ঢাকায় গত মাসে আয়োজিত পেশাদার আন্তর্জাতিক বক্সিং টুর্নামেন্ট ‘ফাইট নাইটে’ স্বর্ণ জিতে পরিচিতি পান সুরো কৃষ্ণ চাকমা। বাংলাদেশের এ বক্সার এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন জুলাইয়ের কমনওয়েলথ গেমসের।
বক্সিংয়ে নিজের পথযাত্রা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সুরো কৃষ্ণ কথা বলেছেন নিউজবাংলার সঙ্গে। পাঠকদের জন্য সে সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
ফাইটনাইটের মতো আন্তর্জাতিকমানের আসরে অংশ নিলেন। কেমন লাগল?
আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশে এমন একটা ইন্টারন্যাশনাল বক্সিং টুর্নামেন্ট হবে। আগে থেকে এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। জেতার পর এত মানুষের উচ্ছ্বাস ও শুভকামনা অনেক অনুপ্রাণিত করেছে। মনে করেছিলাম এত মানুষ দেখবে না। কিন্তু জেতার দুই-তিন দিন পর দেখেছি পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে গেছে বিষয়টি যা অনেক ভালো লেগেছে।
কতদিন ধরে বক্সিং করছেন?
২০০৭ থেকে ২০২২ সাল, প্রায় ১৫ বছর আমি বক্সিংয়ে আছি।
ক্রিকেট, ফুটবলের মতো জনপ্রিয় খেলা রেখে বক্সিংয়ে কীভাবে আগ্রহী হলেন?
২০০৭ সালে আমি যখন বিকেএসপিতে ভর্তি হই, তখন ফুটবলের জন্য চেষ্টা করেছিলাম। ছোটবেলা রাঙামাটিতে আমি ফুটবল খেলতাম। তখন ফুটবল খেলতেই বেশি ভালো লাগত। বড় হয়েছি ফুটবল নিয়ে। খেলাধুলা মানে বুঝতাম ফুটবল বা ক্রিকেট। এর বাইরে যে বক্সিংও আছে সেটা জানা ছিল না। অ্যাকশন মুভি দেখার কারণে আসলে আমি মার্শাল আর্টের ভক্ত ছিলাম। বিকেএসপিতে ফুটবলে চেষ্টা করে যখন সুযোগ পাইনি তখন বক্সিংয়ে আসলাম।
পরিবার থেকে কেমন সমর্থন পেয়েছেন? বক্সিংয়ের মতো ঝুঁকিপূর্ণ খেলা নিয়ে সবার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
আমার পরিবারের সবাই সব ধরনের খেলা পছন্দ করে। আমার বাবা খেলোয়াড় ছিলেন। ছোটবেলা থেকে খেলাধুলার ক্ষেত্রে বাসা থেকে অনেক সমর্থন পেয়েছি। বাসা থেকে আমাকে বিকেএসপিতে ভর্তি করাতে চেয়েছে। ভালো পরিবেশে পড়াশোনার পাশাপাশি যেন ভালো খেলোয়াড় হতে পারি। বক্সিং বা অন্য যে খেলাই হোক। পরিবার থেকে এটা চাচ্ছিল। পরিবার আমার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
পরিবারে কে কে আছেন?
১১ বছর বয়সে বাবা মারা গেছেন। আমার ছোট ভাই চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে স্পোর্টস অ্যান্ড সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করছে। ও নিজেও বিকেএসপির ছাত্র। আমিই ওকে ভর্তি করিয়েছি। সে টেবিল টেনিস খেলোয়াড়। জাতীয় দলেও খেলেছে।
খেলাধুলায় মনোযোগের পাশাপাশি পড়াশোনা কীভাবে চালাতেন?
ক্লাস সেভেন থেকে বক্সিং শুরু করি। সে সময় থেকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত বিকেএসপিতে ছিলাম। পড়াশোনা ও খেলাধুলা দুটোই ওখানে ছিল। ২০১৩ সালে যখন ওখান থেকে বের হয়ে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। ভর্তি হওয়ার পর খুব বেশি মনোযোগ দিতে পারিনি। ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর আমার মনে হলো অন্তত গ্র্যাজুয়েশনটা শেষ করতে হবে। ২০১৪ সালের পর থেকে বক্সিংয়ে অনেক ন্যাশনাল ক্যাম্প থাকত। এখনও ক্যাম্প হয়। সেগুলোতে অংশগ্রহণের পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছি। ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকরা অনেক সাহায্য করেছেন। অনেক সময় ক্লাস করতে পারতাম না। তখন ডিপার্টমেন্ট থেকে জাতীয় খেলোয়াড় বিবেচনা করে শুধু পরীক্ষা দেয়ার জন্য বলত। আমি কোনো পরীক্ষা মিস করতাম না। এভাবেই আমি অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করলাম।
বক্সিং যারা শুরু করতে চায় তাদের কী পরামর্শ দেবেন?
আমি মনে করি বাংলাদেশের সবাই কম-বেশি বক্সিং সম্পর্কে জানে। কিন্তু প্রচলিত বেশি রাজশাহী, যশোর ও বরিশালে। সব জেলায় এখনও বক্সিং পৌঁছেনি। সব জেলায় বক্সিংয়ের জন্য সঠিক কোচ ও পরিবেশ নেই। আমি মনে করি যারা করতে চায় তারা বিকেএসপিতে ভর্তি হতে পারে তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি বক্সিংও করতে পারবে। বাইরে থেকে বক্সিংয়ে থাকাটা একটু কঠিন কারণ পড়াশোনা আর খেলাধুলা তখন আলাদা হয়ে যায়। নিয়মিত অনুশীলন আর পড়াশোনা একসঙ্গে চালিয়ে যাওয়া কঠিন। যারা বিকেএসপির বাইরে থেকে বক্সিংয়ে আসতে চায় বিশেষ করে ঢাকাতে, তারা সে ক্ষেত্রে ভালো কোচের আন্ডারে গেলে ভালো করবেন।
সামনে কী কী টুর্নামেন্ট আছে?
প্রফেশনাল ও অ্যামেচার মিলিয়ে অনেকগুলো ম্যাচ আছে। জুলাইয়ে কমনওয়েলথ গেমস ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ম্যাচ হবে। সেখান থেকে দেশে ফেরার পর র্যাঙ্কিং ফাইটে প্রফেশনাল আরও একটি ম্যাচ হতে পারে। আগামী বছর জাতীয়-আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আমার ৩-৪টা টুর্নামেন্ট থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বক্সিং নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
বক্সার হিসেবে আমার লক্ষ্য র্যাঙ্কিং উন্নতি করা। ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমার পরিকল্পনা আছে। সে অনুযায়ী কাজ করছি। এশিয়া প্যাসিফিক চ্যাম্পিয়নশিপ টাইটেল আছে সেটা অর্জন করার চেষ্টা করছি। সে লক্ষ্যে এখন কাজ করছি। ওই টাইটেল জিততে পারলে তা হবে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।
বক্সিংয়ে আপনার অনুপ্রেরণার উৎস কে? প্রিয় বক্সার কে?
সবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পাই। আশপাশের মানুষের ভালোবাসা, পরিবেশ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা এসব কিছু থেকেই অনুপ্রেরণা পাই। তাছাড়া পরিবার, শিক্ষক, ইউনিভার্সিটি, পার্বত্যাঞ্চলসহ সারা দেশের মানুষের কাছ থেকে উৎসাহ পাই। তবে যখন খেলি তখন মানুষের যে ভালোবাসা পাই তা সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দেয়। যখন বক্সিং প্রথম শুরু করি তখন মোহাম্মদ আলির নামই শুনেছিলাম প্রথম। পছন্দের বক্সারদের তালিকায় তিনি সবার ওপরে। বর্তমানে অনেক বক্সার আছে যাদের আমি পছন্দ করি। ম্যানি প্যাকিয়াও, ফ্লয়েড মেওয়েদারের মতো অনেকেই আছে যাদের আমি পছন্দ করি।
বক্সিংয়ে উন্নতির জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে মনে করেন?
বক্সিংয়ে উন্নতি করতে হলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকা উচিত ৬টার বেশি। যদি বাইরের দেশের অ্যামাচারদের কথা বলি তাহলে অন্তত ৩-৪টা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলতে হবে। এখন যেহেতু পেশাদার ম্যাচ শুরু হবে, সেটা বাংলাদেশে নিয়মিত হবে। আশা করছি বছরে ৪-৫টা ম্যাচ থাকবে আর উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। নিয়মিত দেশের বাইরে অনুশীলন ও খেলার ব্যবস্থা যত বাড়বে, বাংলাদেশের বক্সিং তত উন্নত হবে।
ফাইটনাইটে সারা পাওয়ার পর কেমন লাগছে?
যারা এখন আসছে আমার সঙ্গে কথা বলছে, এটা অবশ্যই ইতিবাচকভাবে নিচ্ছি। এগুলো আমি উপভোগ করি। সবাই বক্সিং নিয়ে আগে তেমন জানত না বা আমরা ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারিনি। হয়তো কোনো ত্রুটি ছিল বা খেলার উপস্থাপনায় হয়তো ভুল ছিল। বেশি করে খেলার আয়োজন ও বেশি প্রচার করা হলে হয়তো আরও আগে এ প্রতিক্রিয়াটা পেতাম।
বক্সিংয়ে প্রতিপক্ষকে শারীরিকভাবে আঘাত করতে হয়, বিষয়টাকে কীভাবে দেখেন?
আসলে স্পোর্টসের বিষয়টাই হচ্ছে শ্রদ্ধার। বিশেষ করে বক্সিংয়ের ক্ষেত্রে। আমরা যখন রিংয়ে নামি সে হয়তো আমার প্রতিপক্ষ কিন্তু রিংয়ের বাইরে মনে হয় তার চেয়ে কাছের বন্ধু কেউ নেই। মার্শাল আর্টসের খেলায় যে সম্মান প্রতিপক্ষের জন্য, সেটা আমি অন্য কোনো খেলায় দেখি না। আরেকজনকে মেরে রক্তাক্ত করলেও খেলা শেষ হওয়ামাত্র সে আমার ভাই। একদম আপন ভাইয়ের মতো।
১৫ বছরে বক্সিং করতে গিয়ে বড় কোনো চোটে পড়েছেন?
খেলাধুলায় চোটের ঝুঁকি থাকবেই। ফুটবল-ক্রিকেট সব জায়গাতেই চোট আছে। তবে বক্সিংয়ের ক্ষেত্রে আমার মনে হয় ব্যাপারটা আলাদা। এটা যে কেউ খেলতে পারবে না। বক্সিংয়ের জন্য সাহস দরকার। এখানে চোট বেশি দিন থাকে না। সর্বোচ্চ ৭ দিন। আর আপনার অর্জন সারা জীবন থাকবে। সাফল্যের সে আনন্দে আঘাতের যন্ত্রণা ভুলে যাই। তবে আমি অনেক ভাগ্যবান যে কখনও বড় চোটে পড়িনি।
আরও পড়ুন:দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য