বড় লক্ষ্য তাড়া করতে ব্যাটিংয়ে যে আক্রমণাত্মক মনোভাব থাকা দরকার, তা দিয়েই শুরু করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু একপাশ থেকে একের পর এক দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে টপ-অর্ডার বিধ্বস্ত হলে আর জয়ের মনোভাব ধরে রাখতে পারেননি ব্যাটাররা। পরাজয়ের ব্যবধান কমানোটাই ছিল তখন লক্ষ্য।
ইংল্যান্ডের দেয়া ৩৬৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ১০ বল বাকি থাকতেই ২২৭ রানে গুটিয়ে গেছে টাইগারদের ইনিংস। ফলে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশের।
বড় লক্ষ্য তাড়ার করার জন্য যেমন মারমুখী ব্যাটিংয়ের দরকার ছিল, তেমন শুরুই করেছিলেন লিটন দাস। প্রথম ওভারে তিনটি চার মেরে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং পারফরম্যান্সের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। তবে পরের ওভারে ঠিক উল্টোটা দেখিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় ডেলিভারিতে রিস টপলির আউটার লেংথের বলে স্পর্শ করেই বিপদে পড়ে যান তিনি। স্লিপে থাকা জনি বেয়ারস্টো ক্যাচটি লুফে নিলে ১ রান করে প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটা দেন তানজিদ।
পরের তিন ব্যাটারের অবস্থাও ছিল তানজিদের মতোই। তানজিদ আউট হওয়ার পরের বলেই ডাক মেরে সাজঘরে ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তানজিদের মতো ভুল করে তার খেসারত দিয়ে আউট হন শান্ত।
টপলির অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বলটি পয়েন্টেট থাকা লিয়াম লিভিংস্টোনের হাতে চলে যাওয়ায় টপলিকে হ্যাটট্রিকের সুযোগ করে দিয়ে আউট হন শান্ত।
পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তাই চারে নেমে বেশ কয়েকটি বল ঠেকিয়ে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন সাকিব। তবে আট বল খেলার পর টপলির ডেলিভারিতেই বোল্ড হয়ে যান টাইগার অধিনায়ক। সাকিব ৯ বলে ১ রান করে যখন ফিরছেন, স্কোরবোর্ডের অবস্থা তখন তিন উইকেট হারিয়ে ২৬ রান।
পাঁচে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ অবশ্য চার মেরে রানের খাতা খোলেন। তবে তিনিও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ওকসের ডেলিভারি সামনের পায়ে ভর দিয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে যান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করলেও এদিন তিনি ফিরেছেন ৮ রানে।
বাংলাদেশের ব্যাটাররা আসা-যাওয়ার মিছিলে মধ্যেও একপ্রান্ত আগলে রেখে রানের গতি ঠিক রেখেছিলেন লিটন। শুরু থেকেই দেখেশুনে একের পর এক আত্মবিশ্বাসী শট খেলছিলেন এই ওপেনার। এর মধ্যেই ৩৮ বলে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করে ফর্মে ফেরার আভাস দেন তিনি।
মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর বিপর্যয় সামাল দেন লিটন। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিলেন তিনি। তবে তিন অঙ্কে পৌঁছানোর আগে আবারও অফ স্টাম্পের বাইরের স্লোয়ার ডেলিভারিতে খোঁচা দিয়ে বাটলারকে কাচ দেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ওকসের বলে ৭৬ রান করে আউট হন লিটন।
লিটন ফিরে গেলে হাফ সেঞ্চুরি পার করেন মুশফিক। তবে হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। টপলির বলে কাট করতে গিয়ে তিনি ডিপ থার্ডম্যানে থাকা রশিদের হাতে ধরা পড়েন। মুশফিক ৫১ রান করে ফিরলে ৩১ ওভার শেষে ১৬৪ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর শেখ মেহেদীকে নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তৌহিদ হৃদয়। তবে ৪০তম ওভারে লিয়াম লিভিংস্টোনের স্পেলের প্রথম বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে যান তৌহিদ। সাজঘরে ফেরার আগে ৬১ বল খেলে ৩৯ রান তোলেন তিনি।
এরপর রশিদ খানের গুগলিতে বিভ্রান্ত হয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন শেখ মেহেদী। ৩২ বল খেলে ১৪ রান করতে সমর্থ হন তিনি। তার পর উইকেট ছেড়ে পিছিয়ে যাওয়া শরিফুলকে ইয়র্কার দেন মার্ক উড। ফলে বলটি ঠেকাতে না পেরে স্টাম্প উপড়ে দেন উড। এরপর স্যাম কারানের বলে তাসকিন বোল্ড হয়ে গেলে ২২৭ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
ইংল্যান্ডের হয়ে একাই চার উইকেট নিয়েছেন রিস টপলি। ক্রিস ওকস নিয়েছেন দুই উইকেট। আর স্যাম কারান, আদিল রশিদ, মার্ক উড ও লিয়াম লিভিংস্টোন পেয়েছেন একটি করে উইকেটের দেখা।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমেই বাংলাদেশি বোলারদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়তে শুরু করেন ইংলিশ ব্যাটাররা। প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৬১ রান তোলেন দুই ইংলিশ ওপেনার। এর কিছু পর ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ডাউইড মালান। তারপর ৫৪ বলে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন জনি বেয়ারস্টো।
নিজের শততম ওয়ানডে ম্যাচে নেমে বাংলাদেশের বিপক্ষে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন বেয়ারস্টো। তবে অর্ধশতকের পর বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি এই ওপেনার।
বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব। সাকিবের একটু দ্রুতগতির লেংথ বলে লাইন মিস করে বোল্ড হন ৫৯ বলে ৫২ রান করা বেয়ারস্টো।
বেয়ারস্টো ফেরার পর ক্রিজে থিতু হন জো রুট। এর মাঝে ৯১ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন মালান। আর ৪৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন রুট। সেঞ্চুরির পর আরও বেশি হাত খুলে খেলা শুরু করেন মালান। পরে ১০৭ বলে ১৪০ রান করে আউট হন তিনি। শেখ মেহেদীর টসড আপ ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ওপেনার।
এরপর জস বাটলার ক্রিজে এসেই আক্রমণামত্মক ব্যাটিং শুরু করেন। তবে মাত্র ১০ বলে ২০ রান করে ইন সাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। তার উইকেটটি নেন শরিফুল ইসলাম। এরপর বোলিংয়ে এসে পরপর দুই বলে রুট ও লিয়াম লিভিংস্টোনকে ফেরান শরিফুল।
৪১.৫তম ওভারে লাইনে থাকা বল তুলে মারতে গিয়ে টপ এজ হয়ে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন রুট। ৬৮ বলে ৮২ রানের মাথায় থামেন তিনি। পরের বলটি ডিফেন্স করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন লিভিংস্টোন
এর পর থেকে ইংল্যান্ডের রানের গতি কমে আসে। মারকুটে ব্যাটার হ্যারি ব্রুকও এরপর বেশিদূর এগোতে পারেননি। শেখ মেহেদীর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে লিটন দাসের তালুবন্দি হন তিনি। তার পর দেখেশুনে খেরতে থাকা স্যাম কারানও আউট হয়েছেন মেহেদীর বলে। অফ স্টাম্পের বাইরের বল লং অফ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন তিনি। দারুণ এক ডাইভে কারান সাজঘরে পাঠান নাজমুল হোসেন শান্ত।
আদিল রশিদও বড় শট খেলতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে শান্তকে ক্যাচ দেন। শেষ ওভারে তাসকিনের বলে ক্রিস ওকস ফেরার পর আট ইউকেট হারিয়ে ৩৬৪ রান করে ইংল্যান্ড।
মেহেদী ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার। ৩টি উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। একটি উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদ।
দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১০৭ বলে ১৪০ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন ডাউইড মালান।
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ক্রীড়াঙ্গনের পরিচিত মুখ সিনিয়র সাংবাদিক অঘোর মণ্ডল আর নেই। বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আগস্টের শুরু থেকে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন অঘোর মণ্ডল। সঙ্গে হৃদরোগসহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও ছিল। ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও সম্প্রতি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এরপর সাধারণ কেবিন থেকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত হন।
সপ্তাহ দুয়েক আগে আইসিইউতেই লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয় অঘোর মণ্ডলকে। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
অঘোর মণ্ডল তিন দশকেরও বেশি সময় সাংবাদিকতায় জড়িত ছিলেন। নব্বইয়ের দশকে আজকের কাগজ দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু। এরপর দৈনিক ভোরের কাগজে ছিলেন। একসময় প্রিন্ট মিডিয়া ছেড়ে তিনি সম্প্রচার মাধ্যমে যোগ দেন।
চ্যানেল আই, দীপ্ত টিভি, এটিএন নিউজে কাজ করেছেন অনেকদিন। সবশেষ এটিএন নিউজে বার্তা সম্পাদকের (ডিজিটাল অ্যান্ড নিউ মিডিয়া) দায়িত্বে ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কলাম লিখতেন তিনি। কলামিস্ট হিসেবে লেখালেখি করেছেন ক্রিকেট, রাজনীতিসহ আরও অনেক বিষয়েই। ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে দেশ-বিদেশে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ইভেন্ট কাভার করেছেন অঘোর মণ্ডল।
এক সময় তিনি বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস এসোসিয়েশনের (বিএসজেএ) সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ সালে কিছুদিনের জন্য হয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও। তার অকাল মৃত্যুতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। শোক জানিয়েছে বিএসজেএ, বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস এসোসিয়েশন (বিএসপিএ) সহ আরও অনেক সংগঠন।
আরও পড়ুন:দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিদ্যমান ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন, বোর্ড ও সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব সরকারের কাছে উপস্থাপনের জন্য সার্চ কমিটি গঠন করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
আগামী দুই মাসের মধ্যে কমিটিকে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।
পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সাবেক জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন জোবায়েদুর রহমান রানাকে।
কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সেনা ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সাবেক সচিব হকি খেলোয়াড় মেজর (অব.) ইমরোজ আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, ক্রীড়া সংগঠক মহিউদ্দিন আহমেদ বুলবুল ও সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক মন্টু কায়সার।
সার্চ কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন-২০১৮-এর আলোকে ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন ও সংস্থাগুলোর চলমান কার্যক্রম সম্পর্কিত বিষয় পর্যালোচনা করে আগামী দুই মাসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রস্তাব আকারে পেশ করবে বলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা কর্মকাণ্ডসহ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালা বিশদ পর্যালোচনা করে সুপারিশমালা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে।
এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (ক্রীড়া-১) এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আদাবরে গার্মেন্টকর্মী রুবেলকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) আদাবর থানায় এই দুই সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম।
আদাবর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নজরুল ইসলাম শুক্রবার মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ক্রিকেটার ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানকে মামলার ২৮ নম্বর এবং চিত্রনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌসকে ৫৫ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় নাম উল্লেখ করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলমসহ (এস আলম) ১৫৬ জনের। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে আরও ৪০০-৫০০ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে নাম উল্লেখ করা অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহেনা, আওয়ামী লীগ উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন-উর-রশিদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক পিএমটি ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম ডপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান, ডিএমপির সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানির ছোট ভাই ও ডিএমপির সহকারী কমিশনার গোলাম রুহানী, সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলমের দুই ছেলে আহসানুল আলম মারুফ ও আশরাফুল আলমসহ ১৫৬ জন।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট রুবেল আদাবরের রিংরোডে ছাত্র-জনতার প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নেন। এ সময় আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সাহায্য-সহযোগিতা ও প্রত্যক্ষ মদদে মিছিলে গুলি ছোড়া হয়। বুকে ও পেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রুবেলকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসারত অবস্থায় ৭ আগস্ট মারা যান।
আরও পড়ুন:পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি ফিরে পেয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। এখন থেকে মাঠটির নাম হবে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ’।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে মাঠটি বুঝিয়ে দেন ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, সাধারণ শিক্ষার্থীরাসহ জেলা প্রশাসন অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রথমে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমাদের প্রখ্যাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর উদ্যোগকে। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সরকারি খাস জমির এই মাঠ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবহার করতে পারছিল না। পুনর্দখলের মাধ্যমে আজকে ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু হলো। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলব, এখানে একটি স্থায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড সেঁটে দেয়ার জন্য।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘এখানে মোট ৫ দশমিক ৩২ একর জায়গা রয়েছে। তার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে ৪ দশমিক ৫০ একর জায়গা বুঝিয়ে দেয়া হলো। বাকি যে জায়গাটা রয়েছে সেটা মূল মাঠের পাশে, যা ইস্টার্ন ক্লাব দখল করে রেখেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে সেটুকুর ব্যবস্থা নেব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, ‘মাঠটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করত। কিন্তু কী কারণে সেটা বেহাত হয়ে গিয়েছিল সে কারণ আমি আজও খুঁজে পাই না। শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসককে মাঠটির বিষয়ে জানালে প্রশাসন আজ মাঠটি বুঝিয়ে দিল।
‘আজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মাঠটি ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ায় ঢাকার জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই। পাশাপাশি যেসব শিক্ষার্থী এই উদ্যোগ নিয়েছে তাদেরও ধন্যবাদ জানাই। আমরা দ্রুত এখানে একটি টুর্নামেন্টের আয়োজন করব।’
প্রসঙ্গত, গত ২০২১ সালের জুনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে মার্কেট নির্মাণের শঙ্কায় ডিএসসিসিকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সিটি মেয়রের সঙ্গে দেখা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে কোনো স্থাপনা নির্মাণ না করার আশ্বাস দেয়া হয়। সে সময় খেলার মাঠ থেকে খুঁটি সরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু ২ অক্টোবর গভীর রাতে আবার পুরো মাঠ ঘিরে রাখা হয়। মাঠের গোলপোস্ট ও সীমানা প্রাচীরগুলো তুলে ফেলে সিটি করপোরেশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর ধূপখোলা মাঠটি আধুনিকায়ন করে উদ্বোধন করেন ফজলে নূর তাপস।
১৯৮৪ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার নিজস্ব কোনো মাঠ না থাকায় ধূপখোলা খেলার মাঠটি তিন ভাগ করেন। এক ভাগ তৎকালীন সরকারি জগন্নাথ কলেজকে ব্যবহারের জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দেয়া হয়। তখন থেকেই প্রতিষ্ঠানটির খেলার মাঠ হিসেবে ধূপখোলা মাঠটি ব্যবহার করছে। এই মাঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সোমবার প্যারিস অলিম্পিকসে অংশ নিয়েছেন মিসরের ফেন্সার নাদা হাফেজ। নিজের ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
হাফেজ জানিয়েছেন, ‘আপনার কাছে মনে হতে পারে যে পোডিয়ামে দুজন খেলোয়াড় ছিল। বাস্তবে সেখানে ছিল তিনজন! সেখানে ছিলাম আমি, আমার প্রতিযোগী এবং অনাগত আমার ছোট্ট শিশু!’
কায়রো থেকে আসা নিজের তৃতীয় অলিম্পিকে অংশ নেয়া নাদা হাফেজ বলেন, ‘গর্ব আমার সত্ত্বাকে ভরিয়ে দেয়।’
২৬ বছর বয়সী এই অ্যাথলিট নারীদের ফেন্সিংয়ের সেইবার ইভেন্টে প্রথম ম্যাচ জিতলেও শেষ ষোলোতে হেরে ছিটকে যান।
নাদা ১৫-১৩ ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের এলিজাবেথ টারতাকোভস্কিকে পরাজিত করেন এবং ফ্রান্সের রাজধানীর গ্র্যান্ড প্যালেসে সাউথ কোরিয়ার জিওন হাইয়ংয়ের কাছে ১৫-৭ ব্যবধানে পরাজিত হন।
তিনি বলেন, ‘আমার বাচ্চা এবং আমি শারীরিক ও মানসিক উভয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি।
‘আমি ভাগ্যবান যে আমার স্বামী ইব্রাহিম ইহাব ও আমার পরিবার আমাকে বিশ্বাস করেছে। তাই আমি এতদূর আসতে পেরেছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য