ঢাকায় গত মাসে আয়োজিত পেশাদার আন্তর্জাতিক বক্সিং টুর্নামেন্ট ‘ফাইট নাইটে’ স্বর্ণ জিতে পরিচিতি পান সুরো কৃষ্ণ চাকমা। বাংলাদেশের এ বক্সার এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন জুলাইয়ের কমনওয়েলথ গেমসের।
বক্সিংয়ে নিজের পথযাত্রা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সুরো কৃষ্ণ কথা বলেছেন নিউজবাংলার সঙ্গে। পাঠকদের জন্য সে সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
ফাইটনাইটের মতো আন্তর্জাতিকমানের আসরে অংশ নিলেন। কেমন লাগল?
আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশে এমন একটা ইন্টারন্যাশনাল বক্সিং টুর্নামেন্ট হবে। আগে থেকে এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। জেতার পর এত মানুষের উচ্ছ্বাস ও শুভকামনা অনেক অনুপ্রাণিত করেছে। মনে করেছিলাম এত মানুষ দেখবে না। কিন্তু জেতার দুই-তিন দিন পর দেখেছি পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে গেছে বিষয়টি যা অনেক ভালো লেগেছে।
কতদিন ধরে বক্সিং করছেন?
২০০৭ থেকে ২০২২ সাল, প্রায় ১৫ বছর আমি বক্সিংয়ে আছি।
ক্রিকেট, ফুটবলের মতো জনপ্রিয় খেলা রেখে বক্সিংয়ে কীভাবে আগ্রহী হলেন?
২০০৭ সালে আমি যখন বিকেএসপিতে ভর্তি হই, তখন ফুটবলের জন্য চেষ্টা করেছিলাম। ছোটবেলা রাঙামাটিতে আমি ফুটবল খেলতাম। তখন ফুটবল খেলতেই বেশি ভালো লাগত। বড় হয়েছি ফুটবল নিয়ে। খেলাধুলা মানে বুঝতাম ফুটবল বা ক্রিকেট। এর বাইরে যে বক্সিংও আছে সেটা জানা ছিল না। অ্যাকশন মুভি দেখার কারণে আসলে আমি মার্শাল আর্টের ভক্ত ছিলাম। বিকেএসপিতে ফুটবলে চেষ্টা করে যখন সুযোগ পাইনি তখন বক্সিংয়ে আসলাম।
পরিবার থেকে কেমন সমর্থন পেয়েছেন? বক্সিংয়ের মতো ঝুঁকিপূর্ণ খেলা নিয়ে সবার প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
আমার পরিবারের সবাই সব ধরনের খেলা পছন্দ করে। আমার বাবা খেলোয়াড় ছিলেন। ছোটবেলা থেকে খেলাধুলার ক্ষেত্রে বাসা থেকে অনেক সমর্থন পেয়েছি। বাসা থেকে আমাকে বিকেএসপিতে ভর্তি করাতে চেয়েছে। ভালো পরিবেশে পড়াশোনার পাশাপাশি যেন ভালো খেলোয়াড় হতে পারি। বক্সিং বা অন্য যে খেলাই হোক। পরিবার থেকে এটা চাচ্ছিল। পরিবার আমার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
পরিবারে কে কে আছেন?
১১ বছর বয়সে বাবা মারা গেছেন। আমার ছোট ভাই চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে স্পোর্টস অ্যান্ড সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করছে। ও নিজেও বিকেএসপির ছাত্র। আমিই ওকে ভর্তি করিয়েছি। সে টেবিল টেনিস খেলোয়াড়। জাতীয় দলেও খেলেছে।
খেলাধুলায় মনোযোগের পাশাপাশি পড়াশোনা কীভাবে চালাতেন?
ক্লাস সেভেন থেকে বক্সিং শুরু করি। সে সময় থেকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত বিকেএসপিতে ছিলাম। পড়াশোনা ও খেলাধুলা দুটোই ওখানে ছিল। ২০১৩ সালে যখন ওখান থেকে বের হয়ে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। ভর্তি হওয়ার পর খুব বেশি মনোযোগ দিতে পারিনি। ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর আমার মনে হলো অন্তত গ্র্যাজুয়েশনটা শেষ করতে হবে। ২০১৪ সালের পর থেকে বক্সিংয়ে অনেক ন্যাশনাল ক্যাম্প থাকত। এখনও ক্যাম্প হয়। সেগুলোতে অংশগ্রহণের পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছি। ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকরা অনেক সাহায্য করেছেন। অনেক সময় ক্লাস করতে পারতাম না। তখন ডিপার্টমেন্ট থেকে জাতীয় খেলোয়াড় বিবেচনা করে শুধু পরীক্ষা দেয়ার জন্য বলত। আমি কোনো পরীক্ষা মিস করতাম না। এভাবেই আমি অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করলাম।
বক্সিং যারা শুরু করতে চায় তাদের কী পরামর্শ দেবেন?
আমি মনে করি বাংলাদেশের সবাই কম-বেশি বক্সিং সম্পর্কে জানে। কিন্তু প্রচলিত বেশি রাজশাহী, যশোর ও বরিশালে। সব জেলায় এখনও বক্সিং পৌঁছেনি। সব জেলায় বক্সিংয়ের জন্য সঠিক কোচ ও পরিবেশ নেই। আমি মনে করি যারা করতে চায় তারা বিকেএসপিতে ভর্তি হতে পারে তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি বক্সিংও করতে পারবে। বাইরে থেকে বক্সিংয়ে থাকাটা একটু কঠিন কারণ পড়াশোনা আর খেলাধুলা তখন আলাদা হয়ে যায়। নিয়মিত অনুশীলন আর পড়াশোনা একসঙ্গে চালিয়ে যাওয়া কঠিন। যারা বিকেএসপির বাইরে থেকে বক্সিংয়ে আসতে চায় বিশেষ করে ঢাকাতে, তারা সে ক্ষেত্রে ভালো কোচের আন্ডারে গেলে ভালো করবেন।
সামনে কী কী টুর্নামেন্ট আছে?
প্রফেশনাল ও অ্যামেচার মিলিয়ে অনেকগুলো ম্যাচ আছে। জুলাইয়ে কমনওয়েলথ গেমস ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ম্যাচ হবে। সেখান থেকে দেশে ফেরার পর র্যাঙ্কিং ফাইটে প্রফেশনাল আরও একটি ম্যাচ হতে পারে। আগামী বছর জাতীয়-আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আমার ৩-৪টা টুর্নামেন্ট থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বক্সিং নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
বক্সার হিসেবে আমার লক্ষ্য র্যাঙ্কিং উন্নতি করা। ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমার পরিকল্পনা আছে। সে অনুযায়ী কাজ করছি। এশিয়া প্যাসিফিক চ্যাম্পিয়নশিপ টাইটেল আছে সেটা অর্জন করার চেষ্টা করছি। সে লক্ষ্যে এখন কাজ করছি। ওই টাইটেল জিততে পারলে তা হবে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।
বক্সিংয়ে আপনার অনুপ্রেরণার উৎস কে? প্রিয় বক্সার কে?
সবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পাই। আশপাশের মানুষের ভালোবাসা, পরিবেশ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা এসব কিছু থেকেই অনুপ্রেরণা পাই। তাছাড়া পরিবার, শিক্ষক, ইউনিভার্সিটি, পার্বত্যাঞ্চলসহ সারা দেশের মানুষের কাছ থেকে উৎসাহ পাই। তবে যখন খেলি তখন মানুষের যে ভালোবাসা পাই তা সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দেয়। যখন বক্সিং প্রথম শুরু করি তখন মোহাম্মদ আলির নামই শুনেছিলাম প্রথম। পছন্দের বক্সারদের তালিকায় তিনি সবার ওপরে। বর্তমানে অনেক বক্সার আছে যাদের আমি পছন্দ করি। ম্যানি প্যাকিয়াও, ফ্লয়েড মেওয়েদারের মতো অনেকেই আছে যাদের আমি পছন্দ করি।
বক্সিংয়ে উন্নতির জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে মনে করেন?
বক্সিংয়ে উন্নতি করতে হলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ থাকা উচিত ৬টার বেশি। যদি বাইরের দেশের অ্যামাচারদের কথা বলি তাহলে অন্তত ৩-৪টা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলতে হবে। এখন যেহেতু পেশাদার ম্যাচ শুরু হবে, সেটা বাংলাদেশে নিয়মিত হবে। আশা করছি বছরে ৪-৫টা ম্যাচ থাকবে আর উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। নিয়মিত দেশের বাইরে অনুশীলন ও খেলার ব্যবস্থা যত বাড়বে, বাংলাদেশের বক্সিং তত উন্নত হবে।
ফাইটনাইটে সারা পাওয়ার পর কেমন লাগছে?
যারা এখন আসছে আমার সঙ্গে কথা বলছে, এটা অবশ্যই ইতিবাচকভাবে নিচ্ছি। এগুলো আমি উপভোগ করি। সবাই বক্সিং নিয়ে আগে তেমন জানত না বা আমরা ঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারিনি। হয়তো কোনো ত্রুটি ছিল বা খেলার উপস্থাপনায় হয়তো ভুল ছিল। বেশি করে খেলার আয়োজন ও বেশি প্রচার করা হলে হয়তো আরও আগে এ প্রতিক্রিয়াটা পেতাম।
বক্সিংয়ে প্রতিপক্ষকে শারীরিকভাবে আঘাত করতে হয়, বিষয়টাকে কীভাবে দেখেন?
আসলে স্পোর্টসের বিষয়টাই হচ্ছে শ্রদ্ধার। বিশেষ করে বক্সিংয়ের ক্ষেত্রে। আমরা যখন রিংয়ে নামি সে হয়তো আমার প্রতিপক্ষ কিন্তু রিংয়ের বাইরে মনে হয় তার চেয়ে কাছের বন্ধু কেউ নেই। মার্শাল আর্টসের খেলায় যে সম্মান প্রতিপক্ষের জন্য, সেটা আমি অন্য কোনো খেলায় দেখি না। আরেকজনকে মেরে রক্তাক্ত করলেও খেলা শেষ হওয়ামাত্র সে আমার ভাই। একদম আপন ভাইয়ের মতো।
১৫ বছরে বক্সিং করতে গিয়ে বড় কোনো চোটে পড়েছেন?
খেলাধুলায় চোটের ঝুঁকি থাকবেই। ফুটবল-ক্রিকেট সব জায়গাতেই চোট আছে। তবে বক্সিংয়ের ক্ষেত্রে আমার মনে হয় ব্যাপারটা আলাদা। এটা যে কেউ খেলতে পারবে না। বক্সিংয়ের জন্য সাহস দরকার। এখানে চোট বেশি দিন থাকে না। সর্বোচ্চ ৭ দিন। আর আপনার অর্জন সারা জীবন থাকবে। সাফল্যের সে আনন্দে আঘাতের যন্ত্রণা ভুলে যাই। তবে আমি অনেক ভাগ্যবান যে কখনও বড় চোটে পড়িনি।
আরও পড়ুন:পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের আলোচিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও নিগার সুলতানা জ্যোতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তারা বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।
নতুন বছরের আগের দিন শনিবার রাতে ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে সাকিব লিখেন, ‘শুভ নববর্ষ! আশা করি আমাদের সবার জীবনে এই নতুন বছর অঢেল সুখ, শান্তি এবং আনন্দ নিয়ে আসবে।’
নিজ ভেরিফায়েড পেজে ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩১’ লেখা একটি পোস্টার শেয়ার করে ওপেনার তামিম ইকবাল এক বাক্যে লিখেন, ‘সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।’
এ দুই তারকা ছাড়াও অনেকেই নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেন, ‘নববর্ষে নবরূপ রাঙিয়ে দিক প্রতিটি মুহূর্ত। সুন্দর সমৃদ্ধ হোক আগামীর দিনগুলো। শুভ নববর্ষ সকলকে।’
নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ লিখেন, ‘আনন্দ, উন্নতি ও শুভকামনার বার্তা নিয়ে নতুন বছরের সূচনায় ভরে উঠুক সকলের জীবন। সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ ১৪৩১।’
জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি লিখেন, ‘নববর্ষে নবরূপ রাঙিয়ে দিক প্রতিটি মুহূর্ত। সুন্দর সমৃদ্ধ হোক আগামীর দিনগুলো। শুভ নববর্ষ।’
আরও পড়ুন:দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের তারকা ক্রিকেটাররা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের ঈদের আনন্দঘন মুহূর্তের ছবি পোস্ট করে দেশবাসী তথা ভক্তদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাকিব-তামিম-জ্যোতিরা।
নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব লিখেছেন, ‘আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে ঈদ মোবারক। এই আনন্দের দিন আপনার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি এবং অফুরন্ত রহমত নিয়ে আসুক।’
শুভেচ্ছা জানিয়েছে দেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ফেসবুকে তামিম লিখেছেন, ‘ঈদ মোবারক! সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।’
ফেসবুকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ লিখেছেন, ‘ঈদ মোবারক। এই বিশেষ দিনটি ভালবাসা, আনন্দ এবং আশীর্বাদে ভরে উঠুক।’
দলের অন্য সেরা পেসারদের একজন তাসকিন আহমেদ লিখেছেন, ‘এই শুভ দিনে, আল্লাহর রহমত আপনার পথকে আলোকিত করুক এবং আপনার প্রতিটি পদক্ষেপে সুখ বয়ে আনুক। ঈদ মোবারক।’
স্পিন অলরাউন্ডার মিরাজ লিখেছেন, ‘ঈদের এই শুভ দিনে আমার সকল শুভাকাঙ্খীদের আন্তরিকভাবে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। আসুন সকল ভেদাভেদ, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে ভালোবাসা ছড়িয়ে দেই সবার মাঝে, ঈদ মোবারক।’
নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি লিখেছেন, ‘ঈদ-উল-ফিতরের এই বরকতময় উপলক্ষে আল্লাহর রহমতে আপনার জীবন আনন্দ, শান্তি এবং সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক। ঈদ মোবারক!’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্জাইচিগুলোর একটি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচায় এই টুর্নামেন্টে যেমন দেখা যায় তারকার ছড়াছড়ি, তেমনই কোটি কোটি টাকার জুয়া বাণিজ্য চলে আইপিএল চলাকালে।
তেমনই আইপিএলে বাজি ধরে বারবার হেরে কোটি রুপির বেশি ঋণী হয়ে পড়েছিলেন ভারতের কর্ণাটকের দর্শন বাবু নামের এক ইঞ্জিনিয়ার। তবে টাকা সময়মতো পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় পাওনাদারদের ক্রমাগত হয়রানিতে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুয়ার নেশায় টাকা ধার করতে করতে ঋণের পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় দর্শনের। তার পরও ধার করে বাজি ধরতে থাকেন তিনি।
দেড় কোটি টাকা ধার নেয়ার পর পাওনাদাররা তার বাড়িতে এসে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিকে শুরু করেন। শুধু তা-ই নয়, ওই প্রকৌশলীকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রী রঞ্জিতাকে হেনস্থা করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
আর পাওনাদারদের হয়রানি সহ্য করতে না পেরেই রঞ্জিতা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ কর্ণাটকের চিত্রদুর্গায় নিজের বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এ ঘটনায় রঞ্জিতার বাবা ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
চিত্রদুর্গের বাসিন্দা দর্শন সেচ দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয়দের দাবি, দর্শন মাঝেমধ্যেই অনলাইনে জুয়া খেলতেন। সেই নেশার কারণে ধারের বোঝা বাড়ছিল তার।
যদিও দর্শনের শ্বশুরের পাল্টা দাবি, তার জামাই নির্দোষ। তাকে এই জুয়া খেলতে বাধ্য করা হয়েছিল। বাধ্য করা হয়েছিল টাকা ধার নিতেও। যাদের কাছে থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন, তারাই এই কাজ করিয়েছিলেন তার জামাইকে দিয়ে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য দর্শনকে লোভ দেখানো হয়। তারপর তাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, দর্শনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেটি রঞ্জিতা লিখেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সুইসাইড নোটে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন রঞ্জিতা।
তার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এরইমধ্যে শিবু, গিরিশ এবং ভেঙ্কটেশ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে নানা গুঞ্জনের মধ্যেই এ নিয়ে কথা বলতে ফেসবুক লাইভে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। ঘোষণা অনুযায়ী তিনি তার কথা রেখেছেন।
লাইভে তামিম জানান, মূলত মোবাইল আর্থিক লেনদেনের প্রতিষ্ঠান নগদের একটি বিজ্ঞাপনের প্রচারণায় ফোনালাপ ফাঁসের অভিনয় করেন তারা। লাইভে তামিম-মিরাজ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজের ওই ফোনালাপ প্রচারিত হয় টিভি চ্যানেলে। পরে এটি ভাইরাল হয় ফেসবুকে।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে তামিম ও মিরাজকে কথা বলতে শোনা যায়। এতে তামিম মুশফিকের কোনো আচরণে ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা জানান মিরাজকে।
সেই ফোনালাপ প্রচার হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। অনেকেই পক্ষে-বিপক্ষে নানা ধরনের মন্তব্য করতে থাকেন।
অবশেষে বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি খোলাসা করলেন তামিম। জানালেন, নগদের ক্যাম্পেইনের প্রচারণার জন্য তারা এই নাটক করেছেন।
লাইভে তামিম জানান, ঈদ উপলক্ষে নগদের একটি ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। যেখানে ২৪ জন গ্রাহককে জমি উপহার দেয়া হবে। সেই ক্যাম্পেইনে জয়ের জন্য দুই বা তিনজন করে দল গঠন করে লেনদেন করতে হবে, যে দলে মুশফিককে রেখেছিলেন তামিম। তবে মুশফিক বের হয়ে গেছেন। মূলত এসব ঘিরেই ছিল এই ফোনালাপ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর বনানীতে শহীদ জায়ান চৌধুরী খেলার মাঠে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র পৃষ্ঠপোষকতায় ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইমা) ব্যবস্থাপনায় ‘ওয়ালটন-ইমা মিডিয়া কাপ ক্রিকেট-২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওয়ালটন ইমা কাপ ক্রিকেট রোববার শেষ হয়।
এবারের টুর্নামেন্টে ২৪ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অংশ নেয়। আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় গান বাংলা টিভি। রানার্স-আপ হয় দীপ্ত টিভি ।
এ খেলায় ফাইনালে দীপ্ত টিভিকে ছয় উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় গান বাংলা টিভি। বল হাতে ৩ উইকেট ও ব্যাট হাতে ৩৫ রান করে ম্যাচসেরা হন গান বাংলার শাওন।
ফাইনাল শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
এ সময় পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. রবিউল ইসলাম মিলটন, ইমার সভাপতি আনিসুর রহমান তারেক ও সাধারণ সম্পাদক তছলিম চৌধুরী, গান বাংলা টেলিভিশনের চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নি, প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপস, চিত্রনায়ক জায়েদ খান ও নীরব হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য