গত এক বছরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর সম্পদমূল্যে ব্যাপক বৃদ্ধির তথ্য মিলেছে। একটি ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে সর্বোচ্চ ৬৫ শতাংশ। সবচেয়ে কম বেড়েছে যেটির, সেটিও বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।
২০২০ সালের ৮ মার্চ করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর পুঁজিবাজারে যে ধস নামে, সে কারণে জুন ক্লোজিং ফান্ডগুলোর বেশির ভাগই ব্যাপক লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
তবে ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে ৭ জুন লেনদেন শুরুর পর থেকে এক বছরে পুঁজিবাজারে যে দুই হাজার পয়েন্টের বেশি উত্থান হয়েছে, তাতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও হয়েছে স্ফীত। যে ফান্ডগুলোর ক্রয়মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছিল, সেগুলোও এখন ক্রয়মূল্যের কাছাকাছি চলে গেছে। আর বেশির ভাগ ফান্ডের ক্রয়মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি।
নিউজবাংলা হিসাব করে দেখেছে, এই এক বছরে ৫টি ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৬০ শতাংশের বেশি। একটির বেড়েছে ৫০ শতাংশ। ৪০ শতাংশের বেশি ও ৫০ শতাংশের কম বেড়েছে ৫টির।
৩০ শতাংশের বেশি ও ৪০ শতাংশের কম বেড়েছে ১১টি ফান্ডের সম্পদমূল্য। ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে ১০টি ফান্ডের সম্পদমূল্য। আর ৪টি ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে ১০ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে।
অবশ্য সম্পদমূল্য বৃদ্ধি আর আয় যে সমানুপাতিক, সেই নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। আইসিবি এমপ্লয়ি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য এই এক বছরে ৬৫ দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে প্রথম ৯ মাসে এই ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি আয় হয়েছে ৩০ পয়সা। তবে সম্পদমূল্য ২৮ দশমিক ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৯ মাসে আয় হয়েছে ১ টাকা ৪৪ পয়সা।
পুঁজিবাজারে যে ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড আছে, তার মধ্যে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সাউথইস্ট ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড বেমেয়াদিতে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাকি ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে জুনে অর্থবছর সমাপ্ত হয়েছে ৩০টির। আর এগুলো আগামী দুই মাসের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে।
প্রতিটি ফান্ডই এবার মুনাফায় আছে। গত এক দশকেও তৃতীয় প্রান্তিক শেষে এত বেশি মুনাফা দেখা যায়নি কোনো ফান্ডের।
২০২০ সালের জুন থেকে প্রথম প্রান্তিকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুঁজিবাজারে সূচক বাড়ে ৯৭৭ পয়েন্ট। সে সময় দুই একটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি ২ টাকারও বেশি আয় করেছে। বেশ কয়েকটির আয় দেড় টাকার বেশি আ আশপাশে দেখা গেছে।
দ্বিতীয় প্রান্তিকে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সূচক বাড়ে আরও ৫৪০ পয়েন্ট। এই সময়েও ফান্ডগুলো ইউনিটপ্রতি বেশ ভালো মুনাফা করে। আগের প্রান্তিকের চেয়ে কম হলেও এই সময়েও কোনো কোনো ফান্ড ইউনিটপ্রতি দেড় বা দুই টাকা মুনাফা করে।
তবে গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বাজারে ছন্দপতন ঘটে। এই প্রান্তিকে সূচক পড়ে ৩৪০ পয়েন্ট।
তবে বাজারে পতন হলেও মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো লোকসান দিয়েছে এমন নয়। এই প্রান্তিকে ৩৭টি ফান্ডের মধ্যে মুনাফা করে ২৭টি। বাকি ১০টির মধ্যে দুটি ফান্ড চলতি অর্থবছরের হিসাব দেয়নি। অন্য আটটির মধ্যে ইউনিটপ্রতি ১ থেকে সর্বোচ্চ ১৪ পয়সা লোকসান করে। তবে আগের দুই প্রান্তিকে বিপুল পরিমাণ মুনাফার কারণে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে বেশ ভালো অঙ্কের আয় করায় এবার লোভনীয় লভ্যাংশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আর তৃতীয় প্রান্তিকের শুরুতে এপ্রিলে লকডাউন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারে ধস নামলেও পরে সেই লকডাউন চলাকালেই দেখা দেয় উত্থান। আর চলমান শাটডাউনেও দেখা গেছে একই প্রবণতা।
সব মিলিয়ে চতুর্থ প্রান্তিকে পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে প্রথম প্রান্তিকের কাছাকাছি, ৮৮০ পয়েন্ট। ফলে ফান্ডগুলো প্রথম প্রান্তিকের কাছাকাছি আয় করলে এবার যে চূড়ান্ত মুনাফা আসতে পারে, সেটি চমকে দিতে পারে বিনিয়োগকারীদের।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত যেসব ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার প্রতিটিই ব্যাপক আয় করেছে। তবে একটি ফান্ড ১ টাকা ৬১ পয়সার বেশি আয় করেও মুনাফার ১০ শতাংশ লভ্যাংশ বিতরণ করেছে, যদিও নীতিমালায় বলা আছে, নগদে ৭০ শতাংশ বিতরণ করতে হবে।
তবে এই ফান্ডটি গত বছর ব্যাপক লোকসান দিয়েছিল আর সেই লোকসানের সঞ্চিতি সংরক্ষণের সুবিধা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। আর এতে ফান্ডের ভিত্তি শক্তিশালী হয়েছে।
তবে তৃতীয় প্রান্তিকের যে হিসাব পাওয়া গেছে, সেই সঙ্গে চতুর্থ প্রান্তিকের যে চাঙাভাব, সেটি বিবেচনায় আনলে আর ফান্ডের বাজারমূল্য হিসাব করলে এবার বিনিয়োগকারীরা যে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ পেতে পারেন, সেই সম্ভাবনাই দেখা যায়।
ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে সময়টিতে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে সে সময়টিতে কিন্ত পুঁজিবাজারও ভালো ছিল। ফলে তার সুফল পেয়েছে ফান্ডগুলো।’
তবে সম্পদমূল্য ও আয় বাড়লেও এই ফান্ডগুলোর মূল্য যে খুব একটা বেড়েছে এমন নয়। পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য ১২ টাকা ২ পয়সা হলেও দাম ৬ টাকা ৫০ পয়সা।
সব মিলিয়ে ২৪টি ফান্ডের দামই এখন অভিহিত মূল্য ১০ টাকার নিচে। যদিও এদের সিংহভাগের সম্পদমূল্যই ১১ টাকার বেশি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে পুঁজিবাজারের প্রাণ হিসেবে ধরা হলেও বাংলাদেশে এই ফান্ডগুলো এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেনি। যদিও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এই ফান্ডগুলোতে বিনিয়োগে উৎসাহ দিচ্ছে। এতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ঝুঁকি কমে আসবে বলে মনে করছে তারা।
শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো পুঁজিবাজারের জন্য সবচেয়ে আস্থার পোডাক্ট। কিন্ত সেভাবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। কারণ হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কাছ থেকে পরিমাণ মুনাফা প্রত্যাশা করে সেটি তারা পান না। ফলে এ খাতে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ আগ্রহী হন না।’
তবে চলতি বছর ফান্ডগুলো ভালো লভ্যাংশ দিতে পারলে পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজার ভালো থাকলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের এনএভি বা সম্পদমূল্য বাড়বে, এটাই স্বাভাবিক। এনএভির চেয়ে দাম কম থাকলে বুঝতে হবে এই খাতে আগ্রহ কম। এবার যেহেতু আয় ভালো হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী লভ্যাংশ দেয়া উচিত।’
সবচেয়ে বেশি সম্পদমূল্য বেড়েছে আইসিবির ফান্ডগুলোর
৩০ জুন শেষে রাষ্ট্রায়াত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ, আইসিবির অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির পরিচালনায় আইসিবি এমপ্লয়ি প্রভিডেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ২১ পয়সা। ২০২০ সালের ৩০ জুন শেষে সম্পদূল্য ছিল ৫ টাকা ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ এই ফান্ডটির সম্পদমূল্য বেড়েছে ৩ টাকা ৬৩ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৬৫ দশমিক ০৫ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পাওয়া আইসিবি থার্ড এনআরবির সম্পদ মূল্য ৩০ জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৫ পয়সা, যা ২০২০ সালের জুন শেষে ছিল ৫ টাকা ৫৯ পয়সা। এই এক বছরে বেড়েছে ৩ টাকা ৪৬ পয়সা বা ৬১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
সম্পদমূল্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধিতে থাকা প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ড ওয়ানের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৯৩ পয়সা, যা ২০২০ সালের জুন শেষে ছিল ৬ টাকা ১৪ পয়সা। শতকরা হিসেবে ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে এক বছরে।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ১৩ পয়সা। ২০২০ সালের জুন শেষে যা ছিল ৬ টাকা ২৯ পয়সা। এক বছরে বেড়েছে ৬১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা ফিনিক্স ফিনান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৪৭ পয়সা। ২০২০ সালের ৩০ জুন যা ছিল ৫ টাকা ৮৯ পয়সা। এই এক বছরে বেড়েছে ৩ টাকা ৫৮ পয়সা বা ৬০ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এছাড়া ৫০ শতাংশ বেড়েছে আইসিবি সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য।
৪০ শতাংশের বেশি বাড়ল যেগুলোর
ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালান্সড ফান্ডের সম্পদমূল্য গত ৩০ জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৪৯ পয়সা। ২০২০ সালের ৩০ জুন সম্পদ ছিল ৭ টাকা ৮৬ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৪৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এ ছাড়া ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফিনান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৪৫ দশমিক ২৬, আইএফআইএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৪২ দশমিক ৯৯ শতাংশ, আইসিবি ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৪১ দশমিক ৪৬ এবং সিএপিএম বিডিবিএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে ৪০ দশমিক ৫২ শতাংশ।
৩০ শতাংশের বেশি সম্পদ বাড়ল যেগুলোর
৩০ জুন শেষে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের রিলায়েন্স ওয়ান ফার্স্ট স্পিম মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৭৬ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন যা ছিল ১০ টাকা ৭০ পয়সা। এই এক বছরে বাড়ল ৪ টাকা ৬ পয়সা। শতকরা হিসেবে বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
শতকরা হিসেবে সম্পদমূল্য এর চেয়ে খানিকটা কম বৃদ্ধি পাওয়া গ্রামীণ টু ও এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ মূল্য টাকার অঙ্কে আরও বেশি বেড়েছে।
এক বছরে সম্পদ ৫ টাকা ৩৬ পয়সা বৃদ্ধি পাওয়া গ্রামীণ টুর সম্পদ বৃদ্ধির শতকরা হার ৩৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ, আর ৪ টাকা ১০ পয়সা সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়া এনএলআই ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ মূল্য বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
এ ছাড়া ইবিএলএনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩৫ দশমিক ১৫ শতাংশ, এবিব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, সিএপিএমআইবিবিএল ইসলামিক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩৩ দশমিক ১৫ শতাংশ, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডের ৩১ দশমিক ৫৬ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০ দশমিক ৭২ শতাংশ, ডিবিএইচি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০.০৭ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০ দশমিক ০৩ শতাংশ, পিএইচপি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩০ দশমিক ০১ শতাংশ দাম বেড়েছে।
২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
৩০ জুন শেষে আইএফআইসি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৬৩ পয়সা। গত বছর ৩০ জুন শেষে সম্পদমূল্য ছিল ৮ টাকা ৯৭ পয়সা। শতকরা হিসেবে সম্পদ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ।
এ ছাড়া গ্রিনডেল্টা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৯ দশমিক ২২ শতাংশ, এফবিএফআইএফ মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ, ফার্স্ট জনতা ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৮ দশমিক ৩২ শতাংশ, পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২৮ দশমিক ১৪ শতাংশ, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ডের ২৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ, এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ডের ২৩ দশমিক ২৬ শতাংশ, এমবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের, ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ এবং এনসিসিবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সম্পদ বেড়েছে ২১ দশমিক ২২ শতাংশ।
সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি চারটির
গত এক বছরে শতকরা হিসেবে সম্পদমূল্য সবচেয়ে কম বেড়েছে এআইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের। ১ টাকা ৩২ পয়সা বা ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেড়েছে এটির।
এ ছাড়া এলআর গ্লোবাল ওয়ানের সম্পদমূল্য বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮৯, ফার্স্ট প্রাইম ফিনান্স মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৭ দশমিক ৫৬ এবং এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের সম্পদমূল্য বেড়েছে ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন:নাটোরের লালপুরে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ৭ দফা দাবিতে গেট মিটিং (ফটক সভা) করেছে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। গতকাল মঙ্গলবার মিলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তাদের উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- পে-কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো ওয়েজ কমিশনের শ্রমিকদের ৫ শতাংশ প্রণোদনার বকেয়া ও ১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধার টাকা প্রদান, দক্ষ জনবল তৈরির স্বার্থে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ী পদে অভ্যন্তরীণভাবে সমন্বয় বা পদায়ন, মৌসুমি ও স্থায়ী শূন্য পদের বিপরীতে কর্মরত দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত নীতিমালা অনুযায়ী হাজিরা প্রদানসহ অন্য আরও ৪টি দাবি জানানো হয়।
সভায় শ্রমিক-কর্মচারীরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় ভুগছেন তারা। বকেয়া প্রণোদনার টাকা না পাওয়া এবং মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ী পদে সমন্বয় না হওয়ায় কর্মপরিবেশ দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সাত দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন। একই সঙ্গে চিনিশিল্পকে দুর্নীতি মুক্ত করারও দাবি জানান শ্রমিক-কর্মচারীরা।
গেট মিটিংয়ে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের সিবিএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুল ইসলাম অমলের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন পিন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল ইসলাম মমিন প্রমুখ।
ময়মনসিংহের ত্রিশালের মোক্ষপুর ইউনিয়নের কৈতরবাড়ী গ্রামের রফিকুল ইসলাম ননী ফল চাষ করে বেশ সফল হয়েছেন। তিনি প্রবাস থেকে ফিরে এসে প্রথমে কমলা ও খেজুর বাগান করেছিলেন, কিন্তু সফল হতে পারেননি। এরপর তিনি ঔষধি বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি তার দুই একর জমিতে ননী ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। বাগানে ৩০০টি ননী ফলের গাছ রয়েছে। বর্তমানে গাছগুলোতে ফল ধরেছে। ননী ফল সাধারণত ক্যান্সার প্রতিরোধক এবং আরও অনেক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় বলে পরিচিত। দেশ-বিদেশে এই ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে পাশাপাশি দামও ভালো পাওয়া যায়।
রফিকুল ইসলামের এই উদ্যোগ স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই তার বাগান থেকে ননী ফল ও এর গাছের পাতা সংগ্রহ করতে আসেন। ঢাকার বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি তার কাছ থেকে ফল সংগ্রহ করেন। এই ফল চাষে তিনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে এবং অন্যদেরও উৎসাহিত করছেন।
রফিকুল ইসলাম জানান, ননী ফলের অনেক গুণাগুণ, তাই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা তার বাগান থেকে এটি সংগ্রহ করছেন। এতে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান। তিনি সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে বড় পরিসরে ননী ফলের চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া রহমান জানান, আমি শোনেছি তিনি একজন ভালো উদ্যোক্তা। তার বাগানে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছ রয়েছে। আমি সরেজমিনে গিয়ে বাগানটি পরিদর্শন করব এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করব।
দিনাজপুর জেলায় এবার আধুনিক প্রদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা আউশ ধানের বাম্পার ফলন অর্জিত করতে সক্ষম হয়েছে। এতে খুশি কৃষক। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বিগত সময়ে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া আউশ ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি করতে হয়েছে।
কৃষি বিভাগের গবেষণায় উদ্ভাবন করা উপশী জাতের ব্রি-৯৮ আউশ ধান চাষে জেলায় বাম্পার ফলন অর্জিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলার ১৩টি উপজেলায় ৫ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। মৌসুমের শুরুতেই গত মে মাসে জেলার ১৩টি উপজেলাতে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কৃষকের মাঝে বিনা মূল্যে আউশ ধানের নতুন উদ্ভাবন করা ব্রি-৯৮ জাতের বীজ ও রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বিতারণ করা হয়েছিল।
আউশ ধান চাষ সফলভাবে অর্জিত করতে, কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কৃষকদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দিয়ে আউশ ধান চাষে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
জেলা সদর উপজেলার চেহেলগাজী ইউনিয়নের কর্ণাই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. রেজাউল করিম জানান, কর্ণাই গ্রামে সমবায় ভিত্তিতে কৃষকরা এবার আউশ ধানের ব্রি ধান-৯৮ জাত চাষ করেছেন। আউশ ধান চাষের সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে অর্জিত ফসল ঘরে তুলতে পেয়ে কৃষকরা খুব খুশি। এক একর জমিতে ৭৫ থেকে ৮০ মণ ধানের ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের বিনা মূল্যে দেওয়া বীজ, সার ও কীটনাশক ধান চাষে ব্যবহার করে অনাবাদি জমি অধিক উৎপাদনশীল হয়ে উঠেছে। বর্তমান বাজারে কাঁচা ধান সাড়ে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। ধানের খড় বিক্রি করে বাড়তি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ধান বিক্রির পাশাপাশি খড় বিক্রিতেই কৃষকরা তাদের খরচের একটা অংশ ওঠাতে পারছেন।
জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার মহনপুর গ্রামের আদর্শ কৃষক মো. শরিফুল ইসলাম (৪২) জানান, চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে বীজতলা তৈরি করে ব্রি-৯৮ জাতের আউশ ধান চারা রোপণ করা হয়। কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত পরামর্শে সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে বেশ ভালো ফলন হয়েছে। ভাদ্র-আশ্বিনের এই সময় মাঠজুড়ে অর্জিত আউশ ধানের সোনালি শোভা কৃষকদের মন ভরে তোলেছে। কৃষকরা তাদের অর্জিত ধান কাটতে শুরু করেছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ধানকাটা শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধান কাটার পর আবার ওই জমিতে আগাম জাতের আলু চাষের প্রস্তুতি শুরু করবেন কৃষকরা। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় কৃষকরা আউশ ধান ঘরে তোলে, আবার ওই একই জমিতে আলু চাষ করার পরিকল্পনা করেছে।
সদর উপজেলার, কর্ণাই গ্রামের কৃষকরা বলছেন, নতুন জাতের আউশ ধান চাষে সাফলতা তাদের এনে দিয়েছে। ওই গ্রামের কৃষক মো. আব্দুর রাজ্জাক (৪৭) জানান, এ বছর তিনি ৭৫ শতক জমিতে আউশ ধান চাষ করেছে। তার অর্জিত জমি থেকে ৬৫ মণ আউশ ধান পেয়েছে। ওই ধান বিক্রি করে আগাম জাতের আলুর চাষ করবেন।
ওই গ্রামের আদিবাসী কৃষক লুকাস মার্ডী বলেন, গত বছর থেকে সমবায় ভিত্তিতে আউশ ধান চাষ শুরু করেছি। এবার উন্নত জাতের ব্রি ধান-৯৮ আউশ ধানের আবাদ করেছি এবং বেশ ভালো ফলন পেয়েছি।
সমবায়ের মাধ্যমে আউশ ধান চাষ করায় পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম এবং ভালো ফলন অর্জিত হয়েছে।
আগামী বছর এই জাতের আউশ ধান বেশি করে আবাদ করার আশা রয়েছে তার।
অপর কৃষক মৃণাল কান্তি জানান, তিনি দেড় একর জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছে। এখন ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়ে গেছে। এই সময়টা কৃষকদের কিছুটা অভাব থাকে। এখন ধান ঘরে তোলা কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ। ধান বিক্রি করে আলু চাষের খরচ পুষিয়ে যাবে।
সদর কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলের জমি একটু উচুঁ এবং লালমাটি হওয়ায় শুধু রবি শস্যে চাষে ব্যবহার করা হতো। আমন বা ইরি-বোরো ধান এখানে চাষ করা হতো না। সরকারি উদ্যোগে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আউশ চাষ শুরু করা হয়েছে। এখন সেই জমিতেই ৩টি করে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে বিনা মূল্যে বীজ, সার ও কীটনাশক সরবরাহ দিয়ে কৃষকদের ফসল উৎপাদনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায়, কৃষকরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুম জানান, চলতি মৌসুমে সদর উপজেলা ৬৭০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষে বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়েছে। প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া আউশ ধান চাষে কৃষকরা স্বল্প সময়ে ফলন পেয়েছেন। নতুন উদ্যোগ গ্রহণে আউশ ধান চাষে কৃষকরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আগামীতে আরও অধিক কৃষক আউশ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, সে বিষয় কৃষি বিভাগ কাজ করছেন বলে তিনি ব্যক্ত করেন।
‘হাওর ভরাট ও পরিবেশের ক্ষতি করে নয়’- এই স্লোগানের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে
সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবেশবাদী সংগঠন মঙ্গলবার দুপুরে যৌথভাবে
মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছিলেন। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেছেন,
‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নে বিভোর, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হোক, সে জন্য স্বেচ্ছাশ্রম দিতে চাই আমরাও। তবে এর প্রস্তাবিত স্থান পরিবর্তন করতে হবে।
মানববন্ধনে ‘আন্তঃউপজেলা অধিকার পরিষদ’ এবং হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারাও সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন।
সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আন্তঃউপজেলা অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক আফিন্দি। পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ
পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) সভাপতি জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. তৈয়বুর রহমান বাবুল, পরিবেশবাদী সংগঠন হাউসের নির্বাহী পরিচালক সালেহীন চৌধুরী শুভ, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম-সিলেটের সভাপতি আবুল হোসেন, হাওর-নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি মিজানুর রহমান রাসেল প্রমুখ। মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা আহ্বায়ক, যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমনুদ্দোজা আহমদ, জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ইজাজুল হক চৌধুরী নাছিম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় ফসলি হাওর ‘দেখার হাওর’। এই হাওরে এসে সংযুক্ত হওয়া মহাসিং নদী এবং এর শাখা উপশাখা, অসংখ্য জলমহাল, খাল- বিল, নদী মিলিয়ে অর্ধ শতাধিকেরও বেশি জলাশয় রয়েছে। হাওরে কেবল জমির পরিমাণ ৪৫ হাজার ৮৫৯ হেক্টর। এর মধ্যে কৃষি ২৪ হাজার ২১৪ এবং অকৃষি ২১ হাজার ৬৪৫ হেক্টর। হাওরের একাংশে (শান্তিগঞ্জের জয়কলস মৌজায়) ১২৫ একর বোর জমি (আংশিক আমন, পতিত ও গুরস্থান) অধিগ্রহণ করতে চায় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস করতে চান তারা, এর দুইপাশে থাকা দুটি ব্রিজের নিচ দিয়ে হাওরের পানি প্রবাহিত হয়ে কালনী নদীতে গিয়ে মিশেছে।
পরিবেশ আন্দোলনের নেতারা বলেন, ‘কোথায় বিশ্ববিদ্যালয় হবে, এই প্রস্তাব আমরা দিচ্ছি না। তবে হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হতে হবে। হাওর ভরাট করে বিশাল ক্যাম্পাস হলে বৃহৎ এই হাওরের জলজ বাস্তুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। দুটি ব্রিজের (আহসান মারা ও জয়কলস) নিচ দিয়ে যাওয়া খালে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে বোর জমি ও জলাশয়ের ক্ষতি হবে। যার নেতিবাচক প্রভাব সুনামগঞ্জ জেলা সদরসহ পূর্ব এলাকার জনবসতির ওপর পড়বে।
প্রসঙ্গত সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের আইন পাস হয় ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু হয়। প্রথম ব্যাচে (২০২৩-২৪) শিক্ষাবর্ষে রসায়ন, গণিত, পদার্থ ও কম্পিউটার বিষয়ে ১২৮, দ্বিতীয় ব্যাচে (২০২৪-২৫) শিক্ষাবর্ষে ১৪৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এখানে ১৭ জন শিক্ষক এবং ২৭ জন স্টাফ রয়েছেন। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত জেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের কিছু ভবন, একটি মাদ্রাসা, একটি কলেজসহ কিছু ঘরবাড়ি ভাড়া নিয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ জুন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ব বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জিএম শহিদুল আলম সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির সুত্র (স্মারক নম্বর ৩৭.০০.০০০০.০৭৬.৯৯.০০২-১৪১) উল্লেখ করে লেখেন- গেল চার জুন ২০২৩ তারিখে স্মারক নম্বর সুবিপ্রবি/১৪৭ মোতাবেক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয় বরাবর সুনামগঞ্জ
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণের ও প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য আবেদনপত্র জমা দিয়েছিলেন। ওই পত্রের আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১২৫ (একশ’ পঁচিশ একর) জমির প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করেছেন। এরপর জেলাবাসী ও পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলন এবং একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় জমি অধিগ্রহণের অগ্রগতি স্থগিত রয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পূয়ালী গ্রামের মো. আমির ঘরামীর ছেলে দিনমজুর রুবেল ঘরামী। বসবাস করেন একটি ঝুপড়ি ঘরে। অভাব-অনটন ও নিদারুণ দারিদ্রতার সঙ্গে যুদ্ধ করে কোনোদিন এক-আধ বেলা খেয়ে না খেয়ে সংসারের ঘানি টেনে জীবনযাপন করছেন। যেদিন দিনমজুরের কাজ না জোটে সেদিন মানুষের কাছে হাত পেতে, সাহায্য-সহযোগিতা চেয়ে যা জোটে তাই নিয়ে কখনো খেয়ে, কখনো আধাপেটা খেয়ে-না-খেয়ে থেকেও তার ও পরিবারের সদস্যদের কষ্ট করতে হয়।
কৃষিকাজ, দিনমজুরী করে কোনোরকমে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বেঁচে আছেন তিনি। নিরিহ প্রকৃতির মানুষ হওয়ায় এলাকার মানুষেরা তাকে ভালোবেসে অনেক সময় সাহায্য সহযোগিতাও করেন। তবে আজও তাদের পরিবারটি কোনো ধরনের সরকারি-বেসরকারি গৃহ কিংবা আর্থিক অনুদান পায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুবেল মানুষের জমিতে কাজ করে সামান্য যা আয় করেন, তা দিয়ে ঠিকমতো খাবার জোটানোও সম্ভব হয় না। অনেক সময় অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয় তাদের। অত্যন্ত গরীব ও সরলসোজা প্রকৃতির মানুষ হওয়ায় এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের চোখেও তিনি তেমন পড়েন না। অপেক্ষাকৃত সুবিধাবঞ্চিত সহজ-সরল এ গরীব মানুষ ও পরিবারটি সরকারিভাবে আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় পড়ার যোগ্য। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিবছর অনেকেই সরকারি ঘর ও অন্যান্য অনুদান পেলেও প্রকৃত হতদরিদ্র্য ও অসহায় পরিবার রুবেল ঘরামী চোখের আড়ালে পড়ে সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইফ-উল-আরেফিন বলেন, পরিবারটির বিষয়ে আমরা জেনেছি। অতি দ্রুত তাদের একটি সরকারি ঘর এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও সরকারের গৃহীত সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় আরো যে সব কর্মসূচী চলমান রয়েছে- পর্যাক্রমে সেগুলোরও আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে এ অসহায় পরিবারটির জন্য।
মধুপুরের প্রধান অর্থকরি ফসল হিসেবে আনারস কলার পরেই পেঁপে তৃতীয় স্থান দখল করে নিয়েছে। এক সময় আনারস ছিল প্রধান অর্থকরি ফসলের তালিকায় সেরা।
কলার পরেই এখন পেঁপে। পেঁপে দীর্ঘদিন চাষাবাদ হলেও অন্যান্য ফসলকে টপকাতে
পারেনি। উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁপের বীজ বাজারে আসার পরেই সূচক এগিয়ে যায়। এক লাফেই এগিয়ে যায় কয়েকধাপ।এখন চাষিরা মনে করছে কলাকে পিছনে ফেলে যেতে পারে পেঁপে চাষ। কারণ হিসেবে কৃষকরা মনে করছে পেঁপে নানাভাবে আবাদ করা যায়।
একক ফসল হিসেবেও চাষে ফলন ও দামে কোন প্রভাব পড়ে না। অল্প সময়ে কম খরচে কয়েকগুণ লাভ আসে। রোগ জীবাণু কম হওয়ায় ফলন হয় বেশি। কেজি দামে বিক্রির সুযোগ থাকায় ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনাটাও কমে গেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে সবজি হিসেবে বাজারে ভালো দাম আসে। সব দিক চিন্তা করে লাল মাটির মধুপুর গড় অঞ্চলে উচ্চ ফলনশীল জাতের থাই টপলেডি পেঁপে কৃষকের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা দখল করে দিচ্ছে অধিক লাভ। সবুজ হলুদ রংয়ের পেঁপেতে কৃষকরা হচ্ছে লাল। রঙিন স্বাবলম্বী জীবনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে কৃষি ও কৃষক এমনটাই জানিয়েছে কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, চলছি মৌসুমে ১ হাজার ৫৬ হেক্টর জমি পেঁপে চাষ হয়েছে।
উন্নত হাতের পেঁপে এ সময়ে জনপ্রিয়তা লাভ করছে।ফলে স্থানীয় অর্থনীতির চাকাকে বেগবান করছে। লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
সরজমিনে মধুপুরের ২৫ মাইল বাজার থেকে দোখলা সড়ক দিয়ে এগিয়ে গেলে চোখে পড়ে আনারসের বাগানে থোকায় থোকায় গাছে ঝুলে থাকা পেপে দৃশ্য।
গাছাবাড়ি বিট অফিসের সামনেই বড় বড় পেঁপের বাগান। সবজু গাছে গাছে গোড়া থেকে আগ পর্যন্ত পেঁপে আর পেঁপে।
গাছাবাড়ি গ্রামের গিয়ে কথা আব্দুল হক নামের এক কৃষকের সাথে। গাছাবাড়ি গ্রামের আব্দুল হক (৫০) জানান, সে এ বছর ৩২ বিঘা জমিতে আনারস চাষ করেছে। সাথে মিশ্র ফসল হিসেবে টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছে।
পেঁপে পরিপক্ব হয়ে গেছে। শুধু বাগান থেকেই পেঁপেই বিক্রি করেছে প্রায় কোটি টাকার উপরে। সামনে বছর আনারস বিক্রি করবে। বাড়তি ফসল থেকে এ বছর কোটি টাকার উপরে পেয়েছে পেঁপে থেকেই।
আরেক গ্রামের শাজাহান আলী, এ বছর ২৪ বিঘা জমিতে আনারসের সাথে সাথী হিসেবে আদা পেঁপে কচু চাষ করেছে। মফিজ উদ্দিন (৪৮) সে তার ৩২ বিঘা জমিতে মিশ্র ফসল চাষ করেছে। আনারসের সাথে পেঁপে চাষ করেছে। তাদের মতো মধুপুরের অনেক কৃষক বাণিজ্যিক ভাবে পেঁপে চাষ করেছে। আবহাওয়া ও ফলন দাম ভালো পাচ্ছে। তাদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
সামনে এগিয়ে গেলেই দেখা যায় ২৫ মাইল- শোলাকুড়ি পাকা সড়কের পাশে বসে কয়েকজন শ্রমিক বসে বসে খবরের কাগজ দিয়ে পাকা পেপে মোড়াচ্ছ। পাশেই বাগান। কেউ কেউ বাগান থেকে খাচি দিয়ে পাকা পেঁপে নিয়ে আসছে। কেউ কেটে দিচ্ছে। হাগুড়াকুড়ি গ্রামের শাকিব (৩০) জানালেন তারা পাইকার মোফাজ্জলের কেনা পেঁপের বাগানে নিয়মতি কাজ করে। নটাকুড়ি গ্রামের আব্দুল হাকিম (৩২) জানান, খবরের কাগজ দিয়ে মোড়ালে পেঁপেগুলো ভালো থাকে, নষ্ট হয় না। শোলাকুড়ি গ্রামের মফিজুল জানালেন,তাদের ব্যাপারী প্রায় চার কোটি টাকার পেঁপের বাগান কিনেছে।এভাবে পেপারে মুড়িয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের
বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছে। ৬০-৯০ টাকা কেজি দামে মোকামে বিক্রি হয়ে থাকে বলে জানালেন তারা।
তবে শুধু এখানেই নয় এমন দৃশ্য এখন মধুপুর গড়ের বিভিন্ন গ্রামেই দেখা যায়।
কৃষক পাইকার ব্যাপারী ফড়িয়া ট্রাক শ্রমিক লেবারদের ব্যস্ত সময় পার করছে বলেও জানালেন স্থানীয় কৃষকরা।
লাল মাটির গড় অঞ্চল কৃষি ফসল চাষের জন্য উর্বর এলাকা। বর্তমান ব্যাগিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ফলে পেঁপে নষ্ট হয় না, ভালো ফলন ও সুফল পাচ্ছে কৃষকরা।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রকিব আল রানা বলেন, মধুপুরের মাটি ও আবহাওয়া সব ফসলের জন্যই বিশেষ উপযোগী। আনারস কলার পাশাপাশি অর্থকরী ফসলের মধ্যে পেঁপে এগিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকি কম এবং লাভ বেশির কারণে সাথী ফসল হিসেবে পেঁপে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। তিনি বলেন, উন্নত জাতের টপ লেডি, রেড লেডি, সুইট লেডি আবাদের ফলে আর্থিক লাভ বেশি পাচ্ছে। এ বছর ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার পেঁপের বাণিজ্যের সম্ভাবনার কথা জানান তিনি।
চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চলা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষী জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা আশা করছি, দ্রুত সময়ে ন্যায়বিচার পাবো।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম আজ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন সরকারের যে নৃশংসতা ছাত্র-জনতার ওপর হয়েছিল, অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথম দাবি ছিল এই বিচার প্রক্রিয়া যাতে যথাসময়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদিত হয়। আমরা আশা করছি যে দ্রুত সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার পাবো। শেখ হাসিনার এ মামলায় হয়তো আমি শেষ সাক্ষী। আমার সাক্ষ্য নেওয়ার পর এ মামলা রায়ের দিকে যাবে।’
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, তবে শুধু এই মামলাটিই নয়, সারা দেশে আরও নির্যাতন, নিপিড়ন, গুম-খুন হয়েছিল তার অনেক মামলা রয়েছে। ফলে এ বিচারপ্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ সময় চলবে। নির্বাচনের পরেও যাতে এ বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না হয়, বিচারপ্রক্রিয়া যেন অব্যাহত থাকে, সেই প্রতিশ্রুতির জন্য একটা রোডম্যাপের দাবি জানিয়েছি। সকল রাজনৈতিক দলের ইশতেহারে যেন সেই প্রতিশ্রুতি থাকে এটাই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে।
এদিকে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামীম বলেন, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ না হওয়ায় আজকে নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে না। আশা করি আগামীকাল নাহিদ ইসলামের জবানবন্দি ট্রাইব্যুনাল গ্রহণ করবেন।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই মামলার ৪৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীতে এই মামলার ৩৬ তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন রাজসাক্ষী পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ সব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
মন্তব্য