× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

খেলা
Messi is part of the Saudi billion dollar project
google_news print-icon
দীর্ঘ পাঠ

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি

মেসি
সৌদি আরবের পর্যটন শিল্পের প্রচারের দায়িত্ব পেয়েছেন মেসি। গ্রাফিক্স: দ্য অ্যাথলেটিক
বিশ্বকাপে গ্রুপ সির প্রথম ম্যাচের আগে সোমবার সন্ধ্যায় দোহায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন মেসি। মাঠে যে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন তাদের হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। আর প্রতিপক্ষ দেশটি ছিল তারা, যারা তাদের প্রচারে ব্যবহার করছে মেসির ছবি। কাতারের টেলিভিশনে সম্প্রচার হচ্ছে মেসির সৌদি আরব সফর নিয়ে তৈরি বিজ্ঞাপন।

কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বিস্ময়কর জয় পেয়েছে সৌদি আরব। এটি ছিল গ্রুপ সি-এর প্রথম ম্যাচ। একই সঙ্গে এটি ছিল মাঠের বাইরে একটি যুদ্ধের পটভূমি, যা আগামী বেশ কয়েক বছর ধরে চলবে।

সৌদি আরবের ভাবমূর্তি উন্নয়নের মিশনে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি যোগ দেন চলতি বছর। আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তির লক্ষ্য সৌদি পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন।

তবে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস কোম্পানির মালিকানাধীন স্পোর্টস ওয়েবসাইট দ্য অ্যাথলেটিকের নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, রিয়াদের সঙ্গে মেসির গাঁটছড়া ২০৩০ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হতে সৌদি আরবের প্রচেষ্টাকে শক্তি জোগাবে। আর সে ক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে পারে তার নিজের দেশ আর্জেন্টিনা। প্রতিবেদনটি ভাষান্তর করা হয়েছে নিউজবাংলার পাঠকের জন্য।

০২৬ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে। এরপর ২০৩০ সালের আয়োজক দেশ ঠিক করতে চলতি বছরের জুনেই বিডিং উন্মুক্ত হয়েছে। আয়োজক দেশের নাম চূড়ান্ত হবে ২০২৪ সালে ফিফার ৭৪তম কংগ্রেসে।

এখন পর্যন্ত স্পেন, পর্তুগাল ও ইউক্রেনের যৌথ উদ্যোগের বিডিং নিশ্চিত হয়েছে। এ বছরের শুরুতেই দেশ তিনটি এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়। তবে আরও দুটি প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে জমা পড়ার কথা।

এর একটি হলো দক্ষিণ আমেরিকান দেশ আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে ও চিলির যৌথ উদ্যোগ। অন্যটি সৌদি আরব, মিশর ও গ্রিসের। একাধিক দেশের যৌথ আয়োজক হিসেবে বিডে অংশগ্রহণের ফলে ২০২৬ সাল থেকে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব ৪৮ দলের প্রতিযোগিতায় পরিণত হচ্ছে।

২০৩০ সালের জন্য দক্ষিণ আমেরিকান বিড খুব শক্ত প্রতিপক্ষ হবে বলে মনে করছেন এর কো-অর্ডিনেটর ফার্নান্দো মারিন। দ্য অ্যাথলেটিককে তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলটি অজস্র প্রতিভার জন্ম দিয়েছে, যারা সারা বিশ্বে সুপরিচিত। এ ছাড়া ১৯৩০ সালে উরুগুয়েতে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়। এর ১০০তম বার্ষিকীতে ২০৩০ সালে দক্ষিণ আমেরিকাই হবে বিশ্বকাপের সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান।’

১৯৩০ সালে স্বাগতিক উরুগুয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট জিতেছিল।

দক্ষিণ আমেরিকার যৌথ বিডের বিষয়টি ২০১৭ সালে প্রথম জনসমক্ষে আসে, যখন বার্সেলোনার সতীর্থ উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ এবং আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি তাদের দেশের পক্ষে প্রচারে যুক্ত হন। দুই দেশের মধ্যে একটি ম্যাচের আগে সুয়ারেজ যে জার্সি পরেন তার সামনে ২০ এবং মেসির জার্সিতে ৩০ সংখ্যাটি লেখা ছিল।

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি
দক্ষিণ আমেরিকায় যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রচারে সুয়ারেজ ও মেসি

পরের বছর ফার্নান্দো মারিন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টার সঙ্গে মেসি যোগ দেবেন এবং সুয়ারেজ তো অবশ্যই। আমরা তাকে (মেসি) আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে জানিয়েছি এবং তিনি মনে করেন এটা সম্ভব। তিনি আমাদের সাহায্য করতে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি অবশ্যই আমাদের জন্য বিশ্বকাপের পতাকাবাহী হবেন।’

তবে গত মে মাসে ঘটনার নতুন বাঁক তৈরি হয়। বর্তমানে এই গ্রহের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে বিখ্যাত ফুটবলার সৌদি আরবের প্রচারের দায়িত্ব নিতে একটি আকর্ষণীয় চুক্তিতে সই করেন।

প্রথম কথাটি হলো, চুক্তিটি হয়েছে সৌদির পর্যটন-সংক্রান্ত প্রচারের জন্য, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপের বিডের প্রসঙ্গ সেখানে নেই।

তবে সৌদি আরবের জাতীয় লক্ষ্যগুলো দেশটির ‘ভিশন ২০৩০’-এর সঙ্গে যুক্ত। সরকারি ভাষ্যগুলোতে একে ‘সৌদি আরবকে বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত করার একটি অনন্য রূপান্তরমূলক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের নীলনকশা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

তাই ২০৩০ সালের বিশ্বকাপের বিড সৌদি আরবের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে প্রবলভাবে যুক্ত বলে মনে হয় এবং পর্যটনের প্রচার সেই লক্ষ্যটি অর্জনে অনেকভাবে সাহায্য করবে।

অন্য উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় সার্বভৌম সম্পদ তহবিল- পিআইএফের মাধ্যমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব নিউকাসল ইউনাইটেডকে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত, সেই সঙ্গে এলআইভি গলফ ব্রেকওয়ে ট্যুরকে সহায়তাদান। এ ছাড়া ১০ বছরের জন্য ফর্মুলা ওয়ান রেসের পৃষ্ঠপোষকতা এবং ২০১৯ সালে অ্যান্টনি জশুয়া এবং অ্যান্ডি রুইজের হেভিওয়েট বক্সিং আয়োজনের জন্য ৬৫ কোটি ডলারের চুক্তি।

সৌদিতে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কানাডার রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন ডেনিস হোরাক। তিনি বলেন, ‘বিনোদন ও ক্রীড়ায় এই বিপুল অংশগ্রহণ সৌদির ভিশন ২০৩০-এর একটি বড় অংশ। এলআইভি গলফ (সৌদি আরবের অর্থায়নে) এবং এখন এগুলোর সঙ্গে মেসির মতো তারকাদের উচ্চমূল্যে যুক্ত করার মাধ্যমে তারা বিষয়টিকে নতুন স্তরে নিয়ে যাওয়ার এবং আরও বৈশ্বিক করার চেষ্টা করছে। বিশ্বব্যাপী সৌদির সুনাম বাড়াতে হবে এবং এসবের মাধ্যমে দেশটি নিজেদের নতুন ব্র্যান্ড তৈরির চেষ্টা করছে।’

মেসির চুক্তির মেয়াদ এবং শর্ত কোনো পক্ষই প্রকাশ করেনি।

যুক্তরাজ্যের ডেইলি টেলিগ্রাফ আগে এক প্রতিবেদনে জানায়, ক্রিস্টিয়ানো রোনালডো সৌদি পর্যটনের প্রচারে কাজ করার জন্য প্রতিবছর ৫০ লাখ পাউন্ডের বেশি অর্থের একটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই আলোচনায় যুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘনিষ্ঠ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

উপসাগরীয় অঞ্চলে রাষ্ট্রদূতদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র দ্য অ্যাথলেটিককে বলেছে, মেসির সঙ্গে সৌদির চুক্তিটির আর্থিক মূল্য রোনালদোকে দেয়া প্রস্তাবের চেয়ে ৫ গুণ বেশি হতে পারে।

সৌদি এজেন্সিগুলোর তৎপরতার বিভিন্ন উদাহরণ পর্যালোচনা করলে বিষয়টি আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। যেমন এলআইভি গলফ ট্যুরে টাইগার উডসকে ভেড়াতে ৭০-৮০ কোটি ডলারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, তবে তিনি সেটি প্রত্যাখ্যান করেন৷

মেসির প্রতিনিধিরা বলেছেন, গোপনীয়তার শর্তের কারণে তারা চুক্তির পরিসংখ্যানগত দিকগুলো প্রকাশ করতে পারবেন না। অন্যদিকে এ-সংক্রান্ত ই-মেইলের কোনো জবাব দেয়নি সৌদি সরকার।

মেসি গত মে মাসে লোহিত সাগরের তীরের রিসোর্ট শহর জেদ্দায় ভ্রমণের সময় প্রথমবার তাকে সৌদির পর্যটনদূত হিসেবে প্রচার করে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মেসিকে স্বাগত জানিয়ে সৌদি পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খতিব এক টুইটে লেখেন, ‘সৌদি আরবে এটি তার প্রথম সফর নয় এবং এটি শেষও হবে না।’

পরে ইয়টে সূর্যাস্ত দেখার সময়কার নিজের একটি ছবি প্রকাশ করেন মেসি।

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি
ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করা ছবিতে লোহিত সাগরের বুকে ইয়টে মেসি

ইনস্টাগ্রামে ছবির শিরোনামে তিনি লেখেন, ‘লোহিত সাগরের বুকে #ভিজিটসৌদি’। ইনস্টাগ্রামে মেসির ফলোয়ারের সংখ্যা ৩৭ কোটি। পোস্টটিতে সৌদি পর্যটন কর্তৃপক্ষের সহায়ক সংস্থা ভিজিট সৌদির ‘পেইড পার্টনারশিপ’ লেবেল যুক্ত ছিল।

মেসি পরে সৌদির সহকারী পর্যটনমন্ত্রীর প্রিন্সেস হাইফা আল-সৌদের সঙ্গে পুরোনো জেদ্দা সফরে যোগ দেন।

প্রিন্সেস হাইফা পরে টুইটারে লেখেন, ‘এই শহরের অন্তর্নিহিত রূপ, ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের প্রতি তার (মেসি) মুগ্ধতা দেখে আমি আনন্দিত।’

ভিজিট সৌদির ওয়েবসাইটে এখন মেসির একটি ল্যান্ডিং পেজ রয়েছে। এর শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘লিওনেল মেসি চান আপনি নিজের ভেতরের রোমাঞ্চ-সন্ধানী সত্তাকে উন্মোচন করুন এবং অকল্পনীয় দিকগুলো উদ্ঘাটন করুন।

‘আপনি নতুন বা পুরোনো কিছু আবিষ্কার করতে অথবা শুধু নিজের ভেতরে নতুন কিছু জাগানো- যে উদ্দেশ্যেই ভ্রমণ করুন না কেন, সৌদি প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাকে সন্তুষ্টি জোগাবে। তাহলে আর কিসের জন্য অপেক্ষা করছেন? এখনই আপনার অ্যাডভেঞ্চারের পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলুন।’

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি
ভিজিট সৌদির ওয়েবসাইটে মেসির পেজ

সৌদি আরবের প্রচারে মেসির এই অবস্থান ২০৩০ সালে বিশ্বকাপ আয়োজনে তার নিজের দেশের প্রচেষ্টার সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে মেসির সাপোর্ট টিম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। একইভাবে পর্যটন প্রচারের চুক্তির অংশ হিসেবে তিনি কতবার সৌদি সফরে যাবেন, সে বিষয়ে তথ্য দিতেও অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।

আরও তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, তারা এমন একটি দেশের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের চেক নেয়ার বিষয়ে মেসির প্রস্তুতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি, যে দেশটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

এসব অভিযোগের মধ্যে আছে ভিন্নমতাবলম্বী ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগজি হত্যা, নারী অধিকারকর্মী ও এলজিবিটি গোষ্ঠী এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) শাসনের বিরুদ্ধাচরণকারীদের ওপর ক্র্যাকডাউন।

মানবাধিকার সংস্থা ইউনিসেফ গত বছর জানায়, প্রতিবেশী ইয়েমেনে সংঘাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট জড়িয়ে পড়ার পর থেকে ১০ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে। মেসি ২০১০ সাল থেকে ইউনিসেফের একজন ‘শুভেচ্ছাদূত’।

মেসির প্রতিনিধিরা ইয়েমেন বিরোধের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি, একই সঙ্গে ইউনিসেফও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

মেসির অগণিত অংশীদারত্বের মধ্যে একটি হলো ফরাসি চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেন্ট-জার্মেইনের হয়ে খেলা, যেখানে তিনি ৩ কোটি ইউরোর বেশি আয় করেন। এটি কাতারের সঙ্গে যুক্ত একটি তহবিলের মালিকানাধীন ক্লাব, যে দেশটির বিরুদ্ধেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।

মেসি সম্প্রতি ক্রিপ্টো ফ্যান টোকেন ফার্ম সোসিওস-এর প্রচারের জন্য ২ লাখ ডলারের চুক্তি করেছেন, পাশাপাশি তিনি এনএফটিভিত্তিক গেম সোরারেও একজন বিজ্ঞাপনী মুখ। এ ছাড়া তিনি আডিডাস, পেপসি, বাডওয়াইজার, ওরেডু, প্রো অ্যাভ্যুলিউশন সকার, লুই ভ্যুইতন, ইসরায়েলি কোম্পানি ওরক্যাম, দ্য দুবাই এক্সপো-২০২০, তার নিজস্ব শো সার্ক দ্যু সোলেইল এবং চীনা দুগ্ধ কোম্পানি মেংনিউ-এর সঙ্গে স্পনসরশিপ চুক্তি করেছেন।

ফোর্বস ম্যাগাজিন গত মে মাসে যে অনুমান প্রকাশ করে সে অনুযায়ী, গত বছর মেসি ১২ কোটি ডলারের বেশি আয় করেছেন।

সৌদি নাগরিক খালিদ আল-জাবরির বোন সারা এবং ভাই ওমর বর্তমানে দেশটির একটি কারাগারে বন্দি। খালিদ আল-জাবরির বাবা সৌদি আরবের একজন সাবেক শীর্ষস্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

দ্য অ্যাথলেটিক-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে খালিদ অভিযোগ করেন, তার বাবা ড. সাদ আলজাবরির ওপর চাপ দেয়ার জন্য কারাবন্দি দুই ভাইবোনকে ‘দর-কষাকষির হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে সৌদি সরকার।

খালিদ বলছেন, ‘সৌদি ক্রাউন প্রিন্স বিন সালমান দেশকে স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং মেসির দূতের ভূমিকা এতে অবদান রাখছে।

‘মেডিক্যাল স্কুলে পড়ার সময় তাকে (মেসি) দেখতে আমরা একসঙ্গে জড়ো হতাম। তিনি বিশ্বে সুপরিচিত এটাই একমাত্র কারণ নয়, দেশের ভেতরেও সবাই তাকে ভালোবাসে। ফুটবলের ক্ষেত্রে তার অবস্থান ঈশ্বরের ঠিক পরেই। এই চুক্তির মাধ্যমে তারা (সৌদি সরকার) সেই কেন্দ্রবিন্দুটিতে আঘাত করেছে।’

...

মেসি ২০১২ সালে প্রথম সৌদি আরব সফর করেন।

তার ফ্লাইট অবতরণের পর ভক্তদের হুড়োহুড়ি লেগে যায়। নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত কঠোর। ভিড়ের চাপ সামলাতে ব্যতিব্যস্ত সশস্ত্র রক্ষীদের একজনের বন্দুকের নল ঘটনাক্রমে মেসির মুখের দিকে ঘুরে গিয়েছিল।

তারপর থেকে সম্পর্কটি ক্রমশ উষ্ণ হয়েছে। এর পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন তুর্কি আল-শেখ নামের এক ব্যক্তি। তিনি সৌদি জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান। এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য দেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটানো।

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি
২০১২ সালে প্রথম সৌদি সফরে যান মেসি

বিশিষ্ট সৌদি রাজনীতিক ও স্প্যানিশ লা লিগা ফুটবল ক্লাব আলমেরিয়ার মালিক আল-শেখকে ২০২০ সালের মে মাসে অনলাইনে একটি শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান মেসি।

উপলক্ষটি ছিল সৌদি ফুটবল ক্লাব আল-নাসর এফসির সাবেক সভাপতি সৌদ আল-সুওয়াইলেমের বিপক্ষে একটি চ্যারিটি প্লেস্টেশন ফুটবল ম্যাচে আল-শেখের প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

সৌদি আরবের অভাবী মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে ম্যাচটি আয়োজন করা হয়। সেখানে মেসি ছাড়াও ডিয়েগো ম্যারাডোনা, সাবেক ব্রাজিল তারকা কাফু, রবার্তো কার্লোস এবং রোনালদিনহো, ইতালীয় ডিফেন্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চিও শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন। চার্লি শিনের মতো বিখ্যাত অভিনেতা এবং র‌্যাপার স্নুপ ডগও বার্তা দিয়েছিলেন।

ওপরের ভিডিওতে টেলিভিশন উল্টে ফেলার দৃশ্য দেখলে আল-শেখ একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশুর মতো আচরণ করছেন বলে ভ্রম হতে পারে। তবে সৌদি আরবের অনেক পর্যবেক্ষকের মতে তিনি দেশটির অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তিত্ব।

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুমোদনে খাশোগজি হত্যার অভিযোগ রয়েছে

সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী খাশোগজিকে ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমেরিকান গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে ওই হত্যায় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুমোদন ছিল।

খাশোগজির মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা একটি সাক্ষাৎকার পরে নিউজউইকে প্রকাশ হয়। সেখানে খাশোগজি বলেন, ‘তুর্কি আল-শেখ এবং সৌদ আল-কাহতানি ছাড়া মোহাম্মদ বিন সালমানের আর কোনো রাজনৈতিক উপদেষ্টা নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরা গুণ্ডা প্রকৃতির। মানুষ তাদের ভয় পায়। তুর্কি আল-শেখ খেলাধুলার দায়িত্বে আছেন। গুজব রয়েছে খেলাধুলার পেছনে ব্যয় এবং তরুণদের এতে ব্যস্ত রাখতে তার হাতে কয়েক বিলিয়ন ডলার রয়েছে।’

মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্য মিডিয়া অপারেশন এবং প্রচারের দায়িত্ব সামলাতেন সৌদ আল-কাহতানি। আমেরিকান গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাকে খাশোগজি হত্যার চক্রান্তে যুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়। তবে সৌদি আদালত ২০১৯ সালে তাকে এই অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়।

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি
লিওনেল মেসি

আল-শেখ ছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমানের সাবেক নিরাপত্তাকর্মী। ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে ধীরে ধীরে তার প্রচণ্ড বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার হাতে তুলে দেয়া হয় সৌদি স্পোর্টস কমিশন চালানোর দায়িত্ব।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ বিন সালমান তার ক্ষমতা সংহত করতে সৌদি আরবের শত শত ধনী ব্যবসায়ীকে রিটজ-কার্লটন হোটেলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিলেন। ওই সময়ে আল-শেখ অত্যন্ত তৎপর ভূমিকা পালন করেন। পরে ঘটনাটিকে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখানো হয়।

সৌদি স্পোর্টস কমিশন পরিচালনার সময় আল-শেখ ক্রীড়ায় অর্থ বিনিয়োগে আগ্রহীদের জন্য একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হন। তিনি ২০১৯ সালে সৌদিতে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার একটি ম্যাচ আয়োজন করেন।

ওই ম্যাচের আগে তার ফুটবল ক্লাব আলমেরিয়া ভেন্যুর টানেলে মেসি ও আল-শেখের আলিঙ্গনের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল ‘দুই সিংহ’।

মেসিও প্রকাশ্যে ৪০তম জন্মদিনে আল-শেখকে শুভেচ্ছা জানান। এর আগে তিনি আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের নিয়ে রিয়াদে তার বাড়িতে ঘুরতে যান।

জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আল-শেখ ২০২২ সালের রিয়াদ সিজনের (একটি বিনোদন উৎসব) বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডে মেসির ছবি ব্যবহার করেন। এসব বিলবোর্ড লন্ডন, দুবাই ও নিউকাসলে স্থাপন করা হয়।

পিএসজির জার্সি পরে রিয়াদ সিজনের প্রচার চালানোর একটি ভিডিওতেও দেখা যায় মেসিকে।

সৌদি বিলিয়ন ডলার প্রজেক্টের অংশ মেসি
মোহাম্মদ বিন সালমান

এটি বিশেষ এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। পিএসজির সঙ্গে যুক্ত দেশ কাতারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আল-শেখ কাতারের উপর সৌদি অবরোধের কেন্দ্রীয় শক্তির অংশ ছিলেন। এমনকি টুইটারে তিনি বলেছিলেন, কাতার নৈতিকতা লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজন ইংল্যান্ড বা যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নেয়া উচিত।

অবশ্য পিএসজির সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী মেসির অন্য কোনো বাণিজ্যিক চুক্তি করায় বাধা নেই। পাশাপাশি গত বছর থেকে সৌদি ও কাতারের সম্পর্কের শীতলতা কাটতে শুরু করেছে। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের দিন রোববার ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর দুই পাশে বিন সালমান ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে বসতে দেখা গেছে।

মানবাধিকার কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে অটোয়ার বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ২০১৮ সালে কানাডার রাষ্ট্রদূত হোরাক সৌদি আরব থেকে বহিষ্কৃত হন। তিনি তার মূল্যায়নে সৌদির নেতৃত্ব সম্পর্কে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ব্যাখ্যা দেন।

হোরাক বলেন, বিন সালমান সৌদির সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে পশ্চিমা রাজনীতিকদের মনে আশার সঞ্চার ঘটিয়েছিলেন। তবে খাশোগজির হত্যা, নারী অধিকার কর্মীদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গীকে তার শাসনের বিরুদ্ধে নিয়ে যায়।

আল-শেখ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি তার প্রভাবের কথা শুনেছি। তাকে নিশ্চিতভাবে রাজকীয় ব্যবস্থায় মোহাম্মদ বিন সালমানের অতি ঘনিষ্ঠদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

‘তিনি (আল-শেখ) অবশ্যই ক্ষমতাকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত এবং মেসিকে যুক্ত করার বিষয়টি বিন সালমান অবশ্যই পছন্দ করবেন। তার (মোহাম্মদ বিন সালমান) চোখে বিশ্বে সৌদি আরবের অবস্থান উপলব্ধির আরেকটি সুযোগ ঘটাবে এই বিষয়টি। তিনি বুঝবেন সৌদি বিচ্ছিন্ন কোনো মরুরাজ্য নয়।

‘আন্তর্জাতিকভাবে মেসির যে প্রোফাইল রয়েছে, সেটি সৌদিকে স্বাভাবিকতার একটি বৃহত্তর অনুভূতি দেবে। তাই আমি মনে করি এ বিষয়টি ২০৩০ সালে তাদের বিশ্বকাপ বিডের ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে।’

হোরাক বলেন, ‘খাশোগজি হত্যার কারণে মোহাম্মদ বিন সালমান ব্র্যান্ডটির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। একইসঙ্গে সৌদি আরবের ব্র্যান্ডও কলঙ্কিত হয়েছে। এমন অবস্থায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিশ্বের সেলিব্রিটিদের কাছে যত বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ তৈরি করা যাবে এবং সে অনুযায়ী সৌদি আরবের ব্র্যান্ডটিকে আবারও ঝকঝকে করে তোলা সম্ভব হবে।’

সৌদি কারাগারে বন্দি দুই স্বজনের ভাই খালিদ আল-জাবরি বলেন, ‘মেসির মতো খেলোয়াড়দের একটি দলের অংশ হিসেবে সৌদিতে খেলতে যাওয়া নিয়ে আমার আপত্তি নেই। কারণ দেশের শাসকদের নৃশংসতার কারণ দেখিয়ে সৌদি ভক্তদের তাদের প্রিয় দলের খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। আমার সমস্যা হলো মেসি নিজেকে সৌদি স্পোর্টস ওয়াশিংয়ের হাতিয়ারে পরিণত করেছেন।

‘তিনি নিজেকে শয়তানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।’

...

বারের বিশ্বকাপে গ্রুপ সি ম্যাচের আগে সোমবার সন্ধ্যায় দোহায় সংবাদ সম্মেলনে আসেন মেসি। মাঠে যে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন তাদের হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। আর প্রতিপক্ষ দেশটি ছিল তারা, যারা তাদের প্রচারে ব্যবহার করছে মেসির ছবি।

কাতারের টেলিভিশনে সম্প্রচার হচ্ছে সৌদি আরবে মেসির সফর নিয়ে তৈরি বিজ্ঞাপন।

সেই সংবাদ সম্মেলনে মেসির আগমনকে ওহ, আহা ধ্বনি এবং ফোনের ক্যামেরায় ছবি তুলে স্বাগত জানানো হয়। তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে কয়েকজন করতালি দিচ্ছিলেন।

ব্যস্ত ওই মিডিয়া সেশনে দ্য অ্যাথলেটিক কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ পায়নি। মেসি এক ডজনেরও বেশি প্রশ্ন নিয়েছিলেন, তবে তার একটিও সৌদি আরবকে নিয়ে প্রচার চালানো বিষয়ক চুক্তি সংক্রান্ত ছিল না। দক্ষিণ আমেরিকান বা আরব মিডিয়া থেকে এসব প্রশ্ন করা হয়েছিল।

চলমান বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে রোববার সন্ধ্যায় ইনফান্তিনোর পাশে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বসার দৃশ্য সৌদির সামনে আরও একবার আশা জাগিয়ে তুলেছে। এই জুটিকে গত সপ্তাহে জি টোয়েন্টি সম্মেলনে বালিতেও একসঙ্গে দেখা গেছে। এর আগেও তারা একসঙ্গে বক্সিং ম্যাচ দেখেছেন।

সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য মিশর ও গ্রিসের সঙ্গে যৌথভাবে সৌদি আরবের বিডকে ফিফা গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করবে বলে রিয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। সৌদিরা ২০৩০ সালের ওয়ার্ল্ড এক্সপোর আয়োজক দেশ হতেও একটি বিড জমা দিয়েছে, এটিও ভিশন ২০৩০ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ।

বিশিষ্ট আর্জেন্টাইন ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কথোপকথনে মেসিকে ঘিরে সমালোচনায় অস্বস্তি মৃদু আকারে হলেও বোঝা যায়।

বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হতে আর্জেন্টিনার আগ্রহের বিপরীতে প্রতিপক্ষের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে মেসি সাহায্য করছেন, এটি অদ্ভুত লাগছে কিনা- এমন প্রশ্নে তার সাবেক আন্তর্জাতিক সতীর্থ ম্যাক্সি রদ্রিগেজ বলেন, ‘সত্যি বলতে কি এটা ঠিক, তবে… আপনি জানেন না শেষ পর্যন্ত কী ঘটতে যাচ্ছে।

‘আপনি নিজ দেশে বিশ্বকাপ দেখতে চান, তবে এ জন্য অনেক কিছু করতে হবে। কারণ, বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়া সহজ নয়। টুর্নামেন্টের আয়োজক নির্বাচনের সময় কী ঘটছে আমরা দেখতে পাব। আর্জেন্টাইন হিসেবে আমরা আবারও আমাদের দেশে এই আয়োজন দেখতে চাই।’

দক্ষিণ আমেরিকার যৌথ বিডের কো-অর্ডিনেটর ফার্নান্দো মারিন বলেন, ‘মাঠে এবং মাঠের বাইরে মেসির এক অনন্য ক্ষমতা রয়েছে। তিনি একটি সুউচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছেন। মেসি নিজেই একটি ব্র্যান্ড এবং এটি খুব শক্তিশালী।

‘তিনি সমস্ত ফুটবলের জন্য একটি ব্র্যান্ড, কোনো দেশের নয়। তিনি ২০৩০ সালের জন্য দক্ষিণ আমেরিকান বিডের একটি মৌলিক অংশ হিসেবে থাকবেন।’

তবে একই সঙ্গে মেসিকে দক্ষিণ আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষার একটি মৌলিক অংশ হতেও দেখা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন:
বড় জয়ের দিনেও দুঃসংবাদ পেল ফ্রান্স
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয়, সিজদায় সৌদি যুবরাজ
‘আর্জেন্টিনার গোল খাওয়া দেখে নয়, কাকনের মৃত্যু পুরোনো অসুস্থতায়’
আর্জেন্টিনাকে সমর্থন করা রিস্ক: মাশরাফি
ওচোয়ার দক্ষতায় পোল্যান্ডের বিপক্ষে হার এড়াল মেক্সিকো

মন্তব্য

আরও পড়ুন

খেলা
What Mbappe said after receiving the Miss Penalty title

‘মিস পেনাল্টি’ খেতাব পেয়ে যা বললেন এমবাপ্পে

‘মিস পেনাল্টি’ খেতাব পেয়ে যা বললেন এমবাপ্পে রিয়াল মাদ্রিদের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: সংগৃহীত
টানা দুই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করায় ‘ট্রল ফুটবল’ নামের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি মিম শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে একজন মিস ইউনিভার্সের শরীরের ওপর এমবাপ্পের মাথা লাগিয়ে ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- আমাদের নতুন ‘মিস পেনাল্টি’। তবে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদ স্ট্রাইকার।

ঐতিহ্যবাহী সান মামেসে ম্যাচ শুরুর পর থেকেই নিজেদের জাত চেনাতে থাকেন অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের ফুটবলাররা। প্রথম মিনিট থেকেই রিয়াল মাদ্রিদকে চেপে ধরে গোল আদায়ের চেষ্টা চালান তারা। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথম গোলটিও পেয়ে যায় বিলবাও।

ওই গোলের ১৫ মিনিট পরই বিলবাও গোলরক্ষকের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে দুর্বল স্পটকিকের কারণে হুলেন আগিরেসাবালাকে বোকা বানাতে ব্যর্থ হন তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পে।

মিনিট দশেক পর বেলিংহ্যামের গোলে রিয়াল মাদ্রিদ সমতায় ফিরলেও ম্যাচটি ২-১ গোলে হেরে বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমানোর সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে লস ব্লাঙ্কোসদের।

ম্যাচ হেরে, বিশেষ করে পেনাল্টি থেকে গোল আদায়ে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন পিএসজির পাঠ চুকিয়ে চলতি মৌসুমে রিয়াল শিবিরে যোগ দেয়া এমবাপ্পে।

এ নিয়ে পরপর দুই ম্যাচে দুটি পেনাল্টি নিয়ে ব্যর্থ ফরাসি স্ট্রাইকার। সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারের ম্যাচেও পেনাল্টি মিস করেন এমবাপ্পে। মাঝে লা লিগায় গেটাফের বিপক্ষে জয়ের রাতে আরও একটি পেনাল্টি পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সেটি নিজে না নিয়ে জুড বেলিংহ্যামকে দেন ২৫ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। তা থেকে দলকে গোলও এনে দেন বেলিংহ্যাম। তবে পরের ম্যাচেই পেনাল্টি পেয়ে নিজে শট নিয়ে ব্যর্থ এমবাপ্পে।

এর ফলে ক্যারিয়ারে এই প্রথম এমবাপ্পে এক সপ্তাহে দুটি পেনাল্টি মিস করলেন। আর পিএসজি ও রিয়াল মিলিয়ে এ বছর তার পেনাল্টি মিসের সংখ্যা মোট চারটি। এক বছরে চারটি পেনাল্টি মিস করার ঘটনাও তার ক্যারিয়ারে এই প্রথম।

টানা দুই ম্যাচে পেনাল্টি মিস করায় ‘ট্রল ফুটবল’ নামের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি মিম শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে একজন মিস ইউনিভার্সের শরীরের ওপর এমবাপ্পের মাথা লাগিয়ে ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- আমাদের নতুন ‘মিস পেনাল্টি’।

তবে এমন কঠিন সময়েও ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ফ্রান্সের ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘বাজে ফল। যে ম্যাচে ছোটখাটো বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে এটি বড় ধরনের ভুল। এর পুরোটা দায় আমি নিচ্ছি। কঠিন মুহূর্ত! তবে পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার এবং আমি কে, তা দেখিয়ে দেওয়ার এখনই সেরা সময়।’

তবে শিষ্যের কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও এখনই তাকে কাঠগড়ায় তুলতে চান না এই ইতালিয়ান।

ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোচ বলেন, ‘ওর সঙ্গে আমার এখনও কথা হয়নি। তবে পেনাল্টি দিয়ে আমি একজন খেলোয়াড়কে মূল্যায়ন করতে পারি না। নিশ্চিতভাবেই সে হতাশ ও ভারাক্রান্ত। তবে আমাদের নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

‘জানি, সে তার সেরা ফর্মে নেই। কিন্তু (দলে) মানিয়ে নিতে তাকে আমাদের সময় দিতে হবে। এরই মধ্যে সে (মাদ্রিদের জার্সিতে) ১০ গোল করেছে। আরও ভালো করার সামর্থ্য সে রাখে এবং সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন:
সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা শনিবার
সাফজয়ী দলকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক কোটি টাকা পুরস্কার
ছাদ খোলা বাসে চড়ে বাফুফের পথে সাফজয়ী মেয়েরা
টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা
ভুটানের জালে গোলবন্যা, সাফের ফাইনালে বাংলাদেশ

মন্তব্য

খেলা
Messi in the FIFA best of the year list

ফিফা বর্ষসেরার তালিকায় মেসি

ফিফা বর্ষসেরার তালিকায় মেসি আর্জেন্টিনা ও ইন্টার মায়ামির জার্সিতে দুর্দান্ত এক মৌসুম কাটানোর স্বীকৃতি পেয়েছেন লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত
‘দ্য বেস্ট’ পুরুষ ফুটবলারের পাশাপাশি আরও ১০টি পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। এর মধ্যে রয়েছে- বর্ষসেরা নারী ফুটবলার, বর্ষসেরা কোচ, বর্ষসেরা গোলরক্ষক, বর্ষসেরা একাদশ ও বর্ষসেরা গোলের পুরস্কার। দেয়া হবে ফিফা ফ্যান অ্যাওয়ার্ডও।

কোপা আমেরিকা জয় এবং ইন্টার মায়ামির হয়ে মাঠে দারুণ সময় কাটালেও এ বছরের ব্যালন ডি’অরের ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন না লিওনেল মেসি। তবে বছরজুড়ে মেসির কাজের স্বীকৃতি দিতে ভোলেনি বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ২০২৪ সালে ফুটবলের বর্ষসেরার পুরস্কার ‘দ্য বেস্ট’-এর তালিকায় রয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।

শুক্রবার ফিফার ওয়েবসাইটে ২০২৪ সালের দ্য বেস্টের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ১১ জনের ওই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে মেসির নাম।

মেসি ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন এবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী রদ্রি। তালিকায় রিয়াল মাদ্রিদেরই রয়েছেন ছয়জন- ভিনিসিউস জুনিয়র, জুড বেলিংহ্যাম, দানি কারভাহাল, ফেদেরিকো ভালভার্দে, টনি ক্রুস ও কিলিয়ান এমবাপে।

এছাড়াও ম্যানচেস্টার সিটির আর্লিং হলান্ড, বেয়ার লেভারকুসেনের ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস ও বার্সেলোনার বিস্ময়বালক লামিন ইয়ামাল জায়গা করে নিয়েছেন এই তালিকায়।

ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ প্রচলনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ বারই মনোনয়ন পেলেন মেসি। এর মধ্যে তিনি পুরস্কারটি জিতেছেন তিনবার- ২০১৯, ২০২২ ও ২০২৩ সালে।

‘দ্য বেস্ট’ পুরুষ ফুটবলারের পাশাপাশি আরও ১০টি পুরস্কারের মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। এর মধ্যে রয়েছে বর্ষসেরা নারী ফুটবলার, বর্ষসেরা কোচ, বর্ষসেরা গোলরক্ষক, বর্ষসেরা একাদশ ও বর্ষসেরা গোলের পুরস্কার। এছাড়া দেয়া হবে ফিফা ফ্যান অ্যাওয়ার্ড।

পুরস্কারগুলোর প্রতিটির জন্য ভোট দিতে পারেন ভক্ত-সমর্থকরা। সেরা খেলোয়াড়, সেরা কোচ ও সেরা গোলরক্ষক নির্বাচনে মোট ভোটের এক-চতুর্থাংশ রাখা হয়েছে দর্শকদের জন্য। বাকি তিন ভাগ দেন ফিফার সদস্য দেশগুলোর অধিনায়ক, কোচ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। সেরা গোল ও একাদশ নির্বাচনে ভক্তদের ভোটের হার অর্ধেক।

ফিফার ওয়েবসাইটে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোট দেয়া যাবে।

২০২৩ সালের ২১ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি বিভাগের সংক্ষিপ্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ করেছে ফিফা। ‘দ্য বেস্ট’-এর ১১ জনের মধ্যে ইউরোপের বাইরের ক্লাব থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন শুধু মেসিই।

মেসিকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাখ্যায় ফিফা বলেছে, বয়স ৩৭ হয়ে গেলেও ইন্টার মায়ামি ও আর্জেন্টিনা দলে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন মেসি। তার অনুপ্রেরণামূলক পারফরম্যান্সে ২০২৩ লিগস কাপের পর রেকর্ডসংখ্যক পয়েন্ট অর্জন করে ২০২৪ সালের সাপোর্টার্স শিল্ড জিতেছে মায়ামি। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে তার নেতৃত্বে কোপা আমেরিকা জিতেছে আর্জেন্টিনা। এমনকি বিশ্বকাপ বাছাইয়ের লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে জয় দিয়ে বছর শেষ করা আর্জেন্টিনা রয়েছে পয়েন্ট টেবিলের চূড়ায়, আর এই আসরে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ গোল নিয়ে সবার উপরে রয়েছেন মেসি।

এক নজরে ‘দ্য বেস্ট’-এর সংক্ষিপ্ত তালিকা

সেরা পুরুষ ফুটবলার: জুড বেলিংহ্যাম (ইংল্যান্ড/রিয়াল মাদ্রিদ), দানিয়েল কারভাহাল (স্পেন/রিয়াল মাদ্রিদ), আর্লিং হলান্ড (নরওয়ে/ম্যানচেস্টার সিটি), টনি ক্রুস (জার্মানি/রিয়াল মাদ্রিদ), কিলিয়ান এমবাপে (ফ্রান্স/রিয়াল মাদ্রিদ), লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা/ইন্টার মায়ামি), রদ্রিগো এরনান্দেস (স্পেন/ম্যানচেস্টার সিটি), ফেদেরিকো ভালভার্দে (উরুগুয়ে/রিয়াল মাদ্রিদ), ভিনিসিউস জুনিয়র (ব্রাজিল/রিয়াল মাদ্রিদ), ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস (জার্মানি/বেয়ার লেভারকুসেন) ও লামিন ইয়ামাল (স্পেন/বার্সেলোনা)।

সেরা কোচ: শাবি আলোনসো (বেয়ার লেভারকুসেন), কার্লো আনচেলত্তি (রিয়াল মাদ্রিদ), লুইস দে লা ফুয়েন্তে (স্পেন), পেপ গার্দিওলা (ম্যানচেস্টার সিটি) ও লিওনেল স্কালোনি (আর্জেন্টিনা)।

সেরা গোলরক্ষক: জানলুইজি দোন্নারুম্মা (ইতালি/পিএসজি), এদেরসন মোরায়েস (ব্রাজিল/ম্যানচেস্টার সিটি), আন্দ্রিই লুনিন (ইউক্রেন/রিয়াল মাদ্রিদ), মাইক মাইনিয়ঁ (ফ্রান্স/এসি মিলান), এমিলিয়ানো মার্তিনেস (আর্জেন্টিনা/অ্যাস্টন ভিলা), দাভিদ রায়া (স্পেন/আর্সেনাল), উনাই সিমোন (স্পেন/আথলেটিক বিলবাও)।

আরও পড়ুন:
সে রাতে স্বর্গে হাত রেখেছিলেন মেসি
মেসির সামনে আরেকবার ফিফা বর্ষসেরার সুযোগ
মেসির হাতে অষ্টমবারের মতো উঠল ব্যালন ডি’অর
তিন মহাদেশের ৬ দেশে বসবে ২০৩০ বিশ্বকাপের আসর
মেসিকে দলে টানতে না পারলেও অন্য খেলোয়াড় কীভাবে কিনছে বার্সা

মন্তব্য

খেলা
The legendary Zakaria Pintu has passed away

চলে গেলেন কিংবদন্তি জাকারিয়া পিন্টু

চলে গেলেন কিংবদন্তি জাকারিয়া পিন্টু জাকারিয়া পিন্টু। ছবি: সংগৃহীত
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু রোববার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরও কিছু গুরুতর শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ায় তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছিল। সেখানেই সোমবার দুপুরে মারা যান তিনি।

চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। সোমবার দুপুর পৌনে ১২টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

রোববার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন পিন্টু। আরও কিছু গুরুতর শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ায় তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছিল।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের শীর্ষ ফুটবলাররা গঠন করেছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। দেশের মানুষের মুক্তির পক্ষে বিশ্ব জনমত তৈরি করেছিল এই ফুটবল দল।

জাকারিয়া পিন্টু ছিলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের গর্বিত অধিনায়ক। তিনি একজন অসাধারণ ডিফেন্ডার ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে অমর হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ১৬টি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল। এর ১২টিতেই জিতেছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ওই ম্যাচের টিকিট বিক্রির অর্থ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল তুলে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে।

১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলকে নেতৃত্ব দেন জাকারিয়া পিন্টু। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলেরও প্রথম অধিনায়ক। মোহামেডানের সাবেক এই তারকা সংগঠন হিসেবেও মোহামেডানের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন।

১৯৪৩ সালের ১ জানুয়ারি নওগাঁয় জন্ম নেয়া এই কিংবদন্তির ফুটবলের শুরু পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত টানা খেলেছেন মোহামেডানে। ক্লাবটির কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

মন্তব্য

খেলা
Youth Festival FIFA President is coming to Dhaka in January

যুব উৎসব: জানুয়ারিতে ঢাকায় আসছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট

যুব উৎসব: জানুয়ারিতে ঢাকায় আসছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। ছবি: বাসস
প্রধান উপদেষ্টা আসন্ন যুব উৎসবে যোগদানের জন্য ফিফা প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানান এবং বিশ্বজুড়ে স্বনামধন্য কয়েকটি নারী ফুটবল দলকে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে তার সহযোগিতা চান।

ফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো জানুয়ারিতে বাংলাদেশে যুব উৎসবে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা আসন্ন যুব উৎসবে যোগদানের জন্য তাকে আমন্ত্রণ জানান এবং বিশ্বজুড়ে স্বনামধন্য কয়েকটি নারী ফুটবল দলকে বাংলাদেশে আনার বিষয়ে তার সহযোগিতা চান।

জবাবে ফিফা প্রেসিডেন্ট তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং যুব উৎসবে উপস্থিত থাকার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন:
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের অভিনন্দন
প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবু সাঈদ হত্যার বিচার চাইলেন দুই ভাই 
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট শুরু 
স্বল্প সময়ের জন্যও বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের স্থান নেই: ড. ইউনূস
‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফল হলেই ভারতের স্বার্থ রক্ষা হবে’

মন্তব্য

খেলা
BAFF will give a prize of 15 million taka to the winning girls

সাফজয়ী মেয়েদের দেড় কোটি টাকা পুরস্কার দেবে বাফুফে

সাফজয়ী মেয়েদের দেড় কোটি টাকা পুরস্কার দেবে বাফুফে
তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের নতুন কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ ছাড়াও বেশ ক’টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার বছরের জন্য গঠিত ফিন্যান্স কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকবের তাবিথ আউয়াল। এছাড়া অন্য কমিটিগুলো হবে এক বছর মেয়াদি।

নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা দু’বার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। তাদের টানা নৈপুণ্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এক কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার নেপালে ২০২৪ সাফ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের জন্য দেড় কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)

শনিবার সাবিনা-তহুরাদের জন্য দেড় কোটি টাকা বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে।

সাফজয়ী মেয়েদের দেড় কোটি টাকা পুরস্কার দেবে বাফুফে
তাবিথ আউয়ালের সভাপতিত্বে শনিবার বাফুফে কার্যালয়ে নতুন কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের নতুন কমিটির প্রথম সভা ছিল শনিবার। টানা কয়েক ঘণ্টার সভা শেষে সদস্য আমিরুল ইসলাম বাবু সংবাদ মাধ্যমে এমন কথা জানান।

এছাড়া সভায় কমিটিও গঠন করা হয়েছে। চার বছরের জন্য গঠিত ফিন্যান্স কমিটির দায়িত্ব থাকবে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের অধীনে। এছাড়া অন্য কমিটিগুলো হবে এক বছর মেয়াদি।

বাফুফের সদস্য ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই কমিটির পক্ষ থেকে সাফজয়ী মেয়েদেরকে দেড় কোটি টাকা বোনাস দেয়া হবে। সভায় এটাই ছিল প্রথম সিদ্ধান্ত।’

গত ৩০ অক্টোবর কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে বাংলাদেশ। দেশে ফেরার পর ছাদখোলা বাসে আবারও সংবর্ধনা দেয়া হয় তাদের।

পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সংবর্ধনা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসও।

আরও পড়ুন:
সাফজয়ী দলকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক কোটি টাকা পুরস্কার
ছাদ খোলা বাসে চড়ে বাফুফের পথে সাফজয়ী মেয়েরা
টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা
ভুটানের জালে গোলবন্যা, সাফের ফাইনালে বাংলাদেশ
ভারতকে উড়িয়ে সাফের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

মন্তব্য

খেলা
Mbappe is not in the France national team

ফ্রান্স জাতীয় দলে নেই এমবাপে

ফ্রান্স জাতীয় দলে নেই এমবাপে ফ্রান্স জাতীয় দলের অধিনায়ক কিলিয়ান এমবাপে। ছবি: সংগৃহীত
চোটের কারণ দেখিয়ে অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতির সময়ে ফ্রান্স দলে ছিলেন না রিয়াল মাদ্রিদের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে। এবার নভেম্বরে নেশন্স লিগের দুই ম্যাচের জন্য তাকে ছাড়াই দল ঘোষণা করেছে ফ্রান্স।

চোটের কারণ দেখিয়ে অক্টোবরের আন্তর্জাতিক বিরতির সময়ে ফ্রান্স দলে ছিলেন না রিয়াল মাদ্রিদের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে। এবার নভেম্বরে নেশন্স লিগের দুই ম্যাচের জন্য তাকে ছাড়াই দল ঘোষণা করেছে ফ্রান্স।

নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের ২ নম্বর গ্রুপের পঞ্চম ম্যাচে ১৪ নভেম্বর ইসরায়েলকে আতিথ্য দেবে দিদিয়ের দেশমের দল। এর তিন দিন পর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টেবিলের শীর্ষে থাকা ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামবে ২০২১ সালের শিরোপাজয়ীরা।

এই দুই ম্যাচের জন্য ঘোষিত ২৩ সদস্যের ফ্রান্স স্কোয়াডে প্রথমবার ডাক পেয়েছেন চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দারুণ পারফর্ম করা লিলের তরুণ গোলরক্ষক লুকা শেভালিয়েঁ। তবে ঘোষিত স্কোয়াডে জায়াগা হয়নি এমবাপের।

অক্টোবরে চোটের কারণ দেখিয়ে রিয়াল মাদ্রিদে থেকে যান এমবাপে। এরপর ইউরোপীয় সংবাদধ্যমের খবরে জানা যায়, ফ্রান্স যখন নেশন্স লিগের ম্যাচ খেলছে, তখন তিনি সুইডেনের একটি ক্লাবে আড্ডা দিচ্ছেন। ওই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ২৫ বছর বয়সী ফরাসি অধিনায়ক।

স্টকহোমের যে হোটেলে তখন তিনি ছিলেন, সে সময় সেখানে একটি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এ খবর চাউর হওয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদ তাকে পোশাকের একটি বিজ্ঞাপন থেকেও সরিয়ে দেয়। এবার রিয়ালের জার্সিতে মাঠে বেশ কিছুদিন ধরে বিবর্ণ থাকার পর ফ্রান্স দলেও ব্রাত্য হলেন এই ফরোয়ার্ড।

স্কোয়াড ঘোষণার সময় এমবাপের অনুপস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দেশম বলেন, ‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই মুহূর্তে এটিই সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত।’

এমবাপেকে দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্তের পেছনে ফুটবলের বাইরের কোনো কারণ নেই জানিয়ে কোচ বলেন, ‘আমি কিলিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছি। সে দলে ফিরতে চায়। তবে আগামী দুই ম্যাচের জন্য এটি একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত।’

ফ্রান্স স্কোয়াড

গোলরক্ষক: লুকা শেভালিয়েঁ (লিল), মাইক মাইনিয়ঁ (এসি মিলান) ও ব্রাইস সাম্বা (লঁস)।

ডিফেন্ডার: জনাথন ক্লুস (নিস), লুকা দিনিয়ে (অ্যাস্টন ভিলা), ওয়েসলে ফোফানা (চেলসি), থেও এরনান্দেস (এসি মিলান), ইব্রাহিমা কোনাতে (লিভারপুল), জুল কুন্দে (বার্সেলোনা), উইলিয়াম সালিবা (আর্সেনাল) ও দায়োত উপামেকানো (বায়ার্ন মিউনিখ)।

মিডফিল্ডার: এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা (রিয়াল মাদ্রিদ), মাতেও গেন্দুসি (লাৎসিও), এনগলো কান্তে (আল ইত্তিহাদ), মানু কোনে (রোমা), আদ্রিয়েন রাবিও (অলিম্পিক মার্শেই) ও ওয়ারেন জাইরে-এমেরি (পিএসজি)।

ফরোয়ার্ড: ব্রাদলে বারকোলা (পিএসজি), উসমান দেম্বেলে (পিএসজি), রান্দাল কোলো মুয়ানি (পিএসজি), ক্রিস্তোফার এনকুঙ্কু (চেলসি), মিকেল অলিস (বায়ার্ন মিউনিখ) ও মার্কাস থুরাম (ইন্টার মিলান)।

আরও পড়ুন:
ছাদ খোলা বাসে চড়ে বাফুফের পথে সাফজয়ী মেয়েরা
টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের মেয়েরা
ভুটানের জালে গোলবন্যা, সাফের ফাইনালে বাংলাদেশ
ভারতকে উড়িয়ে সাফের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ
ধর্ষণের অভিযোগ: এমবাপেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল

মন্তব্য

খেলা
Chief Advisers commitment to address issues of women footballers on a priority basis

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারী ফুটবলারদের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারী ফুটবলারদের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে ফুটবলারদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফুটবলার, প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তোমরা যা খুশি লিখতে পারো, কোনো দ্বিধা করবে না। আমরা তোমাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব।’ 

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারী ফুটবলারদের সমস্যাগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে ফুটবলারদের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।

কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে গত ৩০ অক্টোবর রাতে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জেতায় নারী দলকে সংবর্ধনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

ওই সময় নারী ফুটবলাররা তাদের স্বপ্ন এবং তাদের দৈনন্দিন সংগ্রামের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বিজয়ী খেলোয়াড়দের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সাফল্য অর্জনের জন্য আমি সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের অভিনন্দন জানাই। জাতি তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

‘আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়। তোমরা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছো।’

ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুন সংবর্ধনার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। আয়োজনে যোগ দিতে পেরে তারা সম্মানিত বোধ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের সব নারীকেই অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়।’

সাবিনা খাতুন ২০০৯ সালে ফুটবলার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপকালে ফুটবলকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেয়ার জন্য পূর্ব প্রজন্মের ফুটবলাররা তাকে সাহস জুগিয়েছেন উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ নারী ফুটবলারদের অবদানের কথা স্মরণ করেন তিনি।

সাবিনা বলেন, ‘নারী ফুটবল দলের মধ্যে অনেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছেন। অনেকের পরিবার তাদের ওপর নির্ভরশীল।

‘আমাদের বেতন দিয়ে পরিবারের জন্য আমরা তেমন কিছু করতে পারি না। কারণ আমাদের বেতন তেমন ভালো নয়।’

মারিয়ার মতো তার সতীর্থদের সংগ্রামের বর্ণনা দেয়ার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাবিনা।

তিনি বলেন, ‘সাফজয়ী দলের ছয়জন খেলোয়াড় ময়মনসিংহের বিখ্যাত কলসিন্দুর গ্রাম থেকে এসেছে। মারিয়া তাদের মধ্যে একজন।

‘অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন। পরিবারের দায়িত্ব তিনিই পালন করেন।’

কৃষ্ণা রানী সরকার ঢাকায় তাদের আবাসন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।

মনিকা চাকমা খাগড়াছড়ি জেলার প্রত্যন্ত উপজেলা লক্ষ্মীছড়ি থেকে জাতীয় ফুটবলার দলে আসা পর্যন্ত তাকে যে কঠিন সংগ্রাম করতে হয়েছে সেসব কথা বর্ণনা করেন।

মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী দিনাজপুরে তার গ্রামের দুর্বল অবকাঠামোর বর্ণনা দিয়েছেন।

উইঙ্গার কৃষ্ণা প্রধান উপদেষ্টাকে এশিয়ার বাইরে তাদের জন্য একটি প্রীতি ম্যাচের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন। বিশেষ করে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী বার্সেলোনার বিরুদ্ধে একটি প্রীতি ম্যাচ ব্যবস্থা করে দেয়ার অনুরোধ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা প্রতিটি খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা এবং আকাঙ্ক্ষা, সংগ্রাম এবং দাবিগুলো আলাদা কাগজে লিখে সেগুলো তার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিতে বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তোমরা যা খুশি লিখতে পারো, কোনো দ্বিধা করবে না। আমরা তোমাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব।

‘এখন যদি কিছু সুরাহা করা যায় তবে আমরা এখনই সেটা করব।’

ওই সময় উপস্থিত ছিলেন কোচ পিটার বাটলার ও ম্যানেজার মাহমুদা আক্তার।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়, স্বাস্থ্য ও প‌রিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
নারী ফুটবলারদের সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা উদ্যোগ নেবেন: আসিফ 
সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা প্রধান উপদেষ্টার
সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা শনিবার
সাফজয়ী সাবিনাদের দেশে ফেরার অপেক্ষা, প্রস্তুত ছাদখোলা বাস
এইচএসসি উত্তীর্ণ ৫৬ বছর বয়সী আবদুল হান্নানকে সংবর্ধনা

মন্তব্য

p
উপরে