ইনিংস শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ২৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ যখন পালছেঁড়া নৌকার মতো দিশেহারা, সে সময় ব্যাট হাতে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের পরিচয় দিয়ে স্বাগতিকদের খাদের কিনারা থেকে ম্যাচে ফেরান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। রেকর্ড ২৫৩ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি গড়ে তারা দলকে কেবল বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেননি, বাঁচিয়েছেন লজ্জার হাত থেকেও।
মুশফিক ও লিটনের অনবদ্য দুই সেঞ্চুরিতে দিন শেষে সেই পাঁচ উইকেট হারিয়েই ২৭৭ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
দলের বিপর্যয়ে শক্ত হাতে হাল ধরে লিটন বাগিয়ে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক। অপরদিকে মুশফিক পান টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম শতকের দেখা। চট্টগ্রাম টেস্টের পর ঢাকা টেস্টেও সেঞ্চুরির দেখা পান অনিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক কাম ব্যাটার।
দায়িত্বশীল ব্যাটিং ও দুর্দান্ত ইনিংস খেলার সুবাদে ক্রিকেট পাড়ায় চলছে মুশফিক ও লিটনের বন্দনা।
ক্রিকেটভক্ত থেকে শুরু করে সেই স্তুতি চলছে সংবাদমাধ্যমেও। পিছিয়ে নেই জাতীয় দলের হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোও। দিন শেষে তার মুখে তাই শোনা গেল রেকর্ড গড়া এই জুটির প্রশংসা।
মুশফিক-লিটন জুটিকে নিজের দেখা সেরা জুটি বলে মন্তব্য করেন প্রোটিয়া এই কোচ।
ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমার কোচিং ক্যারিয়ারে টেস্টে দেখা এটাই সবচেয়ে সেরা জুটি। ২০ রানেই আমাদের পাঁচ উইকেট চলে গিয়েছিল। অনেক চাপের মধ্যে ছিলাম। দুই ব্যাটারের এটা অসাধারণ চেষ্টা ছিল। অবশ্যই আমরা সকালে ভালো শুরু করতে পারিনি। কিছু ভুল শট ছিল। টেস্ট ক্রিকেট কঠিন। দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে ছেলেরা অসাধারণ স্কিল দেখিয়েছে।’
দিনের প্রথম সেশনেই পাঁচ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দিনের বাকি সময়টা পার করেছে কোনো উইকেট না খুইয়ে। দিন শেষে ১১৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তাকে ১৩৫ রানে সঙ্গ দিচ্ছেন লিটন দাস।
বৈরি আবহাওয়ার কারণে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু হতে দেরি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে প্রবল বর্ষণে গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একটি অস্থায়ী গ্যালারি ভেঙে পড়ে।
অস্ট্রেলিয়া দল সকালে মাঠে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় প্রবল ঝড় ও বর্ষণ। প্রবল বাতাসের কারণে পিচ ঢাকতে মাঠের কর্মীদের বেগ পেতে হয়। স্ট্যান্ড ভেঙে গেলেও দর্শক শূন্য থাকায় ঘটেনি কোনো হতাহতের ঘটনা।
অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কা সিরিজের ধারাভাষ্যকার অ্যাডাম কলিন্স বৃহস্পতিবার এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘এখানের আবাহাওয়া এতটাই তীব্র যে একটি স্ট্যান্ড মাত্রই ভেঙে পড়েছে।’
স্থানীয় সময় দুপুর ২.৩০ মিনিটে খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পরে তা বাতিল করা হয়। ম্যাচ রেফারি বিকাল ৪ টায় মাঠ পরিদর্শনে যাবেন।
এর আগে, প্রথম দিন টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২১২ রানে অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ৩ উইকেটে ৯৮ রান নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছিল ৩ উইকেটে ৯৮ রান তুলে।
দিনশেষে অজিদের পক্ষে খোয়াজা ৪৭ ও ট্র্যাভিস হেড ৬ রানে অপরাজিত আছেন। প্রথম দিনের খেলা শেষে ১১৪ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত সপ্তাহে লেস্টারশায়ারের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ধারণা করা হচ্ছিল শুক্রবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টর আগে সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি, তবে এখনই আশা ছাড়ছে না টিম ম্যানেজমেন্ট।
শুক্রবার ম্যাচ শুরুর আগে আবারও টেস্ট করা হবে রোহিতের। তার অনুপস্থিতিতে এজবাস্টনে দলের নেতৃত্ব দেবেন জাসপ্রিত বুমরাহ।
ভারতে গত ৩৫ বছরে টেস্টে নেতৃত্ব দেননি কোনো পেসার। সে হিসেবে বুমরাহ গড়তে যাচ্ছেন রেকর্ড।
পেসার হিসেবে ভারতকে সবশেষ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কপিল দেব। ১৯৮৭ সালে তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন।
গত সপ্তাহে লেস্টারশায়ারের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন রোহিত। বর্তমানে তিনি আছেন আইসোলেশনে।
ভারতের খেলাধুলাবিষয়ক সাইট ক্রিকউইকে বুধবার দলের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় বলেন, ‘আমাদের মেডিক্যাল টিম রোহিতকে পর্যবেক্ষণ করছে। তাকে এখনও বাদ দেয়া হয়নি। তাই আমরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।
‘আমাদের হাতে এখনও অনেকটা সময় আছে। আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে তার একটি পরীক্ষা হবে এবং আগামীকাল সকালেও। তারপরে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে প্রেস কনফারেন্সে বুমরাহ বলেছিলেন, ভারতের নেতৃত্ব কাঁধে নেয়ার সুযোগ হলে তিনি সংকোচ বোধ করবেন না।
তিনি বলেছিলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে সুযোগ দেয়া হলে আমি এটি সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করব। আমি কখনোই দূরে সরে যাব না, তবে নিজে থেকে অধিনায়কত্ব চাইছি না।’
অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও বুমরাহ বলেছিলেন, তিনি নেতৃত্বের দায়িত্ব পালনে আত্মবিশ্বাসী। কারণ তিনি ভারত দল ও আইপিএলের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে স্ট্রাইক বোলার ছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে যে ভূমিকায় দেয়া হোক না কেন, সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে খেলি। আপনি যখন দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য হবেন, তখন এমনিতেই অধিনায়কের মতো দায়িত্ব চলে আসবে।
'অধিনায়কত্ব কেবল একটি পদ যা আপনার নামের সঙ্গে থাকে। অধিনায়কত্ব পান বা না পান, জ্যেষ্ঠ খেলোয়াড়দের এমনিতেই দলের প্রতি অনেক দায়িত্ব থাকে।’
আরও পড়ুন:টি–টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজের পর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ব্যাট করতে নেমে অজিদের বোলিং তোপে ২১২ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দিনশেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৯৮ রান।
শ্রীলঙ্কার গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বুধবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিন্ধান্ত নেন স্বাগতিক অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। লঙ্কান দুই ওপেনারের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৩৮ রান।
এরপর কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দিনেশ চান্ডিমালের ব্যর্থতায় ৯৭ রানে লঙ্কানরা হারায় ৫ উইকেট। এরপর নিরোশান ডিকভেলার ৫৮ ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ৩৯ রানের সাহায্যে ২১২ রান তুলতে সমর্থ হয় শ্রীলঙ্কা।
স্বাগতিকদের বিপক্ষে অজি স্পিনাররা দাপট দেখিয়েছেন। নেইথান লায়ন একাই শিকার করেন ৫ উইকেট। মিচেল সোয়েপসন তুলে নেন ৩ উইকেট। এ ছাড়া মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স একটি করে উইকেট নেন।
ব্যাট করতে নেমে ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন উসমান খোয়াজা ও ডেভিড ওয়ার্নার। রমেশ মেন্ডিসের বোলিংয়ে ওয়ার্নার ফেরেন ২৪ বলে ২৫ রান করে। ১৯ বলে ১৩ রান করে একই বোলারের শিকারে পরিণত হন মার্নাস লাবুশেইন।
এরপর নিরোশান ডিকভেলার থ্রোয়ে রানআউট হয়ে স্টিভ স্মিথ ফিরলে ধাক্কা খায় সফরকারীরা।
দিনশেষে খোয়াজা ৪৭ ও ট্র্যাভিস হেড ৬ রানে অপরাজিত আছেন। প্রথম দিনের খেলা শেষে ১১৪ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন:ইনজুরির কারনে গত এপ্রিল থেকে দলের বাইরে বাংলাদেশের পেইসার তাসকিন আহমেদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে দলে ফিরেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে দলের সঙ্গে অনুশীলন করতে পেরে খুশি তাসকিন।
ক্রিকেট থেকে দূরে থাকলেও, তাসকিনের বোলিংয়ে আগ্রাসী মনোভাবটাই দেখতে চান বাংলাদেশের পেইস বোলিং কোচ অ্যালান ডনাল্ড। তাসকিনকে গতি ও আগ্রাসন অব্যাহত রাখার পরামর্শ কোচের। দলের সঙ্গে অনুশীলন শেষে বুধবার ভোরে তাসকিন এমনটা জানান।
তিনি বলেন, ‘ইনজুরি থেকে ফেরার পর আমার দায়িত্ব সম্পর্কে তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে এটাই বুঝিয়েছেন যে, আমি যে ধরনের বোলার আমার দায়িত্ব হচ্ছে গতি ও আগ্রাসন।’
তিনি যোগ করেন, “উনি আমাকে বলেছেন যে, ‘কয়েক ম্যাচে তুমি অনেক রান দেবে আবার এমন দিন আসবে যখন তুমি একাই উইকেট নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দিবে। কিন্তু তোমার দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরাবে না। তোমার যেটা রোল, সেটাতেই তুমি ফোকাস থাকো। দিন যত যাবে, ছন্দ আরও ভাল হবে।”’
দীর্ঘদিন পর দলের সাথে অনুশীলন করে সবকিছুই ভালো লাগছে বলেন তাসকিন। তার প্রত্যাশা টেস্টের ব্যর্থতা কাটিয়ে সীমিত ওভারের সিরিজে বাংলাদেশ কামব্যাক করবে।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে টেস্ট সিরিজটা আমাদের ভালো যায়নি। ভুলগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে, তবে শুধু এটা নিয়ে বসে থাকা যাবে না। এই মুহূর্তে আমরা টি-টোয়েন্টি সিরিজটার দিকেই তাকিয়ে আছি। চেষ্টা করব ভালো খেলে দেশকে জয় উপহার দিতে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কোনো টেস্ট না খেললেও, ২টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তাসকিন। ওয়ানডেতে ১ উইকেট থাকলেও, টি-টোয়েন্টিতে শূন্য।
আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের পেইসার খালেদ আহমেদ, উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান ও ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর। তবে অলরাউন্ডারদের তালিকায় অবনতি হয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের।
খালেদের ৯ ধাপ, নুরুলের ১৪ ও শান্তর ১১ ধাপ উন্নতি হয়েছে। ব্যাটিং তালিকায় ৬ ধাপ ও অলরাউন্ডারদের তালিকায় এক ধাপ পিছিয়েছেন সাকিব।
সদ্য শেষ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের শেষটিতে বল হাতে ৫ উইকেট নেন খালেদ। র্যাঙ্কিংয়ে নয় ধাপ এগিয়ে ৮৮তমস্থানে জায়গা করে নিয়েছেন খালেদ।
টেস্ট বোলারদের তালিকায় বাংলাদেশের পক্ষে সেরা অবস্থানে আছেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ২৭ তম অবস্থানে আছেন এ স্পিনার। আর শীর্ষে আছেন অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স।
সেইন্ট লুসিয়া টেস্টের ব্যাট হাতে দুই ইনিংসে ২৬ ও ৪২ রান করেন শান্ত। ১১ ধাপ এগিয়ে ৮৮তম অবস্থানে আছেন তিনি। টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭ রানে ফিরলেও, দ্বিতীয় ইনিংসে অনবদ্য ৬০ রান করেন নুরুল। র্যাংকিংয়ে ১৪ ধাপ এগিয়ে ৬৪তম অবস্থানে আছেন তিনি।
ব্যাটিংয়ে অবনতি হয়েছে অধিনায়ক সাকিবের। ৬ ধাপ পিছিয়েছে ৩৯তম স্থানে নেমে গেছেন তিনি।
বাংলাদেশের পক্ষে সেরা অবস্থানে আছেন লিটন দাস। তার অবস্থান ১৩। ব্যাটারদের শীর্ষে ইংল্যান্ডের জো রুট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্ট শেষে অলরাউন্ডারদের তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে উঠেছিলেন সাকিব। কিন্তু সেইন্ট লুসিয়া টেস্টে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। যে কারণে তৃতীয়স্থানে নেমে গেছেন তিনি। শীর্ষে আছেন রভিন্দ্র জাদেজা।
সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে কোনো টেস্টে জয় নেই বাংলাদেশের। শেষ ৩ সিরিজের ৬টি টেস্ট ম্যাচের সবগুলো হারতে হয়েছে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। দলের এমন পারফরম্যান্সে হতাশ টাইগার সমর্থকরা।
পরপর তিন সিরিজে ক্লিনসুইপের শিকার লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে কম সংখ্যক ম্যাচ খেলে শততম টেস্ট হারের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ।
দেশের এমন পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশ জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স নিজের মতামত ব্যাক্ত করে বুধবার নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন।
বাংলাদেশের ব্যাটারদের শুরুটা দারুণ করলেও শেষ পর্যন্ত ধরে খেলতে পারছেন না বলে মনে করছেন ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স।
তিনি লেখেন, ‘সোহান দুইবার ষাটের বেশি রান করেছেন। লিটন, তামিম এবং শান্ত বড় স্কোরের ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত তারা সফল হয়নি।’
সিডন্সের মতে টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির জন্য হতে হবে আরও কঠোর। তিনি যোগ করে বলেন, ‘ম্যাচের শেষের দিকে আমাদের বোলাররা দারুণ খেলেছে। খালেদ প্রথমবার পাঁচ উইকেট নিয়েছে। টেস্ট ক্রিকেট খুবই কঠিন। যে কারণে সফল হতে হলে আরও শক্ত হতে হবে আমাদের।’
টেস্ট ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের খারাপ খেলছে বলেও মনে করেন সিডন্স। তিনি বলেন, ‘দুটি টেস্ট ম্যাচেই আমরা খুব খারাপ খেলেছি, তা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
‘প্রচুর মন্তব্য আসছে। বাস্তবতা হলো টেস্ট ক্রিকেটের উত্তাপ ও চাপের মধ্যে খেলোয়াড়দের শিখতে ও শেখাতে হবে। এটা লুকানোর কিছু নেই। উন্নতির জন্য আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’
আরও পড়ুন:আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল ভারতকে কঠিন পরীক্ষা দিয়ে জিততে হয়েছে ১৪তম দল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
টি-টোয়েন্টিতে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ ২২৫ রান তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ড ২২১ রান সংগ্রহ করে। এতে সিরিজের শেষ ম্যাচে ৪ রানে জয় পেয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ার দল।
দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ৭ উইকেটের জয় পায় সফরকারী ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচ জয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে আইরিশদের ক্লিনসুইপ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি।
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে দ্য ভিলেজ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া।
ব্যাট করতে নেমে দিপক হুদার ৫৭ বলের ১০৪ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ভর করেই ভারত পাহাড়সম ২২৫ রান টার্গেট দেয় আইরিশদের। প্রথম ম্যাচে ৪৭ রানে অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জেতানোর পর এবার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন হুদা।
তার সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৭৬ রান যোগ করেন সানজু স্যামসন। তার ব্যাট থেকে আসে ৪২ বলে ৭৭ রানের মারকুটে ইনিংস।
স্যামসন ও হুদা আউট হলে সুরিয়াকুমার ইয়াদভ ৫ বলে ১৫ এবং অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া ৯ বলে ১৩ রান করেন।
দিনেশ কার্তিক, হার্শাল প্যাটেল ও অক্ষর প্যাটেল আউট হন শূন্য রানে।
আয়ারল্যান্ডের পক্ষে মার্ক অ্যাডায়ার শিকার করেন তিন উইকেট। জশ লিটল ও ক্রেইগ ইয়ং নেন দুটি করে উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে আইরিশরাও কম যায়নি। ভারতের মতো দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ২২৫ রান তাড়া করে ২২১ করে হার মানাটা জয়ের সমান।
পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পল স্টার্লিং ও অধিনায়ক অ্যান্ডি ব্যালবার্নি ৫ ওভার ৪ বলে ৭২ রান তুলে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন স্বাগতিকদের। ১৮ বল খেলে ৪০ রান করে আউট হন স্টার্লিং।
গ্যারেথ ডেলানি শূন্য রানে আউট হলে ব্যালবার্নি ও হ্যারি টেকটর দলীয় সংগ্রহকে টেনে নিতে থাকেন, তবে দলীয় ১১৭ রানে অধিনায়ক ব্যালবার্নি ফিরেন ৩৭ বলে ৬০ রান করে।
নতুন ব্যাটার লরকান টুকার ৫ রান করে আউট হলে বিপর্যয়ে পড়ে আয়ারল্যান্ড।
পরে টেকটর ও জর্জ ডকরেল জয়ের বন্দরের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন দলকে। ১৭ ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের রান দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৮৯।
জেতার জন্য শেষ ১৮ বলে প্রয়োজন ৩৭ রান, টি-টোয়েন্টিতে যা মোটেও অসম্ভব নয়, তবে ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই টেকটর আউট হলে জয়ের আসা ছেড়ে দিতে হয় আইরিশদের। এ যাত্রায় তার ব্যাট থেকে আসে ৩৯ রান।
তারপরও ডকরেল ও মার্ক আডায়ার চেষ্টা করেন দলকে জয় উপহার দিতে। ম্যাচ নিয়ে যান শেষ বল পর্যন্ত। শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে পারলেই জিতে যেত তারা, কিন্তু উমরান মালিকের করা শেষ বলে ১ রানের বেশি নিতে পারেনি আয়ারল্যান্ড।
এতে করে ২০ ওভার শেষে ২২১ রানেই থামতে হয় আইরিশদের। ডকরেল ও আডায়ার দুজনই থাকেন অপরাজিত।
ভারতের পক্ষে সবাই খরুচে বোলিং করেছে, তবে মিতব্যয়ী ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেল। দুই ওভারে দিয়েছেন ১২ রান।
উমরান মালিক চার ওভার বোলিংয়ে ৪২ রান খরচায় নিয়েছেন এক উইকেট।
সিরিজ ও ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন ভারতের ব্যাটার দিপক হুদা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য