বিশ্বকাপের সময় আর্জেন্টিনাকে নিয়ে বাংলাদেশি দর্শকদের উচ্ছ্বাস-উন্মাদনা নতুন বিষয় নয়। গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে কাতারে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপজুড়ে তেমনটি দেখা গেছে।
পুরো আসরে বাড়িতে পতাকা টানিয়ে, জার্সি গায়ে পরে, হৈ-হুল্লোড় করে জয় উদযাপনের মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনায় বুঁদ ছিলেন বাংলাদেশি দর্শকরা। তাদের এ মাতামাতির ছবি, ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়, যা নজর এড়ায়নি লাতিন আমেরিকার বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসির।
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ওলেতে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশিদের উন্মাদনার ছবি, ভিডিও দেখার কথা জানিয়েছেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে মেসির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বিশ্বকাপ জয় নিয়ে তার উচ্ছ্বাসটা আগের মতো আছে কি না, যার জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ। কারণ এটি (বিশ্বকাপ জয়) অনন্য। সেটি করতে পারা, তার ওপর শেষটা যেভাবে হয়েছে…এরপর মানুষের আনন্দ দেখতে পাওয়া।
‘আর্জেন্টিনার মানুষ ওই একটা মাস অনেক উপভোগ করেছে। যত যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাদের, সেগুলো থেকে এক মাসের জন্য তাদের বের করে আনতে পেরেছি। ওই এক মাস তারা শুধু ফুটবল আর বিশ্বকাপেই বুঁদ ছিলেন।’
এরপরই সাক্ষাৎকারগ্রহীতা বাংলাদেশের প্রসঙ্গ আনেন। আর্জেন্টিনার মানুষের উদযাপনের সূত্র ধরে তিনি মেসিকে মনে করিয়ে দেন বাংলাদেশের কথা।
জবাবে আর্জেন্টিনা দলের প্রাণভোমরা বলেন, “হ্যাঁ, হ্যাঁ, দেখেছি আমি। সব জায়গায় মানুষ টি-শার্ট পরে ঘুরছিল। ফাইনালের আগে সোফি (আর্জেন্টাইন সাংবাদিক সোফি মার্তিনেস) বলেছিল। ‘মেসি’ লেখা, আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর আঁকা জার্সি পরে মানুষকে আনন্দ করতে দেখে খুব ভালো লেগেছে। সব জায়গাতেই এমন হয়েছে।”
বল জালে পাঠিয়ে দৌড় দিলেন গোলদাতা। দুই হাত উপরে তুলে লাফিয়ে উঠে করলেন পর্তুগিজ তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ান রোনাল্ডোর মতো ‘সিউ’ উদযাপন। এরপরই হয় বিপত্তি। বাম হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় ওই ফুটবলারের। শেষ পর্যন্ত খেলার মাঝে তাকে ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে।
ঘটনাটি ঘটেছে ভিয়েতনামের ঘরোয়া লিগে।
স্থানীয় ভিয়েত্তেল এফসি দলের ফুটবলার ট্র্যান হং কিয়েন গোল করার পরই রোনাল্ডোর মতো সিউ উদযাপন করতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েন। পরে উঠে আবার তাকে রোনাল্ডোর ‘পিস অফ মাইন্ড’ উদযাপনটি করতে দেখা যায়।
২০১৩ সালে চেলস্যার বিরুদ্ধে একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচে প্রথমবারের মতো ‘সিউ’ উদযাপন করেন রোনাল্ডো। এছাড়া ২০২১-২২ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলার সময় পিস অব মাইন্ড উদযাপনটি করেনন পর্তুগিজ এ ফুটবল তারকা।
২০২১ সালে ঘরের মাঠে কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ। গতবছর ব্যস্ত সূচিতেও মাত্র এক ম্যাচ দেশে খেলার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে সে ম্যাচেও জয় পায়নি জাতীয় ফুটবল দল। ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে সর্বশেষ জয়ের আনন্দে ভাসতে দেখা গেছে ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর। শনিবার সিলেটে সিশেলসের বিপক্ষে ফিফা প্রীতি ম্যাচে সে আক্ষেপ দূর হলো।
জাতীয় দলের হয়ে ৪২ মিনিটে নিজের প্রথম গোল করেছেন তারিক কাজী। সে গোলই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য করে দিয়েছে।
ম্যাচের শুরু থেকেই দাপুটে ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ। গোছানো আক্রমণ করে র্যাঙ্কিংয়ে সাত ধাপ পিছিয়ে থাকা সিশেলসকে ভয় পাইয়ে দিচ্ছিল স্বাগতিক দল। কিন্তু দক্ষ একজন স্ট্রাইকারের অভাবে গোল পাওয়া হচ্ছিল না বাংলাদেশের। মূলত ডানদিক থেকেই আক্রমণে উঠছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সাদের ক্রসগুলো কাজে লাগানোর মতো ছিলেন না বক্সে।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে অবশ্য সে আক্ষেপ দূর করেছেন তারিক কাজী। ডি-বক্সের বেশ বাইরে ফ্রি কিক পেয়েছিল বাংলাদেশ। জামাল ভূঁইয়ার ক্রস ফিরিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষের ব্র্যান্ডন। কিন্তু ব্র্যান্ডনের হেড গিয়ে পড়ে তারিক কাজীর সামনে। জোরালো হেডে জালে বল পাঠান এই ডিফেন্ডার। এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধেও বাংলাদেশের দাপট ছিল। আক্রমণে শক্তি বাড়াতে নামানো হয় অভিষিক্ত এলিটা কিংসলেকে। বাংলাদেশের পক্ষে এই প্রথম কোনো ভিনদেশির জাতীয় দলে অভিষেক। বেশ কয়েকবার শট নিলেও গোল পাননি কিংসলে।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টের শিরোপার লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে ভারতের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। এই সমীকরণ নিয়ে মাঠে নেমে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
টুর্নামেন্টে দিন তিনেক আগে রুশ মেয়েদের কাছে তিন গোল খেয়ে বাংলাদেশ বুঝেছিল, ইউরোপ অনেক এগিয়ে, তাদের মানে যেতে কাঠখড় পোড়াতে হবে অনেক।
তবে কমলাপুর স্টেডিয়ামে শুক্রবার সন্ধ্যায় আবার চেনা প্রতিপক্ষ যখন এল সামনে, বাংলাদেশ আবার ফিরল জয়ে। প্রতিপক্ষ সাফের অন্যতম শক্তিশালী ভারত, তাদের বিপক্ষে জয়টাও একেবারে সহজে আসেনি। দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের এক ডিফেন্ডারের আত্মঘাতী গোলে ১-০ ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
ভাগ্যপ্রসূত ঠিকই, তবে গোলাম রব্বানী ছোটনের দলের জন্য জয়টা প্রয়োজন ছিল। রাশিয়ার কাছে হারের পর চ্যাম্পিয়ন হওয়া হয়তো আর সম্ভব হবে না – যদি রাশিয়া নিজেদের বাকি দুই ম্যাচে জেতে। তবে অন্তত রানার্সআপ হওয়া নিয়ে কোনো সংশয় রাখতে না চাইলেও ভারত ও নেপালের বিপক্ষে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে জিততে হবে বাংলাদেশকে। প্রথম কাজটা করে রাখল বাংলাদেশ।
৭৪ মিনিটে ভারত বক্সের ডান পাশে থ্রো থেকে বক্সে ক্রস করেছিলেন নাদিয়া আক্তার যুথী। বাংলাদেশের কোনো স্ট্রাইকার সেটি পাবেন– আশা এমনই ছিল নিশ্চয়ই। কিন্তু ভাগ্য যে আরও বেশি কিছু নিয়েই বাংলাদেশের অপেক্ষায় ছিল, তা কে জানত! ভারতের সেন্টারব্যাক আখিলা রাজন বিপদমুক্ত করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার মাথায় লেগে বল উল্টো ঢুকে গেল ভারতেরই জালে। কমলাপুর স্টেডিয়াম মেতে ওঠে উল্লাসে।
জয়ের পথে বড় অবদান আছে বাংলাদেশ গোলকিপার সঙ্গীতারও। ৯০ মিনিটে বাংলাদেশের দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে অসাধারণ থ্রু ধরে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন ভারতের শিবানি। তবে সঙ্গীতা পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন শিবানির শট।
দিনের আগের ম্যাচে শুক্রবার রাশিয়া ৯-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ভূটানকে।
আরও পড়ুন:বছরের শুরুতেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক উগো লহিস। তারপর ভক্তদের জল্পনা-কল্পনা ছিল, কে হবেন ফ্রান্সের নতুন অধিনায়ক? অবশেষে পাওয়া গেল সে প্রশ্নের উত্তর। ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশম জানিয়ে দিলেন, কিলিয়ান এমবাপ্পে হচ্ছেন ফ্রান্সের নতুন অধিনায়ক।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম টিএফ১-এর সাংবাদিক সাবের দেসফারগেসের সঙ্গে আলাপে ফ্রান্সের নতুন অধিনায়ক এবং সহ-অধিনায়কের নাম ঘোষণা করেন দেশম। এমবাপ্পের ডেপুটি হিসেবে আঁতোয়ান গ্রিজমানকে বেছে নিয়েছেন ফরাসি কোচ।
এমবাপ্পের হাতে অধিনায়কের বাহুবন্ধনী তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে দেশমের যুক্তি, ‘এই দায়িত্ব পাওয়ার জন্য এমবাপ্পেই যোগ্য ব্যক্তি। মাঠে, ড্রেসিং রুমে সবাইকে এক করে রাখতে পারে সে।’
অভিজ্ঞতায়, বয়সে এমবাপ্পের চেয়ে ঢের এগিয়ে গ্রিজমান। তাই অধিনায়কত্ব এমবাপ্পের কাছে যাওয়ায় গ্রিজমান নাখোশ বলে জানাচ্ছে ফরাসি সংবাদমাধ্যম। ৩২ বছর বয়সী গ্রিজমানের ইচ্ছে অন্তত ২০২৪ ইউরো পর্যন্ত ফ্রান্সের জার্সি গায়ে খেলা চালিয়ে যাওয়া। তবে অধিনায়কত্ব না পাওয়ায় তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার নিয়ে আপাতত ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে খবর ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’কিপের।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টের প্রথম দিনে সোমবার সন্ধ্যায় কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে সেই ভুটানকে নিয়ে ছেলেখেলাই করল রুমা আক্তারের দল। গুণে গুণে ভুটানের জাল কাঁপাল আট বার। ফিনিশিংয়ে আরেকটু পটু হলে আর অফসাইডে ফাঁদ ঠিকঠাক বুঝতে পারলে বাংলাদেশের জয়ের ব্যবধানটা ৮-১ গোলের চেয়ে বেশি নিশ্চিত হতো।
ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল ধীরগতির। প্রথম ১৫ মিনিটে খেলা চলে এলোমেলো। পাসের সঙ্গে পাসজুড়ে আক্রমণের আসল শুরুটা হয় ১৬ মিনিটে। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে গোলপোস্টের সামনে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান তৃষ্ণা। সেখান থেকে বল জালে জড়াতে কোনো ভুল হয়নি তার। এর মিনিট চারেক পর প্রথমার্ধের একমাত্র আক্রমণটি শানায় ভুটান। তবে গোলমুখে ভুটানি ফরোয়ার্ডের শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন বাংলাদেশের গোলকিপার সঙ্গীতা।
২১ মিনিটে বলে জালে জড়ান বাংলাদেশ অধিনায়ক রুমা আক্তার, তবে অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় সে গোল। ২৬ মিনিটে সুরভী আকন্দ প্রীতির শট রুখে দেন ভুটানের ডিফেন্ডাররা। তবে দ্বিতীয় গোলের জন্য বাংলাদেশের অপেক্ষা দীর্ঘ হয়নি ২৮ মিনিটে তৃষ্ণার অসাধারণ ফিনিশে। মধ্যমাঠ থেকে পাওয়া রক্ষণচেরা পাস ধরে প্রথমে ভুটানের গোলকিপারকে ডামি করেন তৃষ্ণা, এরপর বুটের বাইরের অংশের ছোঁয়ায় তার ডান পায়ের প্লেসিং শট।
দুই গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর পায়ের তলে মাটি খুঁজে পায়নি ভুটান। ৩৬ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে ভুটানের গোলকিপারের ভুলে গোলপোস্টের সামনে বল পেয়ে যান সুলতানা, সেখান থেকে তার সহজ ফিনিশে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
এর মিনিট পাঁচেক আবারও ভুটানের গোলে হানা বাংলাদেশের। মধ্যমাঠ থেকে পাওয়া লং বল ধরে ভুটানের বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে ঢুকে গোলের কাছাকাছি চলে যান প্রীতি। এক মুহূর্ত স্থির দাঁড়িয়ে দুরূহ কোণ থেকে এরপর যে শটটি নেন প্রীতি, তা ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো। দর্শনীয় সে গোলে দলকে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে দিয়ে প্রীতি আনন্দে ভাসান কমলাপুর স্টেডিয়ামে হাজির দর্শকদের।
প্রথমার্ধ শেষে ৪-০ গোলে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে যোগ করেছে আরও ৪ গোল। যার দুটি এসেছে ৫৯ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামা ফরোয়ার্ড থুইনুয়ে মারমার পা থেকে। ৬০ এবং ৭৬ মিনিটে দারুণ দুটি গোল করেন তিনি। ৬২ মিনিটে অফসাইডে তার একটি গোল বাতিল না হলে পেয়ে যেতেন হ্যাটট্রিকও।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েছিলেন প্রথমার্ধে দুই গোল করা তৃষ্ণাও। তবে ৪৮ মিনিটে গোলকিপারকে এক পেয়েও পরাস্ত করতে পারেননি তিনি, এর পাঁচ মিনিট পর গোলপোস্টের সামনে নিতে পারেননি বলের নিয়ন্ত্রণ। ৬২ এবং ৮৫ মিনিটে বাংলাদেশের হয়ে অন্য দুটি গোল করেন যথাক্রমে মুন্নি এবং প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা এফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাগরিকা। ভুটানের হয়ে ম্যাচে সান্ত্বনাসূচক গোলটি করেন প্রিয়া ঘাল্লে।
বুধবার বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে একই মাঠে রাশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশের মেয়েরা।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০২৬ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব পর্ব শুরু হবে এ বছরই। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্ব আগামী সেপ্টেম্বরে শুরু হবে বলে জানিয়েছে কনমেবল।
বাছাই পর্বের ষষ্ঠ রাউন্ডে মুখোমুখি হবে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। নভেম্বরে ম্যাচটি হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বিশ্বকাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ইকুয়েডরের বিপক্ষে এবং রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে। কোন রাউন্ডে কোন দল কার বিপক্ষে খেলবে, কনমেবল সেটা জানালেও ম্যাচগুলোর তারিখ কিংবা ভেন্যু চূড়ান্ত করেনি।
করোনার বিধিনিষেধের গ্যাঁড়াকলে পড়ে ২০২২ বিশ্বকাপের লাতিন বাছাইপর্বের ব্রাজিলের-আর্জেন্টিনা ফিরতি ম্যাচটি আর হয়নি। তাই নভেম্বরের ম্যাচটিই হবে
২০২১ সালের পর বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুই দলের প্রথম সাক্ষাৎ। ফিরতি ম্যাচে ব্রাজিলকে আতিথ্য দেবে আর্জেন্টিনা। সেটি ২০২৫ সালের মার্চে, লাতিন বাছাইয়ের ১৪তম রাউন্ডে।
আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ শিরোপা উপহার দিয়ে লিওনেল মেসি ক্যারিয়ারের সেরা অর্জনের স্বাদ গ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গ্রহণ করে সেই অর্জনের স্বীকৃতিও পেয়ে গেছেন। পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে তার বিরুদ্ধে সমালোচকদের যে প্রশ্ন ছিল, ক্লাব ফুটবলের অন্যতম সফল এই তারকা জাতীয় দলে কবে সাফল্য পাবেন, তার জবাবও বিশ্বকাপ শিরোপা অর্জনের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছেন।
প্রশংসার সাগরে ভাসতে থাকা মেসিকে নিয়ে অবশ্য তার বর্তমান ক্লাব পিএসজি এখনো খুশি হতে পারেনি। এবারের মৌসুমটা দারুণভাবে শুরু হলেও বায়ার্ন মিউনিখের কাছে শেষ ষোলোর দুই লেগেই পরাজিত হয়ে বিদায় নিতে হয়েছে পিএসজিকে। ফলে আরও একবার ইউরোপীয়ান সাফল্য থেকে বঞ্চিত হতে হলো তারকা সমৃদ্ধ পিএসজিকে। পিএসজির এই বিদায়ে মেসি ছিলেন একবারেই নিষ্প্রভ। নক আউট পর্বের দুই লেগের ম্যাচে মেসি কিছুই করতে পারেননি। এজন্য অবশ্য সাবেকদের সমালোচনাও শুনতে হয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ফরাসি তারকা প্যাট্রিক এভরা মেসির পরোক্ষ সমালাচনাই করেছেন। এভরার দাবি ক্রিস্টিায়ানো রোনাল্ডোর থেকে মেসি বেশি প্রতিভাবান, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু রোনাল্ডোর মত অতটা পরিশ্রম কখনই করতে দেখা যায়নি মেসিকে। রোনাল্ডোর মত পরিশ্রম করতে পারলে অন্তত ১৫টি ব্যালন ডি’অর জিততে পারতেন মেসি। খবর বাসসের
সম্প্রতি সাবেক ইংল্যান্ড তারকা রিও ফার্দিনান্দের ইউটিউব চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে এভরা বলেছেন, ‘আমি ব্যাখ্যা করতে চাই কেন আমি সব সময় রোনাল্ডোর কথা বলি। এটা এই জন্য না যে সে আমাদের ভাই। এর কারণ আমি তার কাজের ধরনকে ভালোবাসি। আমার মনে হয় মেসিকে সৃষ্টিকর্তা প্রতিভা দিয়েছে। আর ক্রিস্টিয়ানোকে সেটা অর্জন করতে হয় পরিশ্রম করে।
‘রোনাল্ডোরও প্রতিভা আছে, তবে সে জন্য তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। যদি রোনাল্ডোর মত কাজের সম ধারা মেসি বজায় রাখতে পারতো তবে ক্যারিয়ারের এ সময় পর্যন্ত অন্তত ১৫টি ব্যালন ডি’অর ট্রফি তার ঘরে থাকতো। যারা পরিশ্রম করে আমি তাদের দারুন পছন্দ করি। এ কারণেই আমি সবসময় ক্রিস্টিয়ানোকে বেছে নিই।’
এ পর্যন্ত মেসিই সর্বোচ্চ সাতবার ব্যালন ডি’অর জয় করেছেন। রোনাল্ডো জিতেছেন পাঁচটি। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে শিরোপা উপহার দেবার কৃতিত্ব হিসেবে এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌঁড়ে আর্জেন্টাইন অধিনায়কই বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য