প্রায় এক বছর পর টেস্ট দলে ফিরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দারুণ বল করেছিলেন নাঈম হাসান। চট্টগ্রাম টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ইনিংসে ৬ উইকেট নেন এ স্পিনার।
তারপরই শিকার হন দুর্ভাগ্যের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের স্কোয়াডে জায়গা নিশ্চিত থাকলেও পড়েন ইনজুরিতে। যার কারণে মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন মাসখানেকের জন্যে।
আগেও ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় চোটের কারণে দলের বাইরে থাকতে হয়েছে তাকে। বারবার ইনজুরিতে পড়ায় আক্ষেপ থাকলেও হতাশ নন ২২ বছর বয়সী এ বোলার।
রোববার সংবাদমাধ্যমকে নাঈম বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এখন আগের থেকে অনেক ভালো। আরও সপ্তাহ খানেক পর আবার চিকিৎসকেরা দেখবেন ১২ বা ১৫ তারিখ থেকে বোলিং শুরু করতে পারব বলে আশা করছি। এখন সাইক্লিং করছি আর জিম করছি।
‘হতাশ হওয়ার কিছু নেই। একজন স্পোর্টসম্যানের জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। চেষ্টা করব যখন ফিরব তখন যেন আরও শক্তভাবে ফিরতে পারি। ইনজুরিতো আমার বা কারও হাতে ছিল না।’
আগে চোট নিয়ে হতাশ হতেন ও চিন্তিত থাকতেন বাংলাদেশের জার্সিতে ৮টি টেস্ট খেলা এ স্পিনার। তবে এখন আর তেমন একটা চিন্তা করেননি। এখন কাজ করছেন পুর্নবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে।
তিনি যোগ করেন, ‘এখন ইনজুরিতে থেকে কীভাবে রিকভার করব সেটাই চিন্তা করছি। নিজেকে যতটা পারি ফিট রাখার চেষ্টা করছি, কারণ যখনই বোলিং শুরু করব তখন যেন সমস্যা না হয়।’
টাইগার স্কোয়াডে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জায়গা নিয়ে একটি স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা চলে নাঈমের। তার অনুপস্থিতিতে মিরাজ জাতীয় দলে একরকম জায়গা পোক্ত করে ফেলেছেন। আবার মিরাজের চোটের সুযোগে শ্রীলঙ্কা সিরিজে জায়গা করে নেন নাঈম।
জাতীয় দলে আবারও সুযোগ করে নিয়েছেন মিরাজ। তবে জায়গা ফিরে পেতে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে চান নাঈম।
তিনি বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির খেলা আছে, ওগুলো সব খেলব। যদি সুস্থ থাকি এই খেলাগুলো খেলে তাহলে পারফর্ম করে নিজেকে আবার জাতীয় দলে ফেরানোর চেষ্টা করব।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ২০২৭ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন বছর আগেই নিজেদের ৮ ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী ফোলেতসি মোসেকি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকান নিউজ ২৪ ওয়েবসাইটকে মোসেকি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক কারণ বিবেচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকার আট ভেন্যু বাছাই করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ও হোটেল রুমের সহজলভ্যতা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’
দেশটির নিয়মিত টেস্ট ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্ক, কেপটাউনের নিউল্যান্ডস, ডারবানের কিংসমিড ও গেবেরার সেন্ট জর্জে’স পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচ।
অন্য ভেন্যুগুলো হচ্ছে, ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ও ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্ক।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসর আয়োজন করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল তারা। তবে এ টুর্নামেন্টের আয়োজনে নামিবিয়া এবারই প্রথম।
আয়োজক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও আসরের টিকিট পেতে আফ্রিকান কোয়ালিফায়ারে খেলতে হবে নামিবিয়াকে।
তিনজন স্বাধীন নারী পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
নিয়োগ পাওয়া তিন নারী পরিচালক হলেন- ডায়ান ক্যাম্পবেল, লুইস ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও ডেবরা করিয়াট-প্যাটন। এক বছরের মেয়াদে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তারা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিডব্লুআই জানিয়েছে, ক্যাম্পবেল, ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও করিয়াট-প্যাটনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। আপাতত তাদের মেয়াদ এক বছর, যা শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ।
তিনজনের মধ্যে প্রথমবার পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ক্যাম্পবেল ও ভিক্টর-ফ্রেডেরিক। অন্যদিকে ২০১৯ থেকে ২০২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন করিয়াট-প্যাটন।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টেও বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচের পঞ্চম দিন বুধবার ১৯২ রানের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটারের অর্ধশতকে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন শর বেশি লিড নেয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয়টিতে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হতাশাজনক ব্যাটিং না করলেও বিজয় থেকে অনেক দূরেই থেমে যায় টাইগারদের রানের চাকা। মমিনুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া অর্ধশতকে ৩১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন:সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫১১ রানের বিশাল টার্গেট দিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৩৫৩ রানের লিডকে সাথে নিয়ে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। খবর বাসসের
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১০২ রান সংগ্রহ ছিল শ্রীলঙ্কার।
মঙ্গলবার চতুর্থ দিন ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
৩৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হবার আগে ৫টি চারে ৫৬ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৩ রানে শুরু করা প্রবাথ জয়সুরিয়া ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যপ্রান্তে বিশ্ব ফার্নান্দো অপরাজিত ৮ রান করেন।
বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ৬৫ রানে ৪টি, খালেদ আহমেদ ৩৪ রানে ২টি ও সাকিব ৩৯ রানে ১টি উইকেট নেন।
বাংলাদেশি ফিল্ডারদের ক্যাচ মিসের মহড়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ছয় ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৫৯ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৫৩১ রানের পাহাড় গড়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
কোনো ব্যাটারের সেঞ্চুরি ছাড়াই টেস্টের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ দলীয় রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েছে শ্রীলঙ্কা। দিন শেষে ১৫ ওভার ব্যাট করে ১ উইকেটে ৫৫ রান করেছে বাংলাদেশ। ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৭৬ রানে পিছিয়ে টাইগাররা। খবর বাসসের
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে লংকানদের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৩১৪ রান। দিনেশ চান্দিমাল ৩৪ ও অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
রোববার দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকে বাংলাদেশ বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন চান্দিমাল ও ধনাঞ্জয়া। এতে দুজনই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন। অবশেষে দিনের ১৬তম ওভারে সাকিব আল হাসানের হাত ধরে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০৪ বলে ৫৯ রান করা চান্দিমালকে শিকার করেন সাকিব। পঞ্চম উইকেটে চান্দিমাল- ধনাঞ্জয়া ৮৬ রানের জুটি গড়েন।
প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ডাবল ও সেঞ্চুরির জুটিতে বাংলাদেশকে চরমভাবে ভুগিয়েছিলেন ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু মেন্ডিস। কিন্তু এবার আর পারেননি তারা। জুটিতে ৩৬ রান যোগ হবার পর বিচ্ছিন্ন ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭০ রান করে পেসার খালেদ আহমেদের বলে লেগ বিফোর আউট হন ধনাঞ্জয়া।
ধনাঞ্জয়া ফেরার পর প্রবাথ জয়সুরিয়াকে নিয়ে ৬৫ রানের জুটি গড়েন কামিন্দু। অবশ্য এই জুটি ৮ রানের বেশি যোগ করতে পারতো না, যদি না বাংলাদেশের তিন ফিল্ডার মিলে জয়সুরিয়ার ক্যাচ ফেলতেন। খালেদের করা ইনিংসের ১২১তম ওভারের শেষ বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেন জয়াসুরিয়া। সেই সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। তার হাতে বল লেগে দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো শাহাদাত হোসেনের দিকে যায়। তিনি বল হাতে রাখতে পারেননি। এরপর শাহাদাতের হাত ছুঁয়ে বল যায় তৃতীয় স্লিপে দাঁড়ানো জাকির হাসানের কাছে। সামনে ঝাপিয়ে ক্যাচ নিতে পারেননি জাকিরও। ৬ রানে জীবন পান জয়সুরিয়া।
এরপর ব্যক্তিগত ২৪ রানে জয়সুরিয়ার ক্যাচ ফেলেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। দু বার জীবন পেয়ে ৩টি চারে ২৮ রানে সাকিবের বলে আউট হন জয়সুরিয়া।
দলীয় ৪৭৬ রানে জয়সুরিয়া থামার পর শ্রীলঙ্কার রানের চাকা একাই ঘুড়িয়েছেন কামিন্দু। স্পিনার তাইজুলের বলে ব্যক্তিগত ৬০ রানে কামিন্দুর ক্যাচ ফেলেন হাসান। জীবন পেয়ে শ্রীলঙ্কার রান ৫শ পার করেন কামিন্দু। সেই সাথে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগান তিনি। কিন্তু শেষ ব্যাটার আসিথা ফার্নান্দো রান আউট হলে ৯২ রানে অপরাজিত থেকে যান কামিন্দু। তার ১৬৭ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ২টি ছক্কা ছিল।
ছয় ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫৩১ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। এই নিয়ে ১১তমবার টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫শ বা ততোধিক রান করলো লংকানরা। সেই সাথে কোনো ব্যাটারের সেঞ্চুরি ছাড়া সর্বোচ্চ দলীয় রানের বিশ্বরেকর্ড গড়লো শ্রীলঙ্কা। এত দিন এ রেকর্ডের মালিক ছিল ভারত। ১৯৭৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কানপুরে ছয় ব্যাটারের হাফ-সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে ৫২৪ রানের ইনিংস ঘোষণা করেছিল ভারত।
বাংলাদেশের সাকিব ৩টি, হাসান মাহমুদ ২টি ও খালেদ ও মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।
দিনের শেষ ভাগে ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশকে ৪৭ রানের সূচনা এনে দেন মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। ১৩তম ওভারে মাহমুদুলকে বোল্ড করে শ্রীলঙ্কাকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার লাহিরু কুমারা। ২টি চারে ২১ রান করেন মাহমুদুল।
এরপর নাইটওয়াচম্যান তাইজুলকে নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেন জাকির। ৫টি চারে জাকির ২৮ ও তাইজুল শূন্য হাতে অপরাজিত আছেন।
সিলেট টেস্টের পর এবার চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টেও বাংলাদেশি বোলারদের ওপর রীতিমতো ছড়ি ঘুরিয়ে প্রথম দিনের ব্যাটিং শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা।
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রথম দিন শেষে চার উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান তুলেছে সফরকারীরা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শনিবার আগে ফিল্ডিং করছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। লঙ্কানদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন দিমুথ করুণারত্নে ও নিশান মাদুশকা।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ১৪ ওভারে দলীয় অর্ধশতক রান তোলে এ জুটি। এরপরই বাংলাদেশের বিপক্ষে অর্ধশতক পূর্ণ করেন মাদুশকা। ১০৫ বলে ৫৭ রান করা মাদুশকা রান আউট হন মিরাজের বলে। তার বিদায়ে ৯৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
এরপর ৫৫.১ ওভারে হাসান মাহমুদের বলে আউট হয়ে ১২৯ বলে ৮৬ রান করে মাঠ ছাড়েন দিমুথ করুণারত্নে। হাসান মাহমুদের বলে তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ২৩ রানে ফেরেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। পরে সাকিব আল হাসানের বলে ব্যক্তিগত ৯৩ রানে কুশল মেন্ডিস আউট হলে ৮১ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে ২৮৯ রান তোলে শ্রীলঙ্কা।
সেখান থেকে বাংলাদেশি বোলারদের সামলেছেন দিনেশ চান্দিমাল ও অধিনায়ক ধনঞ্জয় ডি সিলভা। শেষ পর্যন্ত এ জুটি আর ভাঙতে পারেননি সাকিব-তাইজুলরা। ফলে স্কোরবোর্ডে ৩১৪ রান তুলে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেন এই দুই ব্যাটার। দিনেশ চান্দিমাল ৫৮ বলে ৩৪ ও ধনঞ্জয় ২৭ বলে ১৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
এদিন হাসান মাহমুদের ঝুলিতে গিয়েছে দুই উইকেট। সাকিব আল হাসান নিয়েছেন একটি ও অন্য উইকেটটি পড়েছে রান আউটের কল্যাণে।
এর আগে সিলেটে শুক্রবার শুরু হওয়া টেস্টে এক দিন বাকি থাকতেই শোচনীয় পরাজয় বরণ করতে হয় বাংলাদেশকে। শ্রীলঙ্কার দেয়া ৫১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিন পার না হতেই ৩২৮ রানে হারে স্বাগতিকরা।
মন্তব্য