পুঁজিবাজারে উত্থান অব্যাহত আছে। ঈদের আগের শেষ কর্মদিবসের শুরুতে সূচকের পতন হলেও ব্যাংক ও বিমার দর বৃদ্ধিতে ভর করে সূচক এবার ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ৬ হাজার ৪০০ পয়েন্টের ঘর অতিক্রম করল।
২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি নতুন সূচক ডিএসইএক্স চালুর পর সর্বোচ্চ অবস্থানের রেকর্ড আগেই ভেঙেছিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। সামনে ছিল আগের সূচকের আরেক ধাপ ৬ হাজার ৩৮৯ পয়েন্ট।
ঈদের ছুটিতে ছয় দিনের বিশ্রামে যাওয়া পুঁজিবাজারে এই ডিএসই সূচক অতিক্রম করে কি না, এ নিয়ে অপেক্ষায় লেনদেনের শুরুতে সূচক পড়ে যায় আগের দিনের তুলনায়।
এক পর্যায়ে ১৩ পয়েন্ট পড়ে গেলেও পরে ব্যাংক ও বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর দাম বাড়তে থাকায় সূচকে যোগ হতে থাকে পয়েন্ট। বেলা ১টা ৩৩ মিনিটে সূচক ৬ হাজার ৪০২ পয়েন্টে পৌঁছে।
দিন শেষে সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৪০৫ পয়েন্ট। এর চেয়ে বেশি সূচক ছিল ২০১১ সালের ৩১ জুলাই, ৬ হাজার ৪৫৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।
সূচক বাড়লেও ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে বিনিয়োগকারীরা যে শেয়ার কেনাবেচায় অনেকটাই সতর্কতা দেখিয়েছেন, সেটি লেনদেনের চিত্রেই স্পষ্ট। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৬০০ কোটি টাকারও বেশি।
সূচকে বেশ ভালো পরিমাণ পয়েন্ট যোগ হলেও এদিন কমেছে বেশির ভাগ শেয়ারের দাম।
অনেক দিন পর সর্বাধিক দর বৃদ্ধির তালিকায় বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর আধিক্য দেখা গেছে। এই খাতের দাম এক বছরে কয়েক গুণ বাড়ার পর সাম্প্রতিক দর সংশোধনে শেয়ারধারীদের মধ্যে যে হতাশা দেখা দিয়েছিল, সেটি কাটবে কি না, এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে মুহূর্তেই।
হতাশা কাটিয়ে ব্যাংক খাতও অন্তত এক দিন কিছুটা স্বস্তি দিল শেয়ারধারীদের। তবে আগের দিন তুমুল আলোচনায় থাকা মিউচ্যুয়াল ফান্ড এদিন হতাশ করেছে। দর হারিয়েছে প্রায় সবগুলো। লেনদেনও হয়েছে কম।
বস্ত্র খাতে সকালে পতন হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেষ বেলায়। আগের দিনের উত্থান ধরে রাখতে পারেনি জ্বালানি খাতও। আবার ব্যাংকের চাঙাভাবের প্রভাব পড়েনি আর্থিক খাতে।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, ওষুধ ও রসায়ন এবং প্রকৌশলের মতো বড় খাতগুলোতেও দর পতন ঘটেছে।
বিমার ঘুরে দাঁড়ানো
গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি এরপর গত এপ্রিল থেকে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত অবিশ্বাস্য উত্থান দেখেছে বিমা খাত। তবে এক মাস ধরেই দর সংশোধনের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা দেখা গিয়েছিল। তারা অপেক্ষায় ছিলেন কবে ঘুরে দাঁড়াবে।
ঈদের ছুটির আগে দ্বিতীয় শেষ কর্মদিবসেও প্রায় সব বিমা কোম্পানির দরপতন এবং ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসের শুরুতেও দর হারায় বেশিরভাগ কোম্পানি। তবে সময় গড়াতে থাকলে পাল্টে যায় পরিস্থিতি।
এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দুটির লেনদেন স্থগিত ছিল। বাকিগুলোর মধ্যে দর কমেছে দুটির, একটির দর ছিল অপরিবর্তিত। বেড়েছে বাকি ৪৬টির।
পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের দর আপাতদৃষ্টিতে কমতে দেখা গেলেও আসলে কিন্তু বেড়েছে। শেয়ার প্রতি ২ টাকা নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছে কোম্পানিটি। রেকর্ড ডেটের কারণে রোববার ছিল স্থগিত। তার আগের দিন দাম ছিল ১৫৬ টাকা ৭০ পয়সা। ১০ শতাংশ শেয়ার যোগ হওয়ায় সমন্বয়কৃত দাম দাঁড়ায় ১৪১ টাকা ১০ পয়সা। কিন্তু দিন শেষে দাম দাঁড়ায় ১৪৪ টাকা ৬০ পয়সা।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের দর। আগের দিনের সঙ্গে ৯.৯৮ শতাংশ যোগ হয়ে দাম দাঁড়িয়েছে ৬৩ টাকা ৯০ পয়সা।
সেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের দরও বেড়েছে ৯.৪৭ শতাংশ। ৫৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা ১০ পয়সা।
ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের দর ৫৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৯.১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা ১০ পয়সা।
পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৮.১৩ শতাংশ, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের দর ৭.৯৬ শতাংশ। নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্সের ৬.৬৫ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের ৬.১৯ শতাংশ দাম বেড়েছে।
প্রাইম, ফিনিক্স, বিজিআইস, রূপালী লাইফের দর ৬.১৮ থেকে ৫.৪৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
সবচেয়ে বেশি ৩.৯২ শতাংশ পড়েছে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের। ডেল্টা লাইফ ও ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে খুবই কম পরিমাণে।
এই খাতের লেনদেন মোট ১৬৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
ঝিমুনি ভেঙে ব্যাংকের ঝলক
পুঁজিবাজার নতুন উচ্চতায় উঠার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হতাশা সম্ভবত ব্যাংক খাত নিয়ে। একের পর এক ভালো খবরের প্রভাবও পড়েনি শেয়ারদরে। কোনো একদিন কিছু বাড়লে পরের কয় দিনে এর চেয়ে বেশি পড়ে ধীরে ধীরে। এভাবে একটি বৃত্তেই চলছিল ঘুরপাক।
এই খাতও জাগবে-এমন কথা বলাবলি হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই। তবে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল না। দাম কমতে থাকায় নতুন করে শেয়ার কেনায় আগ্রহ মানুষ দেখিয়েছে কম। খাতওয়ারী বাজার মূলধন ও শেয়ার সবচেয়ে বেশি হলেও লেনদেন রোববার কমে একশ কোটি টাকার নিচে নেমে আসে।
তবে ঈদের আগের দিন দুপুরের আগে আগে এই খাতের শেয়ারে নড়চড় শুরু হয়।
তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের দর বেড়েছে ২৫টির। কমে মাত্র দুটির। আর পাল্টায়নি চারটির।
আগের দিনের তুলনায় লেনদেন ৩৩ শতাংশ কমলেও এই খাতে লেনদেন বেড়ে আবার একশ কোটির ঘর অতিক্রম করে হয় ১১২ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
দর বৃদ্ধির তালিকার শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাতের সবচেয়ে দুর্বল লোকসানি আইসিবি ইসলামী ব্যাংক। শতকরা হিসাবে দর বেড়েছে ৩.৯২ শতাংশ।
এছাড়া এনআরবিসির দর ৩.২৭ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার ৩.১৯ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংকের ২.৭০ শতাংশ, ডাচ বাংলা ব্যাংকের ২.৬২ শতাংশ, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ২.৩২ শতাংশ বেড়েছে।
বাকি ব্যাংকগুলোর দর ১০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আর কমার তালিকায় থাকা ট্রাস্ট ব্যাংক ২০ পয়সা আর ইসলামী ব্যাংক কমেছে ১০ পয়সা।
ব্র্যাক, এমটিভি, মার্কেন্টাইল ও ওয়ান ব্যাংকের দর পাল্টায়নি।
তুমুল আগ্রহের পর দিন মিউচ্যুয়াল ফান্ডে পতন
গত দুই দিনে এই খাতে লেনদেন ছিল যথাক্রমে ১৪০ কোটি ও ২০৫ কোটি টাকা। তবে তৃতীয় ঈদের ছুটিতে যাওয়ার আগের দিন দর হারিয়েছে প্রায় সব কটি ফান্ড। লেনদেনও কমেছে অনেক।
আটটি ফান্ডের দর পাল্টায়নি, দর হারিয়েছে ২৮টি আর একটির লেনদেন হয়নি।
এই খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ৯৪ কোটি টাকা।
সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৫.০৫ শতাংশ। ইউনিট প্রতি দর ২১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২০ টাকা ৭০ পয়সা। এরপরই আছে ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, যার ইউনিট প্রতি দর কমেছে ৪.০৮ শতাংশ।
সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামী মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর কমেছে ৪ শতাংশ। ইউনিট প্রতি দর ২৫ টাকা থেকে কমে হয়েছে ২৪ টাকা।
এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ডের ইউনিট প্রতি দর কমেছে ৩.৭৩ শতাংশ। ইউনিট প্রতি দর ১৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১২ টাকা ৯০ পয়সা।
ফিনিক্স ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি দর কমেছে ৩.৪২ শতাংশ। আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর কমেছে ৩.১০ শতাংশ। ভ্যানগান্ড এএমএল বিডি ফিন্যান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ান এর ইউনিট প্রতি দর কমেছে ২.৯৭ শতাংশ।
অন্যান্য খাতের চিত্র
টাকার অংকে লেনদেনের শীর্ষে টানা দ্বিতীয় দিন প্রকৌশল খাত, ৪২ টি কোম্পানির হাতবদল হয়েছে ১৩৭ কোটি টাকা।
দর বেড়েছে ১২টি, কমেছে ২৮টির, পাল্টায়নি দুটির।
বস্ত্র খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ১১৪ কোটি টাকা। ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৭টির, কমেছে ২১টির। বাকি ১০টি কোম্পানির শেয়ার দর পাল্টায়নি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে লেনদেন হয়েছে ৬৯ কোটি টাকা। ২৩ টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টির দর কমেছে, দর বেড়েছে সাতটি কোম্পানির। দর পাল্টায়নি দুটির।
ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাতের লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার। ২৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ১০টির। দর কমেছে আটটির। দর পাল্টায়নি পাঁচটির।
সূচক ও লেনদেন
সোমবার ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৯ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪০৫ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক ৮ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৮৭ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৬ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২২ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে মোট ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৯০ দশমিক ২১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৬৯ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ৪৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য