আবারও কারিগরি জটিলতায় পড়েছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর ওয়েবসাইট। ঘড়ির কাঁটায় যখন ১০টা ৫০ মিনিট, তখন ডিএসইতে সূচকের উত্থান-পতনের চিত্র দেখাচ্ছিল ১০টা ৩৯ মিনিটের। আবার যখন ১০টা ৫১ মিনিট, তখন সূচকের আপডেট দেখাচ্ছিল ১০টা ৪১ মিনিটের।
একইভাবে ঘড়ির কাঁটায় যখন ১০টা ৫২ মিনিট, তখন সূচক ৬ হাজার ৪১১ পয়েন্টে, যা ১০টা ৪২ মিনিটের।
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে লেনদেনে এমন ত্রুটি দেখা গেছে।
অবশ্য এই ত্রুটি অব্যাহত ছিল ৩৫ মিনিট। এরপরই রিয়েল টাইমে আপডেট দিতে শুরু করে ডিএসইর ওয়েবসাইট।
এমন আপডেট ত্রুটি এটাই প্রথম নয়। চলতি মাসের ১৮ জুলাই একইভাবে বড় ধরনের কারিগরি জটিলতায় পড়ে পুঁজিবাজারের লেনদেন। এ সময় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট বন্ধ ছিল লেনদেন। পরে লেনদেন সময় ১ ঘণ্টা বাড়িয়ে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত করা হয়।
এরই মধ্যে পুঁজিবাজারের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে।
রোববার লেনদেনের ধীরগতি নিশ্চিত করে ডিএসইর এক সূত্র জানায়, কারিগরি জটিলতার কারণে লেনদেনে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে। তা সাময়িক। ঠিক হয়ে যাবে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘড়ির কাঁটায় যখন ১০টা ৫৭ মিনিট, তখন সূচক দেখাচ্ছে ৬ হাজার ৪০৬ পয়েন্ট, যা ১০টা ৪৬ মিনিটের।
ডিএসই ওয়েবসাইটে যখন ঘড়ির কাঁটা ১১টা ২১ মিনিট, তখন ডিএসইর আপডেট দেখাচ্ছিল ১১টা ২০ মিনিটের।
ডিএসই থেকে বলা হয়েছে, শিগগির রিয়েল টাইম, লেনদেন সময় ও ঘড়ির কাঁটার সময় সমন্বয় করা হচ্ছে।
ব্যাংক বিমা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আগ্রহ
ঈদের পর প্রথম লেনদেন চলছে পুঁজিবাজারে। রোববার লেনদেনের শুরুতেই বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনার প্রতি আগ্রহে সূচকের উত্থান দেখা গেছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নেয়া উদ্যোগের অংশ হিসেবে চলছে তৃতীয় পর্যায়ের লকডাউন। ২৩ জুলাই থেকে চলমান এই লকডাউন চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সরকারি ছুটির দিন থাকায় ২৩ ও ২৪ জুলাই লেনদেন হয়নি পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হিসেবে রোববার সকাল ১০টায় শুরু হয়েছে লেনদেন।
লকডাউনের এই পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত করে নতুন সময় জানিয়েছে। যেখানে সকাল ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে পুঁজিবাজারের লেনদেন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বেলা ১টা পর্যন্ত।
রোববার থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুঁজিবাজারের লেনদেন হবে তিন ঘণ্টা। আগে লেনদেন হতো সাড়ে চার ঘণ্টা।
সূচকের ১৭ পয়েন্ট উত্থানে ৬ হাজার ৪০৫ পয়েন্ট থেকে উঠে আসে ৬ হাজার ৪২২ পয়েন্টে। এরপর সূচকের উত্থান-পতন থাকলেও ১০টা ১৮ মিনিটে সূচক পৌঁছে এ সময়ের সর্বোচ্চ অবস্থানে ৬ হাজার ৪৩৩ পয়েন্টে। এরপর সূচক কিছুটা নেমে এলেও ১০টা ২৮ মিনিটে আবারও সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে। ১০টা ৩৯ মিনিট থেকে আটকে যায় সূচকের গতি। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে অসামঞ্জস্য হতে থাকে লেনদেনের। ঘড়ির কাঁটায় যখন ১১টা, তখন সূচক দেখাচ্ছে ১০টা ৪৯ মিনিটের ৬ হাজার ৪০৬ পয়েন্ট। এ সময়ে সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট।
লেনদেনের এই সময়ে দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের শেয়ারের দর অনেকটাই ঊধ্বমুখী। এ সময়ে লেনদেন হওয়া ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ১৮টির শেয়ার দর বেড়েছে। তিনটি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে। বাকি ১০টি ব্যাংকের শেয়ার দর পাল্টায়নি।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এ সময়ে মাত্র তিনটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর কমেছে। দর বেড়েছে ২৩টি ফান্ডের। বাকি ১১টি ফান্ডের ইউনিটপ্রতি দর পাল্টায়নি।
বিমা খাতের প্রতিও বিনিয়োগকরীদের আগ্রহ দেখা গেছে। ফলে এ খাতের কোম্পানির শেয়ার দরও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। লেনদেন হওয়া ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৪৫টির। দর কমেছে দুটির। আর দর পাল্টায়নি চারটির।
লেনদেনের এ সময়ে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সদ্য তালিকাভুক্ত হয়ে লেনদেন শুরু করা বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২ টাকা ৩০ পয়সা।
দর বৃদ্ধির দিক দিয়ে তারপরেই আছে সিরামিক খাতের ফুয়াং সিরামিক, সাইনপুকুর সিরামিক। বস্ত্র খাতের রহিম টেক্সটাইল, বিমা খাতের সেন্টাল ইন্স্যুরেন্স। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সাইফ পাওয়ার।
আরও পড়ুন:গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর এটিকে হৃদয়বিদারক বলে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক অঙ্গ সংস্থা ইউনিসেফ।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক অফিসের প্রতিবেদনটির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে যে ১ হাজার ৪০০ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে শতাধিক শিশু ছিল। ইউনিসেফ এসব মৃত্যুর অনেকের বিষয়ে ইতোমধ্যে রিপোর্ট করেছে এবং মোট কত শিশু নিহত বা আহত হয়েছে, তা স্পষ্ট করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাদের প্রত্যেকের জন্য শোক প্রকাশ করছি।’
অভ্যুত্থানে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার চিত্রও তুলে ধরেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘এ সময় নারীদের বিক্ষোভে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার জন্য শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের হুমকিসহ নানা ধরনের জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার ঘটনার নথি পাওয়া গেছে।
‘শিশুরাও এই সহিংসতা থেকে রেহাই পায়নি; তাদের অনেককে হত্যা করা হয়, পঙ্গু করে দেওয়া হয়, নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হয়, অমানবিক অবস্থায় আটক করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়।’
বিবৃতিতে শিশুদের ওপর সহিংসতার তিনটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ফ্লাওয়ার্স।
তিনি বলেন, ‘একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে ধানমণ্ডিতে, যেখানে ২০০টি ধাতব গুলি ছোড়ার কারণে ১২ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলে মারা যায়। আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে নারায়ণগঞ্জে, সেখানে ছয় বছর বয়সী এক কন্যাশিশু তার বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে সংঘর্ষ প্রত্যক্ষ করার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়।
‘এই বিক্ষোভের সবচেয়ে ভয়ংকর দিন ৫ আগস্ট পুলিশের গুলি চালানোর বর্ণনা দিয়ে আজমপুরের ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে বলে, সব জায়গায় বৃষ্টিপাতের মতো গুলি চলছিল। সে অন্তত এক ডজন মৃতদেহ দেখতে পেয়েছিল সেদিন।’
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাগুলো অবশ্যই আমাদের সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলছে।’
বাংলাদেশের শিশুদের সঙ্গে আর কখনোই যেন এমনটি না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে দেশের সব মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
প্রাপ্ত এসব ফলাফলের আলোকে এবং এই মর্মান্তিক ঘটনা-বিষয়ক ইউনিসেফের আগের বিবৃতিগুলোর জের ধরে বাংলাদেশের সমস্ত নীতিনির্ধারক, গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও কর্মকর্তাদের বাংলাদেশের শিশু, যুবসমাজ ও পরিবারগুলোকে শারীরিক ও মানসিক ক্ষত সারিয়ে ওঠার পাশাপাশি আশা সঞ্চার করে তাদের এগিয়ে যেতে সহায়তা করতে আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
এ জন্য তিনটি বিশেষ ক্ষেত্রে জরুরিভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক অঙ্গ সংস্থাটি।
প্রথমত, যেসব শিশু প্রাণ হারিয়েছে, তাদের ও তাদের শোকাহত পরিবারের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
দ্বিতীয়ত, যারা এখনও আটক অবস্থায় আছে এবং যাদের জীবন কোনো না কোনোভাবে এই ঘটনাগুলোর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে, তাদের সবার জন্য পুনর্বাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একজোট হওয়া।
তৃতীয়ত ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এ সময়টাকে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য সার্বিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সব রাজনৈতিক নেতা, দল ও নীতিনির্ধারকদের পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একজোট হতে হবে, যাতে বাংলাদেশের কোনো শিশুকে আর কখনও এমন বিচার-বহির্ভূতভাবে ও যথাযথ প্রক্রিয়ার অভাবে আটক থাকতে না হয়। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে গিয়ে, যা তাদের অধিকার, তাদের যেন নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হতে না হয়। আর এভাবে বাংলাদেশের শিশুদের সুরক্ষা, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের অধিকার সমুন্নত রাখা সম্ভব।
আরও পড়ুন:দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর পর টেকনাফের নাফ নদীতে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি মিলেছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার বন্ধের কারণ দেখিয়ে ২০১৮ সালে নাফ নদীতে স্থানীয় জেলেদের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তখন থেকে প্রান্তিক জেলেরা আর্থিক সংকটের মুখে পড়েন।
এত বছর ধরে অনেক দেন-দরবারেও জেলেরা আর নামতে পারেননি নাফ নদীতে। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, ‘সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানার অভ্যন্তরে নাফ নদীতে শাহপরীর দ্বীপ হতে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।
‘জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবির পাঁচটি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন বা পরিচয়পত্র দেখাবেন এবং মাছ ধরা শেষে ফেরত আসার পর বিজিবির পোস্টে তল্লাশি করার ব্যাপারে বিজিবি সদস্যকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। কোনো জেলে চেক পোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবেন না। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করা যাবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে প্রদান করা হবে, যাতে কোনোক্রমেই নিবন্ধিত জেলে ব্যতীত কেউ নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পারে।
‘এই অনুমোদন সম্পূর্ণ সাময়িক। আগামী তিন মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, জেলেদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
টেকনাফ মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ বলেন, ‘নাফ নদীতে মাছ ধরার জন্য প্রাথমিকভাবে অনুমতি মিলেছে। এতে জেলেরা খুশি।
‘রাতে মাছ ধরার অনুমতি না পেলে জেলেদের পোষাবে না। কারণ রাতে বেশি মাছ পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পাশাপাশি আরও বাংলাদেশি কর্মী নিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আমিরাতের দুবাইয়ে দুই দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণের পাশাপাশি দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকগুলোতে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, বাণিজ্য ও ব্যবসার সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম বন্দরে আমিরাতি বিনিয়োগ পরিকল্পনা এবং ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি জানান, আমিরাতি কোম্পানিগুলোকে তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী থানি বিন আহমেদ আল জেয়ৌদি এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করলে ড. ইউনূস আমিরাতি ব্যবসার জন্য বিশেষ শিল্প পার্ক স্থাপনের বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দেন।
অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে একটি ‘হালাল পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে, যেখানে কম খরচে শ্রম সুবিধা পাওয়া যাবে।
এরপর আগামী কয়েক মাসের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করতে চান বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান আমিরাতের বাণিজ্যমন্ত্রী।
প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে তার সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী ও জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ।
ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস।
দুবাই বিমানবন্দরে শুক্রবার তাকে বিদায় জানান সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী ড. আহমদ বেলহৌল আল ফালাসি।
আরও পড়ুন:আক্ষরিক অর্থে বিদায় না নিলেও ঋতুরাজ বসন্তের আগমন আনুষ্ঠানিক বিদায় জানিয়ে দিয়েছে মাঘের সন্ন্যাসী শীতকে। দেশে এসেছে ফাগুন; শুরু হয়েছে আগুনরাঙা মাসের প্রথম দিনটি উদযাপন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় শুক্রবার ভোরে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘বসন্ত উৎসব ১৪৩১’।
‘জুলাই অভ্যুত্থান: আমার দ্রোহ-ভালোবাসার গান’ ব্যানারে ঢাবির কলা ভবনের সামনে ‘সমগীত বসন্ত উৎসব ১৪৩১’ দিয়ে শুরু হয় বসন্তের গান ও নৃত্য পরিবেশনা।
সমগীত আয়োজিত অনুষ্ঠানে লোকগীতির পাশাপাশি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সংগীতও পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
শুরুতে পাঠশালার নৃত্যশিল্পীরা নাচ পরিবেশন করেন। একই সঙ্গে পাহাড়ি ও চা বাগানের থিমে গানে অংশ নেন সমগীতের শিল্পীরা।
উপস্থিত কয়েকজন ইউএনবিকে জানান, সকালে উঠেই এখানে চলে এসেছেন বসন্ত উৎসব দেখতে। এরপর বইমেলায় যাবেন। দিনভর উৎসবটি উদযাপন করবেন।
উৎসবে আসা একজন বলেন, ‘বসন্ত আমাদের প্রাণের উৎসব। একই দিনে ফাগুনের প্রথম দিন ও ভালোবাসা দিবস হওয়ায় দিনটি আরও বেশি উপভোগ করছি।’
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে দুই সন্তানকে বিষ পান করিয়ে হত্যার পর বাবা একই উপায়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চুনারুঘাটের আতিকপুর গ্রামে শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
ওই তিনজন হলেন চুনারুঘাট উপজেলার আতিকপুর গ্রামের আবদুর রউফ (৩২) এবং তার দুই সন্তান আয়েশা আক্তার (৩) ও খাদিজা আক্তার (৫)।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, আবদুর রউফ বিদেশে যাওয়ার জন্য স্থানীয় এক দালালের কাছে টাকা দিলেও বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এ নিয়ে সম্প্রতি তার স্ত্রী হাফসার সঙ্গে ঝগড়া হয়। এর জেরে দুই দিন আগে হাফসা দুই শিশু সন্তানকে রেখে এক বছরের অপর শিশুকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।
পুলিশ আরও জানায়, পারিবারিক বিষয় নিয়ে ক্ষোভ ও অভিমানে আবদুর রউফ শুক্রবার ভোররাতে প্রথমে তার দুই সন্তানকে বিষ পান করিয়ে নিজে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রথমে দুই সন্তান ও পরে আবদুর রউফকে মৃত বলে জানান।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূর আলম জানান, পারিবারিক কলহের জেরে আবদুর রউফ সন্তানদের বিষ পান করানোর পর নিজেও বিষ পানে আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন:যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় শুক্রবার রাতে দেশজুড়ে পালন করা হবে পবিত্র শবে বরাত।
হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ গভীর রাতটি মুসলমানরা শবে বরাত বা সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে পালন করে থাকেন। রাতটি লাইলাতুল বরাত হিসেবেও পরিচিত।
পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন। এ উপলক্ষে শনিবার সরকারি ছুুটি থাকবে।
বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম জনগোষ্ঠীকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘এ সৌভাগ্যময় রজনী মানব জাতির জন্য বয়ে আনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমত ও বরকত। এ রাতে আল্লাহপাক ক্ষমা প্রদান ও প্রার্থনা পূরণের অনুপম মহিমা প্রদর্শন করেন।’
পবিত্র এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ হয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ মহিমাময় রাতে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আমরা মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি; অর্জন করতে পারি তার অসীম রহমত, বরকত, নাজাত ও মাগফিরাত।’
পবিত্র শবে বরাতের মাহাত্ম্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানব কল্যাণ ও দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আসুন, সকল প্রকার অন্যায়, অনাচার, হানাহানি ও কুসংস্কার পরিহার করে আমরা শান্তির ধর্ম ইসলামের চেতনাকে ব্যক্তি, সমাজ ও জাতীয় জীবনের সকল স্তরে প্রতিষ্ঠা করি।’
এ রাতে বাসাবাড়ি ছাড়াও মসজিদে মসজিদে নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করতে কোম্পানিটির প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে আলোচনা করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ভিডিও কলে আলোচনার সময় ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে মাস্কের কোম্পানির সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়েও তারা আলাপ করেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে অবস্থানরত প্রধান উপদেষ্টা স্পেসএক্স ও টেসলার প্রধান ইলন মাস্কের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকারবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার ও গ্লোবাল এঙ্গেজমেন্ট অ্যাডভাইজার রিচার্ড গ্রিফিথস।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ইলন মাস্কের সঙ্গে আলাপকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের স্যাটেলাইট যোগাযোগের রূপান্তরমূলক প্রভাব, বিশেষ করে বাংলাদেশের উদ্যোগী তরুণ, গ্রামীণ ও ঝুঁকিপূর্ণ নারী এবং প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব নিয়ে কথা বলেন।
উচ্চগতির ও স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ কীভাবে বাংলাদেশের ডিজিটাল বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন ড. ইউনূস ও ইলন মাস্ক।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের কানেক্টিভিটি যুক্ত করা হলে লাখ লাখ মানুষের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে দেশকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে একীভূত করা যাবে।
তিনি বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রযুক্তিতাড়িত সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্ণ সম্ভাবনা উন্মোচনে মাস্কের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, স্টারলিংক গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ পল্লী ফোনের একটি সম্প্রসারিত অংশ হতে পারে, যা গ্রামের নারী ও তরুণদের বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তারা বৈশ্বিক উদ্যোক্তায় পরিণত হবে।
ইলন মাস্ক ওই সময় গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করে দারিদ্র্য বিমোচনে এর বৈশ্বিক প্রভাবের কথা জানান।
টেসলা মোটরসের প্রতিষ্ঠাতা জানান, গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণফোন উভয়ের কাজের ব্যাপারেই তিনি অনেক বছর ধরে জানেন।
মাস্ক বলেন, স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে কাজে লাগালে বাংলাদেশে উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আরও ত্বরান্বিত হতে পারে বলে তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য