৬ জানুয়ারি মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসর। আসরের আগে বুধবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হল প্লেয়ার্স ড্রাফট।
এবারের ড্রাফটে যে চমক থাকবে না সেটি আগে থেকেই অনুমেয় ছিল। প্রায় আড়াই ঘণ্টার এই ড্রাফট থেকে পছন্দের দেশি বিদেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে দল সাজিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
এবারের আসরে দল পাননি মোহাম্মদ আশরাফুল ও সোহাগ গাজী। একইসঙ্গে সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হককে নিতে আগ্রহ দেখায়নি কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি। এছাড়া বিশ্বকাপজয়ী তরুণ ক্রিকেটার তানজিম হোসেন তামিমকেও দলে টেনে নেয়নি কেউই।
ড্রাফটে দেশি ক্রিকেটারদের ছিল ৭ টি ক্যাটাগরি। ড্রাফটে নাম ছিল ২১৬ জনের; এ-ক্যাটাগরিতে ৩, বি-ক্যাটাগরিতে ৭, সি-ক্যাটাগরিতে ২৬, ডি-ক্যাটাগরিতে ৩৫, ই-ক্যাটাগরিতে ৭১, এফ-ক্যাটাগরিতে ৩৮ ও জি-ক্যাটাগরিতে জায়গা হয়েছে ৩৬ জনের।
এ থেকে জি ক্যাটাগরিতে ক্রিকেটারদের মূল্য নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে- ৮০ লাখ, ৫০ লাখ, ৩০ লাখ, ২০ লাখ, ১৫ লাখ, ১০ লাখ ও ৫ লাখ টাকা।
বিদেশী ৩৯৭ জন ক্রিকেটারকে ভাগ করা হয়েছে পাঁচ ক্যাটাগরিতে; এ-ক্যাটাগরিতে ৫, বি-ক্যাটাগরিতে ১৭, সি-ক্যাটাগরিতে ৩৬, ডি-ক্যাটাগরিতে ৬৪ ও ই-ক্যাটাগরিতে আছে ২৭৫ জন।
৫ ক্যাটাগরিতে মূল্য যথাক্রমে- ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ও ২০ হাজার ডলার।
সিলেট স্টাইকার্স: বিপিএলের নতুন আসরে সিলেটের দায়িত্ব পেয়েছে সম্পূর্ণ নতুন এক ফ্র্যাঞ্চাইজি। ফিউচার স্পোর্টস লিমিটেড আগামী ৩ বছরের জন্য সিলেটের ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
জাতীয় দলের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজাকে আইকন খেলোয়াড় হিসেবে নিয়ে শুরুতে তারা তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। একইসঙ্গে সরাসরি চুক্তিতে পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ হারিসকে দলে ভেড়ানোর পাশাপাশি লঙ্কান তারকা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, কামিন্দু মেন্ডিস ও থিসারা পেরেরাকে দলে টানে তারা।
আর ড্রাফট থেকে তারা মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, রুবেল হোসেনের মতো সিনিয়রদের পাশাপাশি তানজিম সাকিব, তৌহিদ হৃদয়ের মতো তরুণদের টেনে নেয়।
সরাসরি চুক্তি: মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ আমির, মোহাম্মদ হারিস, রায়ান বার্ল, কামিন্দু মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, থিসারা পেরেরা।
ড্রাফট থেকে: মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, রেজাউর রহমান রাজা, নাবিল সামাদ, তৌহিদ হৃদয়, রুবেল হোসেন, টম মুরর্জ, গুলবাদিন নায়েব, জাকির হোসেন, নাজমুল ইসলাম অপু, আকবর আলী, মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ, তানজিম সাকিব।
ফরচুন বরিশাল: ফরচুন গ্রুপ লম্বা সময় ধরেই ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে রয়েছে বরিশাল দলের। দেশের ক্রিকেটের পোস্টারবয় সাকিব আল হাসানকে সরাসরি চুক্তিতে দলে ভিড়িয়েছিল তারা, যেটি ছিল অনেকটা অবধারিতই।
পাশাপাশি সরাসরি চুক্তিতে তারা টেনে নেয় পাকিস্তানি তারকা ক্রিকেটার ইফতেখার আহমেদ, মোহাম্মদ ওয়াসিম, আফগানিস্তানের ইব্রাহিদ জাদরান, করিম জানাত, ওমর কাদির, রাহামানুল্লাহ গুরবাজ ও নাভিদ উল হককে। তবে সবচেয়ে বড় চমক ছিল ক্যারিবীয় হিটার ব্যাটার রাহকিম কর্নওয়েলকে দলে টেনে নেয়াটা।
এছাড়া ফ্রাফট থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, ইবাদত হোসেন, এনামুল হক বিজয়ের মতো তারকাদের নিয়ে বেশ শক্তিশালী দল সাজিয়েছে তারা।
সরাসরি চুক্তি: সাকিব আল হাসান, ইফতেখার আহমেদ, মোহাম্মদ ওয়াসিম, ইব্রাহিদ জাদরান, করিম জানাত, ওমর কাদির, রাহকিম কর্নওয়াল, কেসরিক উইলিয়ামস, রাহামানুল্লাহ গুরবাজ, নাভিদ উল হক।
ড্রাফট থেকে: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, ইবাদত হোসেন, এনামুল হক বিজয়, কামরুল ইসলাম রাব্বি, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, হায়দার আলী, চতুরঙ্গা ডি সিলভা, খালেদ আহমেদ, সাইফ হাসান, কাজী অনিক, সানজামুল ইসলাম, সালমান হোসেন।
খুলনা টাইগার্স: খুলনার ফ্র্যাঞ্চাইজি মাইন্ড ট্রি লিমিটেড সরাসরি চুক্তিতে জাতীয় দলের ওয়ানডে দলপতি তামিমকে ভিড়িয়ে প্রথম চমক আনে। তামিম ছাড়াও ডিরেক্ট সাইনিংয়ে তারা দলে ভেড়ায় আভিস্কা ফার্নেন্দো, ওয়াহাব রিয়াজের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারকে।
এছাড়া ড্রাফট থেকে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, সাব্বির রহমান, ইয়াসির আলি রাব্বি, নাসুম আহমেদ, মুনিম শাহরিয়ারের পাশাপাশি দাসুন শানাকা, ভ্যান ডার ম্যাকক্রেইনকে দলে ভিড়িয়েছে তারা।
সরাসরি চুক্তি: তামিম ইকবাল, আভিস্কা ফার্নেন্দো, ওয়াহাব রিয়াজ, নাসিম শাহ, আজম খান।
ড্রাফট থেকে: মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, ইয়াসির আলি রাব্বি, নাসুম আহমেদ, নাহিদুল ইসলাম, মুনিম শাহরিয়ার, সাব্বির রহমান, দাসুন শানাকা, ভ্যান ডার ম্যাকক্রেইন, শফিকুল ইসলাম, প্রীতিম কুমার, হাবিবুর রহমান সোহান, মাহমুদুল হাসান জয়।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: বিপিএলের কারা খেলবেন চট্টগ্রাম দলে সেটি আগে থেকেই অনেকটা নির্ধারিত ছিল। কোন চমক ছাড়াই এবারও দল সাজিয়েছে তারা।
সরাসরি চুক্তি: আফিফ হোসেন, বিশ্ব ফার্নেন্দো, আশান প্রিয়ঞ্জন, কার্টিস ক্যাম্পের।
ড্রাফট থেকে: মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, শুভাগত হোম চৌধুরী, মেহেদী হাসান রানা, ইরফান শুক্কুর, মেহেদি মারুফ, জিয়াউর রহমান, ম্যাক্সয়েল প্যাট্রিক, উন্মুক্ত চাঁদ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী, ফরহাদ রেজা, তৌফিক খান তুষার।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ফ্র্যাঞ্চাইজির থাকার কথাই ছিল না এবারের আসরে। শেষ সময়ে নাটকের জন্ম দিয়ে দল নেয় তারা। আর দল পেয়েই এক্বের পর এক চমক দিতে শুরু করে দলটির ফ্র্যাঞ্চাইজি কুমিল্লা লিজেন্ডস লিমিটেড।
পাকিস্তানি তারকা মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহীন আফ্রিদি, হাসান আলি, খুশদিল শাহকে শুরুতেই সরাসরি চুক্তিতে দলে ভেড়ায় তারা। আফগান দলপতি মোহাম্মদ নবির পাশাপাশি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজকেও সরাসরি চুক্তিতে দলে টেনে নেয় তারা।
সবাইকে অবাক করে কুমিল্লা দলপতি ইমরুল কায়েসকে সরাসরি চুক্তিতে না গিয়ে ড্রাফট থেকে টেনে নেয় কুমিল্লা। এছাড়াও ড্রাফট থেকে তারা টেনে নেয় লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। বিদেশিদের ভেতর তারা নিয়েছে শন উইলিয়ামস ও চ্যাডউইক ওয়ালটনকে।
সরাসরি চুক্তি: মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহীন আফ্রিদি, হাসান আলি, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ নবি, আবরার আহমেদ।
ড্রাফট থেকে: লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, তানভীর ইসলাম, ইমরুল কায়েস, আশিকুজ্জামান, জাকের আলী অনিক, শন উইলিয়ামস, চ্যাডউইক ওয়ালটন, সৈকত আলী, আবু হায়দার রনি, নাইম হাসান, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
রংপুর রাইডার্স: বিপিএলে এক আসর বিরতির পর যুক্ত হয়েছে রংপুর রাইডার্স। নুরুল হাসান সোহান, শোয়েব মালিক, পাথুম নিশাঙ্কা, হারিস রউফ, সিকান্দার রাজা, মোহাম্মদ নাওয়াজের মতো তারকা ক্রিকেটারদের সরাসরি চুক্তিতে দলে ভেড়ানোর পর ড্রাফট থেকে তারা টেনে নেয় শেখ মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, নাঈম শেখ, রাকিবুল হাসান, শামীম পাটোয়ারিকে।
সরাসরি চুক্তি: নুরুল হাসান সোহান, শোয়েব মালিক, পাথুম নিশানকা, হারিস রউফ, সিকান্দার রাজা, মোহাম্মদ নাওয়াজ, জেফ্রি ভ্যান্ডার্সি।
ড্রাফট থেকে: শেখ মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ, নাঈম শেখ, রাকিবুল হাসান, শামীম পাটোয়ারি, রিপন মণ্ডল, হাশমতউল্লাহ উমরজাই, অ্যারেন জোনস, রনি তালুকদার, পারভেজ হোসেন ইমন, রবিউল হক, আলাউদ্দিন বাবু।
ঢাকা ডমিনেটর্স: বিপিএলের আসর বসবে আর ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে নাটক হবে না সেটি আশা করাটাও যেন ভুল। অতীতের ‘ঐতিহ্য’ বজায় রেখে নবম আসরেও ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে হয় নাটক।
শুরুতে ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে প্রগতি গ্রুপকে বোর্ড নির্বাচিত করলেও হুট করেই সেটি বাতিল করে বোর্ড। ফের শুরু হয় নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি খোঁজার মিশন। দুই দিন বাদেই রূপা ফ্যাব্রিক্স লিমিটেডকে দায়িত্ব দিলেও ড্রাফটের তিন দিন আগে তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজিশিপও বাতিল করে বোর্ড।
আর ড্রাফটের আগের দিন তাদেরকেই আবার দেয়া হয় দলের দায়িত্ব। ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে শেষ সময়ে দায়িত্ব পেলেও খুব একটা খারাপ হয়নি তাদের দল সাজানো।
সরাসরি চুক্তিতে তারা দলে ভিড়িয়েছে তাসকিন আহমেদ, চামিকা করুনারত্নে ও দিলশান মুনাওয়ারাকে। আর ড্রাফট থেকে মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার, আরাফাত সানি, নাসির হোসেন, আল-আমিন হোসেনের পাশাপাশি শান মাসুদ, আহমেদ শেহজাদ, উসমান ঘানিকে দলে টেনে নেয় তারা।
সরাসরি চুক্তি: তাসকিন আহমেদ, চামিকা করুনারত্নে, দিলশান মুনাওয়ারা।
ড্রাফট থেকে: মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার, শরিফুল ইসলাম, আরাফাত সানি, নাসির হোসেন, আল-আমিন হোসেন, শান মাসুদ, আহমেদ শেহজাদ, অলক কাপালি, মুনির হোসেন খান, আরিফুল হক, মুক্তার আলী, মিজানুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, উসমান ঘানি, সালমান ইরশাদ।
আরও পড়ুন:বিশ্বখ্যাত স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদকে জাতীয় দলে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার ও বিশ্বকাপজয়ী এই খেলোয়াড়ের এ পদে কাজ করার প্রচুর অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে।
৫৩ বছর বয়সী মুশতাক এর আগে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানসহ বিখ্যাত ক্রিকেট দলের দেশগুলোর স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তার চিত্তাকর্ষ জীবনবৃত্তান্ত পাকিস্তানের বোলিং পরামর্শদাতা হিসাবেও গর্বিত।
নিয়োগের বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি এই ভূমিকার জন্য আগ্রহী এবং আমার অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের দিতে চাই। কারণ, তারা খুব কোচিং যোগ্য এবং আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দলগুলোর মধ্যে একটি।’
চলতি মাসের শেষের দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ক্যাম্পের আগে মুশতাককে নিয়োগ দেয়া হলো। ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সমাপ্তি পর্যন্ত দলের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি।
চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দারুণ ফর্মে আছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ৫ ম্যাচ থেকে ১০ উইকেট নিয়ে আছেন উইকেট শিকারিদের তালিকার ৩ নম্বরে। প্রথম ম্যাচেই হয়েছিলেন ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ও। বোলারদের শ্মশানঘাটখ্যাত আইপিএলে মুস্তাফিজের এমন পারফরম্যান্স বেশ ভালোভাবেই দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। ফিজের এমন পারফরম্যান্স এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ কাজে দেবে বলে মত তাদের।
তবে বিপত্তি বেঁধেছে আগামী মাসে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজের জন্য মুস্তাফিজকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দেশে ফিরে ফিজকে খেলতে হবে জাতীয় দলের হয়ে। তবে অনেকেই মনে করেন বিশ্বকাপের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে মুস্তাফিজকে জিম্বাবুয়ে নয় আইপিএলে খেলতে দেওয়া উচিত। সেজন্য এ বাঁহাতি পেসারের অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ বাড়ানো উচিত বিসিবির।
যদিও একদিন বাড়িয়ে ১ মে পর্যন্ত করা হয়েছে ফিজের ছুটি। তবে মুস্তাফিজকে পুরো সময়ের জন্যই আইপিএলে খেলানোর পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। তার মতে, মোস্তাফিজ আইপিএলে থাকলে বাংলাদেশই লাভবান হবে। গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে বলেন আকরাম খান।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, সে চেন্নাইয়ের হয়ে যত ম্যাচ খেলবে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশও লাভবান হবে। কারণ, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলার চেয়ে সেখানে খেললে অনেক কিছু শিখতে পারবে। ড্রেসিংরুমের ব্যাপার আছে, বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবে। সেখানকার মান ভালো, বিভিন্ন উইকেট, বিভিন্ন মানের খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলবে। আমার মনে হয়, ওর সুযোগ পাওয়া উচিত।’
আকরাম খান আরও বলেন, ‘আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা চিন্তিত ছিলাম। কারণ, সে গত এক বছর ধরে ধুঁকছিল। আইপিএলে কিন্তু ওর পারফরম্যান্স ভালোর দিকেই যাচ্ছে, একদম যে ভালো হচ্ছে, তা না।’
সাবেক এ অধিনায়কের মতে, ‘যেহেতু সে (মুস্তাফিজ) লঙ্গার ভার্সনে খেলে না, আইপিএলে গিয়ে যদি এ রকম ভালো করতে থাকে তাহলে বিশ্বকাপে আমরা বেশি লাভবান হব। এই জিনিসটা চিন্তা করতে পারে বোর্ড। তারপরও এটা নির্ভর করছে কোচিং স্টাফ, নির্বাচকদের চিন্তা-ভাবনার ওপর। কিন্তু সে যে ভালো করছে, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ২০২৭ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন বছর আগেই নিজেদের ৮ ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী ফোলেতসি মোসেকি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকান নিউজ ২৪ ওয়েবসাইটকে মোসেকি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক কারণ বিবেচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকার আট ভেন্যু বাছাই করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ও হোটেল রুমের সহজলভ্যতা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’
দেশটির নিয়মিত টেস্ট ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্ক, কেপটাউনের নিউল্যান্ডস, ডারবানের কিংসমিড ও গেবেরার সেন্ট জর্জে’স পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচ।
অন্য ভেন্যুগুলো হচ্ছে, ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ও ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্ক।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসর আয়োজন করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল তারা। তবে এ টুর্নামেন্টের আয়োজনে নামিবিয়া এবারই প্রথম।
আয়োজক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও আসরের টিকিট পেতে আফ্রিকান কোয়ালিফায়ারে খেলতে হবে নামিবিয়াকে।
তিনজন স্বাধীন নারী পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
নিয়োগ পাওয়া তিন নারী পরিচালক হলেন- ডায়ান ক্যাম্পবেল, লুইস ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও ডেবরা করিয়াট-প্যাটন। এক বছরের মেয়াদে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তারা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিডব্লুআই জানিয়েছে, ক্যাম্পবেল, ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও করিয়াট-প্যাটনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। আপাতত তাদের মেয়াদ এক বছর, যা শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ।
তিনজনের মধ্যে প্রথমবার পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ক্যাম্পবেল ও ভিক্টর-ফ্রেডেরিক। অন্যদিকে ২০১৯ থেকে ২০২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন করিয়াট-প্যাটন।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টেও বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচের পঞ্চম দিন বুধবার ১৯২ রানের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটারের অর্ধশতকে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন শর বেশি লিড নেয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয়টিতে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হতাশাজনক ব্যাটিং না করলেও বিজয় থেকে অনেক দূরেই থেমে যায় টাইগারদের রানের চাকা। মমিনুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া অর্ধশতকে ৩১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন:সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫১১ রানের বিশাল টার্গেট দিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৩৫৩ রানের লিডকে সাথে নিয়ে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। খবর বাসসের
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১০২ রান সংগ্রহ ছিল শ্রীলঙ্কার।
মঙ্গলবার চতুর্থ দিন ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
৩৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হবার আগে ৫টি চারে ৫৬ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৩ রানে শুরু করা প্রবাথ জয়সুরিয়া ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যপ্রান্তে বিশ্ব ফার্নান্দো অপরাজিত ৮ রান করেন।
বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ৬৫ রানে ৪টি, খালেদ আহমেদ ৩৪ রানে ২টি ও সাকিব ৩৯ রানে ১টি উইকেট নেন।
মন্তব্য