ভারতের কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা অস্ট্রেলিয়া নিল মধুর প্রতিশোধ। ফাইনালে সেই ভারতকে পেয়ে তাদের হারিয়েই ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল অজিরা। আর পুরো আসরে মাত্র এক ম্যাচ হেরেই হৃদয় চূর্ণ হলো ভারতের।
বিশ্বকাপের পুরো আসর জুড়ে অপরাজিত শুধু নয়, বল-ব্যাটে দুর্দান্ত পারফর্ম করা ভারত অবশেষে হারল। হারল ঠিকই, কিন্তু তাই বলে ফাইনাল ম্যাচেই হারতে হলো! এক ম্যাচ হেরেই নিজেদের মাটিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব থেকে বঞ্চিত হলো ভারত। আর তাদেরই মাঠে, তাদের দর্শকের সামনে থেকে শিরোপা নিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।
ফাইনাল ম্যাচে টসভাগ্য সঙ্গী হয়নি ভারতের। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে রোহিত শর্মা অ্যান্ড কোং। অজি বোলিং তাণ্ডবে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪০ রানে থামে তারা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বিপদে পড়লেও চতুর্থ উইকেট জুটির অসামান্য ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৪২ বল বাকি থাকতে জয়ের দ্বীপে নোঙর করে অস্ট্রেলিয়া। আর সেইসঙ্গে পেয়ে যায় বহুল আকাঙ্ক্ষিত ষষ্ঠ বিশ্বকাপ ট্রফির দেখা।
ব্যাট হতে ১২০ বলে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলে বিশ্বকাপের ম্যান অফ দ্য ফাইনাল হয়েছেন ট্র্যাভিস হেড। মারনাস লেবুশেন ৫৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ডেভিড ওয়ার্নারকে আউট করে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত দেন ভারতের বোলাররাও। প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যে টপাটপ প্রথম সারির তিন উইকেট তুলে নিয়ে দুর্দান্ত প্রতাপ দেখান বুমরাহ-শামিরা। সে সময় মনে হচ্ছিল দুই শ’ পেরোনোই অস্ট্রেলিয়ার জন্য কষ্টকর হয়ে যাবে। কিন্তু না; একপাশে যখন উইকেট পড়ে চলেছে, অন্যপাশে তখন মাথা ঠাণ্ডা রেখেছিলেন ট্র্যাভিস হেড।
মাত্র ৪৭ রানে তিন উইকেট হারানোর পর মারনাস লেবুশেনকে নিয়ে উইকেটে ধৈর্যশীলতার পরিচয় দেন হেড। এ সময় লেবুশেন টেস্ট ব্যাটিংয়ে মনোযোগী হন, অন্যপ্রান্তে হেড রানের চাকায় মরিচা না ধরতে দিতে ব্রতী হন।
এই দুই ব্যাটারের ব্যাটিং দৃঢ়তায় সফলতা পায় টিম ক্যাঙ্গারু। ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে প্রথমে দলীয় পঞ্চাশ, এক শ’, দেড় শ করতে করতে দুই শ’ পার করে জয়ের দুয়ারে কড়া নাড়তে থাকে হেড-লেবুশেন জুটি। এর মাঝে নিজের হাফ সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি পূর্ণ করে জয়ের দুই রান আগে থামেন হেড। থামার আগে তার ১২০ বলে ১৩৭ রানের স্মরণীয় ইনিংসটি ১৫টি চার ও চারটি ছক্কায় সাজান তিনি।
অন্যপ্রান্তে ১১০ বল মোকাবিলা করে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন মারনাস লেবুশেন। ব্যাট হাতে এসে প্রথম বলেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দুই রান নিয়ে নিলে ছয় উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে প্রথম ইনিংসের ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রোহিত শর্মা। মাঝে পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে মিচেল স্টার্কের শর্ট অফ লেংথ ডেলিভারিটি সামনের পায়ের ওপর ভর করে পুল করতে গিয়ে অ্যাডাম জাম্পার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শুভমান গিল।
তিনি মাত্র চার রান করে ফিরে গেলেও রোহিতের ব্যাটিং ঝড়ে পাওয়ার প্লেতে ৮০ রান তোলে ভারত। তবে এরপরই নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারতকে চেপে ধরে অস্ট্রেলিয়া। দশম ওভারের চতুর্থ বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমান্তে ক্যাচ হয়ে ফেরেন রোহিত। সাজঘরে ফেরার আগে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় মাত্র ৩১ বলে ৪৭ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক।
আসলে পাওয়ার প্লেতে রানের লাগাম টানতে অষ্টম ওভারেই ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে আসেন কামিন্স। প্রথম ওভারে সফলতা না পেলেও নিজের দ্বিতীয় ওভারেই রোহিতকে পকেটে ভরেন তিনি। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের পরের ওভারে টানা দুই বলে ছক্কা এবং চার মারেন রোহিত। পরের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে আবারও উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন ভারতের অধিনায়ক। তবে ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক না হওয়ায় ফিরে যেতে হয় হেডের দুর্দান্ত ক্যাচে।
এরপর অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আর গতি পায়নি ভারতের রানের চাকা। পরের ৪০ ওভারে তারা তোলে মোটে ১৬০ রান। প্রথম ইনিংসে রোহিত ছাড়া আর কেউ ছক্কা মারতে পারেননি। পুরো ইনিংসে চার হয়েছে মাত্র ১৩টি।
রোহিতের পর ৩ বলে একটি চার মেরে ফিরে যান শ্রেয়াস আইয়ার। কামিন্সের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা জস ইংলিসের গ্লাভসে উইকেট বিলিয়েছেন শ্রেয়াস। এরপর রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে উইকেটে থিতু হয়ে জুটি বড় করতে মনোযোগী হন কোহলি। খানিকটা সফলও হন তারা। এ জুটি থেকে আসে ৬৭ রান। এর মধ্যে নিজের অর্ধশতক তুলে নেন কোহলি।
তবে হাফ সেঞ্চুরির পর তাকে বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে দেননি কামিন্স। ৬৩ বলে ৫৪ রান করা কোহলিকে বোল্ড করে দেন তিনি। এরপর রাহুলকে সঙ্গ দিতে ব্যাটিং লাইন আপে পরিবর্তন করে সুর্যকুমারের পরিবর্তে রবীন্দ্র জাদেজাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠান রোহিত। কিন্তু এই জুটিও বেশি বড় হতে দেননি হেজলউড।
হেজলউডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২২ বলে ৯ রান করা জাদেজা।
এরপর ধীরগতির ইনিংস খেলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর ৬৬ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন রাহুলও। স্টার্কের গুড লেংথের ডেলিভারিতে রিভার্স শট খেলতে গিয়ে আউটসাইড এজ হয়ে তিনিও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন।
এরপর মোহাম্মদ শামিকেও আউট করেন স্টার্ক। খানিক বাদে অ্যাডাম জ্যাম্পার শিকার হয়ে জসপ্রিত বুমরাহ এলবিডব্লিউ হলে ভারতের ইনিংস আর বেশিদূর এগোতে পারেনি।
ভারতের শেষ ভরসা সূর্যকুমার যাদব আউট হন মাত্র ১৮ রান করে। ইনিংসের শেষ বলে উইকেট পড়লে ২৪০ রানে শেষ হয় ভারতের ইনিংস।
এদিন উইকেটের পেছনে পাঁচটি ক্যাচ নিয়ে বিরল এক কীর্তি গড়েন ইংলিস। বিশ্বকাপ ফাইনালে পাঁচ ক্যাচ নেয়া প্রথম ক্রিকেটার তিনি। আগের ১২ আসরের ফাইনালে সর্বোচ্চ ৩টি করে নেয়া কীর্তি রয়েছে রডনি মার্শ (১৯৭৫), মইন খান (১৯৯৯) ও টম ল্যাথামের (২০১৯)।
ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৭ রানের ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেন লোকেশ রাহুল। এ রান করতে তিনি মোকাবিলা করেন ১০৭ বল। এ ছাড়া বিরাট কোহলি ৫৪ ও অধিনায়ক রোহিত করেন ৪৭ রান।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক। প্যাট কামিন্স ও জশ হেজলউড পান দুটি করে উইকেটের দেখা।
এ জয়ের ফলে বিশ্ব ক্রিকেটের লম্বা ইনিংসের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত হলো আবার। এ বছরের জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাও জেতে তারা। ফলে এই দুই বিভাগেই ক্রিকেটর সেরার মুকুট এখন অস্ট্রেলিয়ার মাথায়।
এখানে বিশেষভাবে আলোচনায় চলে আসেন ট্র্যাভিস হেড। টেস্ট চ্যাম্পিয়ানশিপের ফাইনালে এই ভারতের বিপক্ষেই ১৭৪ বলে ১৬৩ রানের ইনিংস খেলে ফাইনালের রাজা হয়েছিলেন তিনি। আজ ওয়ানডে ফাইনালে ভারতের বিপক্ষেই ১২০ বলে ১৩৭ রান করে ফাইনালের রাজা তিনি।
আরও একটি বিশেষ ব্যাপার না বললেই নয়। সেটি প্যাট কামিন্সের অধিনায়কত্ব। টস জিতে পিচের আচরণ টের পেয়ে আগে বোলিং করার যথার্থ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। পরে পাওয়ার প্লের মধ্যেও রোহিতকে ফেরাতে ম্যাক্সওয়েলকে বাজি ধরেন তিনি। সে যাত্রায়ও সফল হয়েছেন। আবার কোহলি ও রাহুল যখন হাতখুলে খেলা শুরু করবেন, তখনই উপযুক্ত বোলার দিয়ে কাঁৎ করেছেন তাদের। সবকিছু মিলিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরার যোগ্য ব্যক্তি তিনি।
তবে বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও এবারের বিশ্ব আসরে বিরাট কোহলির অবদান কিছু কম নয়। ব্যাট হাতে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন কোহলি। ১১ ম্যাচে ৯৫.৬৩ গড়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭৬৫ রান। এর মধ্যে ৬টি হাফ সেঞ্চুরি ও তিনটি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
বিশ্বকাপের মঞ্চেই শচীনের ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁয়ে তা ভেঙেছেন তিনি। সেমি ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৩ বলে ১১৭ রানের ওই ইনিংসটি ভারতকে ফাইনালে তুলতে বড় ভূমিকা রাখে। ফাইনালেও ৬৩ বলে ৫৪ রান করেছেন তিনি।
এমন অসাধারণ পারফরম্যান্সের পুরস্কারও পেয়েছেন কোহলি। হয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরা। কিন্তু এত করেও দলকে, ভক্তদের বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দিতে না পেরে মাথা নিচু করে ভাঙা হৃদয়ে পুরস্কার নিয়ে পোডিয়াম ছাড়েন তিনি।
সবশেষে নিজ দেশের খেলোয়াড়দের জয় দেখতে গ্যালারিতে এসে শেষমেস অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাতে বিশ্বকাপ শিরোপা তুলে দিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।
আরও পড়ুন:দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য