স্বাধীনতার পরপর অবকাঠামতোগত কারণে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে কিছুটা সময় লাগে বাংলাদেশের। ১৯৭১ সালের আগে যারা ছিলেন মাঠের তারকা, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তাদের সাংগঠনিক দক্ষতা ও দূরদর্শিতায় ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতা করার প্রস্তুতি শুরু হয়।
সত্তর ও আশির দশকে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ফুটবল। খেলার প্রতি আগ্রহের পারদ চড়তে থাকে এ দুই দশকে। আশির দশকে বিশ্বকাপ ফুটবল ও ক্রিকেট সরাসরি সম্প্রচারের কারণে মানুষের বসার ঘরে চলে আসেন বিশ্ব তারকারা।
সত্তর দশক থেকে আঞ্চলিক ও মহাদেশীয় নানা টুর্নামেন্টে অংশ নেন বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদেরা। সাফল্য আসা শুরু করে আশির দশকে।
১৯৮৪ সালে সাফে প্রথম স্বর্ণ
স্বাধীনতার পর ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রথম আন্তর্জাতিক অর্জন ১৯৮৪ সালের সাফ গেমসের প্রথম আসরে স্বর্ণ জয়। কাঠমান্ডুতে এই স্বর্ণ আসে মুজিবর রহমান মল্লিকের হাত ধরে। ট্রিপল জাম্পে প্রতিবেশী দেশের অ্যাথলিটদের টেক্কা দিয়ে ছিনিয়ে আনেন স্বর্ণপদক। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রে প্রথম সফলতা ও অর্জন।
১৯৮৭ সালে দাবায় গ্র্যান্ড মাস্টার
আঞ্চলিক সাফল্য ছাড়িয়ে দেশের ক্রীড়া ক্ষেত্র বিশ্ব পর্যায়ে পৌঁছায় নিয়াজ মোর্শেদের হাত ধরে। কিশোর বয়স থেকেই দাবার বিস্ময়কর প্রতিভা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা নিয়াজ প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার নর্ম অর্জন করেন ১৯৮৪ সালে। দ্বিতীয় নর্ম আসে ১৯৮৬ সালে। ধারাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জনের পুরস্কার হিসেবে ১৯৮৭ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে গ্র্যান্ড মাস্টারের খেতাব পান নিয়াজ।
বাংলাদেশ তো বটেই পুরো দক্ষিণ এশিয়ার ভেতর প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার তিনি। পাশাপাশি এশিয়ার পঞ্চম।
১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়
১৯৯৭ সালে ইভেন্ট আইসিসি ট্রফি শিরোপা জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। এটিই ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রথম কোনো শিরোপা।
মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টটির গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ অপরাজিত থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ডেনমার্ক, আরব আমিরাত, মালিয়েশিয়া, পশ্চিম আফ্রিকা ও আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে।
দ্বিতীয় পর্বের তিন খেলায় বাংলাদেশ জয় পায় দুটিতে। একটি পরিত্যক্ত হয়।
আর ফাইনালে বৃষ্টি আইনে কেনিয়াকে দুই উইকেটে হারানোর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ পায় বাংলাদেশ। নিশ্চিত করে ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ।
সে ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালে আসে ওয়ানডে স্ট্যাটাস ও পরের বছর টাইগাররা পায় টেস্ট স্ট্যাটাস।
২০০২ সালে কমনওয়েলথে আসিফের ইতিহাস
২০০২ সালে ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশকে প্রথম স্বর্ণপদক এনে দেন আসিফ হোসেন খান। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ভারতের অভিনব বিন্দ্রাকে হারিয়ে ঝুলিতে পোরেন নিজের এবং দেশের প্রথম স্বর্ণ। ২০০৪ সালের সাফ গেমসে তিনি তার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বাগিয়ে নেন স্বর্ণপদক।
আঞ্চলিক টুর্নামেন্টের সীমানা ছাড়িয়ে এটিই ছিল বৈশ্বিক আসরে জেতা বাংলাদেশের প্রথম স্বর্ণ।
২০০৩ সালে ফুটবলের অধরা সাফ শিরোপা
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবলে প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্য আসে ২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। আশির দশকে ফুটবলের শিরোপা খরা ঘুচে যায় সাফের শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে।
জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়া এই টুর্নামেন্টের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ও অতিরিক্ত সময়ে ১-১ গোলে ড্র থাকায় ম্যাচটি গড়িয়েছিল পেনাল্টিতে।
পেনাল্টি শ্যুট আউটে ইসলাম, মুহিফুল মিয়াঁ, হাসান আল মামুন, মাহমুদুল হাসান ও মোহাম্মদ সুজনের গোলে ৫-৩ ব্যবধানে মালদ্বীপকে হারায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। সেই সুবাদে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় দেয়।
২০০৯ সালে বিশ্বসেরা সাকিব
এর পরের অর্জনটি বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নামের। ক্রিকেটের বরপুত্র ও বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টারবয় সাকিব আল হাসানের।
ক্রিকেটের আধুনিক গ্রেট ও সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠেন।
এর ছয় বছর পর ক্রিকেট ইতিহাসের একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে তিন ফরম্যাটের সেরা অলরাউন্ডার হন বাংলাদেশের গর্ব সাকিব।
সাকিবের সঙ্গে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি মোর্ত্তজা ও মাহমুদুল্লাহর হাত ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেট দল হয়ে ওঠে বিশ্বের অন্যতম সেরা।
দেশ ও বিদেশে আসে একের পর এক সাফল্য। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয়ের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সেমিফাইনাল খেলা ও এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলার মতো সাফল্য অর্জন করে টাইগাররা।
২০১৮ সালে নারী ক্রিকেটারদের শিরোপা জয়
বিংশ শতাব্দীতে আইসিসি ও এসিসি ট্রফি ছেলেদের হাত ধরে এলেও দেশের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা আসে নারী ক্রিকেটারদের হাত ধরে।
২০১৮ সালের জুনে টানা ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে তিন উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম আন্তর্জাতিক কোনো শিরোপার স্বাদ দেন জাহানারা-রুমানারা। জয়টা ছিল বেশ শ্বাসরুদ্ধকর।
শিরোপার হাতছানি পেতে থাকা এশিয়া কাপের ফাইনালে শেষ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল দুই রান। তার করা শেষ বলটি মিড উইকেটে ঠেলে দিয়ে দুইবার জায়গা পরিবর্তন করেন জাহানারা ও সালমা খাতুন। আর তাতে রচিত হয় অনন্য এক ইতিহাস। বাংলাদেশ পায় প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের স্বাদ।
২০১৮ সালে নারীদের বয়সভিত্তিক ফুটবলে সাফল্য
পুরুষদের ফুটবলে ক্রমাবনতির উল্টো পিঠে ছিল নারী ফুটবলে অবিশ্বাস্য উত্থান। বয়সভিত্তিক ফুটবলে অনূর্ধ্ব ১৪, ১৫, ১৬তে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখে দল। জিতে নেয় ২০১৮ সাফ অনূর্ধ্ব ১৮ চ্যাম্পিয়নশিপ।
অনূর্ধ্ব ১৪ থেকে একই দলে খেলে মারিয়া, সাবিনা, তহুরারা পরবর্তীতে জাতীয় দলের হয়েও সুনাম কুড়িয়েছেন।
২০১৯ আর্চারিতে নতুন তারকা রোমান
২০১৯ সালে স্বল্প পরিচিত খেলা আর্চারি দিয়ে বিশ্ব মঞ্চে আবির্ভূত হন আর্চার রোমান সানা। সে বছর বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপের পুরুষ একক ইভেন্টে এই আর্চার ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই প্রতিযোগিতার পদক পান সানা।
একই বছর ফিলিপাইনে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে স্বর্ণ জেতেন। এটি তার ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্য। একই সঙ্গে বাংলাদেশেরও।
২০২০ সালে জুনিয়র টাইগারদের বিশ্ব জয়
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের ক্রীড়ায় সবচেয়ে বড় সাফল্য আসে ২০২০ সালে। ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নেয় বাংলাদেশ। সাউথ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতের যুবাদের মুখোমুখি হয় আকবর আলির দল।
বৃষ্টিবাধায় বিঘ্নিত সেই ম্যাচে জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছিল ৪৬ ওভারে ১৭০ রান। তিন উইকেটে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশকে প্রথমবারের কোনো বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দেয় জুনিয়র টাইগাররা।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:চলতি বছর ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ বছর কারা ও কতজন এ পুরস্কার পাচ্ছেন, তা জানাননি উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে রবিবার স্বাধীনতা পুরস্কার সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কমিটি কিছু নাম সুপারিশ করেছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নামের তালিকা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো হবে।
দেশের জন্য অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ব্যতিক্রমী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ওই সময়ে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, এর আগে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে দলগত ও গোষ্ঠীগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। র্যাবের মতো বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকেও দেশের সর্বোচ্চ এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর ১০ জনের কম ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য