ক্রিকেট বিশ্বকাপের এবারের আসরের শুরু থেকে দাপুটে খেলেও শিরোপা নিজেদের করতে পারেনি স্বাগতিক ভারত। আসরজুড়ে ঘরের মাঠে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন দলটির অনেক ক্রিকেটার। এর বাইরে এবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, ‘চোকার্স’ হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ডের কিছু খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সও ছিল দেখার মতো।
বিশ্বকাপের এ আসরের সেসব খেলোয়াড়ের অর্জন এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে দ্য গার্ডিয়ান।
রোহিত শর্মা (ভারত): বিশ্বকাপের সদ্যসমাপ্ত আসরটি রোহিত শর্মার জন্য ছিল ব্যক্তিগত অর্জনের বড় উপলক্ষ। এ আসরে ৫৪ দশমিক ২৭ গড়ে ৫৯৭ রান করেন তিনি। একটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিনটি হাফ সেঞ্চুরি ছিল রোহিতের। তার স্ট্রাইক রেট ১২৫। আর সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ১৩১ রান।
কুইন্টন ডি কক (দক্ষিণ আফ্রিকা): দল চূড়ান্ত কোনো সাফল্য না পেলেও বিশ্বকাপের এবারের আসরটি কুইন্টন ডি ককের জন্য ছিল অর্জনের। উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার ৫৯৪ রান করেন ৫৯ দশমিক চার গড়ে। চারটি সেঞ্চুরি হাঁকানো এ ব্যাটারের স্ট্রাইক রেট ছিল ১০৭। বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৭৪ করা দক্ষিণ আফ্রিকার এ উইকেটরক্ষক ১৯টি ক্যাচ ধরার পাশাপাশি করেন একটি স্টাম্পিং।
রাচিন রবীন্দ্র (নিউজিল্যান্ড): বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট দল নিউজিল্যান্ডের এ ব্যাটার দর্শকদের মাতিয়ে রাখতে অন্যতম ভূমিকা রাখেন। টুর্নামেন্টে ৬৪ দশমিক ২২ গড়ে তার সংগ্রহ ৫৭৮ রান। কিউই এ ব্যাটার তিনটি শতকের পাশাপাশি দুটি অর্ধশতক করেন, যার স্ট্রাইক রেট ছিল ১০৬। তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ অপরাজিত ১২৩ রান।
বিরাট কোহলি (ভারত): দলের ব্যাটিংয়ের প্রাণভোমরা বিরাট কোহলি বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে ভুল করেননি। তিনি ৯৫ দশমিক ছয় গড়ে আসরের সর্বোচ্চ ৭৬৫ রান করেন। টুর্নামেন্টে তিনটি শতকের পাশাপাশি ছয়টি অর্ধশতক ছিল তার। সর্বোচ্চ ১১৭ রান করা এ ব্যাটারের স্ট্রাইক রেট ছিল ৯০ দশমিক ৩১।
ড্যারিল মিচেল (নিউজিল্যান্ড): টু্র্নামেন্টে দুইটি সেঞ্চুরি হাঁকানো এ কিউই ব্যাটার ৬৯ দশমিক দুই গড়ে রান করেন ৫৫২। তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১১১। তিনি সর্বোচ্চ রান করেন ১৩৪।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (অস্ট্রেলিয়া): বিশ্বকাপজয়ী দলের এ অলরাউন্ডার এ আসরে ৬৬ দশমিক ছয় গড়ে ৪০০ রান করেন। দুটি সেঞ্চুরি হাঁকানো এ ব্যাটারের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫০ দশমিক ৩৭। তার সর্বোচ্চ রান ছিল অপরাজিত ২০১। এর বাইরে ছয়টি উইকেটও নিয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ শামি (ভারত): টুর্নামেন্টে ২৪টি উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হওয়ার গৌরব অর্জন করেন ভারতের এ পেসার। তার ইকোনমি ছিল পাঁচ দশমিক ২৬। এক ম্যাচে ৫৭ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেয়াটা ছিল টু্র্নামেন্টে তার সেরা বোলিং ফিগার।
আরও পড়ুন:অপূরণীয় সুনাম ক্ষতি হয়েছে এমন দাবি করে বেসরকারি চ্যানেল ৭১ টিভিকে শনিবার আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম।
নোটিশে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ টেস্টে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট নিয়ে ভিত্তিহীন, মনগড়া, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য পরিবেশন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মুশফিকুর রহিমের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান নিউজবাংলাকে নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৭১ টিভির হেড অফ নিউজ, ক্রীড়া সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে, অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
৭১ টিভিতে প্রচারিত ওই প্রতিবেদনটি শিগগিরই ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে ভুল, অসত্য ও মানহানিকর তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদনের জন্য ৭১ টেলিভিশনকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাসহ তাদের টিভি চ্যানেলে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রচার করতে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক সাইফুল রূপককে ভবিষ্যতে এমন অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদন না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে মর্মে মুশফিকুর রহিমের কাছে লিখিতভাবে ৭১ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, প্রতিবেদনটি দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ২৫(১)(ক), ২৫(২) এবং ২৯ ধারায় সাইবার বুলিংয়ের অপরাধ হয়েছে। নোটিশ অনুযায়ী প্রতিকার না পেলে ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের দেওয়ানি আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট হয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। বিষয়টি নিয়ে ‘মিরপুর টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ! সন্দেহ সিনিয়র ক্রিকেটারের দিকে!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ৭১ টেলিভিশনের নিয়মিত অনুষ্ঠান ‘খেলাযোগের’ ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে।
এই প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তি তুলে নোটিশ পাঠান মুশফিকুর রহিম।
আরও পড়ুন:ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে উইকেটবৃষ্টির পর দ্বিতীয় দিনের খেলা ভেস্তে গিয়েছিল নিম্নচাপের বৃষ্টিতে। প্রথম দিনেই কিউইদের ৫ রানের খরচায় ৫ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখাচ্ছিল সফরকারীদের সামনে বড় লক্ষ্য ছুড়ে দেয়ার, কিন্তু তৃতীয় দিনে এসে সে স্বপ্ন ভেঙে চৌচির হয়েছে গ্লেন ফিলিপসের হাতে।
উইকেটের এক প্রান্ত আগলে ধরে সফরকারীদের নিয়ে গেছেন লিডের পথে। ৮ রানের লিড মিললেও কিউইদের জন্য স্বভাবতই এটি বিশাল অর্জন।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ১৭২ রানের জবাবে ১৮০ রানের পুঁজি নিয়ে থামে কিউইদের ইনিংসের চাকা। আট রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে স্বাগতিকরা পুঁজি পেয়েছে ২ উইকেটের খরচায় ৩৮ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের লিড ৩০ রানের।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় দিনের খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও টানা বৃষ্টির কারণে আউটফিল্ড শুকাতে দেরি হওয়ায় দুই দলের ক্রিকেটাররা মাঠে নামেন দুপুর ১২টায়।
টানা বৃষ্টির কারণে হোম অফ ক্রিকেটের উইকেট খানিকটা ভেজা থাকায় শুরু থেকেই স্পিন আক্রমণে যায় বাংলাদেশ, কিন্তু টাইগারদের সে পরিকল্পনা খুব বেশি কাজে দেয়নি। ভেজা উইকেটের সুবিধা নিতে পারেননি তাইজুল-মিরাজরা।
টাইগার স্পিনারদের ব্যর্থতার সুযোগটা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগান ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। দুজনই উইকেটে থিতু হয়ে বসে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন দলকে। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে রীতিমতো শঙ্কায় ফেলে দিয়েছিলেন দুজন বাংলাদেশকে, তবে ইনিংসের ২২তম ওভারে মিচেলকে ফিরিয়ে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ানো ৪৯ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি ভাঙেন নাঈম হাসান। মাঠ ছাড়ার আগে মিচেলের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।
খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি মিচেল স্যান্টনারও। মাত্র এক রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
ব্যাক টু ব্যাক দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও আটে নামা কাইল জেমিসনের দুর্দান্ত সঙ্গ কাজে লাগিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ফিলিপস। ২৮ বলে ২০ রান করে কাইল বিদায় নেয়ার পর সাউদিকে সঙ্গী বানান ফিলিপস।
৭২ বলে ৮৭ করে শরিফুলের শিকার বনে ফিলিপসের মাঠ ছাড়ার পর আর এক রানও যোগ করা সম্ভব হয়নি সাউদি ও অ্যাজাজ প্যাটেলের পক্ষে। ১৮০ রানে থেমে যেতে হয় সফরকারীদের। আর সেই সুবাদে তারা লিড পায় ৮ রানের।
আট রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ, কিন্তু শুরুতেই বড় হোঁচট খেতে হয় স্বাগতিকদের। উইকেটে এসেই দলকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন মাহমুদুল হাসান জয়। ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। অ্যাজাজ প্যাটেলের বলে স্লিপে ক্যাচ দেয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২ রান।
প্রথম ওভারে জয়কে হারানোর পর দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, কিন্তু তাকে উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি সাউদি। সাউদির অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল লেন্থের বল ইনসাইড আউট করে মিড অফের ওপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন, তবে দূরত্ব কিংবা উচ্চতা কিছুই পাননি। ফলে ১৫ রান করে মিড অফে উইলিয়ামসনের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।
পরে দুপুর আড়াইটার দিকে আলোক স্বল্পতায় খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হন আম্পায়াররা। প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও খেলা শুরু করার পরিস্থিতি না আসায় বিকেল সোয়া চারটায় সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় দিনের খেলার।
প্রথম দিনে চালকের আসনে থাকলেও তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ চলে যায় প্যাসেঞ্জারের আসনে। যেখানে বড় লিড ছুড়ে দেয়ার সম্ভাবনা ছিল, সেখানে উল্টো পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে স্বাগতিকরা।
লিড না পেলেও তাতে আক্ষেপ নেই টাইগারদের। অন্তত খালি চোখে দিন শেষে তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বলছিল এমনটাই, তবে লিড পেলে খারাপ হতো না বলে জানিয়েছেন স্পিনার নাঈম হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে নাঈম বলেন, ‘তারাও তো ক্রিকেট খেলতে এসেছে। তাই না? একটা পার্টনারশিপ তো হতেই পারে। যে কেউ একজন ভালো খেলতে পারে। ও ভালো করেছে, তাই লিড নিতে পেরেছে।
‘লিড পেলে ভালো হতো। আল্লাহর রহমতে এখন আমরা ৩০ রান লিডে আছি। ভালো ব্যাটিং করলে ইনশাল্লাহ একটা ভালো স্কোর হবে। টোটাল যাই হোক, আমরা ফাইট করে ইনশাল্লাহ জিতব।’
চতুর্থ দিন ব্যাট হাতে পারফর্ম দেখিয়ে ভালো কিছু করে দেখাবে বাংলাদেশ, এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেন নাঈম।
তিনি বলেন, ‘বোলিং ঝামেলা হচ্ছে না। প্রথম দিনের তুলনায় আজ উইকেট একটু ভালো ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য। আমরা যদি একটা ভালো স্কোর দাঁড় করাতে পারি, তাহলে ইনশাল্লাহ জিতব। আমরা এখন ম্যাচে এগিয়ে আছি। এটা ধরে রাখতে হবে। যতক্ষণ ভালো ব্যাট করব, ততক্ষণ ভালো হবে।’
আরও পড়ুন:নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৩০ রানে এগিয়ে স্বাগতিক বাংলাাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ৩৮ রান করেছে টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ১৭২ রানের জবাবে ১৮০ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। খবর বাসসের
বৃষ্টি ও আলো স্বল্পতার কারণে শুক্রবার তৃতীয় দিন ৩২ দশমিক ৩ ওভার খেলা হয়েছে। বৃষ্টির কারণে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন মাঠেই নামতে পারেনি দু দলের খেলোয়াড়রা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিনই অলআউট হয় বাংলাাদেশ। জবাবে দিন শেষে ৫ উইকেটে ৫৫ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ১১৭ রানে পিছিয়ে ছিল কিউইরা। ড্যারিল মিচেল ১২ গ্লেন ফিলিপস ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্ত হয়। শুক্রবার তৃতীয় দিনের শুরুতে মাঠ ভেজা থাকায় দুপুর ১২টায় খেলা শুরু হয়।
মিচেলকে ১৮ রানে বিদায় করে বাংলাদেশকে দিনের প্রথম সাফল্য এনে দেন স্পিনার নাইম হাসান। পরের ওভারে স্যান্টনারকেও ব্যক্তিগত ১ রানে শিকার করেন নাইম। প্রথম স্লিপে স্যান্টনারের ক্যাচ নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
৯৭ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর কাইল জেমিসনকে নিয়ে রানের চাকা সচল করেন ফিলিপস। মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৩৮ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ফিলিপস। এরপর জুটিতেও হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ফিলিপস-জেমিসন। জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি আসার পর তাদের বিচ্ছিন্ন করেন পেসার শরিফুল ইসলাম।
ইনিংসের প্রথম ওভার বল করার পর ৩৩তম ওভারে দ্বিতীয়বারের মত আক্রমনে এসেই তুলে উইকেট নেন শরিফুল। প্রথম স্লিপে শাহাদাতের দারুন ক্যাচে শরিফুলের শিকার হন ৩টি চারে ২০ রান করা জেমিসন। ফিলিপসের সাথে ৫৩ বলে ৫৫ রান যোগ করেন জেমিসন।
এরপর অধিনায়ক টিম সাউদিকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে লিড এনে দেন ফিলিপস। ৩৬তম ওভারে ফিলিপসকেও বিদায় করে নিউজিল্যান্ডকে বড় লিড নেওয়া সুযোগ নষ্ট করেন দেন শরিফুল। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭২ বলে ৮৭ রান করে আউট হন ফিলিপস।
দলীয় ১৮০ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে ফিলিপস আউট হবার ৩ বল পর ১৮০ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। শেষ ব্যাটার হিসেবে সাউদিকে ১৪ রানে শিকার করেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের মেহেদি হাসান মিরাজ ৫৩ রানে ও তাইজুল ইসলাম ৬৪ রানে ৩টি করে এবং শরিফুল ইসলাম ১৫ রানে ও নাইম হাসান ২১ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
প্রথম ইনিংসে ৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই স্পিনার দিয়ে শুরু করে সাফল্য পায় নিউজিল্যান্ড। স্পিনার আজাজ প্যাটেলের বলে স্লিপে মিচেলকে ক্যাচ দিয়ে ২ রানে বিদায় নেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়।
প্রথম ওভারে জয়কে হারানোর পর দ্বিতীয় ওভারেই লিড নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার জাকির হাসানকে নিয়ে জুটি গড়ার পথে ছিলেন শান্ত। কিন্তু অষ্টম ওভারে সাউদির বলে ড্রাইভ দিয়ে মিড অফে কেন উইলিয়ামসনকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ২টি চারে ১৫ রান করা তিনি।
অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে ৩৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতন হয় বাংলাদেশের। ওই ওভারের শেষ বলের পর দুপুর ২টা ৪৬ মিনিটে আলো স্বল্পতায় বন্ধ হয় খেলা। পরবর্তীতে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিকেল ৪টা ১৩ মিনিটে দিনের নির্ধারিত সময়ের ৬৭ মিনিট আগেই শেষ হয় খেলা।
জাকির ১৬ ও মোমিনুল শূণ্য হাতে অপরাজিত আছেন। নিউজিল্যান্ডের প্যাটের ও সাউদি ১টি করে উইকেট নেন।
বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার প্রথম সেশন বৃষ্টির কারণে বাতিল করা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সারা দিন ধরে আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এতে দিনের বাকি অংশের খেলায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। খবর ইউএনবির
প্রথম ইনিংসে ১১৭ রানের লিড নিয়ে ম্যাচে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে বাংলাদেশ।
স্পিনারদের আধিপত্যে প্রথম দিন শেষে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ছিল ৫৫/৫। এখন পর্যন্ত ১৫টি উইকেটের মধ্যে স্পিনাররা ১৩টি উইকেট নিয়েছেন।
প্রথম টেস্টে জয় পেয়ে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা টেস্টে নেমেছে বাংলাদেশ। সিরিজটি জিতলে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় হবে।
পাকিস্তান ক্রিকেট লিগের (পিএসএল) নবম আসর শুরু হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এই আসরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে নিলামে নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। এবারের আসরের জন্য নিবন্ধিত ২৫৪ জন ক্রিকেটারের তালিকা বুধবার প্রকাশ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
নিলামে থাকা ক্রিকেটারদের ৫টি ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি হলো প্লাটিনাম। এরপর ডায়মন্ড, গোল্ড, সিলভার এবং উদীয়মান।
প্লাটিনাম ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬ ডলার। ডায়মন্ড ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৫২ হাজার ৪৩৩ ডলার। গোল্ড ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৩৭ হাজার ৪৫২ ডলার। সিলভার ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ১৮ হাজার ৭২৬ ডলার। উদীয়মান ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৭ হাজার ৪৯০ ডলার।
প্লাটিনাম ক্যাটারিতে আছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানসহ ২০ জন বিশ্বতারকা।
সাকিব ছাড়াও এই ক্যাটাগরিতে রয়েছেন ইংল্যান্ডের তারকা অ্যালেক্স হেলস, ডেভিড উইজ, জেমস ভিন্স, আফগানিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যান রহমানউল্লাহ গুরবাজ, হজরতউল্লাহ জাজাই, স্পিনার মুজিব উর রহমান, জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা, নিউজিল্যান্ডের তারকা ব্যাটসম্যান কলিন মুনরো, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান রিশি ভেন ডার ডুসেনের মতো তারকারা।
টি-টোয়েন্টি এই টুর্নামেন্টে ৬টি ফ্র্যাঞ্চাইজি ৩৪টি ম্যাচে অংশ নেবে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি পিএসএল শুরু হয়ে ১৮ মার্চ ফাইনালের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
আরও পড়ুন:ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটিং ইনিংসটা শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ফ্লাড লাইটে বিবর্ণ থাকলেও বল হাতে দিনের শেষটা স্বাগতিকদের ছিল রঙিন। দলীয় ৪৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে দল যখন হাল ভাঙা তরীর মতো, সে সময় ত্রাতা হয়ে আবির্ভাব ঘটে মুশফিকুর রহিমের। শক্ত হাতে দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন সামনে।
কিন্তু ৪১তম ওভারে এসে অদ্ভুত এক আচরণ করে বসেন মি. ডিপেন্ডেবল। কাইল জেমিসনের করা ওভারের চতুর্থ বলটি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন মুশফিক। বল তার ব্যাটে লাগার পর পপিং ক্রিজে ড্রপ করে আরও ডান দিকে সরে যাচ্ছিল। তখন ডান হাত দিয়ে বলটি আরও ঠেলে দেন মুশফিক। নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রা আউটের আবেদন করেন। ভিডিও রিপ্লে দেখে মুশফিককে আউট ঘোষণা করেন তৃতীয় আম্পায়ার।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, মুশফিকের এই ‘হ্যান্ডলড দ্য বল’ আউট অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউটের ধারায় অন্তর্ভুক্ত, যা কিনা ২০১৭ সালে প্রচলন করা হয়। আইসিসির ৩৭ দশমিক ১১ ধারায় উল্লেখ রয়েছে, ব্যাটসম্যান যদি বল খেলার মধ্যে থাকাকালে ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বা কাজের মাধ্যমে ফিল্ডিং দলকে বাধা দেন কিংবা মনোযোগ নষ্ট করেন, তবে আউট হবেন। তবে ৩৭ দশমিক ২ ধারা মতে, চোট থেকে বাঁচতে এমন কিছু করলে ব্যাটসম্যান আউট হবেন না।
এ ছাড়া ৩৭ দশমিক ১২ ধারায় বলা হয়, বোলার বল করার পর ব্যাটসম্যান যদি যে হাতে ব্যাট ধরা নেই সেই হাত দিয়ে বলে আঘাত করেন বা ছুঁয়ে সরিয়ে দেন তবে আউট ঘোষিত হবেন (ব্যতিক্রম ৩৭ দশমিক ২ ধারা)। সেটি প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা আরও পরে ছোঁয়ার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বল খেলার সময় যেমন তেমনি, এরপর ব্যাটসম্যান কিংবা নন-স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যান উইকেট বাঁচানোর চেষ্টা করার সময়ও এ আইন প্রযোজ্য।
বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার এ দুই নিয়মের খাঁড়ায় পড়েই মাঠ ছাড়তে হয় মুশিকে।
ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন অদ্ভুত ‘হ্যান্ডলড দ্য বল’ আউটের শিকার মুশি একা নন। তার আগে আরও ১১ জন এমন নজির স্থাপন করেন। ১৯৫১ সালে ওভাল টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম এভাবে আউট হন ইংলিশ ওপেনার লেন হাটন।
ওয়ানডেতে পাকিস্তানের চার ব্যাটার রমিজ রাজা, ইনজামাম-উল-হক, মোহাম্মদ হাফিজ এবং আনোয়ার আলি এমন বিরল আউটের শিকার হয়েছিলেন। এ ছাড়া ভারতের অমরনাথ, ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস, যুক্তরাষ্ট্রের মার্শাল এবং লঙ্কান ব্যাটার গুনাথিলাকাও একদিনের ক্রিকেটে এমন আউটের শিকার হয়েছেন।
টি-টোয়েন্টিতে এমন আউট হয়েছেন তিনজন। তারা হলেন- ইংল্যান্ডের জেসন রয়, মালদ্বীপের হাসান রাশিদ এবং অস্ট্রিয়ার রাজমাল সিগিওয়াল।
আরও পড়ুন:প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আইনে ‘হ্যান্ডলড দ্য বল’ আউটের শিকার হয়েছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম। ১৪৬ বছরের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে এমন অদ্ভুত নজির গড়েছেন টাইগার এই ব্যাটার।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের ৪১তম ওভারে কিউই পেসার কাইল জেমিসনের করা ওভারের চতুর্থ বলটি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন মুশফিক। বল তার ব্যাটে লাগার পর পপিং ক্রিজে ড্রপ করে আরও ডানদিকে সরে যাচ্ছিল। তখন ডান হাত দিয়ে বলটি আরও ঠেলে দেন মুশফিক। তা দেখে নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রা আউটের আবেদন করেন। ভিডিও রিপ্লে দেখে মুশফিককে আউট ঘোষণা করেন তৃতীয় আম্পায়ার।
মুশির এমন আউটে সরব হয়ে ওঠে ক্রিকেটপাড়া থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। শুরু হয় এমন অদ্ভুত আউট নিয়ে হাস্যরসের। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সেই হাস্যরস ছড়িয়ে পড়ে ভারতেও।
মুশফিকের এই আউট ইস্যুটি হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে সামনে নিয়ে আসার সুযোগ হাতছাড়া করেনি কলকাতা পুলিশ। নিজেদের ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে মুশফিকের আউটের একটি ছবি দিয়েছে তারা। যার ওপরে লেখা– ‘লিঙ্ক হোক বা বল, ছুঁলেই গ্যাড়াকল।’ একই ছবিতে তারা স্ক্যামারদের পাঠানো খুদেবার্তার একটি স্ক্রিনশটও জুড়ে দেয়।
মূলত মুশফিকের এই পোস্টটি হাস্যরসাত্মক দিকে নিয়ে গেছে কলকাতা পুলিশ জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই।
বর্তমানে প্রায়শ দেখা যায় প্রায় সবার মোবাইলে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের বেতনে চাকরির সুযোগের লোভনীয় মেসেজ যাচ্ছে। স্ক্যামারদের পাঠানো এসব বার্তায় কিছু লিঙ্কও জুড়ে দেয়া হয়। যেখানে ক্লিক করলে মোবাইলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য স্ক্যামারদের হাতে চলে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। কলকাতা পুলিশ ওই পোস্টের মাধ্যমে এমন ভুয়া মেসেজে সাড়া না দেয়ারও সচেতনতামূলক বার্তা দিয়ে রেখেছে।
এর আগেও ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের কলকাতা, দিল্লিসহ বেশ কয়েকটি রাজ্য পুলিশকে এমন বার্তা দিতে দেখা গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় মুশফিকের বিরল আউট নিয়েও সরব হয়েছে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য