অনুষ্ঠিত হয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের বহুল প্রতীক্ষিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র। আসন্ন ২০২৩-২৪ মৌসুমের জন্য হওয়া এ ড্রয়ে স্পেনের দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা পেয়েছে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ।
তবে এবার এক গ্রুপে পড়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বায়ার্ন মিউনিখ। এবারের ড্রয়ে ‘মৃত্যুকূপ’ খ্যাত সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ হয়েছে গ্রুপ ‘এফ’। পিএসজির সঙ্গে এ গ্রুপে পড়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, এসি মিলান ও ইংলিশ ফুটবলে নতুন শক্তিধর নিউক্যাসল ইউনাইটেড।
মোনাকোতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়) ২০২৩-২৪ আসরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।
এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্বের ড্রয়ে সর্বোপরি ভারসাম্য রয়েছে বলা চলে। এবার শক্তিশালী দলের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে তুলনামূলক কম শক্তিধর দল; শুধু শক্তিধর দলগুলোকে নিয়ে যেমন হয়েছে গ্রুপ, তেমনই তুলনামূলক দুর্বল দলগুলো নিয়েও রয়েছে গ্রুপ।
গ্রুপ এ
আসন্ন মৌসুমে গ্রুপ ‘এ’-র সমীকরণটি বেশ মজার। জার্মানির ঘরোয়া লিগ চ্যাম্পিয়ন ও ইউরোপ সেরার মঞ্চে বারবার দাপট দেখানো বায়ার্ন মিউনিখ এবার পেয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বেশ কয়েক বছর ধরে ধুঁকতে থাকার পর এরিক টেন হাগের নেতৃত্বে সবশেষ মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয়। চলতি মৌসুমেও তারা ভালো করছে। তবে ডেনিশ ক্লাব এফসি কোপেনহেগেন ও তুরস্কের গালাতেসারাইয়ের মতো তুলনামূলক দুর্বল দলগুলোরও চমক দেখানোর সুযোগ থাকবে এবার।
গ্রুপ বি
গ্রুপ ‘বি’কে বলা চলে তুলনামূলক দুর্বলদের গ্রুপ। গতবছর লা লিগায় ১২তম অবস্থানে থেকে লিগ শেষ করা সেভিয়ার এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আসাটা দুর্দান্ত বলা চলে। লিগে ১২তম হলেও ইউরোপা লিগ জিতে সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে আন্দালুসিয়ার এ ক্লাবটি। ‘বি’ গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের রাইজিং স্টার আর্সেনাল। নেদারল্যান্ডের পিএসভি আইন্ডহোভেন এবং ফরাসি লিগে প্রতিবছরই পিএসজিকে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেয়া লঁস। ফলে সবগুলো দল শক্তিমত্তায় খুব বেশি তারতম্য না থাকায় এ গ্রুপ থেকে যে কোনো দলের সুযোগ থাকবে গ্রুপপর্ব পার করে শেষ ষোলতে জায়গা করে নেয়ার।
গ্রুপ সি
৩৩ বছর পর স্কুদেত্তো জিতে স্বপ্নের মধ্যে থাকা নাপোলির জন্য গ্রুপ ‘সি’তে পড়াটা দুঃস্বপ্ন বলা যেতে পারে। কেননা এই গ্রুপে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ। শুধু তাই নয়, দুই মৌসুম আগে বুন্দেসলিগায় উঠে আসা উনিয়ন বার্লিনও রয়েছে এ গ্রুপে। বুন্দেসলিগায় ফিরেই দাপট দেখাতে শুরু করেছে তারা। ফলস্বরূপ গত মৌসুমে প্রথম চারে থেকে এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিয়েছে বার্লিনের এ ক্লাবটি। এছাড়া পর্তুগিজ লিগে গত কয়েক মৌসুম ধরে ভালো পারফরম করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফে জায়গা করে নেয় এফসি ব্রাহা। প্লে-অফ পর্ব পার করে মূল পর্বে আসা এ দলটিও মুখিয়ে থাকবে ইউরোপ সেরার মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরতে।
গ্রুপ ডি
এবারের গ্রুপ ‘ডি’ও শক্তির বিচারে বেশ ভারসাম্যের বলা চলে। এই গ্রুপে পর্তুগিজ লিগ চ্যাম্পিয়ন বেনফিকার সঙ্গে রয়েছে ইতালিয়ান সেরি-আ’র গত মৌসুমের দ্বিতীয় হওয়া সিমিওনে ইনজাগির ইন্টার মিলান। গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্বে শুধু বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরেছিল তারা। বার্সেলোনাকে কাঁদিয়ে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় করে ইউরোপা লিগ খেলতে বাধ্য করা ইন্টারের কথা ইউরোপিয়ান ফুটবলের ভক্তেদের নিশ্চয়ই মনে আছে। তাদের অপর দুই সঙ্গী অস্ট্রিয়ান বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন রেড বুল জালসবুর্গ ও স্পেনের রিয়াল সোসিয়েদাদ। ফুটবল কোচিংয়ের অন্যতম সেরা মস্তিষ্ক ইমানোল আলগুয়াচির দলের সামর্থ্য কতটা, স্প্যানিশ ফুটবল দেখা প্রত্যেকেই তা জানেন। শুধু তাই নয়, ইমানোলের কৌশলকে সমীহ করেন না, এমন ফুটবল ম্যানেজার স্পেনে নেই বললেই চলে। ফলে এ গ্রুপে যে একের পরেএক চমক দেখা যাবে, তা আগে সহজেই অনুমান করা যায়।
গ্রুপ ই
গ্রুপ ‘ই’ও বেশ মজার হয়েছে এবার। দিয়েগো সিমিওনের আতলেতিকো মাদ্রিদের এবারের সঙ্গী ফেয়েনুর্ড, লাৎসিও এবং সেল্টিক। চিরো ইম্মোবিলের মতো তারকাসমৃদ্ধ মাউরিসিও সারির লাৎসিওই যে আতলেতিকো মাদ্রিদকে এ গ্রুপ থেকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দিবে, সেটা বোঝা যাচ্ছে। তাছাড়া স্কটল্যান্ডের সেল্টিক পার্কে গিয়ে জয় নিয়ে আসাটা যে ইউরোপের যেকোনো বড় দলেরই দুশ্চিন্তার বিষয়, তা ইউরোপিয়ান ফুটবলপ্রেমীদের জানার কথা। অন্যদিকে আয়াক্স, পিএসভি আইন্ডহোভেনের মতো দলকে পেছনে ফেলে গত মৌসুমে ডাচ লিগ চ্যাম্পিয়ন ফেয়েনুর্ডও কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না।
গ্রুপ এফ
এই গ্রুপটিই এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ বা ‘মৃত্যুকূপ’। বারবার লিগ ১ চ্যাম্পিয়ন পিএসজির প্রধান উদ্দেশ্যই মূলত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা। এর জন্য গত কয়েক বছর ধরে তারা চেষ্টাও কম করছে না। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে নামী-দামী সব তারকা দিয়ে বারবার সাজিয়েছে দল। কিন্তু প্রতিবারই তাদের ব্যর্থ হতে হয়েছে। এবারও সবচেয়ে শক্ত গ্রুপে পড়েছে লুইস এনরিকের দায়িত্ব নেয়া পিএসজি। বুন্দেসলিগার বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, স্তেফানো পিওলির এসি মিলান বা সৌদির টাকায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে পুনরুত্থান হওয়া এডি হাওয়ির নিউক্যাসল ইউনাইটেড- কেউই কাউকে সুচাগ্র মেদিনী ছাড় দেবে না। এই গ্রুপে ঠিক কোন দুই দল পরের রাউন্ডে যাবে তা অন্তত তিন-চার লেগের খেলা শেষ হওয়ার পরও বলা কঠিন হবে।
গ্রুপ জি
গতবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি ‘জি’ গ্রুপে এবার তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছে। তাদের মূল মাথাব্যথার কারণ হতে পারে রেজেন বলস্পর্ট (আরবি) লাইপসিগ। এছাড়া রেড স্টার বেলগ্রেড ও ইয়াং বয়েজের মতো ক্লাবগুলো বাকি দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে শক্তিমত্তায় বেশ খানিকটা পিছিয়ে। ফলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কে হবে এবং পয়েন্ট টেবিলের তিনে থেকে কে ইউরোপা লিগে খেলবে, তা নিয়ে দেখা যাবে লড়াই।
গ্রুপ এইচ
গত কয়েক মৌসুম ধরে কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে গ্রুপপর্বে খেলেলেও এবার খানিকটা স্বস্তি পেয়েছে বার্সেলোনার সমর্থকরা। গতবারের মতো বায়ার্ন মিউনিখ, ইন্টার মিলানের মতো শক্তিশালী দলকে এবার গ্রুপপর্বেই মোকাবিলা করতে হচ্ছে না তাদের। এইচ গ্রুপে এবার তাদের প্রতিপক্ষ পর্তুগালের পোর্তো, ইউক্রেনের শাখতার দোনেৎস্ক এবং বেলজিয়ামের ক্লাব রয়াল আন্টওয়ের্প। ফলে পোর্তোর সঙ্গে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলেও বাকি দুই দলের সঙ্গে তাদের শক্ত লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা কম।
গ্রুপপর্বের খেলা শুরু হবে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নকআউট পর্বের খেলা। এ মৌসুমের ফাইনাল ম্যাচটি হবে আগামী বছরের ১ জুন। এবারের ফাইনালের জন্য লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামকে নির্ধারণ করেছে উয়েফা।
বর্তমান ফরম্যাটে ৩২ দল নিয়ে প্রতিযোগিতার এটিই শেষ আসর। আগামী মৌসুম থেকে নতুন ফরম্যাটে ভিন্ন আঙ্গিকে চ্যাম্পিয়ান্স লিগের আয়োজন করবে উয়েফা। ৩২ থেকে বেড়ে হবে ৩৬টি দল নিয়ে হবে আগামী মৌসুমের আসর।
আরও পড়ুন:সন্তান হওয়ার এক মাসের মধ্যেই ব্রাজিলের ফুটবল তারকা নেইমারের সঙ্গে সম্পর্কের পাট চুকিয়ে দিলেন তার বান্ধবী ব্রুনা বিয়ানকার্ডি।
এক মডেলের সঙ্গে ফোনের চ্যাট ফাঁস হওয়ার পর দিনই তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বলে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত মাসেই বান্ধবী ব্রুনার গর্ভে আসে নেইমারের কন্যা সন্তান। তবে সম্প্রতি ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকারের সঙ্গে বিয়ানকার্ডির সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিয়ানকার্ডি লিখেছেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত ব্যক্তিগত। আমি তোমাকে পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছি, আর কোনো সম্পর্কের মধ্যে আমি নেই। আমরা মাভির (তাদের মেয়ের নাম) বাবা-মা। এটাই আমাদের সম্পর্কের কারণ। আশা করি তুমি আমাকে আর বিব্রত করবে না।’
ইংল্যান্ডের একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ৩১ বছরের ফুটবলার বিয়ানকার্ডিকে একাধিক বার বিভিন্ন কারণে প্রতারণা করেছেন। যার শেষটি হলো ব্রাজিলের অনলিফ্যান (প্রাপ্তবয়স্কদের সাইট) মডেল অ্যালাইন ফারিয়াসের সঙ্গে কথোপকথন। যেখানে নেইমার ওই মডেলকে বেশ কিছু অশ্লীল এবং আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
এ ছাড়াও বছরের শুরুর দিকে একটি নাইটক্লাবে দুই নারীর সঙ্গে দেখা গিয়েছিল নেইমারকে। এসব মিলিয়ে ক্রমশ দূরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছিল বিয়ানকার্ডি এবং নেইমারের মধ্যে।
ফারিয়াসের সঙ্গে নেমারের কী কথা হয়েছিল, তা প্রকাশ্যে এসেছে মঙ্গলবার। তার পরই নেমারের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখার কথা জানিয়ে দিলেন বিয়ানকার্ডি।
চোটের জন্য গত অক্টোবর মাস থেকে মাঠের বাইরে নেইমার। সম্প্রতি তার অস্ত্রোপচার হয়েছে। সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে অন্তত ১০ মাস সময় লাগতে পারে। সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালও এই চোটের জন্য নেইমারের সঙ্গে চুক্তি স্থগিত রেখেছে।
আরও পড়ুন:হাঙ্গার ম্যাচে সম্প্রতি জয়ের পর আবারও ব্রাজিলের বিপক্ষে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা।
শুক্রবার ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ৩-০ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়েছে তারা।
আর্জেন্টিনার হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন অধিনায়ক ক্লাউদিও এচেভেরি। এই জয় দিয়েই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনার যুবারা।
এর মাধ্যমে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিল ব্রাজিল। আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন তারা।
আর্জেন্টিনা এগিয়ে গেল প্রথম শিরোপা জয়ের দিকে। আগামী ২৮ নভেম্বর সেমিতে তারা লড়বে জার্মানির বিপক্ষে।
আরেকটু হলেই পণ্ড হতে বসেছিল সুপার ক্লাসিকোর ম্যাচ। এ লক্ষ্যে সব আয়োজনই যেন সম্পন্ন হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত খেলা মাঠে গড়িয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১-০ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল ম্যাচ। এর কয়েক মিনিট আগেই গ্যালারিতে শুরু হয় উত্তেজনা। একপর্যায়ে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। লিওনেল মেসিসহ আর্জেন্টিনা দল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যায়। ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা পর।
ঐতিহ্যবাহী মারাকানা স্টেডিয়ামের এ খেলায় শেষ পর্যন্ত নিকোলাস ওতামেন্দির গোলে জয় পায় আর্জেন্টিনা। উরুগুয়ের কাছে আগের ম্যাচে ২-০ গোলে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। আর ব্রাজিল হারল টানা তিন ম্যাচ। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের মাঠে এই প্রথম হারল তারা।
ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা জাতীয় সঙ্গীতের সময় যখন লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন দেখা যায়, দু দলের সমর্থকদের একটি অংশ হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন। ঝামেলা থামাতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জের আশ্রয় নেয়। এতে পুরো বিষয়টি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।
স্থানীয় পুলিশকে আবার মাঠের এক প্রান্তে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের লাঠিপেটা করতে দেখা যায়। পরে ক্ষুব্ধ মেসি সতীর্থদের নিয়ে মাঠ ছেড়ে বের হয়ে যান। ব্রাজিলের প্লেয়াররা এবং ম্যাচ অফিশিয়ালরা সেই সময় মাঠেই দাঁড়িয়েছিলেন।
তবে সব কিছু সামাল দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর আর্জেন্টিনার প্লেয়াররা ফের মাঠে নামেন। ম্যাচ শুরুর আগে গ্যালারির উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে মাঠেও। ম্যাচ শুরুর ১৫ মিনিট পার হওয়ার আগেই হলুদ কার্ড দেখে বসেন দুই ব্রাজিলিয়ান গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও রাফিনিয়া। প্রথমার্ধে তিনটি হলুদ কার্ড হয়। আর দ্বিতীয়ার্ধে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ব্রাজিলের জোয়েলিনটন। ম্যাচের ৮১ মিনিটে তার লালকার্ডে ব্রাজিল ১০ জনের দল হয়ে যায়।
ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকলেও, দ্বিতীয়ার্ধের ৬৩ মিনিটে একটি মাত্র গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এর পর আর গোল শোধ করতে পারেনি ব্রাজিল। ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে পা রেখে রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ফুটবল ভক্তদের সঙ্গে দেখা করেছেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী রোনালদিনহো।
বাংলাদেশি ব্রাজিল ফ্যানদের ভালোবাসায় সিক্ত করতে ক্রিয়েশন ওয়ার্ল্ড-এর এই আয়োজনে অ্যাসোসিয়েশন স্পন্সর ছিল দেশের প্রথম সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্যানফেয়ার’।
অনুষ্ঠিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের দুই অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া এবং সাবিনা খাতুন।
ম্যাজিক্যাল নাইটে রোনালদিনহোর হাতে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন ফ্যানফেয়ার বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজীব হোসেন এবং চিফ স্ট্রাটেজি অফিসার শওকত আহমেদ সিদ্দিকী।
ভিডিও শেয়ারিং এই প্ল্যাটফর্মে আছে প্রায় ১ মিলিয়ন ব্যাবহারকারী, যারা প্রতিনিয়ত ভিডিও কন্টেন্ট শেয়ার করছেন এবং বিভিন্ন কন্টেস্টে অংশগ্রহণ করে পুরস্কার জিতছেন।
অগণিত ফুটবলপ্রেমীদের উচ্ছ্বসিত করে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত চালু হলো ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা পরিচালিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বার্সা একাডেমি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে রোববার বাংলাদেশে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো বেনিতেজ রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা (আইএসডি)’তে বার্সা একাডেমির উদ্বোধন করেন।
রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো বেনিতেজ বলেন, এমন চমৎকার একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আইএসডির প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। খেলাধুলা হচ্ছে সঙ্গীতের মতোই এক সর্বজনীন ভাষা, যা সবাই বুঝতে পারে।
চলতি বছরের ২২-২৬ অক্টোবর অটাম ট্রেনিং ক্যাম্প-এর মধ্য দিয়ে বার্সা একাডেমির কার্যক্রম চালু হয়। ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী ছেলেমেয়েরা এই ক্যাম্পে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে, এক্ষেত্রে আইএসডির শিক্ষার্থী হওয়া বাধ্যতামূলক নয়। প্রশিক্ষণের সফল সমাপ্তিতে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
অটাম ট্রেনিং ক্যাম্পে অংশগ্রহণকারীরা ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও ক্লাবটির মূল্যবোধ সম্পর্কে ধারণা অর্জন করবেন। অতীতে বার্সা একাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমেই আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, সার্জিও বুসকেটস, লিওনেল মেসি ও জেরার্ড পিকের মতো খেলোয়াড়রা বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন।
ট্রেনিং সেশনটি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন খেলোয়াড়রা (শিক্ষার্থীরা) সঠিকভাবে, ম্যাচের গতি ধরে রেখে, ধারাবাহিকতার সাথে ফুটবল খেলার কৌশলগুলো রপ্ত করার সুযোগ পান। খেলার মাঠে নিজ নিজ পজিশন অনুযায়ী দায়িত্ব বোঝার পাশাপাশি তারা পূর্ণাঙ্গভাবে কৌশলী হয়ে ওঠার সুযোগ পাবেন। বার্সা মেথডলজি’র আওতায় বল দখলে রাখা, স্বল্প জায়গার মধ্যে খেলা, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ শেখার সাথে সাথে তারা বিনয়ী, সচেষ্ট ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে উঠবেন এবং সকলের প্রতি সম্মান রেখে দলগতভাবে এগিয়ে যাওয়ার শিক্ষা অর্জন করবেন।
এসটিএস গ্রুপের সিইও মানাস সিং বলেন, এসটিএস গ্রুপের আওতাধীন আইএসডি’র মাধ্যমে বাংলাদেশে বার্সা একাডেমি চালু করতে পেরে, এবং এই খাতে সবচেয়ে সেরা প্রশিক্ষকদের অধীনে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পেরে আমরা গর্বিত। এই একাডেমির মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রচেষ্টা, দলগত কাজ, সহনশীলতা, সম্মান, সংহতি, ঐক্য, বন্ধুত্ব ও ফেয়ার প্লে’র মতো বার্সার মূল্যবোধগুলো শেখার সুযোগ পাবে। পরবর্তীতে একজন ভালো মানুষ হতে, এবং খেলার মাঠে ও বাস্তব জীবনে সমৃদ্ধ হতে এই মূল্যবোধগুলো কাজে লাগবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য বার্সেলোনার মতোই মানসম্মত, পেশাদার ও অনন্য প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে পুরো সেশন পরিচালনা করছেন বার্সা একাডেমির টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর জোয়েল লিনাস ও হেড কোচ গোর্কা পুজল।
ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তী ফুটবলার রোনালদিনহোর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ হলো বাংলাদেশ জাতীয় পুরুষ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া ও বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের।
‘ব্রুভানা প্রেজেন্টস ম্যাজিকাল নাইট উইথ দ্য লিজেন্ড রোনালদিনহো’ ইভেন্টে তাদের এই সাক্ষাৎ ঘটে।
মূল ইভেন্টে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে রোনালদিনোহর হাতে ব্রুভানা বেভারেজ লিমিটেডের স্পোর্টস প্লাস ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস-এর নতুন লেমন ফ্লেভার-এর উন্মোচন করা হয়।
ইভেন্টের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে ব্রুভানা বেভারেজ লিমিটেডের পক্ষ থেকে এতে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানিটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফাইয়াজ হাসান চৌধুরী, ডিরেক্টর অব অপারেশনস অবসরপ্রাপ্ত মেজর মাসুম আহমেদ, সিইও নাবিদ ইয়াকুব, ডিরেক্টর জনাব শন হাকিম ও চেয়ারম্যান এ কে এম আফজাল উল মুনির।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকা সফররত ব্রাজিলের ২০০২ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক রোনালদিনহো।
বুধবার সন্ধ্যায় পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ ফুটবলার বাংলাদেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। রোনালদিনহো এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে একটি জার্সি উপহার দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং নিউজবাংলাকে জানায়, স্বাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোনালদিনহোকে বলেন, ‘আপনার আগমন বাংলাদেশের ফুটবলকে অনুপ্রাণিত করবে।’
রোনালদিনহো ক্রীড়া ক্ষেত্রে অসামান্য উন্নয়নের জন্য এবং নারীর ক্ষমতায়ন ও নারীদের ফুটবলে এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ঢাকায় তার সংক্ষিপ্ত সফরে তার বাসস্থল হোটেল রেডিসনে গিয়ে জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন রোনালদিনহো। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও ব্রাজিল ভক্ত তামিমের সঙ্গেও সাক্ষাতের কথা রয়েছে তার।
এর আগে দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান তিনি। সেখান থেকে সরাসরি বিশ্রামের জন্য রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল র্যাডিসনে যান রোনালদিনহো।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য