× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

পুঁজিবাজার
DBHs income increased by 63 percent
google_news print-icon

৮৩ শতাংশ আয় বাড়ল ডিবিএইচের

৮৩-শতাংশ-আয়-বাড়ল-ডিবিএইচের
করোনার মধ্যে ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর আয় বৃদ্ধি নিয়ে বিস্ময়ের মধ্যে ভালো করছে আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোও। অবশ্য আর্থিক খাতের বেশ কিছু কোম্পানি খেলাপি ঋণে জর্জরিত হয়ে ডুবে গেছে। তবে যেগুলো ভালো কোম্পানি এবং এখন পর্যন্ত যেগুলো আয় ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করেছে, তার সবগুলোরই আয় বেড়েছে।

ব্যাংকের পাশাপাশি ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোরও মহামারির বছরে ভালো করার চিত্র উঠে এলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং লিমিটেড বা ডিবিএইচের আর্থিক প্রতিবেদনে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৮০ পয়সা আয় করেছে। করোনার প্রথম বছরে ২০২০ সালে এই আয় ছিল ১ টাকা ৫৩ পয়সা।

বুধবার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে অনুমোদন হওয়া আর্থিক প্রতিবেদনে এর উল্লেখ করা আছে।

এই আয়ের মধ্যে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৫ পয়সা। গত বছর করোনা হানা দেয়ার পর এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় ছিল শেয়ার প্রতি ৭ পয়সা।

৩০ জুন কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৩৭ টাকা ৭৮ পয়সা।

করোনার দ্বিতীয় বছরে ব্যাংকের মতোই মুনাফায় থাকা বেশিরভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানই আয় বাড়াতে পেরেছে। অবশ্য আর্থিক খাতের বেশ কিছু কোম্পানি খেলাপি ঋণে জর্জরিত হয়ে ডুবে গেছে।

তবে ডিবিএইচ এই খাতের শক্তিশালী কোম্পানিগুলোর একটি। এর খেলাপি ঋণজনিত সমস্যা বা ঋণ কেলেঙ্কারির কথা গণমাধ্যমে আসেনি খুব একটা।

এর আগে আর্থিক খাতের ভালো কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলো এখন পর্যন্ত আয় ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করেছে, তার সবগুলোরই আয় বেড়েছে।

বিডি ফিন্যান্স চলতি বছর অর্ধবার্ষিকে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ১৭ পয়সা আয় করেছে, গত বছর েএকই সময়ে যা ছিল ৪৪ পয়সা। এই কোম্পানিটির আয় বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

ন্যাশনাল হাউজিং ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এবার অর্ধবার্ষিকে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২৮ পয়সা আয় করেছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ৮০ পয়সা।

আইডিএলসি ফিন্যান্স অর্ধবার্ষিকীতে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৬১ পয়সা মুনাফা করেছে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৬৮ পয়সা।

এই দুটি কোম্পানিটির আয় বেড়েছে দেড় গুণেরও বেশি।

আইপিডিসি ফিন্যান্স চলতি বছর প্রথম ৬ মাসে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ১১ পয়সা আয় করেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ৮৫ পয়সা। এই কোম্পানির আয় বেড়েছে ৩৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন:
আয় বাড়ল আইপিডিসিরও
বিদেশ যেতে অনুমতি লাগবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরও
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধে আরও ছাড়
আর্থিক প্রতিষ্ঠানও বন্ধ রোববার
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

পুঁজিবাজার
The stealing slander of the school

ফটিকছড়িতে চুরির অপবাদে স্কুল শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা

ফটিকছড়িতে চুরির অপবাদে স্কুল শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা

ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নে চুরির আপবাদে মাহিন (১৪) নামে সপ্তম শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুল শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫ টার দিকে ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের চেঙ্গুয়া ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

মানিক ও রাহাত নামে দুই কিশোরকে বেড়ধক পেটানো হলে, তারা গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও মাহিন ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায়।

নিহত মাহিন স্থানীয় কাঞ্চন নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র এবং একই এলাকার সাগর আলী তালুকদার বাড়ির জনৈক লোকমানের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ভোরে মাহিনসহ তিন কিশোর চেঙ্গার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছিল। সেসময় কয়েকজন কিশোর দৌড়ে এসে তাদের ধাওয়া করে। প্রাণ ভয়ে তিনজন পাশ্ববর্তী একটি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা ছাদে উঠে জোরপূর্বক তাদের নিচে নামিয়ে এনে ব্রিজের উপর বেধড়ক মারধর করে সটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে মাহিনের মৃত্যু ঘটে। গুরুতর আহত দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আহতদের পরিবারের অভিযোগ, মানিক ও রাহাত আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। চোর সন্দেহে তাদের উপর এমন নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করছি। ফটিকছড়ি থানার ওসি নুর আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে সন্দেহজনকভাবে নোমান ও আজাদ নামে দুইজনকে আটক করেছে। কেন, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য

নবীনগরে গাঁজা ও ইয়াবাসহ ৬ জন গ্রেপ্তার

নবীনগরে গাঁজা ও ইয়াবাসহ ৬ জন গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পুলিশের পৃথক দুটি মাদকবিরোধী অভিযানে বিপুল পরিমাণ গাঁজা ও ইয়াবাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার সলিমগঞ্জ ও মিরপুর এলাকায় এ অভিযান দুটি পরিচালিত হয়।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীনগর থানার এএসআই শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল সলিমগঞ্জ বাজার সংলগ্ন মেঘনা নদী-সংলগ্ন খাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে এক পুরুষ ও চার নারীকে আটক করে। সেসময় তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ১২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। আটককৃতরা হলেন মো. আরিফুল ইসলাম (৪২) ও তার স্ত্রী বিলকিস বেগম (৩৭), বাড়ি: গৌরীপুর, ময়মনসিংহ নাজমা (২৬), বাড়ি: পঞ্চগড় মাইমুনা (২২), বাড়ি: আশুলিয়া, ঢাকাআমেনা (২৭), বাড়ি: বগুড়া । একই রাতে নবীনগর থানার এসআই শাহ আলমের নেতৃত্বে আরেকটি দল মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার মোল্লা (৪৮) কে আটক করে। তার দেহ তল্লাশি করে ২৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং মাদক বিক্রির নগদ ৩,৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে নবীনগর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘দুটি পৃথক অভিযানে মোট ১২ কেজি গাঁজা, ২৬০ পিস ইয়াবা ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে।’

গ্রেপ্তারকৃতদের গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Farmers are leaning in Napias grass in Rupganj

রূপগঞ্জে নেপিয়ার ঘাস চাষে ঝুকছে কৃষক

রূপগঞ্জে নেপিয়ার ঘাস চাষে ঝুকছে কৃষক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। আবাসন চাহিদা পূরনের জন্য কৃষি জমিতে বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানীর বালি ভরাটের কারনে এ সংকট দেখা দিয়েছে। গৃহপালিত পশু পালনে কৃষকদের এখন ভরসা নেপিয়ার জাতের ঘাস। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে গোখাদ্যর সংকটের বিষয়টি কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। গোখাদ্য সংকটে অনেকই কম দামে পশুগুলোকে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

উপজেলার কাঞ্চন, ভোলাব, দাউদপুর, মুড়াপাড়া, মাঝিনা নদীর পাড়, দেইলপাড়া, নদ্দাসহ অর্ধ শতাধিক গ্রামে এখন নেপিয়ার ঘাস চাষ হচ্ছে। বেসরকারি দুগ্ধ খামারিরা তাদের বাড়িতে খরচ কমানোর জন্য নেপিয়ার ঘাস চাষের দিকে ঝুকছে। আঁশযুক্ত, পুষ্টিকর, সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে চাহিদা ব্যাপক। একবার কেটে নিলে ঘাস মরে যায়না বরং কাটা অংশ থেকে পুনরায় কুঁড়ি জন্মে আবার তা পূর্নাঙ্গ ঘাসে পরিণত হয়।

সরজমিন ঘুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে গোখাদ্য সংকট এবং নেপিয়ার জাতের ঘাসে কৃষকের ভরসার বিষয়টি ফুটে উঠেছে।

বারৈ গ্রামের কদম আলী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, অন্যের জমি চাষ করি। বাড়তি আয়ের জন্যে গরু-ছাগল পালি। কৃষক টিপু হায়দার বলেন, গরুর খাদ্য সমস্যার জন্যে আমাদের গরু কম দামে বিক্রি করে দিছি। নেপিয়ার জাতের ঘাস দ্রুত বর্ধনশীল, ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই কেটে নেয়া ঘাসগুলো বড় হয়ে যায়।

উপজেলা পশু পালন কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস গোখাদ্যের সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, বর্তমানে পশু খাদ্যের আরেক নাম নেপিয়ার ঘাস। দ্রুত বর্ধনশীল, উৎপাদন খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় এলাকার চাষিরা দিনদিন নেপিয়ার জাতীয় ঘাস চাষে ঝুঁকছেন। এতে কৃষকরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অপরদিকে গোখাদ্য সংকট নিরসনেও ভূমিকা রাখছেন। প্রতিমাসে খামারিদেরকে বিনামূল্যে নেপিয়ার ঘাসের বীজ কাটিং দেয়া হয়। নেপিয়ার ঘাস ১০/১২ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। চাষের পদ্ধতিও সহজ।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
The launchghat of the Magra river in Netrokona district is now just memories

নেত্রকোনা জেলার মগড়া নদীর লঞ্চঘাটটি এখন শুধুই স্মৃতি

নদী পথটি পুনরুজ্জীবিত করার দাবি এলাকাবাসীর
নেত্রকোনা জেলার মগড়া নদীর লঞ্চঘাটটি এখন শুধুই স্মৃতি

নেত্রকোনার হৃদয়ে একসময় মানুষের স্বপ্ন, ভরসা আর যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল লঞ্চ। নেত্রকোনা পৌর এলাকার মালনী রোড সংলগ্ন মগড়া নদীর তীরে গড়ে ওঠা সেই পুরানো লঞ্চঘাট এখন শুধুই স্মৃতিচিহ্ন বহন করে যাচ্ছে। এই লঞ্চঘাট ঘিরে একসময় গড়ে উঠেছিল পাটপট্রি এলাকায় অসংখ্য পাট গুদাম ও ধানের বড় বড় গুদাম ঘর। বিভিন্ন এলাকা থেকে বড়-ছোট নৌকা আর লঞ্চ আসত এই ঘাটে। অপরিকল্পিত নৌযোগাযোগের কারণে আজ বিলীন হয়েছে এই লঞ্চ ঘাটটি। মগড়া নদী বয়ে গেছে সদর দেওপুর, লক্ষীগঞ্জ, আটপাড়া কোনাপাড়া, ব্রোজের বাজার, নাজিরগঞ্জ বাজার হয়ে মদন দেওয়ান বাজার ও মদন বাজার পর্যন্ত। আর এই রুটেই লঞ্চ দিয়ে যাত্রী ও মালামাল পৌঁছাত নির্বিঘ্নে। তখনকার দিনগুলোতে সড়ক যোগাযোগের অবস্থা ছিলো খুবই দুর্বল, তাই মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতো লঞ্চ ভ্রমণ করতে। লঞ্চঘাটে ভিড় জমতো সকাল-বিকেলে। এখানে যাত্রী ওঠা-নামার ভিড়, নদীর ঢেউ আর হুইসেলের শব্দে সরগরম হয়ে উঠত পুরো এলাকা। ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা নদীর পাড়ে দৌড়ে এসে লঞ্চ দেখত, আনন্দে হাত নেড়ে যাত্রীদের বিদায় জানাত ছোট-ছোট শিশুরা। সেইসব মুহূর্ত আজ কেবলই স্মৃতি হয়ে রয়েছে। কালের আবর্তে সেই লঞ্চ সেবা হারিয়ে গেছে এলাকা থেকে। নদী নিয়মিত খনন না হওয়া, আর এর উপর অপরিকল্পিতভাবে নিচু ব্রিজ নির্মাণ করায় এখন নৌকা বা ট্রলারও চলাচল করতে পারছে না। ফলে একসময়কার নদীপথের প্রাণচাঞ্চল্য নিভে গেছে। এলাকার মানুষের এখন সড়কপথই প্রধান ভরসা। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে, অর্থনৈতিক ক্ষতিও হচ্ছে সমষ্টিগতভাবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি নদী পথটিকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়, তবে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে যেমন বিকল্প সুবিধা মিলবে, তেমনি সড়কের চাপও কমবে। নেত্রকোনার লঞ্চঘাট তাই এখন কেবলই মানুষের স্মৃতিতে বেঁচে আছে। পুরোনো দিনের সেসব কোলাহল, শিশুদের হাসি আর যাত্রীদের ভরসা সবকিছুই সময়ের স্রোতে হারিয়ে গেছে।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Narail 20 bed hospital has not completed a one and a half year term in 5 years

নড়াইল ২৫০ শয্যা হাসপাতাল দেড় বছর মেয়াদের কাজ ৭ বছরেও শেষ হয়নি

নড়াইল ২৫০ শয্যা হাসপাতাল দেড় বছর মেয়াদের কাজ ৭ বছরেও শেষ হয়নি

৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যা, পরবর্তীতে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নিতকরণ হওয়ায় চিকিসাসেবায় আশার আলো দেখেছিল নড়াইলের আমজনতা। কিন্তু সুচিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল এখন নকশা জটিলতার গ্যাড়াকলে। ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নিতকরণ প্রকল্পের কাজ দেড় বছর মেয়াদের ভবনের কাজ ৭ বছরেও শেষ হয়নি। ফলে জেলার ৮ লাখ মানুষের উন্নত চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসাস্থল নির্মাণাধীন হাসপাতাল ভবনটি এখন রোগীদের কাতারে। তবে থেমে নেই ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম।

সরেজমিন দেখা গেছে, নড়াইল জেলা শহরের ১০০ শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিনই প্রায় ৪শ থেকে সাড়ে ৪শ রোগী সেবা নিতে আসে। আর হাসপাতালের শয্যা সংকটে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন বারান্দা, সিড়িঘর, করিডোরে। এসব রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

আবার কোনো কোনো বেডে একাধিক রোগীকে রাত যাপন করতে দেখা গেছে। নিয়মনীতির যেন, কোনো বালাই নেই। যদি হয় সুজন-তেতুল পাতায় নয়জন এমন প্রবাদ বাক্যটি এখন হাসপাতালের রোগীদের বিছানার জন্য খুবই উপযোগী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালের জুন মাসে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ৮ তলা পর্যন্ত ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। যার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৪০ কেটি টাকা। তিন দফা মেয়াদ বাড়িয়েও নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। এদিকে, নকশা পরিবর্তন আর সংশ্লিষ্ট বিভাগের অসহযোগিতাকে দায়ী করছেন ঠিকাদার। ৯ তলার কাজ মাত্র শুরু করেছেন আরেক ঠিকাদার ।

গণপূর্ত বিভাগ জানায়, একটি মাত্র লিফ্ট দিয়ে শুরু হয় ৭ তলা ভবনের নির্মাণকাজ। নকশা পরিবর্তনের পর প্রথমে ৮ম তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ম্যাকানিক্যাল ইকুয়েপমেন্ট ও চিকিৎসকদের চেম্বারের জন্য ৬ তলা ভবন নির্ধারণ করা হয়। আর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রিভাইস ওসি পাশ হয়। নতুন করে বসানো হয় আরো তিনটি লিপ্ট। নবম তলায় হওয়ার কথা ১০ শয্যার আইসিইউ।

অভিযোগ করা হচ্ছে, ভবনের কাজ সম্পন্ন হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নির্মাণাধীন নতুন ভবন হস্তান্তর করছে না গণপূর্ত বিভাগ। গণপূর্ত বিভাগের টালবাহনা করার কারণে হতাশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে গত ২০২৪ সালের ২৭ এপ্রিল বিকেলে নড়াইলের ১০০ শয্যার হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নিতকরণ কাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীণ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। উদ্বোধনের এই কর্মকান্ডটি জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। তারা বুঝতেই পারছেন না এই অনুষ্ঠান আযোজনের উদ্দেশ্য কি? তাদের অভিমত হাসপাতালের নতুন ভবন উদ্বোধন, না নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করার জন্য অনুষ্ঠান টা ছিল এটি!।

ওই দিন মন্ত্রী মহোদয় ফলক উন্মেচনের পর ফিতা কেটে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ভবনের উদ্বোধন করেন। মন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেরিনা ফ্লোরা, নড়াইল-২ আসনের সাবেক সাংসদ মাশরাফি বিন মোর্ত্তজাসহ ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ওইদিন নেতাকর্মীদের ভিড়ে উদ্বোধনের ছবিই তোলা দুষ্কর হয়ে পড়ে সাংবাদিকদের। হাসপাতাল চত্বরে এখন আর নেতাকর্মীদের সেই ঠেলাঠেলি নেই। তবে রোগীদের ঠেলা-ঠেলিতে হাসপাতাল নিজেই এখন অসুস্থ ।

নড়াইল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. তারিকুজ্জামান লিটু বলেন, ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের প্রতিটি সেক্টরে ছিল দূর্ণীতিতে ঠাসা। তাদের আমলে যেখানে যে কাজ হয়েছে, তা কল্যাণকর ছিল না। অক্টোপাসের মত সব গিলে খেয়েছে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের নেতা-কর্মীরা। তারিকুজ্জামান লিটু আশাবাদী এই বাংলার মাটিতেই আওয়ামী সরকারের বিচার হবে। অপরাধীরা কেউই রেহাই পাবে না।

নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুর রশীদ বলেন, গোড়া থেকেই গলদ রয়েছে ভবন নকশার। যে কারণে ভবন নির্মাণ কাজের শেষ মুহূর্তে বিষয়টি নজরে আসে। নকশা সংযোজন কিংবা পরিবর্তন করে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে এমনটাই আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Srikail Health Sub Center service is deprived of 5000 people in the manpower crisis

জনবল সংকটে শ্রীকাইল স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র সেবা বঞ্চিত ৩৫ হাজার মানুষ

জনবল সংকটে শ্রীকাইল স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র সেবা বঞ্চিত ৩৫ হাজার মানুষ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে একজনও নেই জনবল। সৃষ্ট ৬টি পদ থাকলেও সবকয়টি পদই শূন্য। জনবলের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ইউনিয়নের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই ভঙ্গুর দশা নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তাদের দাবি জনবল নিয়োগ দিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হউক। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শ্রীকাইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রটি বন্ধ। নেই কোনো চিকিৎসক।

রোগী এসে ফেরত চলে যাচ্ছেন।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনেই মলমূত্র ত্যাগ করছেন মানুষ। প্রস্রাব ও আবর্জনার তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। রেগীরা সুস্থ হতে এসে আরো বেশি অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন।

শ্রীকাইল ইউনিয়নের ভূতাইল গ্রামের সুজন মুন্সি (২৮) বলেন, প্রতিদিন শত শত রোগী এসে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফেরত যায়। এদের মধ্যে বেশিরভাগ রোগী খুবই দরিদ্র।

স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার নাই। বাউন্ডারি নাই। দুটি ভবন পুরোপুরি পরিত্যাক্ত। চারদিকে খোলা মেলা ও ঝোপঝাড় থাকায় এটি এখন জনসাধারণের নিরাপদ প্রস্রাব কেন্দ্র। তৃণমূলের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতলটি চালু করা খুবই জরুরি।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশের বাড়ীর তাজুল ইসলাম (৬০) জানান, যেকোনো রোগের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য শ্রীকাইল স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রই একমাত্র ভরসা। শ্রীকাইল থেকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। জেলার দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার। হঠাৎ কেউ অসুস্থ হলে তাকে উপজেলা কিংবা জেলায় পৌঁছানোর আগে মৃত্যুর কোলে ঢলে যায়।

সোনাকান্দা বহুমুখী কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মফিজুল ইসলাম জানান, ১ নং শ্রীকাইল ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস। ইউনিয়নবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাধীনতার পূর্বে শ্রীকাইলে দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি চালু করা হয়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে নামেরও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমান নাম ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। চিকিৎসক না থাকায় কেন্দ্রটি প্রায়ই বন্ধ থাকে। এ কারণে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত থেকে হচ্ছে।

এদিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তিনটি ভবনই পরিত্যক্ত। জরাজীর্ণ একটি কক্ষে সপ্তাহে দুদিন বসে রোগী দেখেন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মাজহারুল ইসলাম। তিনার কর্মস্থল রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র।

অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মাজহারুল ইসলাম জানান, রোগীর চাহিদা আছে। প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত রোগী দেখেন। গড়ে প্রতিদিন ১’শ রোগী দেখা হয়। জনবলের অভাবে রোগীরা এসে ফিরে যায়। সরকার নতুন করে সৃষ্ট পদসমূহে জনবল বাড়িয়ে দিলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়াও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রয়োজন।

স্থানীয়রা জানান, মুরাদনগরের বিভিন্ন ইউনিয়নে এমন চিত্র আরো আছে, আন্দিকোট, আকুবপুরসহ অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ।

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি জনবল শূণ্য হওয়ায় চিকিৎসাসেবা ব্যবহত হচ্ছে। আমরা চাহিদা দিয়ে রাখছি। নিয়োগ হলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

মন্তব্য

পুঁজিবাজার
Two decades returned to new buds The talent of the talent will be seen again on the dream stage of childhood

দুই দশক পর ফিরলো নতুন কুঁড়ি: শৈশবের স্বপ্নের মঞ্চে দেখা যাবে আবারও প্রতিভার ঝলক

দুই দশক পর ফিরলো নতুন কুঁড়ি: শৈশবের স্বপ্নের মঞ্চে দেখা যাবে আবারও প্রতিভার ঝলক

বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে কিছু আয়োজন সময়কে ছাপিয়ে যায়। ‘নতুন কুঁড়ি’ তেমনই একটি নাম, একটি অনুভূতি, একটি আন্দোলন। একটি সময় ছিল, যখন শুক্রবার মানেই শিশু-কিশোরদের প্রাণের অনুষ্ঠান ‘নতুন কুঁড়ি’। টেলিভিশনের পর্দায় সেই চেনা গান ‘আমরা নতুন, আমরা কুঁড়ি’- এই গানটি শোনা মানেই নতুন প্রতিভা খোঁজার সূচনা। বাংলার ঘরে ঘরে এটি শুধু একটি শিশু-কিশোর প্রতিযোগিতা ছিল না, বরং হয়ে উঠেছিল এক সাংস্কৃতিক আন্দোলন।

দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর বন্ধ থাকার পর সেই অনুষ্ঠান আবারও ফিরছে বাংলাদেশ টেলিভিশনের পর্দায়। এর ফলে দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। নতুন কুঁড়ি হচ্ছে শিশু শিল্পীদের জন্য বাংলাদেশি রিয়েলিটি টেলিভিশন প্রতিযোগিতা।

নতুন কুঁড়ি বাংলাদেশ টেলিভিশনে শুরু হওয়ার প্রথম বছর থেকেই দেশজুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল। শিশুদের কণ্ঠে আবৃত্তি, শুদ্ধ উচ্চারণে গান, মনোমুগ্ধকর অভিনয় আর হৃদয়ছোঁয়া নৃত্য- এসব যেন দর্শকদের নতুন আশায় ভরিয়ে তুলেছিল। এটি শুধু একটি প্রতিযোগিতা ছিল না, ছিল শিশুদের শিল্পী হয়ে ওঠার প্রথম পাঠশালা।

এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে উঠে এসেছেন অসংখ্য গুণী শিল্পী। আজ যারা বাংলাদেশের নাটক, সংগীত, নৃত্যসহ সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে উজ্জ্বল নক্ষত্র, তাদের অনেকেরই যাত্রা শুরু ‘নতুন কুঁড়ি’ থেকে।

নুসরাত ইমরোজ তিশা, রুমানা রশিদ ঈষিতা, মেহের আফরোজ শাওন, কনকচাঁপা, শামীমা ইয়াসমিন দিবা, রাহাত আজিম, আজাদ রহমান শাকিল, আজমিরী সুলতানা হলী, সিহান মনিরুল হাসান, শাহনাজ চৌধুরী লুনা, রুদাবা আদনীন কুমকুম, গায়ক সামিনা চৌধুরী, হেমন্তী রক্ষিত দাস, নৃত্যশিল্পী চাঁদনী- এমন অসংখ্য পরিচিত মুখ এই প্রতিযোগিতার পথ ধরে উঠে এসেছেন। কেউ সংগীতে, কেউ অভিনয়ে, কেউ আবার নৃত্যে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তাদের অনেকে আজ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিচয় বহন করছেন।

দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হতে যাওয়া নতুন কুঁড়ি অনুষ্ঠানে আনা হয়েছে আধুনিক কাঠামোগত পরিবর্তন। এক্ষেত্রে পুরো দেশকে ভাগ করা হয়েছে ১৯টি অঞ্চলে। প্রতিটি অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে আঞ্চলিক বাছাইপর্ব। এরপর নির্বাচিত প্রতিযোগীরা ঢাকায় এসে অংশ নেবেন চূড়ান্ত পর্বে। অংশগ্রহণকারীদের বয়সভিত্তিক দুটি শাখায় ভাগ করা হয়েছে-‘ক’ (৬-১১ বছর) এবং ‘খ’ (১১-১৫ বছর)। প্রতিযোগিতা করা যাবে সর্বোচ্চ তিনটি বিষয়ে।

প্রতিযোগিতার বিভাগগুলোকে আরও বিস্তৃত করা হয়েছে। এবারের বিভাগগুলো হল- দেশাত্মবোধক গান, আধুনিক গান, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, লোকসংগীত, হামদ-নাত, অভিনয়, আবৃত্তি, গল্প বলা, কৌতুক, সাধারণ নৃত্য ও উচ্চাঙ্গ নৃত্য। প্রতিটি বিভাগে থাকবে অভিজ্ঞ ও স্বনামধন্য বিচারক প্যানেল। এছাড়া অনুষ্ঠানটি আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্প্রচার করা হবে, যাতে দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে মানুষ অংশগ্রহণকারীদের সৃজনশীলতা দেখতে পান।

শিল্প-সাহিত্য একটি জাতির আত্মাকে গড়ে তোলে। ‘নতুন কুঁড়ি’ সেই আত্মগঠনের অন্যতম মাধ্যম। এটি শিশুদের মধ্যে শুধু প্রতিভা বিকাশই করে না, পাশাপাশি শৃঙ্খলা, আত্মবিশ্বাস ও জাতীয়তাবোধও গড়ে তোলে। শিশুরা শেখে দলবদ্ধভাবে কাজ করা, অন্যের প্রতিভাকে সম্মান করা এবং নিজস্ব সংস্কৃতিকে ভালোবাসা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের প্ল্যাটফর্মের অভাবের কারণে শিশুরা বিকল্প বিনোদন ও অনলাইন নির্ভরতায় ঝুঁকছে। ‘নতুন কুঁড়ি’র পুনর্জাগরণ তাই শুধু বিনোদনের ক্ষেত্রেই নয়, বরং প্রজন্মকে সঠিক সাংস্কৃতিক চর্চায় ফিরিয়ে আনারও এক মহৎ উদ্যোগ।

১৯৭৬ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা মনোয়ারের উদ্যোগে ‘নতুন কুঁড়ি’র যাত্রা শুরু হয়। অনুষ্ঠানটির নামকরণ করা হয় কবি গোলাম মোস্তফার ‘কিশোর নামক’ কবিতার অনুপ্রেরণায়। উদ্দেশ্য ছিল- দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিভাবান শিশুদের খুঁজে বের করে জাতীয় পর্যায়ের একটি মঞ্চে তুলে আনা, যেন তারা নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠতে পারে।

তবে ২০০৬ সালে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় এই অনুষ্ঠান। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে এমন আয়োজনের অনুপস্থিতি শুধু সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেই নয়, শিশুদের মানসিক বিকাশেও একটি বড় শূন্যতা তৈরি করে। দীর্ঘ এই সময়ে জাতীয় পর্যায়ের তেমন কোনো শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে ওঠেনি, যার ফলে অনেক সম্ভাবনাময় প্রতিভা হারিয়ে গিয়েছিল নীরবে।

অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটে ২০২৫ সালের ১৭ আগস্ট। নতুন রূপে, আধুনিক কাঠামোয় এবং বিস্তৃত পরিকল্পনায় ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে গিয়ে আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই আয়োজন আগামী প্রজন্মকে সৃজনশীল করে গড়ে তুলবে। এটি একটি নতুন যুগের সূচনা।’

প্রথম থেকেই এই আয়োজন জনগণের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিরে এসেছে নস্টালজিয়ার ঢেউ। প্রাক্তন প্রতিযোগীরা স্মৃতিচারণ করে লিখছেন- ‘শৈশবের শুক্রবারগুলো যেন নতুন কুঁড়িকে ঘিরেই ছিল।’ কেউ আবার বলছেন, ‘আমার জীবনের প্রথম মঞ্চে ওঠা, সাহস পাওয়ার জায়গা ছিল এই নতুন কুঁড়ি অনুষ্ঠান।’

বাংলাদেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে নিজের শৈশব স্মৃতির কথা বলেন, ‘১৯৭৮ সালে আমি মাত্র সাত বছর বয়সে নতুন কুঁড়িতে অংশ নিই এবং দেশাত্মবোধক গানে প্রথম স্থান অর্জন করি। সেই আনন্দ আজও আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ স্মৃতিগুলোর একটি।’ তিনি বলেন, ‘নতুন কুঁড়ি আগের মতোই শিশুদের স্বপ্ন গড়ার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। শুধু পুরস্কারের আশায় নয়, স্বীকৃতির জন্য এই প্রতিযোগিতার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।’

১৯৭৭ সালে ‘ক’ গ্রুপে একক অভিনয়ে প্রথম এবং ১৯৭৮ সালে ছড়াগানে প্রথম হয়ে ‘নতুন কুঁড়ি’র মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছিলেন আজাদ রহমান শাকিল। সেই মধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বাসস’কে বলেন 'দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর আবারও ‘নতুন কুঁড়ি’ শুরু হচ্ছে এটা আমার জন্য এক অশেষ আনন্দের বিষয়। এই অনুষ্ঠান শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং প্রতিটি শিশুর ভেতরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভা আবিষ্কারের এক মহামঞ্চ। আমি নিজেও এই মঞ্চ থেকে উঠে আসার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। তাই খুব ভালোভাবেই জানি, একটি শিশুর জীবন ও ভবিষ্যৎ গঠনে ‘নতুন কুঁড়ি’ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, আজকের শিশু, তারাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা। এই শিশুদের হাত ধরেই গড়ে উঠবে আমাদের সোনালী ভবিষ্যৎ। তাদের চোখের স্বপ্ন, তাদের কণ্ঠের গান, তাদের অভিনয় আমাদের জাতির সম্ভাবনার প্রতীক। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নতুন কুঁড়ির এ নবযাত্রা আবারো জাতিকে দেবে অসাধারণ সব শিল্পী, যারা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

বিটিভির মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম নতুন কুঁড়ির এই প্রত্যাবর্তনকে একটি ‘সাংস্কৃতিক জোয়ার’ হিসেবে অভিহিত করে বাসস’কে বলেন, ‘নতুন কুঁড়ি কেবল একটি প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি একটি জাতীয় সাংস্কৃতিক আন্দোলন। এটি সারাদেশের শিশু-কিশোরদের শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় যুক্ত করবে, প্রযুক্তির আসক্তি থেকে ফিরিয়ে আনবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নতুন কুঁড়িকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক জটিলতায় অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়, যা ছিল খুবই দুঃখজনক। তবে এখন আমরা নতুন করে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি, যাতে এই অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে হয় এবং আগামীর প্রতিভাবান প্রজন্ম সামনে চলে আসে।’

এছাড়া নতুন কুঁড়ি অনুষ্ঠানের বিচারিক প্যানেলের বিচারপ্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিচারক নির্বাচনেও কঠোর মানদণ্ড বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কনকচাঁপা বলেন, ‘শিল্পচর্চা বাণিজ্যিক হলে তার মাধুর্য নষ্ট হয়। তাই নতুন কুঁড়িতে যোগ্যতাই হবে একমাত্র মাপকাঠি।

স্বজনপ্রীতির কোনো সুযোগ যেন না থাকে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।’

অনুষ্ঠানটির উদ্দেশ্য কেবল জাতীয় পর্যায়ে শিল্পী তৈরি করা নয়, বরং দেশব্যাপী সংস্কৃতিমনা মানুষ তৈরির মাধ্যমে জাতির সাংস্কৃতিক ভিত্তিকে মজবুত করা। ‘নতুন কুঁড়ি’র প্রথম আয়োজনেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯ হাজারের বেশি খুদে শিল্পী অংশ নিয়েছিল। তাদের অনেকেই পরে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রে সক্রিয় থেকেছেন।

নতুন কুঁড়ির মূল সাফল্য শুধু একটি প্রতিযোগিতা আয়োজনে নয়, বরং সারাদেশে সাংস্কৃতিক চর্চার একটি বিস্তৃত ধারার সূচনা করা। এটি এক ধরনের সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়া, যা জাতীয় জীবনে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। শিশুরা যখন মঞ্চে উঠে, তখন শুধু গান বা আবৃত্তিই করে না- তারা আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্ব, জাতীয়তাবোধ ও দলবদ্ধ কাজের শিক্ষা গ্রহণ করে।

অভিভাবকরাও এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত। এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার সন্তান ছোট শহরে বড় হচ্ছে। জাতীয় মঞ্চে ওঠার এমন সুযোগ ওর জীবনে বড় পরিবর্তন আনবে।’

প্রায় ২০ বছর পর ফিরে আসা ‘নতুন কুঁড়ি’ কেবল একটি অনুষ্ঠানের পুনরারম্ভ নয়, বরং একটি ঐতিহ্যের পুনর্জন্ম। সব মিলিয়ে বলা যায়, ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি হারিয়ে যাওয়া এক ঐতিহ্যের পুনরুদ্ধার। এটি হচ্ছে আগামী প্রজন্মের স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখার মঞ্চ, যেখানে প্রতিটি প্রতিভা নিজেকে তুলে ধরতে পারবে

জাতীয়ভাবে। এই আয়োজন আবারও প্রমাণ করেছে, যে বীজ একদিন রোপণ করা হয়েছিল, তা এখনো শুকায়নি। বরং নতুন প্রজন্মের হাতে সেই বীজ আবারও অঙ্কুরিত হয়েছে, নতুন আলোয় ফুটবে বহু ফুল।

আশাবাদ ব্যক্ত করে বিটিভির মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা চাই নতুন কুঁড়ি আগামী শত বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে হোক। প্রতিভা যেন হারিয়ে না যায়, বরং উৎসাহ পায়। এই অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতির স্রোতধারাকে প্রবাহিত রাখবে।’

‘নতুন কুঁড়ি’ আজ শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, বরং একটি জাতীয় আত্মপরিচয়ের প্রতীক। শিশুদের কণ্ঠে আবারও বাজছে সেই গান- ‘আমরা নতুন, আমরা কুঁড়ি।’ এই আয়োজন আগামী দিনের কনকচাঁপা, তিশা, ঈষিতাদের জন্ম দেবে। আর আমাদের সাংস্কৃতিক ভুবনকে আলোকিত করবে নতুন নতুন তারায়।

মন্তব্য

p
উপরে