ক্রিকেটের নন্দন কানন ইডেন গার্ডেনসে আজ ফাইনালে ওঠার মহারণে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা মুখোমুখি হবে। এরই মধ্যে বিশ্বকাপের ইতিহাসে বেশ কিছু সেমিফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে প্রোটিয়াদের। কিন্তু কোনো আসরেই তাদের ফাইনালে ওঠার রেকর্ড নেই। এবার আবার ইতিহাস হাতছানি দিচ্ছে তাদের। কিন্তু এই দফায় চোকার্স তকমাটি তারা ঘোচাতে পারে কি না- সেটি দেখার বিষয়। আমার মনে হয়, এবার ফাইনালে ওঠার রেকর্ডটা গড়েই ফেলতে পারে প্রোটিয়ারা।
এ কথা বলার পেছনে বড় কারণ হলো- এই টুর্নামেন্টে আগ্রাসী ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারত ও নেদারল্যান্ডসের কাছে হার বাদ দিলে দলটিকে অপ্রতিরোধ্য ও খুবই দুর্ধর্ষ দেখাচ্ছে। টুর্নামেন্টে তাদের উদ্বোধনী ম্যাচে ইতিহাস গড়া সর্বোচ্চ ইনিংস (৪২৮) খেলে জয় তুলে নেয় দলটি। বিস্ফোরক ব্যাটিং ও বিধ্বংসী বোলিং- এই দলটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য। পাওয়ার ক্রিকেটের ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’ বলা যায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তাই এবার নতুন কিছু করে দেখাতে পারে দলটি- এমনটা আশা করাই যায়।
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রসঙ্গে যদি বলি, পাওয়ার ক্রিকেটের অত্যন্ত ‘পাওয়ারফুল’ দল তারাও। লিগ পর্বের প্রথম দুটি ম্যাচে তারা হেরেছিল। কিন্তু এরপর থেকে অপরাজেয় দলটি। তাদের ব্যাটিং বলেন আর বোলিং বলেন, সবদিক থেকেই ফর্মের তুঙ্গে আছেন অস্ট্রেলিয়ানরা। হট ফেভারিটের মতোই খেলছেন তারা। ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার দৌড়ে এগিয়ে যেতে পারে দলটি। আমি মনে করি, আজ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে পাওয়ার ক্রিকেটের মহাযুদ্ধ হবে। চিত্তাকর্ষক খেলার মুগ্ধতা ছড়াবে সবার মাঝে। দীর্ঘদিন মনে রাখার মতো ম্যাচ হতে পারে।
সেমিফাইনালে কিছু বিষয় দুই দলের খেলায় বেশ প্রভাব ফেলতে পারে। শুরুতেই বলব, পাওয়ার প্লের ব্যাটিং ও বোলিংয়ের কথা। এখানে কিন্তু দুই দলের খেলার ধরন ভিন্ন দুই ধাঁচের। লিগ পর্বে লক্ষ্য করেছি, ইনিংসের শুরুতে স্কোরবোর্ডে যত বেশি রান তোলা যায়- সে দিকেই বেশি মনোযোগ থাকে অস্ট্রেলিয়ানদের। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকানদের ইনিংসের শুরুটা হয় খুবই ধীরস্থিরভাবে। অবশ্য ডেথ ওভারে তারা যে রুদ্ররূপ ধারণ করে, তা অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্য রকমের।
আমার মতে, পাওয়ার প্লেতে যারা ব্যাটিংয়ে শক্তি দেখাতে পারবে, তাদের জন্য মাঝের ওভারগুলোয় খেলা সহজ হবে। এই কাজটি ঠিকঠাকমতো করতে পারলে খেলার নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয়া যাবে। ব্যাটিংয়ের মতো সমান গুরুত্বপূর্ণ শুরুর বোলিংও। পাওয়ার প্লের বোলিংয়ে খুবই বিপজ্জনক আফ্রিকানরা। যেখানে তাদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। তাই পাওয়ার প্লেতে যারা ব্যাটিং ও বোলিংয়ে এগিয়ে যাবে, তাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
আজ গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দিকে দৃষ্টি থাকবে সবার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে পিঠে ব্যথা, পায়ের পেশির টান সহ্য করেও যেভাবে অতিমানবীয় হার না মানা ২০১ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন এই অলরাউন্ডার, তা ইতিহাসের সেরা ব্যাটিংয়ের জায়গায় স্থান করে নিয়েছে। অবশ্য তার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা থাকবে দক্ষিণ আফ্রিকার।
ম্যাক্সওয়েলের ‘ঘাতক’ হতে পারেন প্রোটিয়া বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ। লিগ পর্বে কলকাতার মাঠেই এক ম্যাজিক ডেলিভারিতে ভারতীয় ওপেনার শুভমান গিলের উইকেটটি যেভাবে তুলে নিয়েছিলেন এই আফ্রিকান, অস্ট্রেলিয়ানদের জন্যও বড় হুমকির হতে পারেন এই বোলার। ইনিংসের মাঝের ওভারগুলোতে তার বোলিং ভালো হচ্ছে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপের মূল আকর্ষণ হলেন কুইন্টন ডি কক। ধারাবাহিক দুর্দান্ত ফর্মে আছেন এই ওপেনার। টুর্নামেন্টে চারটি সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন। এর মধ্যে ১৭৪ রানের ইনিংস খেলেন। ছয়শর মতো রান সংগ্রহ তার। লম্বা সময় উইকেটে কাটানোয় অভ্যস্ত হয়ে গেছেন কক। সেমিফাইনালে তার ব্যাটে দ্যুতি ছড়াতে পারে।
তবে কককে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন অজি লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। লিগ পর্বে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এই অস্ট্রেলিয়ান। অবশ্য জাম্পাকে মাথায় রেখেই কৌশল নির্ধারণ করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে দলীয় অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা সেভাবে ফর্মে না থাকার বিষয়টি তাদের জন্য চিন্তার কারণ। এ ছাড়া মার্করাম, ক্লাসেন, হেনড্রিকসদের সমন্বয়ে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং লাইনআপ খুবই ধ্বংসাত্মক। তাদের কোনো দুর্বলতা দেখছি না। তবে তাদেরকে আসল পাওয়ার ব্যাটিংটা আজ দেখাতে হবে মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, হ্যাজলউডদের বিরুদ্ধে।
কীভাবে ভারতের মাঠে বোলিংয়ে সফল হতে হয়- তা আইপিএলে খেলে খেলে অজিদের একপ্রকার মুখস্ত হয়ে গেছে। আজ আমরা দুই দলের মধ্যে পাওয়ার ব্যাটিং বনাম আগুনে বোলিংয়ের একটা বড় প্রতিযোগিতা দেখতে পারি।
দক্ষিণ আফ্রিকান পেসাররা কিন্তু খুবই ভয়ংকর ফর্মে আছেন। কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিডি, ইয়ানসেনদের দ্রুতগতির বল সামলানোর চাপ নিতে হবে ওয়ার্নার, মার্শ, স্মিথদের। অবশ্য তাদের দলের ব্যাটিং গভীরতা আছে। দলে পাওয়ার হিটারের ছড়াছড়ি। কীভাবে বড় ম্যাচে ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখাতে হয়, বড় ইনিংস খেলতে হয়, সেটিও তাদের ভালো করেই জানা আছে। দুই দলের জন্য একটি ইতিবাচক দিক হলো- অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা দলে বেশি অলরাউন্ডার থাকায় ব্যাটিং ও বোলিংয়ে দুই দলই অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ। এই অলরাউন্ডাররা ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।
ইডেনের উইকেটে ব্যাটাররা বেশি সুবিধা আদায় করে নিতে পারেন। তবে পেসারদের জন্যও ভালো কিছু থাকবে বলে আশা করি। স্পিনাররা কার্যকর হতে পারেন সময়ের হিসাবে। তবে উইকেটের চেয়ে ম্যাচের দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে দুই দলকেই। ম্যাচের পরের দিন রিজার্ভ ডে থাকলেও সে দিনও বৃষ্টি বাধা হতে পারে। বৃষ্টি আইনে একবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কপাল পুড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা দলের। তবে এবার বৃষ্টির কারণে ম্যাচ ভেসে গেলেও ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ থাকবে তাদের।
আজকের ম্যাচে টস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কারণ আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সফলতার মুখ দেখছে প্রোটিয়ারা। রান তাড়া করতে গিয়ে তাদের দুর্বলতা চোখে পড়েছে। তাই টস জিতলে অস্ট্রেলিয়ানরা দক্ষিণ আফ্রিকাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ের সফলতা কিন্তু নির্ভর করবে উইকেটের আচরণের ওপর। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হবে দুই দলকে।
পরিশেষে বলব, আজ ইডেনের মাঠে পাওয়ার ক্রিকেটের শক্তিশালী দুই দল- অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ক্রিকেটের মহাযুদ্ধই হবে। দুই দলের মধ্যে সেরা একটি ম্যাচ হবে। এ ম্যাচে ক্রিকেটের নির্মল বিনোদন উপভোগের সুযোগ পাবেন সবাই- এমনটাই প্রত্যাশা করছি।
আরও পড়ুন:দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য