আফগানিস্তানের বিপক্ষে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ৪ উইকেটের জয় বাগিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ। ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর আফিফ হোসেন ও মেহেদী মিরাজের ব্যাটে ৭ম উইকেট জুটিতে রেকর্ড গড়ে জয় ছিনিয়ে নেয় টাইগাররা।
দলের বিপর্যয়ের সময়ে হাল ধরে ফিফটি তুলে নেন দুই ব্যাটার। আফগানিস্তানের দেয়া ২১৬ রানের টার্গেটে দলকে স্বস্তির সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যান।
দৃঢ় হাতে দলকে এনে দেয়া এমন জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তরা শেষ কবে দেখেছে সেটি মনে করা কষ্টসাধ্য। ২১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৫ রানে ৬ টপ অর্ডারসহ চার সিনিয়রকে হারিয়ে যখন দিশেহারা টাইগার শিবির, সে সময় দলকে শক্তহাতে টেনে তুলে জয় বাগিয়ে নেয়াটা খুব একটা সহজ বিষয় নয়।
সেই কাজটি করে দেখিয়েছেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে সপ্তম উইকেট জুটিতে রেকর্ড রান করে দলকে এনে দিলেন ৪ উইকেটের অনাবদ্য এক জয়।
২১৬ রানের আপাতদৃষ্টিতে সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই টাইগার ওপেনার; তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাস। শুরু দেখে বোঝা যায়নি দ্রুতই বাংলাদেশ পড়তে যাচ্ছে বিপাকে।
দলীয় ১৩ রানে লিটন দাসকে দিয়ে শুরু। ফজল হক ফারুকির শিকার হয়ে এক রানে ফেরেন তিনি। সেই ওভারের পঞ্চম বলে সাজঘরে ফিরতে হয় তামিম ইকবালকে।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ফারুকি তৃতীয় আঘাত হানেন বাংলাদেশের শিবিরে। এবারে তার এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে ৩ রান করে মাঠ ছাড়তে হয় মুশফিকুর রহিমকে।
অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি ইয়াসির আলি রাব্বি। ফারুকির চতুর্থ শিকার হয়ে আউট হওয়ার আগে ৫ বলে কোনো রান করতে পারেননি। ফলে ১৮ রান তুলতে চার উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
বেশি দূর যেতে পারেননি সাকিব আল হাসানও। মুজিব-উর-রেহমানের বলে প্লেইড অন হয়ে যান তিনি। ১০ রান করে অষ্টম ওভারে আউট হন তিনি।
২৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেনের জুটি। কিন্তু রাশিদ খান নিজের প্রথম ওভারে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটান বাংলাদেশের।
এরপর দলকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নেন আফিফ ও মিরাজ। ঠান্ডা মাথায় ব্যাট করে দলীয় স্কোর ১০০ পার করেন দুজন।
উইকেট কামড়ে ধরে দলকে দিতে থাকেন জয়ের সুবাস। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সপ্তম উইকেটের রেকর্ড জুটি গড়ে দলকে এনে দেন ৪ উইকেটের দুর্দান্ত এক জয়। মিরাজ ৮১ ও আফিফ ৯৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
ক্রিকেটের ইতিহাসে বর্তমানে এই দুইজনের ১৭৪ রানের জুটিটি সপ্তম উইকেটের দ্বিতীয় সেরা জুটি। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ।
ম্যাচ সেরা হন মেহেদী মিরাজ।
এই জয়ে ৩ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। একই সঙ্গে ১০ পয়েন্ট পাওয়ায় বর্তমানে সুপার লিগের টেবিলের শীর্ষে থাকা ইংল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান পাঁচে নামিয়ে আনলো লাল সবুজ জার্সিধারীরা।
আফগানিস্তানের হয়ে চারটি উইকেট নেন ফজল হক ফারুকি। একটি করে উইকেট যায় মুজিব-উর-রেহমান ও রাশিদ খানের ঝুলিতে।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে মুস্তাফিজুর রহমানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টাইমিং মেলাতে না পেরে তামিমের হাতে ধরা দেন আফগান এই ব্যাটসম্যান। মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ৭ রানের ইনিংস।
এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে দেখেশুনে ব্যাট চালাতে থাকেন ইবরাহিম জাদরান ও রহমত শাহ। টাইগার শিবিরে ক্যাচ মিসের মহড়া চলার সুযোগে বড় শট খেলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন এই দুই ব্যাটসম্যান।
কিন্তু শরিফুল ইসলাম এনে দেন ব্রেক থ্রু। ১৯ রানেই থামিয়ে দেন ইবরাহিম জাদরানকে।
আফগান শিবিরে ম্যাচের ২২তম ওভারে খরুচে তাসকিন আহমেদ তুলে নেন নিজের প্রথম উইকেট। উইকেটে থিতু হয়ে বসা রহমত শাহকে ফিরিয়ে চাপে ফেলেন আফগানিস্তানকে।
মন্থরগতিতে ব্যাট করতে থাকা আফগানিস্তান শিবিরে চতুর্থ আঘাত হানেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে ২৮ রানে ফেরান তিনি।
বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগে মোহাম্মদ নাবি ২০ রান করে ফেরেন তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। সাজঘরে যখন তিনি ফেরেন সে সময় স্কোরবোর্ডে রান ১৬৫।
উইকেট আগলে রেখে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। দৃঢ় হাতে সচল রাখেন দলের রানের চাকা।
শুরুটা ভালো করলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেশ খরুচে হয়ে উঠতে থাকেন সাকিব আল হাসান। নিজের প্রথম উইকেটের দেখা তিনি পান ম্যাচের ৪৫তম ওভারে এসে।
ব্যক্তিগত নবম ওভারের তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে ১৭ রানেই থামিয়ে দেন গুলবাদিন নাঈবকে। দুই বল বাদেই রাশিদ খানকে পরিণত করেন নিজের দ্বিতীয় শিকারে।
অন্যপ্রান্তে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন নাজিবুল্লাহ। ম্যাচের ৪৯তম ওভারে তাকে ৬৭ রানে থামিয়ে দেন শরিফুল।
শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে ২১৫ রানের পুঁজি নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
বাংলাদেশের হয়ে তিনটি উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। দুটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ, সাকিব আল হাসান ও শরিফুল ইসলাম। একটি উইকেট ঝুলিতে পোরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
আরও পড়ুন:ONE OF THE GREATEST COMEBACKS EVER 👏
— CricWick (@CricWick) February 23, 2022
Afif Hossain and Mehidy Hasan lead Bangladesh to victory over Afghanistan despite being 4️⃣5️⃣/6️⃣ at one stage! 😱🙌
Scorecard ➡️ https://t.co/glG8wwbVoM#BANvAFG #CricketTwitter pic.twitter.com/oHlkrYwFTg
জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) আসন্ন আসর নিয়ে মহাপরিকল্পনা সাজিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ শীর্ষক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তরুণ ও যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে দেশব্যাপী এই আয়োজনের মিডিয়া লঞ্চিং প্রোগ্রামে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫-এর লোগো এবং আসন্ন বিপিএলের অফিসিয়াল মাসকট ‘ডানা ৩৬’ উন্মোচন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশ পুনর্গঠন ও রাষ্ট্র সংস্কারে এগিয়ে যাওয়াই এই তারুণ্যের উৎসবের মূল লক্ষ্য। এই আয়োজন সফল করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার জন্য ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক স্লোগান নিয়ে আয়োজিত হতে যাচ্ছে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫, যা অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের ৩০ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায় সবসময় জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণ করতে চাই। তাদের ত্যাগের স্পৃহা বাস্তবায়নে কাজ করে যেতে চাই।
‘খেলাধুলা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। ভিন্ন ক্ষেত্রে যতই মতভেদ থাকুক না কেন, খেলাধুলার ক্ষেত্রে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাই।’
‘ডানা ৩৬’ মাসকটটি সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা ও ক্রীড়ামোদীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
পায়রা আকৃতির ৩৬টি রঙিন পালকবিশিষ্ট মাসকটটি শান্তি, স্থিতিস্থাপকতা এবং জাতির শক্তি ও ঐক্যের প্রতীক।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম।
তাদের পাশাপাশি নারী ক্রিকেট দলের সদস্য এবং ফুটবলসহ অন্যান্য ক্রীড়া ফেডারেশনের কর্মকর্তারা ও খেলোয়াড়রা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:আয়ারল্যান্ড নারী দলের বিরুদ্ধে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশের মেয়েরা। আর সাদা বলের সিরিজ খেলতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসে ব্যাক টু ব্যাক পরাজয়ের স্বাদ পেল আইরিশ দল।
মিরপুর স্টেডিয়ামে শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আইরিশদের ছুঁড়ে দেয়া ১৯৪ রানের টার্গেটে ব্যাট হাতে নেমে ৩৭ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম ওয়ানডেতে ১৫৪ রানের রেকর্ড ব্যবধানে জয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
আজ মিরপুরের দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৯৩ রানে থামে আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে সহজেই জয় ছিনিয়ে নেয় নিগার সুলতানার দল। ৫ উইকেট ও ৩৭ বল হাতে রেখেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
শনিবার মিরপুর শেরে-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ড। ম্যাচের চতুর্থ ওভারে ২ রানে থাকা আইরিশ ওপেনার গ্যাবি লুইসের উইকেট তুলে নেন সুলতানা খাতুন। ইনিংসের ১১তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই উইকেট পান নাহিদা আক্তার। তিন নম্বরে নামা উইকেটকিপার ব্যাটার অ্যামি হান্টার খেলেন সর্বোচ্চ ৬৮ রানের ইনিংস।
স্বাগতিক দলের সুলতানা খাতুন ১০ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। সমান ওভারে একই রান খরচায় নাহিদা পান ১ উইকেট। আরেক উইকেট যায় স্বর্ণা আক্তারের দখলে।
সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ নারী দল। ১৪ বল খেলা ওপেনার মুরশিদা খাতুন ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। তিনে নামা শারমিন সুপ্তাকে নিয়ে এরপর ৮৫ রানের জুটি গড়েন ফারজানা হক পিংকি। পরপর দুই ম্যাচে ফিফটি তুলে নেন ফারজানা। ৫০ রানে থেকেই লরা ডেলানির বলে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন ফারজানা।
আগের ম্যাচে ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা শারমিন সুপ্তা আজ আউট হন ৪৩ রান করে। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। ৩৯ বলে তিনি এই ইনিংস সাজান ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায়। মাঝে সুবহানা মোস্তারি করেন ১৬ রান।
শেষদিকে স্বর্ণা আক্তার ২৯ রানের হার-না-মানা ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। তাকে সঙ্গ দেয়া ফাহিমা খাতুন অপরাজিত থাকেন ৪ রানে।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে সিরিজের শেষ ওয়ানডে। এরপর ৫, ৭ ও ৯ ডিসেম্বর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচ।
আরও পড়ুন:সিরিজ সমতায় শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে শনিবার জ্যামাইকার কিংস্টনের সাবিনা পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে সফরকারী বাংলাদেশ।
ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়।
মাত্র কয়েক মাস আগে পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর থেকে হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সিরিজ জয়ের পর টানা পাঁচ টেস্ট হেরেছে টাইগাররা।
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ এবং ২০১ রানের বড় হার দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শুরু করে টাইগাররা।
পাঁচ টেস্টে বাজেভাবে হারের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের কীর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
বাংলাদেশের মূল সমস্যা ব্যাটিং। প্রতিটি ম্যাচ ব্যাট হাতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে ব্যাটাররা, তবে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে বোলারদের। ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন পারফরম্যান্স মাটি করে দিচ্ছে বোলারদের সাফল্য।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে বোলাররা। পেসার তাসকিন আহমেদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ওই ইনিংসে ১৫২ রানে অলআউট হয়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৬৪ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন।
ওই ম্যাচের দুই ইনিংসেই ব্যর্থ ছিল টাইগার ব্যাটাররা। বিশেষভাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
ব্যর্থতার পরও ব্যাটারদের পক্ষে কথা বলেছেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কুঁচকির ইনজুরির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মিরাজ।
প্রথম ম্যাচে লজ্জাজনক হারের পর মিরাজ বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা কয়েকটি ভুল করেছি, কিন্তু এমনটা ঘটতেই পারে। আমরা আশা করি পরের ম্যাচে আমরা ঘুড়ে দাঁড়াব।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল বলতে গেলে ছেলেখেলা করল আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে। নিজেদের ওয়ানডে জয়ের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লেন বাংলাদেশের মেয়েরা।
মিরপুর স্টেডিয়ামে বুধবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আইরিশদের ১৫৪ রানে হারিয়েছে টাইগ্রেসরা। সে সুবাদে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল নিগার সুলতানা জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।
জ্যোতির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জয়ের রেকর্ডেও ছাড়িয়ে গেল নিজেদের। ওয়ানডেতে এ নিয়ে দুবার প্রতিপক্ষকে ১০০ বা তার বেশি রানে হারাল বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর ইস্ট লন্ডনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১১৯ রানের ব্যবধানে হারিয়েছিলেন বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আজ বুধবার টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জ্যোতি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ২৫২ রান করে বাংলাদেশ। ইনিংস সর্বোচ্চ ৯৬ রান করেন শারমিন আকতার সুপ্তা। তার ৮৯ বলের ইনিংসে ১৪ চারের মার রয়েছে। ১৬ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন সুপ্তা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত চার ফিফটি করলেও কোনো সেঞ্চুরি নেই।
আয়ারল্যান্ডের ফ্রেয়া সার্জেন্ট নিয়েছেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন লরা ডেলানি ও অ্যামি ম্যাগুয়ার।
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল দীর্ঘ দেড় মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠে নামে আজ। এ বছরের ১২ অক্টোবর সবশেষ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছিল বাংলাদেশ। দু্বাইয়ে সেই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৭ উইকেটে হারেন জ্যোতিরা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশ জয় দিয়ে শুরু করলেও হেরেছিল টানা তিন ম্যাচ। এছাড়া ওয়ানডেতে বাংলাদেশের মেয়েরা আজ খেলেছেন ৮ মাস পর। এই সংস্করণে বাংলাদেশ জয় পেল টানা ৫ ম্যাচ হারের পর।
আরও পড়ুন:দু’পাশে জার্সি গায়ে উদ্বোধনী ম্যাচে অংশগ্রহণকারী খুলনা বিভাগের লাল ও সবুজ দলের খেলোয়াড়রা। মাঝে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, দেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান মেহরাব হোসেন অপি, জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সালমা খাতুন ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক সাফজয়ী ফুটবলার আমিনুল ইসলাম।
রোববার বেলা পৌনে ১১টায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী পর্বে দেখা যায় এমন আনন্দঘন মুহূর্ত।
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বলেন, ‘নাইস টু বি ব্যাক। অনেক অনেক দিন পর খুলনায় এসেছি। খুলনার অনেক ইতিহাস, অনেক স্মৃতি। খুলনাকে ক্রিকেটের আঁতুরঘর বললেও ভুল হবে না। খুলনা অনেক জাতীয় ক্রিকেটারের জন্ম দিয়েছে।
‘আজকের এই টুর্নামেন্টের আয়োজনে আমি খুবই খুশি। এখানে স্পোর্টস প্রমোট করা হবে। আমরা যারা খেলোয়াড়, আমরা সব সময় সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করবো কীভাবে স্পোর্টসকে সঠিকভাবে প্রমোট করা যায়।’
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক সাফজয়ী ফুটবলার মো. আমিনুল হক বলেন, ‘শহীদ জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনন্য একটি আয়োজন। যত বেশি টুর্নামেন্ট আয়োজন হবে, তত বেশি ভালো খেলোয়াড় বের হয়ে আসবে। প্রতিবছর এ টুর্নামেন্টের আয়োজন হবে। আশা করি, ভবিষ্যতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আমরা এ আয়োজনকে ছড়িয়ে দিতে পারবো।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল।
উদ্বোধনী মঞ্চে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবু ও সদস্য সচিব দেবব্রত পাল, খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. শফিকুল আলম তুহিনসহ নেতৃবৃন্দ।
বেলুন, ফেস্টুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেন অতিথিরা।
এ সময় অতিথিদের সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ঢাকার আশুলিয়ায় গত ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে শহিদ হামিদ শেখের পিতা তেরখাদার পানতিতা গ্রামের জাফর শেখ।
টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, প্রতিটি সাংগঠনিক বিভাগেই লাল ও সবুজ নামে দু’টি করে দল নিজেদের মধ্যে একটি করে ম্যাচ খেলবে। ১০ ম্যাচের ১০ জয়ী দলের সঙ্গে মূল পর্বে যোগ হবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দল।
বিভাগীয় পর্যায়ের খেলাগুলো বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে হলেও ১৬ জানুয়ারি থেকে ঢাকায় মূল পর্ব শুরু হবে।
১৯ জানুয়ারি শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবির সহযোগিতায় টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ‘বিগত সময়ে ক্ষমতাসীনরা ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন চায়নি। নিজেদের উন্নয়ন ও লুটপাটে ব্যস্ত ছিল তারা। এক সময়ে খুলনা থেকে সর্বাধিক খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে উঠে এলেও এখানে খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি। সব ক্ষেত্রে রাজনীতিকরণ করায় ক্রীড়াঙ্গনকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।’
দেশ সংস্কারের পাশাপাশি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের কাজ করবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘খুলনার ম্যাচটিকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাণচাঞ্চল্য প্রকাশ পেয়েছে। দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলের সাবেক ও দেশসেরা ক্রিকেটারদের সম্মিলন দেখতে পেয়ে খুলনাবাসী ধন্য।’
আরও পড়ুন:জাস্টিন গ্রেভসের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ পেয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দলটি ৯ উইকেটে ৪৫০ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে।
জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ৪০ রান করেছে বাংলাদেশ।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে প্রথম দিন শেষে ৮৪ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫০ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জাস্টিন গ্রেভস ১১ ও জশুয়া ডা সিলভা ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিনের পঞ্চম বলেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন পেসার হাসান মাহমুদ। ডা সিলভাকে ১৪ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পেসারদের মধ্যে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়লেন হাসান।
এর মধ্য দিয়ে ভেঙে গেছে পেসার শাহাদাত হোসেনের নজির। ২০০৮ সালে ১৪ ইনিংসে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত।
এ বছর এখন পর্যন্ত ১৩ ইনিংসে ২৪ উইকেট নিয়েছেন গত মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক হওয়া হাসান।
দিনের দ্বিতীয় ওভারেও উইকেটের দেখা পান হাসান। গালিতে জাকির হাসানের দারুণ ক্যাচে ৪ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরেন আলজারি জোসেফ।
২৬১ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন গ্রেভস ও কেমার রোচ। ১৪২ বলে ৭৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যান তারা। ওই সময় ৮৮ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন গ্রেভস।
বিরতির পর বাংলাদেশের ভুলে ব্যক্তিগত ৭৭ রানে জীবন পান গ্রেভস। তাসকিনের করা ১১৯তম ওভারে গ্রেভসের ব্যাটের কানায় লেগে বল জমা পড়ে বাংলাদেশের বদলি উইকেটরক্ষক জাকের আলির হাতে, কিন্তু আউটের কোনো আবেদন করেনি বাংলাদেশ। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, আউট ছিলেন গ্রেভস।
গ্রেভস সেঞ্চুরি ও রোচ হাফ সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু রোচকে দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন হাসান।
১৪৪ বলে দুটি চারে ৪৭ রান করেন রোচ। ২৮৯ বল খেলে ১৪০ রানের জুটি গড়েন গ্রেভস ও রোচ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে অষ্টম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়েন তারা।
ম্যাচের প্রথম দিন মিখাইল লুইস ও আলিক আথানেজ নব্বইয়ের ঘরে থামলেও ভুল করেননি গ্রেভস। রোচকে হারানোর পর ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন গ্রেভস।
১৮১ বলে প্রথম শতকের স্বাদ নেয়ার পর নবম উইকেটে জেইডেন সিলেসকে নিয়ে ৪৮ বলে ৩৭ রান যোগ করেন গ্রেভস।
সিলেসকে ১৮ রানে আউট করেন মিরাজ। শেষ উইকেটে গ্রেভস ও শামার জোসেফ ১২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ার পর ইনিংস ঘোষণা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
৩৭৪ মিনিটে চারটি চারে ২০৬ বলে ১১৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন গ্রেভস। ৮ বলে ২টি বাউন্ডারিতে অপরাজিত ১১ রান করেন শামার।
হাসান ৮৭ রানে তিনটি, তাসকিন ৭৬ রানে ও মিরাজ ৯৯ রানে দুটি করে এবং তাইজুল ১১১ রানে একটি উইকেট নেন। ৫৩ রান দিয়েও উইকেটের দেখা পাননি শরিফুল ইসলাম।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। ৯ ওভারে ১২ রান তুলেন তারা। নবম ওভারের পঞ্চম বলে ব্যক্তিগত ৫ রানে জীবন পান জয়। আলজারি জোসেফের বলে গালিতে জয়ের ক্যাচ ফেলেন লুইস।
পরের ওভারে দলীয় ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সিলেসের করা ওই ওভারে দুটি চার মারার পর বোল্ড হন জাকির। ব্যাটের নিচের কানায় লেগে বল স্টাম্প ভাঙে। ৩৪ বলে ৩টি চারে ১৫ রান করেন তিনি।
জাকির ফেরার পরের ওভারে সাজঘরে ফেরেন জয়ও। আলজারির বলে দ্বিতীয় স্লিপে আথানাজেকে ক্যাচ দেন ৩৩ বলে ৫ রান করা জয়।
২১ রানে দুই উইকেট পতনের পর জুটি বাঁধেন মোমিনুল হক ও শাহাদাত হোসেন। তৃতীয় উইকেটে ৫৪ বলে ১৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন তারা। মোমিনুল ৭ ও শাহাদাত ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন। সিলেস ও আলজারি ১টি করে উইকেট নেন।
আরও পড়ুন:অধিনায়কত্বের অভিষেক ম্যাচেই টস ভাগ্য মেহেদী হাসান মিরাজের পক্ষে। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুরুতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ফিল্ডিংয়ে রেমেছে টাইগাররা।
প্রথম টেস্টে ক্যারিবীয়দের চার পেসারের বিপরীতে দুজন স্পিনার ও তিনজন পেসার নিয়ে বোলিং লাইন-আপ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক মিরাজের সঙ্গে স্পিনার হিসেবে একাদশে রয়েছেন তাইজুল ইসলাম। আর পেসার হিসেবে রয়েছেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।
পাকিস্তানে দুই টেস্টের সিরিজে ঐতিহাসিক জয় পেলেও ভারত সফরে গিয়ে বিপরীত অভিজ্ঞতা হয় বাংলাদেশের। এরপর দেশে ফিরে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণের সামনে টিকতেই পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ফলে একপ্রকার লড়াই ছাড়াই সিরিজ হারতে হয় টাইগারদের।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চলমান চক্রে এটিই বাংলাদেশের শেষ সিরিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জিতে শেষটা নিশ্চিতভাবেই রাঙিয়ে রাখতে চাইবেন দেশের ক্রিকেটাররা।
অবশ্য কাজটা মোটেই সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। চোটের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে নেই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও ব্যাটিংয়ে ভরসার নাম মুশফিকুর রহিম। এমন অবস্থায় জাকের আলী, শাহাদাত হোসেন দিপু ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের মতো তরুণদের ওপর ভরসা রাখতে হচ্ছে সফরকারীদের।
বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, শাহাদাত হোসেন দিপু, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), জাকের আলী অনিক, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ: ক্রেইগ ব্রেথওয়েট (অধিনায়ক), মিকাইল লুই, আলিক আথানেজ, কেসি কার্টি, জশুয়া ডা সিলভা, জাস্টিন গ্রিভস, কাভেম হজ, আলজারি জোসেফ, শামার জোসেফ, কেমার কোচ, জেইডেন সিলস।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য