বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ক্যাচ মিসের ম্যাচে মিনিস্টার ঢাকাকে ১৬২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রামের সংগ্রহ ১৬১ রান।
শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে যেখানে ব্যাটাররা খাবি খাচ্ছিলেন রান বের করতে, সেখানে দ্বিতীয় ম্যাচে উইকেটের ভোল বদলে দিলেন চট্টগ্রামের ব্যাটাররা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬ রানে তারা হারায় ওপেনার কেনার লুইসকে। ২ রান করে সাজঘরে ফিরে যেতে হয় এই ব্যাটসম্যানকে।
এরপর আফিফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে রানের গতি বাড়িয়ে দেন উইল জ্যাকস। ১২ বলে ১২ করে আফিফ বিদায় নেয়ার পর স্কোরশিটে ২ রান যোগ করতে সাজঘরের পথ ধরেন ২৪ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা উইল জ্যাক।
পরপর দুই সেট ব্যাটারের বিদায়ে খেই হারায়নি সাগরিকার দলটি। বরং প্রবল বিক্রমে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকে সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে ভর করে।
দলীয় ১০০ রানে ২৫ করা মেহেদী বিদায় নিলেও উইকেট আগলে থাকেন সাব্বির। তাকেও ফিরতে হয় ২৮ রান করে। রুবেলের দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে খেই হারানোর সঙ্গে সঙ্গে স্টাম্পটাও হারান তিনি।
শেষদিকে বেনি হাওয়েলের ১৯ বলে ৩৭ রানের টর্নেডো ইনিংসে ভর করে ১৬১ রানের পুঁজি নিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম।
ঢাকার হয়ে তিনটি উইকেট নেন রুবেল হোসেন। একটি করে উইকেট নেন আরাফাত সানি, ইসুরু উদানা, শুভাগত হোম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
জাতীয় দলের পাইপলাইনটা বেশ শক্তিশালী, এমনটাই দাবি করা হয় সবসময়য়। যদিও বাস্তবে এর কোনো দৃষ্টান্ত হাজির করতে পারেনি বিসিবি। এখন পর্যন্ত সিনিয়র ক্রিকেটারদের অবসরের পর তাদের স্থলাভিষিক্ত কে হবেন সেটিই খুঁজে বের করতে পারেনি টিম ম্যানেজমেন্ট।
ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করেই জাতীয় দলের পাইপলাইনে আসেন ক্রিকেটাররা। একই সঙ্গে সেখানে থাকেন বয়সভিত্তিক দলে পারফর্ম করা ক্রিকেটাররাও।
কিন্তু এদের ভেতর হাতে গোনা দুই একজন ছাড়া নিয়মিত পারফর্মারের দেখা মেলা ভার।
ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে জাতীয় দলের জায়গা করে নিলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে এসে নিষ্প্রভ হয়ে পড়েন ক্রিকেটাররা। যার একদম লেটেস্ট উদাহরণ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও নাজমুল হাসান শান্ত।
ডিপিএল এর গেল আসরে ব্যাট বল হাতে আলো ছড়ালেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এসে খুঁজেই পাওয়া যায়নি লিগের সেই শান্ত আর মোসাদ্দেককে। ব্যাট হাতে তো দুইজন নিষ্প্রভ ছিলেনই, বল হাতেও মোসাদ্দেক ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।
কেন একই ভেন্যুতে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেললে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে হারিয়ে যান ক্রিকেটাররা? এর প্রধান কারণ হিসেবে জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটের মধ্যকার বিস্তর ফারাকের বিষয়টিকে সামনে আনেন।
সুজনের মতে, ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভেতর বৈসাদৃশ্য থাকায় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের অবনতি হচ্ছে।
শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুজন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক গ্যাপ রয়ে গেছে। যারা ঘরোয়াতে অনেক ভালো করছে তারা আন্তর্জাতিকে এসেই ভালো করতে পারবে এটার নিশ্চয়তা নেই।’
একই সঙ্গে ঢাকা টেস্টে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা নিজেদের মান ধরে রেখে খেলতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সুজন বলেন, ‘অবশ্যই ভালো হয়নি। আমাদের কন্ডিশনে হার... ফলাফল যাই হোক, আমাদের প্রক্রিয়াও ভালো ছিল না। হার-জিত খেলার অংশ, হারতেই পারি। কিন্তু যেরকম কন্ডিশন ছিল বা যেরকম প্রতিপক্ষের সাথে খেলেছি, বলব না আমরা আমাদের মান অনুযায়ী খেলেছি। ইতিবাচক দিক আছে অনেক কিছুই। তবে ফলাফলের কথা চিন্তা করলে ভালো হয়নি। ঢাকা টেস্টে দুই ইনিংসেই টপ অর্ডারের ব্যর্থতা। দুই ইনিংসে একইরকম কেন হবে?’
আরও পড়ুন:স্পিনারদের জন্য চার দিনের বিশেষ স্পিন বোলিং ক্যাম্পের আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। রঙ্গনা হেরাথের অধীনে রোববার (২৯ মে) থেকে শুরু হবে এই ক্যাম্প। চলবে ১ জুন পর্যন্ত।
৩২ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে আয়োজন করা হচ্ছে এই ক্যাম্প। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ও ক্লাব ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা আছে এমন স্পিনারদের নিয়ে হবে এই বিশেষ ক্যাম্প।
শনিবার এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিসিবি।
হোম অফ ক্রিকেট মিরপুরের ইনডোর ও আউটডোরে অর্থাৎ অ্যাকাডেমি মাঠে চলবে এই ক্যাম্পের কার্যক্রম।
বিসিবির স্পেশাল স্পিন বোলিং ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ৩২ ক্রিকেটার:
রকিবুল হাসান, তানভীর ইসলাম, হাসান মুরাদ, নাজমুল হোসেন অপু, রায়হান, নাহিদুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন, সঞ্জিত সাহা, রনি চৌধুরী, সানজামুল ইসলাম, ইফতেখার সাজ্জাদ রনি, রাহাতুল ফেরদৌস, টিপু সুলতান, আল মামুন রাজু, মিনহাজুল আবেদীন আফ্রিদি, মেহরাব ওহিন, শাদাত হোসেন সবুজ, নাইম হোসেন সাকিব, জুবায়ের হোসেন লিখন, আকাশ, অমিত মল্লিক, মুজাক্কির, আবু হাসিম, আরিফুল জনি, এসকে অন্তর, রতন, মহিউল ইসলাম পাটোয়ারী, তুষার মিয়া, অনিক, তাজ মোঃ এহতাসুম মাহমুদ, স্বাধীন ইসলাম এবং রুবেল।
আরও পড়ুন:একের পর এক সিরিজ হার, যেমন ঘরের মাঠে, তেমন বিদেশের মাটিতে। ক্রিকেটে ব্যর্থতা যেন পিছুই ছাড়ছে না জাতীয় দলের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট দিয়ে শুরু। এরপর সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ ও সবশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টে প্রতিপক্ষের কাছে নাকানি চুবানি খেতে হয়েছে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের।
অথচ এই ক্রিকেটাররাই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে দলকে এনে দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক এক জয়। শুধু তাই নয়, ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও জয়ের কাছাকাছি দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন এই তামিম-মুশফিকরাই।
একই দল, একই খেলোয়াড়, পরিচিত ভেন্যু। কিন্তু তারপরও এক ম্যাচের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানো ক্রিকেটাররাই পরের ম্যাচে চোখে পড়ার মতো বাজে পারফরম্যান্স দেখিয়ে বসে থাকে।
লম্বা সময় ধরে একই বিষয় বারবার ভোগান্তির কারণ হিসেবে প্রতীয়মান হলেও এই ঘটনার পেছনকার রহস্য কি সেটি জানা নেই টিম ম্যানেজমেন্টের। বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেও নেন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনটাই জানান সাবেক এই ক্রিকেটার।
সুজন বলেন, ‘আমরা এমন কোথাও আটকে আছি যেখান থেকে বের হতে পারছি না। মোমেন্টাম নষ্ট থাকে, আত্মবিশ্বাস অনেক কম থাকে। এমন কিছুও হয়ত হচ্ছে। উন্নতির সুযোগ থাকছেই। মূল ৩-৪ জন বোলার ছিল না- এগুলো অজুহাতের মতো। যারা খেলেছে তারা কেন পারবে না? সমস্যাটা কোথায় এটা বের করাই গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন:ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটের সিরিজ খেলতে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ জাতীয় দল। তবে সেই সিরিজে দলে থাকছেন না টাইগারদের স্পিন পরামর্শক রঙ্গনা হেরাথ।
জাতীয় দলের কোচ কোনো কারণে অনুপস্থিত থাকলে, স্থানীয় কোচ দিয়ে কাজ চালিয়ে নেয় বিসিবি। আর সে ভূমিকায় দেখা যায় জনপ্রিয় স্পিন কোচ সোহেল ইসলামকে।
তবে সামনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে দলের সঙ্গে যাচ্ছেন না সোহেল। তাই স্পিন ইউনিটের দায়িত্ব পাললেও দেখা যাবে রাসেল ডমিঙ্গো ও খালেদ মাহমুদ সুজনকে।
সংবাদমাধ্যমকে শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
সুজন বলেন, ‘এবার আমাদের সঙ্গে সোহেল যাচ্ছে না। হেরাথের পরিবর্তেও কেউ যাচ্ছে না। আমাকে আর ডমিঙ্গোকেই স্পিনারদের দেখতে হবে।’
সুজনের জন্য নতুন হলেও এই চিত্র নতুন নয় ডমিঙ্গোর জন্য। গত বছর ঘরের মাঠে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দলের সঙ্গে ছিল না স্পিন বোলিং কোচ। স্পিনারদের সেবার দেখভাল করেছিলেন ডমিঙ্গো।
আরও পড়ুন:শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে হেরে শুক্রবার সিরিজ শেষ করেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের জন্য দেশ ছাড়ার আগে বেশ কিছুদিন হাতে আছে ক্রিকেটারদের। আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শুরু আগের সময়টা তাই ছুটি।
সুযোগটা কাজে লাগাতে বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার, উদ্দেশ্য মানসিক চাপ কাটানো। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, নুরুল হাসান সোহান, তাইজুল ইসলাম আছেন এই তালিকায়। আর হজ্ব করতে ছুটি নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, সিরিজ শেষেই যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে উড়াল দিয়েছেন সাকিব। প্রথমে তিনি যাচ্ছেন সিঙ্গাপুর। এরপর সেখান থেকে যাবেন পরিবারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে।
দুবাইয়ে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে শনিবার সকালে দেশ ছেড়েছেন তামিম ইকবাল।
থাইল্যান্ডের বিমানে রোববার চাপবেন তাইজুল ইসলাম; পরদিন সোমবার যুক্তরাষ্ট্র যাবেন সোহান।
যারা দেশ ছাড়ছেন না, তাদের অনেকেই চলে গিয়েছেন আপনজনের কাছে।
শিষ্যরা ফুরফুরে মেজাজে। গুরুরা আর কি করবে? নিজেদের দেশ সাউথ আফ্রিকায় পাড়ি দিয়েছেন জাতীয় দলের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ও পেইস বোলিং পরামর্শক অ্যালান ডনাল্ড।
আরও পড়ুন:শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে দ্বিতীয় টেস্টে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে সিরিজ হেরেছে টাইগাররা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ড্র করলেও শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচে ১০ উইকেটের বড় পরাজয় মেনে নিতে হয ডমিঙ্গোর শিষ্যদের। এমন হারে টাইগার সমর্থকদের হতাশ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স শুক্রবার ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমি শুধু আমাদের টেস্ট ম্যাচ ও ফল সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। প্রত্যেকের আলাদা মতামত আছে। আমি জানি যে, সবাই দলের দুর্দান্ত ফল চান।’
ক্রিকেটারদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘গত দুই টেস্টে তামিম, জয়, লিটন ও মুশিদের পারফরম্যান্স নিয়ে বলতে চাই। সাকিব বল হাতে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছে, সঙ্গে ব্যাটিংও করেছে।
‘টেস্টে সেঞ্চুরি করাটা কঠিন। সেঞ্চুরিয়ানদের এই প্রাপ্তিটা ভালোভাবে উদযাপন করা উচিত। গত চারটি টেস্টে আমরা ৫টি সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছি। আমাদের বোলারদের প্রচেষ্টার জন্য আমি গর্বিত। কিন্তু আমি ব্যাটিং কোচ। তাই ব্যাটিং নিয়ম ঠিক আছে।’
সমর্থকদের উদ্দেশে সিডন্স বলেন, ‘চাপের মধ্যে থাকা ম্যাচে কিছু খারাপ সময়ের জন্য আমরা দায়ী। এর জন্য আমাদের খেলায় অনেক মূল্য দিতে হয়। শুধু জানি যে আমরা এ বিষয়ে সচেতন। আমাদের ক্রিকেটের এ দিকটি দূর করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি। ভবিষ্যতে খেলোয়াড় হিসেবে তাদের উন্নতিতে সাহায্য করার জন্য আমি উন্মুখ।
‘সে সঙ্গে সমর্থকদের বলছি- ধৈর্য্য ধরুন, ক্রিকেটারদের জ্বলে ওঠার জন্য সময় দিন। কারণ টেস্ট ক্রিকেট খুবি কঠিন।’
আরও পড়ুন:টেস্ট ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বারবার ছোট ছোট ভুল না করা এবং অ্যাপ্রোচে পরিবর্তন আনার ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০তে হারের পর শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এ তাগিদ দেন টাইগারদের হেড কোচ।
প্রথম চার দিন সমানে সমান লড়াই করার পরও ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার কাছে ১০ উইকেটের হারে বাংলাদেশ। ফলে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত হয় টাইগাররা। ঢাকা টেস্টের আগে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছিল।
ঢাকা টেস্ট শেষে ডমিঙ্গো বলেন, ‘কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা একটি বা দুটি ব্যাপার দেখতে পারি। দুই ইনিংসেই যথাক্রমে ২৪ রানে ৫ উইকেট ও ২৩ রানে ৪ উইকেট পতনের পর টেস্ট জয় সম্ভব নয়।
‘আমাদের কিছু পরিবর্তন করতে হবে। গত ৬ থেকে ৮ মাসে এটি অনেকবার ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চার দিন লড়াই করেছি এবং একটি সেশনে খারাপ করার কারণে ফেরার উপায় ছিল না। আমি নিশ্চিত, এটি খেলোয়াড়দের জন্যও সমান হতাশাজনক। তারা লড়াইয়ে ফিরছে, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ে খেলা থেকে ছিটকে পড়ছে।’
শিষ্যদের ভুল নিয়ে ডমিঙ্গো বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার ছয় উইকেট পতনের পরও তারা শেষ পর্যন্ত ড্র (প্রথম টেস্ট) করে। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচেও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে কিছু ছোট ছোট ভুল করেছি।’
২৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান করে বাংলাদেশ। ষষ্ঠ উইকেটে রেকর্ড জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস।
১৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন মুশফিক। আর লিটনের ব্যাট থেকে আসে ক্যারিয়ারের সেরা ১৪১ রান।
প্রথম ইনিংসে ৫০৬ রান করে ১৪১ রানের লিড পায় শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে ১৬৯ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। এতে মাত্র ২৯ রানের টার্গেটে সহজ জয় পায় শ্রীলঙ্কা।
দুই ইনিংসে ব্যাটারদের ব্যর্থতার পরও বোলারদের দোষ দিচ্ছেন ডমিঙ্গো। তার মতে, যেভাবে বোলিং করা উচিত, সেভাবে বল করেননি বোলাররা। উইকেট ৫০০ রান করার মতো ছিল না, কিন্তু বাংলাদেশের বাজে বোলিংয়ের কারণে বড় স্কোর করতে পেরেছে শ্রীলঙ্কা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এবাদত, শরিফুল, তাসকিন ও মিরাজকে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জিতেছি। এই টেস্টে আমরা শুধু এবাদতকে পেয়েছি।
‘এটি সম্পূর্ণ নতুন বোলিং আক্রমণ। আমাদের যেভাবে করা উচিত ছিল, সম্ভবত সেভাবে ভালো বল করতে পারিনি।’
বোলিং নিয়ে বাংলাদেশের হেড কোচ বলেন, ‘কোচ হিসেবে আমার ক্যারিয়ারে আমি কখনও দেখিনি মিড উইকেট ও ফাইন লেগে এত রান হতে পারে। তারা সোজা বল করেছে, রান করার জন্য যা অনেক সহজ ছিল।
‘এটি ৫০০ রানের উইকেট ছিল, তেমনটা আমি মনে করি না। দ্বিতীয় দিনের শেষ দিকে আমরা ভালো বোলিং করতে পারিনি। আমরা তাদের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করতে পারিনি। এমন ছোট বিষয়গুলো ম্যাচের চিত্র বদলে দিয়েছে।’
ডমিঙ্গোর মতে, দল মেহেদি হাসান মিরাজের সার্ভিস মিস করেছে। কারণ তার বদলি হয়ে খেলতে নামা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত অফ স্পিনার হিসেবে ভালো করতে পারেননি। ইনজুরির কারণে সিরিজ থেকে ছিটকে পড়েন মিরাজ।
তিনি বলেন, ‘মোসাদ্দেককে খেলানোর কারণ ছিল, যাতে সে পঞ্চম বোলার হিসেবে বোলিং করতে পারে। এমন একজনকেই আমাদের দরকার ছিল। আমরা ভেবেছিলাম, দিনে ১৫ ওভার বল করতে পারবে সে। চার বোলার নিয়ে বল করার পক্ষে নই আমি।
‘আমরা আশা করেছিলাম, সে বোলিং করবে, তবে মোসাদ্দেক ভালো বল না করায় আমরা হতাশ হয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম, বোলিং দিয়ে মিরাজের কাজটি সে করতে পারবে। মিরাজকে হারানোটা বড় ক্ষতি ছিল। সে অনেক ওভার বল করতে পারে, উইকেট নিতে পারে এবং ব্যাটও করতে পারে।’
ডমিঙ্গোর মতে, বাংলাদেশে অনেক স্পিনার আছে, কিন্তু এই মুহূর্তে নাইম-মিরাজ ছাড়া টেস্ট ক্রিকেটে উন্নতির জন্য ভালো মানের অফ স্পিনার নেই।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য