বেশি দিন আগের কথা নয়। জাতীয় দলের ওয়ানডে অধিনায়ক ছিলেন অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল। ধারণা করা হচ্ছিল, তার নেতৃত্বেই বিশ্বকাপে খেলবে বাংলাদেশ, তবে কী থেকে যেন কী হয়ে গেল! তামিমকে ছাড়াই ঘোষণা করা হলো ১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ দল।
গত মঙ্গলবার বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বিশ্বকাপ খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট নন তামিম, যে কারণে তাকে বাদ দিয়েই স্কোয়াড ঘোষণা করেন নির্বাচকরা।
এ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও গতকাল সকালে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা স্ট্যাটাসে তামিম জানান, একটি ভিডিওবার্তার মাধ্যমে বিগত কয়েক দিনের ঘটনার ব্যাপারে কিছু কথা বলবেন। আর তামিম কথাগুলো বলবেন বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে খেলতে ভারতের উদ্দেশে উড়াল দেয়ার পর।
গতকাল বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ভারতের উদ্দেশে উড়াল দেয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল। এর ঘণ্টাখানেক পর নিজের ফেসবুক পেজে একটি ১২ মিনিটের ভিডিওবার্তা দেন তামিম, যেখানে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা, তার না থাকা ইত্যাদি বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে হালকা চোট অনুভব করেছিলেন তামিম ইকবাল। তখন সে বিষয়টি টিম ম্যানেজমেন্টকে জানান এ ওপেনার। তিনি শুধুই চোটের কথা মাথায় রাখতে বলেছিলেন। অথচ টিম ম্যানেজমেন্ট সেটাকে ইস্যু বানিয়েছে, এমন অভিযোগ তার।
ভিডিওবার্তার শুরুতে তামিম বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। গলায় ইনফেকশন হয়েছে, সো ক্লিয়ারলি বলতে পারছি না। স্ট্যাটাস দেখেই বুঝতে পেরেছেন, শেষ কয়েক দিনে যা যা লেখা হয়েছে, আর আসলে যা ঘটেছে কমপ্লিটলি ডিফারেন্ট। যা যা ঘটেছে, পুরো জিনিসটাই স্টেপ বাই স্টেপ জানাই। কারণ এটি আমার যারা ফ্যান এবং বাংলাদেশের ক্রিকেট লাভার তাদের জানা উচিত।’
এরপর তামিম আরও বলেন, ‘বেসিক্যালি সবাই জানেন, আমি অবসরে যাই, অবসরে যাওয়ার কারণ ছিল। এরপর প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে ফিরে আসি। এরপর যে দুই মাস আমি প্রচণ্ড পরিমাণ কষ্ট করি নিজেকে ফিট করার জন্য। আমি নিশ্চিত, যারা সম্পৃক্ত ছিল, ফিজিও থেকে শুরু করে, আমি নিশ্চিত সবাই একমত হবেন, এমন কোনো সেশন বা এক্সারসাইজ নেই, যেটি তারা চেয়েছেন কিন্তু আমি করি নাই।
‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর মানসিকভাবে আমি খুব খুশি ছিলাম। গত চার-পাঁচ ম্যাচের যত বিষয়, সব ভুলে গিয়েছিলাম। ম্যাচ শেষে আমার ইনজুরির অবস্থা ফিজিওকে জানাই। তখন ড্রেসিংরুমে নির্বাচকরা আসেন। আমি তাদের বলেছিলাম, আমার অবস্থা সামনে এমনই থাকবে। আমাকে দলে রাখলে বিষয়টি মাথায় রাখবেন। হোটেলে যাওয়ার পর আমাকে ফিজিও পর্যবেক্ষণ করেন। ফিজিওর রিপোর্টে ছিল প্রথম ম্যাচের পরে আমার ব্যথার অবস্থা কী, দ্বিতীয় ম্যাচের পর কী হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ২৬ তারিখের (নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচ) ম্যাচের দিন অবস্থা কেমন হতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী, খেলার জন্য আমি ফিট, কোনো সমস্যা নেই, তবে আমাকে বলা হয়েছিল আমি রেস্ট নিতেও পারি।’
কিউইদের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে রেস্ট নেয়ার বিষয়ে দেশসেরা ওপেনার বলেন, ‘শেষ ম্যাচটায় রেস্ট নিলে সে ক্ষেত্রে আমার প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য রিহ্যাব হয়ে যেত এবং বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচও আমি খেলতে পারব, এমনটা ছিল রিপোর্টে। আমি কোথাও বলিনি যে, পাঁচটা ম্যাচ খেলব বা পাঁচ ম্যাচ খেলতে পারব। এটা মিথ্যা। জানি না কীভাবে এটি মিডিয়াতে ছড়ানো হয়েছে। শুধু তিন নির্বাচককে জানিয়েছিলাম আমি পুরোপুরি ফিট না, দল ঘোষণার সময় যেন তারা এটি মাথায় রাখেন।
‘আমি নিশ্চিত কালকে নান্নু ভাইও কথাটা ক্লিয়ার করেছেন। আমি জানি না এ কথাটা মিডিয়াকে খাওয়ানো হলো কীভাবে বা কে করেছে এটি, কিন্তু এ জিনিস একদমই মিথ্যা। যে জিনিস আমি নির্বাচকদের বলেছিলাম যে, আমার শরীর এ রকমই থাকবে। এখন যে রকম অবস্থায় আছে, আমার ব্যথা থাকবে। আপনারা যখন দলটা নির্বাচন করবেন, তখন এটা মাথায় রাখবেন।’
বিসিবির পক্ষ থেকে মিডল অর্ডারে খেলার প্রস্তাবও দেয়া হয় জানিয়ে তামিম বলেন, “বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করে আমাকে বললেন, ‘তুমি বিশ্বকাপে যাবা, কিন্তু তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাতে হবে। একটা কাজ করো, তুমি প্রথম ম্যাচ খেলিও না।’ আমি বলেছি, ‘এখনও ১২/১৩ দিন সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে তো আমি ভালো অবস্থায় থাকব। তো কী কারণে খেলব না?’ তখন বলল, ‘আচ্ছা তুমি যদি খেলো তাহলে আমরা পরিকল্পনা করছি, তুমি নিচের দিকে খেলবা।’”
তিনি বলেন, “তাদের প্রস্তাব শুনে আমি তো অবাক। জিজ্ঞেস করলাম এটা কোন ধরনের কথা। এরপর বলা হলো মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করানোর কথা। অথচ আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে খেলে আসছি। আমাকে জোর করে করে অনেক জায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে, ইচ্ছে করে। তখন আমি বললাম, ‘দেখেন, আপনারা একটা কাজ করেন, যদি আপনাদের এমন চিন্তাধারা থাকে, তাহলে আপনারা আমাকে পাঠায়েন না। আমি এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। প্রতিদিন আপনারা আমাকে একেকটা নতুন জিনিস ফেস করাবেন, আমি এই জিনিসগুলোয় থাকতে চাই না।’ তারপরও ফোনে উনার সঙ্গে আমার অনেক কথাবার্তা হয়। সেগুলো এই প্ল্যাটফর্মে না বলাই ভালো।
“এটা আমার আর উনার মধ্যেই থাক। তারপরও বলেছি, যদি এগুলো হয় আমাকে রাখিয়েন না। আমি এই নোংরামোর মধ্যে থাকতে পারব না। সো ওভারঅল আমি ব্যক্তিগতভাবে যে জিনিসটা ফিল করেছি, মিডিয়াকে আই ডোন্ট নো আমি ঠিক বলছি কি বলছি না। কারণ আমাদের অনেকেরই অভ্যাস আছে বড় একটা জিনিসকে ঢাকার জন্য আরেকটা জিনিস ঠিক করা। সে পাঁচ ম্যাচ খেলবে তাকে ক্যামনে সিলেক্ট করব। অ্যাজ আই সেইড ইট ওয়াজ ফলস। এমন কোনো কথাই হয়নি। আমি নিশ্চিত সেদিন টিম সিলেক্টর ছিল, ফিজিও ছিল, ট্রেনার ছিল- সবাই ছিল। কী বলেছি সেটা আপনাদের সঙ্গেও ক্লিয়ার করেছি। বাট ওভারঅল আমার কাছে মনে হয়, ইফ ইউ রিয়েলি ওয়ান্ট মি টু মেক মি মেন্টালি ফ্রি অ্যান্ড হ্যাপি। বিকজ আই অ্যাম কামিং আউট অব অ্যা ভেরি ব্যাড থ্রি-ফোর মান্থস। আমার জন্য খুব কঠিন ছিল তিন-চার মাস।”
সবশেষে তামিম বলেন, ‘আমি উইশ করব যে ১৫ জন বিশ্বকাপে গিয়েছে, তারা যতটুকু সম্ভব বাংলাদেশের জন্য সাকসেস নিয়ে আসবে। আরও অনেক কিছুই ঘটেছে এটা আপনারা দেখেছেন আমি নিশ্চিত। একটা কাহিনি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে, দুটো কাহিনি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, কিন্তু একজনের সঙ্গে তিন-চার মাসে যদি সাত-আটটা কাহিনি হয়, তাহলে সেটা ইচ্ছাকৃত হয়। আর একটা কথা, আমাকে সবাই মনে রাখিয়েন। ভুলে যাইয়েন না।’
আরও পড়ুন:ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পরিসংখ্যানটা যেমন রংধনুর মতো রঙিন, ঠিক তার বিপরীত চিত্র ক্রিকেটের বনেদি ফরম্যাটে। বড় দলের বিপক্ষে সাদা পোশাকে টাইগারদের পারফরম্যান্সটা বিবর্ণ-ধূসর। অবস্থাটা এমন দাঁড়ায় মাঝেমধ্যে যে, পাঁচ দিন টিকে থাকাই যেখানে দুষ্কর, সেখানে জয়ের আশা করাটা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়।
এমন হতশ্রী অবস্থা যে দলের, তারা যদি নিউজিল্যান্ডের মতো দলকে হারিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র শুরু করে, তবে সেটি যে অনন্য এক মাইলফলক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ব্ল্যাকক্যাপদের বিপক্ষে প্রথমবার বনেদি ফরম্যাটের লড়াইয়ে বাংলাদেশ নেমেছিল ২০০১ সালে; ১৫ টেস্ট পর ২০২০ সালে এসে মাউন্ট মঙ্গাইনুতে। ঐতিহাসিক সেই জয়ের মাধ্যমে অবসান ঘটেছিল টাইগারদের দুই দশকের আক্ষেপের।
ইতিহাস গড়া সেই জয়ের পর টাইগারদের চোখ ছিল ঘরের মাঠে কিউই বধের। সেটিরও পালা চুকেছে ২০২৩ সালের শেষ দিকে এসে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে দলপতি নাজমুল হাসান শান্ত, সতীর্থ মাহমুদুল হাসান জয়, মুশফিকুর রহিমের অনবদ্য ব্যাটিং আর তাইজুলের স্পিনবিষে নীল হতে হয়েছে সফরকারীদের। ১৫০ রানের জয় বাগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি স্বাগতিকরা পেয়েছে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো কিউই বধের স্বাদ।
এক বছরের ব্যবধানে দুটি ঐতিহাসিক জয় বাগিয়ে নিলেও পরিসংখ্যানের দিক থেকে বাংলাদেশ যোজন যোজন পিছিয়ে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে। এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা ১৮ টেস্টের মধ্যে শুধু দুটিতে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ।
১৩ হারের বিপরীতে বাংলাদেশের বড় অর্জন তিন ড্র। দুর্দান্ত এ জয়ে চলতি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।
পয়েন্ট টেবিলে এখন পর্যন্ত দুই ম্যাচের দুটিতেই জয় বাগিয়ে নেয়া পাকিস্তান শীর্ষস্থানে রয়েছে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে। কিউই বধে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তারপরই অবস্থান টাইগারদের। ভারত দুই ম্যাচে একটি করে জয় ও ড্র নিয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে তিনে। অস্ট্রেলিয়া চারে রয়েছে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে।
টেবিলের পাঁচে অবস্থান করছে ইংল্যান্ড। পাঁচ ম্যাচে দুটি দুই জয় পাওয়ায় তাদের পয়েন্ট ৯। একটি করে ড্র ও হার নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভাগে চার পয়েন্ট। শ্রীলঙ্কা দুই ম্যাচ ও কিউইরা এক ম্যাচ খেলে জয় না পাওয়ায় এখনও খুলতে পারেনি পয়েন্টের খাতা।
সিলেটের উইকেটে প্রথম ইনিংসে এক ধরনের সংগ্রাম করেই ব্যাটিং করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসে টাইগারদের ৩১০ রানের পুঁজি পাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিল মাহমুদুল হাসান জয়ের ৮৬ রানের অনবদ্য ইনিংস।
এরপর বল হাতে তাইজুল কিউইদের টুঁটি চেপে ধরলেও কেইন উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরির সুবাদে ৭ রানের লিড নিয়ে প্রথম ইনিংস শেষ করে সফরকারীরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক শান্তর ১০৫, মুশফিকের ৬৭, মেহেদী হাসান মিরাজের ৫০ রানে ভর করে ৩৩৮ রানের পুঁজি দাঁড় করায় স্বাগতিকরা। আর সেই সুবাদে কিউইদের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ৩৩১ রানের।
সিলেটের উইকেট সে সময়টাতে পুরোপুরি রূপ নিয়েছে ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে, কিন্তু টাইগারদের পারফরম্যান্সের মতোই রহস্যময় হয়ে উঠেছিল সেই উইকেট। ভানুমতির খেল দেখিয়ে সেটি চলে যায় বাংলাদেশের পক্ষে।
ইতিহাস গড়ার মঞ্চটা বাংলাদেশ সাজিয়ে রেখেছিল চতুর্থ দিনেই। শেষ দিনে এসে অপেক্ষা ছিল কেবল নিউজিল্যান্ডের তিন ব্যাটারকে মাঠছাড়া করার। আর সেই অপেক্ষার অবসানে লাগেনি বেশি সময়।
এক তাইজুলের স্পিনবিষে নীল হয়ে মাত্র ১৮১ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। আর তাতেই বাংলাদেশ লাভ করে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এই জয়ের স্বাদ।
কিউই বধের দিনে তাইজুল দ্বিতীয়বারের মতো ঝুলিতে পুরেছেন ১০ উইকেট। এর আগে ২০১৮ সালে এ সিলেটের মাটিতেই প্রথমবারের মতো এক টেস্টে ১০ উইকেট ঝুলিতে ভরার স্বাদ পেয়েছিলেন টাইগার এ স্পিনার। এতে করে তৃতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে এক টেস্টে দ্বিতীয়বার ১০ উইকেট শিকারি বনে গেছেন তিনি। এর আগে সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ গড়েছিলেন অনন্য এই কীর্তি।
এদিকে পিছিয়ে থাকেননি নাজমুল হোসেন শান্তও। তিনি নাম লিখিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসানের পাশে। ম্যাশ ও সাকিবের মতো শান্তও জয় বাগিয়ে নিয়েছেন নিজের অধিনায়কত্বের অভিষেক টেস্টে।
আরও পড়ুন:স্বর্ণা আক্তারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে রোববার ১৩ রানের জয় পায় টাইগ্রেসরা।
ম্যাচে চার ওভারে ২৮ রান দিয়ে প্রোটিয়াদের পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন স্বর্ণা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিনের উইলোমুর পার্কে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দুই উইকেট হারিয়ে ১৪৯ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে ৫৯ বলে ছয়টি চার ও এক ছক্কায় ৬২ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার মুর্শিদা খাতুন। অন্যদিকে ২১ বলে ছয় বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৪ রান করেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা।
এ দুজনের বাইরে ২৪ বলে ২৪ ও ১৭ বলে ১৬ রান করেন শামিমা সুলতানা ও সোবহানা মুস্তারি।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্বর্ণার লেগ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
দলটির হয়ে ৪৯ বলে ৯ চার আর এক ছক্কায় সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেন ওপেনার অ্যানেকে বোশ। এ ছাড়া ২৬ বলে তিন চার আর এক ছক্কায় ৩০ রান করেন আরেক ওপেনার তাজমিন।
আরও পড়ুন:সিলেটে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের দেয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫০ রানে হেরেছে সফরকারী নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচের চতুর্থ দিন শেষে সাত উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তোলে দলটি। পঞ্চম দিনে এসে ১৮১ রান করে গুটিয়ে যায় কিউইরা।
টাইগারদের হয়ে কিউই শিবিরকে ধসিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার ঘূর্ণিতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন নিউজিল্যান্ডের ছয় ব্যাটার। ২২ রান করা ডেভন কনওয়ে, ১১ রান করা কেইন উইলিয়ামসন, ছয় রান করা টম ব্লান্ডেল, ৯ রান করা কাইলি জেমিসন, ২২ রান করা ইশ সোধি ও ৩৪ রান করা টিম সাউদিকে ফেরান তাইজুল।
দলের হয়ে বাকি চারটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাইম হাসান। তাদের মধ্যে শরিফুল ও মিরাজ একটি করে এবং নাইম নেন দুটি উইকেট।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩১০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৮ রান করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩১৭ রান করতে পারলেও দ্বিতীয়টিতে ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে কিউইরা।
সিলেটে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের দেয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পরাজয়ের সামনে রয়েছে সফরকারী নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচের চতুর্থ দিন শেষে সাত উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান তুলেছে দলটি।
জয়ের জন্য সফরকারীদের এখনও দরকার ২১৯ রান। হাতে আছে তিনটি উইকেট। ড্যারিল মিচেল ৪৪ ও ইশ সোধি ৭ রান করে অপরাজিত রয়েছেন।
বাংলাদেশের হয়ে কিউই শিবিরে বড় আঘাত হানেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার ঘূর্ণিতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন নিউজিল্যান্ডের চার ব্যাটার। ২২ রান করা ডেভন কনওয়ে, ১১ রান করা কেইন উইলিয়ামসন, ছয় রান করা টম ব্লান্ডেল ও ৯ রান করা কাইলি জেমিসনকে ফেরান তাইজুল।
দলের হয়ে বাকি তিনটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাইম হাসান।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩১০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৮ রান করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩১৭ রান করতে পারলেও দ্বিতীয়টিতে ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে কিউইরা।
আরও পড়ুন:সিলেটে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের দেয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বেকায়দায় পড়েছে সফরকারী নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচের চতুর্থ দিন শুক্রবার ৮১ রান তুলতেই ছয়টি উইকেট হারিয়েছে দলটি।
বাংলাদেশের হয়ে কিউই শিবিরে বড় আঘাত হানেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার ঘূর্ণিতে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন নিউজিল্যান্ডের তিন ব্যাটার। ২২ রান করা ডেভন কনওয়ে, ১১ রান করা কেইন উইলিয়ামসন ও ছয় রান করা টম ব্লান্ডেলকে ফেরান তাইজুল।
দলের হয়ে বাকি তিনটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাইম হাসান।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩১০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৮ রান করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩১৭ রান করতে পারলেও দ্বিতীয়টিতে ব্যাকফুটে পড়ে কিউইরা।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ছয় উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৮৩ রান।
আরও পড়ুন:সিলেট টেস্ট জিততে নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের টার্গেট দিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
৭ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩১০ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৩১৭।
তৃতীয় দিন শেষে ৩ উইকেটে ২১২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ২০৫ রানে এগিয়ে ছিলো টাইগাররা।
চতুর্থ দিন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ১০৪, মুশফিকুর রহিম ৬৭ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৫০ রানে আউট হন। নিউজিল্যান্ডের স্পিনার আজাজ প্যাটেল ১৪৮ রানে ৪ উইকেট নেন। সূত্র: বাসস
দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ২৬ রানে যখন দুই ওপেনার ফিরে গেলেন, তখন আরও একটি হতাশাজনক ম্যাচের ইঙ্গিত পেয়ে স্টেডিয়াম, টিভি-মোবাইলের স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে নিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু এরপরই পাল্টে দেল পট; এখান থেকে দলকে টেনে তুলে ফিরে আসার পুরনো গল্পকে নতুন করে লিখলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। পরে মুমিনুল ফিরে গেলেও শান্তর কাঁধে আস্থার হাত রাখলেন মুশফিক। আর এদের কীর্তিতে ২০৫ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় দিন কেন উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরির পর ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রানে দিন শেষ করে নিউজিল্যান্ড। আজ প্রথম সেশনে কাইল জেমিসন ও টিম সাউদির ধৈর্য পরীক্ষার পর ৩১৭ রানে ইনিংস শেষ হয় তাদের। এতে মাত্র সাত রানের লিড পায় কিউইরা। পরে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট হারিয়ে ২১২ রানে দিন শেষ করেছে টাইগাররা।
২৬ রানে দুই উইকেট হারানোর পর দলকে টেনে তোলেন শান্ত ও মুমিনুল। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৯০ রানের জুটি গড়েন তারা। ৪০ রান করে মুমিনুল যখন ফিরে যাচ্ছেন, তার মধ্যে নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। এরপর মুশফিক আসলে ফের আরেকটি বড় জুটির দিকে এগাতে থাকে বাংলাদেশ। এই জুটি পরে আর ভাঙতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের বোলাররা। ফলে স্কোরবোর্ডে ৯৬ রান যোগ করে দিন শেষে মাঠ ছাড়েন শান্ত ও মুশফিক।
মুশফিক ৭১ বল মোকাবিলা করে ৪৩ রানে অপরাজিত রয়েছেন। অন্যপ্রান্তে বিরল এক কীর্তি ঘটিয়েছেন শান্ত। অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই তরুণ তুর্কি। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে তিনিই প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এ রেকর্ডের পাতায় নিজের নাম লেখালেন।
তৃতীয় দিন শেষে ১০৪ রানে অপরাজিত রয়েছেন শান্ত। ২০৫ রানের লিডকে আরও বড় আকার দিতে টাইগারদের ঝুলিতে রয়েছে আরও সাত অস্ত্র। চতুর্থ দিন কতটা এগিয়ে নিউজিল্যান্ডকে চূড়ান্ত লক্ষ্য দিতে পারে বাংলাদেশ, সেটি এখন দেখার বিষয়।
মন্তব্য