নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় দিয়ে ২০২২ সাল শুরু করলেও ঘরের মাঠে ভারতের কাছে হার দিয়ে বছর শেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠা করেছে টাইগাররা।
সাউথ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের মধ্যে দিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে সাকিব-তাসকিনরা।
২০২২ সালে বাংলাদেশ দলের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের আরও বেশি শক্তিশালী করে তোলার। সে প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ না হলেও, দুই ফরম্যাটেই উল্লেখযোগ্য উন্নতি ছিলো বাংলাদেশের। টান টান উত্তেজনার ম্যাচগুলো জয়ের দিক থেকে এখনও অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট।
এক নজরে কিছু পরিসংখ্যান
এ বছর ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। মাত্র একটি জিতেছে তারা। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় ঐতিহাসিক অর্জন। এরপর আট ম্যাচে হেরেছে ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র হয়েছে।
১৫টি ওয়ানডের মধ্যে ১০টিতে জয় এবং পাঁচটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল প্রথমবারের মতো সাউথ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়।
বছরের শেষ দিকে ঘরের মাঠে ভারতকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো তিন ম্যাচের সিরিজে হারিয়েছে টাইগাররা। তবে ভালো কিছুর সঙ্গে চোখে পড়ার মতো ব্যর্থতাও রয়েছে। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজও হেরেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
২১টি টি-টোয়েন্টি খেলে মাত্র ছয়টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ১৪টি ম্যাচে, এক ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও দুর্বল ছিল টাইগারদের। ২০০৭ সালের পর নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে হারের বৃত্ত থেকে বের হয়ছিল দলটি।
টেস্টে বাংলাদেশ পরিবর্তন নেই
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অবিস্মরনীয় টেস্ট জয়ের পর ভাবা হয়েছিলো টেস্ট ফরম্যাটে শক্ত দল হবে বাংলাদেশ, কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে পরের টেস্টে নিউজিল্যান্ডের কাছে ইনিংস ও ১১৭ রানে হেরে যায় টাইগাররা।
পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কা, সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারে বাংলাদেশ।
টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়েন মুমিনুল
২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত মোমিনুলের অধীনে ১৭ টেস্টে মাত্র তিনটি জয় পায় বাংলাদেশ। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মুমিনুল হকের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য যা যথেষ্টই ছিল। এছাড়া ব্যাট হাতে বাজে পারফরমেন্সের কারণে শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় বাংলাদেশের সেরা টেস্ট এ ব্যাটারকে।
টেস্ট অধিনায়কত্ব পান সাকিব
মুমিনুলের পদত্যাগে টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব দেয়া হয় সাকিব আল হাসানকে। এর আগেও টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব আইসিসিকে না জানানোয় সাকিব নিষিদ্ধ হওয়ায় ২০১৯ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল মুমিনুলকে।
সিনিয়দের অবসর
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম অবসর নেন ২০২২ সালে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে এই ফরম্যাট থেকে বাদ দেয়া হয়। সিনিয়রদের মধ্যে শুধুমাত্র সাকিব আল হাসান দলে জায়গা ধরে রাখেন।
টি-টোয়েন্টি দলকে গড়ে তোলার জন্য অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয় সাকিবকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেয়ার পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেন তামিম। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিয়ে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তামিম লিখেন, ‘আজ থেকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমাকে সাবেক হিসেবে বিবেচনা করুন। সবাইকে ধন্যবাদ।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের পর সংক্ষিপ্ত ভার্সন থেকে অবসর নেন আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম।
টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদুল্লাহর পারফরমেন্সও ছিলো হতাশাজনক। বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছিল তাকে।
নারী ক্রিকেটারদের ২০২২ সাল
বছরটি নারী ক্রিকেটারদের জন্য ছিল অম্লমধুর। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।
ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত খেলতে নেমে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল নারী দল। তবে পরের সব ম্যাচেই হারে তারা।
নারী দল ১০টি ওয়ানডে খেলে সাতটিতে হার ও একটিতে জিতে। দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রেকর্ড ভালো ছিল জ্যোতিদের। ১৭ ম্যাচে ১০টি জয় ছিল।
বছরের শেষ দিকে, নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ম্যাচের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩২ রানে অলআউট হয় নারীরা। সিরিজের পরের দুই ওয়ানডেও হারে দলটি। এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির শিরোপা ধরে রাখতে পারেনি। স্বাগতিক হওয়া সত্বেও বছর টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে।
বর্ষসেরা খেলোয়াড় লিটন দাস
ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে পুরো বছরই দারুণ ছন্দে ছিলেন লিটন দাস। তার কোন প্রতিন্দ্বন্দিই ছিলো না। ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী লিটন।
বছরের শেষের দিকে আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ে ১২ তম স্থানে জায়গা নেনলিটন। যা এখন পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি ব্যাটারের সেরা র্যাংকিং। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে শীর্ষ ১০ এ জায়গা করে নেয়ার দ্বারপ্রান্তে লিটন। এ বছর তিনটি ফরম্যাটে ১৯২১ রান করেছেন তিনি। যা বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে যে কোন বর্ষপঞ্জিতে সর্বোচ্চ এবং ২০২২ সালে বাবর আজমের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে (৫৭৭), টি-টোয়েন্টিতে (৫৪৪) ও টেস্ট (৮০০) অর্থাৎ তিন ফর্মেটেই সর্বোচ্চ রান করেছেন লিটন। প্রতিটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসও তার।
সেরা সাফল্য নারী সাফ জয়
২০২২ সালটি বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের জন্য ঐতিহাসিক একটি বছর। নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের মাধ্যমে গোটা জাতিকে গৌরবান্বিত করে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
২০১৬ সালের পর সাফে এটি ছিল গোলাম রবাবানি ছোটনের শিষ্যদের দ্বিতীয় প্রচেস্টা। সেপ্টেম্বরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে চার বারের রানার আপ স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের মেয়েরা।
এর আগে পাঁচ বারের টানা চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছিল নেপাল। ফলে টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরে এসে আবসান ঘটে ভারতীয় নারীদের একচেটিয়া রাজত্বের।
শিরোপা জয়ের পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সবগুলো পুরস্কারও জিতে নেয় বাংলাদেশের ফুটবলাররা। টাইগ্রেস অধিনায়ক ‘গোল মেশিন’ খ্যাত সাবিনা খাতুন টুর্নামেন্টের ভেল্যুয়েবল প্লেয়ার পুরস্কার জিতেন।
হকি
প্রথমবারের মতো আকর্ষনীয় ফ্র্যাঞ্চাজি টুর্নামেন্ট হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের মাধ্যমে বছরটি বেশ জাঁকজঁমকভাবে শেষ করেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে নতুন এক যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশের হকি।
প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জয় করেছে একমি চট্টগ্রাম। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত রোমঞ্চকর ফাইনালে মোনার্ক মার্ট পদ্মাকে হারিয়ে শিারোপা জয় করে একমি চট্টগ্রাম।
আরচারি
চলতি বছর তুরস্কের কোনিয়ায় ৫৫ দেশের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত ৫ম ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে আরচারিতে তিনটি পদক জিতে বাংলাদেশ।
গেমসে রোকসানা আকতার, শ্যামলী রায় ও পুস্পিতা জামানকে নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ মহিলা কম্পাউন্ড দল রৌপ্য পদক জয় করে।
এছাড়া রিকার্ভের পদক নির্ধারনী ম্যাচে দিয়া সিদ্দিকী, নাসরিন আকতার ও বিউটি রায়ের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ নারী দল ৬-২ সেট পয়েন্টে উজবেকিস্তানের আবদুসসাত্তোরোভা জিওদাখন, আবদুসসাত্তোরোভা জেবিনিসো এবং হামরোয়েভা নিলুফারকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করে।
আরও পড়ুন:ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্জাইচিগুলোর একটি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচায় এই টুর্নামেন্টে যেমন দেখা যায় তারকার ছড়াছড়ি, তেমনই কোটি কোটি টাকার জুয়া বাণিজ্য চলে আইপিএল চলাকালে।
তেমনই আইপিএলে বাজি ধরে বারবার হেরে কোটি রুপির বেশি ঋণী হয়ে পড়েছিলেন ভারতের কর্ণাটকের দর্শন বাবু নামের এক ইঞ্জিনিয়ার। তবে টাকা সময়মতো পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় পাওনাদারদের ক্রমাগত হয়রানিতে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুয়ার নেশায় টাকা ধার করতে করতে ঋণের পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় দর্শনের। তার পরও ধার করে বাজি ধরতে থাকেন তিনি।
দেড় কোটি টাকা ধার নেয়ার পর পাওনাদাররা তার বাড়িতে এসে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিকে শুরু করেন। শুধু তা-ই নয়, ওই প্রকৌশলীকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রী রঞ্জিতাকে হেনস্থা করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
আর পাওনাদারদের হয়রানি সহ্য করতে না পেরেই রঞ্জিতা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ কর্ণাটকের চিত্রদুর্গায় নিজের বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এ ঘটনায় রঞ্জিতার বাবা ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
চিত্রদুর্গের বাসিন্দা দর্শন সেচ দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয়দের দাবি, দর্শন মাঝেমধ্যেই অনলাইনে জুয়া খেলতেন। সেই নেশার কারণে ধারের বোঝা বাড়ছিল তার।
যদিও দর্শনের শ্বশুরের পাল্টা দাবি, তার জামাই নির্দোষ। তাকে এই জুয়া খেলতে বাধ্য করা হয়েছিল। বাধ্য করা হয়েছিল টাকা ধার নিতেও। যাদের কাছে থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন, তারাই এই কাজ করিয়েছিলেন তার জামাইকে দিয়ে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য দর্শনকে লোভ দেখানো হয়। তারপর তাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, দর্শনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেটি রঞ্জিতা লিখেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সুইসাইড নোটে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন রঞ্জিতা।
তার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এরইমধ্যে শিবু, গিরিশ এবং ভেঙ্কটেশ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে নানা গুঞ্জনের মধ্যেই এ নিয়ে কথা বলতে ফেসবুক লাইভে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। ঘোষণা অনুযায়ী তিনি তার কথা রেখেছেন।
লাইভে তামিম জানান, মূলত মোবাইল আর্থিক লেনদেনের প্রতিষ্ঠান নগদের একটি বিজ্ঞাপনের প্রচারণায় ফোনালাপ ফাঁসের অভিনয় করেন তারা। লাইভে তামিম-মিরাজ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজের ওই ফোনালাপ প্রচারিত হয় টিভি চ্যানেলে। পরে এটি ভাইরাল হয় ফেসবুকে।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে তামিম ও মিরাজকে কথা বলতে শোনা যায়। এতে তামিম মুশফিকের কোনো আচরণে ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা জানান মিরাজকে।
সেই ফোনালাপ প্রচার হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অনেকেই পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরনের মন্তব্য করতে থাকেন।
অবশেষে বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি খোলাসা করলেন তামিম। জানালেন, নগদের ক্যাম্পেইনের প্রচারণার জন্য তারা এই নাটক করেছেন।
লাইভে তামিম জানান, ঈদ উপলক্ষে নগদের একটি ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। যেখানে ২৪ জন গ্রাহককে জমি উপহার দেয়া হবে। সেই ক্যাম্পেইনে জয়ের জন্য দুই বা তিনজন করে দল গঠন করে লেনদেন করতে হবে, যে দলে মুশফিককে রেখেছিলেন তামিম। তবে মুশফিক বের হয়ে গেছেন। মূলত এসব ঘিরেই ছিল এই ফোনালাপ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর বনানীতে শহীদ জায়ান চৌধুরী খেলার মাঠে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র পৃষ্ঠপোষকতায় ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইমা) ব্যবস্থাপনায় ‘ওয়ালটন-ইমা মিডিয়া কাপ ক্রিকেট-২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওয়ালটন ইমা কাপ ক্রিকেট রোববার শেষ হয়।
এবারের টুর্নামেন্টে ২৪ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অংশ নেয়। আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় গান বাংলা টিভি। রানার্স-আপ হয় দীপ্ত টিভি ।
এ খেলায় ফাইনালে দীপ্ত টিভিকে ছয় উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় গান বাংলা টিভি। বল হাতে ৩ উইকেট ও ব্যাট হাতে ৩৫ রান করে ম্যাচসেরা হন গান বাংলার শাওন।
ফাইনাল শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
এ সময় পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. রবিউল ইসলাম মিলটন, ইমার সভাপতি আনিসুর রহমান তারেক ও সাধারণ সম্পাদক তছলিম চৌধুরী, গান বাংলা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নি, প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপস, চিত্রনায়ক জায়েদ খান ও নীরব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:গায়ে রঙ-বেরঙের টি-শার্ট, মুখে ভুভুজেলা বাঁশির সুর। শত শত ফুটবল সমর্থক গলা ফাটাচ্ছেন এক নাগাড়ে, সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে হাততালি আর ড্রাম বাজানো তো আছেই। আর যাদের ঘিরে এত এত আবেগের বিস্ফোরণ টার্ফের সবুজ গালিচায়, তারা লড়ছেন বুক চিতিয়ে। এর মাঝে এক ঘণ্টার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে জয় তুলে নেয় এশিয়ান গ্রুপ ফুটবল দল।
এশিয়ান গ্রুপ স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ফুটসাল টার্ফের বৃহস্পতিবার রাতের চিত্র এটি। এশিয়ান গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় হওয়া ‘করপোরেট ফুটসাল কাপ’ টুর্নামেন্টের ফাইনাল ছিল এদিন।
ফাইনালে ম্যাফ সুজ ফুটবল দলকে ৬-২ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে জয় পায় এশিয়ান গ্রুপ ফুটবল দল।
২৪ করপোরেট প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় এই করপোরেট টুর্নামেন্ট। আট গ্রুপে ২৪ করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ফুটবল দল অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার ফাইনাল ম্যাচের মধ্যে দিয়ে পর্দা নামল এই টুর্নামেন্টের।
ফাইনাল ম্যাচ শেষে আয়োজন করা হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউর করিম চৌধুরী।
মেয়র তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘সুন্দর এই আয়োজনের জন্য এশিয়ান গ্রুপকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই খেলার মধ্যে দিয়ে এশিয়ান গ্রুপ প্রমাণ করেছে মাদক-মোবাইলের নেশা থেকে খেলার নেশায় ফিরিয়ে আনা যায়। এই প্রতিযোগিতা বারবার হোক, তরুণ সমাজও উদ্বুদ্ধ হোক। খেলায় যে উদ্দীপনা দেখছি যেন গণজোয়ার ফিরে আসছে।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এতদিন টেলিভিশনে ফুটবল দেখেছি। আজকে প্রথম সামনে সামনে দেখলাম। সত্যি আমি আনন্দিত। ছেলেমেয়েরা মোবাইল-মাদক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা যদি ভালো সুযোগ পায় তাহলে তারা ভালোভাবে গড়ে উঠবে।
‘যে দেশ খেলাধুলায় উন্নত, সেই দেশ এগিয়েও। সেজন্য আমাদের খেলাধুলায় মনোনিবেশ করতে হবে। এশিয়ান গ্রুপকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্যে এশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সালাম বলেন, ‘এশিয়ান গ্রুপ তরুণদের ভালো উদ্যোগের সঙ্গে, খেলাধুলার সঙ্গে সবসময় আছে। সামনের দিনগুলোতেও থাকবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- এশিয়ান গ্রুপের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ সালাম, পরিচালক ওয়াসিফ সালাম, তরুণ উদ্যোক্তা বোরহানুল হাসান চৌধুরী, তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু, কাউন্সিলর মোরশেদুল আলম প্রমুখ।
সবুজ শ্যামল উঁচু-নিচু পাহাড়-টিলায় ঘেরা সিলেট। আর এই পাহাড়-টিলা জুড়ে রয়েছে অজস্র চা-বাগান। সেই চা বাগানের মাঝ পাশে ও মাঝখান দিয়ে থাকা পাহাড়ি পথে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হলো রোমাঞ্চকর এমটিবি সাইকেল রেস প্রতিযোগিতা।
মাউন্টেন সাইক্লিং বিশ্বের বহু দেশে বেশ জনপ্রিয়। পাহাড়ের রাস্তায় বা উঁচু টিলায় আয়োজন করা হয় এই মাউন্টেন সাইক্লিং। সিলেট সাইক্লিং কমিউনিটির আয়োজনে শুক্রবার সকাল ৭টায় মালনিছড়া চা বাগানে এসসিসি এমটিবি চ্যালেঞ্জ-২০২৪ পাওয়ারড বাই গ্লোবাল হেলথকেয়ার সাইকেল রেস প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
দুই বিভাগে সারা দেশের ১৩৫ জন রেসার এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। নারী বিভাগে ৭ জন রেসার প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। পুরুষদের জন্য ২৭ কিলোমিটার আর নারীদের জন্য ছিলো ১৭ কিলোমিটার।
পুরুষ বিভাগে বিজয়ীদের মধ্যে প্রথম হয়েছেন কাওসার পয়দা, দ্বিতীয় এম ডি শহীদ হোসেইন ও তৃতীয় হয়েছেন এম ডি জালাল। আর নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তাবাসসুম এবং দ্বিতীয় হয়েছেন সানজিদা রহমান।
বিজয়ীদের ছাড়াও শীর্ষ ১০ জন রেসারকে নগদ অর্থ পুরস্কার দেয়া হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন সৈয়দ সুহাগ, মামুনুর রহমান, নুসরাত জাহান ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
সিলেট সাইক্লিং কমিউনিটির অ্যাডমিন এবং আয়োজক কমিটির সদস্য ডা. ওরাকাতুল জান্নাত বলেন, ‘আমরা সব সময় তরুণদের নিয়ে কাজ করতে চাই। আমরা চাই খেলাধুলায় তরুণদের আগ্রহ বাড়ুক।
‘সাইক্লিং করলে মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকে। এটি একটি আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের খেলা। আমরা মনে করি সাইক্লিস্টরা এমন রেসের মাধ্যমে নিজেদের তৈরি করতে পারবে। তাই আমরা চেষ্টা করছি সাইক্লিংয়ে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ানোর।’
নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হওয়া তাবাসসুম বলেন, ‘চা বাগানের ভেতরে এমন একটি সুন্দর প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে খুব ভালো লাগছে। এই রেসের মাধ্যমে আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে আর ভালো কিছু করতে পারবো।’
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আয়োজনের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল হেলথকেয়ার সেন্টারের হেড অফ মার্কেটিং এহতেশাম চৌধুরী।
রেস পরিচালনায় ছিলেন ডা. ওরাকাতুল জান্নাত। রেসের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বে ছিলেন সিলেট সাইক্লিং কমিউনিটির অ্যাডমিন সৈয়দ সুহাগ ও হাসান আহমেদ।
মন্তব্য