গত এক বছরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর সম্পদমূল্যে ব্যাপক বৃদ্ধির তথ্য মিলেছে। একটি ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে সর্বোচ্চ ৬৫ শতাংশ। সবচেয়ে কম বেড়েছে যেটির, সেটিও বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।
২০২০ সালের ৮ মার্চ করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর পুঁজিবাজারে যে ধস নামে, সে কারণে জুন ক্লোজিং ফান্ডগুলোর বেশির ভাগই ব্যাপক লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
তবে ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে ৭ জুন লেনদেন শুরুর পর থেকে এক বছরে পুঁজিবাজারে যে দুই হাজার পয়েন্টের বেশি উত্থান হয়েছে, তাতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও হয়েছে স্ফীত। যে ফান্ডগুলোর ক্রয়মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছিল, সেগুলোও এখন ক্রয়মূল্যের কাছাকাছি চলে গেছে। আর বেশির ভাগ ফান্ডের ক্রয়মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি।
নিউজবাংলা হিসাব করে দেখেছে, এই এক বছরে ৫টি ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৬০ শতাংশের বেশি। একটির বেড়েছে ৫০ শতাংশ। ৪০ শতাংশের বেশি ও ৫০ শতাংশের কম বেড়েছে ৫টির।
৩০ শতাংশের বেশি ও ৪০ শতাংশের কম বেড়েছে ১১টি ফান্ডের সম্পদমূল্য। ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে ১০টি ফান্ডের সম্পদমূল্য। আর ৪টি ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে ১০ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে।
অবশ্য সম্পদমূল্য বৃদ্ধি আর আয় যে সমানুপাতিক, সেই নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। আইসিবি এমপ্লয়ি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য এই এক বছরে ৬৫ দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে প্রথম ৯ মাসে এই ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি আয় হয়েছে ৩০ পয়সা। তবে সম্পদমূল্য ২৮ দশমিক ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৯ মাসে আয় হয়েছে ১ টাকা ৪৪ পয়সা।
পুঁজিবাজারে যে ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড আছে, তার মধ্যে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সাউথইস্ট ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড বেমেয়াদিতে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাকি ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে জুনে অর্থবছর সমাপ্ত হয়েছে ৩০টির। আর এগুলো আগামী দুই মাসের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে।
প্রতিটি ফান্ডই এবার মুনাফায় আছে। গত এক দশকেও তৃতীয় প্রান্তিক শেষে এত বেশি মুনাফা দেখা যায়নি কোনো ফান্ডের।
২০২০ সালের জুন থেকে প্রথম প্রান্তিকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সূচক বাড়ে ৯৭৭ পয়েন্ট। সে সময় দুই একটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি ২ টাকারও বেশি আয় করেছে। বেশ কয়েকটির আয় দেড় টাকার বেশি আ আশপাশে দেখা গেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সূচক বাড়ে আরও ৫৪০ পয়েন্ট। এই সময়েও ফান্ডগুলো ইউনিটপ্রতি বেশ ভালো মুনাফা করে। আগের প্রান্তিকের চেয়ে কম হলেও এই সময়েও কোনো কোনো ফান্ড ইউনিটপ্রতি দেড় বা দুই টাকা মুনাফা করে।
তবে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বাজারে ছন্দপতন ঘটে। এই প্রান্তিকে সূচক পড়ে ৩৪০ পয়েন্ট।
তবে বাজারে পতন হলেও মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো লোকসান দিয়েছে এমন নয়। এই প্রান্তিকে ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে মুনাফা করে ২৭টি। বাকি ১০টির মধ্যে দুটি ফান্ড চলতি অর্থবছরের হিসাব দেয়নি। অন্য আটটির মধ্যে ইউনিটপ্রতি ১ থেকে সর্বোচ্চ ১৪ পয়সা লোকসান করে। তবে আগের দুই প্রান্তিকে বিপুল পরিমাণ মুনাফার কারণে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে বেশ ভালো অঙ্কের আয় করায় এবার লোভনীয় লভ্যাংশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আর তৃতীয় প্রান্তিকের শুরুতে এপ্রিলে লকডাউন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারে ধস নামলেও পরে সেই লকডাউন চলাকালেই দেখা দেয় উত্থান। আর চলমান শাটডাউনেও দেখা গেছে একই প্রবণতা।
সব মিলিয়ে চতুর্থ প্রান্তিকে পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে প্রথম প্রান্তিকের কাছাকাছি, ৮৮০ পয়েন্ট। ফলে ফান্ডগুলো প্রথম প্রান্তিকের কাছাকাছি আয় করলে এবার যে চূড়ান্ত মুনাফা আসতে পারে, সেটি চমকে দিতে পারে বিনিয়োগকারীদের।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত যেসব ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার প্রতিটিই ব্যাপক আয় করেছে। তবে একটি ফান্ড ১ টাকা ৬১ পয়সার বেশি আয় করেও মুনাফার ১০ শতাংশ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে, যদিও নীতিমালায় বলা আছে, নগদে ৭০ শতাংশ বিতরণ করতে হবে।
তবে এই ফান্ডটি গত বছর ব্যাপক লোকসান দিয়েছিল আর সেই লোকসানের সঞ্চিতি সংরক্ষণের সুবিধা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। আর এতে ফান্ডের ভিত্তি শক্তিশালী হয়েছে।
তবে তৃতীয় প্রান্তিকের যে হিসাব পাওয়া গেছে, সেই সঙ্গে চতুর্থ প্রান্তিকের যে চাঙাভাব, সেটি বিবেচনায় আনলে আর ফান্ডের বাজারমূল্য হিসাব করলে এবার বিনিয়োগকারীরা যে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ পেতে পারেন, সেই সম্ভাবনাই দেখা যায়।
ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে সময়টিতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে সে সময়টিতে কিন্ত পুঁজিবাজারও ভালো ছিল। ফলে তার সুফল পেয়েছে ফান্ডগুলো।’
তবে সম্পদমূল্য ও আয় বাড়লেও এই ফান্ডগুলোর মূল্য যে খুব একটা বেড়েছে এমন নয়। পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য ১২ টাকা ২ পয়সা হলেও দাম ৬ টাকা ৫০ পয়সা।
সব মিলিয়ে ২৪টি ফান্ডের দামই এখন অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচে। যদিও এদের সিংহভাগের সম্পদমূল্যই ১১ টাকার বেশি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে পুঁজিবাজারের প্রাণ হিসেবে ধরা হলেও বাংলাদেশে এই ফান্ডগুলো এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি। যদিও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এই ফান্ডগুলোতে বিনিয়োগে উৎসাহ দিচ্ছে। এতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ঝুঁকি কমে আসবে বলে মনে করছে তারা।
শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো পুঁজিবাজারের জন্য সবচেয়ে আস্থার পোডাক্ট। কিন্ত সেভাবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। কারণ হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কাছ থেকে পরিমাণ মুনাফা প্রত্যাশা করে সেটি তারা পান না। ফলে এ খাতে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ আগ্রহী হন না।’
তবে চলতি বছর ফান্ডগুলো ভালো লভ্যাংশ দিতে পারলে পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার ভালো থাকলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের এনএভি বা সম্পদমূল্য বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। এনএভির চেয়ে দাম কম থাকলে বুঝতে হবে এই খাতে আগ্রহ কম। এবার যেহেতু আয় ভালো হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী লভ্যাংশ দেয়া উচিত।’
সবচেয়ে বেশি সম্পদমূল্য বেড়েছে আইসিবির ফান্ডগুলোর
৩০ জুন শেষে রাষ্ট্রায়াত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, আইসিবির অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির পরিচালনায় আইসিবি এমপ্লয়ি প্রভিডেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ২১ পয়সা। ২০২০ সালের ৩০ জুন শেষে সম্পদূল্য ছিল ৫ টাকা ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ এই ফান্ডটির সম্পদমূল্য বেড়েছে ৩ টাকা ৬৩ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৬৫ দশমিক ০৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাওয়া আইসিবি থার্ড এনআরবির সম্পদ মূল্য ৩০ জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৫ পয়সা, যা ২০২০ সালের জুন শেষে ছিল ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। এই এক বছরে বেড়েছে ৩ টাকা ৪৬ পয়সা বা ৬১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
সম্পদমূল্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধিতে থাকা প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৯৩ পয়সা, যা ২০২০ সালের জুন শেষে ছিল ৬ টাকা ১৪ পয়সা। শতকরা হিসেবে ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে এক বছরে।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ১৩ পয়সা। ২০২০ সালের জুন শেষে যা ছিল ৬ টাকা ২৯ পয়সা। এক বছরে বেড়েছে ৬১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা ফিনিক্স ফিনান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৪৭ পয়সা। ২০২০ সালের ৩০ জুন যা ছিল ৫ টাকা ৮৯ পয়সা। এই এক বছরে বেড়েছে ৩ টাকা ৫৮ পয়সা বা ৬০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এছাড়া ৫০ শতাংশ বেড়েছে আইসিবি সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য।
৪০ শতাংশের বেশি বাড়ল যেগুলোর
ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালান্সড ফান্ডের সম্পদমূল্য গত ৩০ জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৪৯ পয়সা। ২০২০ সালের ৩০ জুন সম্পদ ছিল ৭ টাকা ৮৬ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৪৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এ ছাড়া ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফিনান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৪৫ দশমিক ২৬, আইএফআইএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৪২ দশমিক ৯৯ শতাংশ, আইসিবি ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৪১ দশমিক ৪৬ এবং সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৪০ দশমিক ৫২ শতাংশ।
৩০ শতাংশের বেশি সম্পদ বাড়ল যেগুলোর
৩০ জুন শেষে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের রিলায়েন্স ওয়ান ফার্স্ট স্পিম মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৭৬ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন যা ছিল ১০ টাকা ৭০ পয়সা। এই এক বছরে বাড়ল ৪ টাকা ৬ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
শতকরা হিসেবে সম্পদমূল্য এর চেয়ে খানিকটা কম বৃদ্ধি পাওয়া গ্রামীণ টু ও এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ মূল্য টাকার অঙ্কে আরও বেশি বেড়েছে।
এক বছরে সম্পদ ৫ টাকা ৩৬ পয়সা বৃদ্ধি পাওয়া গ্রামীণ টুর সম্পদ বৃদ্ধির শতকরা হার ৩৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ, আর ৪ টাকা ১০ পয়সা সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়া এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ মূল্য বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
এ ছাড়া ইবিএলএনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩৫ দশমিক ১৫ শতাংশ, এবিব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, সিএপিএমআইবিবিএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩৩ দশমিক ১৫ শতাংশ, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের ৩১ দশমিক ৫৬ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০ দশমিক ৭২ শতাংশ, ডিবিএইচি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০.০৭ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০ দশমিক ০৩ শতাংশ, পিএইচপি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০ দশমিক ০১ শতাংশ দাম বেড়েছে।
২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
৩০ জুন শেষে আইএফআইসি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৬৩ পয়সা। গত বছর ৩০ জুন শেষে সম্পদমূল্য ছিল ৮ টাকা ৯৭ পয়সা। শতকরা হিসেবে সম্পদ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ।
এ ছাড়া গ্রিনডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৯ দশমিক ২২ শতাংশ, এফবিএফআইএফ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ, ফার্স্ট জনতা ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৮ দশমিক ৩২ শতাংশ, পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৮ দশমিক ১৪ শতাংশ, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ডের ২৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ, এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ডের ২৩ দশমিক ২৬ শতাংশ, এমবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের, ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং এনসিসিবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ বেড়েছে ২১ দশমিক ২২ শতাংশ।
সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি চারটির
গত এক বছরে শতকরা হিসেবে সম্পদমূল্য সবচেয়ে কম বেড়েছে এআইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। ১ টাকা ৩২ পয়সা বা ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে এটির।
এ ছাড়া এলআর গ্লোবাল ওয়ানের সম্পদমূল্য বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮৯, ফার্স্ট প্রাইম ফিনান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৭ দশমিক ৫৬ এবং এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন:
বক্তব্য রাখছেন আমান উল্লাহ আমান। ছবি: সংগৃহীত
বিমানবন্দরে আগুন লাগার ঘটনাকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নাশকতার অংশ হিসেবে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, পার্শ্ববর্তী দেশে বসে শেখ হাসিনা এখনো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মাধ্যমে দেশ ও জনগণের ক্ষতি করা হচ্ছে। সুতরাং, বিমানবন্দরের আগুনের ঘটনাটি স্বাভাবিক নয়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ৯০-র গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমান বলেন, তার (হাসিনার) প্রেতাত্মা এখনো সক্রিয়। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ থাকবে- এই ঘটনাসহ সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, ওই সময়ই নির্বাচন হবে। তবে নির্বাচন নিয়েও নানা ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচনের পথে বাধা দিতে চাইবে, জনগণ তাদের প্রতিহত করবে।
স্মরণসভায় আমান সাইফুদ্দিন আহমেদ মনিকে স্মরণ করে বলেন, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র ঐক্যের অন্যতম নেতা ছিলেন মনি ভাই। তিনি আদর্শ রাজনৈতিক নেতা ছিলেন, সাধারণ জীবনযাপন করতেন এবং রাজনীতির বাইরে কোনো চিন্তা করেননি।
স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক মো. ফরিদ উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব খোকন চন্দ্র দাস। অনুষ্ঠানে ‘৯০-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের’ সাবেক ছাত্রনেতারা, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও ১২-দলীয় জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্য রাখছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ছবি: সংগৃহীত
মাছের প্রজনন ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় মা মাছ ধরা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নদী ও সাগরে জেলেরা যেসব মাছ ধরেন, তা প্রাকৃতিক সম্পদ। এই মাছগুলো রক্ষা করতে না পারলে ভবিষ্যতে মাছশূন্য হয়ে পড়ব। তাই মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে। আইন মানলে প্রকৃতপক্ষে জেলেরা নিজেরাই লাভবান হবেন।’
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির ১২তম জাতীয় সম্মেলন-২০২৫-এর প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘আপনারাই এই দেশের মানুষকে মাছ খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখছেন। আপনারা ক্ষুদ্র নন, বরং দেশের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী। আমরা শুধু ভাত খাই না- মাছ, শাক-তরকারিও খাই। মৎস্যজীবীরা যদি মাছ না ধরেন, কেউই মাছ খেতে পারব না। আপনারা পরিশ্রম করে সবার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন- এটিকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ভারত যাতে আমাদের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করতে না পারে, সে জন্য কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের সহায়তা হিসেবে ভিজিএফের চালের পরিমাণ বাড়াতে খাদ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সরকারে যতদিন আছি, ততদিন জেলেদের জন্য কাজ করে যাব। আগামীতে অন্তত ৫০ কেজি করে চাল দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভিজিএফের সঙ্গে আর্থিক সহায়তা যুক্ত করার বিষয়েও আলোচনা চলছে।’
দীর্ঘদিনের সমস্যা দাদন প্রথা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘দাদন জেলেদের দারিদ্র্যের চক্রে আবদ্ধ করে রাখে। এ সমস্যা নিরসনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, তারা বিকল্পভাবে স্বল্পসুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করবে, যাতে জেলেরা দাদনের ওপর নির্ভরশীল না থাকেন।’
প্রতিটি দুর্যোগে বহু জেলে নিখোঁজ হন বা প্রাণ হারান, এ বিষয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘নিখোঁজ জেলেদের পরিবারের সদস্যরা জানতেও পারেন না- তারা জীবিত না মৃত। ফলে কোনো সরকারি সহায়তাও পান না। এ সমস্যা সমাধানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যাতে এমন পরিবারগুলোর জন্য কার্যকর সহায়তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়।’
নদীতে চর জেগে ওঠা ও প্রজনন বাধাগ্রস্ত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নদীতে চর জেগে ওঠায় মাছের চলাচল ও প্রজননে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের নিজস্ব ড্রেজিং সক্ষমতা সীমিত হলেও নৌপরিবহন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি। তারা শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনীয় ড্রেজিং কার্যক্রম সম্পন্ন করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।’
সম্মেলনে বক্তারা মৎস্যজীবীদের ন্যায্য অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো-
*২০১৩ সালের পরিপত্র বাতিল করে ২০০৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করা।
*খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে মৎস্যজীবী প্রতিনিধির স্বাক্ষর নিশ্চিত করা।
*মৎস্যজীবীদের নামে একটি বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা।
*ভিজিএফ সহায়তা ৪০ কেজি থেকে বাড়িয়ে ৬০ কেজি চাল ও ২ হাজার টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া।
*নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কোনো জেলে মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে এককালীন পাঁচ লাখ টাকা পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান।
*কোস্ট গার্ড, নৌপুলিশ ও মৎস্য বিভাগের অভিযানে মৎস্যজীবী সমিতির মনোনীত মাঝিকে অন্তর্ভুক্ত করা।
বক্তারা বলেন, এসব দাবি বাস্তবায়িত হলে জেলে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নত হবে এবং তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসরাইল খলিল পণ্ডিত। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. মোতালেব হোসেন, বিজিবি ট্রাইব্যুনালের সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এম হেলাল উদ্দিন, বরিশাল জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোসাদেক হোসেন স্বপন, সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেম হোসেন, জেলে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল মীর এবং সদস্য তাছলিমা বেগম।
সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় বক্তারা সরকারের কাছে জেলে সম্প্রদায়ের সামাজিক নিরাপত্তা, জীবিকা রক্ষা এবং প্রজননকালীন সময়ের সহায়তা বৃদ্ধির দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরীর তৃতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইসতিয়াকের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে এই মামলায় দুই দফায় সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ।
এদিন কারাগার থেকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশেরে রমনা জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. আখতার মোর্শেদ তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন। এসময় আসামিপক্ষে আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
পরে ঢাকা মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী ১৯৮৮ সালে আমেরিকায় যান ও ২০০৪ সালে আমেরিকান পাসপোর্ট পান। বর্তমানে বাংলাদেশের বৈধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য অন্যদেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে ৬ সেপ্টেম্বর তিনি নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৩ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১০টার দিকে মিন্টো রোড এলাকায় গাড়িতে করে ‘সন্দেহজনকভাবে’ ঘুরতে থাকেন এনায়েত করিম। তাকে দেখে সন্দেহ হলে পুলিশ তার গাড়ি থামায়। কেন তিনি ঘোরাঘুরি করছেন, জানতে চাইলে তিনি পুলিশকে কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এজন্য তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয় এবং তার কাছে থেকে দুটি আইফোন জব্দ করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় সন্ত্রাস বিরোধ আইনে মামলা দায়ের হয়।
এ মামলায় দুই দফায় এনায়েত করিমকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি পুলিশ। পরবর্তী সময় গ্রেপ্তারের পর তার সহযোগী এসএম গোলাম মোস্তফা আজাদ, জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব কাজী মো. মামুনূর রশীদ ও যুব সংহতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব রিফাতুল ইসলাম পাভেলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে সবদলই অভিযোগ করে। একদল বলে ওই দলের লোক আছে, আরেক দল বলে এই দলের লোক আছে। যেহেতু সবদলই অভিযোগ করে অন্য দলের লোক আছে, তার মানে হচ্ছে আমরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছি।
বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, এটা বলেনি। বলেছে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করতে। আমাদের নিরপেক্ষ ভূমিকা চেয়েছে। সে বিষয়ে তাদের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনও অনৈক্য দেখা দেয়ার কারণে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার দিকে গেলে এই সংশয় কেটে যাবে।
২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) দাখিল ও কারিগরির ৬ষ্ঠ শ্রেণি, ৭ম শ্রেণি ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এই কাজটি পেয়েছে মোট ২৯৮টি প্রতিষ্ঠান, এতে ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৬৬১ টাকা।
বুধবার (২২ অক্টোবর) ভার্চুয়ালি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) ৬ষ্ঠ শ্রেণি, দাখিল ৬ষ্ঠ শ্রেণি ও কারিগরি ৬ষ্ঠ শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো ৯৮টি দরপত্রের ৪ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮১ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের নিমিত্ত ৭৭টি প্রতিষ্ঠান৷ এতে মোট ব্যয় হবে ১৩৭ কোটি ৮৭ লাখ ১৯ হাজার ৯৫০ টাকা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) ৭ম শ্রেণি, দাখিল ৭ম শ্রেণি ও কারিগরি ৭ম শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো ১০০টি দরপত্রের মোট ৪ কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯২ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের নিমিত্ত ৯১টি প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি ০১ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৪ টাকা৷
এছাড়া বৈঠকে একই বিভাগে অপর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) ৮ম শ্রেণি, দাখিল ৮ম শ্রেণি ও কারিগরি ৮ম শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার৷
সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো ১০০টি দরপত্রের মোট ৪ কোটি ০২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের নিমিত্ত ৯০টি প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় হবে ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ১২ হাজার ০৯৭ টাকা।
মেট্রোরেলের কোনো স্টেশনে গিয়ে কার্ড স্ক্যান করে ভেতরে ঢোকার পর যাত্রা না করে বেরিয়ে গেলেও ১০০ টাকা ভাড়া কাটা হবে। এর আগে কেউ কার্ড স্ক্যান করে স্টেশনের ভেতরে যাওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে গেলে তাঁকে কোনো ভাড়া দিতে হতো না।
গত সোমবার (২০ অক্টোবর) থেকে নতুন এই নিয়ম করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। স্টেশনগুলোতেও এই নোটিশ টাঙানো হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) কারওয়ান বাজার স্টেশনে এ সংক্রান্ত নোটিশ দেখা গেছে।
ডিএমটিসিএলের ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘সম্মানিত যাত্রী সাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমানে একই স্টেশনে বিনা ভাড়ায় এন্ট্রি এক্সিট বন্ধ আছে। একই স্টেশনে এন্ট্রি করে এক্সিট করলে ১০০ টাকা ভাড়া কাটা হবে। আদেশক্রমে—ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ।’
স্টেশনে ঢুকে মেট্রোরেলে না চড়লেও টাকা কাটার সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে যাত্রীসাধারণ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
নতুন নিয়মের বিষয়ে কারওয়ান বাজার স্টেশনের এক কর্মকর্তা জানান, এখন থেকে স্টেশনের ভেতর দিয়ে ফ্রি এক্সিট, এন্ট্রি নেওয়া যাবে না। ২০ অক্টোবর থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সিরাজ মিয়া (৬৫) কমিউনিটি পেট্রোলিং বন টহল দলের সদস্য (সিপিজি) নিহত হয়েছেন। নিহত সিরাজ মিয়া শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের ডলুছড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার (২২ অক্টোবর) ভোরে লাউয়াছড়া বন বিটের আওতাধীন জানকিছড়া ক্যাম্পের রাতের ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় দ্রুতগামী গাড়ির চাপায় তার মৃত্যু হয়।
জানা যায়,কমলগঞ্জ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকার ডলুছড়া বন টহল দলের (সিপিজি) একজন সদস্য হিসেবে দীর্ঘ সময় থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
স্থানীয় ও বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মত রাতের ডিউটির দায়িত্ব পালন শেষে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের জানকিছড়া এলাকায় শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ সড়কে পায়ে হেটে মো. সিরাজ মিয়া বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় একটি দ্রুতগামী গাড়ি তাকে পেছন থেকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে বন বিভাগ, কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেন।
এবিষয়ে জানতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান সহ ব্যাবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ জনক দেববর্মা বলেন, দূর্ঘটনার খবর পেয়ে বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সহ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। আমরা লাউয়াছড়া সহ-ব্যাবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির সকল সদস্য ও বনবিভাগ নিহত সিরাজ মিয়ার পরিবারের পাশে আছি। এসময় তাৎক্ষণিক ভাবে সিরাজ মিয়ার পরিবারকে আর্থিক সহযোগীতা করা হয়।
বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জাফর মো মাহফুজুল কবির বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ দেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য