ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের সময় সাকিব আল হাসান ছুটিতে থাকবেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট চলার সময় থেকেই গুঞ্জনটি ছিল, কিন্তু সেই বিষয়টিতে ছিল না যথার্থ নিশ্চয়তা।
অবশেষে গুঞ্জনকে সত্য প্রমাণ করে দিয়ে ওয়ানডে সিরিজের জন্য বোর্ডের কাছে ছুটি চেয়েছেন সাকিব।
উইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগেই বোর্ডের কাছে মৌখিকভাবে পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার আবেদন করেছেন টেস্ট দলপতি সাকিব, তবে এখনও লিখিতভাবে বোর্ড সভাপতির কাছে আবেদনটি পাঠানো হয়নি।
জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সাকিব ওয়ানডে সিরিজ থেকে মৌখিকভাবে ছুটি চেয়েছে, তবে এ বিষয়ে বোর্ড সভাপতিকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।’
২, ৩ ও ৭ জুলাই মাঠে গড়াবে উইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিনটি ম্যাচ। এরপর ওয়ানডে সিরিজের তিনটি ম্যাচ হবে ১০, ১৩ ও ১৬ জুলাই ।
অনলাইন বেটিং কোম্পানি বেটউইনারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান নিউজ বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করছেন সাকিব আল হাসান। নিজের এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানিয়েছেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক পরিচালক। তিনি বলেন যে, বিসিবি সাকিবের কাছ থেকে মৌখিক সিদ্ধান্ত পেয়েছে। লিখিত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।
এর কিছু পরই সাকিবের লিখিত সিদ্ধান্ত বিসিবির হাতে পৌঁছায়। ফলে এশিয়া কাপের দলে জায়গা পেতে ও অধিনায়কত্ব করতে তার আর কোনো বাধা থাকল না। বিসিবি শুক্রবার এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করবে।
গত ২ আগস্ট সাকিব নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা দেন নিউজ বেটউইনার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এর পর থেকে শুরু হয় বিতর্ক, সাকিব বেটিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছেন; বিসিবির নীতিমালায় যা অবৈধ।
নিউজ বেটউইনার তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে যে তারা শুধু একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বেটিংয়ের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
তারপরও বিসিবি সভাপতি বোর্ড সভা শেষে সংবাদমাধ্যমকে বলেন যে, সাকিব বেট উইনারের সঙ্গে চুক্তি ছিন্ন না করলে এশিয়া কাপের দলে জায়গা হবে না তার। এমনকী বিসিবির সঙ্গে তার চুক্তিও বাতিল করা হতে পারে।
এরপরই সাকিব বিসিবিকে বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তি থেকে সরে আসার কথা বিসিবিকে জানিয়েছেন।
বিসিবি গত শুক্রবারের বোর্ড সভাতেই সাকিবকে অধিনায়ক করে দল ঘোষণা করতে চেয়েছিল। তবে সাকিবের সঙ্গে বেটউইনারের চুক্তির বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে তারা।
আরও পড়ুন:এ মাসের ২৭ তারিখ সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হতে যাচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপ। এরই মধ্যে পাকিস্তান-ভারত এশিয়া কাপের দল ঘোষণা করলেও সাকিব ইস্যু ও একাধিক ক্রিকেটার চোটে পড়ায় এখনও দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে চোটে পড়েন দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাস। বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী লিটনের পেশিতে স্ক্যানের পর গ্রেড টু মাসল স্ট্রেইন ধরা পড়ে। যে কারণে আগে অনুমান করা যাচ্ছিল লিটনকে ছাড়াই খেলতে হবে এশিয়া কাপ।
লিটনের আগে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আঙুলের চোট নিয়ে চার সপ্তাহের জন্য দল থেকে ছিটকে যান অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের তিন দিন আগে পিঠের চোট নিয়ে দল থেকে বাদ পড়েন জাতীয় দলের মিডল অর্ডার ব্যাটার ইয়াসির আলি রাব্বি।
অন্যদিকে সাকিবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকায় ও চোটে জর্জরিত দলটির এশিয়া কাপের স্কোয়াড ঘোষণা করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে বলে জানান বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন।
সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘আমাদের ইনজুরির ইস্যু আছে। লিটনের ইনজুরি, সোহান, রাব্বি কেউই থাকছে না এশিয়া কাপে। এখন দলটা আমাদের ভেবেচিন্তে দেয়া লাগবে। সামনে আবার বিশ্বকাপ আছে। কাল পরশুর ভেতরে দল দিয়ে দেয়া হবে। কালই হয়তো দিয়ে দেয়া হবে।’
শর্ত সাপেক্ষে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে অন্তত দুই বছরের জন্য সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের নেতৃত্ব দেয়া হতে পারে সাকিবকে। যেটা গত ৪ আগস্ট বোর্ড মিটিংয়ের পর ঘোষণা করার কথা ছিল।
আরও পড়ুন:বেটিং সাইট বেট উইনারের সহযোগী প্রতিষ্ঠান নিউজ বেট উইনারের সঙ্গে চুক্তি শেষ না করলে এশিয়া কাপের দলে রাখা হবে না সাকিব আল হাসানকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিসিবির সভা শেষে এমনটা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
সম্প্রতি নিউজ বেট উইনারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন সাকিব। এটি অনলাইন পোর্টাল হলেও এর মূল সংস্থা অনলাইন বেটিংয়ের সঙ্গে জড়িত। বেটিংয়ের বিষয়ে বিসিবি জিরো টলারেন্স নীতির পক্ষে।
সে কারণে সাকিবের ব্যাপারেও কঠোর হতে দ্বিধা করবে না বোর্ড, এমনটা জানিয়েছেন পাপন। বিসিবি এরই মধ্যে চুক্তি থেকে সরে আসার আহ্বান করে সাকিবকে চিঠি দিয়েছে।
পাপন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স, আগেও যেমনটা বলেছি। সাকিবের কাছে আমরা চিঠি দিয়েছি। চিঠির উত্তর আজকের ভেতর পেয়ে যাব। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ওর উত্তর না জেনে কিছুই বলা যাচ্ছে না।’
সাকিবের উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছে বিসিবি। তার উত্তর জেনেই শুক্রবার ঘোষণা করা হবে এশিয়া কাপের দল।
আর চুক্তি থেকে সরে আসতে না পারলে শুধু দল নয়, বিসিবির চুক্তি থেকেও সরিয়ে দেয়া হতে পারে সাকিবকে; এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন পাপন।
তিনি যোগ করেন, ‘বেট উইনার থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে আসতে হবে। সম্পূর্ণভাবে সরে আসতে না পারলে বোর্ডের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকবে না। দল চুক্তি এসব তো পরের কথা।’
গত ২ আগস্ট সাকিব নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা দেন নিউজ বেটউইনার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। এর পর থেকে শুরু হয় বিতর্ক, সাকিব বেটিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছেন; বিসিবির নীতিমালায় যা অবৈধ।
নিউজ বেটউইনার তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে যে তারা শুধু একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। বেটিংয়ের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
আরও পড়ুন:ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন সাড়ে তিন শ রান হচ্ছে নিয়মিত। আবার সেই রান তাড়া করে জিতেও যাচ্ছে প্রতিপক্ষ দল। ৩৫০ রানের তালিকায় আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের নাম থাকলেও নেই বাংলাদেশের নাম।
২০১৮ সাল থেকে ওয়ানডেতে দলীয় ৩০০ রানের বেশি স্কোর হয়েছে ১৭০ বার। এর মধ্যে ৩৫০ রানের বেশি হয়েছে ৩৩ বার।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৩০৩ রান আর দ্বিতীয়টিতে ২৯০ রান। এ সংগ্রহের পরও দুটি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ।
যে কারণে অধিনায়ক তামিম ইকবালের মনে হচ্ছে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩৫০ না করলে জয়ের নিশ্চয়তা নেই। সিরিজ শেষে সংবাদমাধ্যমের কাছে বৃহস্পতিবার ভোরে এমনটাই বলেন এ অভিজ্ঞ ওপেনার।
তামিম বলেন, ‘আমরা ৩৫০ রান করতে চাই। এটা আমাদের মাথায় আছে। কোনো একসময় ৩৫০ রান করতে চাই। আমরা আগে কখনও করিনি। আমি বলছি না যে পরের ম্যাচেই ৩৫০ রান করে ফেলব। তবে আমাদের এই লক্ষ্য আছে।’
সামনের বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর বসবে ভারতে, যেখানে তামিমের ধারণা নিয়মিত ৩০০ রান করবে দলগুলো। বাংলাদেশকেও নিজেদের সামর্থ্য বাড়িয়ে সেখানে নিতে হবে বলে মনে করেন অধিনায়ক।
তিনি বলেন, ‘ভারতে প্রতি ম্যাচে গড়ে দেখা যাবে ৩০০ রান হবে। ক্রিকেট খেলাটা দিন দিন বদলে যাচ্ছে। মিরপুর আর ভারতের কিছু ভেন্যুতে ২৬০-২৭০ রান করে জিততে পারবেন। বাকি বেশির ভাগ ভেন্যু ২৯০, ৩০০, ৩১০ রানের মতো। এই জিনিসটা নিয়ে আমরা বেশ সতর্ক। আশা করি আগামী দিনে আমাদের এভাবেই দেখতে পাবেন।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে দাপুটে জয় পেয়েছে সফরকারী নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৭২ রান করলে ১৩ রানে জয় পায় কিউইরা।
জামাইকার কিংস্টনে স্যাবাইনা পার্ক স্টেডিয়ামে বুধবার টস জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় উইন্ডিজ অধিনায়ক নিকোলাস পুরান।
শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ১৮৫ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৩৩ বল খেলে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন। বাঁহাতি ওপেনার ডেভন কনওয়ের ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৪৩ রান। শেষ দিকে জিমি নিশ্যামের ১৫ বলে ৩৩ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ভর করে ১৮৫ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় কিউইরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩ উইকেট নেন ওডেন স্মিথ। জেসন হোল্ডার ও ওবেড ম্যাকয় নেন ১টি করে উইকেট।
জবাবে ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের দুর্দান্ত বোলিংয়ের ১৭২ রানের বেশি করতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। দ্বিতীয় ওভারে কাইল মায়ার্স আউট হলে চাপে পড়ে নিকোলাস পুরানের দল।
ওপেনার শামার ব্রুকস চাপ সামাল দিলেও ধীর গতির ব্যাটিংয়ে ৪৩ বলে ৪২ রান করেন তিনি। এ ছাড়া জেসন হোল্ডার ১৯ বলে ২৫ ও রোভম্যান পাওয়েল ১২ বলে ১৮ রান করেন। শেষ দিকে রোমারিও শেফার্ড ও ওডিয়ান স্মিথের দারুণ ব্যাটিং শুধু হারের ব্যবধান কমান। জয়ের জন্য পর্যাপ্ত রান তুলতে না পারায় ১৩ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন স্যান্টনার। এ ছাড়া বাকি চার বোলার ইশ সোধি, লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি নেন একটি করে উইকেট।
সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলতে শনিবার মাঠে নামবে দল দুটি।
আরও পড়ুন:জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে ১০৫ রানের বড় জয় তুলে নিয়ে ক্লিন সুইপ এড়িয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে জয় দিয়ে রাঙ্গিয়েছে নিজেদের ৪০০তম ওয়ানডে। জয়ের ম্যাচে রঙ্গিন পোশাকে অভিষেক হয়েছে পেইসার এবাদত হোসেনের।
অভিষেক জয় দিয়ে রাঙানোর পাশাপাশি বল হাতেও বেশ আগ্রাসী ছিলেন ২০১৯ সালে বাংলাদেশ দলে অভিষিক্ত এই ক্রিকেটার। দীর্ঘ তিন বছর টেস্ট খেলার পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রঙ্গিন পোশাকে অভিষেকের দিনে তিনি ৮ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩৮ রানের খরচায় ঝুলিতে পুরেছেন ২ উইকেট।
তার শিকার হয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগেই মাঠ ছাড়তে হয় ওয়েসলি মাধেভেরে ও ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি তুলে নেয়া সিকান্দার রাজাকে। আর সেই সুবাদেই জয়ের দিকে ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারেই একপা দিয়ে রাখা সম্ভব হয় বাংলাদেশের।
ম্যাচ শেষে তাই এবাদতের ভূয়সী প্রশংসা তামিম ইকবালের কণ্ঠে।
ওয়ানডে দলপতি বলেন, ‘এবাদতকে আমরা লম্বা সময় ধরেই দেখছি। আমি অবাক হয়েছিলাম আগের ম্যাচগুলোতে তাকে একাদশে না দেখে। সৌভাগ্যবশত শেষ ম্যাচে আমরা তাকে পেয়েছি এবং সে দেখিয়ে দিয়েছে।’
লজ্জার হার এড়ানোর ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যর্থতা ছিল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার মত। ৪৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে যখন অথৈ সাগরে ভাসছিল বাংলাদেশ, সে সময় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন দলকে শক্ত হাতে হাল ধরে রেখে ভাসিয়ে রাখেন বাংলাদেশের রানের তরী।
রিয়াদ বিদায় নিলেও একাই দলকে তীরে ভেরানোর মিশনে নামেন আফিফ। কেউ সঙ্গ না দিলেও একাই টেনে নিয়ে যেতে থাকেন দলকে। তার ৮১ বলে ৮৫ রানের ইনিংসে ভর করে শেষ পর্যন্ত ২৫০ রানের পুঁজি পার করা সম্ভব হয় বাংলাদেশের।
তাই ম্যাচ শেষে আফিফের অনাবদ্য ইনিংসের কথাও জানাতে ভুললেন না ওয়ানডে দলপতি।
তামিম বলেন, ‘একটা সময় মনে হয়েছিল আমরা ধুঁকছি। আফিফ যেভাবে ব্যাটিং করেছে, এটা আসলেই বেশ দৃষ্টিনন্দন ছিল। তার টাইমিং দুর্দান্ত ছিল, তার ব্যাটিংও ছিল দুর্দান্ত।
আমরা যখন ৩০০ করেও ম্যাচ হেরেছিলাম, তখন ২৫০ রানটাও আমাদের কাছে মনে হচ্ছিল ২০০ রানের মতো। সৌভাগ্যবশত আমরা পাঁচ উইকেট খুব দ্রুত তুলে নিয়েছিলাম, যেটা কিনা আমাদের জন্য বেশ কার্যকরী ছিল।’
আরও পড়ুন:জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হাতছাড়া হয়েছিল আগেই। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের মিশন ছিল ক্লিন সুইপ ঠেকানো। নিজেদের ৪০০তম ওয়ানডে ম্যাচ বাংলাদেশ রাঙিয়েছে জয় দিয়েই। জিম্বাবুয়েকে তৃতীয় ম্যাচে ১০৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে সফরকারী দল।
বাংলাদেশের দেয়া ২৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৫১ রানে গুটিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ে। তাই সান্ত্বনার জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করেছে তামিম ইকবালের দল।
আগের দুই ম্যাচে ৩০০-এর আশপাশে রান তাড়া করা জিম্বাবুয়ে শেষ ম্যাচে ৫ম বলে হোঁচট খায়। টাকুডজানাওয়াশে কাইটানোকে রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরের পথ দেখিয়ে শুভ সূচনা করেন হাসান মাহমুদ।
পরের ওভারে টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে ১ রানে ফিরিয়ে চাপ বাড়ান মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাংলাদেশি বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে রানের গতি বাড়াতে পারছিল না স্বাগতিক দল। ৫ ওভারে তারা মাত্র ১৬ রান যোগ করে বোর্ডে। এমন অবস্থায় জিম্বাবুয়ের শিবিরে আঘাত হানেন অভিষিক্ত এবাদত হোসেন।
ওয়েসলি মাধেভেরেকে মেহেদী হাসান মিরাজের তালুবন্দি করে ১ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটান এ টাইগার পেইসার।
পরের বলে বিপজ্জনক সিকান্দার রাজাকে খালি হাতে ফেরান এবাদত। এতে করে ১৮ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে।
ইনিংসের নবম ওভারে শক্ত হাতে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়া ইনোসেন্ট কাইয়াকে ফেরান তাইজুল ইসলাম। এর সুবাদে পাওয়া প্লেতে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নেয় বাংলাদেশ।
উইকেটে আসা যাওয়ার মিছিল চলতে থাকলেও একপ্রান্ত আগলে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন ক্লাইভ মাডানডে। সাহায্য না পাওয়ায় বড় জুটি গড়ে বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়নি তার পক্ষে।
দলীয় ৮৩ রানে মাডানডের বিদায়ের মধ্য দিয়ে বড় ব্যবধানে হার নিশ্চিত হয়ে যায় স্বাগতিকদের। শেষ দিকে রিচার্ড এনগারাভা ও ভিক্টর নিয়াউচির ৬৮ রানের জুটিতে কেবল ব্যবধান কমিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে শেষতক সবগুলো উইকেট হারিয়ে ১০২ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। সে সুবাদে বাংলাদেশ পায় ১০৫ রানের বড় জয়।
বাংলাদেশের হয়ে ৩টি উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। ২টি করে উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন। আর ১টি করে উইকেট যায় হাসান মাহমুদ ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঝুলিতে।
এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে এনামুল বিজয় ও আফিফ হোসেনের ফিফটিতে ৯ উইকেটে ২৫৬ রান করে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য