেটরিজের দর। সেন্ট্রাল ফার্মার বেড়েছে ৯.৭০ শতাংশ। কোম্পানি দুটির শেয়ার দর এর চেয়ে বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না।
এ ছাড়া এমবি ফার্মার ৮.৭৩ শতাংশ, গত কয়েক দিনে তুমুল আগ্রহ তৈরি করা ওরিয়ন ফার্মার দাম বেড়েছে ৮.৩৫ শতাংশ। অন্যগুলোর মধ্যে ইমাম বাটনের ৭.৯৭ শতাংশ, ওরিয়ন ইনফিউশনের ৭.০৬ শতাংশ, কেয়া কসমেটিকসের ৬.৬৬ শতাংশ দাম বেড়েছে।
লেনদেনের চতুর্থ স্থানে উঠে আসা বিবিধ খাতে লেনদেন বেড়েছে ব্যাপকভাবে। এই খাতের ১৪টি কোম্পানির ২৩১ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছেন বিনিয়োগকারীরা। যাদের একটির দর কমেছে, বেড়েছে বাকিগুলোর।
এই লেনদেনের সিংহভাহেরই হয়েছে বেক্সিমকো লিমিডেটের। একক কোম্পানি হিসেবে ১৫২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা হাতবদল হয়েছে এই কোম্পানির।
সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে এই খাতের মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ আছে, যার দর বেড়েছে ৯.৮৬ শতাংশ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২০টির, কমেছে বাকিগুলোর। লেনদেন হয়েছে ২২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আগের কর্মদিবসে লেনদেন ছিল ১৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
এই খাদে দীর্ঘদিন ধরে ঘুমিয়ে থাকা খুলনা পাওয়ার কোম্পানির শেয়ার দরে হঠাৎ বেশ আগ্রহ দেখা গেছে। শতকরা হিসেবে খুব বেশি না বাড়লেও শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা দর বৃদ্ধি পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে।
এই খাতের শেয়ারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে শাহজিবাজার পাওয়ারের ৮.৪২ শতাংশ।
লভ্যাংশে চমকের পরও দর হারাল মিউচ্যুয়াল ফান্ড
এদিন তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে। লোকসানের কারণে গত বছর লভ্যাংশ দিতে না পারা ডিবিএইচ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও গ্রিনডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা করে লভ্যাংশ দেবে। ফান্ড দুটির দর ১০ টাকার নিচে। এই পরিমাণ বিনিয়োগ করে ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়।
ডিবিএইচের দাম বেড়েছে ১০ পয়সা, আর গ্রিনডেল্টার ২০ পয়সা।
তাও এই দুটির দর বেড়েছে। কমেছে বাকি সবগুলোর। এমনকি অন্যদিকে ইউনিটপ্রতি এক টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করা এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ড ইউনিটপ্রতি দর হারিয়েছে ৬০ পয়সা। ১২ টাকা ৭০ পয়সা থেকে দাম কমে হয়েছে ১২ টাকা ১০ পয়সা।
সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানির মধ্যে চারটিই ছিল এই খাতের। একের পর এক আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণার মধ্যেও এভাবে দর হারানো কিছুটা বিস্ময়ও তৈরি করেছে।
এর মধ্যে এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড ৫.২৬ শতাংশ, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৫.১৪ শতাংশ, এসএমইএল আইবিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৪.৭২ শতাংশ এবং এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড দর হারিয়েছে ৪.৬৮ শতাংশ।
এই খাতে লেনদেনও কমেছে। আজ হাতবদল হয়েছে ১৩২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ১৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা।
বিমার পতন থামার নাম নেই
গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি, এরপর এপ্রিলের শুরু থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর অবিশ্বাস্য উত্থান ঘটা বিমা খাতে যে পতন শুরু হয়েছে, তা আর থামার নাম নেই।
এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৪টির দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে ৪৭টির। লেনদেন হয়েছে ১৬৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার এই খাতে লেনদেন ছিল ১৭১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। সেদিন বেড়েছিল ৩৩টির দর কমেছিল ১০টির।
তবে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতও এদিন বেশ চমক দেখিয়েছে। ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির। কমেছে বাকি চারটির। লেনদেন হয়েছে ১৩০ কোটি ৭ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের (এসপি) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান ১ নম্বর সেকশনে বাংলাদেশ পুলিশের বার্ষিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ ২০২৪-এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আইজিপি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসী যেন আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্ত জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের সতর্ক করা হয়েছে।
আইজিপি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সীমান্তবর্তী জেলা ৩০টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে তিনটি। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপারদের আগেই সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব যেন এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) বাংলাদেশ পুলিশ বার্ষিক শ্যুটিং প্রতিযোগিতা এবং আইজিপি কাপ-২০২৪ এর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। রানার্স আপ হয়েছে স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)।
প্রতিযোগিতায় পয়েন্ট ১৭৭ এয়ার রাইফেল ওপেন সাইট ১০ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) মো. মনিরুল ইসলাম ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন ফেনী জেলার এএসআই (নিরস্ত্র) এবিএসএম হাসান।
একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন এসবির নারী কনস্টেবল তানিয়া আক্তার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল নীলা খাতুন ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল নীলা আক্তার।
পয়েন্ট ২২ বোর রাইফেল ওপেন সাইট ৫০ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসিদ ফরহাদ, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির কনস্টেবল শাকিল আহমেদ ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার। একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) ইসমত আরা, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির নারী কনস্টেবল আমেনা আক্তার ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) নীলিমা আক্তার।
পয়েন্ট ২২ বোর পিস্তল/রিভলভার ২৫ মিটার (পুরুষ) ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন সারদা, রাজশাহীর পুলিশ সুপার শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম, দ্বিতীয় হয়েছেন র্যাবের সার্জেন্ট জুবায়ের ও তৃতীয় হয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহেদ আহমেদ। একই ইভেন্টে নারীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন এসবির নারী কনস্টেবল রুনা আক্তার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন একই ইউনিটের নারী কনস্টেবল নীলা খাতুন এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন এসবির এএসআই (নিরস্ত্র) ইসমত আরা।
প্রতিযোগিতায় ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট (পুরুষ) হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন এসবিতে সংযুক্ত নায়েক তানজীব হোসেন খন্দকার এবং ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট (নারী) হওয়ার গৌরব অর্জন করেন এসবির নারী কনস্টেবল রুনা আক্তার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পুলিশ ক্লাবের সভাপতি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত আইজিপি ও বাংলাদেশ পুলিশ শুটিং ক্লাবের সভাপতি মো. মোস্তফা কামালসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময়ে বিভিন্ন খাতে দেশটির বিনিয়োগ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৭ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহনশীলতা ও সহাবস্থানবিষয়ক মন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল নাহিয়ানের নেতৃত্বাধীন উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল।
এ সময়ে নাহিয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. ইউনূস। নাহিয়ান বলেন, ‘আমাদের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে আমি এখানে এসেছি বাংলাদেশের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে এবং আমাদের বন্ধুত্বকে আরও জোরদার করতে।’
‘সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দুই সরকার যে বর্ধিত সংলাপের আয়োজন করেছে, তার আমরা প্রশংসা করি। আমরা বিনিয়োগ থেকে শুরু করে ভিসা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিশ্চিত করতে চাই,’ বলেন তিনি।
এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সম্পৃক্ততা এবং সমর্থনকে স্বাগত জানাই, আমরা বিভিন্ন শিল্পে বিনিয়োগকেও স্বাগত জানাই।’
ভিসা ব্যবস্থা শিথিল করার কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এখনও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া বাকি আছে, আশা করি, আমরা সম্পৃক্ত থাকব এবং এই সমস্যাগুলি সমাধান করব।’
সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্প্রতি প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০টি ভিজিট ভিসা দেওয়া শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের জন্য বাল্ক ভিসাও ত্বরান্বিত করা হয়েছে। এছাড়াও, দক্ষ কর্মসংস্থান ভিসার অনলাইন ব্যবস্থা পুনরায় সক্রিয় করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের র্যাব-৭ এর বহদ্দারহাট ক্যাম্পের অফিস কক্ষে র্যাব কর্মকর্তা নিজের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। বুধবার(৭ মে) সকালে এই ঘটনা ঘটেছে।
নিহত পলাশ সাহা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তিনি র্যাব-৭ ব্যাটালিয়নের অধীনে বহদ্দারহাট ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।
র্যাব সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এএসপি পলাশ যখন অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন ঘটনাটি ঘটে। তিনি তার কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়ে তার অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন।
র্যাব-৭ এআরএমের সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) মোজাফফর হোসাইন জানান, কক্ষে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরে র্যাব সদস্যরা গুলির শব্দ শুনতে পান এবং তাকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। তার সার্ভিস পিস্তলটি মেঝেতে পাওয়া যায় এবং টেবিলে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়।
তাকে তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ময়নাতদন্তের পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা এবং পারিবারিক আবহে দীর্ঘ চার মাস অবস্থান শেষে মানসিক প্রশান্তি নিয়ে দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে আসা সাধারণ মানুষ এবং দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
গতকাল সকাল ১০ টা ৪৩ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে দুপুরে গুলশানে তাঁর নিজ বাসভবন ফিরোজায় ফেরার পথে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে সড়কের দুই পাশে জড়ো হন লাখো মানুষ।
দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকায় প্রবেশের প্রায় প্রতিটি মোড়ে দেখা যায় হাতে ব্যানার ও ফুল নিয়ে দলীয় কর্মীদের ভিড়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বিবৃতিতে বিএনপির চেয়ারপার্সনকে স্বাগত জানাতে আসা দলীয় নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যারা খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তাদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারেক রহমান।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্য, পুলিশ, র্যাবসহ অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটির সদস্যরা যেভাবে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেছেন বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।
সংস্কারের নামে সময় নষ্ট না করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবেদীন ফারুক।
বুধবার (৭ মে) রাজধানীতে এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। বাংলাদেশ জাতীয় নাগরিক পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ এখনই নির্বাচন চায়। নির্বাচন আয়োজনে আর দেরি করা উচিত নয়, কারণ এখনই এটি প্রয়োজন।’
তিনি সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ এবং জনগণের উপর অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারকারী আওয়ামী মাফিয়া শাসকদের গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের আগে তাদের বিচারের দাবিও জানান।
সংসদে বিরোধী দলের সাবেক প্রধান হুইপ ফারুক বলেন, সরকারের সংস্কার উদ্যোগ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এমন কোনো সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ না করার আহ্বান জানান, যা ১/১১-এর মতো ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচন বিলম্বিত করতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূসকে একজন সম্মানিত ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করে বিএনপির নেতা। তিনি তাকে এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, ‘দয়া করে এর ব্যবস্থা করুন।’
তিনি বলেন, দেশের জনগণ একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সংসদ গঠন করবে।
ফারুক বলেন, জনগণ যদি তার দলকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনে তবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রস্তাব পরবর্তী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। ‘কোথাও, একটি দাবার খেলা চলছে এবং সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান থেকে আপনাকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনাকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং আপনার উপদেষ্টাদেরও এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, সংস্কার এবং সংস্কার কমিশনের জন্যই সময় ব্যয় করা হচ্ছে। ‘নির্বাচনের আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত করা হচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ বাংলাদেশপন্থী শক্তিগুলোকে ক্ষমতায় আনবে, যারা দেশের সমস্যা সমাধান করবে।’
মিয়ানমারের রাখাইনের জন্য একটি মানবিক করিডোর দেওয়ার সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টাকে তার অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা ও সরকার গঠনকারী দলের উপর বিষয়টি ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক রাজধানীর দুই থানায় হওয়া পৃথক তিনটি মামলায় গান বাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপসসহ চারজনকে ঢাকার আদালতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন— নিয়ন ফামাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম, দৈনিক সরেজমিন বার্তার সাংবাদিক সিকদার লিটন ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী আশা আক্তার।
বুধবার (৭ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা রাজধানীর তিন হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। পরে আদালত সেটি মঞ্জুর করেন।
তাপসের মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই গুলশানের শাহজাদপুরের কনফিডেন্স টাওয়ারের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে জব্বার আলী হাওলাদার নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০৯ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন।
আব্দুস সালামের মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমণ্ডির সাইন্সল্যাব থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন মো. রিয়াজ (২৩)। দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১৭ আগস্ট বিকালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের মা মোসা. শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এছাড়া আশা ও সিকদার লিটনের মামলার সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ভাটারা থানাধীন যমুনা ফিউচার পার্কের পাশে গত ২০ জুলাই আন্দোলনে অংশ নেন মো. জাহাঙ্গীর। এদিন দুপুর ১২টায় আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর ২১ জুলাই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এ বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভাটারা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বুধবার (৭ এপ্রিল) এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুই দেশকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উদ্ভূত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’
এতে বলা হয়, আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ আশাবাদী যে এই উত্তেজনা কূটনৈতিকভাবে নিরসন হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ। তিনি বলেছেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটি একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
এমন বাস্তবতায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে ভারতের হামলার মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা এই পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও দেশ।
মন্তব্য