ভারতের মুম্বাইয়ে আইএইচএফএফ অলিম্পিয়া অ্যামেচার বডিবিল্ডিংয়ে প্রথমবার অংশ নিয়ে পদক জেতেন বাংলাদেশের মাকসুদা আক্তার মৌ। দেশের বাইরে গিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা ৩০ বডিবিল্ডারদের মধ্যে পারফর্ম করাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল বলে জানান তিনি।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে নিজেকে মেলে ধরা কঠিন মনে হয়েছে তার। সব বাধা পেরিয়ে নজর কেড়েছেন। আসরের বিচারকদেরও প্রশংসা পেয়েছেন।
মুম্বাইয়ের সফর শেষে অভিজ্ঞতা, নতুনত্ব, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মাকসুদা আক্তার মৌ। দেশে ফেরার সময় নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেন মৌ। তার সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।
প্রথমবার কোনো আন্তর্জাতিক ট্যুরে গেলেন? কেমন হলো মুম্বাই সফর?
একটা সলো ট্যুর ছিল। একাই আসছি। অনেক কিছু শিখলাম। অনেক দেশের বডিবিল্ডার এসেছিল। জ্ঞান হলো, অভিজ্ঞতা হলো। পরবর্তী প্রতিযোগিতায় এসব সাহায্য করবে।
আমাদের দেশে ওভাবে আসলে কোনো বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতা হয় না বা এক্সপো হয় না। এটা আসলে একটা হেল্থ ও ফিটনেস এক্সপো বলতে পারেন। বিশ্বের আনাচ-কানাচে থেকে প্রতিযোগী আসছে। এখানে অনেক ধরনের ব্র্যান্ড ছিল যেগুলো আমাদের দেশে নাই। এটা আমার জন্য ভালো অভিজ্ঞতা ছিল।
মুম্বাইয়ের অ্যামেচার বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতা থেকে কীভাবে অনুপ্রাণিত হলেন?
এখানে যারা বিচারক ছিলেন, প্রতিযোগিতার শেষে তারা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা এটাই বললেন যে, বাংলাদেশেও যে বডিবিল্ডার নারী আছে বা ওখানেও যে বডিবিল্ডিং হয়, তাতে ওরা অবাক হয়েছে। এমন ফিজিক্যাল কন্ডিশন নিয়ে আসছে কোন নারী।
আমি যাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করি তারা মূলত ৩৭-৩৮ বছর বয়সী বডিবিল্ডার। ওরা ১৬-১৭ বছর ধরে প্রতিযোগিতা করে। যেখানে আমি ২০১৯ সাল থেকে শুরু করি। নিজেকে প্রস্তুত করি। আমার পিঠে অনেক ইনজুরি ছিল। সেখান থেকে সেরে উঠে প্রস্তুতিতে নামি।
মুম্বাইয়ে বডিবিল্ডিং নিয়ে নতুন কী শিখলেন?
এখানে প্রশংসা বেশি পেয়েছি। আমার কিছু দুর্বলতা ছিল, যা বের করার চেষ্টা করেছি। যারা প্রথম বা দ্বিতীয় হয়েছে ওদের অবস্থা কী বা আমার উন্নতি করতে হবে কোথায়, সেগুলো বের করার চেষ্টা করছি। ওরা অনেক বছর ধরে করছে তাই তাদের পেশি বেশি পরিপক্ব। বিচারকরা বললেন, আমার কন্ডিশনিংটা ভালো। আমি যেহেতু কম দিনে প্রস্তুত করেছি নিজেকে, তাই পেশিগুলো কম পরিপক্ব হয়েছে। আমি যদি আরও কয়েক বছর ধরে চালিয়ে যাই, তাহলে আরও ভালো করব।
ওনারা যেভাবে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন যে যদি আরও দু-তিন বছর লেগে থাকি তাহলে বড় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারব। ওই অনুপ্রেরণা আসলেই ভালো ছিল।
দেশের বাইরে গিয়ে বড় কোনো টুর্নামেন্টে নেমে প্রথমবারই পদক পাবেন বলে আশা করেছিলেন?
না। সত্যিকার অর্থে ২০২০ সালে যখন বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় নামি, তখনই বলছি পরের বছরে আমি প্রতিযোগিতা করব। আমার লক্ষ্য ছিল এখানে আসা। পুরো বছর প্রস্তুতি নিয়েছি। চোটের পর বিশ্রামেও ছিলাম অনেক দিন। ফিজিও নিয়ে ঠিক হয়েছি।
বাংলাদেশে আপনি জানেন যে, আমরা নারীরা হাফ স্লিভ বা প্যান্ট পরে প্রতিযোগিতায় অংশ নিই। আর এখানে বিকিনি পরে স্টেজে উঠতে হয়েছে। পারফর্ম করতে হয়েছে। বিষয়টা চ্যালেঞ্জিং ছিল। ওখানে ছোট ছোট ভুলগুলো অনেক বড় করে দেখা হয়।
আমার কোচ ছিলেন বাংলাদেশ থেকে। আমি গর্ব বোধ করি যে বাংলাদেশে এই কন্ডিশনিংয়ের ওপরে কোচ আছেন।
২০১৯ সালের আগে সেভাবে বডিবিল্ডিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। কী কাজ করেছে মূলত এই খেলায় আসার ব্যাপারে?
বডিবিল্ডিংয়ের প্রক্রিয়া একেবারে আলাদা। ডায়েটিং থেকে শুরু করে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ ও মেনে চলতে হয়। ২০১৯ সালে যখন শুরু করি তখন একটা টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় হই। তখন ভেবেছি যদি একটু ভালো কন্ডিশনিং নিয়ে আসি তাহলে আরও ভালো করব।
পুরো বিষয়টা তো অনেক পরিশ্রমের। পরিবার-আত্মীয়স্বজন নিয়ে কীভাবে প্রস্তুতি নিলেন?
সবশেষ চার মাস আমার কোনো পারিবারিক জীবন ছিল না। একা ছিলাম প্রায় সময়। শুধু প্রস্তুতিতে মনোযোগ দিয়েছি। এটা কঠিন ছিল।
ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য জিম করা আর বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত হওয়া দুটি ভিন্ন বিষয়। ফিটনেস থেকে এই খেলায় আসার মানসিক প্রস্তুতি কীভাবে নিয়েছিলেন?
ঢাকায় আমার যারা ট্রেইনার ছিলেন তারা মূলত দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন। ফিটনেস থেকে বডিবিল্ডিংয়ে প্রবেশ করাটা আমার জন্য সমস্যা ছিল না। সারা দিন আমাকে যদি কেউ ফোন দেয় তাহলে আমাকে জিমেই পাবে। আমি নিজেও যেহেতু ট্রেইনার, তাই সেভাবে মানিয়ে চলি। মানসিকতা ঠিক থাকলে কঠিন মনে হবে না।
এই খেলায় দেশের নারীদের জন্য আইডলে পরিণত হয়েছেন। দেশে বডিবিল্ডিংয়ে নারীদের খুব একটা উৎসাহিত করা হয় না। কীভাবে তাদের অনুপ্রাণিত করবেন?
প্রথমত বিষয়টা পরিবার থেকে আসে। আমার পরিবারের কেউ বলেনি তুমি জিমে যাও। আমাদের সমাজে গতানুগতিক চিন্তা করে মানুষ। একটা সন্তান হলে সর্বোচ্চ নাচ-গান করার অনুমতি পাওয়া যায়। তবে জিমের ক্ষেত্রে মেয়েদের ওভাবে বলে না। এখনও সমাজব্যবস্থায় ওভাবে চিন্তাটা আসেনি।
কারও যদি ইচ্ছা থাকে আমি বলব পেশাদারভাবে নেয়ার বিষয়টি। দুদিন আসলাম খেললাম! এমনভাবে হয় না। তাকে আসতে হলে চিন্তা করতে হবে যে সে পারবে কী না। মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে। চিন্তা করতে হবে আমি যেতে পারব কী না।
এই পেশাটা আসলেই প্রগতিশীল। ফিটনেস বা বডিবিল্ডিংয়ের এতো ক্রেজ! ভারতের দিকে তাকান। আমাদের দেশের মানুষ সাপ্লিমেন্ট পায় না। ওখানে এক্সপোতে ফ্রিতে দেয়া হয়। আমাদের দেশে সাপ্লিমেন্টের দাম ৮-১০ হাজার টাকা। ওখানে ফ্রি! ফ্রিতে প্রোটিন দিচ্ছে। এখান থেকে বোঝা যায় যে তাদের ক্রেজ কত বেশি। এগুলো আসলে আমার ক্ষেত্রে বেশি কাজ করেছে যে বাইরের দেশ যদি পারে তাহলে আমি নই কেন?
ভবিষ্যতে দেশের নারীদের নিয়ে আলাদা কোনো উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা আছে?
চিন্তা আছে। আমি যখন চট্টগ্রামে শুরু করি আমি অনেক নারীকে নিয়ে কাজ করতাম। কাপ্তাই থেকে শুরু করে অনেক ছোট ছোট জিমে গিয়েছি। ওখানে নারীরা আসতেন। বোরকা পরেও অনেকে আসতেন। তাদের সম্ভাবনা থাকলেও কেউ মানসিকভাবে শক্ত ছিল না। বাসায় কী বলবে, সমাজ কী বলবে এসব চিন্তা করে অনেকে আসে না। এখানে কাজ করতে হবে। এখন অনেকেই কাজ করছে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কেমন পার্থক্য দেখলেন?
আপনি দেখবেন ফিটনেস আর ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি আলাদা। আমাদের দেশে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি আছে কিন্তু ফিটনেস ইন্ডাস্ট্রি নাই। কোনো অভিনেতা-অভিনেত্রী আছে যাদের সিক্স প্যাক আছে? আরিফিন শুভ আসে আমাদের জিমে। এছাড়া আসলে কেউই আসে না। আমি বলব না এটা ওদের দোষ। মূলত ওভাবে গাইডলাইনটা পায় না।
পরবর্তী লক্ষ্য কী?
এরপরে আমি ফ্রান্সে যাচ্ছি। বডিবিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপের প্রাক-বাছাইয়ে অংশ নেব। ১৫ ডিসেম্বর রওনা দেব। আমার অভিজ্ঞতাও হবে। জানি না ফল কী হবে। কিন্তু আমি চালিয়ে যাব। দেশে ৮ তারিখ এসে ভিসার কাজটা শুরু করব। তারপর নিজেকে প্রস্তুত করব। যেহেতু এখন কন্ডিশনিং আছে শরীরের। তাই খুব একটা সমস্যা হবে না। আরও কন্ডিশনিং হবে। দোয়া করবেন।
নিউজবাংলাকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
নিউজবাংলাকেও ধন্যবাদ
আরও পড়ুন:ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা। ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের সঙ্গে এটাই বিএনপির নেতাদের প্রথম বৈঠক।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাইকমিশনারের বারিধারার বাসায় যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ দলের তিন নেতা। এ সময় হাইকমিশনের রাজনৈতিক শাখার দুজন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনারের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) বৈঠকের কারণ উল্লেখ করে ব্রিটিশ হাইকমিশন লিখেছে, হাইকমিশনার সারাহ কুক আজ (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রাজনৈতিক কৌশল বুঝতে দলটির নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।
ওই লেখায় বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঙ্গে হাইকমিশনার সারাহ কুকের একটি ছবিও সংযুক্ত করা হয়েছে।
নওগাঁর ধামইরহাটে রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল নামে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিলেও তিনি আসলে তা নন, প্রতারণার স্বার্থে ভুয়া পরিচয় ধারণ করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার রুপনারায়নপুর গ্রাম থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
২৫ বছর বয়সী রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ম্যানুয়েল তপন জানান, ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে তিনি (পিয়াল) তার কাছ থেকে ২৯ হাজার ৫৩৮ টাকা গ্রহণ করেন এবং আরও টাকা দাবি করলে স্থানীয় জনতা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেয়া হয়। পরে থানা পুলিশ গিয়ে প্রতারক পিয়ালকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
তপন বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরে আমার মতো এলাকার অন্য লোকজনের কাছেও বিভিন্ন ফন্দি এঁটে প্রতারণা করে আসছে এই প্রতারক।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধামইরহাট থানার ওসি মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘প্রতারক রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। ইতোমধ্যে একজনের কাছে থেকে ২৯ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাও নিতেন তিনি।
‘এদিনও প্রতারণা করতে গেলে জনগণ তাকে আটক করে রাখে। এরপর পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর হাতিয়ায় ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মো. সুলতান নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিক এই হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১৬ নম্বর ক্লাস্টার থেকে পুলিশ সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারের বাসিন্দা ছিলেন।
ভাসানচর থানার ওসি কাওসার আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, সুলতান ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারে বসবাস করতেন। ১১৬ নম্বর ক্লাস্টারের খালি জায়গায় তিনি সবজি চাষ করতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলে তার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাবাকে দেখতে না পেয়ে তার ছেলে ওই ক্লাস্টারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বাবার গলা কাটা মরতেজ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় অন্য ক্লাস্টারের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি কাওসার আহমেদ জানান, পেছনের দিক থেকে গলা কেটে এই রোহিঙ্গা নাগরিককে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ তাদের নৌকা নিজেরাই ডুবিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
বিএনপির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক হৃদরোগে আক্তান্ত ডা. পারভেজ রেজা কাকনের শারীরিক খোঁজ-খবর নিতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মগবাজারে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় তিনি অসুস্থ কাকনের শারীরিক ও পারিবারিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই বর্ষীয়াণ নেতা বলেন, বাংলাদেশে অতীতে কখনোই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তা দলীয় প্রতীকে শুরু করেছে।
‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে বর্জনের পর তারা বুঝতে পেরেছে যে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করা হলে দেশের সামাজিক কাঠামোটা ভেঙে যাবে। তারা নিজেদের নৌকা নিজেরাই ডুবিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ছাড়া এবং এই সরকার ও তাদের সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাবো না। তবে গ্রাম-গঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কে যাবে কে যাবে না সেটা তো বিএনপি দলীয়ভাবে দেখতে পারে না।’
মঈন খান বলেন, বিরোধী দলকে দমনের জন্য সরকার হামলা-মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে এসব করে ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনেও তারা দেশের মানুষকে ভোট কেন্দ্রে নিতে পারেনি।
‘ভয় দেখিয়ে মানুষকে দমিয়ে রাখতে চায়। দেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ করেছে। তারা ভোট কেন্দ্রে যায়নি। কারণ এই ভোটের ওপর তাদের আস্থা নেই।’
মঈন খান বলেন, ‘দল গোছানো ও সংগঠন পুনর্গঠন করা চলমান প্রক্রিয়া। রাজনীতি কোনো কাপড় নয় যে, সাজিয়ে গুছিয়ে আলনা বা আলমারিতে রাখা যায়। সরকারকে বলবো- প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে আদর্শের রাজনীতিতে ফিরে আসুন। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো, ইনশাআল্লাহ।’
আরও পড়ুন:আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে কড়া নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
বৃহস্পতিবার দলটির এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাধ্যমে তা বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জানিয়ে দেয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা নেতাদের একজন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে চান উপজেলা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত হোক। সে কারণে দল চায় যে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের নিজ পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা যেন এই নির্বাচনে অংশ না নেন।’
‘আজ (বৃহস্পতিবার) দলের একটি বৈঠকে সাধারণ সম্পাদক আমাদেরকে বিষয়টি জানান। আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং জেলা-উপজেলায় তা জানাতে শুরু করেছি।’
এবার স্বতন্ত্র মডেলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে নিজ নিজ এলাকায় রাজনৈতিক বলয় নিজেদের কব্জায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের কিছু মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য। দলের হাইকমান্ড এই নির্বাচনে কাউকে সমর্থন না দেয়ার নির্দেশনা দিলেও এসবে কান দিচ্ছেন না তারা।
কোনো কোনো সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা তাদের স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছেন। নিজ দলের প্রভাবশালীদের এমন হস্তক্ষেপে ইতোমধ্যে তৃণমূলে নানামুখী বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো নিজেদের পরিবারের দখলে রাখার চেষ্টার পাশাপাশি উপজেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। ভোটের মাঠে স্বজনদের জিতিয়ে আনতে নানামুখী কৌশল অবলম্বন শুরু হয়েছে। এতে তৃণমূলের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। এ নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ।
দলীয় সূত্র জানায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক নেতারা ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এবং একজন প্রভাবশালী সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সন্তান বা নিকটাত্মীয়দের প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকেরা নিজ নিজ বিভাগের মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের দলের এই নির্দেশ জানাতে শুরু করেছেন।
ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক দলীয় ও দলীয় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দলের হাইকমান্ডের কাছে জমা পড়েছে। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। কেউ কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করলে তাদেরকে শো-কজ, সতর্কতা, তলবসহ বর্তমান দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে দলের হাইকমান্ডের।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর করার স্বার্থে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদেরকে নিজ পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।’
বিএনপি ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করায় ওই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উৎসাহ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বিরোধ তৈরি হয়।
জাতীয় নির্বাচনের মাস তিনেকের মাথায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের পছন্দের ব্যক্তিদের প্রার্থী করা নিয়ে দলীয় বিরোধ আরও বেড়ে যাচ্ছে। এর রেশ ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় পড়তে শুরু করেছে।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন কাজ না করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। নাটোরে প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। বৈঠকে ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরকে সারা দেশে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সেই তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, এবার চার পর্বে দেশের ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ১৫২টি ও দ্বিতীয় ধাপে দেশের ১৬১টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর ২১ মে হবে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে টিউবওয়েল বসানোর জন্য স্থাপন করা পাইপে পানির পরিবর্তে উঠে আসছে এক ধরনের তরল। অনেকটা ডিজেলের মতো গন্ধযুক্ত এই তরল নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল।
উপজেলার ভোলামোড় এলাকায় এক বাড়িতে ঘটেছে এই ঘটনা। বাড়ির মালিক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘পানীয় জলের জন্য তিন বছর আগে এখানে মোটর বসানো হয়। এটি উপজেলা পরিষদ থেকেই বসানো হয়েছিল। কয়েক মাস থেকে মোটরটি দিয়ে পানি উঠছে না। কারণ জানার জন্য বুধবার সকালে মিস্ত্রি ডেকে আনা হয়।
‘মিস্ত্রি কাজ করার সময় মোটরের সঙ্গে যুক্ত পাইপ দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানির পরিবর্তে তেলের মতো এক ধরনের তরল উঠে আসে। তা দেখে মনে হয়েছে ডিজেলের মতো। বিষয়টি আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি, যাতে তারা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী মনিরুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে ঘটনাটি দেখার পর তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় পাইপ দিয়ে উঠে আসা তরলে তিনি কাগজ চুবিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করলে তাতে আগুন ধরে যায়। তার প্রশ্ন- পানি হলে তো ভেজা কাগজে আগুন ধরতো না। তাহলে এই তরল কি খনিজ তেল?
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা সরকার জানান, তিনিও বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর করবেন বলে জানান তিনি।
মন্তব্য