এক বছর ধরে পুঁজিবাজারে যে চাঙাভাব, তা থেকে যেন বাইরে জ্বালানি খাত। দাম একেবারে যে বাড়েনি, এমন নয়, তবে বৃদ্ধির হার খুবই কম।
গত বছরের ৫ জুলাই থেকে এক বছরে পুঁজিবাজারের সূচকে যোগ হয়েছে ২ হাজার ১৯৬ পয়েন্ট। শতকরা হিসেবে সূচক বেড়েছে ৫৫ পয়েন্ট। কিন্তু জ্বালানি খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে বলার মতো দাম বেড়েছে চারটি কোম্পানির।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মোট কোম্পানির সংখ্যা ২২টি। এর মধ্যে তিনটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে এক বছরেরও কম সময়ে। বাকি ১৯টি কোম্পানির মধ্যে এক বছর আগের যে দাম, তার চেয়ে কমেছে তিনটির। একটির দাম রয়েছে প্রায় সমান।
বাকিগুলোর মধ্যে দুটির দাম বেড়েছে ১০ শতাংশেরও কম, চারটির দাম ১০ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে। চারটির দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে। ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে বাকি ৫টি কোম্পানির দাম, যার মধ্যে একটির দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ১৭০ শতাংশ।
এই খাত নিয়ে এই হতাশাজনক চিত্রের পেছনে খুলনা পাওয়ার বা কেপিসিএলের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র অনুমোদন নিয়ে বিলম্বকে দায়ী করা হচ্ছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে বক্তব্য এসেছে যে, বিশেষ শর্তে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়বে। অনুমোদনের চিঠি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবও। তবে সরকারের পক্ষ থেকে অনুমোদনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেকোনো সেক্টরের একটি খবর পুরো সেক্টরকে প্রভাবিত করতে পারে। বিমা খাতের উত্থান বিমার এজেন্ট কমিশন বাতিল, পরিচালকদের শেয়ার ধারণের ওপর ভিত্তি করেই কিন্তু বেড়েছে। এখন এমন কোনো খবর নেই, তাই বিমা নিয়ে হইচইও নেই।’
তিনি বলেন, ‘কেপিসিএল নিয়ে জটিলতা হয়েছে সেটি এ ধরনের অন্য কোম্পানির ক্ষেত্রেও হবে না, সেটি বলা যাবে না। কারণ, কোন কোম্পানির কী সমস্যা, সেটি বিনিয়োগকারীরা কখনও খোঁজ নেয় না। তারা শুধু দেখে কোন শেয়ারের দাম বাড়ছে।’
গত বছরের মার্চে করোনা সংক্রমণের পর আতঙ্কে পুঁজিবাজারে শেয়ার দরে ধস নামে। ৯ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ক্রমাগত পতনের মধ্যে ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটিতে বন্ধ থাকে লেনদেন। ফলে ৬ জুলাই লেনদেন শুরু হলে যে দরে লেনদেন হচ্ছিল, তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সে সময় শেয়ারের সর্মনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইসে ছিল।
এরপর গত এক বছরে আলোচনায় না থাকলেও কয়েকটি ব্যাংকের শেয়ার ছাড়া বেশিরভাগ কোম্পানির দর ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। প্রায় সব মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দরও বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। বিমার শেয়ার ৩ থেকে ৫ গুণ হয়েছে।
বড় অন্য খাতের মধ্যে বস্ত্র, ওষুধ ও রসায়ন খাতেরও বেশ দর বেড়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে পাঁচটি কোম্পানি ছাড়া বাকিগুলোর অবস্থা হতাশার মধ্যেই।
এই সময়ে কোম্পানির ব্যবসা খারাপ হয়েছে এমন নয়। ১০ শতাংশের বেশি দর হারানো সিভিও পেট্রোক্যামিকেলের আয় কেবল আগের চেয়ে কমেছে। তবে সবচেয়ে বেশি দর হারানো খুলনা পাওয়ার বা কেপিসিএলের আয় কিন্তু গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বেড়েছে।
কেপিসিএল নিয়ে কী হচ্ছে?
এর তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আগেই। আর দুটি কেন্দ্র বন্ধ হয়েছে মে মাসে। এখন কেবল একটি সহযোগী কোম্পানির ১৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৩৫ শতাংশের মালিকানার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
যদিও খুলনায় ১১০ ও ৪০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। আর সেগুলো অনুমোদনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। তবে চূড়ান্ত ঘোষণা আসছে না। আর এ কারণেই বিনিয়োগকারীরা নিজেদের গুটিয়ে রেখেছেন।
আর কেপিসিলের এই অভিজ্ঞতার পর মেয়াদি আরও কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার নিয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। আর এ কারণে লেনদেনে খুব একটি গতি নেই খাতটিতে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি অনুমোদনের সুপারিশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনাও করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
তিনি জানিয়েছেন, নো ইলেকট্রিসিটি, নো পে ভিত্তিতে দুই বছরের জন্য অনুমোদনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ না কিলেও আগে কেন্দ্র বসিয়ে সরকার যে ক্যাপাসিটি চার্জ দিত, সেটি আর দেবে না।
বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তাও সরকারের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কেপিসিএল ছাড়াও সামিট এবং ওরিয়ন ইনফিউশনের বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদও বাড়ানো হবে একই নীতিমালায়। তবে ৩০ জুন অর্থবছর শেষ হলেও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সচিব সাইফুল ইসলাম আজাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শেয়ার বাজারের তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও এখনও কোনো জবাব পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চিঠি পাঠিয়েছি। সেটা মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কেপিসিএলের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা সোহরাব আলী খান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো কিছু জানানো হয়নি। আর এ বিষয়ে নতুন কোনো আপডেট থাকলে তা পাইস সেনসেটিভ ইনফরমেশন (পিএসআই) হিসেবে বিনিয়োগকারীদের জানানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পর্যায় থেকে আলোচনা হচ্ছে প্লান্ট দুটি নবায়নের বিষয়ে। বিএসইসি ও এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করছে। কিন্তু কোনো চিঠি না পেলে এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
সাত বিদ্যুৎকেন্দ্রের কী চিত্র
খুলনা পাওয়ার বা কেপিসিএলের দাম এক বছর আগে ছিল ৪৫ টাকা ৩০ পয়সা। বুধবার দাম দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ১০ পয়সা। এই সময়ে দাম কমেছে ১৮ দশমিক ১০ শতাংশ্
শাহজিবাজার পাওয়ারের দাম এক বছর আগে ছিল ৭২ টাকা ৪০ পয়সা। বুধবার দাম দাঁড়িয়েছে ৭২ টাকা ৬০ পয়সা। দাম বেড়েছে মাত্র ০ দশমিক ২৭ শতাংশ। ২০১৯ সালের জুলাইয়ের শুরুতে সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ৮৩ টাকা ৬০ পয়সা।
এক বছর আগে ডরিন পাওয়ারের সর্বনিম্ন ছিল ৫৭ টাকা ১০ পয়সা। বুধবার দাম দাঁড়িয়েছে ৬৬ টাকা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা ৫৮ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। তবে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ৭৭ টাকা ২০ পয়সা।
সামিট পাওয়ারের দাম এক বছর আগে সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল ৩৫ টাকা ৭০ পয়সা। বুধবার দাম দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ২৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। দুই বছর আগে জুলাইয়ের শুরুতে দাম ছিল ৪০ টাকা ৯০ পয়সা।
ইউনাইটেড পাওয়ারের শেয়ারের দাম গত বছরের জুলাইয়ের শুরুতে ছিল ২২০ টাকা ২০ পয়সা। সেটি বেড়ে হয়েছে ২৭৩ টাকা ১০ পয়সা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ০২ শতাংশ। তবে ২০১৯ সালের জুলাইয়ের শুরুতে দাম ছিল অনেক বেশি, ৩৭৩ টাকা ৯০ পয়সা।
সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়া জিবিবি পাওয়ার ছাড়া নতুন তালিকাভুক্ত হওয়া বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বারাকা পাওয়ারের দামই বলার মতো বেড়েছে।
গত বছরের জুলাইয়ের শুরুতে এই কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ২০ টাকা ৬০ পয়সা। আর বুধবার দাম ছিল ২৮ টাকা ৭০ পয়সা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। তবে ২০১৯ সালের জুলাইয়ের তুলনায় দাম এখনও কম। সে সময় দাম ছিল ২৯ টাকা।
তবে জিবিবি পাওয়ারের শেয়ারধারীরা সবচেয়ে ভীষণ খুশি। প্রায় ৩ গুণ দাম হয়ে গেছে কোম্পানিটির। গত বছরের জুলাইয়ের শুরুতে দাম ছিল ১২ টাকা ৪০ পয়সা। বুধবার দাম বেড়ে হয়েছে ৩৩ টাকা। এক বছরে দাম বেড়েছে ১৭০ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে দাম ছিল আরও কম। ১১ টাকা।
জ্বালানি খাতের অন্য কোম্পানিগুলোর কী অবস্থা।
বিদ্যুৎ বিতরণে সরকার সংস্থা ডেসকোর শেয়ারদর পুঁজিবাজারের উল্লম্ফনের বছরে কমেছে ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এর চেয়ে বেশি কমেছে সিভিও পেট্রোক্যামিকেলের দর। ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ দর হারিয়েছে এই কোম্পানিটি।
করোনার বছরে অক্সিজেন উৎপাদনকারী বহুজাতিক কোম্পানি লিনডে বাংলাদেশও টানতে পারেনি বিনিয়োগকারীদের। এই এক বছরে কেবল ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ দাম বেড়েছে কোম্পানিটির।
করোনাকালে সরকারি যেসব কোম্পানির ব্যবসায় খুব একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি, তার মধ্যে আছে জ্বালানি তেল সরবরাহ সংস্থাগুলো। কিন্তু মেঘনা পেট্রোলিয়াম করোনা সংক্রমণের পর যে দর হারিয়েছিল, সেখান থেকে উত্তরণ ঘটাতে পেরেছে কমই। এক বছরে শেয়ারদর বেড়েছে কেবল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। পদ্মা ওয়েলের দাম এই সময়ে বেড়েছে ২০ দশমিক ৭৫ শতাংশ আর যমুনা অয়েলের ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
বেসরকারি ইঞ্জিন অয়েল বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মোবিল যমুনার দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ।
গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থা তিতাস গ্যাসের শেয়ারদর এই সময়ে বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭৯ আর বিদ্যুৎ সরবরাহকারী পাওয়ার গ্রিডের ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ।
শক্তিশালী আর্থিক ও মৌল ভিত্তির এসব কোম্পানির তুলনায় বন্ধ থাকা বিডি ওয়েল্ডিংয়ের শেয়ারদর বেড়েছে আরও বেশি, ২৮ শতাংশ। আর ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ৭১ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
তবে সরকারি প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট গত বছর করোনা সংক্রমণের সময় যে দর হারিয়েছিল, সেটি ফিরে পেয়েছে। গত জুলাই থেকে এক বছরে ৫৪ দশমিক ০৫ শতাংশ দাম বেড়েছে কোম্পানিটির। বুধবারের দাম ১ হাজার ৩২৩ টাকা ৬০ পয়সা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য