প্রণোদনার ঋণ পুঁজিবাজারে এসেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশের পর টানা দুই দিন পড়ল উড়তে থাকা পুঁজিবাজার। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা মুদ্রানীতি নিয়ে সংশয়।
প্রতি বছর মুদ্রানীতি প্রকাশের আগে আগে পুঁজিবাজারে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়, যার ব্যতিক্রম হয়নি এবারও।
আগামী এক বছরের আর্থিক বাজারে মুদ্রার সরবরাহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কেমন দেখতে চায় তা এই মুদ্রানীতিতে উল্লেখ থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি সংকোচনমূলক নীতি গ্রহণ করে তাহলে তারা বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি কমায়, আর যদি সম্প্রসারণমূলক ঘোষণা করে, তাহলে প্রবৃদ্ধি বাড়ায়।
করোনাকালে এমনিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কম। উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ না করে হাত গুটিয়ে ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি চূড়ান্ত হওয়ার পরেই বহুজন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
অবশ্য টানা দ্বিতীয় দিনের এই পতন নিয়ে বাজারসংশ্লিষ্টরা কিছু নেতিবাচক ভাবছেন না। তারা বলছেন, ধারাবাহিকভাবে কয়েক দিন পুঁজিবাজারের সূচক বাড়ার পর কিছুটা দর সংশোধন স্বাভাবিক। আর সংশোধনে সূচকের এমন কোনো পতন হয়নি। তার চেয়ে বড় কথা লেনদেন কমার বদলে বাড়ছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ মনে করেন না প্রণোদনার টাকা পুঁজিবাজারে এসেছে, এমন খবরে পতন হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ আছে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে এখন বিনিয়োগ বাড়ার অনেক কারণ আছে। শুধু প্রণোদনার টাকার কারণে পুঁজিবাজারের সূচক ও লেনদেন বেড়েছে এটা ঠিক না।’
তিনি বলেন, ‘প্রণোদনার টাকা যদি পুঁজিবাজারে এসে থাকে তাহলে কত বিনিয়োগ হয়েছে, সেটি প্রকাশ করা উচিত ছিল।’
তার মতে, পুঁজিবাজারে দুর্বল কোম্পানির আধিপত্য আছে তবে ভালো কোম্পানির শেয়ারের দরও এ সময়ে বেড়েছে। ফলে যারা কয়েক সপ্তাহ আগে শেয়ার কিনেছেন তাদের শেয়ারপ্রতি মুনাফা হওয়ায় এখন বিক্রির চাপ বেড়েছে। ফলে সূচক কমছে। এতে আতঙ্কের কিছু নেই।
মঙ্গলবার লেনদেন শুরুর পাঁচ মিনিটে সূচক দিনের সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৪১৭ পয়েন্টে ওঠে। তারপর কমে আসে সূচক বৃদ্ধির হার। এরপর আবারও ১১টা ৯ মিনিটে সূচক ৬ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে পৌঁছায়। সেখান থেকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে সূচক, যা লেনদেনের শেষ সময় পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
মঙ্গলবার ব্যাংক খাতের শেয়ারের দর ঢালাও পতন হলেও বিমা ও বস্ত্র খাতের উত্থান ছিল উল্লেখযোগ্য। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের দরও খুব বেশি বাড়েনি এদিন।
ঝিমিয়ে ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড
লেনদেন হওয়া ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র তিনটি ব্যাংকের শেয়ারে দর বেড়েছে। পাল্টায়নি পাঁচটির। বাকি ২৩টি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে।
ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এনআরবিসি ব্যাংকের ২.০৩ শতাংশ। শেয়ার দর ২৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা ১০ পয়সা।
ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১.২৬ শতাংশ। ৭ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা।
সাউথ ইস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর ১৬ টাকা ৭০ পয়সা থেকে দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৬ টাকা ৮০ পয়সা।
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের শেয়ার দর ৩৫ টাকা ১০ পয়সা থেকে দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা ২০ পয়সা।
ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বেশি দর কমেছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ১.৯৬ শতাংশ। এছাড়া রূপালী ব্যাংকের ১.৮৬ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ১.৫০ শতাংশ, প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ার ১.৪৬ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংকের ১.৩২ শতাংশ ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১.২৯ শতাংশ।
এছাড়া পূবালী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ১২৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে বেশি। সোমবার হাতবদল হয়েছিল মোট ১১৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
৩৬টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ছয়টি ফান্ডের দর বেড়েছে, পাল্টায়নি নয়টির। বাকি ২২টি ফান্ডের দর কমেছে।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের, ৩.১৯ শতাংশ। সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের ২.৯০ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ডের ২.৩৪ শতাংশ, ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফিন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের দর কমেছে ১.৯৬ শতাংশ।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৬৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকার যা আগের দিন ছিল ৭১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
বেশ কিছু দিন পর বস্ত্র ও বিমার উত্থান
চলতি সপ্তাহের প্রথম দুদিন লেনদেনে বিমা ও বস্ত্র খাতের শেয়ার দর ছিল তলানিতে। মঙ্গলবার সে অবস্থা থেকে বের হয়ে উত্থানে ফিরেছে দুই খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর।
এদিন দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায়র শীর্ষে ছিল বিমা খাতের পিপলস ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। শেয়র দর ৪৬ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫১ টাকা।
বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ৫.৯৭ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ৫.৮৫ শতাংশ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ৫.৪৫ শতাংশ, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ৪.৯১ শতাংশ, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ৪.১৮ শতাংশ, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ৩.৭৩ কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের ৩.৫৯ শতাংশ আর রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৩.৩১ শতাংশ।
নিটল ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ২.৮২ শতাংশ পর্যন্ত।
এই খাতে লেনদেন দীর্ঘদিন পর দুইশ কোটির ঘর অতিক্রম করেছে। লেনদেন হয়েছে মোট ২১১ কোটি ৫২ লাখ টাকা, যা যে কোনো খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আগের দিন এই খাতে লেনদেন ছিল ১৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
বিমার ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দুটির লেনদেন ছিল স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে দর কমেছে ১২টির। বেড়েছে বাকি ৩৭টির দর।
অন্যদিকে বস্ত্র খাতে ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১১টির, অপরিবর্তিত দেখা গেছে ৭টির দর, আর বেড়েছে বাকি ৪০টির দর। ঈদের আগে থেকে দর সংশোধনের মধ্যে বেশ কয়েকদিন পর এই চিত্র দেখা গেছে এই খাতে।
দর বৃদ্ধির মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানি। অন্যদিকে গত কয়েকদিনে বেশ বেড়েছিল, এমন বেশ কিছু কোম্পানি দর হারিয়েছে।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে ১০৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা যা আগের দিন ছিল ১০৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
ঘুরে দাঁড়িয়েছে লোকসানি কোম্পানি
সোমবার লেনদেন শেষে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত লোকসানি বা জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর ছিল তলানিতে। একদিনের ব্যবধানে মঙ্গলবার আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে এ খাতের শেয়ার দর। ওঠে এসেছে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায়।
এ খাতের বিচ হ্যাচারি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৭.৩৩ শতাংশ, ১৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০ টাকা ৫০ পয়সা।
তুং হাই নিটিং কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৪৫ শতাংশ, ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬ টাকা ৬০ পয়সা।
জুট স্পিনার্সের দর বেড়েছে ৪.৯৮ শতাংশ, ১৩২ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩৯ টাকা।
দর বৃদ্ধির তালিকায় আছে লোকসানি প্রতিষ্ঠান ফাস ফিনান্স ও ফারইস্ট ফিনান্সও। এই দুই কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে যথাক্রমে ৪.৫৪ ও ৪.২৮ শতাংশ।
এছাড়া তাল্লু স্পিনিং, ফ্যামিলি টেক্সের শেয়ার দরও বেড়েছে মঙ্গলবার।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
প্রধান অন্য খাতগুলোর মধ্যে প্রকৌশল খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির। দর পাল্টায়নি একটির। বাকি ৩০টি কোম্পানি দর হারিয়েছে।
এই খাতে হাতবদল হয়েছে মোট ১৪৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১৬৪ কোটি টাকা।
আগের দিন সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ওষুধ ও রসায়ন খাতে পরপর দ্বিতীয় দিন বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত। বাকিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ১৬টির।
আগের দিন লেনদেনে শীর্ষে থাকলেও আজ লেনদেনে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল এই খাত। হাতবদল হয়েছে মোট ১৫১ কোটি ২১ লাখ টাকা যা আগের দিন ছিল ১৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আবার দরপতন হয়েছে। তালিকাভুক্তির পর উড়তে থাকা বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার এদিন আগ্রহ ধরে রাখতে পারেনি। আগের দিন দর বৃদ্ধিতে শীর্ষে থাকলেও এই কোম্পানিটি এদিন দর পতনের শীর্ষ তালিকায় ছিল।
৫.৫৯ শতাংশ দর হারিয়ে ৪৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে ৪৩ টাকা ৯০ পয়সা হয়েছে।
এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১৩টিই দর হারিয়েছে, বেড়েছে বাকি ১০টির দর। হাতবদল হয়েছে মোটি ১১৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার, যা আগের দিন ছিল ১৪৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে সাতটির, পাল্টায়নি দুটির। বাকি ১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর কমেছে।
এই খাতে হাতবদল হয়েছে ৬১ কোটি ৬ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৫৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে গত দুই দিনে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির শেয়ারে বেশ আগ্রহ দেখা গেলেও টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কমেছে দর। আগের দিন দুই টাকা হারলেও আজ দর কমেছে ১১ টাকা ৭০ পয়সা।
এই খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির, বেড়েছে ৭টির, আর অপরিবর্তিত ছিল একটির দর।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৬৯ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৭৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতে বেক্সিমকো টানা প্রায় এক বছর ধরে লেনদেনের শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও সুকুক বন্ডের টাকা তুলতে শুরু করার পর আর সেই অবস্থানে ফিরতে পারছে না। আর বেক্সিমকোর কারণে বিবিধ খাত লেনদেনে শীর্ষ অবস্থানে থাকলেও এখন আর সেই অবস্থানে নেই।
আজ এই খাতে হাতবদল হয়েছে মোট ৮৫ কোটি টাকা যা আগের দিন ছিল ৮৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার লেনদেনে তালিকাভুক্ত সাতটি সিমেন্ট খাতের কোম্পানির মধ্যে সবগুলোর দর কমেছে। টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে হাইডেনবার্গ সিমেন্টের, যার শেয়ার দর কমেছে ৯ টাকা। ২ টাকা ৩০ পয়সা শেয়ার প্রতি দর কমেছে প্রিমিয়ার সিমেন্টের।
তালিকাভুক্ত সিরামিক খাতের ৫টি কোম্পানির মধ্যে মঙ্গলবার দর বেড়েছে মাত্র একটির। এদিন স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১.৪৯ শতাংশ।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৭৯ পয়েন্টে।
শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক ১.৯৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৮৮ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৩ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩০৮ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৩টির, কমেছে ১৯৪টির, পাল্টায়নি ২৬টির। লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ৮৩ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৩২ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ১৬৩টির, পাল্টায়নি ৩২টির।
সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, বর্ধিত এক মাস সময়ের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে চাই। এর জন্য কোনো অবস্থাতেই এক মাস লাগবে না। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, দ্রুত একটি পরিণতি দেখা যাবে।
বুধবার ( ১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা সার্বিক বিষয়ে জানেন। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের অধিবেশনে যাবেন তিনি। এর আগেই সনদ বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে তাকে অবগত করা হবে।
সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কমিশন চূড়ান্ত খসড়া পাঠিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ৬টি উপায়ের পরামর্শ দিয়েছেন। এর মধ্যে কেউ বলছেন বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে কার্যকর করতে। আবার অনেকেই সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে।
আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট মতামত সুপারিশ হিসেবে আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের পক্ষ থেকে যে সমস্ত বক্তব্য ছিল সেগুলোকে আমরা ছয় ভাগে ভাগ করেছিলাম। আপনারা বলেছিলেন বেশ কিছু বিষয় অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়।
তিনি বলেন, আমরাও কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করেছি, অত্যন্ত দ্রুততার সম্ভব সঙ্গে বাস্তবায়িত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যে সমস্ত বিষয় অধ্যাদেশ এবং নির্বাহী আদেশে করা যায় সেগুলো যেন তারা দ্রুত করেন।
আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে আমাদের যেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল আছে তারা দুটো কথা বলেছিলেন-একটি হচ্ছে গণভোট, আরেকটি বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের কথা। সমস্ত কিছু বিবেচনা করে প্যানেলের পক্ষ থেকে আমাদেরকে একটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেটি আপনাদের সামনে আমরা উপস্থাপন করেছি। আমরা সরকারকে একাধিক পরামর্শ দিতে পারি বাস্তবায়নের সেটা তুলনামূলকভাবে সরকারের জন্য সহজতর হবে, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে এবং প্রয়োজনীয় আইনি সাংবিধানিক বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখে তারা পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
আলী রীয়াজ জানান, সনদে স্বাক্ষর করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দু’জন করে প্রতিনিধির নাম পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল। বেশিরভাগ দলই পাঠিয়েছে। আমরা চাই এ ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেবে।
তৃতীয় ধাপের এ বৈঠকে অংশ নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত আছেন- বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে গোখরা সাপের ছোবলে আহত হয়েছেন সুমিত্রা রানী (৬০) নামের এক নারী। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, ছোবল দেওয়া সেই সাপটিকে একটি প্লাস্টিকের বোয়ামে ভরে সঙ্গে করে নিয়ে হাসপাতালে হাজির হন তিনি নিজেই।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের সোনাপোতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঘরের একটি পুরোনো প্লাস্টিকের বোয়াম পরিষ্কার করতে গিয়ে হঠাৎই গোখরা সাপটি সুমিত্রা রানীকে ছোবল দেয়।
তার ছেলে সুরেশ চন্দ্র রায় বলেন, মা কাজ করছিলেন, হঠাৎ চিৎকার শুনে ঘরে দৌড়ে যাই। দেখি মা কাঁপছেন আর পাশে সাপটা পড়ে আছে। কোন সাপ বুঝতে না পেরে প্লাস্টিকের বোয়ামের মধ্যেই সাপটাকে ভরে, মা'কে নিয়ে হাসপাতালে যাই।
দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশ্চিত হন, এটি একটি বিষধর গোখরা সাপ। তাৎক্ষণিকভাবে সুমিত্রা রানীকে অ্যান্টিভেনম দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন ধর বলেন, রোগী বিকাল সাড়ে চারটার দিকে হাসপাতালে আসেন। সঙ্গে সাপটিও আনা হয়েছিল। নিশ্চিত হওয়ার পরপরই এন্টিভেনাম দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হয়। বর্তমানে তিনি আমাদের পর্যবেক্ষণে আছেন।
রূপগঞ্জে প্রায় ২০ হাজার ভবন আছে। নতুন ভবন ছাড়াও বহু পুরানো ভবন রয়েছে, যার অধিকাংশই ভূমিকম্প সহনীয় নয়। ভূমিকম্পবিদরা বলছেন, নতুন আবাসিক এলাকার মাটি নরম ও দুর্বল। এ ধরনের মাটিতে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা না মেনে বহুতল ভবন হলে তা মাঝারি মাত্রার কম্পনেই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে।
মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রদর্শক জাকিয়া সুলতানা বলেন, রূপগঞ্জে বিল্ডিং কোড না মেনে যেভাবে অপরিকল্পিত উপায়ে ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে, তাতে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে ঘটে যেতে পারে প্রলয়ঙ্করী ধ্বংসলীলা।
ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে রূপগঞ্জ। গত ২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল একটি ভূমিকম্প হয় যার উৎপত্তিস্থল ছিল রূপগঞ্জের তারাব। রিখটার স্কেলে এটি ছিল ৪ মাত্রার। একই বছরের ১৭ এপ্রিল ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল রূপগঞ্জের ডহরগাঁও। সেই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩ মাত্রা।
বুয়েটের বিভিন্ন সময়ে করা জরিপে দেখা যায়, রূপগঞ্জে ৪ হাজার বহুতল ভবন রয়েছে। ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে এই ভবনগুলো এবং এর বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্বাচল এলাকার এক অথরাইজড অফিসার বলেন, ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৩৬টি নকশা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাকি যেসব ভবন হয়েছে তার সবই অবৈধ। নানা বাঁধার কারণে উচ্ছেদ অভিযানে বাধাগ্রস্ত হয়। তিনি আরো বলেন, ভবনগুলোতে মোট পাঁচ ধরনের ত্রুটি পাওয়া গেছে। এগুলো হলো নকশা ছাড়া নির্মাণ, নকশায় ব্যত্যয়, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা, জরুরি সিঁড়ির অপ্রতুলতা।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে নকশা বহির্ভূত নির্মাণ কাজের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় রূপসী এলাকার ৩ ভবন মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আরো ২ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৩ এপ্রিল গোলাকান্দাইল এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট লিটন সরকারের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। গত ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলামের নেতৃত্ব পূর্বাচল উপশহরের এক নাম্বার সেক্টরে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এছাড়া ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে মুড়াপাড়া এলাকায় অননুমোদিত ভবনে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তারাব পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ নিগার সুলতানা বলেন, আমাদের ক্ষমতা সীমিত। ম্যাজিষ্ট্রেসি পাওয়ার নেই। অবৈধ ভবন কতো আছে এমন পরিসংখ্যান নেই। তবে অবৈধ ভবন চোখে পড়লে নোটিশ করি। ব্যবস্থা নেই। আমাদের লোকবল কম। রূপগঞ্জ বড় ভূমিকম্প হলে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটতে পারে।
উপজেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আইমিন সুলতানা বলেন, আসলে উপজেলা পর্যায়ে কোন প্রশিক্ষণ নেই। তবে দুর্যোগ প্রশমন দিবসে ভূমিকম্পসংক্রান্ত মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, বিষয়টি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। এটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। ইতোমধ্যে রাজউক অভিযান চালাচ্ছে।
রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লিটন সরকার বলেন, নকশা ও অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মাণের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা না রেখে অনেকেই রাস্তার জায়গায় ভবন নির্মাণ করেছেন। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘনসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে নির্মাণাধীন ভবনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই অভিযান চলমান থাকবে।
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী চরপাড়া এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ১০ জন দগ্ধ হয়েছেন। আজ বুধবার সকালে চরপাড়ার ইউনুস মার্কেটে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের কারো শরীরের ৪০ শতাংশ, কারও আবার ৭০ শতাংশের মতো পুড়ে গেছে।
দগ্ধরা হলেন- মাহবুবুর রহমান (৪৫), মো. সৌরভ রহমান (২৫), মোহাম্মদ কফিল (২২), মোহাম্মদ রিয়াজ (১৭), মোহাম্মদ ইউনুস (২৬), মোহাম্মদ আকিব (১৭), মো. হারুন (২৯), মোহাম্মদ ইদ্রিস (৩০), মোহাম্মদ লিটন (২৮) ও মোহাম্মদ ছালেহ (৩৩)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে ইউনুস মার্কেটের একটি দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার আনলোড করা হচ্ছিল। এসময় এক শ্রমিক সিগারেটে আগুন ধরালে হঠাৎ সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। এতে ১০ জন শ্রমিক আগুনে দগ্ধ হন।
চমেক হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ খালেদ জানান, দগ্ধ ১০ জনকে এখানে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা বেশি খারাপ। তাদের বেশিরভাগের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। পাশাপাশি দগ্ধদের কারো শরীরের ৪০ শতাংশ, কারও আবার ৭০ শতাংশের মতো পুড়ে গেছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আলাউদ্দিন বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিন থেকে চারজনের অবস্থা গুরুতর।
তিনি বলেন, আহত শ্রমিকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এক শ্রমিকের জ্বালানো সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত। এ সময় গুদামে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সাবের আহমেদ জানান, বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস ও প্রকৌশল কর্মক্ষেত্র কুক্ষিগত করার প্রতিবাদ ও ছয় দফা দাবি বাস্তাবায়নের দাবিতে ফুঁসে ওঠেছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর সাতরাস্তা মোড় অবরোধ করেন তারা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীর ও বাসচালকরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— প্রভাবশালী গোষ্ঠী কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে। তারা পলিটেকনিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে প্রকৌশল পেশায় প্রবেশের পথ সংকুচিত করছে। এ ছাড়া চাকরি ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল, তাদের পদবি পরিবর্তন ও সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা।
২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল ও বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধন।
ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তি বাতিল, উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু এবং ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা।
উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বাদ দিয়ে নিম্নপদে নিয়োগের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।
কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবলকে কারিগরি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ ও আইনানুগভাবে নিশ্চিত করা।
এসব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন।
উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ের নির্মাণাধীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতায় একাডেমিক কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে শতভাগ আসনে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করা।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কৃতি সন্তান, বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি জালাল চৌধুরী (মাসুম) ইন্তেকাল করেছেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৬টার দিকে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মরহুমের ভাই রোমান চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগলেও হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার ছোট ভাই জালালের মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫২ বছর। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী (২২তম বিসিএসের সচিব), দুই ছেলে, অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী।
তিনি আরও জানান, সকাল ৯টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মরদেহ গ্রামের বাড়ি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের মনসুর গ্রামে নেওয়া হবে। বাদ এশা মনসুর আশরাফিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হবে।
জানা গেছে, পেশাজীবনে জালাল চৌধুরী ছিলেন দক্ষ, সৎ ও মানবিক একজন পুলিশ কর্মকর্তা। দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি তিনি ছিলেন লেখক, চিন্তাশীল মেধাবী ও সত্যিকারের মানবিক মানুষ। সম্প্রতি তিনি পুলিশ সংস্কার কমিশনের সচিবালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। নিজ এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডেও তার অবদান ছিলো স্মরণীয়।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও রেখেছেন অবদান। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে প্ল্যানিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ পুলিশ তার ওপর একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করে যা প্রকাশিত হয় জাতিসংঘ পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে।
পেশাগত জীবনের পাশাপাশি তিনি ছিলেন সাহিত্যপ্রেমী। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত গীতিকার ছিলেন তিনি। তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে কোথায় পাবো তাকে, নির্বাসিত হৃদয়ে এসো, ইরোটা ম্যানিয়া এবং ছোটগল্প সংকলন।
ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক ও ব্যবসায়ীদের ন্যায্যমুল্যে দেওয়ার দাবীতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।
বুধবার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ডে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে ব্যবসায়ী, স্থানীয়সহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়।
সেসময় ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক আলহাজ শহিদুল ইসলাম, বদরুজ্জামান, ডা: জহুরুল ইসলাম, কমিশনার আনোয়ারসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা অভিযোগ করেন, জমির মালিকদের ২০২২ সালের মৌজা মুল্য দেওয়া হচ্ছে। যেসব জমির দাম ১০ লাখ টাকা সেই জমির দাম দেওয়া হচ্ছে ২ লাখ টাকা করে। এছাড়াও একটি বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পুর্ণ ক্ষতিপুরণ না দিয়ে আংশিক দিচ্ছে কর্র্তৃপক্ষ। তাই মালিক ও ব্যবসায়ীদের ন্যায্য মুল্যে নিশ্চিতের দাবী জানানো হয়।
পরে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় ঝিনাইদহ থেকে যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গাগামী সকল রুটের যানচলাচল। প্রায় ১ ঘন্টাপর আবারো কর্মসূচীর হুশিয়ারি দিয়ে অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা।
মন্তব্য