দর্শক ধারণক্ষমতায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাঠ বানিয়েছে ভারত। সেই মাঠেই হলো ২০২৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। পুরো টুর্নামেন্টজুড়ে ভক্তদের মন রাঙিয়ে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শিরোপার আশায় নেমেছিল ভারত। এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদিও। মাঠের এক কোণাও ফাঁকা রাখেননি ভক্তরা। অর্থাৎ বিশ্বকাপ জয়ের মঞ্চ তৈরিতে কোনো ত্রুটিই ছিল না দেশটির। কিন্তু সবশেষে সেখানে শোনা গেছে ১ লাখ ৩০ হাজার দর্শকের দীর্ঘশ্বাস। লাখো মানুষের নীরবতার ভাষা ঠিক কেমন হয়, তা বিশ্বকে দেখালেন ভারতীর ক্রিকেট সমর্থকরা।
আসরের শুরু থেকে সবগুলো ম্যাচে জয় পেলেও ফাইনালে এসে ভারতের যেন গুলিয়ে গেল সব! এর আগেও কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে অস্ট্রেলিয়ার, কিন্তু দুর্দান্ত বোলিং, ফিল্ডিং আর অধিনায়কত্ব দিয়ে তা পুষিয়ে নিয়ে জয় তুলে নিয়েছে দলটি। অজিদের একবার হারানোর পরও সেই তাদের কাছে কীভাবে মনোবল হারিয়ে, কৌশলহীন হয়ে পর্যদুস্ত হলো রোহিতের টিম ইন্ডিয়া, সেই হিসাব এখনও অনেকে মেলাতে পারেননি, কারো কারো তা মেলাতে লাগবে দীর্ঘকাল; আবার অনেকে এই ক্ষত বুকে পুষে রাখবেন আজীবন।
ভারতের আজকের হারে বেশ কয়েকটি বিষয়ের দিকে আলোকপাত করা যায়। চলুন দেখে নিই কোন কোন জায়গায় মার খেয়ে নিজ ভূমিতে হারের শিউলি পাতার রস পান করল ভারত।
১. টস
বারবার টস জেতা ও তারপর ম্যাচ জেতায় সদ্যসমাপ্ত আসরেই অনেকবার কথা শুনতে হয়েছে ভারতের। টস নিয়ে কারসাজি নিয়ে তাদের দিকে অভিযোগের তীর নিক্ষেপ করেছেন অনেকে, কিন্তু তারাই কি না ফাইনালে টস হেরে গেল! ফলে উইকেট ও কন্ডিশন বিবেচনায় প্রকৃতির আশীর্বাদ পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
এ ম্যাচের সব সিদ্ধান্তই গেছে প্যাট কামিন্সের পক্ষে। শুরুর দিকে দিনের আলোতে পিচ ছিল স্লো, সেই সঙ্গে শুকনো। ফলে স্টার্ক-হেজলউড-কামিন্সদের বাউন্সারে নাকানি-চুবানি খেয়েছেন ভারতীয় ব্যাটাররা। আবার স্লো পিচের কারণে ফুলার লেংথ ডেলিভারি ও ইয়র্কারেও সহায়ক হয়েছে উইকেট। ফলে স্টার্কদের মতো অভিজ্ঞ বোলাররা ভারতীয় ব্যাটারদের ইচ্ছামতো খেলিয়েছেন।
আবার সন্ধ্যার পর শিশিরের উপস্থিতি আসতেই বদলেছে উইকেটের কন্ডিশন। ফলে স্টার্ক-হেজলউড-কামিন্সরা যা করতে পেরেছেন, শুরুতে তা দেখাতে পারলেও আস্তে আস্তে তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন শামি-বুমরাহরা। ফলে পরে ব্রেকথ্রু আনতে যে টার্ন-বাউন্সারের প্রয়োজন ছিল, তা আনতে ব্যর্থ হয়েছেন ভারতীয় বোলাররা।
২. অতি রক্ষণাত্মক মনোভাব
শুরুর দিকে উইকেট হারানোয় অতি সাবধানী হয়ে গিয়েছিলেন ভারতের ব্যাটররা। ফলে শুরুর দিকে রানের গতি যেভাবে শ্লথ হয়ে গিয়েছে, পরে উইকেটের রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে ইনিংস টেনে লম্বা করতে পারেননি মিডল ও লোয়ার-অর্ডারের ব্যাটাররা।
আজ দুই দফায় মোট ৩৫ ওভার বাউন্ডারি মারতে ব্যর্থ হয়েছেন ভারতীয় ব্যাটাররা। যেখানে টেস্টেও ওভারপ্রতি ৪/৫ রান তোলে দলটি, সেখানে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালের মতো ম্যাচে বল মাঠছাড়া করতেই ঘাম ছুটে গেছে তাদের। আবার বাউন্ডারির জন্য খুব চেষ্টা করতেও দেয়া যায়নি ভারতের ব্যাটারদের।
মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো সিঙ্গেলসে দৃকপাত করলেও ‘মহেন্দ্র সিং’ না হওয়ায় নিয়মিত স্ট্রাইক রোটেট করতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। ফলে রানের চাকায় প্রথম দিকে যে মরিচা পড়া শুরু করে, সময়ের সঙ্গে তা কেবল প্রবল থেকে প্রবলতর হয়েছে।
৩. অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত ফিল্ডিং
ভারতের মতো ব্যাটারসমৃদ্ধ দলকে আড়াই শ’র আগে আটকাতে যে বিষয়টি বিশেষ ভূমিকা রেখেছে, তা অস্ট্রেলিয়ার প্রাণপণ ফিল্ডিং। যে ভুলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হেরে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, তা থেকে শিক্ষা নিয়েই যেন নিখুঁত ফিল্ডিংয়ের এক মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী চালালো অস্ট্রেলিয়া।
উইকেটের পেছনেও আজ যে ক’বার ক্যাচ গিয়েছে, গ্লাভসবন্দি করতে একবারও ভুল করেননি জস ইংলিস। আবার সীমান্তে রোহিতের ক্যাচটি যেভাবে নিলেন ট্র্যাভিস হেড, তাতে মনে হচ্ছিল ওইটিই বিশ্বকাপ জয়ের একমাত্র চাবিকাঠি। ধারাভাষ্যকার ইয়ান স্মিথ তো তখন বলেই ফেলেছিলেন, এটিই হতে পারে ম্যাচের ‘টার্নিং পয়েন্ট’।
এই জায়গাতে আজ যথেষ্ট হতাশ করেছেন ভারতীয় ফিল্ডাররা।
৪. রোহিতের অধিনায়কত্ব
বিশ্বকাপের ফাইনাল, অথচ অধিনায়ক হিসেবে আজকেই সব গুলিয়ে গেল রোহিতের! অথচ গত ম্যাচগুলোতে, বিশেষ করে, বোলিংয়ের সময় বিভিন্ন কৌশল কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করেছেন তিনি।
ভারতের শুরু থেকে সবগুলো ম্যাচে জয়ের পেছনে স্থির মস্তিষ্কের রোহিতের অধিনায়কত্বের ছিল বিশেষ গুরুত্ব। সেমি ফাইনালেও তিনি অধিনায়ক হিসেবে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। অথচ কাজের কাজ করার দিন তিনি সব ভুলে বসলেন।
ব্যাটিংয়ের সময়ও চাপের মুহূর্তে সূর্যকুমারকে আগে খেলিয়ে শেষে স্লগ ওভারগুলোতে জাদেজাকে খেলাতে পারতেন তিনি। এতে করে আরও অন্তত ২৫-৩০ রান বেশি তুলতে পারত ভারত। কিন্তু সেখানেও ব্যাটিং অর্ডার সাজাতে ব্যর্থ রোহিত।
৫. অনন্য ক্যাপ্টেন কামিন্স
রোহিত আজে যেখানে ব্যর্থ হয়েছেন, ঠিক সেখানেই কার্যকর ভূমিকা রেখেছেন ক্যাপ্টেন কামিন্স। টস জিতে আগে ভারতকে ব্যাটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ছিল তার। আহমেদাবাদের এই স্টেডিয়ামটি ব্যাটিংবান্ধব হলেও শিশিরের গতিবিধি সম্পর্কে সম্যক ধারণা নিয়ে এসেছিলেন কামিন্স, যার সুফল পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
তাছাড়া রোহিতকে আউট করতে ‘ম্যাক্সি অস্ত্র’ কাজে লাগানোর বিষয়টি ছিল দেখার মতো। ওই সময় মারমুখি রোহিততে আউট করতেই যে তিনি ম্যাক্সওয়েলকে বোলিংয়ে আনেন, রোহিত আউট হওয়ার পর তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল।
আবার প্রথম ইনিংসের শেষের দিকে যখন যাকে থামাতে হবে, তাতে যে অস্ত্র যেভাবে ব্যবহার করা দরকার, সেভাবেই করেছেন তিনি। ফলে উইকেটে থিতু হয়েও হাত খোলার আগে ফিরতে হয়েছে কোহলি-রাহুলকে।
৬. প্রত্যাশার চাপ
স্বগতিক দেশ ও টুর্নামেন্টের সবগুলো ম্যাচ জিতে নিজেদের স্ট্যান্ডার্ড অনেক উঁচুতে নিয়ে গিয়েছিল ভারত। ফাইনালে তার একটা চাপ থাকাটা খুবই স্বাভাবিক।
অন্যদিকে একপ্রকার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে শেষ চারে আসা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপারটি ছিল অন্যরকম। সেমিতে হারলেও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরতে পারত তারা। কারণ অদম্য মনোবল ও টিকে থাকার মানসিকতা দিয়ে শেষ চারে উঠে এমনিতেই তারা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কিছু দিয়ে দিয়েছিল নিজেদের ভক্তদের। ফলে ওই চাপ তাদের গ্রাস করতে পারেনি।
অন্যদিকে, ১ লাখ ৩০ হাজার কণ্ঠের জয়ধ্বনিতে নুব্জ হয়ে পড়েন রোহিত-কোহলিরা। শেষে যখন গ্যালারি নিস্তব্ধ হয়ে আসছিল, তখন ব্রেকথ্রু আনার শেষ মনোবলটুকুও নিঃশেষ হয়ে যায় ভারতের। ফলে চাপে এক প্রকার বিকল হয়ে গিয়ে গন্তব্যের আগেই থেমেছে ভারতের জয়রথ।
৭. অভিজ্ঞতা
অস্ট্রেলিয়া ও ভারত- দলদুটির মধ্যে আজ যে বিষয়টি চোখে লেগেছে, তা হচ্ছে অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতার পার্থক্যের কারণেই ম্যাচে এগিয়ে গেছে এক দল, অন্য দল প্রতিযোগিতা থেকে সরে গেছে আস্তে আস্তে।
অস্ট্রেলিয়ার এই টিমের সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতার বিবেচনা যদি করা হয় তাহলে দেখা যাবে- কী নেই তাদের! পাওয়ার প্লেতে রানের বন্যা বইয়ে দিতে পারা অভিজ্ঞ মারকুটে ব্যাটার, বিপর্যয় সামাল দিতে টেস্ট খেলুড়ে ব্যাটার, মিডল অর্ডারে ধারাবাহিক রান তোলা ধীরস্থির ব্যাটার, লোয়ার অর্ডারে চার-ছক্কা হাঁকানোর মতো লম্বা-চওড়া হাত ও দক্ষতাসম্পন্ন ব্যাটার- সবই রয়েছে দলটিতে।
আবার বোলিংয়ে যেমন রয়েছে বিশ্বসেরা গতিদানবরা, তেমনই রয়েছে সেরা স্পিনার। বিকল্প বোলার হিসেবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল-ট্র্যাভিস হেডরা বল হাতে যা করতে পারেন, বিরাট কোহলি তা করতে পারেন না।
আবার ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপে প্রথম সাতজনের চারজনই তরুণ। এত বড় ম্যাচের চাপ ও অস্ট্রেলিয়ার বোলিং প্রতাপ সামলে মাথা ঠন্ডা রাখার অভিজ্ঞতা তাদের এখনও হয়নি। যার ফল দেখা গেল ফাইনালে। রক্ষণাত্মক হতে গিয়ে রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন, আবার হাত খুলতে গিয়ে আউট হয়েছেন। অজি বোলারদের মাইন্ড রিড করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন রাহুল-গিল-শ্রেয়াস, এমনকি সূর্যকুমারও।
ব্যাট হাতে নেমে এখানে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন হেড ও লেবুশেন। দুজনই টেস্টের খেলোয়াড়। ফলে বিপর্যয় কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়, তা নিয়ে তাদের পরামর্শের প্রয়োজন হয়নি।
আফগানদের বিপক্ষে ম্যাক্সওয়েলের সেই অতিমানবীয় ইনিংসটিও এখানে গণ্য। সাত-আটে নামা ম্যাক্সওয়েলের কাজ মূলত শেষদিকে রানের গতি বাড়ানো। তা হলেও তিনি যে যথেষ্ট ধৈর্যধারণে পারদর্শী, তা নিয়ে এখন আর বোধহয় কেউ তর্কে জড়াবেন না।
সব মিলিয়ে পরিবেশ, প্রকৃতি, ভাগ্য, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা- সবকিছু যেখানে আজ অস্ট্রেলিয়াকে বর দিয়েছে, সেখানে উক্ত সব বিভাগেই বঞ্চিত হয়ে বারংবার দিশেহারা হয়েছে ভারত। তাই ফাইনালে সেরা পারফর্ম্যান্স প্রদর্শন করে শিরোপা মাথায় করে নেচেছেন অজিরা, আর বাজে পারফরম্যান্সের চক্রে দেহ-মন ছিন্নভিন্ন হয়েছে ভারতীয়দের।
আরও পড়ুন:বছর তিনেক হলো জাতীয় দলের বাইরে অলরাউন্ডার রুমানা আক্তার। মাঝখানে একবার ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছেন ‘আর নয় ক্রিকেট’। সেই ফেসবুক পোস্টেই এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে গুরুতর অভিযোগ তুললেন রুমানা আহমেদ। রুমানার দাবি, তার সঙ্গে অন্যায়-অবিচার হয়েছে। এবং তিনি সেটার বিচার চাইলেন ক্রিকেট বোর্ডের কাছে।
গতকাল নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে রুমানা পোস্ট দিয়েছেন বিসিবির কাছে খোলা চিঠির মতো করে। তিনি লিখেছেন, ‘বিসিবির সম্মানিত অভিভাবকদের বলছি। আমি খেলি কিংবা না খেলি, এমন অনৈতিক-নৈরাজ্যমূলক ঘটনা চলতে পারে না। দয়া করে আমাকে চূড়ান্ত সমাধান দিন। কোনো কারণ ছাড়াই তিন বছর তো কোনো কৌতুকের কিছু না। আমি কখনোই বাজে ক্রিকেট খেলিনি। অনৈতিক কাজও করিনি। জ্যেষ্ঠতা কখনোই অভিশাপ হতে পারে না। যারা আমার উজ্জ্বল ক্রিকেট ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছে, তার বিচার চাই।’
২০২৩ সালের আগস্টে সামাজিক মাধ্যমে হঠাৎই রুমানা পোস্ট দিয়েছিলেন, ‘আর ক্রিকেট নয়।’ সেই পোস্টের আগে বাংলাদেশ যে শ্রীলঙ্কা-ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিল, কোনোটিতেই তিনি ছিলেন না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দল ঘোষণার পর বিসিবি জানিয়েছিল, তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল।
বিসিবির এই দাবির বিপক্ষে পাল্টা দাবি করেছিলেন বাংলাদেশ দলের এই লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার। সে সময় রুমানা বলেছিলেন- বিশ্রাম নয়, তাকে বাদই দেওয়া হয়েছিল। টিম ম্যানেজমেন্টের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সংবাদমাধ্যমে এমন মন্তব্য করায় রুমানাকে তলবও করেছিল বোর্ড।
দুই বছর আগে ‘নো মোর ক্রিকেট’ পোস্ট নিয়ে বিসিবি তখন বিব্রত হয়েছিল। নারী বিভাগের তৎকালীন প্রধান শফিউল আলম নাদেল সে সময় বলেছিলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের ক্রিকেটারদের প্রতি সদয় বা সৎ। ওকে এটা শুধু মনে করিয়ে দিলাম, সেতো চাইলে বোর্ড- আমাদের বিভাগ থেকে শুরু করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), বোর্ড সভাপতি; সবার সঙ্গেই তো কথা বলার সুযোগ আছে। এটা সে না করলেও পারত।’
৩৩ বছর বয়সী রুমানা ২০১১ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন ৫০ ও ৮৭ ম্যাচ। দুই সংস্করণেই ৮০০-এর বেশি রান করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার উইকেট ১২৫।
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর।
তিনি বলেন, ‘তবে তার স্বাভাবিক কাজকর্মে—অর্থাৎ খেলাধুলায়—ফিরতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে।’
সাভারের কেপিজি হাসপাতালে মঙ্গলবার দুপুরে তামিমকে দেখে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য দিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে এ চিকিৎসক বলেন, ‘তামিম ইকবালকে নরমাল কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য অন্তত তিন মাস সময় দিতে হবে। মানে খেলাধুলায়। এ ছাড়া তিনি বাসায় স্বাভাবিক কাজকর্ম ও হাঁটাচলা করবেন সপ্তাহখানেক। তাকে বিশ্রামেই থাকতে হবে। যদিও সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সব রোগ সবসময় ধরা পড়ে না।
‘প্রথমিক ইসিজিতে কোনো চেঞ্জ আসেনি। আজ সকালে ইকো (ইকোকার্ডিওগ্রাম) করা হয়েছে। সবকিছুই ভালো। কিন্তু তারপরও যেকোনো সময় যেকোনো জিনিস ঘটে যেতে পারে। এ বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তার পরিবারের সাথে আলাপ করেছি। এখন তাদের সিদ্ধান্ত আমাদের সিদ্ধান্ত।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সম্পদ তামিম ইকবালের শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করেন গতকাল সাড়ে ১০টায়। তিনি এখানে আসার পর ডাক্তাররা তাকে কার্ডিয়াক প্রবলেম হিসেবে সন্দেহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে কিছু চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। তাকে এখন মুভ (নিয়ে যাওয়া) করানো ঠিক হবে না বলেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
‘তিনি একজন জাতীয় সেলিব্রেটি। নিজের অবস্থান বিবেচনা করে তিনি তাড়াতাড়ি ঢাকায় শিফট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারের ব্যবস্থাও হয়েছিল। আমাদের এখানকার দুজন ও ওখানকার দুজন মিলে চারজন চিকিৎসক মিলে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তখন তার হার্ট অ্যাটাক হয়, তার নাড়ির স্পন্দন পাওয়া যায়নি। তারপর ডাক্তারররা সিপিআর দিয়েছেন। হার্ট বন্ধ হয়ে গেলে চালু করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।’
অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় আমাদের জাতীয় দলের ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল এখন সুস্থ। তার সার্বিক অবস্থা আশাব্যঞ্জক। কিন্তু কখনও কখনও যে প্রাইমারি পিসিআই হয়েছে, এটা একটা ফরেন বডি, এটা রিঅ্যাকশন হতে পারে, হার্ট নানাভাবে এটার ওপর অ্যাকশন ও রিঅ্যাকশন হতে পারে।
‘রে রিংটা লাগানো হয়েছে, সেটা সামায়িকভাবে, কোনোভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই ঝুঁকি রয়েছে। যদিও সেই পরিসংখ্যান খুবই কম।’
তিনি বলেন, ‘তার পরিবারের সদস্যদের সেটা বলেছি। চিকিৎসক যারা ছিলেন, ডা. মারুফ, তাদের পরিশ্রমে, আল্লাহর বিশেষ রহমতে তাকে আমরা একটি নবজীবন দিতে পেরেছি। সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা যেখানে সম্ভব, সেখানে মানুষ যেতে চাইবে। কিন্তু তার যাওয়াটা কতটা নিরাপদ, সে বিষয়ে আমরা তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করেছি। তার এই মুহূর্তে শিফট করায় ঝুঁকি আছে।’
এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘ঝুঁকিটা কম, এক শতাংশ। যদি ঘটে যায়, তখন ঝুঁকিটা শতভাগ। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা তার এখানে থাকা উচিত। তার পর তিনি অন্য কোথাও যেতে পারবেন।’
আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘তামিমের যেটা হয়েছিল, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে সেটা কিন্তু হয়। আমরা দেখেছি, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাক হলে ১০ থেকে ২০ শতাংশ রোগী কখনও হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন না। তার হার্ট অ্যারেস্ট হয়। এখানেও তাই হয়েছে। কিন্তু তার সাথে চিকিৎসকরা ছিলেন, সাথে সাথে কার্ডিয়াক ম্যাসেজ শুরু হয়েছিল। হার্ট নিজে পাম্প করছে না, জোর করে কিছুটা পাম্প করিয়ে রাখা হয়েছিল। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
‘তার বন্ধ আর্টারি খুলে দেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, অ্যাকিউট এপিসোডটা গেছে। ৩২ মিনিটের মতো তাকে কার্ডিয়াক প্লেসে দিতে হয়েছে। সেখান থেকে উঠে আসার সৌভাগ্য সবার হয় না। যথাসময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পাওয়ার কারণেই তামিমকে আমরা ফিরে পেয়েছি। কতটা ফেরত পেয়েছি, আজ সকালবেলায় ইকোকার্ডিয়াক করে হার্টের ফাংশন দেখা হচ্ছিল, দেখে মনে হয়, কোনো সমস্যা নেই, একেবারে তরতাজা। মনে রাখতে হবে, এটিই একটি ছদ্মবেশ। হার্ট আবার অ্যাবনরমাল হতে পারে। তবে শঙ্কা অবশ্যই কমে গেছে।’
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘তবে ওটা হয়েছিল, কারণ একটা বড় আর্টারি বন্ধ ছিল। খাবার নেই, অক্সিজেন নেই, ওই টিস্যুটা ইরিটেটেড, সে জন্যই এটা হয়েছিল। এখন সেটা খুলে গেছে। স্লাইট শঙ্কা আছে। সে জন্য আমরা তাকে বলেছি, ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত একটি ক্রিটিক্যাল টাইম, যাতে আর কোনো প্রবলেম না হয়।
‘কথাবার্তা একটু কম বলা উচিত, বিশ্রামে থাকা উচিত। এখানে থেকে স্থিতিশীল হয়ে আরও ভালো কোনো জায়গায় যদি যেতে চান, তাহলে যেতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের হৃৎপিণ্ডে রিং পরানো হয়েছে।
বর্তমানে তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে।
ইউএনবিকে সোমবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘তাকে রিং পরানো হয়েছে নিশ্চিত। প্রথমে মাঠে খেলার সময় তার বুকে ব্যথা ওঠে। আমরা তাকে হাসপাতালে পাঠাই। তাকে যখন হেলিকপ্টারে তোলা হচ্ছিল, তখন আবার বুকে ব্যথা শুরু হয়।
‘হঠাৎ করেই তার বুকে ব্যথা ওঠে। এরপর আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকসহ তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসা বিভাগের প্রধান দেবাশীষ চৌধুরী সাংবাদমাধ্যমকে জানান, তামিমের দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তামিম। অধিনায়ক হিসেবে টসেও অংশ নেন।
এরপর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করায় তামিমকে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিকেএসপির পাশে সাভারের ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে। এ মুহূর্তে তিনি সেখানেই ভর্তি।
তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবির বোর্ড সভা স্থগিত করা হয়। দুপুর ১২টায় ১৯তম বোর্ড সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
এ ক্রিকেটারকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:চেক ডিজঅনার মামলায় ক্রিকেটার ও মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাকিব আল হাসানের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান বাদীপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার এ আদেশ দেন।
আদালতের পেশকার রিপন মিয়া বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে আইএফআইসি ব্যাংকের পক্ষে শাহিবুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
চেক ডিজঅনার মামলায় সাকিব আল হাসানসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর তিনজন হলেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের এমডি গাজী শাহাগীর হোসাইন এবং প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইমদাদুল হক ও মালাইকা বেগম।
আদালত ১৫ ডিসেম্বর বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ১৯ জানুয়ারি তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৯ জানুয়ারি সাকিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তিনি পরে এ মামলায় জামিন নেন।
আজ গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। বাদীপক্ষ সাকিবের সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, সাকিবের মালিকানাধীন অ্যাগ্রো ফার্ম ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে ঋণ গ্রহণ করে। তার বিপরীতে দুটি চেক ইস্যু করে সাকিবের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি। এরপর চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়। দুই চেকে টাকার পরিমাণ প্রায় চার কোটি ১৫ লাখ।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তামিম ইকবাল।
তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ইউএনবিকে সোমবার দুপুরে এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাকে বিকেএসপির পাশে ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিকেএসপি থেকে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক সবকিছুসহ তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। আমাদের কর্মকর্তা ও ক্রিকেটের প্রশিক্ষকরা ওখানে আছেন।
‘ঢাকা থেকেও টিম আসছে। আমাদের কর্মকর্তা-চিকিৎসক সেখানে আছে। বিকেএসপির মাঠে হেলিকপ্টার অপেক্ষা করছে। দেখি কী করা যায়।’
টাইগারদের সাবেক এ ক্যাপ্টেনের শরীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে জানিয়ে মুনীরুল ইসলাম বলেন, ‘সম্ভবত একটা এনজিওগ্রাম হয়েছে। এরপর তিনি স্থিতিশীল আছেন।’
মোহামেডান ক্লাবের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘তামিম ইকবাল বর্তমানে চিকিৎসাধীন। আমরা সবাই তার সুস্থতা কামনা করছি।’
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তামিম। অধিনায়ক হিসেবে টসেও অংশ নেন।
এরপর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করায় তামিমকে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিকেএসপির পাশে সাভারের ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে। তিনি সেখানে ভর্তি রয়েছেন।
তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবির বোর্ড সভা স্থগিত করা হয়েছে। দুপুর ১২টায় ১৯তম বোর্ড সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
তামিমকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর স্থায়ী ক্যাম্পাসে রবিবার সফলভাবে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ টুর্নামেন্টে সিইউবির বিভিন্ন বিভাগের প্রতিযোগী দলগুলো অংশগ্রহণ করে। ব্যতিক্রমী ক্রিকেটিং দক্ষতা ও দলগত কাজ খেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলে।
গ্র্যান্ড ফিনালের আয়োজনে ব্ল্যাকআউটস এবং সিইউবি অলস্টারদের মধ্যে দুর্দান্ত ম্যাচ হয়।
সিইউবি ব্ল্যাকআউটস দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা অর্জন করে। সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাফিন।
খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ ও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফাত, এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান জাবেদ হোসেন, উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. গিয়াস উ আহসান।
সিইউবি স্পোর্টস ক্লাব আয়োজিত ইভেন্টটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উদ্বোধনী ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল।
সোমবার মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বিপিএলের এবারের আসর শুরু হয়েছে।
আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ফাহিম আশরাফের ৮৮ রানের জুটি বরিশালের জয় নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখে।
১৯৮ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে পৌঁছতে মাঠে নেমে বরিশাল তাদের ইনিংসের প্রথম বলেই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে হারায়। জিসান আলমের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি।
পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই আরও দুই উইকেট হারিয়ে তিন উইকেটে ৩০ রান তুলতে সক্ষম হন তারা।
এরপর তৌহিদ হৃদয় ২৩ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে শুরুর ধাক্কা সামলে নেয়। কিন্তু কাইল মেয়ার্স (৫) ও মুশফিকুর রহিম (১৩) দ্রুত আউট হওয়ায় বরিশাল আরও বিপদে পড়ে যায়।
অর্ধেক ওভার মাঠে গড়ানোর আগেই বরিশাল অর্ধেক উইকেট হারিয়ে বসে। ১৩তম ওভারে নিজেদের ষষ্ঠ উইকেট হারায় তারা।
ম্যাচের এই পর্যায়ে মাহমুদউল্লাহ ও আশরাফি শক্তভাবে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জয়ের শক্তিশালী জুটি গড়েন। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১১ বল হাতে রেখে চার উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় তারা।
এর আগে ইয়াসিরের ৪৭ বলে অপরাজিত ৯৪ ও এনামুলের ৫১ বলে ৬৫ রানের ওপর ভর করে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ১৯৭ রানের বড় স্কোর করে দুর্বার রাজশাহী।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে আসা দুর্বার রাজশাহী ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জিসান আলমকে শূন্য রানে আউট করেন কাইল মায়ার্স। স্কোর বোর্ডে ২৫ রান উঠতেই রাজশাহী দ্বিতীয় উইকেট হারায়।
বরিশাল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৪০ রানের জুটি গড়েন এনামুল ও ইয়াসির। ১৮তম ওভারে পতনের আগে এনামুল ৫১ বলে ৪টি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৬৫ রান করে দলকে এগিয়ে নেন। তবে উইকেটের অপর প্রান্তে ছিলেন ইয়াসির। সাতটি ৪ ও আটটি ছক্কায় ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
বছরের পর বছর ধরে বিপিএল থেকে ছিটকে পড়া মায়ার্স প্রত্যাবর্তন করে রাজশাহীর হয়ে দুটি উইকেট নেন।
এদিকে টিকিট নিয়ে সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তারা স্টেডিয়ামের একটি গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জও করে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য