ইউরোপা লিগের ফাইনালে সেভিয়া কখনও হারে না। এটাই সত্য হয়ে উঠল আরেকবার। রোমার বিপক্ষে বুধবার নির্ধারিত ৯০ ও পরের ৩০ মিনিট ১-১ গোলে ড্র থাকা ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে। যেখানে হোসে মরিনিওর রোমাকে ৪-১ গোলে হারিয়ে ইউরোপা লিগ জিতেছে সেভিয়া।
ইউরোপা লিগের এটি সপ্তম শিরোপা সেভিয়ার। এর আগে ইউরোপা লিগ জিতেছিল ২০০৬, ২০০৭, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০২০ সালে।
হাঙ্গেরির পুসকাস অ্যারেনায় বুধবার ফাইনালের ৩৫তম মিনিটে দারুণ এক পাল্টা আক্রমণ থেকে দিবালার গোলেই এগিয়ে গিয়েছিল রোমা। সেভিয়ার ইভান রাকিতিচের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে মানচিনি দারুণ পাস দেন দিবালাকে। দুই ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে দলকে এগিয়ে দিল পাওলো দিবালা। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরে সেভিয়া। এর দায় অবশ্য রোমার ডিফেন্ডার মানচিনিরও। প্রতিপক্ষের হেসুস নাভাসের একটি বিপজ্জনক ক্রস হেডে ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি।
এরপর ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয় ৯০ মিনিটের খেলা। পরের ৩০ মিনিটও। শিরোপার নিষ্পত্তির জন্য শেষমেষ আশ্রয় নিতে হয় টাইব্রেকারের। যেখানে সেভিয়ার চার জন শট নিয়ে চারজনই সফল। লুকাস ওকাম্পোস, এরিক লামেলা ও ইভান রাকিতিচের পর সফল শট নেন মন্তিয়েল। স্পট কিকে রোমার গোলটি এসেছে ব্রায়ান ক্রিস্তান্তের শটে। হোসে মরিনিওর দলের দ্বিতীয় শট অসমান্য তৎপরতায় রুখে দেন সেভিয়া গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনু।
ইউরোপা লিগের ফাইনালে সেভিয়া যেমন ছিল অজেয়, তেমনি ইউরোপীয় কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালেও হারেননি কোচ হোসে মরিনিও। বুধবার আর জেতা হলো না তার। সেই দুঃখেই কি না, রানার্সআপ মেডেলটি গ্যালারির এক ক্ষুদে দর্শকের হাতে দিয়ে মাঠ ছাড়েন মরিনিও।
ম্যাচের ৭২ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর শেষ সময়ে অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ। এরপর টাইব্রেকারে পাকিস্তানকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে গেল সাইফুল বারী টিটুর দল।
শনিবার ভুটানের চ্যাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র করার পর টাইব্রেকারে ৮-৭ ব্যবধানে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
এদিন ম্যাচের ৩২তম মিনিটে কর্নার থেকে আসা ক্রসে মাথা লাগিয়ে পাকিস্তানকে এগিয়ে নেন শাহাব আহমেদ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আব্দুল রেহমান।
ম্যাচের ৬০তম মিনিটে বক্সের মধ্যে সিয়াম অমিতের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর স্পট কিক থেকে নির্ভুল শটে ঠিকানা খুঁজে নেন রেহমান।
দুই গোল হজম করেও হতাশ না হয়ে ব্যবধান কমাতে মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশের যুবারা। এর ফল তারা পেয়ে যায় ১২ মিনিট পরই।
৭২তম মিনিটে বদলি নামা মানিকের কোনাকুনি শট কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন পাকিস্তানের গোলরক্ষক। তবে কর্নার থেকে আসা ক্রস থেকে বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপলক্ষ এনে দেন ফরোয়ার্ড মিঠু চৌধুরী।
৮০তম মিনিটে আরও একটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেন মানিক। তবে অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে যায় বাংলাদেশ। রিফাত কাজীর বাড়ানো ক্রসে মানিকের নিখুঁত শটে শেষ সময়ে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ।
খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রথম পাঁচটি শট থেকেই গোল আদায় করে নেয় দু’দল। অষ্টম শটের সময় নৈপুণ্য দেখান বদলি নামা গোলরক্ষক আলিফ রহমান ইমতিয়াজ। পাকিস্তানের আব্দুল ঘানির শট তিনি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে সেভ করার পর নিজের কাজ সারেন আশিকুর রহমান। ফলে ৮-৭ গোলের ব্যবধানে শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকার শেষে জয়ের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ।
আগামী সোমবার শিরোপার লড়াইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। শনিবার প্রথম সেমিফাইনালে নেপালকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত।
আরও পড়ুন:লাতিন আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন, সেসঙ্গে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও। তবে ম্যাচজুড়ে নিজেদের ছায়া হয়ে রইল আর্জেন্টিনা। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারের শোধ তুলল কলম্বিয়া।
কলম্বিয়ার এস্তাদিও মেত্রোপলিতানো রবের্তো মেলেন্দেসে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ২৫তম মিনিটে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন ডিফেন্ডার ইয়ের্সন মসকেরা। বিরতির পরপরই দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান নিকোলাস গন্সালেস। তবে ম্যাচের ৬০তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি করেন হামেস রদ্রিগেস।
এই ম্যাচে একটি করে গোল ও অ্যাসিস্টে সবশেষ ৮ ম্যাচে ১০ গোলে অবদান (৭ অ্যাসিস্ট ও ৩ গোল) রাখলেন ৩৩ বছর বয়সী এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
এর ফলে ১২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হারের তেতো স্বাদ পেলেন লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। সবশেষ তারা হারে গত নভেম্বরে, বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচেই উরুগুয়ের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে। তার পরের ১২ ম্যাচের মধ্যে ১১টিই জিতেছে আর্জেন্টিনা, ড্র করেছে মাত্র একটি ম্যাচে।
তাছাড়া ২০২৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় হার এটি।
অন্যদিকে গত জুলাইয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ১-০ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল কলম্বিয়ার। তারপর প্রথম দেখাতেই চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে সেই ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিল তারা।
প্রসঙ্গত, চোটের কারণে লিওনেল মেসিকে ছাড়াই বিশ্বকাপ বাছাইয়ের চলমান পর্বের ম্যাচগুলো খেলতে আসে আর্জেন্টিনা। চিলিকে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে মেসি-পরবর্তী যুগের শুভারম্ভের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন দে পল-দিবালারা। তবে পরের ম্যাচেই খেই হারিয়ে ফেলল স্কালোনির দল।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রইল কলম্বিয়া। ৮ ম্যাচের ৬টি জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রয়েছে আর্জেন্টিনা। আর সমান ম্যাচে ৪টি করে জয় ও ড্রয়ে কলম্বিয়ার পয়েন্ট ১৬।
আরও পড়ুন:বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে শুক্রবার (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে) প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে উরুগুয়ে। ওই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিদায়ের ঘোষণা দিয়ে দিলেন আয়াক্স, লিভারপুল হয়ে বার্সেলোনা ও আতলেতিকো মাদ্রিদ ঘুরে যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধু লিওনেল মেসির সঙ্গে ফুটবল খেলা, ফুটবলে অভিনব সব ঘটনার জন্ম দেয়া সুয়ারেস।
তবে তার এই বিদায় ঘোষণা একেবারে অপ্রত্যাশিত নয়। উজ্জ্বল সময় পার করে শেষলগ্নে এসে এমনিতেই তার ক্যারিয়ারের আলো নিভু নিভু। তাই বিদায়বেলায় তার পরাণ যেমন পুড়ছে, তেমনই গর্ববোধ করছেন ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার।
সুয়ারেস বলেন, ‘অবসরের সঠিক সময় জেনে, ঠিক সময়ে বিদায় নেয়ার চেয়ে গর্বের আর কিছু নেই। সৌভাগ্যবশত জাতীয় দল থেকে এমন সময়ে আমি অবসর নিচ্ছি বলে মনে করি, যখন আমি জানি যে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।’
‘বয়স ৩৭ বছর হয়ে গেছে। আমি জানি যে, পরের বিশ্বকাপে খেলা আমার জন্য কঠিন হতো। তবে এটা ভেবে স্বস্তি পাচ্ছি যে চোটের কারণে বা পারফরম্যান্সের কারণে নয়, নিজে থেকেই সরে দাঁড়াচ্ছি।’
সুয়ারেজ বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি অবশ্যই কঠিন; বিদায় বলা কখনোই সহজ নয়। তবে যে সান্তনাটুকু সঙ্গে নিয়ে আমি (পরবর্তী) জীবন কাটাব, তা হচ্ছে- শেষ ম্যাচ পর্যন্ত নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছি। এ কারণেই আমার মনে হয়েছে যে, এখনই সময়।’
২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয় দিয়ে উরুগুয়ের জার্সিতে পথচলা শুরু হয়েছিল সুয়ারেসের। তারপর থেকেই জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। সূত্র: ইউএনবি
আরও পড়ুন:স্বাগতিক নেপালকে অনেকটা বিধ্বস্ত করে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে গ্রুপ পর্বে হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে যুবারা।
কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে বুধবার অনুষ্ঠিত ফাইনালে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টাইগাররা। সে সুবাদে প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে এলো বাংলাদেশের।
ম্যাচের প্রথমার্ধে মিরাজুলের গোলে লিড নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে মিরাজুল ও রাহুলের গোলে ৭০ মিনিটে লিড ৩-০ করে বাংলাদেশ। ৮০ মিনিটে নেপাল এক গোল পরিশোধ করে। রেফারি ১০ মিনিট ইনজুরি সময় দেন। শেষদিকে আরও এক গোলে ব্যবধানটা ৪-০ করে শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের যুব পর্যায়ে বাংলাদেশের ছেলেদের এটি প্রথম শিরোপা। প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসরে এসে শেষ হলো তাদের অপেক্ষার পালা। আগের পাঁচটি আসরের দুটি ছিল অনূর্ধ্ব-১৮, দুটি ছিল অনূর্ধ্ব-১৯ ও একটি ছিল অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ের।
এবারের আসরে বাংলাদেশের শুরুটাই ছিল দুর্দান্ত। শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে অভিযান শুরু করে। এরপর নেপালের কাছে ২-১ গোলে হেরে গ্রুপ রানার্সআপ হয়। আর সেমিফাইনালে তিন আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারতের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে জিতে ফাইনালে পৌঁছে যায় লাল-সবুজ পতাকার দলটি।
দুর্দান্ত পারফর্ম করা মিরাজুল নিজে দুটি গোলা করার পাশাপাশি অ্যাসিস্ট করেন রাব্বির গোলে। তার জ্বলে ওঠার আগে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চললেও ম্যাচে আধিপত্য করছিল নেপালই। তবে প্রথমার্ধের শেষদিকে বদলে যায় চিত্র। মিরাজুলের ফ্রি-কিক থেকে গোল পেয়ে ম্যাচের লাগাম চলে আসে বাংলাদেশের হাতে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে উজ্জীবিত ফুটবল উপহার দেয় বাংলাদেশ। ৫৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মিরাজুলই।
৭০তম মিনিটে শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ের ভাগ্য একরকম মুঠোয় নিয়ে ফেলে মারুফুলের শিষ্যরা। বক্সে মিরাজুলের পাসে বল পেয়ে ডান পায়ের শটে নিশানা ভেদ করেন রাহুল। ১০ মিনিট পর নেপাল ব্যবধান কমায় সমীরের কল্যাণে।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে নোভার গোলে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৪-১ ব্যবধানে শিরোপা জিতে নেয় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। সোমবার নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের যুবারা।
বাংলাদেশ ইতোপূর্বে তিনবার সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও উঠলেও শিরোপার দেখা মেলেনি। ভারতের কাছে দুই ও নেপালের কাছে একবার ফাইনালে হেরে স্বপ্ন ভেঙে যায় বাংলাদেশের।
এবার সেই ভারতকে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় করে বাংলাদেশ তৈরি করেছে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা। বুধবার ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে হারাতে পারলেই অধরা ট্রফিটি উঁচিয়ে ধরার সুযোগ মিলবে।
আগের বিকেলে প্রথম সেমিফাইনাল জিতে প্রতিপক্ষের অপেক্ষায় ছিল নেপাল। স্বাগতিক যুবারা পেয়েছে বাংলাদেশকে। একই গ্রুপে ছিল বাংলাদেশ ও নেপাল। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল নেপাল।
বাংলাদেশ সেমিফাইনাল জিতেছে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। যুবাদের টুর্নামেন্ট বলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা ছিল না। ৯০ মিনিট পর সরাসরি টাইব্রেকারে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়।
সেমিফাইনালে ভারত প্রতিপক্ষ হওয়ায় বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জই ছিল। সেই চ্যালেঞ্জ জিতে বাংলাদেশ আরও একবার যুবাদের সাফের ফাইনালে।
নেপালের কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে এই সেমিফাইনালে প্রথমার্ধে বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত ভালো ফুটবল খেলে লিড নিয়েছিল। ৩৫ মিনিটে বাম দিক থেকে রাব্বি হোসেন রাহুলের নেয়া শট ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি ভারতের গোলরক্ষক। বলে চলে যায় আসাদুল মোল্লার সামনে। তিনি প্লেসিং শটে গোল আদায় করে নেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। নেপাল যাওয়ার আগে মাত্র ২ সপ্তাহ অনুশীলন করা বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে লড়তে পারেনি।
ভারতের যুবারা একের পর এক আক্রমণ করে ব্যতিব্যস্ত করে ফেলে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। ৭৫ মিনিটে গোল দিয়ে তারা ম্যাচেও ফেরে। দুবার ভারতের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের পোস্ট আর ক্রসবারে লেগে।
দুইবার অল্পের জন্য বাইরে গেছে ভারতের ফরোয়ার্ডদের শট। এক সময়ে মনে হয়েছিল নির্ধারিত সময়েই ম্যাচ বের করে নেবে ভারত। তাদের ফরোযার্ডদের ব্যর্থতা, বাংলাদেশের ভাগ্য আর রক্ষণভাগের দৃঢ়তা মিলে ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ায়।
বাংলাদেশের জয়ের নায়ক বদলি গোলরক্ষক আসিফ। এক নম্বর গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ করলে পোস্ট সামলাতে নেমেছিলেন তিনি।
ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে দায়িত্বটা যেন নিজেই কাঁধে তুলে নেন এই বদলি গোলরক্ষক। টাইব্রেকারে ভারতের নেয়া প্রথম শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেয়ার পরই ম্যাচের ভাগ্য কিছুটা ঝুলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে।
বাংলাদেশ টানা ৪ শটে গোল করলে ভারতের শেষ শটটি হয়ে যায় চ্যাম্পিয়নদের জন্য টিকে থাকার শেষ সুযোগ। কিন্তু ভারতকে সেই সুযোগ দেননি আসিফ। তাদের পঞ্চম শটটি রুখে দিয়ে কাঠমান্ডুর মাঠে ফাইনালে তুলে দেন বাংলাদেশকে।
আরও পড়ুন:কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে ইউরোপীয় ট্রফি জয়ের জন্য বহরে তারকা ফুটবলারদের যুক্ত করেও পিএসজিতে স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছিল কিলিয়ান এমবাপ্পের। আর রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়ে অভিষেক ম্যাচেই পেয়ে গেলেন ইউরোপীয় শিরোপার স্বপ্ন পূরণের স্বাদ।
বুধবার রাতে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে আটলান্টাকে ২-০ গোলে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপের শিরোপা জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ।
এই জয়ের পথে দ্বিতীয় গোলটি করে লস ব্লাঙ্কোসদের হয়ে অভিষেক ম্যাচেই গোলের খাতা খোলেন এমবাপ্পে। প্রথম গোলটি করেন ফেদেরিকো ভালভার্দে।
এর ফলে ট্রফি জিতে নতুন মৌসুম শুরু করল রিয়াল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ইউরোপা লিগজয়ী দুই দলকে নিয়ে নতুন মৌসুম শুরুর আগে সুপার কাপের ম্যাচ আয়োজন করে থাকে ইউরোপীয় ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা উয়েফা।
এই জয়ে উয়েফা সুপার কাপ জয়ে বার্সেলোনা ও এসি মিলানের সর্বোচ্চ পাঁচবারের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেল মাদ্রিদের দলটি।
কোচ হিসেবে রেকর্ড করেছেন আনচেলত্তিও। মোট পাঁচবার (রিয়ালের হয়ে তিনবার, এসি মিলানের হয়ে দুবার) উয়েফা সুপার কাপ জিতলেন তিনি। এর ফলে চারবার সুপার কাপ জেতা পেপ গার্দিওলাকে ছাড়িয়ে গেছেন এই ইতালিয়ান কোচ।
আরও পড়ুন:প্যারিস অলিম্পিক ফুটবলে প্রথম ম্যাচে নাটকীয়ভাবে মরক্কোর কাছে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আর্জেন্টিনা। লিওতে ম্যাচে ইরাককে ৩-১ গোলে হারিয়েছে তারা।
প্রথমার্ধে ইরাক সমান তালে লড়ে সমতায় থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে সহজেই ম্যাচ বের করে নেয় হেভিয়ের মাসচেরানোর দল।
প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ সমতায়। তবে বিরতির পর সেরা ছন্দে খেলে এশিয়ান দেশটিকে ছিটকে দেয় আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন থিয়াগো আলমাদা, ইজুকুয়েল ফের্ন্দাদেজ ও লুসিয়ানো গুন্দু। ইরাকের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন আইয়েম হোসেনি।
খেলার শুরুতেই গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ১৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের সীমানায় একটি আক্রমণ থেকে ম্যানচেস্টার সিটি তারকা হুলিয়ান আলভারেজ বুক দিয়ে নামিয়ে বল দেন তিয়াগো আলমাদাকে। তিনি বাম প্রান্ত দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে নেন।
তবে এই গোল ধরে রাখতে পারেনি লাতিনের ফুটবল পরাশক্তি। এশিয়ান দেশ ইরাক ফিরে আসে ম্যাচে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে চমক দেখায় ইরাক। আয়মেন হোসেনি লাফানো হেডে দলকে সমতায় ফেরান।
বিরতির পর ৫৪ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন আলমাদা। তার ফ্রি-কিক ইরাকের গোলরক্ষক হোসেনি হাসান দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন।
তবে এগিয়ে যেতে দেরি হয়নি আর্জেন্টাইনদের। ৬২ মিনিটে কেভিন জেননের ক্রস থেকে হেডে দলকে এগিয়ে নেন লুসিয়ানো গুন্দু।
এরপর একের পর এক আক্রমণে ইরাককে কোণঠাসা করে ফেলে আর্জেন্টিনা। পেয়ে যায় গোলও। ৮৪ মিনিটে আবারও অ্যাসিস্ট করেন জেনোন। তার কাছ থেকে বল নিয়ে ইজিকুয়েল ফের্নান্দেজ ডান কোণা দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে। ইরাকের দ্বিতীয় দফায় ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা তখন নিভে যায়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য