বিশ্বকাপে চোটে জর্জরিত ব্রাজিল স্কোয়াড। তারকা খেলোয়াড় নেইমার ও ডিফেন্ডার দানিলোর চোট তাদের ছিটকে দিয়েছে লম্বা সময়ের জন্য। আশঙ্কা রয়েছে নেইমার বিশ্বকাপে আর নামতে পারবেন না।
এমন সময় আরেকটি দুঃসংবাদ পেলেন ব্রাজিলের কোচ লিওনার্দো তিতে। চোটের কারণে বিশ্বকাপে আর খেলা হচ্ছে না ফরোয়ার্ড গাব্রিয়েল জেসুসের।
ক্যামেরুনের বিপক্ষে ম্যাচের শেষে হাঁটুতে ব্যথা শুরু হয় জেসুসের। ক্রীড়া সাংবাদিক ও ইউরোপিয়ান ফুটবল বিশেষজ্ঞ ফাব্রিজিও রোমানো এক টুইটে দাবি করেন যে স্ক্যানে দেখা গেছে জেসুসের চোট গুরুতর।
জেসুস ও ব্রাজিল দলের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে রোমানো এ-ও জানিয়েছেন যে তার ব্যথা এখনও আছে এবং পুরো সেরে উঠতে অন্তত চার সপ্তাহ সময় লাগবে।
তেমনটা হলে জানুয়ারির আগে মাঠে নামতে পারবেন না তিনি। অর্থাৎ বিশ্বকাপে আর খেলা হবে না তার।
ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমারও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেসুসের আঘাতের খবর। তবে কতটা গুরুতর তার চোট সেটা প্রকাশ করেননি।
শুধু জেসুসই নন, ডিফেন্ডার আলেক্স তেলেসও চোট পেয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন:Gabriel Jesus will miss the rest of the World Cup, sources close to player and Brazil confirm. He has pain in his knee and won’t be able to be back during the competition. 🚨🇧🇷 #Qatar2022
— Fabrizio Romano (@FabrizioRomano) December 3, 2022
Gabriel’s expected to return in January with Arsenal. pic.twitter.com/TSZxO9X4dY
ঐতিহ্যবাহী সান মামেসে ম্যাচ শুরুর পর থেকেই নিজেদের জাত চেনাতে থাকেন অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের ফুটবলাররা। প্রথম মিনিট থেকেই রিয়াল মাদ্রিদকে চেপে ধরে গোল আদায়ের চেষ্টা চালান তারা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম গোলটিও পেয়ে যায় বিলবাও।
ওই গোলের ১৫ মিনিট পরই বিলবাও গোলরক্ষকের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে দুর্বল স্পটকিকের কারণে হুলেন আগিরেসাবালাকে বোকা বানাতে ব্যর্থ হন তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে।
মিনিট দশেক পর বেলিংহ্যামের গোলে রিয়াল মাদ্রিদ সমতায় ফিরলেও ম্যাচটি ২-১ গোলে হেরে বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমানোর সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে লস ব্লাঙ্কোসদের।
ম্যাচ হেরে, বিশেষ করে পেনাল্টি থেকে গোল আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন পিএসজির পাঠ চুকিয়ে চলতি মৌসুমে রিয়াল শিবিরে যোগ দেয়া এমবাপ্পে।
এ নিয়ে পরপর দুই ম্যাচে দুটি পেনাল্টি নিয়ে ব্যর্থ ফরাসি স্ট্রাইকার। সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারের ম্যাচেও পেনাল্টি মিস করেন এমবাপ্পে। মাঝে লা লিগায় গেটাফের বিপক্ষে জয়ের রাতে আরও একটি পেনাল্টি পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সেটি নিজে না নিয়ে জুড বেলিংহ্যামকে দেন ২৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। তা থেকে দলকে গোলও এনে দেন বেলিংহ্যাম। তবে পরের ম্যাচেই পেনাল্টি পেয়ে নিজে শট নিয়ে ব্যর্থ এমবাপ্পে।
এর ফলে ক্যারিয়ারে এই প্রথম এমবাপ্পে এক সপ্তাহে দুটি পেনাল্টি মিস করলেন। আর পিএসজি ও রিয়াল মিলিয়ে এ বছর তার পেনাল্টি মিসের সংখ্যা মোট চারটি। এক বছরে চারটি পেনাল্টি মিস করার ঘটনাও তার ক্যারিয়ারে এই প্রথম।
টানা দুই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করায় ‘ট্রল ফুটবল’ নামের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি মিম শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে একজন মিস ইউনিভার্সের শরীরের ওপর এমবাপ্পের মাথা লাগিয়ে ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- আমাদের নতুন ‘মিস পেনাল্টি’।
তবে এমন কঠিন সময়েও ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ফ্রান্সের ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘বাজে ফল। যে ম্যাচে ছোটখাটো বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে এটি বড় ধরনের ভুল। এর পুরোটা দায় আমি নিচ্ছি। কঠিন মুহূর্ত! তবে পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার এবং আমি কে, তা দেখিয়ে দেওয়ার এখনই সেরা সময়।’
তবে শিষ্যের কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও এখনই তাকে কাঠগড়ায় তুলতে চান না এই ইতালিয়ান।
ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোচ বলেন, ‘ওর সঙ্গে আমার এখনও কথা হয়নি। তবে পেনাল্টি দিয়ে আমি একজন খেলোয়াড়কে মূল্যায়ন করতে পারি না। নিশ্চিতভাবেই সে হতাশ ও ভারাক্রান্ত। তবে আমাদের নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
‘জানি, সে তার সেরা ফর্মে নেই। কিন্তু (দলে) মানিয়ে নিতে তাকে আমাদের সময় দিতে হবে। এরই মধ্যে সে (মাদ্রিদের জার্সিতে) ১০ গোল করেছে। আরও ভালো করার সামর্থ্য সে রাখে এবং সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:কোপা আমেরিকা জয় এবং ইন্টার মায়ামির হয়ে মাঠে দারুণ সময় কাটালেও এ বছরের ব্যালন ডি’অরের ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন না লিওনেল মেসি। তবে বছরজুড়ে মেসির কাজের স্বীকৃতি দিতে ভোলেনি বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ২০২৪ সালে ফুটবলের বর্ষসেরার পুরস্কার ‘দ্য বেস্ট’-এর তালিকায় রয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
শুক্রবার ফিফার ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের দ্য বেস্টের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ১১ জনের ওই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে মেসির নাম।
মেসি ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী রদ্রি। তালিকায় রিয়াল মাদ্রিদেরই রয়েছেন ছয়জন- ভিনিসিউস জুনিয়র, জুড বেলিংহ্যাম, দানি কারভাহাল, ফেদেরিকো ভালভার্দে, টনি ক্রুস ও কিলিয়ান এমবাপে।
এছাড়াও ম্যানচেস্টার সিটির আর্লিং হলান্ড, বেয়ার লেভারকুসেনের ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস ও বার্সেলোনার বিস্ময়বালক লামিন ইয়ামাল জায়গা করে নিয়েছেন এই তালিকায়।
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ প্রচলনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ বারই মনোনয়ন পেলেন মেসি। এর মধ্যে তিনি পুরস্কারটি জিতেছেন তিনবার- ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সালে।
‘দ্য বেস্ট’ পুরুষ ফুটবলারের পাশাপাশি আরও ১০টি পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। এর মধ্যে রয়েছে বর্ষসেরা নারী ফুটবলার, বর্ষসেরা কোচ, বর্ষসেরা গোলরক্ষক, বর্ষসেরা একাদশ ও বর্ষসেরা গোলের পুরস্কার। এছাড়া দেয়া হবে ফিফা ফ্যান অ্যাওয়ার্ড।
পুরস্কারগুলোর প্রতিটির জন্য ভোট দিতে পারেন ভক্ত-সমর্থকরা। সেরা খেলোয়াড়, সেরা কোচ ও সেরা গোলরক্ষক নির্বাচনে মোট ভোটের এক-চতুর্থাংশ রাখা হয়েছে দর্শকদের জন্য। বাকি তিন ভাগ দেন ফিফার সদস্য দেশগুলোর অধিনায়ক, কোচ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। সেরা গোল ও একাদশ নির্বাচনে ভক্তদের ভোটের হার অর্ধেক।
ফিফার ওয়েবসাইটে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোট দেয়া যাবে।
২০২৩ সালের ২১ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি বিভাগের সংক্ষিপ্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। ‘দ্য বেস্ট’-এর ১১ জনের মধ্যে ইউরোপের বাইরের ক্লাব থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন শুধু মেসিই।
মেসিকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাখ্যায় ফিফা বলেছে, বয়স ৩৭ হয়ে গেলেও ইন্টার মায়ামি ও আর্জেন্টিনা দলে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন মেসি। তার অনুপ্রেরণামূলক পারফরম্যান্সে ২০২৩ লিগস কাপের পর রেকর্ডসংখ্যক পয়েন্ট অর্জন করে ২০২৪ সালের সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে মায়ামি। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে তার নেতৃত্বে কোপা আমেরিকা জিতেছে আর্জেন্টিনা। এমনকি বিশ্বকাপ বাছাইয়ের লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে জয় দিয়ে বছর শেষ করা আর্জেন্টিনা রয়েছে পয়েন্ট টেবিলের চূড়ায়, আর এই আসরে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ গোল নিয়ে সবার উপরে রয়েছেন মেসি।
এক নজরে ‘দ্য বেস্ট’-এর সংক্ষিপ্ত তালিকা
সেরা পুরুষ ফুটবলার: জুড বেলিংহ্যাম (ইংল্যান্ড/রিয়াল মাদ্রিদ), দানিয়েল কারভাহাল (স্পেন/রিয়াল মাদ্রিদ), আর্লিং হলান্ড (নরওয়ে/ম্যানচেস্টার সিটি), টনি ক্রুস (জার্মানি/রিয়াল মাদ্রিদ), কিলিয়ান এমবাপে (ফ্রান্স/রিয়াল মাদ্রিদ), লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা/ইন্টার মায়ামি), রদ্রিগো এরনান্দেস (স্পেন/ম্যানচেস্টার সিটি), ফেদেরিকো ভালভার্দে (উরুগুয়ে/রিয়াল মাদ্রিদ), ভিনিসিউস জুনিয়র (ব্রাজিল/রিয়াল মাদ্রিদ), ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস (জার্মানি/বেয়ার লেভারকুসেন) ও লামিন ইয়ামাল (স্পেন/বার্সেলোনা)।
সেরা কোচ: শাবি আলোনসো (বেয়ার লেভারকুসেন), কার্লো আনচেলত্তি (রিয়াল মাদ্রিদ), লুইস দে লা ফুয়েন্তে (স্পেন), পেপ গার্দিওলা (ম্যানচেস্টার সিটি) ও লিওনেল স্কালোনি (আর্জেন্টিনা)।
সেরা গোলরক্ষক: জানলুইজি দোন্নারুম্মা (ইতালি/পিএসজি), এদেরসন মোরায়েস (ব্রাজিল/ম্যানচেস্টার সিটি), আন্দ্রিই লুনিন (ইউক্রেন/রিয়াল মাদ্রিদ), মাইক মাইনিয়ঁ (ফ্রান্স/এসি মিলান), এমিলিয়ানো মার্তিনেস (আর্জেন্টিনা/অ্যাস্টন ভিলা), দাভিদ রায়া (স্পেন/আর্সেনাল), উনাই সিমোন (স্পেন/আথলেটিক বিলবাও)।
আরও পড়ুন:চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
রোববার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পিন্টু। আরও কিছু গুরুতর শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ায় তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছিল।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের শীর্ষ ফুটবলাররা গঠন করেছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। দেশের মানুষের মুক্তির পক্ষে বিশ্ব জনমত তৈরি করেছিল এই ফুটবল দল।
জাকারিয়া পিন্টু ছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের গর্বিত অধিনায়ক। তিনি একজন অসাধারণ ডিফেন্ডার ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে অমর হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ১৬টি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল। এর ১২টিতেই জিতেছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ওই ম্যাচের টিকিট বিক্রির অর্থ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল তুলে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে।
১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলকে নেতৃত্ব দেন জাকারিয়া পিন্টু। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলেরও প্রথম অধিনায়ক। মোহামেডানের সাবেক এই তারকা সংগঠন হিসেবেও মোহামেডানের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন।
১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারি নওগাঁয় জন্ম নেয়া এই কিংবদন্তির ফুটবলের শুরু পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত টানা খেলেছেন মোহামেডানে। ক্লাবটির কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
ফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো জানুয়ারিতে বাংলাদেশে যুব উৎসবে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা আসন্ন যুব উৎসবে যোগদানের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানান এবং বিশ্বজুড়ে স্বনামধন্য কয়েকটি নারী ফুটবল দলকে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে তার সহযোগিতা চান।
জবাবে ফিফা প্রেসিডেন্ট তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং যুব উৎসবে উপস্থিত থাকার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন।
নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দু’বার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। তাদের টানা নৈপুণ্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এক কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার নেপালে ২০২৪ সাফ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের জন্য দেড় কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)
শনিবার সাবিনা-তহুরাদের জন্য দেড় কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে।
তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের নতুন কমিটির প্রথম সভা ছিল শনিবার। টানা কয়েক ঘণ্টার সভা শেষে সদস্য আমিরুল ইসলাম বাবু সংবাদ মাধ্যমে এমন কথা জানান।
এছাড়া সভায় কমিটিও গঠন করা হয়েছে। চার বছরের জন্য গঠিত ফিন্যান্স কমিটির দায়িত্ব থাকবে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের অধীনে। এছাড়া অন্য কমিটিগুলো হবে এক বছর মেয়াদি।
বাফুফের সদস্য ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই কমিটির পক্ষ থেকে সাফজয়ী মেয়েদেরকে দেড় কোটি টাকা বোনাস দেয়া হবে। সভায় এটাই ছিল প্রথম সিদ্ধান্ত।’
গত ৩০ অক্টোবর কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে বাংলাদেশ। দেশে ফেরার পর ছাদখোলা বাসে আবারও সংবর্ধনা দেয়া হয় তাদের।
পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংবর্ধনা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসও।
আরও পড়ুন:চোটের কারণ দেখিয়ে অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতির সময়ে ফ্রান্স দলে ছিলেন না রিয়াল মাদ্রিদের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে। এবার নভেম্বরে নেশন্স লিগের দুই ম্যাচের জন্য তাকে ছাড়াই দল ঘোষণা করেছে ফ্রান্স।
নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের ২ নম্বর গ্রুপের পঞ্চম ম্যাচে ১৪ নভেম্বর ইসরায়েলকে আতিথ্য দেবে দিদিয়ের দেশমের দল। এর তিন দিন পর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টেবিলের শীর্ষে থাকা ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামবে ২০২১ সালের শিরোপাজয়ীরা।
এই দুই ম্যাচের জন্য ঘোষিত ২৩ সদস্যের ফ্রান্স স্কোয়াডে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ পারফর্ম করা লিলের তরুণ গোলরক্ষক লুকা শেভালিয়েঁ। তবে ঘোষিত স্কোয়াডে জায়াগা হয়নি এমবাপের।
অক্টোবরে চোটের কারণ দেখিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে থেকে যান এমবাপে। এরপর ইউরোপীয় সংবাদধ্যমের খবরে জানা যায়, ফ্রান্স যখন নেশন্স লিগের ম্যাচ খেলছে, তখন তিনি সুইডেনের একটি ক্লাবে আড্ডা দিচ্ছেন। ওই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ২৫ বছর বয়সী ফরাসি অধিনায়ক।
স্টকহোমের যে হোটেলে তখন তিনি ছিলেন, সে সময় সেখানে একটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এ খবর চাউর হওয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদ তাকে পোশাকের একটি বিজ্ঞাপন থেকেও সরিয়ে দেয়। এবার রিয়ালের জার্সিতে মাঠে বেশ কিছুদিন ধরে বিবর্ণ থাকার পর ফ্রান্স দলেও ব্রাত্য হলেন এই ফরোয়ার্ড।
স্কোয়াড ঘোষণার সময় এমবাপের অনুপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেশম বলেন, ‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই মুহূর্তে এটিই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।’
এমবাপেকে দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্তের পেছনে ফুটবলের বাইরের কোনো কারণ নেই জানিয়ে কোচ বলেন, ‘আমি কিলিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছি। সে দলে ফিরতে চায়। তবে আগামী দুই ম্যাচের জন্য এটি একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত।’
ফ্রান্স স্কোয়াড
গোলরক্ষক: লুকা শেভালিয়েঁ (লিল), মাইক মাইনিয়ঁ (এসি মিলান) ও ব্রাইস সাম্বা (লঁস)।
ডিফেন্ডার: জনাথন ক্লুস (নিস), লুকা দিনিয়ে (অ্যাস্টন ভিলা), ওয়েসলে ফোফানা (চেলসি), থেও এরনান্দেস (এসি মিলান), ইব্রাহিমা কোনাতে (লিভারপুল), জুল কুন্দে (বার্সেলোনা), উইলিয়াম সালিবা (আর্সেনাল) ও দায়োত উপামেকানো (বায়ার্ন মিউনিখ)।
মিডফিল্ডার: এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা (রিয়াল মাদ্রিদ), মাতেও গেন্দুসি (লাৎসিও), এনগলো কান্তে (আল ইত্তিহাদ), মানু কোনে (রোমা), আদ্রিয়েন রাবিও (অলিম্পিক মার্শেই) ও ওয়ারেন জাইরে-এমেরি (পিএসজি)।
ফরোয়ার্ড: ব্রাদলে বারকোলা (পিএসজি), উসমান দেম্বেলে (পিএসজি), রান্দাল কোলো মুয়ানি (পিএসজি), ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কু (চেলসি), মিকেল অলিস (বায়ার্ন মিউনিখ) ও মার্কাস থুরাম (ইন্টার মিলান)।
আরও পড়ুন:অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারী ফুটবলারদের সমস্যাগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে ফুটবলারদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে গত ৩০ অক্টোবর রাতে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জেতায় নারী দলকে সংবর্ধনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
ওই সময় নারী ফুটবলাররা তাদের স্বপ্ন এবং তাদের দৈনন্দিন সংগ্রামের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বিজয়ী খেলোয়াড়দের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সাফল্য অর্জনের জন্য আমি সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের অভিনন্দন জানাই। জাতি তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
‘আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়। তোমরা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছো।’
ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুন সংবর্ধনার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। আয়োজনে যোগ দিতে পেরে তারা সম্মানিত বোধ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের সব নারীকেই অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়।’
সাবিনা খাতুন ২০০৯ সালে ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপকালে ফুটবলকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়ার জন্য পূর্ব প্রজন্মের ফুটবলাররা তাকে সাহস জুগিয়েছেন উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ নারী ফুটবলারদের অবদানের কথা স্মরণ করেন তিনি।
সাবিনা বলেন, ‘নারী ফুটবল দলের মধ্যে অনেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছেন। অনেকের পরিবার তাদের ওপর নির্ভরশীল।
‘আমাদের বেতন দিয়ে পরিবারের জন্য আমরা তেমন কিছু করতে পারি না। কারণ আমাদের বেতন তেমন ভালো নয়।’
মারিয়ার মতো তার সতীর্থদের সংগ্রামের বর্ণনা দেয়ার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাবিনা।
তিনি বলেন, ‘সাফজয়ী দলের ছয়জন খেলোয়াড় ময়মনসিংহের বিখ্যাত কলসিন্দুর গ্রাম থেকে এসেছে। মারিয়া তাদের মধ্যে একজন।
‘অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন। পরিবারের দায়িত্ব তিনিই পালন করেন।’
কৃষ্ণা রানী সরকার ঢাকায় তাদের আবাসন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
মনিকা চাকমা খাগড়াছড়ি জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা লক্ষ্মীছড়ি থেকে জাতীয় ফুটবলার দলে আসা পর্যন্ত তাকে যে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে সেসব কথা বর্ণনা করেন।
মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী দিনাজপুরে তার গ্রামের দুর্বল অবকাঠামোর বর্ণনা দিয়েছেন।
উইঙ্গার কৃষ্ণা প্রধান উপদেষ্টাকে এশিয়ার বাইরে তাদের জন্য একটি প্রীতি ম্যাচের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন। বিশেষ করে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী বার্সেলোনার বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচ ব্যবস্থা করে দেয়ার অনুরোধ জানান।
প্রধান উপদেষ্টা প্রতিটি খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা এবং আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম এবং দাবিগুলো আলাদা কাগজে লিখে সেগুলো তার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিতে বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তোমরা যা খুশি লিখতে পারো, কোনো দ্বিধা করবে না। আমরা তোমাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব।
‘এখন যদি কিছু সুরাহা করা যায় তবে আমরা এখনই সেটা করব।’
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন কোচ পিটার বাটলার ও ম্যানেজার মাহমুদা আক্তার।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য