মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) খেলতে এসেছেন মোহাম্মদ হাফিজ। অভিজ্ঞ এ পাকিস্তানি অলরাউন্ডার চুক্তি সম্পন্ন করেছেন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এক ক্লাবের সঙ্গে।
মোহামেডানে খেলতে এসে উপভোগের মন্ত্র হাফজের। মঙ্গলবার রাতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনটাই জানান পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক।
হাফিজ বলেন, ‘নিজের ভালো লাগা ও আবেগ থেকে খেলতে এসেছিল। বিশ্বজুড়ে তরুণদের অনুপ্রাণিত করতে চাই। এখন ক্রিকেটটা উপভোগ করতে চাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছি। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি ক্রিকেটকে দেয়ার মতো অনেক কিছুই আছে আমার।’
সাউথ আফ্রিকা সিরিজের কারণে মোহামেডান স্কোয়াডে পাচ্ছে না সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদি মিরাজের মতো দেশসেরা তারকাদের।
হাফিজকে দলে টানলেও, গত দুই বছর শুধু টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তিনি। তবে ডিপিএলের ওয়ানডে ফরম্যাটে তেমন একটা সমস্যা হবে না বলে মনে করেন ৪১ বছর বয়সী হাফিজ।
তিনি বলেন, ‘গত দুই বছর ওডিআই না খেললেও আমার বিশ্বাস আমি এ ফরম্যাটে ভালো খেলব। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে ফিটনেস দরকার সেটা আমি সব সময় ধরে রাখার চেষ্টা করি। মোহামেডান খুবই আন্তরিকভাবে সবকিছু সামলেছে। তারা সবসময়ই সাহায্য করেছে।’
এবারের ডিপিএলে কোনো বায়ো বাবল রাখা হয়নি। এ বিষয়টিও হাফিজকে উৎসাহ যুগিয়েছে। কোভিড মহামারির সময়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকার ভয়াবহতা এড়াতে চেয়েছেন তিনি।
হাফিজ যোগ করেন, ‘আমি চাই এখানে নিজের মতো ঘোরাঘুরি করতে চেয়েছি। যতদিন থাকব যেন সব দেখতে পারি। ক্রিকেটটা উপভোগ করতে পারি। বায়ো বাবল মানসিকভাবে আপনাকে দুর্বল করে ফেলে। এটা না থাকায় এবারের লিগে সবাই বাড়তি উপভোগের সুযোগ পাবে।’
এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। এবার ঋতুপর্ণাদের শিকার ফিফা র্যাংকিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মিয়ানমার।
ইয়াঙ্গুনের থুউন্না স্টেডিয়ামে আজ ম্যাচের প্রথমার্ধে ঋতুপর্ণা চাকমার গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৭১ মিনিটে অসাধারণ এক গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সেই ঋতুপর্ণাই। মিয়ানমার যদিও শেষ দিকে ১ গোল শোধ করেছে, তাতে বাংলাদেশের জয় আটকায়নি। ম্যাচটা ২-১ গোলে জিতে এশিয়ান কাপের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল মেয়েরা। ৫ জুলাই গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে না হারলেই প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে ওঠে যাবে পিটার বাটলারের দল।
মিয়ানমারের ঘরের মাঠে ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকে স্বাগতিক দর্শকদের গর্জনে প্রকম্পিত থাকে থুউন্নার গ্যালারি। কিন্তু সেই গর্জনও থামাতে পারেনি বাংলাদেশকে। ১৮ মিনিটে পুরো স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দেন ঋতুপর্ণা, বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। বিরতিতে যাওয়ার আগপর্যন্ত স্কোরলাইন সমান করার অনেক চেষ্টা করেও পারেনি মিয়ানমার, উল্টো বিরতির পর ঋতুপর্ণার চোখধাঁধানো শটে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় স্বাগতিকরা।
প্রথমার্ধে একটু এলমেল ছিল বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। ম্যাচের ১১ ও ১২ মিনিটে দুবার বাংলাদেশি ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে আক্রমণ শাণায় মিয়ানমার। দুটি আক্রমণই পোস্ট ছেড়ে রুখে দেন গোলকিপার রুপনা চাকমা। এর মধ্যে ১৭ মিনিটে ড্রিবল করে ডি-বক্সে ঢোকার পথে ফাউলের শিকার হন শামসুন্নাহার জুনিয়র। তাতেই ফ্রি-কিক পায় বাংলাদেশ। ১৮ মিনিটে সেই ফ্রি-কিক থেকে বাঁপায়ের নিখুঁত শটে মিয়ানমারের জালে বল জড়ান ঋতুপর্ণা। প্রথম দফায় ঋতুপর্ণার শট প্রতিপক্ষের রক্ষণে লেগে ফিরে আসে, ফিরতি শটে পোস্টের কোনাকুনি দিয়ে বল জালে পাঠান এই ফরোয়ার্ড।
১ গোলে এগিয়ে থাকার পর আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। ২৩ মিনিটে পেয়ে যায় গোলের আরেকটি সুযোগ। কিন্তু বাঁ-প্রান্ত ধরে আক্রমণে ওঠার পর ঋতুপর্ণার ক্রসে শট নিলেও বল পোস্টে রাখতে পারেননি শামসুন্নাহার জুনিয়র। মিয়ানমারও থেমে ছিল না। সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে আক্রমণ করে। ৩৫ মিনিটে অফসাইডের ফাঁদে না পড়লে স্কোর সমান হয়ে যেত। এর এক মিনিট পর বাংলাদেশের ছেঁড়া রক্ষণের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় মিয়ানমার। আর ৪২ মিনিটে ফ্রি-কিক পাওয়া মিয়ানমার তিন-তিনবার বাংলাদেশের গোলমুখে শট নিয়েও লক্ষ্যে বল পৌঁছাতে পারেনি।
বিরতির পর আরও তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ করে মিয়ানমার। ৫৭ ও ৫৮ মিনিটে স্বাগতিক দলের দুই আক্রমণ রুখে দেন বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। ৬০ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে আশা জাগালেও গোলদাতা ঋতুপর্ণার শট খুঁজে পায়নি কাঙ্ক্ষিত নিশানা। এরপর ৬৫ মিনিটে কর্ণার পায় বাংলাদেশ, তবে সেই কর্ণার থেকে আশানুরূপ সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেনি অতিথিরা। ৭১ মিনিটে আরও একবার মিয়ানমার দেখে ঋতুপর্ণার ঝলক। এবার প্রতিপক্ষ এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে পেনাল্টি বক্সের বাঁ-প্রান্ত থেকে বাঁপায়ের শটে দারুণ এক গোল পেয়ে যান ঋতুপর্ণা। বাঁক খেয়ে জালে ঢুকে যাওয়া সেই শট চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না প্রতিপক্ষ গোলকিপার মিয়ো মায়ার। দেরিতে হলেও ১ গোল শোধ করে মিয়ানমার। ৮৯ মিনিটে বাংলাদেশের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গোলটা করেন উইন উইন।
আগামী ১৩ আগস্ট বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল ভারতীয় ক্রিকেট দলের। সূচি অনুযায়ী খেলার কথা ছিল তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
প্রায় দুই মাস আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল এই দ্বিপক্ষীয় সিরিজের দিনক্ষণ। কিন্তু সব পরিকল্পনা আপাতত অনিশ্চয়তার মুখে। কারণ, এখনো ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সফরের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি বিসিসিআই।
দিল্লির একাধিক সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রাজনৈতিক কারণেই বাংলাদেশ সফর নিয়ে ইতস্তত করছে ভারত সরকার। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের দাবি, বর্তমান কূটনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশ সফর কোনো ইতিবাচক বার্তা দেবে না, এমন ভাবনা থেকেই সফরে সম্মতি দিচ্ছে না দিল্লি।
এই অবস্থায় নির্ধারিত সময়ে, অর্থাৎ ১৭ আগস্ট থেকে মিরপুরে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, সিরিজটি আয়োজন হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। সূচি অনুযায়ী সিরিজটি শেষ হওয়ার কথা ৩১ আগস্ট, আর ১ সেপ্টেম্বর ভারত দলের বাংলাদেশ ত্যাগের কথা। কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতে, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা, বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা ঘিরে বাংলাদেশের এক সাবেক সামরিক কর্মকর্তার বিতর্কিত মন্তব্য, সফর অনিশ্চয়তার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ওই মন্তব্যের বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্রুত সাড়া দিয়েছিল। তারা স্পষ্ট জানায়, সাবেক কর্মকর্তার বক্তব্যের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবু ভারতীয় প্রশাসনের অনীহা কাটেনি।
ভারতের আরেকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সফর নিয়ে বিসিসিআই শুরু থেকেই অনাগ্রহী ছিল। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথাও জানিয়েছে তারা। আর সেই উদ্বেগের কারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সবুজ সংকেত’ ছাড়া বিসিসিআই এককভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না।
এই প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সিরিজটি পূর্ব নির্ধারিত সময়েই আয়োজন করতে চাইছি। তবে ভারত যদি আগস্টে সফরে না আসে, তাহলে ভবিষ্যতের ফাঁকা সময়ে সিরিজটি আয়োজনের চেষ্টা করা হবে। ’ তিনি আরও জানান, ‘সফর নিয়ে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং শুধু বাংলাদেশ নয়, আরও কয়েকটি সফরের ক্ষেত্রেও ভারত সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ’
তবে বাস্তবতা বলছে, সফর পিছিয়ে গেলে ২০২৫ সালের মধ্যে আর সিরিজ আয়োজনের সুযোগ পাওয়া কঠিন। কারণ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি। এরপর অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশের রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ড সিরিজ। ডিসেম্বরে বিপিএল, আর ফেব্রুয়ারি-মার্চে অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
সব মিলিয়ে ভারত সফর না করলে, ঘরের মাঠে ভারতকে পাওয়া বাংলাদেশের জন্য এ বছর আর সম্ভব হচ্ছে না বললেই চলে। এখন দেখার বিষয়, কূটনৈতিক টানাপড়েনের এই আবহে বিসিসিআই আদৌ সরকারের অনুমোদন আদায় করে সফরের দিনক্ষণ ঠিক রাখতে পারে কি না।
বাংলাদেশের ৩২তম ওয়ানডে ক্রিকেটার হিসেবে ৫০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজে আজ কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে প্রথম ম্যাচে ক্যারিয়ারের ৫০তম ম্যাচ খেলতে নামেন শান্ত।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে আবু ধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ওয়ানডে অভিষেক হয় শান্তর। এরপর ৪৯ ম্যাচের ৪৮ ইনিংসে ৩ সেঞ্চুরি ও ১০ হাফ-সেঞ্চুরিতে ৩৪ দশমিক ৭৭ গড়ে ১,৫৬৫ রান করেছেন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে আয়ারল্যান্ড-আফগানিস্তান ও শ্রীলংকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন এই বাঁ-হাতি ব্যাটার।
২০২৪ সালের মার্চে চট্টগ্রামে শ্রীলংকার বিপক্ষে অপরাজিত ১২২ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। শান্তর ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসের উপর ভর করে ৬ উইকেটে ম্যাচটি জিতেছিল বাংলাদেশ।
শান্তর আগে বাংলাদেশের হয়ে ৩১জন ক্রিকেটার ৫০ বা তার বেশি ওয়ানডে খেলেছেন। দেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি ২৭৪ ম্যাচ খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। গত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ওয়ানডে থেকে অবসর নেন মুশি।
২০২৫ সালের টপ অ্যান্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজে এবারও অংশ নেবে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়া থেকে নেপাল জাতীয় দল, পাকিস্তান শাহীন্স টুর্নামেন্টটিতে খেলবে। এছাড়া বিগ ব্যাশের কয়েকটি দলসহ মোট ১১টি দল খেলবে এই টুর্নামেন্টে। বাকি দলগুলোর নাম পরে ঘোষণা করা হবে।
অস্ট্রেলিয়ার নর্দার্ন টেরিটরির ডারউইনে অনুষ্ঠিতব্য এই জনপ্রিয় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে তৃতীয়বারের মতো খেলতে যাচ্ছে পাকিস্তান শাহীন্স (এ দল)। অন্যদিকে বাংলাদেশ ‘এ’ দল ২০২৪ সালের ফাইনালে অ্যাডিলেইড স্ট্রাইকার্স অ্যাকাডেমির কাছে হেরে যায়। আগামী ১৪ আগস্ট সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচেই মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ‘এ’ দল।
নর্দান টেরিটরি ক্রিকেটের সিইও গ্যাভিন ডোভি বলেন, ‘পিসিবি ও বিসিবিকে আবার ডারউইনে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা গর্বিত। এই টুর্নামেন্ট শুধুই খেলাধুলার নয়, বরং নর্দান টেরিটরিকে ভ্রমণ, বসবাস, কাজ কিংবা পড়াশোনার জন্য জনপ্রিয় করে তোলার একটি উদ্যোগও বটে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ- বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ- এবং নেপালের অংশগ্রহণে এই আসর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’
বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ডারউইনে ফিরে আসতে পারায় আমরা আনন্দিত। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে খেলা উদীয়মান খেলোয়াড়দের জন্য দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। ১৪ আগস্টের উদ্বোধনী ম্যাচটিকে আমরা বিশেষভাবে দেখছি, যেখানে আমাদের তরুণ প্রতিভার ঝলক দেখানোর সুযোগ থাকবে।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আসন্ন আসর চলতি বছরের ডিসেম্বরে আয়োজনের কথা ছিল। নির্ধারিত সময়েই তা অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (৩০ জুন) বিসিবির বোর্ড সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু।
মূলত এবারের বিপিএল শুরু হবে আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে। পাঁচ বছরের জন্য দেওয়া হবে দলের মালিকানা। নতুন করে বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলে থাকবেন বাইরের সদস্যরাও।
বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি যুক্ত করার প্রসঙ্গে ইফতেখার মিঠু বলেন, ‘(বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি) সবার জন্য উন্মুক্ত। ক্রাইটেরিয়া আমরা ঠিক করিনি, আমাদের যে অভিজ্ঞতা আছে এবং যারা (এজেন্সি) এসব আগে সফলভাবে করেছে, তাদের পরামর্শ সহকারে একটা ক্রাইটেরিয়া ঠিক করা হবে। তারপর বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। ওই ক্রাইটেরিয়া পূরণ করলে, আমাদের সরকারের নীতিমালা সব কিছু ঠিক থাকলে তারা (বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি) দল নিতে পারবে।’
বিপিএলের ৬ মাস বাকি থাকলেও এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি কয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি এই টুর্নামেন্টে অংশ নেবে। এমনকি কোন ফ্র্যাঞ্চাইজি থাকছে তাও নিশ্চিত নয়। তবে বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল নিশ্চিত করেছেন নতুন ও পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি যারাই আগামী আসরে অংশ নেবে তাদের সঙ্গে ৫ বছরের চুক্তি করবে বিসিবি।
বিপিএলের বিভিন্ন বিভাগে বিসিবির বাইরে থেকেও বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মিঠু, ‘বিপিএল নিয়ে সবচেয়ে বড় যে সিদ্ধান্ত, আগে কখনো হয়নি। বিপিএল নিয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য (বোর্ডের) বাইরের লোককে দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমরা যেন একদম ক্লিন ইমেজ নিয়ে শেষ করতে পারি, স্বচ্ছতা যেন থাকে। তাই বিপিএল কমিটিতে নানা ডিসিপ্লিনের বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাইরের লোকও নেওয়া হবে।’
টেস্ট সিরিজের হতাশা পেছনে ফেলে শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে নতুন করে শুরু করতে চায় সফরকারী বাংলাদেশ। আগামীকাল কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায়।
শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরু করবেন মেহেদি হাসান মিরাজ। লংকানদের বিপক্ষে সিরিজের ঠিক আগে এক বছরের জন্য ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল হোসেন শান্তর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মিরাজ।
ওয়ানডের আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্ট ড্র হলেও দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ইনিংস ও ৭৮ রানে হারে টাইগাররা।
প্রথম টেস্টে ব্যাট-বল হাতে দারুণ পারফরমেন্সে আধিপত্য বিস্তার করে ম্যাচ ড্র করে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচ হারে টাইগাররা। সফরের শুরুতে হওয়া টেস্ট সিরিজে হারের লজ্জা পায় বাংলাদেশ। তাই টেস্ট সিরিজের ব্যর্থতা ওয়ানডে সিরিজে প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।
তবে ওয়ানডে সিরিজে ভাল করার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ। তিনি জানান, ওয়ানডে সিরিজে লড়াই হবে।
এখন পর্যন্ত শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ১২টি জিতেছে বাংলাদেশ। ৪৩টিতে হার ও দু’টি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। তবে, দু’দলের শেষ পাঁচ দেখায় বাংলাদেশ তিনটিতে জিতেছে এবং দু’টিতে হেরেছে।
২০২৪ সালের মার্চে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ- শ্রীলংকা। তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল টাইগাররা। এরপর আফগানিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দু’টি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টাইগাররা। শান্ত অনুপস্থিতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মিরাজ।
এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ। ‘এ’ গ্রুপে তিন ম্যাচের মধ্যে প্রথম দুই ম্যাচে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় টাইগারদের। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ- পাকিস্তান ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর কোন ওয়ানডে খেলেনি টাইগাররা।
শ্রীলংকার মাটিতে বাংলাদেশের ওয়ানডে রেকর্ডও হতাশাজনক। ২৪ ম্যাচ খেলে মাত্র ২টিতে জয়, ২০টিতে হার ও ২টি পরিত্যক্ত হয়েছে।
২০১৯ সালে শ্রীলংকার মাটিতে সর্বশেষ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০২৩ সালে এশিয়া কাপ খেলতে আবারও শ্রীলংকা সফর করে টাইগাররা। লংকার মাটিতে দুই ম্যাচ খেলে দু’টিতেই হেরেছে তারা। শ্রীলংকার মাটিতে সর্বশেষ ছয় ম্যাচের একটিতেও জয় নেই বাংলাদেশের।
ইনজুরি থেকে সুস্থ হয়ে শ্রীলংকা সিরিজ দিয়ে দলে ফিরেছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ফলে টাইগারদের পেস আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরমেন্সের সুবাদে আড়াই বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরেছেন মোহাম্মদ নাইম। আরও ফিরেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে সুযোগ না পাওয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটার লিটন দাস, মিডল অর্ডার ব্যাটার শামীম পাটোয়ারী এবং বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম।
বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার এবং নাসুম আহমেদ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরই ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে অবসর নেন দলের দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
বাংলাদেশ দল : মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, মোহাম্মদ নাইম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, লিটন দাস, জাকের আলী, শামীম পাটোয়ারি, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ।
শ্রীলংকা দল : চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), পাথুম নিশাঙ্কা, আভিস্কা ফার্নান্দো, নিশান মাধুশকা, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, কামিন্দু মেন্ডিস, জেনিথ লিয়ানাগে, দুনিথ ওয়েলালাগে, হাসারাঙ্গা ডি সিলভা, মহেশ থিকশানা, জেফরি ভান্ডারসে, মিলান রত্নায়েকে (ফিট থাকা সাপেক্ষে), দিলশান মাধুশঙ্কা, আসিথা ফার্নান্দো ও ইশান মালিঙ্গা।
অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে নোয়াখালীবাসীর। আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএলে) দেখা যেতে পারে বাংলাদেশের আলোচিত এই জেলাটিকে। এর আগে কখনোই বিপিএলে অংশ নেয়নি তারা। নতুন দল হিসেবে বিপিএলে আসতে যাচ্ছে নোয়াখালী রয়্যালস। বিপিএলে অংশ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবির) কাছে আবেদন জমা দিয়েছে নোয়াখালী রয়্যালস। গত ২৪ জুন ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সত্ত্বাধিকারের অনুমতি চেয়ে বিসিবির কাছে আবেদন করেছে শায়ানস গ্লোবাল নামের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
আজ সোমবার বিসিবির সভায় বিপিএলে নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছে সায়ানস গ্লোবাল নামের প্রতিষ্ঠান। আগামী বিপিএলে নোয়াখালী থেকে দল কেনার জন্য বেশ ভালোভাবেই মাঠে নেমেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত ২৪ জুন বিসিবির সভাপতি বরাবর দেওয়া এক চিঠিতে সায়ানস গ্লোবাল জানায়, বিপিএলে দল নেওয়ার পাশাপাশি নোয়াখালী অঞ্চলে ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করতে চায় তারা। এছাড়া, বিপিএলের সকল প্রক্রিয়া মেনে অংশ হওয়ার আবেদন জানিয়েছে তারা।
মন্তব্য