বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর ওয়ানডে সিরিজের অপেক্ষায় জিম্বাবুয়ে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের জন্য বৃহস্পতিবার ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট (জেডসি)।
চোটের কারণে দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক ক্রেইগ আরভাইন। হ্যামস্ট্রিং ও হাঁটুর চোটের কারণে বাদ পড়েছেন তিনি। তার পরিবর্তে নেতৃত্ব সামলাবেন উইকেটরকিপার ব্যাটার রেজিস চাকাবভা। ২০০৮ সালে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া চাকাভবা প্রথমবারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পেলেন।
তারকা অলরাউন্ডার শন উইলিয়ামসও থাকছেন না এ সিরিজে। ব্যক্তিগত কারণে ছুটি চাইলে মঞ্জুর করে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ড। এদিকে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন তিন ক্রিকেটার ইভান্স, মুনিয়োঙ্গা ও নিয়াউচি।
উইলিয়ামসন ও আরভিনের জায়গায় ওয়ানডে দলে নেয়া হয়েছে তাকুদওয়ানাশে কাইতানো ও তারিসাই মুসাকান্দাকে। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডের বাকি ১৩ জনের সবাই ওয়ানডে দলেও নিজেদের জায়গা ধরে রেখেছেন।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডে শুক্রবার মুখোমুখি হচ্ছে দল দুটি। আর শেষ দুই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ ও ১০ আগস্ট। সবগুলো ম্যাচ বাংলাদেশ সময় সোয়া ১টায় জিম্বাবুয়ের হারারেতে হবে।
জিম্বাবুয়ে স্কোয়াড
রেগিস চাকাভা (অধিনায়ক), রায়ান বার্ল, ব্র্যাডলি ইভান্স, লুক জঙ্গওয়ে, ইনসেন্ট কাইয়া, তাকুদওয়ানাশে কাইতানো, ওয়েসলে মাধেভেরে, তাদিওয়ানাশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, টনি মুনিয়োঙ্গা, তারিসাই মুসাকান্দা, রিচার্ড এনগারাভা, সিকান্দার রাজা, ভিক্টর নিয়ুচি, ও মিল্টন শুম্বা।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। শারজাহতে ১৬ রানে তারা হারিয়ে দিয়েছে স্কটল্যান্ডকে। টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং নেয় বাঘিনীরা। ব্যাটার ও বোলারদের সম্মিলিত অবদানে এসেছে এই জয়।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে গত চার আসরের হতাশা ঘোচানোর প্রত্যয় ঝরেছিল বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানার কণ্ঠে। প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে সেই আশার বাতি আরও একটু জ্বেলে দিল দেশের মেয়েরা। সে সঙ্গে ঘুচল টানা ১৬ ম্যাচ হারার কলঙ্কও।
বৃহস্পতিবার উদ্বোধনী ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে দুটি চারের সাহায্যে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন সোবহানা মোস্তারি। এছাড়া ওপেনার সাথী রানী ২৯ ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা করেন ১৮ রান।
স্কটিশদের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন সাস্কিয়া হর্লি। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন অধিনায়ক ক্যাথরিন ব্রাইস, অলিভিয়া বেল ও ক্যাথরিন ফ্র্যাজার।
১২০ রানে জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান তুলতে সমর্থ হয় স্কটল্যান্ডের মেয়েরা।
স্কটল্যান্ডের হয়ে অপরাজিত থেকে সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন ওপেনার সারাহ ব্রাইস। তিনি ছাড়া আর মাত্র দুজন ব্যাটার ১১ রান করে করতে পেরেছেন।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ দুই উইকেট নিয়েছেন রিতু মনি। এছাড়া একটি করে উইকেট পান মারুফা আক্তার, নাহিদা আক্তার, ফাহিমা খাতুন ও রাবেয়া খান।
বিশ্বকাপের শুরুতেই জিতে নিশ্চিতভাবেই খানিকটা আত্মবিশ্বাস বাড়বে নিগার সুলতানার দলের। আগামী শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে তারা।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অপর প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগামী ১০ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ১২ অক্টোবর প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মাঠে নামবেন নিগার সুলতানারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ১১৯/৭ (নিগার ৩৬, সাথী ২৯; হর্লি ৩/১৩)।
স্কটল্যান্ড: ১০৩/৭ (সারাহ ব্রাইস ৪৯*, ক্যাথরিন ১১, আইলসা লিস্টার ১১; রিতু ২/১৫, মারুফা ১/১৭, নাহিদা ১/১৯)।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রিতু মনি।
আরও পড়ুন:চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ। বৃষ্টিবিঘ্নিত কানপুর টেস্টে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। এতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে স্বাগতিকরা। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এ নিয়ে পঞ্চমবার ভারতের কাছে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।
কানপুর টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মঙ্গলবার মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এতে মাত্র ৯৫ রানের লক্ষ্য পায় ভারত। ১৭ ওভার ২ বল খেলে ৩ উইকেটেই লক্ষ্য টপকে যায় রোহিত শর্মার দল।
কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে এর আগে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮২ রান তাড়া করে টেস্ট জয়ের রেকর্ড ছিল। এবার ৯৫ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে নিল ভারত।
আগের রেকর্ডটিও ছিল ভারতের। ১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে টেস্ট জিতেছিল স্বাগতিকরা।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে ৮ রান করে আউট হন রোহিত শর্মা। তৃতীয় ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ দেন ভারতীয় অধিনায়ক। ব্যাক টু ব্যাক বোলিংয়ে এসে শুভমান গিলকেও (১০ বলে ৬) এলবিডব্লিউ করেন মিরাজ।
৪৫ বলে ৫১ রান করে তাইজুল ইসলামের বলে সাকিব আল হাসানের তালুবন্দি হন যশস্বী জয়সওয়াল। জয়ের জন্য তখন দরকার মাত্র ৩ রান। এরপর বিরাট কোহলি (২৯*) ও রিশান্ত পান্তের (৪*) ব্যাটে জয় নিশ্চিত করে ভারত।
মঙ্গলবার ২ উইকেটে ২৬ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের তৃতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান মুমিনুল হক। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে সুইপ করতে গিয়ে লেগ স্লিপে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। প্রথম ইনিংসে ১০৭ রানে অপরাজিত থাকা মুমিনুল দ্বিতীয় ইনিংসে ফেরেন মাত্র ২ রানে।
সাদমান ইসলামের সঙ্গে ৫৫ রানের দারুণ জুটি করে আউট হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ইনিংসের ২৮তম ওভারে দলীয় ৯১ রানের মাথায় রবীন্দ্র জাদেজার বলে বোল্ড হন তিনি। ৩৭ বলে ১৯ রান করে সাজঘরে ফেরত যান বাংলাদেশ অধিনায়ক।
দলীয় ২ রান যোগ করতেই আউট হয়ে যান ফিফটি করা সাদমান। ২৯তম ওভারে আকাশ দীপের বলে যশস্বী জয়সওয়ালের হাতে গালিতে তালুবন্দি হন তিনি।
ব্যাক টু ব্যাক বোলিংয়ে এসে লিটন দাসকে (৮ বলে ১) তুলে নেন জাদেজা। ডানহাতি এই ব্যাটারকে উইকেটরক্ষক রিশাভ পান্তের হাতে ক্যাচ বানান ভারতীয় স্পিনার।
এরপর আবার বোলিংয়ে আসেন জাদেজা। ওভারের দ্বিতীয় বলেই সাকিব আল হাসানকে (২ বলে ০) আউট করেন তিনি। অর্থাৎ ৩ উইকেটে ৯১ রান করা বাংলাদেশের ৯৪ রানিই ৭ উইকেট হাওয়া।
মেহেদী হাসান মিরাজও ১৭ বলে ৯ রান করে জাসপ্রিত বুমরাহর বলে বিহাইন্ড দ্য উইকেটে পান্তের হাতে ধরা পড়েন। এরপর তাইজুল ইসলামকে (১৩ বলে ০) এলবিডব্লিউ করেন বুমরাহ।
দশম উইকেটে ১৬ রানের জুটি করেন মুশফিকুর রহিম ও খালেদ আহমেদ। বুমরাহর বলে ৬৩ বলে ৩৭ রান করে মুশফিক বোল্ড হলে ইনিংস শেষ হয় বাংলাদেশের।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা।
আরও পড়ুন:বৃষ্টিবিঘ্নিত কানপুর টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৮৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে স্বাগতিক ভারত। এর আগে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ২৩৩ রান। প্রথম ইনিংসে ভারতের লিড ৫২ রানের।
ইনিংস ঘোষণার আগে ৩৪ ওভার ৪ বলে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান করেছে ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭২ রান করেছেন জয়সাওয়াল। তাছাড়া ৬৮ রান করেছেন লোকেশ রাহুল।
বৃষ্টির কারণে টানা দুদিন মাঠে বলা গড়ায়নি। চতুর্থ দিনে লাঞ্চের কিছুক্ষণ পরই নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ভারত। ইনিংসের প্রথম ওভার থেকেই আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে ব্যাটিং করেছেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও ইয়াশভি জয়সাওয়াল। প্রথম ওভারেই তিন বাউন্ডারি মারেন জয়সাওয়াল। দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইক পেয়ে নিজের খেলা ইনিংসের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান রোহিত।
দুই ওপেনারের এমন ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ওভারে ২৯, আর তিন ওভার শেষে ৫১ রান তোলে ভারত। টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম বল খেলে দলীয় অর্ধশতকের রেকর্ড এটি।
দ্রুততম ফিফটির এর আগের রেকর্ড ছিল ইংল্যান্ডের। ৪ ওভার ২ বলে চলতি বছর নটিংহ্যামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫০ রান করেছিল ইংল্যান্ড।
অবশ্য এরপরই ব্রেকথ্রু পেয়েছে বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভার করতে এসে উইকেটের দেখা পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বোল্ড হওয়ার আগে রোহিতের ব্যাট থেকে এসেছে ১১ বলে ২৩ রান।
অধিনায়ক দ্রুত ফিরলেও আরেক ওপেনার জয়সাওয়াল পেয়েছেন ফিফটির দেখা। হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৫২ বলে ৭৭ রান করেন এই তরুণ ওপেনার। তার মারমুখী ব্যাটিংয়ে মাত্র ১০ ওভার ১ বলেই দলীয় শতরান স্পর্শ করে ভারত। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে দ্রুততম শতরানের কীর্তি এটি। এর আগের রেকর্ডও অবশ্য ভারতের দখলেই ছিল। সেবারও ওপেনার ছিলেন রোহিত ও জয়সাওয়াল। ২০২৩ সালে পোর্ট অব স্পেনে ১২ ওভার ২ বলে দলীয় শতরান স্পর্শ করেছিল ভারত।
তিনে নেমে রানের দেখা পেয়েছেন শুভমান গিলও। সাকিবের বলে হাসান মাহমুদের হাতে ধরা পড়ার আগে ৩৬ বলে করেছেন ৩৯ রান। দ্রুত রান তুলতে বিরাট কোহলির আগেই ঋষভ পান্তকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল ভারত। তবে ব্যর্থ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১১ বল খেলে ৯ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
পাঁচে নেমে পরিকল্পনা অনুযায়ী ঝোড়ো ব্যাটিং করেছেন কোহলি। স্বভাববিরুদ্ধ ব্যাটিংয়েও সফল এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। সাকিবের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৩৫ বলে করেছেন ৪৭ রান।
কোহলি হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও মিডল অর্ডারে নেমে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন লোকেশ রাহুল। মাত্র ৩৩ বলে ফিফটি করেন তিনি। তাদের এমন ব্যাটিংয়ে মাত্র ২৪ ওভার ২ বলেই ২০০ রান পেরিয়ে যায় ভারত, যা টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো দলের দ্রুততম ২০০ রান। এরপর ২৮তম ওভারে বাংলাদেশের করা ২৩৩ রান টপকে যায় ভারত।
কোহলি ফেরার পর সাতে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রবীন্দ্র জাদেজা। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে মিরাজের খাটো লেংথের বল টেনে খেলতে গিয়ে কভারে শান্তর হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে জাদেজার ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে ৮ রান।
জাদেজার পর রাহুলকেও ফিরিয়েছেন মিরাজ। স্টাম্প হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৬৮ রান করেছেন তিনি। পরিস্থিতি অনুযায়ী যা ছিল দারুণ কার্যকরী। এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও আকাশ দীপ উইকেটে এসে দ্রুত শট খেলার চেষ্টা করলেও সুবিধা করতে পারেননি। এই দুজন দ্রুত ফিরলে এক উইকেট হাতে রেখেই ইনিংস ঘোষণা করেন রোহিত শর্মা।
আরও পড়ুন:খেলোয়াড় হিসেবে যতটা নিরাপত্তা দেয়া প্রয়োজন, ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে ততটাই দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রোববার সচিবালয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ে গ্রামীণফোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং চেক গ্রহণ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আলোচনা চলছে যে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা আসিফ বলেন, ‘বিসিবি এ বিষয়ে একটি বক্তব্য দিয়েছে। রাষ্ট্রের জায়গা থেকে রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে বাধ্য এবং তা আমরা অবশ্যই করব।’
ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘এখানে সাকিব আল হাসানের পরিচয় দুটি। এটি আমাদের মনে রাখতে হবে। খেলোয়াড় হিসেবে একটি পরিচয়, আরেকটি হলো রাজনৈতিক পরিচয়। তিনি আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে এমপি নির্বাচন করেছেন। মানুষের মধ্যে তো দুটি নিয়েই মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন খেলোয়াড় হিসেবে, একজন খেলোয়াড়কে যতটা নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব তা আমরা অবশ্যই দেব। তিনি দেশে এলে আমরা তা দেব। তার নামে যে হত্যা মামলা হয়েছে সে বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যে বলেছি। আইন মন্ত্রণালয়ও বলেছে যে, সংশ্লিষ্টতা না থাকলে প্রাথমিকভাবেই বাদ দেয়া যায়।’
উপদেষ্টা আসিফ বলেন, ‘তার (সাকিব আল হাসান) রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে জনগণের মধ্যে যদি ক্ষোভ থাকে, তাহলে…। মনে করুন, আমার নিরাপত্তার জন্য পাঁচজন পুলিশ কনস্টেবল এবং একজন গানম্যান থাকেন। আমার ওপর যদি দেশের ১৬ কোটি জনগণের ক্ষোভ থাকে, তাহলে তারা আমাকে কী নিরাপত্তা দেবেন?’
তিনি বলেন, ‘জনগণের যদি কোথাও ক্ষোভ থাকে, তাহলে সেটা আমাকে রিডিউস করতে (কমাতে) হবে আমার কথা দিয়ে। আমার মনে হয়, তার নিজের জায়গা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। তার যে রাজনৈতিক অবস্থান, তা নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন। অলরেডি মাশরাফি বিন মুর্তজা কথা বলেছেন।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জনগণের পক্ষ থেকে যদি নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে, সেটা কেউ কাউকে আসলে দিতে পারবে না। শেখ হাসিনাকেও নিরাপত্তা দেয়া যায়নি, তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। ‘সেই জায়গায় রাজনৈতিক বিষয়টি পরিষ্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করি। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে নিরাপত্তা দেয়াই আমাদের দায়িত্ব এবং সে দায়িত্ব আমরা পালন করি।’
আরও পড়ুন:বৃষ্টির বাগড়ায় কানপুর টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলাও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ভেজা আউটফিল্ডের কারণে একটি বলও মাঠে গড়াতে পারেনি এদিন।
প্রথম সেশনের খেলা বাতিলের পর আশা করা হচ্ছিলো, দ্বিতীয় সেশনে অন্তত খেলা হবে। কিন্তু এই সেশনের শেষ দিকেও মাঠ উপযোগী হয়ে না ওঠায় দিনের খেলা আগেভাগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
কানপুরে শনিবার রাতভর বৃষ্টি হয়। তবে সকাল থেকে বৃষ্টি ছিল না। তারপরও কেন ম্যাচ শুরু করা গেল না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ ম্যাচ শুরু করতে ব্য্যর্থতার দুটি কারণ জানিয়েছে আলাদাভাবে। একবার বলছে, আলোর স্বল্পতা। আবার বলছে, ভেজা আউটফিল্ড।
এদিন দুই দলের খেলোয়াড়েরা হোটেলেই ছিলেন। একবারের জন্যও মাঠে আসেননি।
এর আগে শনিবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের খেলাও বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। ওইদিনও কোনো বল মাঠে গড়াতে পারেনি। আর প্রথম দিনে দুবার বৃষ্টির বাধার মুখে খেলা হয়েছে মাত্র ৩৫ ওভার।
৩৫ ওভার ব্যাট করে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০৭ রান। প্রথম দিনের খেলা শেষে উইকেটে ছিলেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম।
আরও পড়ুন:কানপুর টেস্টের প্রথম দিনে বৃষ্টির কারণে খেলা হয়েছিল মাত্র ৩৫ ওভার। একই কারণে দ্বিতীয় দিনে মাঠেই গড়ায়নি কোনো বল। মাঝে কয়েক মিনিটের জন্য বৃষ্টি থামলেও এরপর ফের নেমেছে। ফলে আগেভাগেই দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন আম্পায়াররা।
শনিবার বাংলাদেশ সময় বেলা আড়াইটায় দুই আম্পায়ার ক্রিস ব্রাউন ও রিচার্ড কেটেলবোরো দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। সকালে বৃষ্টি কমে এলেও মাঠ ছিল ভেজা। দু’দল মাঠে এলেও সোয়া ৯টায় মাঠ ছেড়ে হোটেলে ফিরে যায়।
দুপুর ১২টায় বৃষ্টি থেমে এলে পানি নিষ্কাশনের কাজ শুরু করেন মাঠ-কর্মীরা। তবে আকাশ ছিলো ঘন কালো। দুপুর পৌনে ২টায় সেখানে আবারও শুরু হয় ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। তাতে আর দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরুর সম্ভাবনা দেখতে পাননি আম্পায়াররা।
প্রথম দিনে শুক্রবার এক ঘণ্টা বিলম্বে শুরু হয় ম্যাচ। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায় ভারত। ২৯ রানে দুই ওপেনারকে হারালেও নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক ৫১ রানের জুটিতে গড়েন প্রতিরোধ। শান্ত ৩১ করে আউট হলে মুমিনুলের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে ৩৫ ওভারে ৩ উইকেটে বাংলাদেশ ১০৭ রান তোলার পর আলোকস্বল্পতায় খেলা থেমে যায়। এরপরই নামে প্রবল বৃষ্টি, তাতে ভেসে যায় গোটা দিন।
এবার আরেকটি দিন ভাসিয়ে নিল বৃষ্টি। এই টেস্টের ফল হওয়া এখন বেশ কঠিন। চেন্নাইতে ২৮০ রানে জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে স্বাগতিক ভারত।
ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের দুই ওপেনারের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন মোমিনুল হক ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
এর ফলে ২৬ ওভারে ২ উইকেটে ৭৪ রান করে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেছে টাইগাররা।
কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ৮ ওভার ভালোভাবেই কাটিয়ে দেন টাইগার দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম।
নবম ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসে ২৬ রানে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন পেসার আকাশ দীপ। ওভারের তৃতীয় বলে গালিতে যশস্বী জয়সওয়ালকে ক্যাচ দেন জাকির। ২৪ বল খেলে খালি হাতে বিদায় নেন তিনি।
বাংলাদেশের ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বল খেলে খালি হাতে সাজঘরে ফেরার রেকর্ড গড়েছেন জাকির। আগের রেকর্ডটি ছিল ইমরুল কায়েসের। ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে ১৬ বলে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন ইমরুল।
সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ বল খেলে খালি হাতে ফেরার তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন জাকির। এ ক্ষেত্রে সবার ওপরে আছেন সাবেক পেসার মঞ্জুরুল ইসলাম। ২০০২ সালে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪১ বল খেলেও কোনো রান করতে পারেননি মঞ্জু।
জাকিরের পর সাদমানকেও সাজঘরে পাঠান আকাশ। চারটি চারে ২৪ রান করা সাদমানকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন এ ডানহাতি পেসার।
২৯ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন মোমিনুল ও অধিনায়ক শান্ত। ইনিংসের ১৭তম ওভারে দলের রান ৫০ পূর্ণ করেন তারা।
৮৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪৫ রান করে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যান মোমিনুল ও শান্ত। তিনটি চারে মোমিনুল ১৭ এবং ছয়টি বাউন্ডারিতে শান্ত ২৮ রানে অপরাজিত আছেন।
ভারতের পক্ষে আকাশ ১৪ রান খরচায় দুই উইকেট নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য