দিনভর ওঠানামার পর শেষ বেলায় ক্রয় চাপে পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে বটে। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা যে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক, সেটি উঠে আসছে লেনদেনের চিত্রে।
গত মাসে দুই হাজার কোটি বা তার চেয়ে বেশি লেনদেনই ছিল এক নিয়মিত ঘটনা। সেখানে এখন দেড় হাজার কোটির আশপাশেই থাকছে তা।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার, যা আগের দিনের চেয়ে বেশ কম। বুধবার পতনের বাজারে লেনদেন ছিল ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।
বিনিয়োগ নিয়ে সতর্কতার দিনটি বিমা খাতের শেয়ারধারীদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। কারণ, এই খাতের শেয়ারের দাম ক্রমাগত পড়ছিলই। তবে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্য ৩৭টিরই দর বেড়েছে।
তবে এদিন চাঙা ছিল মূলত ওষুধ ও জ্বালানি খাতের শেয়ার দর।
কেপিসিএলের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র আবার চালুর আবেদন অনুমোদনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও প্রজ্ঞাপন আসছে না। এই পরিস্থিতিতে চাঙা পুঁজিবাজারে বলতে গেলে গোটা খাতই ঝিমাচ্ছিল।
তবে আজ এই খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬টির। তবে কেপিসিএল সেই ঝিমুনিতেই, বাড়েওনি, কমেওনি।
ওষুধ ও রসায়ন খাতে মাঝেমধ্যে ঝিলিক দেখা গেলেও অর্থবছর শেষ হওয়ায় এখন লভ্যাংশের মৌসুমেও সেভাবে জাগছিল না।
এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন স্থগিত দীর্ঘদিন ধরে। বাকিগুলোর মধ্যে কমেছে তিনটির। আর বেড়েছে বাকি ২৭টির দর।
আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণা করা ও চলতি বছর অর্ধবার্ষিকীতে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে মুনাফা করা ব্যাংক খাত মন্দা অবস্থা থেকে বের হতে পারেনি এদিনও। ৩১টি কোম্পানির মধ্যে ৬টির দাম বেড়েছে ১০ পয়সা করে। ৯টির দাম ছিল অপরিবর্তিত। আর কমেছে বাকি ১৬টির। দাম বৃদ্ধির হার যেমন খুবই কম, তেমনি যেগুলোর দাম কমেছে, সেগুলোর পতনের হারও বেশি নয়। চারটি ছাড়া বাকিগুলোর দাম কমেছে ১০ থেকে ২০ পয়সা করে। আর সবচেয়ে বেশি ৭০ পয়সা দর হারিয়েছে এনআরবিসি ব্যাংক।
শাটডাউনের সপ্তাহে টানা চাঙাভাব থাকা মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত কিছুটা দর হারিয়েছে। ইউনিটপ্রতি ১০ থেকে ৩০ পয়সার মধ্যে কমেছে বেশির ভাগের।
আলোচিত অন্য খাত বস্ত্রের বেশির ভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। লেনদেনও দুই শ কোটি টাকার আশপাশে নেমে এসেছে।
শাটডাউনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় লেনদেন হয়েছে এদিন। সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত লেনদেন সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত হলেও আজ হয়েছে ২টা পর্যন্ত।
বিনিয়োগে আবারও চাঙা বিমা
গত কয়েক দিন ধরে হারিয়ে যাওয়া বিমা কোম্পানি তার দাপট আবারও দেখাল বৃহস্পতিবার। লেনদেনে বিমা খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির। দর কমেছে ১২টির। আর দর পাল্টায়নি ২টির।
এরই সঙ্গে আবারও দর বৃদ্ধির বেশিরভাগ স্থান দখলে নিয়েছে বিমা। নতুন লেনদেনে আসা সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পাঁচ দিন লেনদেনে প্রতিদিনই বেড়েছে দিনে যতটুকু বাড়া সম্ভব।
এই কোম্পানি থেকেই নতুন নিয়মে আনুপাতিকহারে শেয়ার বণ্টন শুরু হয়েছে। প্রতি বৈধ আবেদনকারী ১০ টাকার আবেদনে পেয়েছেন ১৭টি শেয়ার। ফলে প্রাপ্ত শেয়ার কম হওয়ায় কেউই শেয়ার বিক্রি করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। প্রতিদিনই প্রায় ৪ থেকে ৫ কোটি শেয়ার ক্রয়ের আবেদন থাকলেও বিক্রি করছেন না কেউ।
বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৫৮ শতাংশ। হাতবদল হয়েছে ৯০৭টি শেয়ার, যার বাজার মূল্য ছিল ১৫ হাজার টাকা।
এরপরেই ছিল ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। একই সঙ্গে শেয়ার প্রতি দর ১১৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২৫ টাকা ৭০ পয়সা।
স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। একই সঙ্গে শেয়ার প্রতি দর ৬৯ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৪ টাকা।
তবে বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সাড়ে তিন শতাংশ পর্যন্ত। তালিকাভুক্ত রিলায়েন্স ও সন্ধানী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
তাকাফুল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ। পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স এবং প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ১ দশমিক ৩১ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
প্রকৌশল খাতেও দর বাড়ার হাতছানি
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে চমক দেখিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাত। এখাতে তালিকাভুক্ত ৪২টি কোম্পানির মধ্যে সিঙ্গারবিডি ছাড়া বাকি ৪১টি কোম্পানির অর্থবছর শেষ হয়েছে জুন মাসে।
সম্প্রতি এই খাতের কয়েকটি কোম্পানি তাদের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশের পর শেয়ারের দাম বেড়েছে ব্যাপকভাবে।
বৃহস্পতিবার লেনদেনে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির মধ্যে চারটি ছিল প্রকৌশল খাতের। এ খাতের লেনদেন হওয়া ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৪টির। দর কমেছে ১৬টির। দর পাল্টায়নি দুটির।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধির কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিজ পাইপের শেয়ার দর বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৭ টাকা ৮০ পয়সা। লেনদেনে হাতবদল হয়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৫৫টি শেয়ার, যার বাজার মূল্য ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
আনোয়ার গ্যালভালাইজিং লিমিটেডের শেয়ার দর শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর ২০৭ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২৪ টাকা ৪০ পয়সা। কোম্পানিটির ৫ লাখ ৯৫ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যার বাজার মূল্য ছিল ১২ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
মুন্নু অ্যাগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনাররিজ লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি দর ৫৬৭ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬১০ টাকা ৩০ পয়সা।
বাংলাদেশ অটোস লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৮১ হাজার ৯৬৯টি, যার বাজারমূল্য ১ কোটি ১১ লাখ টাকা।
অনাগ্রহে মন্দা ব্যাংকে
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সবচেয়ে ফান্ডামেন্টাল বা ভালো খাত হিসেবে ব্যাংক খাতের সুনাম রয়েছে। কিন্ত এ খাতের শেয়ারের দরই সবচেয়ে বেশি মন্দায় থাকে। বিশেষ করে কোনো কোম্পানি যখন লভ্যাংশ ঘোষণার পর রেকর্ড ডেটের পর প্রথম লেনদেন হয় তখন সেই কোম্পানির শেয়ারের কোনো সার্কিট ব্রেকার থাকে না। ফলে ওই কোম্পানির শেয়ার দর বাড়া বা কমার ক্ষেত্রে কোনো বিধি নিষেধ থাকে না।
ট্রাস্ট ব্যাংক তার শেয়ারধারীদের ২০২০ সালের জন্য ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যার রেকর্ড ডেট ছিল ৭ জুলাই। ওই দিন ব্যাংকটির লেনদেন বন্ধ ছিল। পরদিন ৮ জুলাই ব্যাংকটির শেয়ারের কোনো সার্কিট ব্রেকার ছিল না। কিন্ত তারপরও ব্যাংকটির শেয়ার দর বাড়ার চেয়ে বরং কমেছে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
লেনদেন ব্যাংকটির ৩৮ টাকা ৮০ পয়সার শেয়ার কমে হয়েছে ৩৪ টাকা ৪০ পয়সা।
গত কয়েকদিন ধরে দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা ব্যাংক খাতের সবচেয়ে দুর্বল ব্যাংক আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর বৃহস্পতিবার কমেছে ৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৪ টাকা ৭০ পয়সা।
প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এবি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে দশমিক ৯৪ শতাংশ।
এদিন ব্যাংক খাতের লেনদেন হওয়া ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ছয়টির। দর কমেছে ১৬টির। দর পাল্টায়নি নয়টির। এ খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ৮০ কোটি টাকা।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
বস্ত্র খাতের লেনদেন হওয়া ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ১৭টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। চারটির দর পাল্টায়নি। বাকি ৩৭টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দিনের সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বৃদ্ধি পেয়েছে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল লিমিটেডের। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৪ টাকা ৯০ পয়সা।
এছাড়া এইচআর টেক্সটাইল লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৫০ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা ৬০ পয়সা।
নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে তালিকাভুক্ত ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বৃহস্পতিবার দর বেড়েছে মাত্র পাঁচটির। দর পাল্টায়নি একটির। বাকি ১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর কমেছে। এদিন নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ৭৭ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের তালিকাভুক্ত ২২টি কোম্পানির মধ্যে বৃহস্পতিবার লেনদেনে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে চারটির। বাকি দুটি কোম্পানির শেয়ার দর পাল্টায়নি।
গত দুই কার্যদিবসে দর বৃদ্ধিতে চমক দেখিয়ে বৃহস্পতিবার অনেকটাই মন্থর ছিল মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো। এদিন ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র দুটির। কমেছে ২৭টির। আর বাকি আটটির দর পাল্টায়নি।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১২১ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ১৪ দশমিক ০৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১৪ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৬ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৪৮ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৯১টির, কমেছে ১৫৫টির। দর পাল্টায়নি ২৮টির।
বৃহস্পতিবার মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৯১ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ১২০ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ১ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ৭৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য