মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। হার না মানা হাঁটুর জোরে ২২ গজ দাপিয়ে বেড়ানো এক যোদ্ধার নাম। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ইনজুরি যার নিত্যসঙ্গী, যে কি না নতুন দিনের বাংলাদেশের ক্রিকেটের রূপকার, দলের খেলোয়াড়দের জন্য ভরসার আরেক নাম, শেষ আশ্রয়স্থল, যিনি কি না বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য এক উচ্চতায়, আজ সেই ব্যক্তিটির ৩৯তম জন্মদিন।
১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবর নড়াইলে জন্মগ্রহণ করেন মাশরাফি। নড়াইলে তার ডাকনাম কৌশিক। ছোটবেলা থেকেই বেশ ডানপিটে কৌশিক পড়াশোনার পরিবর্তে ফুটবল আর ব্যাডমিন্টন খেলতেই বেশি পছন্দ করতেন। সেই সঙ্গে চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটতেন।
তবে একটা সময় ব্যাডমিন্টন আর ফুটবল থেকে আগ্রহ সরে আসে তার। ক্রিকেটের দিকে ঝোঁক আসে মাশরাফির। শুরুতে ব্যাটিংয়ে আগ্রহ থাকলেও একটা সময় তিনি বনে যান তারকা পেইসার।
আক্রমণাত্মক ও গতিময় বোলিং দিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকতেই তিনি নজর কাড়েন তৎকালীন অস্থায়ী বোলিং কোচ অ্যান্ডি রবার্টসের। তার পরামর্শেই মাশরাফিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় বাংলাদেশ এ-দলে।
এ-দলের হয়ে একটি ম্যাচ খেলেই জাতীয় দলে জায়গা করে নেন তিনি। ২০০১ সালের নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেটের মধ্য দিয়ে তার অভিষেক ঘটে। বৃষ্টির বাগড়ায় ম্যাচটি অমীমাংসিত থাকলেও নিজের জাত চিনিয়েছিলেন মাশরাফি। ১০৬ রানে ৪টি উইকেট তিনি ঝুলিতে পুরেন।
একই বছর ২৩ নভেম্বর ওয়ানডে ক্রিকেটে মাশরাফির অভিষেক হয়। অভিষেক ম্যাচে মোহাম্মদ শরীফের সঙ্গে বোলিং ওপেন করে ম্যাশ ৮ ওভার ২ বলে ২৬ রান দিয়ে বাগিয়ে নেন ২ উইকেট।
চলছিল ভালোই। কিন্তু বেরসিক ইনজুরির আঘাতে ইংল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় টেস্ট চলাকালীন তাকে ছিটকে যেতে হয় বছরখানেকের জন্য। সেই থেকে শুরু। এরপর হাঁটুর সেই ইনজুরি পিছু ছাড়েনি তার।
২০০৪ সালে ভারত সিরিজের মধ্য দিয়ে ফের ২২ গজে ফেরেন মাশরাফি। ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে নেমেই দাপুটে বোলিংয়ে নিজের স্বরূপে ফেরার ঘোষণা দেন। সেই সিরিজে ওয়ানডেতে একমাত্র জয়ের নায়কও ছিলেন ডানহাতি এই পেইসার।
২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তার গড় ছিল সবচেয়ে ভালো। কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নাটকীয় জয়ে তিনি অবদান রাখেন। একই সঙ্গে নাম লেখান ২০০৬ ক্রিকেট পঞ্জিকাবর্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে বিশ্বের সর্বাধিক উইকেট শিকারী হিসেবেও। সে সময় তিনি ঝুলিতে পুরেছিলেন মোট ৪৯টি উইকেট।
২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় জয়ে মাশরাফি ছিলেন অন্যতম নায়ক। ৩৮ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন ভারতের। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের নেপথ্য কারিগর ছিলেন তিনি।
মাশরাফির পারফরম্যান্স দেখে টিম ম্যানেজমেন্ট তার ওপর অধিনায়কত্ব দেয়ার কথা চিন্তা করে। সেই প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে অধিনায়কের দায়িত্বভার মাশরাফির হাতে তুলে দেয়া হয়।
কিন্তু সিরিজের প্রথম ম্যাচেই হাঁটুর ইনজুরি তাকে ২২ গজ থেকে ছিটকে দেয় প্রায় ১ বছরের জন্য। এরপর ২০১৪ সালের নভেম্বরে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সিরিজে অধিনায়কত্ব ফিরে পান তিনি। এবারে দায়িত্ব পান কেবল ওয়ানডে দলের।
২০২০ সালে সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের পর অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
১৬ বছরের ক্যারিয়ারে ১১ বার চোটের কারণে দলের বাইরে যেতে হয়েছে মাশরাফিকে। এই ইনজুরিই তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল ২০১১ সালের দেশের মাটিতে হওয়া বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ।
বর্ণিল, চড়াই-উৎরাই পার করে ১৯ বছর সাদা পোশাকে দেশকে সার্ভিস দেন ম্যাশ। প্রায় দুই দশকের দীর্ঘ এই ক্যারিয়ারে নড়াইল এক্সপ্রেস খেলেছেন মাত্র ৩৬টি টেস্ট। যার সবশেষটি ২০০৯ সালে। ইনজুরির কারণে এরপর আর সাদা পোশাকে মাঠেই নামা হয়নি নড়াইল এক্সপ্রেসের।
তবু এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী পেসারের নাম মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা। টেস্ট ক্যারিয়ার চলাকালীন তো নয়ই, টেস্ট থেকে বাধ্যতামূলক সরে যাওয়ার পরের ১১ বছরেও মাশরাফিকে উইকেট সংখ্যায় ছাড়াতে পারেনি বাংলাদেশের আর কোনো পেইসার। সাদা পোশাকে তার মোট শিকার ৭৮ উইকেট, ব্যাট হাতে তিন ফিফটিতে রয়েছে ৭৯৭ রান।
সীমিত ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২২০ ওয়ানডে খেলেছেন মাশরাফি, শিকার করেছেন দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭০ উইকেট। ২০০৬ সালে এক ম্যাচে মাত্র ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি, যা এখনও পর্যন্ত ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। ব্যাট হাতে এই ফরম্যাটে তার সংগ্রহ ১ হাজার ৭৮৭ রান।
২০০৬ সালে দেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়েই শর্টার ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় নড়াইল এক্সপ্রেসের। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফরম্যাট থেকে বিদায় নিয়েছেন ২০১৭ সালের এপ্রিলে। ১১ বছরের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তিনি খেলেছেন ৫৪ ম্যাচে। ৪২ উইকেট ঝুলিতে পুরার পাশাপাশি রান করেছেন ৩৭৭।
অধিনায়কত্বের অধ্যায়েও ওয়ানডেতেই সবচেয়ে সফল মাশরাফি। ২০১৪ পরবর্তী সময়ে তার হাত ধরেই সেরা সাফল্যগুলো পেয়েছে বাংলাদেশ। খেলেছে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, পৌঁছে গেছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে, এশিয়া কাপের রানারআপ হয়েছে দুই আসরেই। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো বহুজাতিক সিরিজের শিরোপা এসেছে মাশরাফির অধিনায়কত্বেই।
সবমিলিয়ে ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশকে ৮৮ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। যার মধ্যে জিতেছেন ৫০টিতে। বাংলাদেশের আর কোনো অধিনায়ক ৫০ জয়ে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি। জয়-পরাজয়ের হারেও (৫৮.১৩%) অন্য যেকোনো অধিনায়কের চেয়ে এগিয়ে মাশরাফি।
টি-টোয়েন্টিতেও মাশরাফির অধীনে সর্বোচ্চ ১০টি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:🇧🇩 308 matches
— ESPNcricinfo (@ESPNcricinfo) October 5, 2022
☝️ 389 wickets
🏏 2947 runs
✅ The highest wicket-taker for Bangladesh among pace bowlers
✅ The only player to lead them in 100+ internationals
Happy birthday, Mashrafe Mortaza!
আগামী জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে অলিম্পিকে আটটি স্বর্ণজয়ী কিংবদন্তি জ্যামাইকান স্প্রিন্টার উসাইন বোল্টের নাম ঘোষণা করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বকাপের জন্য বোল্টকে দূত করার কথা জানায় আইসিসি।
বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চের শুভেচ্ছাদূত হতে পেরে উচ্ছসিত বোল্ট। এ বিষয়ে দেয়া এক বিবৃতিতে জ্যামাইকায় ক্রিকেট খেলে বেড়ে উঠা বোল্ট বলেন, ‘ক্যারিবীয় অঞ্চলে ক্রিকেট হচ্ছে জীবনের অংশ। ক্রিকেট আমার হৃদয়ে সব সময়ই এটি বিশেষ জায়গা জুড়ে আছে এবং আমি এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্টের অংশ হতে পেরে সম্মানিত।
‘বিশ্বকাপে শক্তি ও উদ্যম নিয়ে কাজ করতে এবং সারা বিশ্বে খেলাটির উন্নয়নে অবদান রাখতে উন্মুখ হয়ে আছি।’
এবারই প্রথম ক্রিকেটের কোনো বৈশ্বিক আসর বসবে যুক্তরাষ্ট্রে। ৩৭ বছর বয়সী বোল্ট মনে করেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে খেলাধুলার বাজার ধরতে পারবে ক্রিকেট।’ এতে ক্রিকেট খেলাটা নতুন উচ্চতায় উঠবে বলেও বিশ্বাস তার।
তিনি বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যখন কোনো খেলা অনুসরণ করে, তখন তারা ওই খেলাটিকে সঠিকভাবে অনুসরণ করে এবং তারা সর্বোচ্চটা দেয়। আমার মনে হয়, যদি তারা এটি ধরতে পারে তাহলে তারা ঠিক পথেই এগোবে। আমি যেমনটা বুঝি, আমরা যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেই উদ্যম আনতে পারি, তাহলে দারুণ হবে।’
২০২৮ সালের অলিম্পিকে ফিরবে ক্রিকেট। খেলাধুলার এ বিশ্ব আসরে প্রথম ক্রিকেট খেলা হয়েছিল ১৯০০ সালের প্যারিস আসরে এবং সেটিই অলিম্পিকে ক্রিকেটের একমাত্র প্রদর্শনী।
দীর্ঘ বিরতির পর অলিম্পিকে ক্রিকেট ফেরায় উচ্ছ্বসিত ১০০ ও ২০০ মিটারের বিশ্ব রেকর্ডধারী বোল্ট।
তার ভাষ্যে, ‘একটা স্বর্ণপদক পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। প্রতিটি খেলাই অলিম্পিকের অংশ হতে চেষ্টা করে। কারণ এটা বিশাল একটা ব্যাপার এবং এর পদকের মঞ্চে স্বর্ণপদক জিততে পারাটা দারুণ অনুভূতি।’
বিশ্বখ্যাত স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদকে জাতীয় দলে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার ও বিশ্বকাপজয়ী এই খেলোয়াড়ের এ পদে কাজ করার প্রচুর অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে।
৫৩ বছর বয়সী মুশতাক এর আগে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানসহ বিখ্যাত ক্রিকেট দলের দেশগুলোর স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তার চিত্তাকর্ষ জীবনবৃত্তান্ত পাকিস্তানের বোলিং পরামর্শদাতা হিসাবেও গর্বিত।
নিয়োগের বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি এই ভূমিকার জন্য আগ্রহী এবং আমার অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের দিতে চাই। কারণ, তারা খুব কোচিং যোগ্য এবং আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দলগুলোর মধ্যে একটি।’
চলতি মাসের শেষের দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ক্যাম্পের আগে মুশতাককে নিয়োগ দেয়া হলো। ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সমাপ্তি পর্যন্ত দলের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি।
চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দারুণ ফর্মে আছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ৫ ম্যাচ থেকে ১০ উইকেট নিয়ে আছেন উইকেট শিকারিদের তালিকার ৩ নম্বরে। প্রথম ম্যাচেই হয়েছিলেন ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ও। বোলারদের শ্মশানঘাটখ্যাত আইপিএলে মুস্তাফিজের এমন পারফরম্যান্স বেশ ভালোভাবেই দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। ফিজের এমন পারফরম্যান্স এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ কাজে দেবে বলে মত তাদের।
তবে বিপত্তি বেঁধেছে আগামী মাসে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজের জন্য মুস্তাফিজকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দেশে ফিরে ফিজকে খেলতে হবে জাতীয় দলের হয়ে। তবে অনেকেই মনে করেন বিশ্বকাপের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে মুস্তাফিজকে জিম্বাবুয়ে নয় আইপিএলে খেলতে দেওয়া উচিত। সেজন্য এ বাঁহাতি পেসারের অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ বাড়ানো উচিত বিসিবির।
যদিও একদিন বাড়িয়ে ১ মে পর্যন্ত করা হয়েছে ফিজের ছুটি। তবে মুস্তাফিজকে পুরো সময়ের জন্যই আইপিএলে খেলানোর পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। তার মতে, মোস্তাফিজ আইপিএলে থাকলে বাংলাদেশই লাভবান হবে। গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে বলেন আকরাম খান।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, সে চেন্নাইয়ের হয়ে যত ম্যাচ খেলবে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশও লাভবান হবে। কারণ, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলার চেয়ে সেখানে খেললে অনেক কিছু শিখতে পারবে। ড্রেসিংরুমের ব্যাপার আছে, বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবে। সেখানকার মান ভালো, বিভিন্ন উইকেট, বিভিন্ন মানের খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলবে। আমার মনে হয়, ওর সুযোগ পাওয়া উচিত।’
আকরাম খান আরও বলেন, ‘আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা চিন্তিত ছিলাম। কারণ, সে গত এক বছর ধরে ধুঁকছিল। আইপিএলে কিন্তু ওর পারফরম্যান্স ভালোর দিকেই যাচ্ছে, একদম যে ভালো হচ্ছে, তা না।’
সাবেক এ অধিনায়কের মতে, ‘যেহেতু সে (মুস্তাফিজ) লঙ্গার ভার্সনে খেলে না, আইপিএলে গিয়ে যদি এ রকম ভালো করতে থাকে তাহলে বিশ্বকাপে আমরা বেশি লাভবান হব। এই জিনিসটা চিন্তা করতে পারে বোর্ড। তারপরও এটা নির্ভর করছে কোচিং স্টাফ, নির্বাচকদের চিন্তা-ভাবনার ওপর। কিন্তু সে যে ভালো করছে, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ২০২৭ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন বছর আগেই নিজেদের ৮ ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী ফোলেতসি মোসেকি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকান নিউজ ২৪ ওয়েবসাইটকে মোসেকি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক কারণ বিবেচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকার আট ভেন্যু বাছাই করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ও হোটেল রুমের সহজলভ্যতা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’
দেশটির নিয়মিত টেস্ট ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্ক, কেপটাউনের নিউল্যান্ডস, ডারবানের কিংসমিড ও গেবেরার সেন্ট জর্জে’স পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচ।
অন্য ভেন্যুগুলো হচ্ছে, ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ও ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্ক।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসর আয়োজন করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল তারা। তবে এ টুর্নামেন্টের আয়োজনে নামিবিয়া এবারই প্রথম।
আয়োজক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও আসরের টিকিট পেতে আফ্রিকান কোয়ালিফায়ারে খেলতে হবে নামিবিয়াকে।
তিনজন স্বাধীন নারী পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
নিয়োগ পাওয়া তিন নারী পরিচালক হলেন- ডায়ান ক্যাম্পবেল, লুইস ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও ডেবরা করিয়াট-প্যাটন। এক বছরের মেয়াদে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তারা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিডব্লুআই জানিয়েছে, ক্যাম্পবেল, ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও করিয়াট-প্যাটনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। আপাতত তাদের মেয়াদ এক বছর, যা শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ।
তিনজনের মধ্যে প্রথমবার পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ক্যাম্পবেল ও ভিক্টর-ফ্রেডেরিক। অন্যদিকে ২০১৯ থেকে ২০২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন করিয়াট-প্যাটন।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টেও বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচের পঞ্চম দিন বুধবার ১৯২ রানের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটারের অর্ধশতকে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন শর বেশি লিড নেয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয়টিতে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হতাশাজনক ব্যাটিং না করলেও বিজয় থেকে অনেক দূরেই থেমে যায় টাইগারদের রানের চাকা। মমিনুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া অর্ধশতকে ৩১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য