লিওনেল মেসির হাত ধরে ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটাল আর্জেন্টিনা। মেসির ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সবকিছু অর্জন করলেও বাকি ছিল শুধু বিশ্বকাপ। এবার বিশ্বকাপ জয়ের মধ্য দিয়ে মেসি পৌঁছে গেছেন অনন্য এক মাইলফলক ‘ট্রিপল ক্রাউন’ ক্লাবে।
৩৫ বছর বয়সী মেসির আগে এমন গৌরব অর্জন করেছেন ৯ জন ফুটবলার। এ মাইলফলক স্পর্শ করা সবাই বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস লিগ ও অন্তত একবার ব্যালন ডর জিতেছেন।
মেসি ৪ বার ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও সাতবার ব্যালন ডর জিতলেও বাকি ছিল শুধু একটি বিশ্বকাপ জয়। যা এবার তিনি কাতার বিশ্বকাপের মধ্য দিয়েই অর্জন করেছেন।
মেসির আগে এ মাইলফলক স্পর্শ করা সাবেক ব্রাজিলীয়ান তারকা কাকা স্বাগত জানিয়েছেন তাকে। কাকা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘ক্লাবে স্বাগতম, লিও মেসি।’
‘ট্রিপল ক্রাউন’ ক্লাবের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন স্যার ববি চার্লটন, যিনি ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে বিশ্বকাপ জয়, ১৯৬৮ সালের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ইউরোপিয়ান কাপ এবং ১৯৬৬ সালের ব্যালন ডর জিতেছিলেন।
জার্মানির গ্রেট ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার ১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। পরে তিনি বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে তিনটি ইউরোপীয় কাপ ও ১৯৭২ এবং ১৯৭৬ সালে ব্যালন ডর জেতেন।
তার সতীর্থ জার্মান কিংবদন্তি গার্ড মুলারও এ ক্লাবে আছেন। তিনি ১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপও জিতেছিলেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত টানা ইউরোপিয়ান কাপ এবং ১৯৭০ সালে ব্যালন ডর জিতেন।
১৯৮২ সালের বিশ্বকাপ, ১৯৮৫ ইউরোপিয়ান কাপ এবং ১৯৮২ সালে ব্যালন ডর হাতে পাওয়ার পর পাওলো রসি এ তালিকার একমাত্র ইতালীয় প্রতিনিধি।
জিনেদিন জিদান ক্লাবের আরেক সদস্য যিনি ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ, ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ১৯৯৮ সালে ব্যালন ডর জিতেন।
ব্রাজিলের ত্রয়ী রোনালদিনিও, রিভালদো ও কাকা সবাই ক্লাবের সদস্য কারণ তারা ২০০২ বিশ্বকাপ জিতেছে এবং তাদের নামে একাধিক চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ব্যালন ডর রয়েছে।
আরও পড়ুন:Brazil legend Kaka welcomes Lionel Messi to elite 'Triple Crown' club https://t.co/JLJnQ5LB4X
— MailOnline Sport (@MailSport) December 31, 2022
দক্ষিণ কোরিয়ার এক ফুটবলারকে বর্ণবাদী মন্তব্য করে শাস্তি পেয়েছেন চলতি মৌসুমে প্রথমবার সেরিআ-তে উঠে আসা ইতালিয়ান ক্লাব কোমোর ডিফেন্ডার মার্কো কুর্তো। ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে ১০ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ঘটনাটি গত জুলাই মাসের। ইংলিশ ক্লাব উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে প্রাক-মৌসুম প্রীতি ম্যাচে এই কাণ্ড করে বসেন কুর্তো। স্পেনের মারবেইয়া শহরে ওই ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে উলভস ফরোয়ার্ড হোয়াং হি-চ্যানকে কিছু একটা বলেন তিনি। এরপর কোমোর ফুটবলারদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন উলভসের খেলোয়াড়রা। এমনকি কোমোর এক খেলোয়াড়কে ঘুষি মেরে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় উলভারহ্যাম্পটনের উইঙ্গার দানিয়েল পোদেন্সকে।
ওই ঘটনায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কুর্তোকে এই শাস্তি দিয়েছে ফিফা। তবে শাস্তির অর্ধেকটা এখন থেকেই কার্যকর হলেও বাকিটা দু’বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
অবশ্য সে সময় কোমোর দাবি ছিল, অপমানজনক কোনো কিছুই কুর্তো বলেননি। উলভারহ্যাম্পটনের খেলোয়াড়রাই ‘তিলকে তাল’ বানিয়েছেন। হোয়াংকে তিনি স্রেফ ‘জাকি চ্যান’ বলেছিলেন। কারণ তিনি শুনেছিলেন, উলভসের খেলোয়াড়রা তাকে ‘চ্যানি’ (জ্যাকি চ্যানের ডাকনাম) নামেই ডাকেন।
তবে তদন্তে কুর্তোর দোষ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়ে ফিফার এক মুখপাত্র বলেন, ‘দশ ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি তাকে সামাজিক সেবামূলক কাজ, ফিফা অনুমোদিত কোনো সংস্থায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অংশ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
ফিফার এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে উলভারহ্যাম্পটন। ক্লাবটির ক্রীড়া পরিচালক ম্যাট ওয়াইল্ড এ বিষয়ে বলেছেন, ‘এই শাস্তি বর্ণবাদ ও যে কোনো ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে ফুটবলারদের একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়।’
প্রসঙ্গত, কোমো থেকে চলতি মৌসুমে ইতালির দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব চেজেনায় ধারে খেলছেন কুর্তো।
আরও পড়ুন:বসুন্ধরা কিংস ফুটবল একাডেমি যাত্রা শুরু করেছে।
শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে সব ধরনের আধুনিকতা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা ক্লাবটি এ একাডেমির মধ্য দিয়ে আরেকটি স্বপ্ন পূরণের পথে পা বাড়াল।
বৃষ্টির মাঝেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা কিংসের অনুশীলন মাঠে হাজির হয় একঝাঁক শিশু-কিশোর। তাদের আগামীর তারকা বানানোই একাডেমির লক্ষ্য। কেউ বাবা, আবার কেউবা মায়ের হাত ধরে আসেন বসুন্ধরা কিংসের স্বপ্নের একাডেমিতে নিজের ছাপ রাখতে।
বয়সভিত্তিকের তিন ক্যাটাগরিতে (৬-১১, ১১-১৫ ও ১৫-১৮ বছর) প্রায় ৭০ জনকে নিয়ে শুরু হচ্ছে বসুন্ধরা কিংস ফুটবল একাডেমির কার্যক্রম।
বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘আজকে আমাদের একাডেমির যাত্রা শুরু হলো। এ একাডেমি চালু করা আমাদের স্বপ্ন বলতে পারেন।
‘যদিও এখনই পূর্ণাঙ্গ একাডেমি বলা যাবে না। তারপরও যাত্রা শুরু হলো। আমরা আশাবাদী, এখানে যারা অনুশীলন করবে, তারা একসময় বসুন্ধরা কিংসের মূল দলেও সুযোগ পাবে।’
সপ্তাহে তিন দিন দেয়া হবে ফুটবল প্রশিক্ষণ। যদিও শুরুতে অনাবাসিক হলেও এক বছরের মধ্যে আবাসিক অনুশীলন শুরু করবে কিংস।
ইমরুল হাসান বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক পর্যায়ে অনাবাসিক রেখেছি। যদিও আবাসিকের জন্য সাড়া বেশি ছিল। আমরা হয়তো ছয় মাস বা এক বছরের মধ্যে আবাসিকে যাব।’
শুরুতে ভর্তি হতে একজনের জন্য খরচ করতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। মাসিক বেতন ছয় হাজার করে, তবে প্রতিভাবান ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেয়া হবে।
সারা দেশের বিভাগীয় আট শহরে ট্যালেন্ট হান্ট করে প্রতিভাবান খুদে ও কিশোর ফুটবলার খুঁজে বের করা হবে বলে জানান ইমরুল।
তিনি বলেন, ‘শুধু ঢাকা নয়, আটটি বিভাগীয় শহরে ট্যালেন্ট হান্ট করব। সেখানে যদি প্রতিভাবান খেলোয়াড় পাই, তাহলে তাদের সম্পূর্ণ বিনা বেতনে আমাদের একাডেমিতে সুযোগ করে দেব। যখন আবাসিক ক্যাম্প শুরু হবে, তখন তাদের নিয়ে আসা হবে।’
আরও পড়ুন:ম্যাচের ৭২ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর শেষ সময়ে অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ। এরপর টাইব্রেকারে পাকিস্তানকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে গেল সাইফুল বারী টিটুর দল।
শনিবার ভুটানের চ্যাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র করার পর টাইব্রেকারে ৮-৭ ব্যবধানে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
এদিন ম্যাচের ৩২তম মিনিটে কর্নার থেকে আসা ক্রসে মাথা লাগিয়ে পাকিস্তানকে এগিয়ে নেন শাহাব আহমেদ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন আব্দুল রেহমান।
ম্যাচের ৬০তম মিনিটে বক্সের মধ্যে সিয়াম অমিতের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর স্পট কিক থেকে নির্ভুল শটে ঠিকানা খুঁজে নেন রেহমান।
দুই গোল হজম করেও হতাশ না হয়ে ব্যবধান কমাতে মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশের যুবারা। এর ফল তারা পেয়ে যায় ১২ মিনিট পরই।
৭২তম মিনিটে বদলি নামা মানিকের কোনাকুনি শট কর্নারের বিনিময়ে প্রতিহত করেন পাকিস্তানের গোলরক্ষক। তবে কর্নার থেকে আসা ক্রস থেকে বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর উপলক্ষ এনে দেন ফরোয়ার্ড মিঠু চৌধুরী।
৮০তম মিনিটে আরও একটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেন মানিক। তবে অতিরিক্ত সময়ের চতুর্থ মিনিটে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে যায় বাংলাদেশ। রিফাত কাজীর বাড়ানো ক্রসে মানিকের নিখুঁত শটে শেষ সময়ে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ।
খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রথম পাঁচটি শট থেকেই গোল আদায় করে নেয় দু’দল। অষ্টম শটের সময় নৈপুণ্য দেখান বদলি নামা গোলরক্ষক আলিফ রহমান ইমতিয়াজ। পাকিস্তানের আব্দুল ঘানির শট তিনি ডান দিকে ঝাঁপিয়ে সেভ করার পর নিজের কাজ সারেন আশিকুর রহমান। ফলে ৮-৭ গোলের ব্যবধানে শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকার শেষে জয়ের আনন্দে মাতে বাংলাদেশ।
আগামী সোমবার শিরোপার লড়াইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। শনিবার প্রথম সেমিফাইনালে নেপালকে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত।
আরও পড়ুন:লাতিন আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন, সেসঙ্গে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও। তবে ম্যাচজুড়ে নিজেদের ছায়া হয়ে রইল আর্জেন্টিনা। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারের শোধ তুলল কলম্বিয়া।
কলম্বিয়ার এস্তাদিও মেত্রোপলিতানো রবের্তো মেলেন্দেসে বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ২৫তম মিনিটে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন ডিফেন্ডার ইয়ের্সন মসকেরা। বিরতির পরপরই দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান নিকোলাস গন্সালেস। তবে ম্যাচের ৬০তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি করেন হামেস রদ্রিগেস।
এই ম্যাচে একটি করে গোল ও অ্যাসিস্টে সবশেষ ৮ ম্যাচে ১০ গোলে অবদান (৭ অ্যাসিস্ট ও ৩ গোল) রাখলেন ৩৩ বছর বয়সী এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
এর ফলে ১২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হারের তেতো স্বাদ পেলেন লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। সবশেষ তারা হারে গত নভেম্বরে, বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচেই উরুগুয়ের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে। তার পরের ১২ ম্যাচের মধ্যে ১১টিই জিতেছে আর্জেন্টিনা, ড্র করেছে মাত্র একটি ম্যাচে।
তাছাড়া ২০২৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় হার এটি।
অন্যদিকে গত জুলাইয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে ১-০ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল কলম্বিয়ার। তারপর প্রথম দেখাতেই চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে সেই ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিল তারা।
প্রসঙ্গত, চোটের কারণে লিওনেল মেসিকে ছাড়াই বিশ্বকাপ বাছাইয়ের চলমান পর্বের ম্যাচগুলো খেলতে আসে আর্জেন্টিনা। চিলিকে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে মেসি-পরবর্তী যুগের শুভারম্ভের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন দে পল-দিবালারা। তবে পরের ম্যাচেই খেই হারিয়ে ফেলল স্কালোনির দল।
এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রইল কলম্বিয়া। ৮ ম্যাচের ৬টি জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রয়েছে আর্জেন্টিনা। আর সমান ম্যাচে ৪টি করে জয় ও ড্রয়ে কলম্বিয়ার পয়েন্ট ১৬।
আরও পড়ুন:বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে শুক্রবার (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে) প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে উরুগুয়ে। ওই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে বিদায়ের ঘোষণা দিয়ে দিলেন আয়াক্স, লিভারপুল হয়ে বার্সেলোনা ও আতলেতিকো মাদ্রিদ ঘুরে যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধু লিওনেল মেসির সঙ্গে ফুটবল খেলা, ফুটবলে অভিনব সব ঘটনার জন্ম দেয়া সুয়ারেস।
তবে তার এই বিদায় ঘোষণা একেবারে অপ্রত্যাশিত নয়। উজ্জ্বল সময় পার করে শেষলগ্নে এসে এমনিতেই তার ক্যারিয়ারের আলো নিভু নিভু। তাই বিদায়বেলায় তার পরাণ যেমন পুড়ছে, তেমনই গর্ববোধ করছেন ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা ফুটবলার।
সুয়ারেস বলেন, ‘অবসরের সঠিক সময় জেনে, ঠিক সময়ে বিদায় নেয়ার চেয়ে গর্বের আর কিছু নেই। সৌভাগ্যবশত জাতীয় দল থেকে এমন সময়ে আমি অবসর নিচ্ছি বলে মনে করি, যখন আমি জানি যে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।’
‘বয়স ৩৭ বছর হয়ে গেছে। আমি জানি যে, পরের বিশ্বকাপে খেলা আমার জন্য কঠিন হতো। তবে এটা ভেবে স্বস্তি পাচ্ছি যে চোটের কারণে বা পারফরম্যান্সের কারণে নয়, নিজে থেকেই সরে দাঁড়াচ্ছি।’
সুয়ারেজ বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি অবশ্যই কঠিন; বিদায় বলা কখনোই সহজ নয়। তবে যে সান্তনাটুকু সঙ্গে নিয়ে আমি (পরবর্তী) জীবন কাটাব, তা হচ্ছে- শেষ ম্যাচ পর্যন্ত নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছি। এ কারণেই আমার মনে হয়েছে যে, এখনই সময়।’
২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ৩-১ গোলের জয় দিয়ে উরুগুয়ের জার্সিতে পথচলা শুরু হয়েছিল সুয়ারেসের। তারপর থেকেই জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। সূত্র: ইউএনবি
আরও পড়ুন:স্বাগতিক নেপালকে অনেকটা বিধ্বস্ত করে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে গ্রুপ পর্বে হারের মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে যুবারা।
কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে বুধবার অনুষ্ঠিত ফাইনালে ৪-১ গোলের বড় ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টাইগাররা। সে সুবাদে প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে এলো বাংলাদেশের।
ম্যাচের প্রথমার্ধে মিরাজুলের গোলে লিড নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে মিরাজুল ও রাহুলের গোলে ৭০ মিনিটে লিড ৩-০ করে বাংলাদেশ। ৮০ মিনিটে নেপাল এক গোল পরিশোধ করে। রেফারি ১০ মিনিট ইনজুরি সময় দেন। শেষদিকে আরও এক গোলে ব্যবধানটা ৪-০ করে শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের যুব পর্যায়ে বাংলাদেশের ছেলেদের এটি প্রথম শিরোপা। প্রতিযোগিতার ষষ্ঠ আসরে এসে শেষ হলো তাদের অপেক্ষার পালা। আগের পাঁচটি আসরের দুটি ছিল অনূর্ধ্ব-১৮, দুটি ছিল অনূর্ধ্ব-১৯ ও একটি ছিল অনূর্ধ্ব-২০ পর্যায়ের।
এবারের আসরে বাংলাদেশের শুরুটাই ছিল দুর্দান্ত। শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে অভিযান শুরু করে। এরপর নেপালের কাছে ২-১ গোলে হেরে গ্রুপ রানার্সআপ হয়। আর সেমিফাইনালে তিন আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারতের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্রয়ের পর টাইব্রেকারে জিতে ফাইনালে পৌঁছে যায় লাল-সবুজ পতাকার দলটি।
দুর্দান্ত পারফর্ম করা মিরাজুল নিজে দুটি গোলা করার পাশাপাশি অ্যাসিস্ট করেন রাব্বির গোলে। তার জ্বলে ওঠার আগে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চললেও ম্যাচে আধিপত্য করছিল নেপালই। তবে প্রথমার্ধের শেষদিকে বদলে যায় চিত্র। মিরাজুলের ফ্রি-কিক থেকে গোল পেয়ে ম্যাচের লাগাম চলে আসে বাংলাদেশের হাতে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে উজ্জীবিত ফুটবল উপহার দেয় বাংলাদেশ। ৫৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মিরাজুলই।
৭০তম মিনিটে শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ের ভাগ্য একরকম মুঠোয় নিয়ে ফেলে মারুফুলের শিষ্যরা। বক্সে মিরাজুলের পাসে বল পেয়ে ডান পায়ের শটে নিশানা ভেদ করেন রাহুল। ১০ মিনিট পর নেপাল ব্যবধান কমায় সমীরের কল্যাণে।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে নোভার গোলে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৪-১ ব্যবধানে শিরোপা জিতে নেয় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। সোমবার নেপালের আনফা কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশের যুবারা।
বাংলাদেশ ইতোপূর্বে তিনবার সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও উঠলেও শিরোপার দেখা মেলেনি। ভারতের কাছে দুই ও নেপালের কাছে একবার ফাইনালে হেরে স্বপ্ন ভেঙে যায় বাংলাদেশের।
এবার সেই ভারতকে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় করে বাংলাদেশ তৈরি করেছে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা। বুধবার ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে হারাতে পারলেই অধরা ট্রফিটি উঁচিয়ে ধরার সুযোগ মিলবে।
আগের বিকেলে প্রথম সেমিফাইনাল জিতে প্রতিপক্ষের অপেক্ষায় ছিল নেপাল। স্বাগতিক যুবারা পেয়েছে বাংলাদেশকে। একই গ্রুপে ছিল বাংলাদেশ ও নেপাল। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল নেপাল।
বাংলাদেশ সেমিফাইনাল জিতেছে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলে। যুবাদের টুর্নামেন্ট বলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলা ছিল না। ৯০ মিনিট পর সরাসরি টাইব্রেকারে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়।
সেমিফাইনালে ভারত প্রতিপক্ষ হওয়ায় বাংলাদেশের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জই ছিল। সেই চ্যালেঞ্জ জিতে বাংলাদেশ আরও একবার যুবাদের সাফের ফাইনালে।
নেপালের কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে এই সেমিফাইনালে প্রথমার্ধে বাংলাদেশ অপেক্ষাকৃত ভালো ফুটবল খেলে লিড নিয়েছিল। ৩৫ মিনিটে বাম দিক থেকে রাব্বি হোসেন রাহুলের নেয়া শট ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি ভারতের গোলরক্ষক। বলে চলে যায় আসাদুল মোল্লার সামনে। তিনি প্লেসিং শটে গোল আদায় করে নেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। নেপাল যাওয়ার আগে মাত্র ২ সপ্তাহ অনুশীলন করা বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের বিপক্ষে বুক চিতিয়ে লড়তে পারেনি।
ভারতের যুবারা একের পর এক আক্রমণ করে ব্যতিব্যস্ত করে ফেলে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। ৭৫ মিনিটে গোল দিয়ে তারা ম্যাচেও ফেরে। দুবার ভারতের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের পোস্ট আর ক্রসবারে লেগে।
দুইবার অল্পের জন্য বাইরে গেছে ভারতের ফরোয়ার্ডদের শট। এক সময়ে মনে হয়েছিল নির্ধারিত সময়েই ম্যাচ বের করে নেবে ভারত। তাদের ফরোযার্ডদের ব্যর্থতা, বাংলাদেশের ভাগ্য আর রক্ষণভাগের দৃঢ়তা মিলে ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়ায়।
বাংলাদেশের জয়ের নায়ক বদলি গোলরক্ষক আসিফ। এক নম্বর গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ করলে পোস্ট সামলাতে নেমেছিলেন তিনি।
ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে দায়িত্বটা যেন নিজেই কাঁধে তুলে নেন এই বদলি গোলরক্ষক। টাইব্রেকারে ভারতের নেয়া প্রথম শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেয়ার পরই ম্যাচের ভাগ্য কিছুটা ঝুলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে।
বাংলাদেশ টানা ৪ শটে গোল করলে ভারতের শেষ শটটি হয়ে যায় চ্যাম্পিয়নদের জন্য টিকে থাকার শেষ সুযোগ। কিন্তু ভারতকে সেই সুযোগ দেননি আসিফ। তাদের পঞ্চম শটটি রুখে দিয়ে কাঠমান্ডুর মাঠে ফাইনালে তুলে দেন বাংলাদেশকে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য