ক্রীড়া ডেস্ক:
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসন্ন তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে জায়গা পাননি সাবেক টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
সাম্প্রতিক সময়ে ছোট ফরম্যাটে শান্তর ব্যাটিং ফর্ম নিয়ে সমালোচনা চলছিল। পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা না থাকায় আগেই টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছেড়ে দেন তিনি। এবার বাদ পড়লেন দল থেকেও।
দীর্ঘ ১ বছর পর টি-টোয়েন্টি দলে ফিরেছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার সঙ্গে দলে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান এবং নাসুম আহমেদ।
অন্যদিকে, শান্ত ছাড়াও গত পাকিস্তান সিরিজের দলে থাকা সৌম্য সরকার, হাসান মাহমুদ, তানভীর ইসলাম, নাহিদ রানা ও খালেদ আহমেদকে এই দফায় স্কোয়াডে রাখা হয়নি।
আগামী ১০ জুলাই তিন ম্যাচের সিরিজটি শুরু হবে ক্যান্ডিতে। বাকি দুই ম্যাচ হবে ১৩ ও ১৬ জুলাই, যথাক্রমে ডাম্বুলা ও কলম্বোয়।
বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি স্কোয়াড (শ্রীলঙ্কা সিরিজ):
লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, মোহাম্মদ নাইম শেখ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শামিম হোসেন পাটোয়ারি, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, শেখ মাহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের (ডব্লিউইইউ) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সাক্ষর হয়েছে। আজ শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে এই এমওইউ সাক্ষরিত হয়।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সভাপতি নেজমেদ্দিন বিলাল এরদোয়ান নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এমওইউ স্বাক্ষরের আগে, উভয় নেতা অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে তারা সভ্যতা ও সংস্কৃতি সমৃদ্ধকরণে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন এবং দেশীয় খেলাধুলা প্রচারে পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
আলোচনায় বিলাল এরদোয়ান বাংলাদেশের কাবাডি, কুস্তি, বলিখেলা ও নৌকা বাইচের মতো ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে এসব খেলাধুলা বিশ্বব্যাপী প্রচারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোকে ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে তিনি আগ্রহী বলে জানান।
তুরস্কে শিক্ষামূলক কার্যক্রমে তার সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে এরদোয়ান বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি এবং বিষয় ভিত্তিক প্রতিযোগিতার প্রস্তাব দেন। একই সঙ্গে তিনি তার সংস্থার একটি স্কুল বাংলাদেশে স্থাপনের আগ্রহও ব্যক্ত করেন। কক্সবাজারে তার মায়ের সঙ্গে করা সফরের স্মৃতিচারণ করে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা আয়োজনে সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন, যাতে খেলাধুলার মাধ্যমে শরণার্থীদের কষ্ট কিছুটা লাঘব করা যায়।
বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের কথা পুনরায় উল্লেখ করে তিনি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে তরুণ সমাজ ও সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণের প্রশংসা করেন এবং সাংস্কৃতিক ও জাতীয় পরিচয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্ক তার সাংস্কৃতিক মর্যাদা ও বৈশ্বিক অবস্থান পুনরুদ্ধারে কাজ করছে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশ তার প্রকৃত ও বিশ্বস্ত অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যেখানে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, ইতিহাসে বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে তুরস্ক সব সময় বঙ্গোপসাগরীয় জনপদের জনগণের পাশে থেকেছে। তিনি আরও বলেন, এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের তরুণদের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে এবং সভ্যতাগত রূপান্তরের প্রতি আগ্রহ জাগিয়েছে, যা অনেকটা তুরস্কের নিজস্ব গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের পুনরুজ্জীবনের মতো।
উপদেষ্টা গাজায় চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের নৈতিক অবস্থান এবং বিশ্বের নিপীড়িত মুসলিম জনগণের প্রতি তার সমর্থনের প্রশংসা করেন। তিনি এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী ও কার্যকর আন্তর্জাতিক জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের সমর্থন ও সক্রিয় অংশগ্রহণের আশ্বাস দেন।
আসিফ মাহমুদ বাংলাদেশের কাবাডি, দাঁড়িয়াবান্ধা, বলিখেলা, কুস্তি ও নৌকা বাইচসহ ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর আন্তর্জাতিকীকরণে ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সহযোগিতা কামনা করেন।
বৈঠকের শেষে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, বিলাল এরদোয়ানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৫ সালের গ্লোবাল ইয়ুথ সামিটে অংশ নিতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই সফর যুব ও ক্রীড়া খাতসহ উভয় দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও জোরদার ও গতিশীল করবে।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বর্তমানে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। সম্প্রতি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে তাকে হত্যার হুমকি দেয় তেলআবিব ও ওয়াশিংটন। তবে ক্ষমতায় আসা ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী নেতা হওয়াটা খামেনির পক্ষে এতটা সহজ ছিল না। তার শুরুর জীবনটা ছিল কষ্টে ভরা। দীর্ঘ আট মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল তাকে। এই সময়টিকে তিনি তার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় বলে বর্ণনা করেন।
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের আগে শাহ রেজা পাহলভির শাসনামলে যে কারাগারটিতে তাকে বন্দি করা হয়েছিল, তা এখন এব্রাত জাদুঘর নামে পরিচিত। তেহরানের একসময়ের কুখ্যাত কারাগার এব্রাত জাদুঘর কেবল তার নৃশংস ইতিহাসের জন্যই নয়, বরং এখানে অনেক বিশিষ্ট রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব বন্দি ছিলেন বলেও পরিচিত।
কারাগারে খামেনির সময়কাল
পাহলভি শাসনের বিরুদ্ধে ইসলামী বিপ্লবী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়। এই সময়ে পাহলভির গোপন পুলিশ বাহিনী ‘সাভাক’ খামেনির ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালায়। তাকে এব্রাত জাদুঘরে সে সময়ের ‘জয়েন্ট কমিটি অ্যাগেইনস্ট সাবোটেজ’ কারাগারে ছয়বার বন্দি করে রাখা হয়। জাদুঘরের একটি সংকীর্ণ করিডোরে বন্দিদের ছবি রয়েছে, যার মধ্যে বাদামি ফ্রেমে আয়াতুল্লাহ খামেনির একটি ছবিও রয়েছে। তার নামের নিচে ফার্সি ভাষায় লেখা, আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনি।
জাদুঘরটিতে একটি ছোট, আবছা আলোকিত কক্ষও রয়েছে, যেখানে খামেনিকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। সেই কক্ষে কালো পাগড়ি, গোলাকার চশমা এবং বাদামি পোশাক পরা খামেনির একটি মোমের মূর্তি রয়েছে, যার তার কষ্ট ও সংকল্পের প্রতীক।
খামেনিকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন
১৯৬২ সালে খামেনি শাহের যুক্তরাষ্ট্রপন্থি ও ইসলাম-বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে কোমে ইমাম খোমেনির নেতৃত্বে বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি মাশহাদের আয়াতুল্লাহ মিলানি এবং অন্যান্য ধর্মগুরুদের কাছে ইমাম খোমেনির বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৩ সালে, তিনি প্রথমবারের মতো বিরজান্দে গ্রেপ্তার হন এবং এক রাত কারাগারে থাকেন।
১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে, খামেনি মাশহাদের তিনটি ভিন্ন মসজিদে কোরআন এবং ইসলামী আদর্শের ওপর ক্লাস নেন। তার বক্তৃতা, বিশেষ করে ইমাম আলীর নাহজ আল-বালাগার ওপর হাজার হাজার যুবক এবং ছাত্রকে আকৃষ্ট করেছিল। এর ফলে ১৯৭৫ সালে মাশহাদে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। ষষ্ঠবারের মতো তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বই ও নোট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এবার, তাকে তেহরানের কুখ্যাত ‘পুলিশ-সাভাক যৌথ কারাগার’ (বর্তমানে ইব্রাত জাদুঘর) এ কয়েক মাস আটক করে রাখা হয়।
ইসলামী বিপ্লবে খামেনির অবদান
খামেনির বিপ্লবী কর্মকাণ্ড শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকে যখন তিনি ইমাম খোমেনির শিষ্য হন। তিনি শাহের শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর যখন শাহের শাসনের পতন ঘটে এবং খোমেনি প্যারিস থেকে তেহরানে ফিরে আসেন তখন খামেনির ধর্মীয় ও রাজনৈতিক পদমর্যাদা বৃদ্ধি পায়। তাকে উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিযুক্ত করা হয় এবং তেহরানে জুম্মার নামাজের ইমাম হন তিনি, এই পদে এখনো অধিষ্ঠিত তিনি। এরপর ১৯৮৯ সালে, তিনি ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচিত হন।
জাদুঘরে খামেনির স্মৃতি
এব্রাত জাদুঘরে খামেনির ছবি এবং মোমের মূর্তি রয়েছে, যা শাহের শাসনামলে তার বিপ্লবী সংগ্রাম এবং কষ্টের প্রতিফলন। জাদুঘরের এক কর্মকর্তার মতে, ‘আল্লাহ খামেনিকে জাতির নেতা হিসেব নির্ধারিত করেছিলেন।’
এব্রাত জাদুঘর ভবনটি ১৯৩২ সালে নির্মিত হয়েছিল। রেজা শাহ পাহলভির নির্দেশে জার্মান প্রকৌশলীরা এটি নির্মাণ করেন। ইরানের প্রথম আধুনিক কারাগার হিসেবে এটির নকশা করা হয়, যা প্রাথমিকভাবে নাজিমিয়া কমপ্লেক্সের অংশ ছিল। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে এটি দেশের প্রথম নারী কারাগার হয়ে ওঠে। তবে, এর সবচেয়ে কুখ্যাত ব্যবহার ছিল ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে মোহাম্মদ রেজা পাহলভির (দ্বিতীয় পাহলভি) রাজত্বকালে। সেসময় এটি ইসলামী বিপ্লবী আন্দোলনের বিরোধীদের আটক ও নির্যাতন করার জন্য ব্যবহৃত হত। এই সময়কালে, কারাগারটি সাভাকের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর কারাগারটির নামকরণ করা হয় ‘তোহিদ কারাগার’ এবং ২০০০ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। পরে মানবাধিকার সংস্থার তদন্তের পর এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০০২ সালে, ইরানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংস্থা এটিকে একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করে, যা এখন দর্শনার্থীদের সেই যুগের বর্বরতা এবং নিপীড়নের গল্প বলে।
রাশিয়া তালেবান সরকারের নতুন রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছে, যা দেশটির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার অংশ হিসেবে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে রাশিয়া বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই স্বীকৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় নতুন গতিপ্রবাহ তৈরি করবে।
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি রাশিয়ার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই সাহসী সিদ্ধান্ত অন্যদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। এখন যেহেতু স্বীকৃতির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, রাশিয়া সবার আগেই এগিয়ে গেলো।
তবে রাশিয়ার এই স্বীকৃতি ওয়াশিংটনের নিকট গভীরভাবে পর্যবেক্ষণযোগ্য বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের শীর্ষ নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সম্পদ এখনো ফ্রিজ করে রেখেছে, যার ফলে দেশটির ব্যাংকখাত আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থার বাইরে অবস্থান করছে।
২০২১ সালের আগস্টে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সরে গেলে তালেবান সরকার ক্ষমতা দখল করে। রাশিয়া তখন থেকেই এই ক্ষমতা দখলকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা বলে অভিহিত করে এবং তালেবান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উদ্যোগ নেয়।
২০২২ ও ২০২৪ সালে তালেবান প্রতিনিধিরা রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ অর্থনৈতিক ফোরামে অংশ নেন। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে, তালেবানের শীর্ষ কূটনীতিক মস্কোতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালেবানকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মিত্র বলে আখ্যা দেন।
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা ভাষাভাষীদের জনপ্রিয় গণমাধ্যম ‘ঠিকানা’য় উপস্থাপক হিসেবে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের অভিষেক হচ্ছে। নাম ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো উপস্থাপনায় নাম লিখিয়েছেন তিনি।
জায়েদ খান প্রতি শুক্রবার রাতে দর্শকদের সামনে হাজির হবেন ভিন্ন ভিন্ন অতিথি নিয়ে। প্রথম পর্বে অতিথি হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (০৪ জুলাই ) রাত ৮টায় অনুষ্ঠানটি প্রচার হয়।
টক শো সঞ্চালক হিসেবে নিজের অভিষেক প্রসঙ্গে নিউইয়র্ক থেকে চিত্রনায়ক জায়েদ খান বলেন, ‘এটা আমার জন্য এক নতুন যাত্রা। আমি এমন একটি অনুষ্ঠান উপহার দিতে চাই, যেখানে আমাদের সেই গল্পগুলো উঠে আসবে- যেগুলো বাস্তব, অনুপ্রেরণাদায়ক এবং চেতনাকে নাড়া দেওয়ার মতো।’
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন এই ঢালিউড তারকা। হলিউডে সিনেমা করার বিষয়েও পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন জায়েদ খান।
বলা দরকার, ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে টিক্কা খানের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন জায়েদ খান। কয়েক সেকেন্ড পর্দায় দেখা গিয়েছিল তাকে। তার জন্য বরাদ্দ ছিল একবাক্যের একটি সংলাপ। এতেই বাজিমাত করেছেন তিনি। জায়েদ খান অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘সোনার চর’। চলতি বছরের শুরুতে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটি পরিচালনা করেছেন জাহিদ হোসেন। এতে আরও অভিনয় করেন মৌসুমী, ওমর সানী, শহীদুজ্জামান সেলিম, শবনম পারভীন ও পাপিয়া মাহি।
নারী ফুটবলে বুধবার (০২ জুলাই) বড় এক সুখবর পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম বারের মতো নিশ্চিত হয়ে গেছে এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ। এবার বাংলাদেশ সুখবর পেল হকি থেকেও। অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হারিয়ে দিয়েছে হংকংকে। শুরু থেকে দাপট ধরে রেখে ৩-০ গোলের জয় তুলে নিয়েছে কোচ মউদুদুর রহমানের শিষ্যরা।
চীনের দাজু হকি ট্রেইনিং সেন্টারে বুধবার (০২ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয় হংকংয়ের। শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম কোয়ার্টারে অবশ্য গোলের দেখা পায়নি দলটা।
গোলের দেখা মিলেছে ম্যাচের দ্বিতীয় কোয়ার্টারে। ২০ মিনিটে দ্বীন ইসলাম পেয়ে যান ফিল্ড গোল। ম্যাচে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। পরের দুটি গোলই এসেছে পেনাল্টি কর্নার থেকে। ২৬ মিনিটে আবারও গোলের খাতায় নাম লেখান দ্বীন ইসলাম।
৪৩ মিনিটে ওই পেনাল্টি কর্নার থেকেই আবারও গোল পায় বাংলাদেশ। এবার লক্ষ্যভেদ করেন হাসান অমিত। তাতেই হংকংয়ের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে যায়। বাংলাদেশ শেষে মাঠ ছাড়ে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে। দুই গোল করে ও দারুণ খেলে ম্যাচসেরার পুরস্কারটা জেতেন দ্বীন ইসলাম।
বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে আছে পুল ‘এ’-তে। এই পুলে বাংলাদেশের গ্রুপসঙ্গী হংকং ছাড়াও আছে স্বাগতিক চীন ও বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। দ্বীন ইসলামদের পরবর্তী ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আগামী ৫ জুলাই বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩-৩০ মিনিটে এই লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ।
চীনে একই সময়ে মাঠে গড়াচ্ছে নারী অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপও। সেখানেও বাংলাদেশ খেলছে। আগামী শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় জাপানের মুখোমুখি হবে দলটি।
এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। এবার ঋতুপর্ণাদের শিকার ফিফা র্যাংকিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমার।
ইয়াঙ্গুনের থুউন্না স্টেডিয়ামে আজ ম্যাচের প্রথমার্ধে ঋতুপর্ণা চাকমার গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৭১ মিনিটে অসাধারণ এক গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সেই ঋতুপর্ণাই। মিয়ানমার যদিও শেষ দিকে ১ গোল শোধ করেছে, তাতে বাংলাদেশের জয় আটকায়নি। ম্যাচটা ২-১ গোলে জিতে এশিয়ান কাপের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল মেয়েরা। ৫ জুলাই গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে না হারলেই প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে ওঠে যাবে পিটার বাটলারের দল।
মিয়ানমারের ঘরের মাঠে ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে স্বাগতিক দর্শকদের গর্জনে প্রকম্পিত থাকে থুউন্নার গ্যালারি। কিন্তু সেই গর্জনও থামাতে পারেনি বাংলাদেশকে। ১৮ মিনিটে পুরো স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দেন ঋতুপর্ণা, বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। বিরতিতে যাওয়ার আগপর্যন্ত স্কোরলাইন সমান করার অনেক চেষ্টা করেও পারেনি মিয়ানমার, উল্টো বিরতির পর ঋতুপর্ণার চোখধাঁধানো শটে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় স্বাগতিকরা।
প্রথমার্ধে একটু এলমেল ছিল বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। ম্যাচের ১১ ও ১২ মিনিটে দুবার বাংলাদেশি ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে আক্রমণ শাণায় মিয়ানমার। দুটি আক্রমণই পোস্ট ছেড়ে রুখে দেন গোলকিপার রুপনা চাকমা। এর মধ্যে ১৭ মিনিটে ড্রিবল করে ডি-বক্সে ঢোকার পথে ফাউলের শিকার হন শামসুন্নাহার জুনিয়র। তাতেই ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। ১৮ মিনিটে সেই ফ্রি-কিক থেকে বাঁপায়ের নিখুঁত শটে মিয়ানমারের জালে বল জড়ান ঋতুপর্ণা। প্রথম দফায় ঋতুপর্ণার শট প্রতিপক্ষের রক্ষণে লেগে ফিরে আসে, ফিরতি শটে পোস্টের কোনাকুনি দিয়ে বল জালে পাঠান এই ফরোয়ার্ড।
১ গোলে এগিয়ে থাকার পর আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। ২৩ মিনিটে পেয়ে যায় গোলের আরেকটি সুযোগ। কিন্তু বাঁ-প্রান্ত ধরে আক্রমণে ওঠার পর ঋতুপর্ণার ক্রসে শট নিলেও বল পোস্টে রাখতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র। মিয়ানমারও থেমে ছিল না। সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে আক্রমণ করে। ৩৫ মিনিটে অফসাইডের ফাঁদে না পড়লে স্কোর সমান হয়ে যেত। এর এক মিনিট পর বাংলাদেশের ছেঁড়া রক্ষণের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় মিয়ানমার। আর ৪২ মিনিটে ফ্রি-কিক পাওয়া মিয়ানমার তিন-তিনবার বাংলাদেশের গোলমুখে শট নিয়েও লক্ষ্যে বল পৌঁছাতে পারেনি।
বিরতির পর আরও তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ করে মিয়ানমার। ৫৭ ও ৫৮ মিনিটে স্বাগতিক দলের দুই আক্রমণ রুখে দেন বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। ৬০ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আশা জাগালেও গোলদাতা ঋতুপর্ণার শট খুঁজে পায়নি কাঙ্ক্ষিত নিশানা। এরপর ৬৫ মিনিটে কর্ণার পায় বাংলাদেশ, তবে সেই কর্ণার থেকে আশানুরূপ সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেনি অতিথিরা। ৭১ মিনিটে আরও একবার মিয়ানমার দেখে ঋতুপর্ণার ঝলক। এবার প্রতিপক্ষ এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে পেনাল্টি বক্সের বাঁ-প্রান্ত থেকে বাঁপায়ের শটে দারুণ এক গোল পেয়ে যান ঋতুপর্ণা। বাঁক খেয়ে জালে ঢুকে যাওয়া সেই শট চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না প্রতিপক্ষ গোলকিপার মিয়ো মায়ার। দেরিতে হলেও ১ গোল শোধ করে মিয়ানমার। ৮৯ মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গোলটা করেন উইন উইন।
মন্তব্য