বাংলাদেশের ওপেন ও সিনিয়র ব্রিজ দল ১৯–৩১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ডেনমার্কের হারনিং শহরে অনুষ্ঠিত ৪৭তম বিশ্ব ব্রিজ দল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে যাচ্ছে। তারা আগামী ১৭ আগস্ট ঢাকা ত্যাগ করবে।এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ২৪টি সেরা ব্রিজ খেলোয়াড় দেশ অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ এ বছরের শুরুতে ২৩তম বিএফএএমই জোনাল চ্যাম্পিয়নশিপে জর্ডান ও পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।
বাংলাদেশ ব্রিজ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নঈমুল হাসান বলেন, “বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার যোগ্যতা অর্জন দেশের জন্য গর্বের। আমরা বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের ব্রিজ খেলার দক্ষতা প্রদর্শনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
দলের সদস্যরা:
ওপেন দল: সাজিদ ইস্পাহানি, মোঃ মশিউর রহমান, মোঃ জাহিদ হোসেন, শাহ জিয়া উল হক, মোঃ আলাউদ্দিন, এ এইচ এম কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ মোনিরুল ইসলাম, রাশেদুল আহসান।
সিনিয়র দল: এ টি এম মোয়াজ্জেম হোসেন, দেওয়ান মোহাম্মদ হানযালা, খন্দকার মুজাহারুল হক, মোহাম্মদ আজিজুল হক, মোঃ জহিরুল হক, সাঈদ আহমেদ।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হয়েছে ১১ দলের টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। যেখানে লাল-সবুজের প্রতিনিধি হিসেবে খেলছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। এই টুর্নামেন্ট শেষে ২৮ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার দিনের একটি ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সারির দলটির। যে ম্যাচটি আগামী বছর অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখা হচ্ছে। এবার সেই ম্যাচ খেলার জন্য ঢাকা থেকে ৬ ক্রিকেটার যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ায়। বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, শাহাদাত হোসেন দিপু, ইফতেখার হোসেন ইফতি, অমিত হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, হাসান মুরাদ এবং পেসার এনামুল হক চার দিনের ম্যাচ খেলার জন্য অস্ট্রেলিয়া যাবেন। তারা দুটি পৃথক দলে ভাগ হয়ে আগামী ১৭ ও ১৮ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলা পেসার হাসান মাহমুদ, ওপেনার মোহাম্মদ নাইম শেখ, স্পিনার নাঈম হাসান এবং উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মহিদুল ইসলাম অঙ্কনেরও চার দিনের ম্যাচটিতে খেলার কথা রয়েছে। ঐ ম্যাচেও অধিনায়ক থাকার কথা রয়েছে নুরুল হাসান সোহানের।
টেস্ট ক্রিকেটে পথচলার প্রায় ২৫ বছর হলেও আশানুরূপ সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। তবে এর মধ্যেই দারুণ কিছু জয় আছে টাইগারদের ঝুলিতে। তেমন জয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটা সিরিজকে ও হেরে যাওয়া একটি সিরিজকে ২১ শতকের ১৫টি সেরা টেস্ট সিরিজের ২টি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ক্রিকেটের বাইবেল খ্যাত উইজডেন।
বাংলাদেশের সেই দুইটা টেস্ট সিরিজই ঘরের মাঠে। একটি ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, অন্যটি ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
২০১৬ সালে চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে হেরে যায় বাংলাদেশ। ২৮৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা। ২২ রানে হারের ওই ম্যাচে একপাশে সাব্বির রহমান ৬৪ রানে অপরাজিত থাকলেও তাকে সঙ্গ দেওয়ার কেউ ছিল না।
তবে মিরপুরে হওয়া দুই ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয়টিতে আক্ষেপ ঘোচায় বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে ম্যাচ হারে ইংল্যান্ড। ১০৮ রানের বিশাল জয় নিয়ে সিরিজ সমতা করে ১-১ ব্যবধানে। উইজডেনে সেরা ১৫ সিরিজের তালিকায় এটি জায়গা করে নিয়েছে সবার শেষে।
পরবর্তীতে ২০২১ সালে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ২-০ ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে ৩ উইকেটের জয় পায় ক্যারিবিয়ানরা। দ্বিতীয় ম্যাচে ২৩১ রানের লক্ষ্যে পেয়েও হারে লাল সবুজরা। ২০১২-১৩ মৌসুমের পর প্রথম এশিয়ার বাইরের কোনো দল হিসেবে বাংলাদেশে সিরিজ জেতে উইন্ডিজ।
গত বছর অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে খেলা ১৫ জনই আছেন এই দলে। নতুন আটজন হলেন- রিয়া, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনী চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা, আমেনা খাতুন। দলটির অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস। এ বছর এখনো কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দল। ২০২৪ সালে সাফে চার ম্যাচের চারটিতে জিতে তারা। সেই প্রতিযোগিতায় ভারতের সঙ্গে খেলা ফাইনালই মেয়েদের সর্বশেষ ম্যাচ। জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার গত ১১ আগস্ট লাওসে অনূর্ধ্ব-২০ দলের খেলা শেষে ছুটিতে গেছেন। আগস্টের বাকি সময় তিনি ছুটিতে থাকবেন। কোচ হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সঙ্গে ভুটান যাবেন মাহবুবুর রহমান।
বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল- এই চার দেশ নিয়ে আগামী ২০ থেকে ৩১ আগস্ট থিম্পুতে হবে এই টুর্নামেন্ট। রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে একদল অন্য দলের সঙ্গে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। এরপর সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীর হাতে উঠবে ট্রফি। আগামী ২০ আগস্ট ভুটান ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করবে বাংলাদেশ। একদিন বিরতি দিয়ে ২২ আগস্ট দলটির প্রতিপক্ষ ভারত। ২৪ ও ২৭ আগস্ট পরপর দুই ম্যাচে নেপালকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। ২৯ আগস্ট ভুটান এবং ৩১ আগস্ট আবার ভারতের মুখোমুখি হবে মেয়েরা। সবগুলো ম্যাচ থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে। এই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সাতবার অংশ নিয়ে দুবার ট্রফি জিতেছে তারা। বাংলাদেশের সমান দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। এ বছর অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ের টুর্নামেন্ট হলেও ২০১৭ সালে প্রথম আসর থেকে চতুর্থ আসর পর্যন্ত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ে। এরপর ২০২৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ ও ২০২৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাফের এই প্রতিযোগিতা।
২৩ সদস্যের বাংলাদেশ স্কোয়াড:
ইয়ারজান বেগম, মেঘলা রানী, মমিতা খাতুন, শিউলি রায়, তানিয়া আক্তার, অর্পিতা বিশ্বাস (অধিনায়ক), ফাতেমা আক্তার, উম্মে কুলসুম, আরিফা আক্তার, মোসাম্মত আলমিনা, রেশমি আক্তার, থুইনুয়া মারমা, সুরভী আকন্দ, ক্রানুচিং মারমা, রিয়া, আলফি আক্তার, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনি চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা ও আমেনা খাতুন।
গত মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এক জয়ে আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে নবম স্থানে উঠেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
কিন্তু গত মঙ্গলবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পাকিস্তানের সিরিজ হারে বিপদে পড়েছে টাইগাররা। গত মঙ্গলবার পাকিস্তানকে ৯২ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে ২০২ রানের জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিস।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪ বছর পর সিরিজ জয়ে ক্যারিবীয়দের র্যাঙ্কিংয়ে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। ১০ নম্বরে নেমে গেছে বাংলাদেশ। যে কারণে ২০২৭ সালে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে টাইগাররা।
২০২৭ সালের বিশ্বকাপে ১৪টি দল অংশ নেবে। র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ ৮ দল এবং আয়োজক দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে স্বাগতিক কোটায় সরাসরি সুযোগ পাবে। বর্তমানে প্রোটিয়ারা র্যাঙ্কিংয়ে ছয়ে থাকায় বাংলাদেশ ৯ নম্বরে থাকলেও সরাসরি বিশ্বকাপে খেলতে পারত। কিন্তু এখন ১০ নম্বরে নেমে যাওয়ায় সেই সুযোগ হারিয়েছে।
সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়ার জন্য ২০২৭ সালের ৩১ মার্চ র্যাঙ্কিং বিবেচনা করা হবে। র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করতে বাংলাদেশ পাচ্ছে ২৬টি ওয়ানডে ম্যাচ। এর মধ্যে ১১টি এমন দলের বিপক্ষে, যারা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। এসব ম্যাচে জিতলে র্যাঙ্কিং উন্নতি হবে সামান্য, কিন্তু হারলে ক্ষতি হবে অনেক।
গত কয়েক বছরে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ধারাবাহিক নয়। তামিম ইকবালের অধীনে ২ বছর আগে ৩৫ ম্যাচে ২১ জয় পাওয়া দলটি শেষ দুই বছরে ৩৪ ম্যাচে জিতেছে মাত্র ৯টি।
নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ; দলকে আবার প্রতিযোগিতামূলক জায়গায় ফিরিয়ে আনতে না পারলে বিশ্বকাপে বাছাইপর্বে খেলতে হবে বাংলাদেশকে।
ভারতের ওপর আস্থা হারিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ভিসা জটিলতার কারণে ভারতের পরিবর্তে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় ক্রিকেটারদের চিকিৎসার জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বিসিবি। রাজনৈতিক কারণে এক বছরের বেশি সময় ধরে ভিসা বন্ধ রয়েছে ভারতের। ক্রিকেটারদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ভারতে পাঠাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বিসিবিকে।
যে কারণে ভারতের পরিবর্তে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি সই করতে যাচ্ছে বিসিবি। যেন ক্রিকেটাররা সল্পসময়ে ভিসা নিয়ে এই দুদেশে চিকিৎসার জন্য দ্রুত যেতে পারেন। বিসিবির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ‘লম্বা সময় ধরে ভারতের ভিসা নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তাই আমরা চাইছি মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডের সঙ্গে মেডিকেল চুক্তি করতে।’ ‘যেন ক্রিকেটারদের দ্রত সময়ের ভেতর সেখানে আমরা পাঠাতে পারি। এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, ভারত-নির্ভরতা কমাতেই আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারি। আশা করছি দিন কয়েকের ভেতর বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’ এই মুহূর্তে ভারতের মেডিকেল ভিসা পেতে প্রায় মাস দুয়েকের মতো লেগে যাচ্ছে ক্রিকেটারদের। তা ছাড়া বিসিবির চিকিৎসক ও ফিজিওদের জন্যও মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে গিয়ে ওয়ার্কশপের ব্যাবস্থা করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে বিসিবির।
পূর্বাচলে বায়োমেকানিক্স ল্যাব স্থাপনের জন্য এরই মধ্যে পরামর্শক খোঁজা শুরু করেছে বিসিবি। প্রাথমিকভাবে বিদেশি টেকনিশিয়ান দিয়ে ল্যাবটি চালানো হবে।
ক্রিকেটারদের চোট কমিয়ে আনতে এবং পারফরম্যান্স ও টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ আরও গভীরভাবে করতে বায়োমেকানিক্স ল্যাব স্থাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পূর্বাচলের ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১০ কোটি টাকার বেশি খরচ করে এই ল্যাব তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি।
বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান ফাহিম সিনহা জানিয়েছেন, ল্যাব স্থাপনের জন্য এরই মধ্যে পরামর্শক খোঁজা শুরু হয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশে এখনো এ ধরনের ল্যাব চালানোর মতো কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ নেই, এ জন্য ভারত বা পাকিস্তান থেকে কোনো পরামর্শক নিতে চাইছে বিসিবি। প্রাথমিকভাবে বিদেশি টেকনিশিয়ান দিয়েই ল্যাবটি চালানো হবে। একই সঙ্গে স্থানীয়দেরও এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
মোটামুটি মানের একটি বায়োমেকানিক্স ল্যাব স্থাপন করতে আনুমানিক ১০ কোটি টাকার বেশি খরচ হবে বলে জানিয়েছেন ফাহিম সিনহা। তবে আরও বড় পরিসরে সেটি করতে গেলে খরচটা ১৫-২০ কোটি টাকার মতোও লাগতে পারে। বিসিবির অবশ্য পরিকল্পনা প্রাথমিকভাবে স্বল্প পরিসরে ল্যাবটি চালু করার। প্রযুক্তিগত সুবিধা বাড়ানো হবে ধীরে ধীরে।
ক্রিকেটারদের ব্যাট সুইং, বোলিং অ্যাকশন থেকে শুরু করে পায়ের ভর, পেশির শক্তি, বেশি ধকল নেওয়ায় কোনো চোটের শঙ্কা তৈরি হচ্ছে কি না; এমনকি ব্যাট, বল, গ্লাভস বা জুতার ঠিকঠাক ব্যবহারের বিষয়েও বিশদ তথ্য পাওয়া যাবে এই ল্যাব থেকে। সেসব বিশ্লেষণ করে সমাধানের জায়গাগুলো আরও সহজে বের করতে পারবেন কোচরা। বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতেও তখন আর বোলারদের অন্য দেশে ছুটতে হবে না।
ল্যাব স্থাপনের উদ্দেশ্য সম্পর্ক জানতে চাইলে বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট প্রধান বলেন, ‘খেলাধুলায় বায়োমেকানিক্স বা স্পোর্টস সায়েন্সের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিটি দেশেই বায়োমেকানিক্সের ব্যবহার আছে। সবার নিজস্ব ল্যাবও আছে, ভারতে যেমন ১১টি ল্যাব। আধুনিক ক্রিকেটে এখন যে পরিবর্তন হচ্ছে, এটা ল্যাবে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমেই হচ্ছে।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরামর্শে শুরুতে বিকেএসপির বায়োমেকানিক্স ল্যাব ব্যবহার করতে চেয়েছিল বিসিবি। এ জন্য বিদেশ থেকে একজন বিশেষজ্ঞও আনা হয়েছিল। তবে দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় বিকেএসপির ল্যাবটি এখন অনেকটাই অকেজো। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুনীরুল ইসলাম জানান, বিকেএসপির ল্যাবে কিছু সফটওয়্যার আপডেট করা প্রয়োজন, তারা সেটা করার চেষ্টা করছেন। আপাতত বিকেএসপির খেলোয়াড়দের জন্য ল্যাবটি কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহারও করা হচ্ছে।
দেশে বায়োমেকানিক্স ল্যাব হলে স্থানীয় ফিজিও-ট্রেনারদের কাজ আরও সহজ হয়ে যাবে, উপকৃত হবেন খেলোয়াড়রা। এ নিয়ে বিসিবির মেডিকেল বিভাগের কাছ থেকেও পরামর্শ নিয়েছে বোর্ড। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ‘খেলাধুলায় সফল সব দেশেই ক্রীড়াবিজ্ঞানের ব্যবহার আছে। বায়োমেকানিক্স স্পোর্টস সায়েন্সেরই একটা অংশ। এটার ব্যবহারে খেলোয়াড়দের দক্ষতা বাড়বে, চোটপ্রবণতা কমবে। তবে এর প্রয়োগটা আমরা কত ভালো করতে পারছি, কত ভালো টেকনিশিয়ান আনতে পারছি, বিশ্লেষণ করতে পারছি- এসবও গুরুত্বপূর্ণ।’
ল্যাব স্থাপনের আগে স্থানীয় কোচদের এ সম্পর্কে আরও বিশদ ধারণা দিতে চায় বিসিবি। কারণ, খেলোয়াড়দের ল্যাবে নিয়ে গিয়ে সমস্যা সমাধান তারাই করবেন। ল্যাব স্থাপনের বিষয়ে বর্তমান বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামও বেশ আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ফাহিম সিনহা, ‘(পুরো) বোর্ড ইতিবাচক। বুলবুল ভাই যেহেতু স্পোর্টস সায়েন্স নিয়ে কাজ করেছেন, তার এ কারণে বাড়তি আগ্রহ আছে।’
বিসিবি তোড়জোড় শুরু করলেও ল্যাব স্থাপনের কাজ কবে নাগাদ শুরু হবে, তা অবশ্য এখনো নিশ্চিত নয়। আগামী অক্টোবরে বিসিবির নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে স্বাভাবিকভাবেই কাজ শুরুর সম্ভাবনা নেই। তবে ফাহিম সিনহা জানিয়েছেন, বিসিবির পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা হলেও রেখে যেতে চান তারা।
মন্তব্য