আফগানিস্তানের বিপক্ষে মার্চে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। সিরিজের সময় নির্ধারণ করা ছিল আগেই, কিন্তু নারীদের নিয়ে আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবানের নীতির কারণে সিরিজ বাতিল করেছে অজিরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজ বৃহস্পতিবার জানায়, অস্ট্রেলিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। ভারত সফর শেষে আমিরাতে হতে যাওয়া এ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আইসিসি সুপার লিগের অন্তর্ভুক্ত।
সিএ এক বিবৃতিতে জানায়, সম্প্রতি তালেবান সরকার আফগানিস্তানে মেয়েদের শিক্ষা, চাকরি এবং পার্ক ও জিমে যাওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। এ কারণে সিরিজ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
একই দিন আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইস আফগানিস্তানের নারীদের ওপর কড়াকাড়ি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এ নিয়ে দুই বছরে দুইবার আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ বাতিল করল অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০২১ সালে একই কারণে হোবার্টে একমাত্র টেস্ট স্থগিত করে সিএ।
অস্ট্রেলিয়া সিরিজটি বাতিল করলেও লাভবান হয়েছে আফগানিস্তান। কোনো ম্যাচ না খেলেও ৩০ পয়েন্ট পেয়ে যাবে তারা। এই পয়েন্ট ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া এ পয়েন্ট ছেড়ে দিলেও তাদের কোনো ক্ষতি হবে না। আগামী অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা আগেই অর্জন করেছে অজিরা।
আরও পড়ুন:Cricket Australia is committed to supporting growing the game for women and men around the world, including in Afghanistan, and will continue to engage with the Afghanistan Cricket Board in anticipation of improved conditions for women and girls in the country. pic.twitter.com/cgQ2p21X2Q
— Cricket Australia (@CricketAus) January 12, 2023
বাসেতেরেতে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মঙ্গলবার বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জেডেন সিলসের ২২ রানের বিনিময়ে চার উইকেট এবং ব্র্যান্ডন কিংয়ের ৮২ রানের জাদুকরী ব্যাটিংয়ে ৭৯ বল বাকি থাকতেই ২২৮ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সিলস তাৎক্ষণিকভাবে বল ডেলিভারি করেন। ১০ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে ৫৪-৩ করে দেন এ পেসার।
তানজিদ হাসান ৩৩ বলে ৪৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে শুরুতেই প্রতিরোধ গড়ে তুললেও উইকেট পড়েছে নিয়মিত।
অষ্টম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ (৬২) ও তানজিম হাসান সাকিবের (৪৫) মধ্যে রেকর্ড ৯২ রানের পার্টনারশিপ সত্ত্বেও ৪৫.৫ ওভারে ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
জবাবে ১০৯ রানের জুটি গড়ে শক্ত ভিত গড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ও এভিন লুইস। তাদের আটটি বাউন্ডারি ও তিনটি ছক্কায় ৭৬ বলে ৮২ রান ইনিংসের গতি বাড়িয়ে দেয়।
রিশাদ হোসেনের বলে ৪৯ রান করে আউট হয়ে হাফ সেঞ্চুরির কাছাকাছি থেকে বিদায় নেন লুইস। কেসি কার্টি নেন ৪৫ রান। আর অধিনায়ক শাই হোপ অপরাজিত ১৭ ও শেরফানে রাদারফোর্ড অপরাজিত ২৪ রান করে জয়ের কাজটি স্বাচ্ছন্দ্যে শেষ করেন।
ম্যাচ শেষে হোপ বলেন, ‘আমরা আজ ঝোড়ো ছিলাম। আমরা ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের জন্য সংগ্রাম করছি। এখন ৩-০ ব্যবধানে শেষ করার আশা করছি।’
১০ বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়।
ম্যাচ শেষে দলের ব্যাটিং বিপর্যয় নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
তিনি বলেন, ‘মাঝের ওভারগুলোতে আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। পার্টনারশিপ মিস ছিল। এ উইকেটে তিন শর বেশি রান দরকার ছিল।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ। অন্যদিকে বাংলাদেশ তাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতির আগে পুনরায় সংগঠিত হতে চায়।
আরও পড়ুন:যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯ ওভার ১ বলে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশের যুবারা। ১৯৯ রানে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট হাতে নেমে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারত।
বাংলাদেশের যুবারা এদিন শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আসে সাফল্য। আইয়ুস মার্থেকে (১) বোল্ড করে ওপেনিং জুটি ভাঙেন আল ফাহাদ। তাতে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় ভারত।
পঞ্চম ওভারে মারুফ মৃধাকে দুটি বাউন্ডারি মেরে পাল্টা আঘাত হানতে চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার ভাইভাব সুরিয়াবানশি (৯)। তবে আরও একটি মারতে গিয়ে গ্যালিতে শিহাব জেমসের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
ব্যাটিং অর্ডারে তিনে নামা আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে সাজঘরে ফেরান রিজান হোসেন। ক্রিজে মোটামুটি সেট হয়ে যাওয়ার এই ভারতীয় ব্যাটার ৩৫ বলে ২০ রান করে বোল্ড হয়ে যান। টপ অর্ডারের তিন উইকেট তুলে এবার ভারতীয়দের চেপে ধরে বাংলাদেশ।
কেপি কার্থিকেয়াকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন ভারতীয় অধিনায়ক মোহামেদ আমান। তবে ২১তম ওভারে জোড়া উইকেট তুলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে এনে দেন ইমন। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা কার্থিকেয়াকে উইকেটরক্ষক ফরিদের ক্যাচে পরিণত করে ভাঙেন জুটি। ২১ রান আসে কার্থিকেয়ার ব্যাট থেকে। শূন্য রানে নিখিল কুমারকেও ফেরান ইমন।
পরের ওভারে আবারও ইমনের আঘাত। এবার এই পেসারের শিকার হারভানশ পাঙ্গালিয়া। ৬ রান করা এই ব্যাটারকে উইকেটরক্ষকের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি।
ভারতীয় অধিনায়ক আমান এক প্রান্ত আগলে রেখে আশা বাঁচিয়ে রাখেন। ৩২তম ওভারে বল হাতে নিয়েই তাকে ফেরান বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল। ব্যক্তিগত ২৬ রানে বোল্ড হয়ে যান আমান।
নয় নম্বরে নামা হার্দিক রাজ ২১ বলে করেন ২৪ রান। তাকেও ফেরান আজিজুল। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে হার্দিক রাজ। এরপর চেতন শর্মার আউটের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয় টাইগার যুবাদের জয়।
লেগস্পিনার দেবাশিস দেবা ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে সব বোলারই উইকেট পেয়েছেন। তবে উইকেট না পেলেও দারুণ বোলিং করেন দেবা। ২৪ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ইমন। আজিজুলও নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া দুটি শিকার আল ফাহাদের।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ১৭ রানে কালাম সিদ্দিকিকে হারায় বাংলাদেশ। একাদশ ওভারে ফেরেন থিতু হওয়া আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরার (২০)। অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম আগের ম্যাচগুলোতে দারুণ খেললেও এদিন ২৮ বলে ১৬ রান করে সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে দল।
এরপর শিহাব-রিজান মিলে চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ৬২ রান। দুজনেই ফেরেন অসময়ে। আয়ুশ হাটরের বলে ক্যাচ দিয়ে থামেন শিহাব। হার্দিক রাজের বলে বোল্ড হয়ে যান রিজান। দেবাশীষ দেবা, সাইমুন বাসির ব্যর্থ হলে দলকে এরপর টানেন ফরিদ। নবম উইকেটে মারুফ মৃধাকে নিয়ে যোগ করেন ৩১ রান।
দলের হয়ে ৬৫ বলে ৩টি চারের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেছেন রিজান। ৬৭ বলে ৩টি চারে ৪০ আসে শিহাবের ব্যাট থেকে। ১৬৭ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর টেল এন্ডারদের নিয়ে দলকে দুশ’র কাছে নিতে ৪৯ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৯ রানের ইনিংস খেলেন ফরিদ। তিনিও চার মারেন ৩টি।
আরও পড়ুন:ইনজুরির কারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই পেসার ম্যাথু ফোর্ড ও শামার জোসেফ।
তাদের জায়গায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে দলে প্রথমবারের মতো সুযোগ পেয়েছেন মার্কিনো মিন্ডলি ও জেডিয়া ব্লেডস।
গত মাসে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ঊরুর ইনজুরিতে পড়েন ফোর্ড।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের আগে ফোর্ড সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তাই পূর্বঘোষিত ওয়ানডে দলে রাখা হয়েছিল তাকে, কিন্তু ফিট হতে না পারায় পুনবার্সন চালিয়ে যাবেন ফোর্ড।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আট উইকেট নিয়ে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন ফোর্ড।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সদ্য শেষ হওয়া টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে পায়ের ইনজুরিতে পড়া শামার থাকবেন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে। তাই ওয়ানডে সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েছেন ।
দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা আছে মিন্ডলির। ২০২২ সালে এডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তার। এরপর জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন মিন্ডলি।
সম্প্রতি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট সুপার ফিফটি কাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন মিন্ডলি। সাত ম্যাচে ১৯২ রান খরচায় ২০ উইকেট শিকার করেন তিনি। বল হাতে দারুণ ছন্দে থাকায় ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন ২৯ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার।
সুপার ফিফটি কাপে চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন ব্লেডস। ৫ ম্যাচে ১৭৭ রানে ১৪ উইকেট নিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেলেন ২২ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার।
আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল: শাই হোপ (অধিনায়ক), ব্র্যান্ডন কিং (সহ-অধিনায়ক), কেসি কার্টি, রোস্টন চেজ, জাস্টিন গ্রেভস, শিমরন হেটমায়ার, আমির জাঙ্গো, আলজারি জোসেফ, মার্কিনো মিন্ডলি, জেডিয়া ব্লেডস, এভিন লুইস, গুডাকেশ মোটি, শেরফানে রাদারফোর্ড, জেইডেন সিলেস ও রোমারিও শেফার্ড।
আরও পড়ুন:তাইজুল ইসলাসের ঘূর্ণিতে জ্যামাইকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০১ রানে পরাজিত করে ১-১ সমতায় দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শেষ করেছে বাংলাদেশ।
টেস্ট ইনিংসে ১৫তম বারের মতো পাঁচ উইকেট দখলের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তাইজুল।
সাবিনা পার্কে জাকের আলির টেস্ট সেরা ৯১ রানের ইনিংসে ভর করে চতুর্থ দিন ২৬৮ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ের জন্য ২৮৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৮৫ রানেই গুটিয়ে যায়। তাইজুল ৫০ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
ফাস্ট বোলার নাহিদ রানা প্রথম ইনিংসে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট দখল করেছিলেন। রানার ওই বোলিং তোপেই বাংলাদেশ জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে।
দ্বিতীয় ইনিংসে রানা শামার জোসেফের একমাত্র উইকেটটি নিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন।
ম্যাচসেরা তাইজুল বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে টেস্ট জয়ের আনন্দই আলাদা, যা আমরা সাধারণত করতে পারি না। দলের প্রত্যেকেই তাদের সাধ্যমতো দেবার চেষ্টা করেছে।’
পেসার তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ দুটি করে উইকেট দখল করেছেন। দুই টেস্টে সব মিলিয়ে ১১ উইকেট নিয়ে তাসকিন হন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।
আরও পড়ুন:জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) আসন্ন আসর নিয়ে মহাপরিকল্পনা সাজিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ শীর্ষক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তরুণ ও যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে দেশব্যাপী এই আয়োজনের মিডিয়া লঞ্চিং প্রোগ্রামে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫-এর লোগো এবং আসন্ন বিপিএলের অফিসিয়াল মাসকট ‘ডানা ৩৬’ উন্মোচন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে এগিয়ে যাওয়াই এই তারুণ্যের উৎসবের মূল লক্ষ্য। এই আয়োজন সফল করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার জন্য ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক স্লোগান নিয়ে আয়োজিত হতে যাচ্ছে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫, যা অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের ৩০ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায় সবসময় জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ করতে চাই। তাদের ত্যাগের স্পৃহা বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে চাই।
‘খেলাধুলা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। ভিন্ন ক্ষেত্রে যতই মতভেদ থাকুক না কেন, খেলাধুলার ক্ষেত্রে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাই।’
‘ডানা ৩৬’ মাসকটটি সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা ও ক্রীড়ামোদীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
পায়রা আকৃতির ৩৬টি রঙিন পালকবিশিষ্ট মাসকটটি শান্তি, স্থিতিস্থাপকতা এবং জাতির শক্তি ও ঐক্যের প্রতীক।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম।
তাদের পাশাপাশি নারী ক্রিকেট দলের সদস্য এবং ফুটবলসহ অন্যান্য ক্রীড়া ফেডারেশনের কর্মকর্তারা ও খেলোয়াড়রা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:আয়ারল্যান্ড নারী দলের বিরুদ্ধে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশের মেয়েরা। আর সাদা বলের সিরিজ খেলতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসে ব্যাক টু ব্যাক পরাজয়ের স্বাদ পেল আইরিশ দল।
মিরপুর স্টেডিয়ামে শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আইরিশদের ছুঁড়ে দেয়া ১৯৪ রানের টার্গেটে ব্যাট হাতে নেমে ৩৭ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম ওয়ানডেতে ১৫৪ রানের রেকর্ড ব্যবধানে জয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
আজ মিরপুরের দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৯৩ রানে থামে আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে সহজেই জয় ছিনিয়ে নেয় নিগার সুলতানার দল। ৫ উইকেট ও ৩৭ বল হাতে রেখেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
শনিবার মিরপুর শেরে-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ড। ম্যাচের চতুর্থ ওভারে ২ রানে থাকা আইরিশ ওপেনার গ্যাবি লুইসের উইকেট তুলে নেন সুলতানা খাতুন। ইনিংসের ১১তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই উইকেট পান নাহিদা আক্তার। তিন নম্বরে নামা উইকেটকিপার ব্যাটার অ্যামি হান্টার খেলেন সর্বোচ্চ ৬৮ রানের ইনিংস।
স্বাগতিক দলের সুলতানা খাতুন ১০ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। সমান ওভারে একই রান খরচায় নাহিদা পান ১ উইকেট। আরেক উইকেট যায় স্বর্ণা আক্তারের দখলে।
সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ নারী দল। ১৪ বল খেলা ওপেনার মুরশিদা খাতুন ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। তিনে নামা শারমিন সুপ্তাকে নিয়ে এরপর ৮৫ রানের জুটি গড়েন ফারজানা হক পিংকি। পরপর দুই ম্যাচে ফিফটি তুলে নেন ফারজানা। ৫০ রানে থেকেই লরা ডেলানির বলে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন ফারজানা।
আগের ম্যাচে ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা শারমিন সুপ্তা আজ আউট হন ৪৩ রান করে। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। ৩৯ বলে তিনি এই ইনিংস সাজান ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায়। মাঝে সুবহানা মোস্তারি করেন ১৬ রান।
শেষদিকে স্বর্ণা আক্তার ২৯ রানের হার-না-মানা ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। তাকে সঙ্গ দেয়া ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪ রানে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে সিরিজের শেষ ওয়ানডে। এরপর ৫, ৭ ও ৯ ডিসেম্বর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচ।
আরও পড়ুন:সিরিজ সমতায় শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে শনিবার জ্যামাইকার কিংস্টনের সাবিনা পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে সফরকারী বাংলাদেশ।
ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়।
মাত্র কয়েক মাস আগে পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর থেকে হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সিরিজ জয়ের পর টানা পাঁচ টেস্ট হেরেছে টাইগাররা।
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ এবং ২০১ রানের বড় হার দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শুরু করে টাইগাররা।
পাঁচ টেস্টে বাজেভাবে হারের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের কীর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশের মূল সমস্যা ব্যাটিং। প্রতিটি ম্যাচ ব্যাট হাতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাটাররা, তবে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে বোলারদের। ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন পারফরম্যান্স মাটি করে দিচ্ছে বোলারদের সাফল্য।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে বোলাররা। পেসার তাসকিন আহমেদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ওই ইনিংসে ১৫২ রানে অলআউট হয়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৬৪ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন।
ওই ম্যাচের দুই ইনিংসেই ব্যর্থ ছিল টাইগার ব্যাটাররা। বিশেষভাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
ব্যর্থতার পরও ব্যাটারদের পক্ষে কথা বলেছেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কুঁচকির ইনজুরির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মিরাজ।
প্রথম ম্যাচে লজ্জাজনক হারের পর মিরাজ বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা কয়েকটি ভুল করেছি, কিন্তু এমনটা ঘটতেই পারে। আমরা আশা করি পরের ম্যাচে আমরা ঘুড়ে দাঁড়াব।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য