নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় দিয়ে ২০২২ সাল শুরু করলেও ঘরের মাঠে ভারতের কাছে হার দিয়ে বছর শেষ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠা করেছে টাইগাররা।
সাউথ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের মধ্যে দিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে সাকিব-তাসকিনরা।
২০২২ সালে বাংলাদেশ দলের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের আরও বেশি শক্তিশালী করে তোলার। সে প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ না হলেও, দুই ফরম্যাটেই উল্লেখযোগ্য উন্নতি ছিলো বাংলাদেশের। টান টান উত্তেজনার ম্যাচগুলো জয়ের দিক থেকে এখনও অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট।
এক নজরে কিছু পরিসংখ্যান
এ বছর ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। মাত্র একটি জিতেছে তারা। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয় ঐতিহাসিক অর্জন। এরপর আট ম্যাচে হেরেছে ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র হয়েছে।
১৫টি ওয়ানডের মধ্যে ১০টিতে জয় এবং পাঁচটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল প্রথমবারের মতো সাউথ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়।
বছরের শেষ দিকে ঘরের মাঠে ভারতকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো তিন ম্যাচের সিরিজে হারিয়েছে টাইগাররা। তবে ভালো কিছুর সঙ্গে চোখে পড়ার মতো ব্যর্থতাও রয়েছে। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজও হেরেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
২১টি টি-টোয়েন্টি খেলে মাত্র ছয়টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। হেরেছে ১৪টি ম্যাচে, এক ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও দুর্বল ছিল টাইগারদের। ২০০৭ সালের পর নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল পর্বে হারের বৃত্ত থেকে বের হয়ছিল দলটি।
টেস্টে বাংলাদেশ পরিবর্তন নেই
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অবিস্মরনীয় টেস্ট জয়ের পর ভাবা হয়েছিলো টেস্ট ফরম্যাটে শক্ত দল হবে বাংলাদেশ, কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে পরের টেস্টে নিউজিল্যান্ডের কাছে ইনিংস ও ১১৭ রানে হেরে যায় টাইগাররা।
পরবর্তীতে শ্রীলঙ্কা, সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারে বাংলাদেশ।
টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়েন মুমিনুল
২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত মোমিনুলের অধীনে ১৭ টেস্টে মাত্র তিনটি জয় পায় বাংলাদেশ। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মুমিনুল হকের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য যা যথেষ্টই ছিল। এছাড়া ব্যাট হাতে বাজে পারফরমেন্সের কারণে শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় বাংলাদেশের সেরা টেস্ট এ ব্যাটারকে।
টেস্ট অধিনায়কত্ব পান সাকিব
মুমিনুলের পদত্যাগে টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব দেয়া হয় সাকিব আল হাসানকে। এর আগেও টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব আইসিসিকে না জানানোয় সাকিব নিষিদ্ধ হওয়ায় ২০১৯ সালে অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল মুমিনুলকে।
সিনিয়দের অবসর
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম অবসর নেন ২০২২ সালে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে এই ফরম্যাট থেকে বাদ দেয়া হয়। সিনিয়রদের মধ্যে শুধুমাত্র সাকিব আল হাসান দলে জায়গা ধরে রাখেন।
টি-টোয়েন্টি দলকে গড়ে তোলার জন্য অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয় সাকিবকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দেয়ার পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেন তামিম। নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিয়ে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তামিম লিখেন, ‘আজ থেকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমাকে সাবেক হিসেবে বিবেচনা করুন। সবাইকে ধন্যবাদ।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের পর সংক্ষিপ্ত ভার্সন থেকে অবসর নেন আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম।
টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদুল্লাহর পারফরমেন্সও ছিলো হতাশাজনক। বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছিল তাকে।
নারী ক্রিকেটারদের ২০২২ সাল
বছরটি নারী ক্রিকেটারদের জন্য ছিল অম্লমধুর। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।
ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত খেলতে নেমে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছিল নারী দল। তবে পরের সব ম্যাচেই হারে তারা।
নারী দল ১০টি ওয়ানডে খেলে সাতটিতে হার ও একটিতে জিতে। দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রেকর্ড ভালো ছিল জ্যোতিদের। ১৭ ম্যাচে ১০টি জয় ছিল।
বছরের শেষ দিকে, নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ম্যাচের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩২ রানে অলআউট হয় নারীরা। সিরিজের পরের দুই ওয়ানডেও হারে দলটি। এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির শিরোপা ধরে রাখতে পারেনি। স্বাগতিক হওয়া সত্বেও বছর টুর্নামেন্টে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে।
বর্ষসেরা খেলোয়াড় লিটন দাস
ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে পুরো বছরই দারুণ ছন্দে ছিলেন লিটন দাস। তার কোন প্রতিন্দ্বন্দিই ছিলো না। ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী লিটন।
বছরের শেষের দিকে আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ে ১২ তম স্থানে জায়গা নেনলিটন। যা এখন পর্যন্ত একজন বাংলাদেশি ব্যাটারের সেরা র্যাংকিং। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে শীর্ষ ১০ এ জায়গা করে নেয়ার দ্বারপ্রান্তে লিটন। এ বছর তিনটি ফরম্যাটে ১৯২১ রান করেছেন তিনি। যা বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে যে কোন বর্ষপঞ্জিতে সর্বোচ্চ এবং ২০২২ সালে বাবর আজমের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে (৫৭৭), টি-টোয়েন্টিতে (৫৪৪) ও টেস্ট (৮০০) অর্থাৎ তিন ফর্মেটেই সর্বোচ্চ রান করেছেন লিটন। প্রতিটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসও তার।
সেরা সাফল্য নারী সাফ জয়
২০২২ সালটি বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের জন্য ঐতিহাসিক একটি বছর। নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের মাধ্যমে গোটা জাতিকে গৌরবান্বিত করে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
২০১৬ সালের পর সাফে এটি ছিল গোলাম রবাবানি ছোটনের শিষ্যদের দ্বিতীয় প্রচেস্টা। সেপ্টেম্বরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে চার বারের রানার আপ স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশের মেয়েরা।
এর আগে পাঁচ বারের টানা চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছিল নেপাল। ফলে টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরে এসে আবসান ঘটে ভারতীয় নারীদের একচেটিয়া রাজত্বের।
শিরোপা জয়ের পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সবগুলো পুরস্কারও জিতে নেয় বাংলাদেশের ফুটবলাররা। টাইগ্রেস অধিনায়ক ‘গোল মেশিন’ খ্যাত সাবিনা খাতুন টুর্নামেন্টের ভেল্যুয়েবল প্লেয়ার পুরস্কার জিতেন।
হকি
প্রথমবারের মতো আকর্ষনীয় ফ্র্যাঞ্চাজি টুর্নামেন্ট হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের মাধ্যমে বছরটি বেশ জাঁকজঁমকভাবে শেষ করেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে নতুন এক যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশের হকি।
প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জয় করেছে একমি চট্টগ্রাম। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত রোমঞ্চকর ফাইনালে মোনার্ক মার্ট পদ্মাকে হারিয়ে শিারোপা জয় করে একমি চট্টগ্রাম।
আরচারি
চলতি বছর তুরস্কের কোনিয়ায় ৫৫ দেশের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত ৫ম ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে আরচারিতে তিনটি পদক জিতে বাংলাদেশ।
গেমসে রোকসানা আকতার, শ্যামলী রায় ও পুস্পিতা জামানকে নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ মহিলা কম্পাউন্ড দল রৌপ্য পদক জয় করে।
এছাড়া রিকার্ভের পদক নির্ধারনী ম্যাচে দিয়া সিদ্দিকী, নাসরিন আকতার ও বিউটি রায়ের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ নারী দল ৬-২ সেট পয়েন্টে উজবেকিস্তানের আবদুসসাত্তোরোভা জিওদাখন, আবদুসসাত্তোরোভা জেবিনিসো এবং হামরোয়েভা নিলুফারকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করে।
আরও পড়ুন:দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য