ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবেই জড়িয়ে আছে পদ্মা সেতুর নাম। সিরিজের নামকরণ করা হয়েছে ‘পদ্মা সেতু ফ্রেন্ডশিপ টেস্ট সিরিজ’। আর সেই জন্য মাঠের পেরিমিটার বোর্ডে চোখে পড়বে পদ্মা সেতু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সেতুর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে এক ধরনের উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদ্মা সেতুর রোমাঞ্চ ছুঁয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে থাকা বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও। সাকিবের নিজ জেলা মাগুরায় যেতেও পাড়ি দিতে হয় উত্তাল পদ্মা। তাই তো পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে দেশসেরা এ অলরাউন্ডারের অনুভূতিটাও একটু বেশি।
সেন্ট লুসিয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের আগে বৃহস্পতিবার সাকিব বলেন, সেতুটি দেশের জন্য অনেক বড় বিষয়।
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ হিসেবে নিজের জন্যও পদ্মা সেতু বড় বিষয় বলে মনে করেন দেশসেরা অলরাউন্ডার। তিনি মনে করেন, পদ্মা সেতু সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
পদ্মা সেতু নিয়ে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টেও স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাকিব। সেখানে তিনি লেখেন, ‘এবার বাড়ি ফেরার আনন্দটা অন্য সময়ের চেয়ে একদম আলাদা। তাই না? এবার স্বপ্নের সেতু ধরে স্বপ্ন যাবে বাড়ি!’
অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে হারের পর শুক্রবার সেন্ট লুসিয়ায় দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। নানা আয়োজনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন।
এদিকে সম্প্রচার জটিলতায় প্রথম টেস্ট প্রচার হয়নি কোনো টেলিভিশন চ্যানেলে। বিসিবি অনলাইনে ফ্রিতে দেখার ব্যবস্থা করলেও এবার দ্বিতীয় টেস্ট দেখা যাবে টেলিভিশনে। আইসিসি টিভিতেও বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচটি দেখা যাবে বিনা মূল্যে।
পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। লাখ লাখ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কায় কাবা তওয়াফের মধ্য দিয়ে হজ কার্যক্রম শুরু করেছেন। এবার করোনার বিধিনিষেধের কড়াকড়ি না থাকায় বেশির ভাগ অংশগ্রহণকারী মাস্ক ছাড়া হজে যোগ দিয়েছেন।
মক্কায় মসজিদুল হারাম চত্বরে স্বর্ণালি হরফ খচিত কালো কাপড়ে আবৃত পবিত্র কাবাঘরের ‘তওয়াফ’ এবং মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও দোয়া চাওয়ার মাধ্যমে হজের প্রথম আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে হজে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল সৌদি সরকার। ২০২০ সালে সৌদি আরবে বাসকারী মাত্র এক হাজার মানুষ পেয়েছিল হজের অনুমতি। গত বছর সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় অনুমতি পেয়েছিলেন ৬০ হাজার মুসল্লি।
এবার বিশ্বের অন্তত ১০ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন হজে। চলতি বছরের জুলাই থেকে বিদেশি তীর্থযাত্রীর জন্য গণটিকা প্রচার অভিযান চালিয়েছিল হজ কর্তৃপক্ষ। ধারণা করা হচ্ছে, এবার মোট অংশগ্রহণকারীর ৮৫ শতাংশই বিদেশি নাগরিক।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হজ। তবে এটি কেবল তাদের জন্যই প্রযোজ্য যাদের সৌদিতে এসে করার সামর্থ্য আছে।
২০১৯ সালে প্রায় ২৫ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছিলেন হজে।
আরও পড়ুন:হাল ফ্যাশনের গ্যাজেট আর শহুরে ব্যস্ততায় ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে লেখার অভ্যাস। একই সঙ্গে বিলুপ্তির পথে ফাউন্টেন পেন, তরল কালি আর বৈচিত্রময় সব কাগজ। ভাব প্রকাশের এসব মাধ্যম এখন রীতিমত গবেষণার বস্তু।
লেখা, আঁকাসহ ভাব প্রকাশের বিভিন্ন মাধ্যম জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে কলম ও স্টেশনারির সুপার ব্র্যান্ড ‘পাইলট’ এর বাংলাদেশের পরিবেশক ‘কিউঅ্যান্ডকিউ’ ট্রেডিং। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় লেখক সংগঠন ফাউন্টেন পেন কালচার (Fountain Pen Culture) দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করেছে ‘Pilot Pen Presents FPC Rain 2022’ শিরোনামে সৃজনশীল প্রতিযোগিতা।
গত ১৬ জুন থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, যা চলবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত। স্বরচিত কবিতা, ক্যালিগ্রাফি বা লেটারিং এবং ড্রয়িং- এই তিনটি বিভাগে যে কোনো বয়সের প্রতিযোগী অংশ নিতে পারবেন।
শর্ত হচ্ছে, লেখা বা আঁকায় ফুটিয়ে তুলতে হবে বাংলার আবহমান বর্ষার রূপ। একজন প্রতিযোগী তিনটি বিভাগে তার কাজ জমা দিতে পারবেন।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, ফাউন্টেন পেন ও তরল কালির ব্যবহার সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করতে এবং ডিভাইস নির্ভরতা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করতেই এই আয়োজন।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের জন্য ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের নিবের ফাউন্টেন পেন সহ আরও অনেক পুরস্কার রয়েছে।
বিস্তারিত জানতে ফেসবুক লিংক : www.facebook.com/groups/fountainpenculture
আরও পড়ুন:কাঁঠাল নিয়ে জমজমাট আয়োজন হয়েছে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ চত্বরে। কাঁঠাল ঘিরে হয়েছে গান-আলোচনা সভা ও প্রতিযোগিতাও।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী চুয়াডাঙ্গা জেলা সাংসদের উদ্যোগে চতুর্থবারের মতো হয়ে গেছে এই কাঁঠাল উৎসব। সেখানে ২ মিনিটে কাঁঠালের সর্বোচ্চসংখ্যক কোয়া খেয়ে বিজয়ী হয়েছে কলেজের কর্মচারী বিলকিস বেগম। পুরস্কারেও পেয়েছেন আস্ত এক কাঁঠাল।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ চত্বরে শুক্রবার সকাল ১০টায় শুরু হয় এই উৎসব। এর স্লোগান দেয়া হয় ‘কাঁঠালের বহু ব্যবহারে, প্রাণ-প্রকৃতি সুস্থ রাখে’।
উৎসবে যোগ দেন চার উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীসহ অনেকে।
দিনভর নানা আয়োজনে মুখর ছিল কলেজ প্রাঙ্গণ। কাঁঠালকথন, কাঁঠালরঙ্গ, আবৃত্তি, গান, সম্মাননা ও আলোচনা সভা শেষে রাখা হয় কাঁঠাল খাওয়ার প্রতিযোগিতা।
৫৫ প্রতিযোগী তাতে অংশ নেন।
মাত্র ২ মিনিটে ৫৯ কোয়া কাঁঠাল খেয়ে একটি কাঁঠাল, একটি বই ও শুভেচ্ছা উপহার জিতে নেন কলেজের কর্মচারী বিলকিস বেগম। একই সময় ৪৯ কোয়া খেয়ে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার কর্মচারী নয়ন রায় দ্বিতীয় ও ৪৬ কোয়া খেয়ে কলেজছাত্র মো. আফিফ তৃতীয় স্থান লাভ করেন। তাদেরও দেয়া হয় শুভেচ্ছা উপহার।
কাঁঠাল উৎসব দেখতে এসে জাহানারা খাতুন জানান, ‘এখানে এসে কাঁঠাল ফল সম্পর্কে নানা অজানা তথ্য জানতে পেরেছি। জানতে পেরেছি এর ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কে। প্রতি বছরই এমন আয়োজন করার দাবি জানাচ্ছি।’
কাঁঠালের পরিচিতি রক্ষা ও গুণাগুণ সম্পর্কে মানুষকে ধারণা দিতেই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক আসমা হেনা চুমকি।
আরও পড়ুন:ঢাকার ধামরাইয়ে প্রতি বছরই শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে রথটান অনুষ্ঠিত হয়। চাকার ওপর বসানো বিশেষ রথের ভেতর জগন্নাথ দেবের মূর্তি বসিয়ে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী এই রথযাত্রা।
এরই মধ্যে শেষ হয়েছে সাজসজ্জার কাজ। এক মাস ধরে কাঠামো মেরামত ও রঙের কাজ শেষে রথ সেজে উঠেছে নতুন রূপে। শুক্রবার রথটানের মধ্য দিয়ে এই অর্চনার শুরু হবে।
ধামরাইয়ের যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন রথযাত্রার ঐতিহ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘ধামরাই এলাকার রাজা ছিলেন শ্রী যশোপাল। সেই সময় আশুলিয়ার শিমুলিয়া থেকে সৈন্য-সামন্ত নিয়ে ধামরাইয়ের কাশবন ও দুর্গম এলাকা পার হয়ে পাশের এক গ্রামে যাচ্ছিলেন।
‘এরই মধ্যে কায়েতপাড়ায় এসে মাটির ঢিবির সামনে থেমে যায় তাকে বহনকারী হাতি। রাজা শত চেষ্টা করেও হাতিটিকে সামনে নিতে পারলেন না এবং অবাক হলেন। তখন তিনি হাতি থেকে নেমে স্থানীয় লোকজনকে ওই মাটির ঢিবি খনন করার জন্য নির্দেশ দেন। সেখানে একটি মন্দির পাওয়া যায়।’
নন্দ গোপাল বলেন, ‘এ ছাড়া কতগুলো মূর্তি পাওয়া যায়। এর মধ্যে বিষ্ণুর মূর্তির মতো শ্রীমাধব মূর্তিও ছিল। রাজা ভক্তি করে সেগুলো সঙ্গে নিয়ে আসেন। সেদিন রাতে মাধব দেবকে স্বপ্নে দেখেন রাজা যশোপাল। মাধব তাকে নির্দেশ দেন পূজা করার। আর বলে দেন নামের সঙ্গে মাধবের নাম বসিয়ে নেয়ার। এর পরই যশোপালের নাম হয়ে যায়।
‘পরে ধামরাই সদরে ঠাকুরবাড়ি পঞ্চাশ গ্রামের বিশিষ্ট পণ্ডিত শ্রীরামজীবন রায়কে তিনি ওই মাধব মূর্তি নির্মাণের দায়িত্ব দেন। এখনও সেই মূর্তির পুজোর প্রচলন রয়েছে। সময়টি ছিল চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় তিথি। সেই থেকেই শুরু হয় যশোমাধবের পূজা।’
রথ তৈরির বিষয়ে গোপাল জানান, বাংলা ১২০৪ থেকে ১৩৪৪ সন পর্যন্ত ঢাকা জেলার সাটুরিয়া থানার বালিয়াটির জমিদাররা বংশানুক্রমে এখানে চারটি রথ তৈরি করেন। ১৩৪৪ সালে রথের ঠিকাদার ছিলেন নারায়ণগঞ্জের স্বর্গীয় সূর্যনারায়ণ সাহা। এ রথ তৈরি করতে সময় লাগে এক বছর।
ধামরাই, কালিয়াকৈর, সাটুরিয়া, সিঙ্গাইর থানার বিভিন্ন কাঠশিল্পী যৌথভাবে নির্মাণকাজে অংশগ্রহণ করে ৬০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন রথটি তৈরি করেন। এ রথটি ত্রিতলবিশিষ্ট ছিল, যার প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় চার কোণে চারটি প্রকোষ্ঠ ও তৃতীয় তলায় একটি প্রকোষ্ঠ ছিল। বালিয়াটির জমিদাররা চলে যাওয়ার পর রথের দেখভালের দায়িত্ব পালন করত টাঙ্গাইলের রণদাপ্রসাদ সাহার পরিবার।
২০১০ সালে ধামরাইয়ে পুরোনো রথটির আদলে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন রথ বানিয়ে দেওয়া হয়। ৪০ জন শিল্পী ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরলসভাবে কাজ করে ৩৭ ফুট উচ্চতা ও ২০ ফুট প্রস্থের কারুকার্যখচিত নতুন রথটি নির্মাণ করেন।
লোহার খাঁচার ওপর সেগুন ও চাম্বল কাঠ বসিয়ে খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে আকর্ষণীয় সব শৈল্পিক নিদর্শন। এতে রয়েছে লোহার তৈরি ১৫টি চাকা। রথের সামনে রয়েছে কাঠের তৈরি দুটি ঘোড়া ও সারথি।
এ ছাড়া রথের বিভিন্ন ধাপে প্রকোষ্ঠের মাঝে স্থাপন করা হয়েছে কাঠের তৈরি দেব-দেবীর মূর্তি। প্রতি বছর রথযাত্রার আগে রং চরানো ও সাজসজ্জার কাজ করে এটিতেই অনুষ্ঠিত হয় রথ উৎসব।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ধামরাই উপজেলা পরিষদসংলগ্ন রথখোলায় গিয়ে রথের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির ব্যস্ততা দেখা যায়।
রংশিল্পী ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘রথটি সারা বছর বাইরে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়। এ জন্য রং মলিন হয়ে যায়। কিন্তু রথযাত্রার আগে এটিকে পুরোপুরি সাজিয়ে তোলা হয়। আমরা বিভিন্ন রং দিয়ে রথকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলি। ৩৫ বছর ধরে এই রথে রঙের কাজ করছি। এখন শেষ মুহূর্তেই তুলির আঁচড় দিচ্ছি।’
রথযাত্রার সর্বশেষ প্রস্তুতির বিষয়ে যশোমাধব মন্দির পরিচালনা পর্ষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন বলেন, ‘রথযাত্রা ও রথমেলা উপলক্ষে রথের সাজসজ্জা ও পরিচর্যার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। রঙের কিছু কাজ চলছে। বাকি কাজও দ্রুত শেষ হবে। এরপর রথটান হবে। এ ছাড়া মাসব্যাপী মেলা হবে।’
ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) আতিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রথযাত্রার নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি পোশাকধারী পুলিশও টহল দিচ্ছে। রথের নিরাপত্তা পরিদর্শন করেছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়। আশা করছি, পুরো প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে শেষ হবে।’
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধের অবক্ষয় রুখতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি যোগ করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিটিজেন চার্টার বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের অবহিতকরণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক অভিভাবকতুল্য ও বন্ধুসুলভ। কিন্তু তার বিপরীত ভাব স্পষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ঘটনায়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের নৈতিক অবক্ষয় ঠেকাতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষার বিষয়টি যোগ করা জরুরি।
‘শিক্ষার্থীরা কেন সহিংস আচরণ করছে, তাদের আচরণে বিচ্যুতি কেন ঘটছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন মনোবিজ্ঞানী বা ছাত্র উপদেষ্টা নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি বিভাগের সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের আচরণের বিভিন্ন দিক মূল্যায়নে কোর্স শিক্ষকরা নম্বর বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে পারেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে সাংস্কৃতিক চর্চা হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করাকে পড়ালেখার ক্ষতি বলে মনে করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তচিন্তা বিকাশের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সাংস্কৃতিক চর্চা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরীক্ষা ও পাঠদান কখন শুরু হবে, সেটি সুনির্দিষ্ট করা নেই। এ কারণে একজন শিক্ষার্থীকে এক থেকে দুই বছর মূল্যবান সময় নষ্ট করতে হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব ভর্তি ও পাঠদানের ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তারা গুণগত শিক্ষা পাচ্ছে কি না সেদিকে নজর দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান, কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ, উপপরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালকসহ ২৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটিজেন চার্টারের ফোকাল পয়েন্ট অংশ নেন।
আরও পড়ুন:হজের সময় ভিক্ষা করার অপরাধে এক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে সৌদি পুলিশ। পরে বাংলাদেশ হজ মিশনের হস্তক্ষেপে মুচলেকা নিয়ে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
কাউন্সিলর (হজ) জহরুল ইসলামের বরাতে বাংলা ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়, ওই ব্যক্তির নাম মতিয়ার রহমান, বাড়ি মেহেরপুর জেলায়। ধানসিঁড়ি ট্র্যাভেল এয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে হজ করতে সৌদি গিয়েছিলেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২২ জুন মতিয়ার মদিনায় ভিক্ষা করতে গিয়ে সৌদি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তিনি সবাইকে বলছিলেন, তার মানিব্যাগটি ছিনতাই হয়ে গেছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, মতিয়ার সৌদিতে কোনো হোটেল বুক করেননি। তাকে গাইড করার মতো কোনো মোয়াজ্জেমও ছিল না।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রাণলয় ইতোমধ্যে ওই হজ এজেন্সিকে নোটিশ পাঠিয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তাদের বিরুদ্ধে হজ ও ওমরাহ আইন, ২০২১-এর ১৩ ধারার অধীনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না।
উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে বাংলাদেশিদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে তাদের নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
হজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের সভাপতি শাহাদাত হোসেন তাসলিম বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে জননিরাপত্তার অধীনে এক সৌদি নাগরিকসহ ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করে সৌদি পুলিশ। এদের বেশির ভাগের সৌদিতে থাকার বৈধতা নেই।
তাদের বিরুদ্ধে ভুয়া হজ প্রচার চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। ভুয়া হজ ও ওমরাহ প্রচার কার্যালয় পর্যবেক্ষণের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে তারা গ্রেপ্তার হন।
সৌদি গ্যাজেটের খবরে বলা হয়, রিয়াদের চারটি স্থান এবং আল-কাসিম অঞ্চলের দুটি এলাকায় জাল হজ প্রচারণার বিজ্ঞাপন এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িত ছিল তারা। তাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থও হাতিয়ে নিচ্ছিল।
প্রসিকিউশন জানিয়েছে, গ্রেপ্তার অবৈধ বিদেশিদের মধ্যে ১১ জন মিসরীয়, ১০ জন সিরিয়ান, ২ জন করে পাকিস্তানি ও সুদানি এবং একজন ইয়েমেনি ও বাংলাদেশি রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে পার হতে গিয়ে সেতুর দুই প্রান্তে আটকে গেল দুই নৌকা।
নিয়ম না মানায় রোববার সকালে এই দুই বাহন আটকে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আবেগতাড়িত হয়ে মূলত নৌকার আদলে দুটি মোটরযানকে সাজিয়েছিলেন মিনারুল ইসলাম ও শহিদুল শেখ নামের দুই ব্যক্তি। তারা চেয়েছিলেন এই নৌকা দুটি নিয়ে পার হবেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
কিন্তু বিধি বাম। মিনারুলের নৌকা তিন চাকার ইজিবাইক ও শহিদুলের নৌকা ফিটনেসবিহীন লক্করঝক্কর মোটরসাইকেল হওয়ায় বাহন দুটিকে সেতু পাড়ি দেয়ার অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগের দিন শুক্রবার পদ্মার মাওয়া প্রান্তে রাজধানীর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মিনারুল ইসলামের সঙ্গে দেখা হয় নিউজবাংলার প্রতিবেদকের।
মিনারুল একটি মোটরযানকে নৌকার আদলে সাজিয়ে তা নিয়ে ছুটে যান জাজিরা প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে যোগ দিতে। মেয়েকে সঙ্গে করে তিন দিন এই নৌকাতেই ছিলেন তিনি।
মিনারুল ওইদিন জানিয়েছিলেন, তার ইচ্ছা নিজের বানানো এই নৌকা নিয়ে জাজিরা প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকায় ফিরতে চান তিনি। কিন্তু মিনারুলের এ ইচ্ছা আর পূরণ হয়নি।
রোববার সকালে মিনারুল তার নৌকা নিয়ে হাজির হন জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজায়। প্রথমে সেতু কর্তৃপক্ষ তার নৌকাটিকে মাইক্রোবাস মনে করে ১৩০০ টাকা টোল নির্ধারণ করে। কিন্তু তারপর আবার যাচাই করা হলে দেখা যায়, এটি মূলত তিন চাকার ইজিবাইক। এরপরই হয় মিনারুলের স্বপ্নভঙ্গ।
মিনারুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি অনেক অনুরোধ করলাম, ১৩০০ টাকা টোলও দিতে চাইলাম কিন্তু তারা আমার কোনো কথাই শুনল না। আমার মেয়েটারও মন খুব খারাপ হয়ে গেল। এখন আবার ফেরিতেই নদী পার হতে হবে।’
এদিকে সকালে মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় সেতু কর্মকর্তারা বিপাকে পড়েন শহিদুল শেখের নৌকা নিয়ে। একটি ফিটনেসবিহীন লক্করঝক্কর মোটরবাইককে নৌকায় রূপ দিয়েছেন কুষ্টিয়ার শহিদুল।
প্রথমে শহিদুলের কাছে টোল চাওয়া হলে তিনি জানান, তার কাছে টোলের টাকা নেই। এরপর তার মোটরসাইকেল পরীক্ষা করে দেখা হয় এটির ফিটনেসও নেই। বিষয়টি শহিদুল মানতে নারাজ। তাকে বোঝাতে গিয়ে সেতুর একটি টোলঘরের কার্যক্রম আটকে থাকে বেশ কিছুক্ষণ।
শহিদুল শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি তো আমাগো এত বড় অর্জনে আনন্দ করতে আইছি। আমি গরিব মানুষ, পকেটে খালি তেল নিবার ৩০০ ট্যাকা আছে, টোল দিমু কইথেইক্যা? তিন দিন ধইরা এইখানে পইড়া ছিলাম আমার নৌকাডা নিয়া বিরিজে উঠমু এই আশায়, অহন মনডা খারাপ লাগতাছে।’
এ বিষয়ে সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সেতুতে কী ধরনের যান চলবে তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে। আমরা তো এর ব্যত্যয় ঘটাতে পারি না। থ্রি হুইলার সেতুতে চলবে না, আর অন্য যে মোটরসাইকেল সেটির অবস্থা খুব খারাপ। তো এই অবস্থায় এগুলোকে সেতু পার হওয়ার অনুমতি কীভাবে দেয়া যায়?’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য