যে কোনো ক্রীড়া দলের চেয়ে বাংলাদেশে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফুটবল দলের ভক্ত সংখ্যা বেশি এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যেতে পারে। আর বিশ্বকাপ এলে এই ভক্তি পরিণত হয় উন্মাদনায়। কেন হাজার মাইল দূরের দুটো দেশের ফুটবল দল বাংলাদেশে এতো জনপ্রিয় সেটা নিয়ে একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। সেটির অবলম্বনে নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো বিশেষ এ প্রতিবেদন।
বিশ্বকাপে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ মানে বাংলাদেশে বাড়তি উত্তেজনা। ঢাকা থেকে ৯ হাজার ৫০৩ মাইল দূরের রিও ডি জেনেইরো ও ১০ হাজার ৪২০ মাইল দূরের বুয়েনোস আইরেসের উন্মাদনা টের পাওয়া যায় দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট এই দেশটিতে।
বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ বাংলাদেশ ক্রিকেটপাগল হিসেবে পরিচিত। তবে চার বছর পরপর ফুটবল বিশ্বকাপ এলেই বাংলাদেশিরা কেমন যেন পাল্টে যায়। বলতে গেলে দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায় জাতি; একদল ব্রাজিল, অন্যদল আর্জেন্টিনা। জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্সের ভক্তও কিছু আছে। তবে তারা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মতো নয়।
প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলকে তীব্র আবেগ নিয়ে সমর্থন করে আসছে বাংলাদেশিরা। বিশ্বকাপের মৌসুমে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন দুই দলের সমর্থকরা।
বাসার ছাদে তারা পছন্দের পতাকা ওড়ান, পতাকার আদলে বারান্দা সাজান। চায়ের কাপে চলে তুমুল বিতর্ক। এমন দৃশ্য নেইমার বা মেসিদের দেশেও হয়ত খুব একটা দেখা যায় না। মাঝে-মধ্যে দুই দলের সমর্থকদের ইট-পাথর ছুঁড়তেও দেখা যায়। মজার বিষয় হলো, এসব সমর্থকদের বেশিরভাগই ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার কোনো নাগরিককে কখনও সরাসরি দেখেনই নি।
আকিদ কাদের চৌধুরী একজন ব্রাজিলভক্ত। কাজ করেন টেলিকমিউনিকেশনে, থাকেন ঢাকায়। ওয়াশিংটন পোস্টকে তিনি বলেন, ‘এটা একটা উন্মাদনা। এক কথায় বলতে গেলে এটি এমন একটি বিষয়, যা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দেয়।’
আর্জেন্টিনাভক্ত নোফেল ওয়াহিদের কাছে বিশ্বকাপ একটা ‘বিশাল আয়োজন’। ঢাকার বাসিন্দা নোফেল কাজ করেন ফিন্যান্সে।
তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ একটি বড় দেশ, ১৭ কোটি মানুষ। আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল ভক্তদের নিয়ে দেশকে প্রায় দুই ভাগে ভাগ করা যায়। বিষয়টা আসলে বেশ মজার। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এত দূরে এশিয়ার মাঝামাঝি এক দেশে কেন ফুটবল নিয়ে এতো মাতামাতি? এটা ব্যাখ্যা করা আসলে কঠিন।’
বাংলাদেশে আশির দশকের দিকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে উন্মাদনা শুরু হয় বলে একমত আকিদ ও ওয়াহিদ দুজনেই। ৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর সাধারণ বাংলাদেশিদের মধ্যে স্বচ্ছলতা আসতে শুরু করে। রঙিন টেলিভিশন কিনে মানুষ বিশ্বকাপ ফুটবল দেখা শুরু করে।
রঙিন পর্দায় ব্রাজিলের হলুদ-সবুজ জার্সি আর হালকা নীল জার্সিতে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনা যেন জীবন্ত হয়ে ওঠেন।
ওয়াহিদ বলেন, ‘আমি একেবারেই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।’
১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যারাডোনা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ‘হ্যান্ড অফ গড’ ও ‘শতাব্দীর সেরা গোল’ হিসেবে অখ্যায়িত দুইটি গোল করেন। বিশ্বকাপ জেতার পাশাপাশি ম্যারাডোনা ওই আসরে করেন ৫ গোল; সতীর্থদের দিয়ে করান আরও ৫ গোল।
পরের আসরে অর্থাৎ ১৯৯০ বিশ্বকাপের আসর বসে ইতালিতে। সে আসরের ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে জার্মানি। বাংলাদেশিদের শৈশবের অমোচনীয় স্মৃতিতে পরিণত হয় দিনটি।
ওই আসরের শেষ ষোলোতে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা- ব্রাজিল। আকিদ তখন ১০ বছরের শিশু।
তিনি বলেন, ‘সেদিন বাড়িতে চমৎকার খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। বাবার বন্ধু এবং সহকর্মী মিলিয়ে ৫০ জনকে দাওয়াত দেয়া হয়েছিল।
‘হাজার মাইল দূরে থাকার পরও এই দল দুটি আমার পরিবারকে যেভাবে প্রভাবিত করেছে, সেটা মেনে নেয়া আমার পক্ষে সহজ ছিল না। আমি আনন্দ, হাসি-কান্না দেখতে পাচ্ছিলাম।’
সে ম্যাচে ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ম্যারাডোনার অ্যাসিস্ট থেকে ৮২ মিনিটে গোল করেন ক্লদিও কানিজ্জিয়া।
ম্যাচের পর আকিদের ব্রাজিলভক্ত বাবা মাহবুব তার বন্ধুদের বলেছিলেন, ‘আমরা ভাল খেলেছি... তবে জিতেছেন আপনারা।’
আকিদ বলেন, ‘৩২ বছর আগের দিনটির কথা আমার মনে থাকার কথা না। তারপরও দিনটি আমার স্মৃতিতে গেঁথে আছে। কারণ ১০ বছরের এক শিশু সেদিন তার আত্মীয়দের প্রিয় দলের জন্য বারবার লাফিয়ে উঠতে দেখছিল। এটা কি ভোলা যায়।’
ওই বিশ্বকাপের ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির কাছে ১-০ গোলে হারে আর্জেন্টিনা। ৮৫ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি নিয়ে অনেক বিতর্কও আছে। ম্যাচটি ৬ বছরের এক শিশুর (ওয়াহিদ) মনেও ভীষণ দাগ কাটে।
ওয়াহিদ বলেন, “দিনটার কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে। পেনাল্টি স্পষ্টতই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গিয়েছিল। ম্যারাডোনা যখন হেরে যাওয়া অধিনায়ক হিসেবে পদক নিতে মঞ্চে ওঠেন, তখন তিনি কাঁদছিলেন। দৃশ্যটা দেখেছিলাম, তখন আমার চোখ দিয়েও পানি পড়ছিল। মা তখন আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল, ‘চিন্তা করো না, আর্জেন্টিনা আবার জিতবে’।”
সে দিনটির কথা স্মরণ করে হেসে ওয়াহিদ বলেন, ‘তখন থেকেই অপেক্ষায় আছি।’
একটা বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরের তিন বছর সবকিছু যেন সবাই ভুলে যায়। ওয়াহিদ বলেন, ‘আমার মা আর্জেন্টিনার পাঁড় ভক্ত। তবে ২০১১ সালে আর্জেন্টিনার যে দলটি ঢাকা সফরে এসেছিল, সে দলের মেসি ছাড়া আর কাউকে তিনি চিনতেন না।
‘আমার মনে হয় না ২০২১ সালে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচটি নিয়ে বেশিরভাগ বাংলাদেশি খুব বেশি জানত। তারপরও আমাদের মধ্যে উন্মাদনার কমতি ছিল না।’
সংঘর্ষের আশঙ্কায় সেবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বড় পর্দায় সে ম্যাচটি দেখানো হয়নি। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের সময় বরিশালের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলা নিয়ে হাতাহাতিতে ১১ জন আহত হয়েছিলেন। ডাইনিং হলে বসে থাকা এক ব্রাজিল ভক্ত ‘হ্যান্ড অফ গড’-কে ‘অবৈধ’ বলেছিলেন। তা নিয়েই বিপত্তি।
২০১৮ বিশ্বকাপের সময় ভারতীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম scroll.in- বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তদের ইঙ্গিত করে একটি খবর ছাপে, যেটির শিরোনাম ছিল- ‘অস্ত্রে শান দেয়া হচ্ছে’।
চলতি বছরের জুনে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচ নিয়ে ঢাকার বাইরে সংঘর্ষের খবর প্রকাশ করে ফরাসি বার্তা সংস্থা- এএফপি। এতে অন্তত ৭ জন আহত হন।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে যে বাংলাদেশে সবসময় ঝগড়া-বিবাদ হয়, তা কিন্তু না। প্রিয় দলের খেলা নিয়ে অনেক মজাও হয়।
আকিদ বলেন, ‘২০১৮ বিশ্বকাপের সময় আমি ও কয়েকজন সহকর্মী ব্রাজিলের জার্সি পরে অফিসে গিয়েছি। অফিসের দেয়ালে ব্রাজিলের পতাকা লাগিয়েছি। এক-দুইজন আর্জেন্টিনা সমর্থককে ধরে ছবিও তুলেছি।
‘এই ট্রেন্ডটা শুরু হয় ২০১৪ বিশ্বকাপে। সেবার সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ব্রাজিলের ৭-১ গোলে হেরে যাওয়ার পর আর্জেন্টিনা সমর্থকরা এটা শুরু করেছিলেন। তারা আমাদের সামনে সেভেন আপ কিনে খেত। যা পরে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।’
ওয়াহিদ জানান, ‘আমিও এমনটা করেছি।’
এবারের আয়োজক কাতার। বিশ্বকাপ ঘিরে সেই চিরচেনা উন্মাদনাও শুরু হয়ে গেছে বাংলাদেশে। প্রিয় দলের জার্সি বেচা-কেনা হচ্ছে দেদার। অনেকেই নিজেদের বাড়িকে পছন্দের দলের পতাকার আদলে রাঙিয়ে নিচ্ছেন। রাস্তা-ঘাট, যানবাহনেও পড়েছে এসবের প্রভাব। যে কোনো স্টলে বসে চায়ে চুমুক দিতে গিয়ে হঠাৎ শুনতে পাবেন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে ভক্তদের তুমুল আড্ডা।
নতুন প্রজন্মরা অবশ্য এই দুই দল থেকে বেরিয়ে আসছে।
আকিদ বলেন, ‘আমি এবং আমার স্ত্রী ব্রাজিলের পক্ষে। কিন্তু শ্বশুরবাড়ি আর্জেন্টিনার সমর্থক। এসবের মধ্যে আমার ১০ বছরের ছেলে বেলজিয়াম বেছে নিয়েছে।
ওয়াহিদ বলেন, ‘আমার এক কাজিন জার্মানির ভক্ত। জার্মানির ভক্ত হয়ে কী মজা পাবে?’
আরও পড়ুন:১২০ বছরের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগার শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখিয়েছে বায়ের লেভারকুসেন। রোববার ভার্ডার ব্রেমেনকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে লিগে বায়ার্ন মিউনিখের ১১ বছরের টানা আধিপত্য ভাঙতে সক্ষম হয়েছে শাবি আলোনসোর দল।
লিগের ২৯তম ম্যাচে এসে পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে তারা। পুরো মৌসুমে দারুণ ফর্মে থাকা লেভারকুসেন এখন পর্যন্ত শুধু লিগে নয়, ইউরোপা লিগসহ সব ধরনের প্রতিযোগিতায় অপরাজিত রয়েছে।
ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টসের হ্যাটট্রিক এবং ভিক্টর বনিফেস ও গ্রানিট জাকার গোলে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এদিন লেভারনকুসেন টানা ৪৩ ম্যাচে অপরাজিত থাকার গৌরব অর্জন করল।
এ পর্যন্ত পাঁচবার দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করলেও শিরোপার স্বাদ কখনও পাওয়া হয়নি লেভারকুসেনের। এই শিরোপার মাধ্যমে লেভারকুসেনর তাদের কুখ্যাত ‘নেভারকুসেন’ তকমা থেকেও সরে আসতে সমর্থ হয়েছে।
শিরোপা জয়ের আনন্দে কাল ম্যাচ শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগেই উদযাপন শুরু করে দেয় উচ্ছসিত সমর্থকরা। একে একে তারা সাইডলাইনে জড়ো হতে শুরু করেন। যদিও ম্যাচ তখনও চলছিল। লেভারকুসেনের খেলোয়াড়রা এক পর্যায়ে তাদের অনুরোধ জানায় গ্যালারিতে ফিরে যেতে। কিন্তু ৯০ মিনিটে পর পুরো স্ট্যান্ডই খালি হয়ে যায়, তখন সবাই ছিল মাঠের ভেতর। আবেগ আপ্লুত সমর্থকরা এ সময় খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাদের এই বিজয় উৎসব উপভোগ করতে থাকেন।
এই জয়ে লেভারকুসেনের পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯। জার্মান লিগ ইতিহাসে ২৯ ম্যাচ পর এটাই সর্বোচ্চ পয়েন্ট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বায়ার্ন মিউনিখের থেকে লেভারকুসেন ১৬ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে।
ম্যাচের হ্যাটট্রিকম্যান ভিয়ার্টস বলেন, ‘এটা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। আমি বলতে পারব না, আমরা কী করেছি। আমার এখন ড্রেসিং রুমে ফিরে গিয়ে শান্ত হয়ে বসতে হবে। ইতোমধ্যেই আমরা সমর্থকদের সঙ্গে পার্টি শুরু করে দিয়েছি।’
ম্যাচ শুরুর ৯০ মিনিট আগে স্টেডিয়ামে এসে উপস্থিত হয় লেভারকুসেনের বাস। ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ঘরের মাঠ বে আরেনাতে কাল পুরোটা সময়জুড়েই ছিল লাল-কালো জার্সিধারীদের আধিপত্য।
কোচ শাবি আলোনসোর সম্মানে শহরের বিমসার্ক স্ট্রিটটি সমর্থকরা সাময়িকভাবে ‘শাবি আলোনসো স্ট্রিট’ নামে আখ্যায়িত করে।
শিরোপা জয় নিশ্চিত হবার পর আলোনসোর এখন মূল লক্ষ্য বৃহস্পতিবার ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে লন্ডনে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষেও ম্যাচটি। ওই ম্যাচকে সামনে রেখে গতকাল মূল একাদশে সাতটি পরিবর্তন এনেছিলেন আলোনসো। এ কারণে বদলি বেঞ্চে ছিলেন ভিয়ার্টস, জেরেমি ফ্রিমপং ও আলেক্স গ্রিমালদো। এদের মধ্যে মৌসুমে এই প্রথম ম্যাচ শুরু করার সুযোগ পাননি গ্রিমালদো। তার পরিবর্তে মাঠে নামা পিয়েরো হিনকেপি শুরুতেই গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছেন।
এদিন ব্রেমেন ডিফেন্ডার হুলিয়ান মালাতিনির বিপক্ষে ইয়োনাস হফমানের আদায় করা পেনাল্টি থেকে লেভারকুসেনকে এগিয়ে দেন বনিফেস। রেফারি সরাসরি পেনাল্টির নির্দেশ দিলেও পরবর্তীতে ভিএআর পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত হতে হয়। বিরতির ঠিক আগে হফম্যান আবারও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন, কিন্তু তার পাস থেকে আমিন আদলির শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসে।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা আগ্রাসী হয়ে খেলা শুরু করে ব্রেমেন, কিন্তু ম্যাচের ৬০তম মিনিটে বনিফেসের পাস থেকে শক্তিশালী শটে জাকা ব্যবধান দ্বিগুণ করলে ব্রেমেনর সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়।
আদলির পরিবর্তে মাঠে নামা ভিয়ার্টস আট মিনিট পর জাকার মতো প্রায় একইভাবে বল জালে জড়ান। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে ভিয়ার্টস তার দ্বিতীয় গোল করেন। এরপর ৯০তম মিনিটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ২০ বছর বয়সী এ জার্মান ফুটবলার। শেষপর্যন্ত ৫-০ গোলের বড় জয় পেয়ে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে লেভারকুসেন।
ইউরোপিয়ান ফুটবলে বড় চমক। লিভারপুল, বায়ার্ন মিউনিখ নয়, বায়ের লেভারকুজেনেই থেকে কোচিং চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাবি আলোনসো।
ট্রান্সফার মার্কেট গুরু ফাব্রিৎসিও রোমানো এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, কিছুক্ষণ আগেই লেভারকুজেনের খেলোয়াড়দের শাবি জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এ ক্লাবটিতেই থেকে যাচ্ছেন।
ওই পোস্টে রোমানো লেখেন, শিষ্যদের তিনি (শাবি) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে আরও ট্রফি জিততে চাই। আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য প্রস্তুত হও।’
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শাবি আলোনসো বলেন, ‘লেভারকুজেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার মিটিং হয়েছে। সেখানে আমি তাদের জানিয়েছি, আগামী মৌসুমে আমি এখানেই নিজের কাজ চালিয়ে যাব।
‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি, আমার জন্য বর্তমানে এটিই (লেভারকুজেন) সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা।’
এ স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘এখানে আমার কাজ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। ক্লাবকে আমি সাহায্য করতে চাই, খেলোয়াড়দের আরও উন্নতি করতে চাই। আমাদের ভক্তরা, (লেভারকুজেন) বোর্ডও অসাধারণ… এখানকার সবকিছুই চমৎকার।
‘ম্যানেজার হিসেবে আমি এখনও অনেক ছোট। তাই মনে করি, নিজের ভবিষ্যত সম্পর্কে এটিই আমার জন্য সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। আমি এ কথাগুলো বলার আগে যথেষ্ট সময় নিয়েছি এবং এ বিষয়ে আমার মনে কোনো সংশয় নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, শিষ্যদের আমি ইতোমধ্যে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’
এ সময় লিভারপুল ও বায়ার্ন মিউনিখ সম্পর্কে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নটি তিনি এড়িয়ে যান। বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তারা (লিভারপুল ও বায়ার্ন) অবশ্যই অনেক বড় ক্লাব এবং দুই ক্লাবের সঙ্গেই আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে আমি যেখানে থাকতে চাই, সে জায়গাটিই এখন বেছে নিয়েছি।
‘নিজের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবার সময় এখনই নয় বলে মনে করছি। বায়ের লেভারকুজেনে আমি নিজেকে আরও উন্নীত করতে চাই।’
চলতি মৌসুমে লেভারকুজেনের খেলোয়াড় ও ভক্ত-সমর্থকদের রূপকথার গালিচায় চড়িয়ে নিয়ে চলেছেন শাবি আলোনসো। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে শুধু তার দলই এখনও সব প্রতিযোগিতায় অপরাজিত।
বুন্দেসলিগায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে একপ্রকার অজেয় বায়ার্ন মিউনিখকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে তার শিষ্যরা। পয়েন্ট টেবিলেও বেশ বড় ব্যবধানে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে দলটি। চলতি মৌসুমে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বায়ার্নের সঙ্গে তাদের ব্যবধান ১০ পয়েন্টের। দুই দলেরই হাতে রয়েছে কেবল আটটি করে ম্যাচ।
অনেক ফুটবলবোদ্ধার মতো বায়ার্নের সাবেক অধিনায়ক ফিলিপ লামও মনে করেন, এবার লিগ শিরোপা লেভারকুজেনের ঘরেই যাচ্ছে। আর তা হলে ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগার শিরোপা জয়ের স্বাদ দিতে চলেছেন আলোনসো।
শুধু তা-ই নয়, শীর্ষ চারে থাকায় আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে লেভারকুজেন।
গত ২৬ জানুয়ারি চলতি মৌসুম শেষে লিভারপুলের দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। ক্লপের এমন ঘোষণায় লিভারপুল সমর্থকরা চমকে গেলেও তখন থেকে ইংলিশ ক্লাবটির পরবর্তী কোচ কে হবেন, তা নিয়ে ফুটবল পাড়ায় শুরু হয় জোর আলোচনা।
এক্ষেত্রে আলোনসোর নামটি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেতে থাকে। আলোনসোর খেলোয়াড়ি জীবনের শুরুর দিকে অল রেডদের জার্সি পরে খেলার কারণে তার প্রার্থিতা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল।
লিভারপুলের পরবর্তী কোচ হিসেবে আলোনসোকে দেখতে চেয়েছিলেন খোদ ক্লপও।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের ক্লপ বলেছিলেন, ‘সে (শাবি) বিশ্বমানের খেলোয়াড় ছিল। কোচিং পরিবার থেকে আসায় এ কাজেও সে ভালো মনোবল পায়।
‘খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই সে কোচের মতো ছিল। (লেভারকুসেনকে) যে ফুটবল সে খেলাচ্ছে, যেভাবে খেলোয়াড় এনে দল সাজিয়েছে- এককথায় অনবদ্য।’
লিভারপুলের পরবর্তী কোচ সম্পর্কে ক্লপ বলেন, ‘আপনি যদি আমাকে আরও আট সপ্তাহ আগেও এই প্রশ্নটি করতে, তাহলেও আমি একই কথা বলতাম। ওর জন্য আমি যেকোনো মুহূর্তে স্থান ছেড়ে দিতে পারি।’
অন্যদিকে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় ভালোভাবে টিকে থাকা সত্ত্বেও গত বছরের মার্চে কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমানকে ছাঁটাই করে বায়ার্ন মিউনিখ। দল জয় পেলেও ‘পারফরম্যান্স ভালো নয়’ অজুহাতে তাকে সরিয়ে ডর্টমুন্ড ও চেলসির সাবেক কোচ টমাস টুখেলকে দায়িত্ব দেয় ক্লাবটি।
তবে টুখেলের কোচিংয়েও সন্তুষ্ট নয় বায়ার্ন কর্তৃপক্ষ। এমনকি চলতি মৌসুম শেষে তার সঙ্গে ক্লাবটির সম্পর্কচ্ছেদের কথাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। ফলে নতুন কোচের খোঁজে রয়েছে তারাও।
এদিকে বায়ার্নে খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষ করা আলোনসো যেভাবে লেভারকুজেনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে তার নামটি বায়ার্নেরও পরবর্তী কোচ হওয়ার তালিকায় উপরের দিকে স্থান পায়।
এসব বিষয় নিয়ে এতদিন টুঁ-শব্দ করেননি শাবি। তবে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে সব জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, লেভারকুজেন থেকে সরছেন না লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখের জার্সি গায়ে মাঝমাঠ সামলানো সাবেক এ তারকা ফুটবলার।
আরও পড়ুন:ব্রাজিলের সাবেক আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলোয়াড় রবিনহোকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তার করেছে ব্রাজিলের ফেডারেল পুলিশ।
ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে খেলাকালীন ২০১৩ সালে একটি নাইট ক্লাবে আলবেনিয়ান নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ইতালিতে রবিনহোকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল বলে জানায় বিবিসি।
ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৭ সালে রবিনহোকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেয় ইতালির আদালত। এরপর বৃহস্পতিবার নিজ শহর সান্তোসের বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন ৪০ বছর বয়সী এ খেলোয়াড়।
ব্রাজিলের একটি আদালত বুধবার তাকে কারাগারের পাঠানোর আদেশ দেয়।
দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২০২২ সালে ইতালির সর্বোচ্চ আদালত রবিনহোর শাস্তি বহাল রেখে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
ব্রাজিলের আইন অনুযায়ী, বিদেশে অপরাধ সংঘটিত করে কোনো নাগরিক দেশে ফিরলে বিদেশের বিচারিক কর্তৃপক্ষের কাছে অপরাধীকে হস্তান্তর করে না ব্রাজিল সরকার। রায়ের আগেই রবিনহো ইতালি ছাড়ায় ব্রাজিলেই শাস্তি কার্যকরের অনুরোধ জানায় দেশটির আদালত।
ব্রাজিলের বিচার ব্যবস্থার দ্বারা গৃহীত এ পদক্ষেপ স্থানীয় মিডিয়াতে অনেকের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, রবিনহো তার খ্যাতি এবং সম্পদের কারণে ন্যায়বিচার এড়িয়ে যাবেন।
তবে ম্যানচেস্টার সিটিতে দুই বছর কাটানো এ ফুটবলার বরাবরের মতো এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, নাইট ক্লাবের ঘটনাটি ওই নারীর ‘সম্মতিতে’ হয়েছিল।
আরও পড়ুন:মাত্র ২৫ বছর বয়সেই চলে গেলেন জাতীয় নারী দলের ফুটবলার রাজিয়া। বৃহস্পতিবার পুত্র সন্তান জন্ম দেয়ার পর সাতক্ষীরায় মারা গেছেন এই রাইট উইঙ্গার।
রাজিয়া সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার মৌতলা ইউনিয়নের লক্ষ্মীনাথপুর গ্রামের নূর আলী সরদারের মেয়ে।
জাতীয় ও বয়সভিত্তিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত খেলেছেন রাজিয়া। ২০১৭ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্বে খেলেন তিনি। ভুটানে ২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে অংশ নেন রাজিয়া। এছাড়া ২০১৯ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফে জাতীয় দলে সাবিনা খাতুনদের সঙ্গেও খেলেছেন তিনি।
নারী ফুটবল লিগে খেলেছেন নাসরিন স্পোর্টিং ও এএফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জার্সিতে।
তার স্বামী ইয়াম রহমান জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রাজিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি গাজীপুরে চাকরি করি। ইফতারির সময় বাসায় গিয়ে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু ফোনটা ওর ছোট ভাই রিসিভ করে বলে ব্যস্ত আছি। কেউ আমাকে জানায়নি যে ওর পেইন (প্রসব ব্যথা) উঠেছে। আসলে ওর প্রচুর রক্তক্ষরণে হয়েছে। অথচ কেউ বিষয়টাতে গুরুত্ব দেয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওরা আমাকে গত রাত ১১টার দিকে জানায়, ছেলে ও মা সুস্থ আছে। কিন্তু পরে ওর প্রচুর রক্ত ঝরেছে। অচেতন হয়ে ছিল অনেক সময়। ভোর বেলা হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা গেছে। আমি সিজার করাতে বলেছিলাম, কিন্তু ওরা শোনেনি।’
ইয়াম নিজেও ফুটবলার ছিলেন। খেলেছেন বসুন্ধরা কিংস অনূর্ধ্ব-১৮, সাইফ স্পোর্টিং যুব দলে। তৃতীয় বিভাগেও খেলেছেন। ভালোবেসে ৩ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন রাজিয়াকে।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে লিগ পর্বে টানা জয়ের পর শিরোপাও জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
রোববার কাঠমান্ডুর অদূরে ললিতপুরে আনফা একাডেমিতে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ১-১ সমতার পর টাইব্রেকারে ভারতকে ৩-২ গোলে হারান প্রীতিরা।
খেলার পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায়ং ভারত। দ্বিতীয়ার্ধে গিয়ে ম্যাচের ৭১ মিনিটে ফেরে সমতা। এরপর টাইব্রেকারে গোলকিপার ইয়ারজান বেগমের দক্ষতায় কাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় বাংলাদেশের।
এর আগে ৮ মার্চ লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে দারুণ জয় পায় বাংলাদেশের মেয়েরা। নেপাল ও ভারতকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা দল সেদিন ভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয়।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে লিগ পর্বে শেষ ম্যাচে ভুটানের বিপক্ষে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
নেপাল ও ভারতকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা বাংলাদেশ শুক্রবার নেপালের কাঠমান্ডুর চেসাল স্টেডিয়ামে ভুটানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দেয়।
টানা তিন ম্যাচ জিতে শীর্ষে থেকে সাইফুল বারী টিটুর দল খেলার ১৩ মিনিটেই এগিয়ে যায়। এরপর একে একে ৬টি গোল। সুরভী আকন্দ পেয়েছেন জোড়া গোল। বাকি ৪টি গোল করেছেন ফাতেমা, ক্রানুচিং, সাথী মানদা ও থুইনুই মারমার।
আগামী রোববার কাঠমান্ডুর অদূরে ললিতপুরে আনফা একাডেমিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। লিগ পর্বে তাদের ৩-১ গোলে হারিয়েছিলেন প্রীতিরা।
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়ে দারুণ সূচনা করেছে বাংলাদেশের নারীরা।
শুরু থেকেই দাপটের সঙ্গে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সংঘবদ্ধ এক আক্রমণের প্রদর্শনীতে প্রথমার্ধের ২৪ মিনিটে বাংলাদেশ গোল পায়। সাথী মুন্ডার দারুণ এক মুভে থ্রু বল ঠেলে দেন প্রতিপক্ষের গোল বক্সের ভেতর। নেপালের গোলরক্ষক গোল বাঁচাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড সুরভী আকন্দ প্রীতি দ্রুতগতিতে বক্সে প্রবেশ করে প্লেসিংয়ে গোল করেন।
৫ মিনিট পর গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন প্রীতি নিজেই। বক্সের বাম দিকে দিয়ে আক্রমণে ছিলেন বাংলাদেশের আরেক খেলোয়ার আলফি। গোলরক্ষক তাকে থামাতে গিয়ে গিয়ে ফেলে দেন মাটিতে। ফলে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। স্পট কিক থেকে বাংলাদেশকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন প্রীতি। এভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
বিরতির পর স্বাগতিক নেপাল ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালালেও বাংলাদেশের রক্ষণভাগ ভেদ করেতে পারেনি। বারবার তাদের আক্রমণ নস্যাৎ করে দিয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। খেলার ৬২ মিনিটের মাথায় আরিফার করা ক্রসে সুরভী প্রীতির প্লেসিং করা বল ফিরে আসে জালের পাশে লেগে। এরপর নির্ধারিত নব্বই মিনিটের খেলায় গোল পায়নি আর কোনো দল।
এবারের সাফ-১৬ টুর্নামেন্টে চারটি দল অংশ নিয়েছে। এক ম্যাচ শেষে সমান তিন পয়েন্ট করে অর্জন করেছে ভারত ও বাংলাদেশ। ৫ মার্চ বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে।
মন্তব্য