ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবিন্দ্র খেললেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। বিস্ফোরক ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়ে দুজনই পেলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা। এ দুই কীর্তিমান সেঞ্চুরিয়ানের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ের সুবাদে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে হারাল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে।
দুর্দান্ত এক জয় দিয়ে বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করল কিউইরা। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান করে ইংলিশরা। জবাবে এক উইকেট হারিয়ে ৮২ বল হাতে রেখেই কাঙ্ক্ষিত জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে শুক্রবার পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে নেদারল্যান্ডস। বেলা আড়াইটায় এ ম্যাচের ধারাবিবরণী সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ বেতার।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এমন সহজ জয় পাবে নিউজিল্যান্ড, সেটি হয়তো ভাবেনি কেউই। অকল্পনীয় ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন কনওয়ে ও রাচিন। ইংলিশ বোলারদের তুলাধোনো করে মাটিতেই যেন নামিয়ে দিলেন এই দুই ব্যাটার।
গত বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের সঙ্গে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমিয়ে তুলেছিল কিউইরা। ফাইনাল ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে গিয়ে গড়ায়। সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ডকে হতাশ করে শিরোপা জয়ের উৎসব করে ইংলিশরা।
চার বছর পর আবার বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হয় দল দুটি। গত বিশ্বকাপের ফাইনালে হারার প্রতিশোধ নেয় নিউজিল্যান্ড। উপভোগ্য ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে জয় তুলে নেয় তারা।
এ জয়ের দুই নায়ক হলেন কনওয়ে ও রাচিন। এই দুই ব্যাটার রেকর্ডের পাতা ওলট-পালট করে দিয়েছেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে নিউজিল্যান্ডের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার নতুন রেকর্ড গড়লেন রাচিন। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দেশের পক্ষে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরি পূর্ণ করার রেকর্ডও করে নিলেন এ ব্যাটিং অলরাউন্ডার। মাত্র ২৩ বছর ৩২১ দিনে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন তিনি।
রাচিন ভেঙে দিয়েছেন নাথান অ্যাস্টলের রেকর্ড। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে ২৪ বছর ১৫২ দিন বয়সে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন নাথান। তিনি সেঞ্চুরি করে আউট হলেও রাচিন ১২৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ৯৬ বলে চার-ছক্কার বৃষ্টি ছড়িয়ে অনবদ্য এ ইনিংস খেলেন তিনি। অন্যদিকে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কনওয়ে চলতি বছর ওয়ানডেতে চতুর্থ সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখান। ১২১ বলে ১৫২ রানের ইনিংস উপহার দেন তিনি।
কনওয়ে ও রাচিন মিলে ২৭৩ রানের লম্বা জুটি গড়েন। এ জুটিও রেকর্ড গড়েছে। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্বিতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়েছেন তারা। এর আগে দ্বিতীয় উইকেটে গাপটিল ও উইল ইয়ং ২০৩ রানের জুটি গড়েছিলেন।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই অনেক রেকর্ড গড়ে বিশ্ব চাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দেয় নিউজিল্যান্ড। কনওয়ে ও রাচিন মিলে যে ব্যাটিংয়ে তাণ্ডব চালালেন, এতে বিশ্বকাপের শুরুতেই বড় বার্তা দিলেন কিউইরা। তিন শর কাছাকাছি রানের লক্ষ্য মামুলি বানিয়ে যে জয় নিয়েছেন তারা, সামনের ম্যাচগুলোয় তা আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে।
২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই এক উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এরপর আর উইকেট হারাতে হয়নি তাদের। কনওয়ে ও রাচিন মিলে দলকে সহজ জয় এনে দেন।
এর আগে জো রুটের হাফ সেঞ্চুরি ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে তিন শর কাছাকাছি রান করে ইংল্যান্ড। রুট সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন।
ভারতের আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন নিউজিল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম ল্যাথাম। পেসার ট্রেন্ট বোল্টের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের প্রথম বলে কোনো রান নিতে না পারলেও পরের ডেলিভারিতে লং লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকান ইংল্যান্ডের ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। ওভারে আরও একটি চারে দলকে ১২ রান এনে দেন তিনি।
প্রথম ওভারে ১২ রান এলেও পরের দিকে রান তোলার গতি কমে যায় ইংল্যান্ডের। সাত ওভার শেষে ৩৯ রান পায় ইংলিশরা। অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে আরেক ওপেনার ডেভিড মালানকে ১৪ রানে শিকার করে নিউজিল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার ম্যাট হেনরি।
ভালো শুরুর পরও বেশি দূর যেতে পারেননি বেয়ারস্টোও। ১৩তম ওভারে স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের বলে আউট হওয়ার আগে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৫ বলে ৩৩ রান করেন বেয়ারস্টো।
ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে খেলতে না পারা বেন স্টোকসের জায়গায় ইংল্যান্ড একাদশে সুযোগ পেয়ে মারমুখী মেজাজে ইনিংস শুরু করেন হ্যারি ব্রুক।
১৭তম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে আসা নিউজিল্যান্ড স্পিনার রাচিন রবিন্দ্রর করা তৃতীয় ও চতুর্থ বলে বাউন্ডারি এবং পঞ্চম বলে ছক্কা মারেন ব্রুক, তবে ওভারের শেষ বলে ডেভন কনওয়েকে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে চারটি চার ও একটি ছক্কায় ১৬ বলে ২৫ রান করেন ব্রুক।
ব্রুকের বিদায়ে উইকেটে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মইন আলি। ওকেশনাল অফ স্পিনার গ্লেন ফিলিপসের বলে বোল্ড হন ১৭ বলে ১১ রান করা মইন। এতে ১১৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।
বড় জুটির লক্ষ্যে পঞ্চম উইকেটে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন জো রুট ও অধিনায়ক জস বাটলার। তাদের হাফ সেঞ্চুরির জুটিতে দুই শর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।
৩৪তম ওভারে বাটলারকে ৪৩ রানে থামিয়ে নিউজিল্যান্ডকে ব্রেকথ্রু এনে দেন হেনরি। ৪২ বলের ইনিংসে দুটি করে চার-ছক্কা হাঁকান বাটলার। জুটিতে ৭২ বলে ৭০ রান যোগ করেন রুট-বাটলার। এ জুটিতেই ৫৭ বল খেলে ওয়ানডেতে ৩৭তম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান রুট।
বাটলারের বিদায়ের পর লিয়াম লিভিংস্টোনকে নিয়ে আবারও জুটি গড়ার চেষ্টা করেন রুট, কিন্তু সেটি বড় হতে দেননি বোল্ট। লং অফে হেনরিকে ক্যাচ দিয়ে ২০ রানে থামেন লিভিংস্টোন। জুটিতে ৩৩ বলে ৩৩ রান যোগ করেন লিভিংস্টোন-রুট।
হাফ সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করার চেষ্টারত রুট ৪২তম ওভারে ফিলিপসের ডেলিভারিতে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন, তবে আউট হওয়ার আগে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৮৬ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন রুট।
দলীয় ২২৯ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে রুট ফেরার পর লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের কাছ থেকে ৫৩ রান পায় ইংল্যান্ড। শেষ উইকেটে ২৬ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩০ রান তোলেন আদিল রশিদ ও মার্ক উড। এতে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৮২ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড।
লোয়ার অর্ডারে স্যাম কারান ১৪, ক্রিস ওকস ১১, আদিল রশিদ অপরাজিত ১৫ এবং মার্ক উড অনবদ্য ১৩ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের হেনরি ৪৮ রানে তিনটি, স্যান্টনার ৩৭ রানে ও ফিলিপস ১৭ রানে দুটি করে উইকেট নেন। ম্যাচসেরার পুরস্কার পান রাচিন রবিন্দ্র।
আরও পড়ুন:শ্রীলঙ্কার মাটিতে এনামুল হক বিজয়ের ব্যাট থেকে রান আসছেই না। গল টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও শূন্য রানে ফিরেছেন তিনি। আসিথা ফার্নান্ডোর বাউন্সার বলটিকে ব্যাটের ভেতরের ধার লাগিয়ে স্টাম্পে পাঠান এনামুল, যা যেন তার চলমান দুর্দশারই প্রতীক।
মজার বিষয় হলো, এই আউট হওয়ার আগে দুইবার জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ফার্নান্ডোরই একটি বল স্লিপে ক্যাচ তুলে দিলেও উইকেটকিপার তা হাতছাড়া করেন। পরের বলেও একই অঞ্চলে ক্যাচের সুযোগ তৈরি হয়, কিন্তু বলটি নিচু হওয়ায় ফিল্ডাররা ধরতে ব্যর্থ হন।
এনামুলের এই সফরটা যেন ভাগ্যের সাথে লুকোচুরির খেলা। গল টেস্টের প্রথম ইনিংসে শূন্য, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ রানের পর এবার আবার শূন্য। ক্রিজে দাঁড়ালেই কীভাবে যেন রান না পাওয়ার অভিশাপ তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। ব্যাট হাতে আত্মবিশ্বাসের অভাব স্পষ্ট, প্রতিটি বলই যেন তার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
এমন সময়ে প্রশ্ন উঠছে, দলের ওপেনিং জুটিতে এনামুলের স্থান কতটা যৌক্তিক? নাকি দ্রুত কোনো বিকল্প খুঁজে বের করার সময় এসেছে? শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরের ইনিংসটিই হয়তো তার জন্য শেষ সুযোগ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বছর তিনেক হলো জাতীয় দলের বাইরে অলরাউন্ডার রুমানা আক্তার। মাঝখানে একবার ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছেন ‘আর নয় ক্রিকেট’। সেই ফেসবুক পোস্টেই এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে গুরুতর অভিযোগ তুললেন রুমানা আহমেদ। রুমানার দাবি, তার সঙ্গে অন্যায়-অবিচার হয়েছে। এবং তিনি সেটার বিচার চাইলেন ক্রিকেট বোর্ডের কাছে।
গতকাল নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে রুমানা পোস্ট দিয়েছেন বিসিবির কাছে খোলা চিঠির মতো করে। তিনি লিখেছেন, ‘বিসিবির সম্মানিত অভিভাবকদের বলছি। আমি খেলি কিংবা না খেলি, এমন অনৈতিক-নৈরাজ্যমূলক ঘটনা চলতে পারে না। দয়া করে আমাকে চূড়ান্ত সমাধান দিন। কোনো কারণ ছাড়াই তিন বছর তো কোনো কৌতুকের কিছু না। আমি কখনোই বাজে ক্রিকেট খেলিনি। অনৈতিক কাজও করিনি। জ্যেষ্ঠতা কখনোই অভিশাপ হতে পারে না। যারা আমার উজ্জ্বল ক্রিকেট ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছে, তার বিচার চাই।’
২০২৩ সালের আগস্টে সামাজিক মাধ্যমে হঠাৎই রুমানা পোস্ট দিয়েছিলেন, ‘আর ক্রিকেট নয়।’ সেই পোস্টের আগে বাংলাদেশ যে শ্রীলঙ্কা-ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছিল, কোনোটিতেই তিনি ছিলেন না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দল ঘোষণার পর বিসিবি জানিয়েছিল, তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল।
বিসিবির এই দাবির বিপক্ষে পাল্টা দাবি করেছিলেন বাংলাদেশ দলের এই লেগস্পিনিং অলরাউন্ডার। সে সময় রুমানা বলেছিলেন- বিশ্রাম নয়, তাকে বাদই দেওয়া হয়েছিল। টিম ম্যানেজমেন্টের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সংবাদমাধ্যমে এমন মন্তব্য করায় রুমানাকে তলবও করেছিল বোর্ড।
দুই বছর আগে ‘নো মোর ক্রিকেট’ পোস্ট নিয়ে বিসিবি তখন বিব্রত হয়েছিল। নারী বিভাগের তৎকালীন প্রধান শফিউল আলম নাদেল সে সময় বলেছিলেন, ‘আমরা সব সময় আমাদের ক্রিকেটারদের প্রতি সদয় বা সৎ। ওকে এটা শুধু মনে করিয়ে দিলাম, সেতো চাইলে বোর্ড- আমাদের বিভাগ থেকে শুরু করে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), বোর্ড সভাপতি; সবার সঙ্গেই তো কথা বলার সুযোগ আছে। এটা সে না করলেও পারত।’
৩৩ বছর বয়সী রুমানা ২০১১ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন ৫০ ও ৮৭ ম্যাচ। দুই সংস্করণেই ৮০০-এর বেশি রান করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার উইকেট ১২৫।
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর।
তিনি বলেন, ‘তবে তার স্বাভাবিক কাজকর্মে—অর্থাৎ খেলাধুলায়—ফিরতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে।’
সাভারের কেপিজি হাসপাতালে মঙ্গলবার দুপুরে তামিমকে দেখে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য দিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে এ চিকিৎসক বলেন, ‘তামিম ইকবালকে নরমাল কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য অন্তত তিন মাস সময় দিতে হবে। মানে খেলাধুলায়। এ ছাড়া তিনি বাসায় স্বাভাবিক কাজকর্ম ও হাঁটাচলা করবেন সপ্তাহখানেক। তাকে বিশ্রামেই থাকতে হবে। যদিও সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সব রোগ সবসময় ধরা পড়ে না।
‘প্রথমিক ইসিজিতে কোনো চেঞ্জ আসেনি। আজ সকালে ইকো (ইকোকার্ডিওগ্রাম) করা হয়েছে। সবকিছুই ভালো। কিন্তু তারপরও যেকোনো সময় যেকোনো জিনিস ঘটে যেতে পারে। এ বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তার পরিবারের সাথে আলাপ করেছি। এখন তাদের সিদ্ধান্ত আমাদের সিদ্ধান্ত।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সম্পদ তামিম ইকবালের শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করেন গতকাল সাড়ে ১০টায়। তিনি এখানে আসার পর ডাক্তাররা তাকে কার্ডিয়াক প্রবলেম হিসেবে সন্দেহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে কিছু চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। তাকে এখন মুভ (নিয়ে যাওয়া) করানো ঠিক হবে না বলেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
‘তিনি একজন জাতীয় সেলিব্রেটি। নিজের অবস্থান বিবেচনা করে তিনি তাড়াতাড়ি ঢাকায় শিফট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারের ব্যবস্থাও হয়েছিল। আমাদের এখানকার দুজন ও ওখানকার দুজন মিলে চারজন চিকিৎসক মিলে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তখন তার হার্ট অ্যাটাক হয়, তার নাড়ির স্পন্দন পাওয়া যায়নি। তারপর ডাক্তারররা সিপিআর দিয়েছেন। হার্ট বন্ধ হয়ে গেলে চালু করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।’
অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় আমাদের জাতীয় দলের ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল এখন সুস্থ। তার সার্বিক অবস্থা আশাব্যঞ্জক। কিন্তু কখনও কখনও যে প্রাইমারি পিসিআই হয়েছে, এটা একটা ফরেন বডি, এটা রিঅ্যাকশন হতে পারে, হার্ট নানাভাবে এটার ওপর অ্যাকশন ও রিঅ্যাকশন হতে পারে।
‘রে রিংটা লাগানো হয়েছে, সেটা সামায়িকভাবে, কোনোভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই ঝুঁকি রয়েছে। যদিও সেই পরিসংখ্যান খুবই কম।’
তিনি বলেন, ‘তার পরিবারের সদস্যদের সেটা বলেছি। চিকিৎসক যারা ছিলেন, ডা. মারুফ, তাদের পরিশ্রমে, আল্লাহর বিশেষ রহমতে তাকে আমরা একটি নবজীবন দিতে পেরেছি। সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা যেখানে সম্ভব, সেখানে মানুষ যেতে চাইবে। কিন্তু তার যাওয়াটা কতটা নিরাপদ, সে বিষয়ে আমরা তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করেছি। তার এই মুহূর্তে শিফট করায় ঝুঁকি আছে।’
এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘ঝুঁকিটা কম, এক শতাংশ। যদি ঘটে যায়, তখন ঝুঁকিটা শতভাগ। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা তার এখানে থাকা উচিত। তার পর তিনি অন্য কোথাও যেতে পারবেন।’
আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘তামিমের যেটা হয়েছিল, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে সেটা কিন্তু হয়। আমরা দেখেছি, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাক হলে ১০ থেকে ২০ শতাংশ রোগী কখনও হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন না। তার হার্ট অ্যারেস্ট হয়। এখানেও তাই হয়েছে। কিন্তু তার সাথে চিকিৎসকরা ছিলেন, সাথে সাথে কার্ডিয়াক ম্যাসেজ শুরু হয়েছিল। হার্ট নিজে পাম্প করছে না, জোর করে কিছুটা পাম্প করিয়ে রাখা হয়েছিল। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
‘তার বন্ধ আর্টারি খুলে দেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, অ্যাকিউট এপিসোডটা গেছে। ৩২ মিনিটের মতো তাকে কার্ডিয়াক প্লেসে দিতে হয়েছে। সেখান থেকে উঠে আসার সৌভাগ্য সবার হয় না। যথাসময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পাওয়ার কারণেই তামিমকে আমরা ফিরে পেয়েছি। কতটা ফেরত পেয়েছি, আজ সকালবেলায় ইকোকার্ডিয়াক করে হার্টের ফাংশন দেখা হচ্ছিল, দেখে মনে হয়, কোনো সমস্যা নেই, একেবারে তরতাজা। মনে রাখতে হবে, এটিই একটি ছদ্মবেশ। হার্ট আবার অ্যাবনরমাল হতে পারে। তবে শঙ্কা অবশ্যই কমে গেছে।’
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘তবে ওটা হয়েছিল, কারণ একটা বড় আর্টারি বন্ধ ছিল। খাবার নেই, অক্সিজেন নেই, ওই টিস্যুটা ইরিটেটেড, সে জন্যই এটা হয়েছিল। এখন সেটা খুলে গেছে। স্লাইট শঙ্কা আছে। সে জন্য আমরা তাকে বলেছি, ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত একটি ক্রিটিক্যাল টাইম, যাতে আর কোনো প্রবলেম না হয়।
‘কথাবার্তা একটু কম বলা উচিত, বিশ্রামে থাকা উচিত। এখানে থেকে স্থিতিশীল হয়ে আরও ভালো কোনো জায়গায় যদি যেতে চান, তাহলে যেতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের হৃৎপিণ্ডে রিং পরানো হয়েছে।
বর্তমানে তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে।
ইউএনবিকে সোমবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘তাকে রিং পরানো হয়েছে নিশ্চিত। প্রথমে মাঠে খেলার সময় তার বুকে ব্যথা ওঠে। আমরা তাকে হাসপাতালে পাঠাই। তাকে যখন হেলিকপ্টারে তোলা হচ্ছিল, তখন আবার বুকে ব্যথা শুরু হয়।
‘হঠাৎ করেই তার বুকে ব্যথা ওঠে। এরপর আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকসহ তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসা বিভাগের প্রধান দেবাশীষ চৌধুরী সাংবাদমাধ্যমকে জানান, তামিমের দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তামিম। অধিনায়ক হিসেবে টসেও অংশ নেন।
এরপর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করায় তামিমকে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিকেএসপির পাশে সাভারের ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে। এ মুহূর্তে তিনি সেখানেই ভর্তি।
তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবির বোর্ড সভা স্থগিত করা হয়। দুপুর ১২টায় ১৯তম বোর্ড সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
এ ক্রিকেটারকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:চেক ডিজঅনার মামলায় ক্রিকেটার ও মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সাকিব আল হাসানের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান বাদীপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার এ আদেশ দেন।
আদালতের পেশকার রিপন মিয়া বাসসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে আইএফআইসি ব্যাংকের পক্ষে শাহিবুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
চেক ডিজঅনার মামলায় সাকিব আল হাসানসহ চারজনকে আসামি করা হয়। অপর তিনজন হলেন সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের এমডি গাজী শাহাগীর হোসাইন এবং প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইমদাদুল হক ও মালাইকা বেগম।
আদালত ১৫ ডিসেম্বর বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ১৯ জানুয়ারি তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১৯ জানুয়ারি সাকিবের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তিনি পরে এ মামলায় জামিন নেন।
আজ গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। বাদীপক্ষ সাকিবের সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, সাকিবের মালিকানাধীন অ্যাগ্রো ফার্ম ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময় আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে ঋণ গ্রহণ করে। তার বিপরীতে দুটি চেক ইস্যু করে সাকিবের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি। এরপর চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়। দুই চেকে টাকার পরিমাণ প্রায় চার কোটি ১৫ লাখ।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তামিম ইকবাল।
তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ইউএনবিকে সোমবার দুপুরে এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাকে বিকেএসপির পাশে ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিকেএসপি থেকে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক সবকিছুসহ তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। আমাদের কর্মকর্তা ও ক্রিকেটের প্রশিক্ষকরা ওখানে আছেন।
‘ঢাকা থেকেও টিম আসছে। আমাদের কর্মকর্তা-চিকিৎসক সেখানে আছে। বিকেএসপির মাঠে হেলিকপ্টার অপেক্ষা করছে। দেখি কী করা যায়।’
টাইগারদের সাবেক এ ক্যাপ্টেনের শরীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে জানিয়ে মুনীরুল ইসলাম বলেন, ‘সম্ভবত একটা এনজিওগ্রাম হয়েছে। এরপর তিনি স্থিতিশীল আছেন।’
মোহামেডান ক্লাবের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘তামিম ইকবাল বর্তমানে চিকিৎসাধীন। আমরা সবাই তার সুস্থতা কামনা করছি।’
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তামিম। অধিনায়ক হিসেবে টসেও অংশ নেন।
এরপর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করায় তামিমকে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিকেএসপির পাশে সাভারের ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে। তিনি সেখানে ভর্তি রয়েছেন।
তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবির বোর্ড সভা স্থগিত করা হয়েছে। দুপুর ১২টায় ১৯তম বোর্ড সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।
তামিমকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এর স্থায়ী ক্যাম্পাসে রবিবার সফলভাবে আন্তবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ টুর্নামেন্টে সিইউবির বিভিন্ন বিভাগের প্রতিযোগী দলগুলো অংশগ্রহণ করে। ব্যতিক্রমী ক্রিকেটিং দক্ষতা ও দলগত কাজ খেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলে।
গ্র্যান্ড ফিনালের আয়োজনে ব্ল্যাকআউটস এবং সিইউবি অলস্টারদের মধ্যে দুর্দান্ত ম্যাচ হয়।
সিইউবি ব্ল্যাকআউটস দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা অর্জন করে। সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাফিন।
খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ ও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী জাফরুল্লাহ শারাফাত, এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান জাবেদ হোসেন, উপাচার্য প্রফেসর ড. এইচ এম জহিরুল হক এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. গিয়াস উ আহসান।
সিইউবি স্পোর্টস ক্লাব আয়োজিত ইভেন্টটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য