০, ০, ১, ০, ১, ১২, ০, ০- এটি শ্রীলঙ্কার প্রথম আট ব্যাটারের ব্যক্তিগত স্কোর। সেমিফাইনালের আশা জিইয়ে রাখতে প্রতিটি ম্যাচেই জয়ের বিকল্প ছিল না শ্রীলঙ্কার। কিন্তু ভারতের বোলিং তোপে মাত্র ৫৫ রানেই গুটিয়ে গেছে লঙ্কানদের ইনিংস।
৩৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৩০২ রানে হেরেছে দ্বীপরাষ্ট্রের দলটি। এর ফলে বাংলাদেশের পর শ্রীলঙ্কারও সেমিতে খেলার আশা শেষ হয়ে গেছে।
দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম উইকেটের পতন থেকেই রেকর্ড বুকে জায়গা করে নিতে শুরু করে শ্রীলঙ্কা। প্রতিটি উইকেট পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা নতুন নতুন রেকর্ড হিসেবে উপস্থিত হয়। তবে সে রেকর্ড গৌরবের কিছু নয়, লজ্জার।
ইনিংসের প্রথম বলে উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ আসরে প্রথম কোনো ইন্ডিয়ান বোলার হিসেবে উইকেট পান জসপ্রীত বুমরাহ।
এছাড়া বিশ্বকাপ আসরে দ্বিতীয়বার দুই শ্রীলঙ্কান ওপেনারই ডাক মারার লজ্জার রেকর্ড গড়েছেন। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে এমন কীর্তি ঘটান লাহিরু থিরিমানে ও তিলকরত্নে দিলশান। সেবার আফগনদের বিপক্ষে খেলতে নেমে এমন বিপাকে পড়েন তারা। এছাড়া ২০১৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল ও কলিন মুনরোও ডাক মেরে আউট হন। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০০৬ সালে প্রথম ঘটে এ ঘটনা।
শ্রীলঙ্কার শীর্ষ চার ব্যাটার মিলে আজ মাত্র এক রান তুলতে পেরেছেন। এটিই একদিনের ক্রিকেটে প্রথম চার ব্যাটারের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এই রেকর্ড আরও আছে পাকিস্তানের। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের চার ব্যাটার ফেরেন মাত্র ১ রান করে। এছাড়া ২ রানের সংগ্রহে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে আয়ারল্যান্ড, তিন রান করে যৌথভাবে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড।
ভারতের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রথম চার ব্যাটারের তিনজনই ডাক মেরে আজ বিরল এক রেকর্ডে প্রবেশ করেছে। এমন রেকর্ড আরও একবার আছে দলটির। সেটি ২০০৩ সালে। এছাড়া ইংল্যান্ডের প্রথম চারজনের তিন ব্যাটার ডাক মারেন ২০২২ সালে।
চলতি বিশ্বকাপে প্রথম দশ ওভারে আজই সবচেয়ে কম রান উঠেছে। ৬ উইকেটে মাত্র ১৪ রান তুলতে পেরেছে শ্রীলঙ্কা। এর আগে প্রথম পাওয়ার প্লেতে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডটি ছিল ভারতের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩ উইকেটে ২৭ রান করে তারা।
তাছাড়া বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম দশ ওভারে এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। এর আগে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে দুই উইকেট হারিয়ে ১২ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের বিশ্বকাপে একই স্কোর (১২/২) করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আজ পাঁচ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে ভারতীয় বোলার হিসেবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী জহির খানের ৪৪ উইকেট টপকে এখন শীর্ষে মোহাম্মদ শামি। তাছাড়া বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক (৩) ফাইফার অর্জনে এখন মিচেল স্টার্কের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন এই ভারতীয়।
শুধু তাই নয়, ভারতীয় বোলার হিসেবে শ্রীনাথ ও হরভজনের তিনটি ফাইফার ছাড়িয়ে শামির ফাইফার এখন চারটি।
বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন রান সংগ্রহের লজ্জা থেকে ১২ বছর পর মুক্তি মিলেছে বাংলাদেশের। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। সেটি পেছনে ফেলে এবার রেকর্ডটি নিজের করে নিল শ্রীলঙ্কা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নামার পর শ্রীলঙ্কার ব্যাটারদের কোনো সুযোগই দেননি জসপ্রীত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজ। দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে পাথুম নিশাঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান বুমরাহ। পরের ওভারের প্রথম বলেও একই চিত্র। সিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন দিমুথ করুনারত্নে। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। ওভারের পঞ্চম বলে সিরাজের আউট সাইড অফের ডেলিভারিটি ড্রাইভ করতে গিয়ে থার্ড স্লিপে কাচ হয়ে যান সাদিরা সামারাবিক্রমা।
তৃতীয় ওভারে লঙ্কান ব্যাটাররা বুমরাহকে দেখেশুনে খেললেও চতুর্থ ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে ফের উকেট তুলে নেন সিরাজ। কুশল মেন্ডিসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান তিনি।
দলীয় ৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এই তিন রানের দুটিই ছিল ওয়াইড থেকে পাওয়া।
দশম ওভারে মোহাম্মদ শামির হাতে বল তুলে দেন রোহিত। এসেই ভারতীয় বোলিংয়ের ষোলকলা পূর্ণ করেন তিনি। পরের ৬ উইকেটের পাঁচটিই গেছে তার পকেটে।
শামির প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে জাদেজাকে ক্যাচ দিয়ে ২৪ বলে ১ রান করে ফেরেন আসালঙ্কা। পরের বলেই ডাক মেরে কট বিহাইন্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা দেন দুসান হেমন্ত।
এ সময় প্রথম পাওয়ার প্লে শেষ হয়। পাওয়ার প্লেতে মাত্র ১৪ রান করতে গিয়ে ছয় উইকেট হারায় লঙ্কানরা। আউট হওয়া ছয় ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে মোট ২ রান।
শামির পরের ওভারে কট বিহাউন্ড হয়ে যান দুশমন্ত চামিরা। ৬ বল খেলে ডাক মেরে বিদায় নেন তিনি।
তার পরের ওভারেও উইকেট পান শামি। এবার তার শিকার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। উইকেটে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন মাথিউস। শামির ফ্লাইটেড ইয়র্কার মিস করে বোল্ড হয়ে ফেরেন ২৫ বলে ১২ করে।
নিজের পরপর তিন ওভারে শামি চার উইকেট তুলে নিলে ১৩.১ ওভার শেষে ২৯ রানে ৮ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। এরপর কোনোমতে উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করেন মাহিশ থিকশানা ও কাসুন রাজিথা।
এই দুই ব্যাটারের ২০ রানের জুটি ভাঙেন শামিই। দলীয় ৪৯ রানের মাথায় ১৪ রান করে আউট হন রাজিথা। পরে জাদেজার বলে পাঁচ রান করে দিলশান মধুশঙ্ক ক্যাচ হয়ে গেলে ১৯.৪ ওভারে ৫৫ রান তুলে পাততাড়ি গুটিয়ে মাঠ ছাড়ে শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ইনিংসে মধুশঙ্ক পাঁচ উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে শামিও পেয়েছেন ফাইফারের দেখা। এছাড়া মোহাম্মদ সিরাজ তিনটি এবং বুমরাহ ও জাদেজা একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
অনবদ্য বোলিংয়ের পর ম্যাচসেরার স্বীকৃতিও পেয়েছেন শামি।
এর আগে টস জিতে ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান লঙ্কান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই দিলশান মধুশঙ্কের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ভারতের অধিনায়ক রোহিত। আজ প্রথম বলে চার মেরে ইনিংস শুরু করলেও পরের বলেই ফিরে যেতে হয় হিটম্যানকে।
রোহিত ফিরে গেলে শুভমান গিলকে নিয়ে ইনিংসের হাল ধরেন বিরাট কোহলি। এই দুজনের মারকুটে ব্যাটিংয়ে একসময় মনে হচ্ছিল আজ সাড়ে চারশ পার করবে ভারত। তবে ১৮৯ রানের জুটি গড়ে শুভমান গিল ও কোহলি বিদায় নিলে ব্যাটিং ধস নামে। আসলে ত্রিশ ওভারের পর এই দুই ব্যাটার প্যাভিলিয়নে ফিরলে, যিনি ক্রিজে এসেছেন, তিনিই শুরু থেকে মারমুখী হয়ে খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫৭ রান তুলতে সমর্থ হয় ভারত।
দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯২ রান করেন শুভমান, কোহলি ৮৮ এবং শ্রেয়াস আইয়ার আউট হন ৮২ রান করে।
অন্যদিকে দিলশান মধুশঙ্ক একাই পাঁচ উইকেট নিয়ে ভারতের ইনিংস বড় করতে না দেয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বাকি একটি উইকেট নেন দুশমন্ত চামিরা।
ত্রিশতম ওভারের শেষ বলে দলকে ব্রেকথ্রু এনে দেন মধুশঙ্ক। তার স্লোয়ার বাউন্সারে টপ এজ হয়ে কট বিহাউন্ড হয়ে যান শুভমান। ফেরার আগে ৯২ বল খেলে ৯২ রান করেন তিনি। মারেন ১১টি চার ও দুটি ছক্কার মার।
এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কোহলিও। মধুশঙ্কের পরের ওভারেই কাটার ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে কভার অঞ্চলে পাথুম নিশাঙ্কার হাতে ক্যাচ দেন। ৯৪ বলে ৮৮ রান করা কোহলি আজ ১১টি চার মেরেছেন।
১৯৩ ও ১৯৬ রানে দ্বিতীয় ও তৃতীয় উইকেট পড়ার পর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ইনিংস বড় করার চেষ্টা শুরু করেন শ্রেয়াস। কিন্তু রাহুল বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২১ রান করে তিনি ফিরে যান। তারপর দ্রুত আউট হয়ে ফেরেন সূর্যকুমার যাদবও। এদিন মাত্র ১২ রান করে মধুশঙ্কের বলে কাটা পড়েন তিনি।
এ সময় উইকেটের একপাশ আগলে রাখেন শ্রেয়াস। পরে জাদেজার সঙ্গে আরেকবার জুটি বড় করার চেষ্টা করেন। তবে এবারের চেষ্টায় সফল হন শ্রেয়াস। তবে ৫৭ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন তিনি।
ফেরার আগে ৫৬ বলে ৬টি ছক্কা ও ৩ চারে ৮২ রানের ইনিংস খেলেন শ্রেয়াস। এবারও শ্রীলঙ্কার কান্ডারি সেই মধুশঙ্ক। আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা শ্রেয়াসকে স্লোয়ার ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত করেন তিনি। ফলে কভারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে চাওয়া বলটি কভার অঞ্চল থেকেই লুফে নেন থিকশানা।
শেষ ওভারের তৃতীয় বলে মোহাম্মদ শামি চার বলে দুই রান করে আউট হন। আর শেষ বলে রান আউট হন ২৪ বলে ৩৫ রান করা রবীন্দ্র জাদেজা। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কাকে ৩৫৮ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত।
আজকের রেকর্ড গড়া জয়ে প্রথম দল হিসেবে অফিশিয়ালি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল স্বাগতিকরা।
আরও পড়ুন:দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য