অর্থবছর শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পনিগুলোর। এর মধ্যে বেশির ভাগ কোম্পানি তাদের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ করেছে। আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যে আসতে থাকবে এ খাতের কোম্পানিগুলোর চূড়ান্ত আর্থিক প্রতিবেদন; পাশাপাশি লভ্যাংশ ঘোষণার সিদ্ধান্ত।
এমন অবস্থায় সোমবার বস্ত্র খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী ছিল সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি ব্যাংক খাতের শেয়ারের দরও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
গত বছরের জুলাই থেকে এক দফা আর ৫ এপ্রিল লকডাউনের শুরু থেকে আরেক দফা উত্থানে সাধারণ বিমা খাতের শেয়ারগুলো দৌড়াতে থাকে পাগলা ঘোড়ার মতো। যাচাই-বাছাই ছাড়াই দাম বাড়তে থাকে।
গত এক বছরে বিমা খাতের কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ৬ গুণ, কোনোটির ৭ গুণ, কোনোটির আবার ১০ গুণ হয়েছে। অস্বাভাবিক উত্থান নিয়ে বারবার আলোচনা হচ্ছিল।
অন্যদিকে বাজেটে অর্থমন্ত্রী করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করার পর থেকে বস্ত্র খাতে আগ্রহ দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আবারও গত বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে শুরু হয়েছে কঠোর লকডাউন, যা পরিচিতি পেয়েছে শাটডাউন হিসেবে। এই শাটডাউনের মধ্যে সোমবার প্রথম লেনদেন শুরু হয় পুঁজিবাজারে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি গত বুধবার দেয়া এক নির্দেশনায় জানিয়েছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিনিয়োগকারীদের মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে ব্রোকারেজ হাউসে যেতে হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
সোমবার লেনদেনে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দিনের কার্যক্রম। বেড়েছে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শাটডাউন নিয়ে যে আতঙ্ক ছিল, সেটি নেই বললেই চলে। যদিও শাটডাউনের আগে সূচকের বড় পতন হয়েছিল।
চলমান শাটডাউনে লেনদেন সময়সীমাও কমিয়ে আনা হয়েছে। ব্যাংকের কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন। এর আগের গত ৫ এপ্রিল লকডাউনে ব্যাংকের সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কমিয়ে আনা হয় পুঁজিবাজারের লেনদেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় গত বৃহস্পতিবার থেকে শাটডাউনের পর সোমবার লেনদেনেও লেনদেন সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছে।
সোমবার থেকে বুধবার পুঁজিবাজারে লেনদেন হবে দুপুর একটা পর্যন্ত। আগের স্বাভাবিক লেনদেন হতো বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। বিপরীত অবস্থায় ব্যাংকের লেনদেন চলবে দেড়টা পর্যন্ত।
সোমবার বস্ত্র খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ৩৫৯ কোটি টাকা। এ খাতে তালিকাভুক্ত ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র একটি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। বাকি ৫৭টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।
তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে তাদের শেয়ারধারীদেরর সর্বশেষ অর্থবছরের লভ্যাংশ ঘোষণা শেষ করেছে। ফলে লভ্যাংশ প্রাপ্তির বিপরীতে শেয়ার লেনদেন মুনাফার প্রত্যাশায় সোমবারও এ খাতের শেয়ার দর বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে আটটি ব্যাংকের শেয়ারদর কমেছে। পাঁচটির দর পাল্টায়নি। বাকি ১৮টি ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে। সোমবার এ খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
লেনদেনে সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের শেয়ার। ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ১০টির। দর পাল্টায়নি দুটির। বাকি ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে।
আগ্রহে উড়ছে বস্ত্র
শতকরা হিসেবে দর বৃদ্ধির শীর্ষ পর্যায়ে ছিল বস্ত্র খাতের জাহিন স্পিনিং, তাল্লু স্পিনিং লিমিটেডের। এদিন কোম্পানি দুটির শেয়ার দর বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ।
জাহিন স্পিনিং লিমিটেডের শেয়ার দর ৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯ টাকা ৯০ পয়সা। আর তাল্লু স্পিনিং লিমিটেডের শেয়ার দর ৭ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা ৭০ পয়সা।
এ ছাড়া, সাড়ে ৯ শতাংশ পর্যন্ত দর বৃদ্ধি পাওয়া ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১৩টি ছিল বস্ত্র খাতের।
এমএল ডাইং লিমিটেডের শেয়ার দর ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। শেয়ার দর ২৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২ টাকা।
ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের শেয়ার দর ১৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯২ শতাংশ।
প্যাসিফিক ডেনিম লিমিটেডের শেয়ার দর ১৩ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪ টাকা ৫০ পয়সা। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৮৪ শতাংশ।
অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৭৫ শতাংশ। শেয়ার দর ১২ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা।
ডেল্টা স্পিনিং লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৭০ শতাংশ। শেয়ার দর ১০ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১ টাকা ৩০ পয়সা।
এ ছাড়া, দর বৃদ্ধির তালিকায় ছিল ইভেন্স টেক্সটাইল, ম্যাকসন স্পিনিং মিলস, আরএন স্পিনিং, সাফকো স্পিনিং, মতিন স্পিনিং, মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড।
ব্যাংকের চিত্র
শাটডাউনের মধ্যে পুঁজিবাজারের প্রথম লেনদেনে ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বিনিয়োগকারীদের। সোমবার লেনদেন সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে ব্যাংক খাতের আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৭.৩১ শতাংশ। শেয়ার দর ৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪ টাকা ৪০ পয়সা।
ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৪৬ শতাংশ। শেয়ার দর ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২ টাকা ৭০ পয়সা।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ৩.১৭ শতাংশ। ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ৩.১৬ শতাংশ। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ২.৭৪ শতাংশ। এক্সিম ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ২.৫৮ শতাংশ। শেয়ার দর ১১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১ টাকা ৮০ পয়সা।
সিটি ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ২.২৭ শতাংশ। এ ছাড়া, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১ শতাংশের বেশি।
প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে দশমিক ৪৩ শতাংশ। ডাচ বাংলা ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে দশমিক ৮৯ শতাংশ। ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১ দশমিক ০১ শতাংশ। পূবালী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
পড়তি সময় বিমার
৫ এপ্রিল লকডাউন শুরুর পর থেকে কেবল বিমা খাতে ভর করেই এগিয়েছে পুঁজিবাজার। শেয়ারের দাম দেড় থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে এক মাসে।
সবচেয়ে বেশি দর পতন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।
শতকরা হিসাবে ৬.৩১ শতাংশ শেয়ার দর হারিয়ে সর্বোচ্চ দর পতন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে তৃতীয়স্থানে ছিল অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ৬৮ টাকা ১০ পয়সা থেকে কম হয়েছে ৬৩ টাকা ৮০ পয়সা।
গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৫.৪৮ শতাংশ। শেয়ার দর ৬৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৬৩ টাকা ৮০ পয়সা।
সোমবার দর পতনের দিক দিয়ে শীর্ষ ৩৬টি কোম্পানির মধ্যে ২২টি ছিল বিমা খাতের।
এ ছাড়া, প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৫.০৫ শতাংশ। কর্নফুলী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪.৮৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ৪.৭১ শতাংশ। প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪.১৬ শতাংশ। প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪.১৫ শতাংশ। ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪.১৪ শতাংশ।
অন্যান্য খাতে যে প্রবণতা
লকডাউনের পর থেকে প্রথমে বিমা, পরে মিউচ্যুয়াল ফান্ড, এরপর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আর শেষে বস্ত্র খাতে উত্থানের পরও আরও বেশ কিছু খাত ছিল ঘুমিয়েই।
প্রকৌশলের কোম্পানিগুলোর প্রতিও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেল সোমবার। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ২৯টির। এদিন সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির তালিকায় ছিল ইয়াকিন পলিমার, যার শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৪৪ শতাংশ।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১২টির। এই খাতে শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এ্যামারেল্ড অয়েল লিমিটেডের। শেয়ার প্রতি দুই টাকা ৮০ পয়সা বা ৯.৯৮ শতাংশ বেড়েছে এই কোম্পানির দর।
তথ্য প্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে দশটির। সবচেয়ে বেশি ছয় টাকা ৯০ পয়সা বেড়েছে জেনেক্স ইনফ্লোয়েন্সের দর।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির। কমেছে দশটির। আর পাল্টায়নি একদিন দর।
ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৮টির। কমেছে দশটির। আর পাল্টায়নি বাকি তিনটির দর।
এক দিনে বাড়ল সব ফান্ডের দর
৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে একটির লেনদেন হচ্ছে না বেশ কিছুদিন ধরেই। বাকি ৩৬টি ফান্ডের সব কটির দাম এক দিনে বাড়ল আবার।
এই ফান্ডগুলোর মধ্যে ৩০টির অর্থবছর শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। এগুলো হিসাবনিকাশ শেষ করে লভ্যাংশ ঘোষণা করবে।
পুঁজিবাজারের সামগ্রিক চিত্রের মতোই মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অবস্থা। গত এক দশক ধরে সামগ্রিক যে হতাশা, তা ছিল এই খাতেও। তবে চলতি বছর ফান্ডগুলো ব্যাপক মুনাফা করেছে বলে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে মার্চের পর জানানো হয়েছে। আর চতুর্থ প্রান্তিকে সূচক বেড়েছে ৮৮০ পয়েন্ট। আর এর সুফল অবশ্যই পাবে ফান্ডগুলো।
এ কারণে এবার এই খাতে মুনাফায় চমকের আশাও করা হচ্ছে। আর গত কয়েক দিন ধরেই ফান্ডের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির প্রমাণ মিলছে। এক দিনে সব ফান্ডের দাম বাড়ার ঘটনা আগেও দেখেছে পুঁজিবাজার।
এই দাম বৃদ্ধির হার খুব একটা বেশি নয়। বেশির ভাগ ফান্ডের দামই বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ পয়সা। তবে বেশির ভাগ ফান্ডই অভিহিত মূল্যের অনেক নিচে থাকায় ধীরে ধীরে দাম বাড়তে থাকায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে বিনিয়োগকারীরা।
গত ৪ এপ্রিল থেকে বহু ফান্ডের দাম ৫০ শতাংশের মতো বেড়েছে।
তিন বছর পর ৬ হাজার ২০০ সূচকে
সোমবার লেনদেন শেষে সূচকের দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২১৯ পয়েন্টে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি সূচক উঠেছিল ৬ হাজার ২১৮ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস বেড়েছে ১১ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২৬ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক বেড়েছে ১৬ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২২৫ পয়েন্টে।
ডিএসইতে এদিন লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৪০ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৫ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২১৫ টির, কমেছে ৭১টির। পাল্টায়নি ১৮টির। মোট লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:নেত্রকোনা জেলা সদরের মোক্তারপাড়া মাঠে আয়োজিত এক বিশাল গনসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীর (শায়েখে চরমোনাই) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম প্রধান অতিথির হিসাবে উপস্থিত ছিলেন । প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশব্যাপী চাাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলবাজি, জুলুম, অত্যাচার-নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই বাংলাদেশ দেখার জন্য আমরা রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়িনাই। এমন কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান নাই, যা দখল করা হয়নি। বিচারালয়গুলোকেও দখল করা হয়েছে। এই বাংলাদেশ দেখার জন্য মুগ্ধ জীবন দেয় নাই, আবু সাঈদ তার বুক পেতে দেয় নাই। বাংলাদেশে আমরা আর চাাঁদাবাজ, জুলমবাজ ও দখলবাজ দেখতে চাই না। যদি শেখ হাসিনার বুলেটের সামনে, ট্যাঙ্কের সামনে বুক পেতে দিতে পারি, তাহলে আজকেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেনো বুক পেতে দিতে পারবো না? যদি শেখ হাসিনার জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি, তাহলে আজকেও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কেনো কথা বলবো না? তিনি আরও বলেন, মুসলিম লীগ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছেন। তাদের শাসনে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এর মূল কারণ খুঁজতে হবে। দেশ, দল ও নেতা পরিবর্তন করে শান্তি আসবে না, শান্তি তখনই আসবে, যখন আমরা নীতি আদর্শের পরিবর্তন আনতে পারবো। প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সারা দেশে খুন, লুণ্ঠন ও চাঁদাবাজি বন্ধ এবং পিআর পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ইসলাম বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর জেলা কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে। মুফতি নুরুল ইসলাম হাকিমীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা ওয়ালীউল্লাহ্ এবং মুফতি ওমর ফারুক ওফার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন: জতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিন পাঠান, ইসলামী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট এনামূল হক মুর্শেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সায়েম, সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাসুম মোস্তফা,জামায়েতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মামুনুর রশিদ রব্বানী, মুফতি তাজুল ইসলাম কাশেমী, মুফতি ওয়ালী উল্লাহ প্রমুখ। সমাবেশে শায়েখে চরমনোই সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম নেত্রকোনার পাঁচটি আসনের জন্য দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন: নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনে মাওলানা মামুনুর রশিদ রব্বানী, নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনে হযরত মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনে জাকির হোসেন সুলতান, নেত্রকোনা-৪ (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী) আসনে হাফেজ মাওলানা মুখলেছুর রহমান ও নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনে মুফতি নূরুল ইসলাম হাকিমী।
বাজিতপুর থেকে নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ভৈরবে মেঘনা নদী থেকে রাকিব (২৭) নামের এক যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ থানা পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভৈরবের লুন্দিয়া এলাকায় নদীতে মরদেহটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে ভৈরব নৌ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত ১০ আগস্ট বিকেলে রাকিব বাড়ি থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে একই উপজেলার কুকরাই গ্রামের বন্ধু শাওনের বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর থেকে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও না পাওয়ায় নিহতের ভাই রিয়াজ মিয়া বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বাজিতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তীতে ভৈরবের মেঘনায় লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে তাকে সনাক্ত করি।
এ বিষয়ে ভৈরব নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, লুন্দিয়া এলাকা থেকে রাকিবের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা নদীতে ফেলে দিয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হত্যাসহ ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়া (৩৭) কে গ্রেপ্তার করেছে সিপিসি-২, র্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্প।
সে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার কালিপুর মধ্যপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে।
শুক্রবার দুপুরের দিকে শহরের কালিপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জানা যায়, সিপিসি-২, র্যাব-১৪, ভৈরব ক্যাম্প এর আভিযানিক দল নরসিংদী জেলার বেলাবো থানা এলাকায় সিএনজি ডাকাতির পর সিএনজি ড্রাইভারকে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনায় নরসিংদীর বেলাবো থানার মামলা নং-০১(০১)১৫, ধারা-৩৯৬/২০১ এর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়াকে শুক্রবার শহরের কালিপুর মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মুহিত কবির জানান, হত্যাসহ ডাকাতি মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী গোলাম হোসেন মিয়াকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেলেও শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে পানি। ফলে কিছুটা স্বস্থিতে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা। শুক্রবার হঠাৎ করে দুধকুমার নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কমতে শুরু করেছে তিস্তা, ব্রহ্মপূত্রনদসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি।
এদিকে পানি কমলেও তিস্তা নদী অববাহিকায় ৪টি ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে পরেছে। জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বজরা ইউনিয়নের কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামে তীব্র ভাঙন শুরু হওয়ায় লোকজন বাড়ি সড়াতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকেও জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।
বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাইয়ুম সর্দার জানান, ভাঙন প্রতিরোধে বজরা ইউনিয়নে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ শুরু না করায় চলতি সপ্তাহে ৬টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। হুমকীতে রয়েছে ১০টি বাড়িসহ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।এরমধ্যে কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামের শাহজাদি, আশরাফুল, হান্নান, মুকুল, মজিদা ও রোসনার বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে।
ওই এলাকার সাতালষ্কার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ারা জানান, কাল যে রাস্তা দিয়ে স্কুলে গেছি, আজ সেই জায়গা নদীগর্ভে চলে গেছে। যে কোন সময় দুটি স্কুল নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।
সাধুয়াদামারহাট গ্রামের ফুলবাবু জানান, নদী আমার ২ বিঘা জমি খেয়ে গেছে। আমার মতো মোফাজ্জল ও আশরাফুলের বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে। সরকারিভাবে আমরা নদী ভাঙন রোধে কাজ চাই।
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার সাহা জানান, আমি ভাঙন কবলিত বজরা ও থেতরাই ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছি। জনপ্রতিনিধিদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ৩২০টি শুকনা খাবার প্যাকেট রয়েছে। এছাড়াও জিআর’র চাহিদা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে দুধকুমার নদীতে পানিবৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে। তবে শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করেছে পানি। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও শুক্রবার পানি ১৬ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে পানি কমলেও জলাবদ্ধতার কারণে নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের কাস ইউনিয়নের ফান্দের চরে ৪ থেকে ৫টি নীচু বাড়িতে পানি উঠেছে বলে স্থানীয়রা জনিয়েছে। একইভাবে ওই উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কুটি বামনডাঙ্গা চরে নীচু এলাকায় অবস্থিত দুটি বাড়িতে পানি উঠছে বলে স্থানীয় যুবক আশরাফুল ও কাদের জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ জানান, আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কিছু নিচু বাড়ি জলবন্দী রয়েছে বলে জেনেছি। তিনি আরও জানান, যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ও নদী ভাঙন বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন সরকার জানান, প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের কাছে ২ হাজার ৫শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৪৪০ মে.টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। নগদ টাকা রয়েছে ১৪লাখ। তালিকা পেলেই আমরা সাথে সাথে উপজেলাগুলোতে বরাদ্দ দিয়ে দিবো। তারপরও প্রতি উপজেলায় ৩২০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার সরবরাহ করা আছে।
প্রথম থেকে চতুর্থ সাইকেল পর্যন্ত "সামগ্রিক দক্ষতা" মূল্যায়নে সারা দেশের ৬৪টি টিটিসির মধ্যে ঝালকাঠি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) শতকরা ৮৭ শতাংশ দক্ষতা অর্জন করে সারাদেশে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে।
বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় কারিগরি শিক্ষা বিষয়ক এসেট (ASSET) প্রকল্পের ৫ম সাইকেল সমাপনী ও ৬ষ্ঠ সাইকেল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান গত ১৪ আগষ্ট অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সচিবসহ বিএমইটি'র (BMET) সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠি টিটিসির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শামীম হোসাইন বলেন, 'এই প্রতিষ্ঠানের সাফল্য অর্জনের জন্য এখানে কর্মরত সকল ট্রেড ইনচার্জ, প্রশিক্ষক, অতিথি প্রশিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আগামীতে আরও ভালো ফলাফল অর্জনের লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।'
উল্লেথ্য, 'ঝালকাঠির সরকারী টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) এই জেলার একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এটি মূলত দক্ষ জনশক্তি তৈরীর জন্য বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। এখানে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, সেলাই প্রশিক্ষণ, ওয়েল্ডিং সহ বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং নারীরাও বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। ঝালকাঠি টিটিসি, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখছে।
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী।
শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার দামিহা ইউনিয়নের সিংগোয়ারপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে গ্রামের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, তাড়াইল উপজেলার কাজলা গ্রামটিতে কিছুদিন আগেও মাদক সেবনকারী বা মাদক ব্যবসায়ী ছিল না। কিন্তুু বর্তমানে হাত বাড়ালেই খুব সহজে মিলছে মাদকদ্রব্য। মাদক সরবরাহকারী একটি চক্র এই এলাকায় শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। মাদকে ছেয়ে গেছে এখানকার বিভিন্ন অলিগলি। এসব মাদকদ্রব্যের বেশির ভাগ ক্রেতাই হচ্ছে বেকার যুবক। এতে এলাকায় বাড়ছে চুরি ও ছিনতাই। অনেকে প্রকাশ্যেই মাদক গ্রহণ করছে এবং বিক্রি করছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের যুবসমাজ ধ্বংস হতে বেশি সময় লাগবে না। মাদকের এত ছড়াছড়ি থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
দামিহা ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন বলেন, কিছুদিন আগেও কাজলা গ্রামটিতে মাদকসেবী বা ব্যবসায়ী কেউ ছিল না। কিন্তুু বর্তমানে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। যেমন বেড়েছে মাদকসেবী, তেমনি বেড়েছে ব্যবসায়ীর সংখ্যাও। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
মানবন্ধনে তাসলিমা-হাসেম ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান ও সমাজকর্মী অ্যাডভোকেট মাহফুজুল হক বলেন, শুধু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একক প্রচেষ্টায় মাদক নির্মূল করা যাবে না। পরিবার থেকে সচেতনতা শুরু করতে হবে, সন্তানদের পারিবারিক বন্ধন বাড়াতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে তরুণ সমাজ রক্ষা করতে হবে। অন্ধকার গহীন অরণ্যে হারিয়ে যাবে আগামীর ভবিষ্যৎ। মাদকসেবী একটি মারাত্মক সমস্যা তবে সম্মিলিত প্রয়াসে সমাধান সম্ভব।
মানববন্ধনে শিক্ষক হাসিবুর রহমান, ব্যাংক কর্মকর্তা সোহেল রানা, সাবেক সেনা সদস্য ইসহাক মিয়া, ইউপি সদস্য রুহুল আমিন ও সাবেক ইউপি সদস্য খোকন মিয়া, ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে দেয়া বাণীতে বলেছেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির এই বন্ধনকে অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ সব কথা বলেছেন। তিনি এ সময় ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষ্যে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ধর্মাবতার শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সুদৃঢ় করবে বলে উল্লেখ করে তিনি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
মন্তব্য